I_Love_U #part_15

0
1368

#I_Love_U
#part_15
#sarika_Islam

পার্কে ঢুকে সামনে তাকিয়ে দেখলাম সাদ ভাইয়া একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে দারিয়ে আছে,,আমিও তাকে দেখে একটু হাসলাম,,নিহান আমার দিকে তাকিয়ে হাসি দেখে ভ্রু কুচকে সামনে তাকালো,,সাদ ভাইয়াকে দেখে সামনে গিয়ে জরিয়ে ধরলো,,

‘কিরে কেমন আছিস?’

‘ভালোই তুই?’

‘ভালোই,,’

‘আজ তোরা এখানে?’

‘ওইযে রাহা আর মাহিকে নিয়ে আসলাম ঘুরাতে,,’

‘ওহ আচ্ছা,,’

আমরা সবাই সামনে এগুলাম,,একটা টেবিলে বসে গল্প করতে লাগলাম,,সাদ ভাইয়া মাহির পাশে বসেছে আর নিহান আর আমি এক সাথে,,,আমাদের গল্প করার মাঝখানে হাপিয়ে এসে কেউ বলল,,

‘সরি নিহান সরি লেট হয়ে গেল,,’

আমরা সবাই সামনে থাকা ব্যাক্তিটার দিকে তাকালাম,,নিহা?ও এখানে কেন?নিহান বলল,,,

‘সমস্যা নেই বসো,,’

নিহা আমার কাছে এসে বলল,,

‘তুমি একটু অপর পাশে বসবা?আমাদের একটু কাজ ছিল?’

আমি নিহানের দিকে তাকিয়ে রাগীভাবে বললাম,,

‘এখানে আবার কিসের কাজ?’

নিহান আমার দিকে তাকালো,,আমার রাগ দেখে নিহার দিকে তাকিয়ে বলল,,

‘নিহা আজকে কিসের কাজ?’

‘আরে ভুলে গেলে?একটা ডিল ছিল না আজ কনফার্ম করতে হবে,,’

‘ও হ্যা,,’

আমি নিহানের দিকে তাকিয়ে রাগ দেখিয়ে উঠে পরলাম,,সাদ ভাইয়ার সাথে গিয়ে বসলাম,,নিহা আর নিহান কাজের একেক কথা বলছে এইসব অনেক বরিং লাগছে,,আবার জিদও উঠছে,,,আমি সাদ ভাইয়াকে বললাম,,

‘চলেন আমরা একটু ঘুরি তারা কাজ করুক?’

‘হুম হুম অবশ্যই চলো,,’

আমি মাহি আর সাদ ভাইয়া উঠে পরলাম,,তাদের সামনে বসে থাকতে আমার একদম ইচ্ছে করছে না,,নিহান কাজ করতে করতে আড়চোখে রাহাদের দিকে তাকাল,,তাকে রেখেই রাহা চলে গেল?রাহা আর সাদ এক যায়গায় দারাল তাদের ছবি তুলে দিচ্ছে মাহি,,রাহা পরে যেতে নিলে সাদ হাত ধরে ফেলে,,নিহান দূর থেকে এইসব দেখতে আর কাজ করছে,,, নিহানের এখন খুব রাগ লাগছে,,সে ফাইল দেখতে দেখতে দিল এক চিল্লান,,

‘এইসব কি নিহা?কাজই তো ঠিকমতো করো নি ডিল হবে কিভাবে? ডেম ইট একটা কাজও ঠিকভাবে করতে পারো না নাকি?যাও এইখান থেকে,,’

নিহানের চিৎকারে রাহা সাদ আর মাহি পিছে ফিরলো,,নিহান রেগে তাদের কাছে আসলো,,রাহা জিজ্ঞেস করলো,

‘কি হয়েছে?এভাবে চেচাচ্ছেন কেন পাব্লিক প্লেসে?’

‘পাবলিক প্লেসে আমি চেচালেই দোশ?আর তোরা প্রেম করছিস তা ঠিক?’

আমি আকাশ থেকে পরলাম আমরা প্রেম করছি?মানি কি এইসবের?সাদ ভাইয়া বলল,,

‘কি বলছিস নিহান এইসব?আজেবাজে কথা বার্তা,,?’

‘এখন তো আজেবাজেই লাগবে,,’

আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিহান বাহিরে নিয়ে গেল,,গাড়িতে উঠিয়ে দিল আর ড্রাইভ করতে লাগল,,মাহি পিছনে বসে বলতে লাগলো,,

‘ভাই আসতে চালা এক্সিডেন্ট হতে পারে!!’

