একথোকা_কৃষ্ণচূড়া_এবং_আপনি,19,20,বোনাস_পর্ব

0
743

#একথোকা_কৃষ্ণচূড়া_এবং_আপনি,19,20,বোনাস_পর্ব
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ১৯

প্রাহি মন খারাপ করে বারান্দার দোলনায় বসে আছে।ওর মনের আকাশে মেঘ জমেছে।তাও কার জন্যে জমেছে অর্থ’র জন্যে।লোকটা হুটহাট এমন গম্ভীরমুখ করে রাখে যে ভয়ে প্রাহি কারনটাও জিজ্ঞেস করতে পারেনা।এমন কেন লোকটা?উনি যদি কিছু নিয়ে চিন্তা করে তাহলে তো প্রাহিকে বলতে পারে তাই নাহ?এমন তো না যে প্রাহি লোকটার দূরের কেউ।প্রাহি অর্থ’র স্ত্রী।আর স্ত্রীর কাছে তার স্বামি সকল কথা সেয়ার করবে আর স্ত্রীরও একই কাজ করবে।তাহলে না দুজনে মিলে প্রোবলেমটা সল্ভ করতে পারবে। কিন্তু না। এই লোক তো প্রাহিকে কিছু বলেই না।যত্তসব গুমরো মুখো গন্ডার একটা।মনে মনে অর্থ’কে গালি দিতে লাগলো প্রাহি।প্রাহির মন খারাপ কারন আজ অর্থ আজ ভার্সিটি ছুটির পর ওরা এরশাদ সাহেবের কবর দেখে তারপর বাড়িতে এসেছে।কিন্তু এর মাঝে অর্থ প্রাহির সাথে একটা কথাও বলেনি।প্রাহি সাহস করে কিছু একটা জিজ্ঞেস করলেও হু না তে জবাব দিয়ে শেষ।এরপর আর প্রাহিও কোন কথা বলেনি।সারাটাক্ষন মুখটা গম্ভীর করে রেখেছে।কি এতো ভাবে লোকটা?কিসের এতো চিন্তা,অস্থিরতা?ওকেও তো একটু বলতে পারে তাই নাহ?কিন্তু অর্থ সেটা বলেনা,করেও না।তাই প্রাহি আর কোন কথা অর্থ’র সাথে বলেনি।ফ্রেস হয়ে,খাওয়া দাওয়া করে সেইযে এসে বারান্দায় এসে বসেছে আর ঘরমুখো হয়নি প্রাহি।
এদিকে নিজের লোকদের কিছু দরকারি কথাবার্তা শেষ করে ঘরে আসে অর্থ।ঘরে এসেই ভ্রু-কুচকে ফেলে অর্থ প্রাহিকে না দেখে।এই সময়ে তো মেয়েটা ঘুমিয়ে থাকে।তাহলে আজ গেলো কোথায়?অর্থ কি মনে করে যেন বারান্দায় গেলো।সেখানে পেয়েও গেলো প্রাহিকে।নিস্তব্ধে প্রাহির দিকে এগিয়ে গিয়ে গম্ভীর গলায় বলে উঠে,
‘ এখানে কি করছো?প্রতিদিন তো এই টাইমে ঘুমিয়ে থাকো।তাহলে আজ কেন ঘুমোও নি?পরে পড়তে বসবে কিভাবে?বই সামনে নিয়ে ঝিমালেই হলো মার একটু মাটিতে পরবে নাহ!’
অর্থ’র এরূপ প্রায় ধমকে বলা কথাগুলো শুনে তড়িঘড়ি করে দোলনা থেকে উঠতে নিতেই দোলনার হাতলের কোণায় হাতটা লেগে অনেকখানি ছিলে যায় প্রাহির।ব্যাথায় আর্তনাদ করে উঠে প্রাহি।ক্ষতস্থানটা আরেকহাত দিয়ে চেপে ধরে পূনরায় দোলনায় বসে পরে ও।এদিকে আকস্মিক কি হলো ঠাওর করতে একটু সময় লাগলো অর্থ।পরক্ষনে সবটা বুঝতে পেরে দ্রুত পায়ে এগিয়ে যায় প্রাহির কাছে।প্রাহির সামনে হাটু গেরে বসে অস্থির কন্ঠে বলতে লাগলো,
‘ আ’ম সরি প্রাহি।আমার ওইভাবে হঠাৎ কথা বলা ঠিক হয়নি।আমার কারনেই তুমি ব্যাথা পেলে।ইসস,দেখি হাত সরাও আমাকে দেখতে দেও কতোখানি লেগেছে।হাত সরাও প্রাহি।’
অর্থ জোড় করে প্রাহির হাতটা ক্ষতস্থান থেকে সরিয়ে ফেললো।বেশ অনেকক্ষানি ছিলে গিয়েছে।অর্থ অপরাধি ভঙ্গিতে প্রাহির দিকে তাকাতেই চমকে গেলো।ফর্সা মুখশ্রীটা লাল টকটকে হয়ে আছে,চোখে জল টলমল করছে, চোখজোড়াও ভয়ানক লাল হয়ে আছে।চেহারার অবস্থা পুরো খারাপ।অর্থ দ্রুত প্রাহিকে ধরে উঠিয়ে রুমে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলো।প্রাথমিক চিকিৎসার বক্সটা এনে প্রাহির হাতটা ভালোভাবে ব্যান্ডেজ করে দিলো।অতঃপর উঠে গিয়ে প্রাহির পাশে বসলো।প্রাহির কান্নারত চোখজোড়া নিজ হাতে মুছিয়ে দিয়ে প্রাহিকে ওর বুকে চেঁপে ধরলো।প্রাহি আর নিজের কান্না আটকে রাখতে পারলো না। হুঁ হুঁ করে কেঁদে দিলো।অর্থ করুন গলায় বলে,
‘ কাঁদছো কেন প্রাহি?বেশি জ্বলছে ক্ষতটা? ‘
প্রাহি না বোধক মাথা নাড়ালো।
‘ তাহলে?’
