মি_পার্ফেক্ট,১০,১১,১২

0
1197

#মি_পার্ফেক্ট,১০,১১,১২
আতাউর রহমান হৃদয়
পর্বঃ ১০
বাবার বাড়ির সামনে এসে দাড়াতেই আমি অবাক….

মা বাড়ির দরজার পানে চেয়ে আছেন…আমি তার সামনে দাঁড়াতেই জড়িয়ে ধরলেন সালাম দেওয়ারও সুযোগ দিলেন না। মায়ের দুচোখ বেড়ে অশ্রু ঝরে পড়ছে।

আচ্ছা মায়েরা কি এমনি। সন্তান কে কাছে পেলে এরা কেনো আনন্দে উৎফুল্লে কেঁদে উঠে। মায়েরা দুঃখে কাঁদে এমন নয় মায়েরা অতি সুখেও কাঁদে।

বাড়ির সবার সাথে প্রাথমিক সাক্ষাৎ করলাম। শুনেছি স্বামীর বাড়ি থেকে মেয়েরা বাবার বাড়ি আসলে সবার সাথে দেখা করে সালাম করতে হয়। নাহয় লোকে যা তা বলে। তাই আমিও করলাম সাথে আমার বরটাও ছিলো। সবার সাথে খুব হাসি মুখেই কথা বললেন ওনি…

ওনার যত্নে কোনো ত্রুটি রাখছেন না মা।। এটা কেই বোধয় জামাই আদর বলে।

নাস্তা শেষে বসে আছি বাড়ির উঠোন টায় গাছের ছায়ায়।

অনেকেই আছে।

আমার জেটাতো বোন রিনি। যার সাথে দেখি ওনার ভালই জমে উঠেছে। বয়সে একটু ছোট আমার রিনি৷ দুজন একই সাথে পড়ালেখা করেছি। বোন কম বন্ধু বেশি সে।

— কি ব্যাপার শালী দুলা ভাইয়ের বেশ জমেছে দেখি…?(আমি)
— তা যদি আর বলতি…(রিনি)
— কি আর বলবো..?(মন টা মলিন করে)
— জ্বলছে নাকি রে…?(রিনি)
— আমার জ্বলবে কেনো…?(আমি)
ওনি দেখি মুচকি হাসছেন। দাড়ান আপনার হাসা আমি বের করছি…
— এই যে আমি কিন্তু এখনো আমার শালার খোজ পায় নি…?(ওনি)
— ও হয়তো কোথাও গেছে..(আমি)
— তাইলল বলে এতক্ষণ লাগে আসতে..?(ওনি)
— তা আর বলতেন মনে হয় না সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরবে…(আমি)
— কেনো…?(ওনি)
— শুনেছি ওর নাকি আজ কিসের একটা ম্যাচ আছে ওটা খেলতে গেছে…(আমি)