নিহান কারো কথা কানে নিচ্ছে না ইচ্ছেমতো গাড়ি টানতে লাগলো,,বাসায় এসে সোজা নিজের রুমে চলে গেল,,আন্টি আমাদের কাছে এসে বলল,,

‘কিরে এত জলদি চলে এলি যে?একটু আগে না গেলি মাত্র তো সাতটা বাজে?’

মাহি বলল,,

‘কি জানি ভাই এর কি হলো রাহাকে টানতে টানতে গাড়িতে উঠালো,,আর স্পিডে চালিয়ে আসল,,’

‘কেন রাহা কি হয়েছে?’

‘জানি না আন্টি আমিও চিন্তা করছি,,’

আমি উপরে গেলাম রুমে,,নিহান শার্ট খুলে সোফার উপর ফেলে রেখেছে,,হাতের ঘড়িটা বিছানার উপর ফালানো,,বুঝলাম না হঠাৎ কি হলো নিহানের?নিহার সাথে কি কিছু হলো নাকি?নিহান আমাকে রুমে আসতে দেখে আমার সামনে এসে দারিয়ে বলল,,

‘জামাই দিয়ে হয় না?’

‘এইসব কেমন কথা?’

‘ঠিকি কথা,,সাদের সাথে প্রেম চলছে তোর?’

আমি নিহানকে সাইড করে সামনে গিয়ে বললাম,,

‘ফালতু কথা বলবে না একদম আমার সাথে,,নিজের মতো সবাইকে ভাবেন নাকি?বউ রেখেও বাহিরে রাসলীলা,,’

নিহান আমার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে আমার গাল চেপে ধরে বলল,,

‘আমি রাসলীলা করছি নাকি তুই?পাবলিক প্লেসে প্রেম করিস,,’

‘হ্যা করবো রাসলীলা আপনার কি?আপনিও করছেন আমিও করছি ব্যাস,,’

আমার গাল আরো জোরে চেপে ধরলো,,মনে হচ্ছে হাড় গুলো ভেংগে যাবে,,

‘ সাদ এর কাছ থেকে দূরে দূরে থাকবি বলে দিলাম,,’

আমি হাত ছারাতে চাইলেও ছারাতে পারছি না,,আমার চোখে পানি চলে আসল ব্যাথায়,,নিহান আমার চোখের পানি দেখে ছেরে দিল,,

সকালে,,

সবাই ব্রেকফাস্ট করছি তখন মিসেস নিহার আগমন,,ওর কি বাড়িঘর নেই নাকি?যখন তখন এখানে এসে টপকায়,,নিহান খাবার শেষ করে উপরে গেল রেডি হতে নিহাও উপরে গেল আমাদের রুমে ঢুকতে নিলে আমি হাত ধরে ফেললাম,,

‘আমাদের রুমে ঢুকারও চেষ্টা করবে না একদম,,’

‘দেখ রাহা ছেরে দাও আমি কিছু করতে চাচ্ছি না,,’

আমি হাত ছেরে হাত বুজে গুজে একটু রেগে বললাম,,

‘ওহ তো মিসেস নিহা আমাকে থ্রেট দিচ্ছে?ওয়াও,,কি করবে তুমি হ্যা?নিহানের থেকে যত পারো দূরে থাকবে বলে দিলাম,,’

নিহা আমার একটু কাছে এসে এক গাল হেসে বলল,,

‘মানুষের অভ্যাস তো পাল্টেও যায় সময়ের সাথে যাথে কিন্তু ভালোবাসা?ভালোবাসা কখনো পালটে না,,আর তুমি তো অভ্যাস একদিন অভ্যাস পালটে যাবে,,আমি তো ভালোবাসা যা এখনও আছি,,’

আমার নিহার ফালতু কথা শুনে খুব রাগ হলো,,আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে অনেকটা রেগে বললাম,,

‘অভ্যাস কখনো পালটে না ভালোবাসাটা পালটে যায় ধোকা বাজদের উপর থেকে,,সঠিক মানুষ পেলে আগের ভালোবাসা ভুলতে বেশি টাইম লাগে না,,,যেমনটা আমাকে পেয়ে নিহান তোমার মতো ধোকা বাজকে ভুলে গেছে,,’

নিহাকে সাইড করে রুমের ভিতরে ঢুকে গেলাম,,নিহান রেডি হচ্ছে আমাকে দেখে বলল,,

‘কিরে কি হয়েছে?’