প্রাহি কিছু বললো না সময় নিয়ে আরেকটু কান্না করলো।অতঃপর নিজেকে বহু কষ্টে সামলে হিঁচকি দিতে দিতে বলে,
‘ আপনি অনেক খারাপ।খুব খুব খারাপ।’
অর্থ কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।ও আবার কি করলো যার কারনে এইভাবে ওকে খারাপ বলছে প্রাহি।অর্থ বুঝতে না পেরে প্রশ্ন করে,
‘ কেন?আমি এতো খারাপ হলাম কেন?কারনটা জানতে পারি?’
প্রাহি জিব দিয়ে ওর শুষ্ক ঠোঁটজোড়া ভিজিয়ে নিয়ে বলে,
‘ আপনি আমাকে ভার্সিটি নিতে আসার পর থেকে একটা কথাও বলেননি আমার সাথে।কেন বলেন নি?আমি কিছু জিজ্ঞেস করলেও ঠিকঠাক উত্তর দেননি।এমন কেন করেছেন?’
অর্থ ভ্রু-কুচকে প্রশ্ন করলো,
‘ তার মানে তুমি ব্যাথা পেয়েছো সেইজন্যে কাঁদোনি।আমি কথা বলিনি এইজন্যে কাঁদছো?’
প্রাহি হ্যা বোধক মাথা নাড়ালো।অর্থ মুচঁকি হাসলো প্রাহির কথায়।মেয়েটা যে এই কারনে এইভাবে কেঁদেকেটে সাগর বানিয়ে ফেলবে তা একটুও বুঝতে পারেনি।ও তো ইলফার করা কান্ড আর জয়কে কিভাবে ধরতে পারবে সেই কারনে একটু চিন্তিত ছিলো।কিন্তু মেয়েটা যে এতোটা কষ্ট পাবে ভাবেনি অর্থ।অর্থ নরম গলায় বলে,
‘ আচ্ছা আর মন খারাপ করে কাঁদতে হবে না।আমি আর কখনই এমন করবো না।’
প্রাহি অভিমানি কন্ঠে বলে,
‘ আপনি কোন কিছু নিয়ে খুব চিন্তিত সেটা আমি বুঝতে পারছি।আমি জানি আমি জানতে চাইলেও আপনি বলবেন নাহ।এমন কেন আপনি?আমার সাথে সেয়ার করলে কি হয়?’
অর্থ কি বলবে ভেবে পেলো না।মেয়েটাকে সব বলে শুধু টেন্সন দেওয়া হবে।এমনিতেই কয়দিন পর পরিক্ষা।এইসব জানালে ওকে মেয়েটা পরিক্ষার প্রিপারেশন ভালোভাবে করতে পারবে না।তাই অর্থ মিথ্যে বললো,
‘ আমি তো বললাম আমি আমার কোরিয়ার বিজন্যাসটা বাংলাদেশে স্যাটেল করছি।ওইজন্যেই একটু টেন্সন। এই আরকি।’
প্রাহি চোখ ছোট ছোট করে বললো,
‘ সত্যি?’
‘ হ্যা! একদম সত্যি! এইবার ঘুমাও তো একটু।নাহলে রাতে পড়তে পারবে নাহ।’
অর্থ প্রাহিকে বুকে নিয়ে ওর মাথায় হাত বুলাতে লাগলো।কিছুক্ষন পর প্রাহি ঘুমিয়ে যেতে।অর্থ ওকে আস্তে করে বালিশে সুইয়ে দিয়ে।ল্যাপটপ নিয়ে নিজের কাজের ব্যস্ত হয়ে পরলো।
_______________
‘ আপনি ইদানিং আমার সাথে ভালোভাবে কথা বলেন নাহ।’ অভিমানি কন্ঠ হিয়ার।
আরাফ মুঁচকি হাসে।দুষ্টু কন্ঠে বলে,
‘ আমি কথা বললেই কি আর না বললেই কি?তোমার কি তাতে কিছু যায় আসে?’