রান্না ঘরে মায়ের কাছে আসলাম…

— বাহ ভালোই তো জামাইয়ের জন্য আয়োজন করছো দেখছি….আগে থেকে জানতে নাকি..? (আমি)
— কাল রাতে বলেছিলো জামাই… (আম্মু)
— কি বলছিলো শুনি।।।
— বললো তোর নাকি মন খারাপ…তাই তোকে নিয়ে এখান থেকে ঘুরে যাবে…?(আম্মু)
— আপনাদের সাথে কথা বলেছে আমাকে একবার জানায়ও নি…(আমি)
— তুই জেনে কি করবি…আর তুই কি এখনো আগের মত উল্টা পাল্টা বকিস শুশুর বাড়িতে…(আম্মু)
— বকলেও কি হয়েছে… যে পরিবারে বিয়ে দিয়েছো…?(আমি)
— কেনো ওরা কি খারাপ.? (আম্মুর মনটা মলিন হয়ে)
আম্মুর মনটা মলিন হওয়ার কথাই। কারণ যদি বাবা-মা জানতে পারে বিয়ের পর তাদের মেয়ে জামাইর বাড়িতে সুখে নেই তাহলে তাদের জীবন টাই বৃথা মনে করেন তারা।
— আরে নাহ…একদম পার্ফেক্ট। ঠিক তোমার মত একটা শাশুড়ী পাইছি… (আম্মুকে জড়িয়ে ধরে)
— আলহামদুলিল্লাহ…. জানিস মা প্রতিটি মা-ই চায় তার মেয়ে যেনো ঠিক মতই যেন একটা শাশুড়ী পায়…(আম্মু ইমোশনালী)
— হুম ঠিক তোমার মত…(আম্মু)
— মায়ের মত শাশুড়ী পেয়েচিস। তাই মায়ের মতই সেবা যত্ন করবি। আর শোন শাশুড়ী কিন্তু মায়ের মতই শাসন করবে আবার ভালওবাসবে তাই কখনো মন খারাপ করবি না…(আম্মু)
— ওকেহ মা…ডাল রান্না করছো…?(আমি)
— নাহ…কেনো বলতো…?(আম্মু)
— তোমার জামাইয়ের ডাল ছাড়া ভাত নামে না…(আমি)
— কি ডাল খায় ও..?(আম্মু)
— মসুর ডাল…
< রিনির বড় ভাইয়ের সাথে দাড়িয়ে কথা বলছি....ওনি আমাকে খুব পছন্দ করতেন৷ ভালওবাসতেন আমাকে।।কয়েকবার জানিয়েছেনও।।কিন্তু আমি না করে দিয়েছি...যদি ওনাকে নিষেধ না করতাম তাহলে আমার গল্পটা অন্যরকম হলেও হতো। সবসময় তাকে বড় ভাই-ই মেনেছি... রূদ ভাইয়ের সাথে কথা বলার সময় একটু হেসেই কথা বলেছি। ওনি নাকি নতুন প্রেমিকা জুড়িয়েছেন। খুব হাসি পেলো ওনার কিছু কথা শুনে। ওনি নাকি মেয়েটাক হাতের আঙুলের উপর নাছায়।< < দুপুরে খেতে বসেছি। আমার বরটার মন খারাপ মনে হচ্ছে কিন্তু কেনো...? খাওয়া শেষে রুমে আসলাম আমার। ওনি আগে এসেই শুয়ে আছেন... ওনার বুকে শুয়ে বলে উঠলাম.. -- কি গো আমার রুম টা কেমন লাগলো...? -- হুম ভালোই..(ওনি) -- শুধুই কি ভালো...?(মনটা খারাপ করে) -- তো আর কি..?(রাগের আভাস পেলাম তার কথায়) -- কি হয়েছে আপনার...?(আমি।।ওনার বুক থেকে মাথাটা তুলে) -- কি হবে আমার যা হওয়ার তোমার হয়েছে মানুষদের সাথে খুব ভালো আছো...(ওনি অভিমানী গলায়) -- (কোন কথা না বলে হুট করেই ওনাকে একটা চুমু খেলাম ওনার গালে..দেখলাম কোনো পরিবর্তন নেই..এবার সোজা ঠোঁটের উপর হামলা করলাম...ভালো লাগলো ওনাকে ছুয়ে। ইচ্ছে করছে মিশে যেতে....) -- ভালোই তো রাগ ভাঙানোর রেসিপি শিখেছো দেখছি...?(ওনি) -- হুম আপনার থেকে শেখা।। এখন বলুন রাগ করার কারণ টা কি হুহ...?(আমি অধিকারী ভাব নিয়ে) -- রূদের সাথে কিসের এত কথা তাও এতটা হেসে...(ওও এখন বুঝলাম ওনার মুড অফ থাকার কাহিনী) -- আরে ভাইয়ের সাথে কথা বললে সমস্যা কি...?(আমি..) -- ভাই তো ঠিক আছে। বাট সে তো পছন্দ করতো তা নয় আবার ভালোওবাসতো...?(ওনি) -- তা ঠিক...কিন্তু আপনি জানলেন কি করে...?(আমি) -- জেনেছি আমি...কোনো এক মাধ্যমে...?(ওনি) -- বলুন বলুন... -- দেখো অনু তুমি যদি কারো সাথে এমন করে কথা কিংবা মিশো তাহলে আমি সহ্য করতে পারি না...