‘কিছু না,,’

নিহাও ভিতরে ঢুকলো,,

‘নিহান চল,,’

‘চলো,,’

দুইজন বেরিয়ে পরলো,,আমিও রেডি হয়ে ভার্সিটির জন্য বেরিয়ে পরলাম,,বাড়িতে যত থাকবো নিহান কথা গুলো মাথায় ঘুরপাক খাবে একটু ফ্রেশ হাওয়া পাবো বাহিরে,,মাহি আজ নাকি যাবে না ফাকি বাজ মেয়ে কোথাকার,,আমি একাই বের হলাম আজ গাড়ি দিয়ে গেলাম না রিকশা দিয়ে যাবো একটু খোলা আকাশের নিচে থাকতে চাই,,ভার্সিটিও না গিয়ে একটা খোলা জায়গায় গেলাম,,পুকুর সামনে পানি একদম স্বচ্ছ দেখাচ্ছে,,ঘাসের উপর বসে আছি খোলা আকাশের নিচে একদম বিরক্তি লাগছে,,

কিছুকক্ষন পর বাসায় চলে গেলাম,,সারাদিন খুব বরিং গেল,,সকাল সকাল শয়তানের দর্শন হলে তো সারাদিন বরিং লাগবেই,,রাত আটটার দিকে দিয়ে কেউ আসলো আমি গিয়ে দরজা খুললাম,,দেখলাম সাদ ভাইয়া এসেছে হাতে আইস্ক্রিম নিয়ে,,আমাকে দেখে একটা হাসি দিয়ে আইস্ক্রিম গুলো হাতে ধরিয়ে দিল,,আমিও নিলাম আইস্ক্রিম পেয়ে খুশি হয়ে গেলাম মুডটা এখন একটু ভালোলাগবে,,সাদ ভাইয়া ভিতরে ঢুকলো,,আন্টি ভাইয়াকে দেখে বলল,,

‘কিরে সাদ কেমন আছিস?’

‘ভালো আন্টি,,’

সাদ ভাইয়া বসলো আন্টি তার জন্য পানি আনতে গেল,,আমি আর মাহি সোফায় বসে আইস্ক্রিম খেতে লাগলাম,,উফফ সারাদিনে এখন একটু ভালোলাগছে,,সাদ ভাইয়াও আইস্ক্রিম খাচ্ছে আর আমাদের সাথে কথা বলছে,,আজ ভার্সিটি যাইনি কেন কি হয়েছিল সব জিজ্ঞেস করছে,,আমরাও উত্তর দিচ্ছি,,একটু পর নিহান আসলো,,সাদ ভাইয়াকে দেখে কিছুটা রাগ হলো হয়ত,,সাদ ভাইয়ার সাথে একটু কথা বলে উপরে চলে গেল ফ্রেশ হতে,,সাদ ভাইয়া কিছুক্ষন থেকে চলে গেল,,

আমরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে চলে গেলাম,,আমি বারান্দায় দারিয়ে আছি নিহানের সাথে থাকতে একদম ভালোই লাগছে না,,ওর থেকে তো সাদ ভাইয়া ভাল আমার মুড বুঝে,,নিহান হঠাৎ এসে আমাকে পিছন থেকে ধরলো,,আমার ঘারে একটা চুমু খেল,,আমি সামনে ঘুরে নিহানকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে বললাম,,

‘আমি আপনের অভ্যাসও না ভালোবাসা তো নাই,,আমি হলাম জাস্ট তোমার প্রয়োজন,,’

নিয়ান আমার কথা শুনে খুব শকড হলো চেহারা দেখেই বুঝা যাচ্ছে,,আমার দুই বাহু ধরে আমাকে তার মুখোমুখি করে বলল,,

‘হ্যা তুই আমার প্রয়োজন,,অভ্যাস বলেই তুই আমার প্রয়োজন,,আর প্রয়োজন বলেই তোকে ভালোবাসি,,’

‘মিথ্যে,,আমি তো শুধু এভাবেই আর ভালোবাসা তো হলো নিহা,,,’

নিহান বেশ রেগে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,

‘কে বলেছে তোকে এইসব?’

‘নিহা নিজেই বলেছে এখনিও তুমি ওকে ভালোবাসো!!’

‘নিহা?’

‘হুম নিহা,,নাহয় আমি তোমাদের লীলা কিভাবে যানবো?’

‘কালই নিহাকে রিসাইন করছি,,আমার সংসারে আগুন লাগাতে কি ওকে রেখেছি নাকি আমি?’

বলেই চলে গেল রুমে,,বিছানায় শুয়ে পরলো,,আমিও তার পাশে গিয়ে শুয়ে পরলাম,,

চলবে,,
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here