আরাফের এমন প্রশ্নে হিয়া কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।আসলেই তো আরাফ ওর সাথে কথা না বললে ওর কি?ওর এতো খারাপ লাগে কেন?কেন এতো ব্যাকুল হয়ে থাকে ওর হৃদয়?কেন আরাফকে দেখার জন্যে মনটা এতো ছটফট করে?কেন আরাফের শূন্যতা ওর ভীতরটা এতো পুড়ায়? কেন?এই কেনো’র উত্তর হিয়া এতো ভেবেও মিলাতে পারে নাহ।হিয়াকে এইভাবে চুপ থাকতে দেখে আরাফ আবারো বলে,
‘ কি হলো হিয়া বলো নাহ?’
হিয়া তুতলিয়ে বলে,
‘ আ..আমি জানি নাহ।’
আরাফ কেমন যেন অন্যরকম একটা কন্ঠে বলে,
‘ নিজের মনকে প্রশ্ন করো।যেদিন যেদিন উত্তর তা জেনে তা আমাকে জানাতে পারবে সেদিনেই আমি তোমার কাছে আসবো তার আগে না।রাখছি ভালো থেকো নিজের খেয়াল রেখো।’
হিয়াকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ফোন কেটে দিলো আরাফ। হিয়া ফোনটা কান থেকে সরিয়ে ছলছল চোখে তাকিয়ে রইলো ফোনের দিকে।
রাত ১১টা__________

‘ প্রাহি ঘুমাতে এসো! আমার কাজ শেষ। তুমিও জলদি এসো।এতো পড়া লাগবে না।সেই মাগরিবের নামাজ পরে পড়তে বসেছো।শুধু এর মাঝে উঠে ডিনার করেছো।এসো জলদি এসো।’ অর্থ’র কথায় প্রাহি মুঁচকি হেসে পড়া বন্ধ করে উঠে আসলো অর্থ’র কাছে।আজ প্রচুর ভ্যাপসা গরম লাগছে।প্রাহি সব লাইট নিভিয়ে ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে শুয়ে পরলো।অর্থ একটা স্লিভলেস গেঞ্জি পরে এসে প্রাহির পাশে শুতেই প্রাহি একপলক তাকালো অর্থ’র দিকে।বুকটা ধরাস ধরাস করছে অর্থকে এমনভাবে দেখে।পাথরের মতো সোজা হয়ে শুয়ে রইলো প্রাহি।অর্থ’র দিকে আর তাকাবে না ও।কিন্তু বেহায়া চোখদুটো বার বার সেদিকেই তাকানোর জন্যে অস্থির হয়ে উঠেছে।কি এক জ্বালায় পরলো প্রাহি।এদিকে অর্থ ভ্রু-কুচকে তাকিয়ে আছে প্রাহির দিকে।কি হলো মেয়েটাকে তো ওর বুকে আসার কথা বলা লাগে না?তাহলে আজ কেন আসছে না ওর কাছে?সকালের ঘটনা নিয়ে কি এখনো রাগ করে আছে ওর সাথে?অর্থ গম্ভীর কন্ঠে বলে,
‘ কি হলো প্রাহি?এনি প্রোবলেম?এইভাবে শুয়ে আছো কেন?’
প্রাহি চমকে উঠলো অর্থ’র কথায়।শুকনো ঢোক গিলে তাকালো অর্থ’র দিকে।সাথে সাথে চোখ নিচে নামিয়ে নিলো।অর্থ আবারো বলে,
‘ এমন করছো কেন?বুকে আসবে নাহ?’
প্রাহি কিছুই বললো না।শুধু আসতে করে অর্থ’র কাছে গিয়ে ওর বুকে মুখ গুজে দিলো।অর্থ’ও দুহাতে আগলে নিলো প্রাহিকে।আর্থ ভ্রু উচুঁ করে তাকিয়ে,
‘ লজ্জা পাচ্ছো কেন?’
প্রাহি খামছে ধরলো অর্থ’র পিঠ।বললো,
‘ কো..কোথায় ল..লজ্জা পাচ্ছি।’
‘ আমি দেখতে পাচ্ছি তোমার কান গরম হয়ে আছে।আর এমনটা তখনই হয় যখন তুমি লজ্জা পাও।’
প্রাহি কি বলবে ভেবে পাচ্ছে।অর্থ প্রাহির কানের কাছে মুখ নিলো।অর্থ’র গরম নিশ্বাস প্রাহির কানে আর ঘাড়ে এসে বারি খাচ্ছে।কেঁপে উঠে প্রাহি আরেকটু ভালোভাবে অর্থ’র বুকের মাঝে নিজেকে লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা চালাতে লাগলো।অর্থ ফিসফিস করে বলে,
‘ এইভাবে লজ্জা পেও না লজ্জাবতী।আমি নিজের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেললে কিন্তু তখন লজ্জা লুকানোর বিন্দুমাত্রও সুযোগ পাবে না তুমি।সো আমাকে এইভাবে পাগল বানানো বন্ধ করো।’
চমকে উঠলো অর্থ’র এরূপ কথায়।অর্থ এর আগে কোনদিন এইভাবে কথা বলেনি।আজ প্রথম অর্থ’র মুখে ‘ লজ্জাবতী!’ ডাকটা শুনে বুকের ভীতর কেমন যেন করে উঠলো।পরক্ষনে অর্থ’র বাকি কথাগুলো স্মরন হতেই লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো ওর সর্বাঙ্গ।কি বললো লোকটা এগুলো?এইভাবে এইসব বললে তো প্রাহি লজ্জায় মরেই যাবে।
প্রাহি অর্থ’র পিঠে আলতো ঘুশি মেরে বলে,
‘ অসভ্য কথাবার্তা বন্ধ করে ঘুমান!’
অর্থ হেসে দিলো প্রাহির কথায়।তারপর চুপচাপ প্রাহিকে বুকে নিয়েই দুজনে ঘুমের দেশে পারি দিলো।

#চলবে_______

#একথোকা_কৃষ্ণচূড়া_এবং_আপনি
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ২০

স্নিগ্ধ সকাল,হালকা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি তার সাথে মন ভালো করার মতো মৃদ্যু মন্দ বাতাস।বাগানের পাশের গাছটায় অসংখ্য কদম ফুল ফুটেছে।কি যে সুন্দর লাগছে গাছটা দেখতে বলার বাহিরে।একধ্যানে বাহিরে তাকিয়ে থেকে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করছিলো প্রাহি।কিন্তু ওর তো খেয়ালই নেই।হাওয়ার সাথে বৃষ্টির ছিটাতে ও ভিজে গিয়েছে অনেকখানি।সে তো তার মতোই বারান্দায় দাঁড়িয়ে।
আজ শুক্রবার তাই প্রাহির ভার্সিটি নেই।অর্থ’রও অফিস নেই।সে আপাততো ঘুমাচ্ছে।কাল অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করেছে বিধায় এখন ঘুমটা এতো গাঢ়োভাবে ঝেকে ধরেছে।কিন্তু ঘুমের ঘোরে নড়তেই অনুভব করে পাশে কেউ নেই ওর।পাশ হাতরে বেড়ায় কিন্তু নেই।ধপ করে চোখজোড়া খুলে ফেলে অর্থ।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে আটটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট।আজ শুক্রবার তাও এতো সাতসকাল বেলা মেয়েটা কোথাও গেলো।উঠে বসলো অর্থ হাই তুলে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো।পরক্ষনেই বারান্দায় দিকে চোখ যেতেই ভ্রু-জোড়া কুচকে যায় ওর।আরেকটু এগিয়ে গিয়ে ভালোভাবে লক্ষ্য করতেই সকাল সকাল মেজাজটা তুঙ্গে উঠে যায় ওর।ধুপধাপ পা ফেলে বারান্দায় গিয়ে গম্ভীর স্বরে ধমকে উঠে অর্থ,
‘ স্টুপিড মেয়ে।বৃষ্টিতে ভিজে নিজের কি অবস্থা করেছো হ্যা? থাপ্পড় দিয়ে গাল লাল করে দিবো।’
আকস্মিক এমন ঠাঠানো ধমক খেয়ে লাফিয়ে উঠে প্রাহি।ভয়ে পেয়ে পিছনে ফিরে অর্থকে দেখলো।পরক্ষনে আবারও অর্থ’র কথাগুলো স্মরন করে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে যে ও সম্পূর্ণ ভিজে গেছে।প্রাহি ভয়ে ভয়ে তাকায় অর্থ’র দিকে।অর্থ এখনো রাগি চোখে তাকিয়ে ছিলো।প্রাহি তাকাতেই আবারও জোড়ে ধমক দেয়,
‘ যাও! চেঞ্জ করে আসো।এইবার ঠান্ডা লাগালে কোন ডাক্তার দেখানো হবে না।আমি নিজে গিয়ে বাগানে এই বৃষ্টির মাঝে গাছের সাথে বেধে রাখবো বেয়াদপ মেয়ে।এতোটা কেয়ারলেস কেউ কি করে হতে পারে।যতো জ্বালা হয়েছে আমার।একটা কথাও শোনে না।এমন বুঝদাত মেয়ে নিজের ভালোমন্দটুকু বুঝে না।সব কি আমাকে বলে বলে করানো লাগবে?দাঁড়িয়ে আছো কেন?যাও!’
এমন জোড়ে জোড়ে ধমক দেওয়ায় প্রাহির চোখের কোণে জল জমেছে।অর্থ কয়েকদিন যাবত এমনি করছে।কথা শুনলে মধুর কন্ঠে কথা বলে।আর তার কথার কোন বেতিক্রম হলে ধমকে ধামকে প্রাহির অবস্থা নাজেহাল করে দেয়।এমনটা বিগত একসপ্তাহ যাবত।একসপ্তাহ আগে প্রাহির ঝুম বৃষ্টি দেখে নিজেকে সামলাতে পারেনি।হিয়া আর ও মিলে ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ইচ্ছেমতোন ভিজেছে।হিয়ার আবার অসুখ বিসুখ কমই হয়।তাই ওর শুধু একটু ঠান্ডা লেগেছিলো।ওষুধ খেতেই সেরে গেছে।কিন্তু প্রাহি শরীর কাপিয়ে জ্বর এসেছে।তিনদিন পর্যন্ত নিস্তেজ শরীর নিয়ে পরে ছিলো।সর্বক্ষন অর্থ ওর পাশে পাশে ছিলো।সেই তিনটা দিন অর্থ’র মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিলো না।প্রাহিকে দিনরাত সেবা করে সুস্থ করেছে।সেই থেকেই প্রাহির জন্যে কঠিন কঠিন সব ধারা জারি করেছে অর্থ।সেখান থেকে একটু ব্যাতিক্রম হলেই প্রাহিকে ধমকের উপর রাখে অর্থ।
প্রাহি ড্রেস-চেঞ্জ করেই ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসলো।অর্থ’র দিকে না তাকিয়েই হনহনিয়ে রুমের বাহিরে চলে গেলো।অর্থ তা দেখে রাগি গলায় বলে,
‘ হ্যা এইভাবে যেতে নিয়ে সিড়ে দিয়ে উলটে পড়ে পা ভাঙ্গো খালি একবার।আমি তারপর তোমাকে কোলে নিয়ে দোতলা থেকে নিচে ফেলে দিবো বলে দিলাম মেয়ে।’
অর্থ’র এমন কথায় প্রাহির পাজোড়া থেমে গেলো। মুখ গোমড়া করে আস্তে আস্তে হেটে নিচে চলে গেলো। অর্থ রাগি চেহারা নিয়েই ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেস হতে।
এদিকে নিচে নেমে দেখে কেউ উঠেনি আজ শুক্রবার সেই জন্যে।হেনা আর রায়হানা বেগম এখনো উঠেনি ।প্রাহি কিচেনে গিয়ে কি রান্না করবে ভাবছে। হঠাৎ ভাবলো আজ বৃষ্টি পরছে।বাড়িতেও সবাই আছে।প্রাহি ঝটপট খিচুরি রান্না করবে আর কষা গোস্ত রান্না করবে ভেবে নিলো।যা ভাবা সেই কাজ প্রাহি নেমে পরলো নিজের কাজে।খিচুরি চুলোয় বসিয়ে গোস্তো কষাচ্ছে প্রাহি।এর মাঝে উপর থেকে অর্থ’র কন্ঠ শোনা গেলো।অর্থ সোফায় বসে নিউজপেপার পরছে।প্রাহিকে বলছে এককাপ লেবু চা করে দিতে ওকে।অর্থকে দেখে ওর মনটা আবারও খারাপ হয়ে গেলো।প্রাহি চুপ-চাপ চা’টা বানিয়ে সার্ভেন্ট্স দিয়ে পাঠিয়ে দিলো।কিন্তু কিছুক্ষন পর মেয়েটি সেই চা নিয়ে ফেরত আসায় প্রাহি ভ্রু-কুচকে জিজ্ঞেস করেছে,
‘ কি হয়েছে?এটা নিয়ে ফেরত এসেছো কেন?’
মেয়েটা বললো,
‘ স্যার বলেছে যে চা’টা যে বানিয়েছে দিয়েছে সেই যেন নিয়ে যায়।মানে আপনাকেই নিয়ে যেতে বলেছে।’
প্রাহি রাগ নিয়ে তাকালো অর্থ’র দিকে।তারপর চুলোর আঁচ কমিয়ে চা’টা নিয়ে মুখ অন্ধকার করে অর্থ’র কাছে গিয়ে কাপটা টি-টেবিলের উপর রেখে যেতে নিতেই আবারও অর্থ’র গম্ভীর কন্ঠে,
‘ চা’টা হাতে কে দিয়ে যাবে?’
প্রাহি রাগি চোখ তাকালো।মন চাচ্ছে এই চা’টা এখন লোকটার মাথায় ঢেলে দিতে।রাগে ফোসফোস করতে করতে চা’টা অর্থ’র হাতে দিয়ে চলে গেলো।এদিকে উপর থেকে সবটাই খেয়াল করেছে হেমন্ত।নিচে নেমে এসে অর্থ’র পাশে বসে বললো,
‘ কি হয়েছে ভাই?ও এমন রেগে আছে কেন?’
অর্থ দীর্ঘশ্বাস ফেললো,
‘ আর বলিস না হেমন্ত।তোর বান্ধবী আমার একটা কথাও শোনে না।আরে নিজের ভালো তো পাগলেও বুঝে।সাতসকাল বেলা বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আমি ঘুম থেকে উঠে গিয়ে দেখি বৃষ্টির পানিতে ভিজে পুরো শরীর ভিজিয়ে রেখেছে।এই কারনেই রাগে ধমক দিয়ে ফেলেছি।সেই কারনেই ম্যাডাম এমন মুখ ফুলিয়ে আছে।কিন্তু এতে আমার কিছু যায় আসে না।ওকে লাইনে আনার জন্যে ধমকে ধমকে কথা বলতে হবে।নাহলে এই মেয়ে কথা শোনার মানুষ না।’
হেমন্ত হাসলো।বললো,
‘ তাহলে ভালোই করেছো।তা এখন কিচেনে কি করছে?’
অর্থ একপলক রান্নাঘরে কর্মরত প্রাহিকে দেখলো।যে আপাততো কোমড়ে উড়না বেধে কাজ করায় ব্যস্ত।সেদিকে তাকিয়ে থেকেই বলে,
‘ কি জানি।কখন থেকে দেখছি কি জানি রান্না করছে।’
হেমন্ত সোফায় মাথা এলিয়ে দিয়ে বলে,
‘ মা বাবা, বড়মা,বড়বাবা এখনো উঠেনি।উনারা ঠিক আছেন তো?’
অর্থ বললো,
‘ মা’র শরীরটা ভালো না।উনার বুকে ব্যাথাটা বেড়েছে।আর।চাচ্চু’র বাতের ব্যাথাটা বেড়েছে।এই জন্যেই বোধহয় এতো দেরি হচ্ছে।’
‘ আচ্ছা ভাই আমি উনাদের নিয়ে বিকেলে হাসপাতালে যাবোনি।’
‘ তার কোন প্রয়োজন নেই আমিই বিকেলে ইব্রাহিমকে আসতে বলেছি।উনাদের কষ্ট করে জার্নি করা লাগবে না।’
এর মাঝে হিয়াও উঠে এসেছে।এসে সোফায় বসে বললো,
‘ আর সবাই কোথায়?’
হেমন্ত বললো,
‘ প্রাহি রান্নাঘরে।বড় মা আর আব্বু’র শরীরটা ভালো নেই।তাই তারা এখনো আসে নি।’
হিয়া বললো,
‘ তাহলে আমি ভাবিকে গিয়ে হেল্প করি গিয়ে।’
‘ যা!’
হিয়া রান্নাঘরে চলে গেলো।গিয়ে দেখে প্রাহি সালাদ কাটছে।হিয়া মুচঁকি হেসে বলে,
‘ ভাবি কোন হেল্প লাগবে?’
প্রাহি বললো,
‘ হেল্প করলে এক কাজ করো।প্লেটগুলো একটু ধুয়ে টেবিলে রাখো।একটু পর তো সবাই খেতে চলে আসবে।’
হিয়া চলে গেলো কাজে।প্রাহি সালাদ কাটা শেষ করে বললো,
‘ হিয়া শেষ হয়েছে?’
‘ হ্যা ভাবি এইতো!’
‘ তাহলে এক কাজ করো মা বাবা আর কাকা কাকিমাকে ডেকে দিয়ে আসো।অনেক সকাল হয়ে গিয়েছে।দুপুরেরও রান্না করতে হবে।আমি টেবিলে খাবার সাজিয়ে দিয়েছি।তুমি এই সালাদটা রেখে আসো গিয়ে আর সবাই ডেকে দেও।’
হিয়া প্রাহির কথামতো চলে গেলো। প্রাহি এইফাকে দুপুরের জন্যে রান্নার ব্যবস্থা করে ফেলেছে। রান্নাঘরের কাজ শেষ করে ডায়নিং এ আসতেই।দেখে সবাই এসে বসেছে।প্রাহি গিয়ে সবাইকে খিচুরি বেড়ে দিলো। খিচুরির ঘ্রানে মো মো করছে পুরো বাড়ি।খিচুরি খেয়ে সবাই প্রাহির প্রসংশা করলো। শুধু অর্থ বাদে।অর্থ খেয়ে উপরে চলে গেলো।প্রাহি মন খারাপ করে তাকিয়ে রইলো সেদিকে।তারপর টেবিল পরিষ্কার করে রান্নাঘরে গিয়ে দুপুরের রান্না করবে কিন্তু হেনা এসে বলে,
‘ দুপুরের রান্না আমি করি।সকালে তো তুমি রান্না করেছো।যাও রেস্ট নেও গিয়ে।আমি রান্না করছি।’
‘ আমি তাহলে হেল্প করি?’
হেনা বেগম মুচঁকি হেসে বলে,
‘ সব তো তুমি তৈরি করে রেখেছো।আমি শুধু রান্না করবো।আর হেল্প লাগলে সুমি(কাজের মেয়ে) আমাকে হেল্প করবে।তুমি যাও।’
প্রাহি আর কি বলবে বের হয়ে আসলো রান্নাঘর থেকে।তার আপাততো রুমে যাওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।লোকটা সকাল সকাল ওকে যেইভাবে ধমকেছে প্রাহি আর কথাই বলবে না লোকটার সাথে।কিন্তু যাবে কোথায় ও?ছাদে বা বাগানে যাবে তাও পারবে না বৃষ্টি হচ্ছে।প্রাহি মুখ গোমড়া করে রুমের দিকে অগ্রসর হলো।

#চলবে____________

#একথোকা_কৃষ্ণচূড়া_এবং_আপনি
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#বোনাস_পর্ব

‘ এখনো রাগ কমেনি?’ অর্থ’র কথায় প্রাহি আরো শক্ত করে চোখ বুজে ফেললো।

আজ সারাদিনে ও অর্থ’র ধারকাছেও আসেনি।হয় হেমন্ত নয়তো হিয়ার সাথেই থেকেছে।কিন্তু রাতে কি আর দূরে থাকা যায়?সেই অর্থ’র কাছেই ওর আসতে হলো।প্রাহি রুমে এসে চুপচাপ সুয়ে পরেছে বিছানায়।কিন্তু লোকটার বুকের উষ্ণতা না পেলে কি ঘুম আসে ওর?উহু একটুও নাহ।কিন্তু কিছু করার নেই।তার যে অভিমান হয়েছে ভীষন।
লোকটা ওর অভিমান ভাঙ্গাতেও আসেনি একবার।সুন্দরভাবে একটু কথা বললেই তো প্রাহির অভিমান ভেঙ্গে যেতো।ঠিক তখনি উপরিউক্ত কথাটা বলে উঠে অর্থ।প্রাহি থম মেরে বসে আছে।কোন কথা বলবে না ও লোকটার সাথে।অর্থ মুচঁকি হেসে প্রাহিকে পিছন হতে ঝাপ্টে ধরলো।আকস্মিক শীতল হাতের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলো প্রাহির শরীর।ওর পেটের উপরে রাখা অর্থ’র হাত খামছে ধরলো।অর্থ প্রাহির কানে ঠোঁট ছোয়ালো আলতোভাবে।ভীতর শুদ্ধ কেঁপে উঠলো ওর এরূপ ছোঁয়ায়।অর্থ ওর কানের কাছেই ফিসফিসিয়ে বলে,
‘ এতো বেশি রাগ করে লাভ নেই।যতোক্ষন মুখ ফুলিয়ে রাখবে আমি কিন্তু ততোক্ষন চুমু খাবো তোমায়।’
আতকে উঠে প্রাহি।দ্রুত অর্থ’র দিকে ফিরে অর্থ’র বুকে মুখ গুজে দিলো।অস্পষ্ট স্বরে বললো,
‘ খুব খারাপ আপনি।খুব খারাপ।’
অর্থ হেসে প্রাহিকে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে।আদুরে কন্ঠে বললো,
‘ তোমারই তো।’
কথটা কর্ণপাত হতেই প্রাহির ঠোঁটের কোণেও মুচঁকি হাসি ফুটে উঠে।
_______________
ইন্ডিয়ার মুম্বাই শহরের এক নামি দামি রেস্টুরেন্টে মুখোমুখি হয়ে বসে আছে ইলফা আর জয়।ইলফা জয়ের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়লো,
‘ আমাকে এতো তাড়াহুড়োয় ইন্ডিয়া আসার জন্যে কেন বললেন মিঃ জয়? আমাকে দিয়ে আপনার কি কাজ?আর আমার সম্পর্কে এতোসব ডিটেইল্স পেলেন কিভাবে আপনি?’
জয় শয়তানি হাসি দিলো।আয়েশি ভঙ্গিতে বললো,
‘ তোমার ঠিকানা যোগার করা আমার বা’হাতের কাজ। আর রইলো তোমাকে ইন্ডিয়ায় আসার জন্যে বলার কারন।তার একমাত্র কারন হলো প্রাহি আর অর্থকে আলাদা করা যেকোন ভাবে।’
ইলফা চক্ষু কপালে উঠে গেলো।পরপর সরাসরি নাকচ করে বলে,
‘ অসম্ভব।এতো চেষ্টা করেছি আমি।কিন্তু ওদের ওদের আলাদা করে পসিবল না।’
‘ তোমার অর্থ’কে চাই?’
ইলফা তাচ্ছিল্য হাসলো,
‘ হাহ্! ওই গুমড়োমুখোকে কে চায় আমি?এই ইলফা?হাহ্ আমার তো শুধু ওর সম্পত্তি আর টাকা পয়সা চাই।ওকে বিয়ে করে শুধু বিয়েটা করতে পারলেই হতো ও ওর মতো থাকতো আর আমি ওর টাকা পয়সা নিয়ে আমার মতো মজমাস্তি করতাম।কিন্তু বাস্টার্ডটার পেছনে বিগত কয়েকবছর যাবত ঘুরেছি।এতো এতো ভাবে সিডিউস করার চেষ্টা করেছি।কিন্তু এই ছেলে আমার দিকে ফিরেও তাকাতো নাহ।’
জয় চিন্তায় পরে গেলো পরক্ষনে কিছু একটা ভেবে বাঁকা হেসে বললো,
‘ প্রাহির মা হাসপাতালে ভর্তি।তুমি গিয়ে যেকোনভাবে শুধু প্রাহির মা’কে সেখান থেকে সরিয়ে ফেলবে।এর পরে আমরা কি করবো তা নিশ্চয়ই তোমাকে বোঝাতে হবে না?’
ইলফা মুখশ্রী চকচক করে উঠলো।পরক্ষনে ভ্রু-কুচকে জয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ কিন্তু তুমি আমাকেই কেন এইসব করাচ্ছো?তুমি নিজে কেন বাংলাদেশ যাচ্ছো না?’
জয় দাঁতে দাত চেপে বললো,
‘ ওই অর্থ’র বাচ্চা আমাকে ধরার জন্যে ওর গার্ডসদের পাহারা হিসেবে রেখেছে সবখানে।আমি চেয়েও যেতে পারছি নাহ।’
‘ ভয় পায় অর্থকে?ভীতু একটা!’
জয় হিংশ্র চোখে তাকালো।ইলফা ওই চোখ দেখে ভয় পেয়ে গেলো।তুতলিয়ে বলে,
‘ আমি রাজি।আমি রাজি।শুধু আমার সাথে অর্থ’র বিয়ে হলেই হলো।’
জয় বাঁকা হাসলো ইলফার এতো ভয় পাওয়া দেখে।
______________পরেরদিন সন্ধ্যে
‘ শুনছেন?’
‘ হুম বলো!’ প্রাহির কথায় জবাব দেয় অর্থ।
প্রাহি অস্থির কন্ঠে বলে,
‘ আপনার ব্যস্ততার কারনে আর মা আর কাকা অসুস্থ থাকার কারনে আম্মুকে দেখতে যেতে পারলাম না আজ।আম্মুকে দেখার জন্যে মনটা কেমন জানি করছে।’
প্রাহির কথায় মন খারাপের আভাষ পেয়ে অর্থ প্রাহিকে আদুরেভাবে নিজের বুকে টেনে নিলো।ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
‘ আমি বলেছিলাম তোমাকে তুমি গিয়ে দেখে আসো।কিন্তু গেলে না।এখন মন খারাপ করছো কেন?’
প্রাহি ধীর কন্ঠে বললো,
‘ যেতেই তো নিয়েছিলাম এর মাঝে মা’র বুকে ব্যাথাটা বেরে যায়।তাই আর যাওয়া হয়নি!’
প্রাহি কপালে চুমু খেয়ে বলে,
‘ চিন্তা করো না।সব ঠিক আছে ওকে।আমি আম্মু’র কেভিনের সাথে চারজন গার্ড্স রেখেছি
আর পার্মানেন্ট নার্স ডাক্তার তো আছেই।সমস্যা হলে উনারা আমাকে ফোন করবেন।’
প্রাহি মাথা নাড়ালো।অর্থ’র বুকে চুপটি করে পরে রইলো।কেমন যেন করছে প্রাহির মনটা।কিছু একটা খারাপ হতে চলেছে ওর মনটা বারবার কু ডাকছে।প্রাহি মনে মনে শুধু আল্লাহ্কে স্মরন করতে লাগলো।এখন তিনিই ওর এই চিন্তা কমানোর মালিক।

#চলবে______

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here