(ওনার কথা টা আমাকে স্বস্তি দিচ্ছে কারণ ওনি আমায় ভালবাসে বলেই এমন টা হয়) -- হুম বুঝলাম...নেক্সট টাইম আর হবে না...(বলেই ওনাকে চুমু খেলাম) -- হুম মনে থাকে যেনো...(ওনি) -- হুম থাকবে... এখন আমার চাই...(আমি) -- কি...? -- আপনাকে..(বলেই তার জামায় হাত দিলাম) -- তাই..(বলেই ওনি আমাকে শুইয়ে দিয়ে ভালবাসার পরশে জড়িয়ে দিলেন) ওনার প্রতি টা ছোয়ায় আমি নতুন করে ভালবাসা খুজে পাই। ওনার প্রতিটি ছোঁয়া আমাকে নতুন কিছুর আভাস দেয়। ইচ্ছে করে ওনাতেই মিশে থাকি সবসময়। আপসুস তা কি আর হয়। বিকেলে অনিক ফিরার পরে। শালা দুলাভাই যে বেরিয়েছে ফিরে আসার কোনো খবর নেই... চোখে হারাই তাকে। একটু তেই মিস করি অনেক। অল্প কয়দিনে অনেকটাই ভালবেসে পেলেছি তাকে। ওনারা বাড়ি ফিরতেই আমার চোখ তো চড়কগাছ... একি কি অবস্থাটা কি করলো তারা...? চলবে... #মি_পার্ফেক্ট পর্বঃ ১১,১২ বিকেলে অনিক ফিরার পরে। শালা দুলাভাই যে বেরিয়েছে ফিরে আসার কোনো খবর নেই... ওনারা বাড়ি ফিরতেই আমার চোখ তো চড়কগাছ... একি কি অবস্থাটা কি করলো তারা...? পুরা এক ঘাট্টি বাজার নিয়ে আসছে... -- বাজারে কি আর কিছু বাকি আছে আনার...?(আমি) -- তা যদি আর বলতি আপু...পুরা বাজার ঘুরাইছে...যা নেওয়ার এক দোকান থেকে নিলেই তো হয়।। না...ওনি সব দোকান ঘুরে ঘুরে একটা একটা করে নিছে।।(অনিক দেখি হাফিয়ে গেছে) -- আমার ভাইটাকে এমন করে ঘুরানোর দরকার ছিলো বুঝি.... (আমি) -- এত অল্প তে এমন হলে কি চলবে সারা জীবন সংসারের বাজার কিভাবে করবা...?(ওনি) -- সেটা সময় হলে দেখা যাবে।(অনিক) -- এখন থেকে অনুশীলন করাচ্ছি আর কি...(ওনি) অনেক গুলো পদের ফল নিয়ে আসছেন...বাজারে সম্ভবত আর কোনো পদের ফল বাকি রাখেন নি ওনি.... বাপরে জামাইরা এত ফল নিয়ে আসে শুশুর বাড়িতে জানা ছিলো....তবে আপেলটা বেশ মিস্টি। ভাল লাগে আপেল খেতে খুব।। রাতে রুমে বসে আছি ওনার আসার কোনো খবর নেই...বাবার সাথে কথা বলেই যাচ্ছেন তো যাচ্ছেনই। তার রুমে আসার কোনো খবর নেই...ওনি বুঝেন না আমি ওনাকে একটু কাছে পাওয়ার জন্য উতলা হয়ে থাকি। তবে এ কদিনে একটা অভ্যেস বেশ ভালোই জমেছে ওনার বুকে না ঘুমাইলে ঘুম হয় না ঠিক মত.. ওনি রুমে এসেছেন। -- এতক্ষণ লাগে আসতে...? (আমি অভিমানী গলায়) -- আরে বাবার সাথে কথা বলছিলাম...(ওনি)< -- কি এত কথা শুনি...?(আমি) -- তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা হয়নি...তবে একটু আন্ডারটেনডিং করে নিলাম..যাতে ওনি তোমাকে নিয়ে টেনশন না করেন...ওনি যেনো চিন্তা মুক্ত থাকেন এই ভেবে যে তার মেয়েকে ওনি কোনো বেহুলা ছেলের হাতে তুলে দেন নি...?(ওনি) -- ওহ..এতকিছু আনার কি দরকার ছিলো...? (আমি) -- এত কিছু কই আনলাম একটু ফল্ ফ্লুট আনলাম...শুশুর বাড়িতে জামাইদের খালি হাতে আসতে নেই...তখন তো বাইকে করে তোমায় নিয়ে আসছিলাম..তাই কিছু নিতে পারি নি...(ওনি) -- ওও.. -- মন খারাপ কেনো...?(ওনি) -- কই...ও আচ্ছা একটা কথা...?(আমি) -- কি...? (ওনি) -- আপনি তখন রিনির সাথে এত হেসে কি কথা বলছিলেন....?(আমি রাগি ভাবে) -- কই কিসের কথা বললাম...?(ওনি) -- আমি দেখেছি তো কত সুন্দর হেসে হেসে কথা বলছিলেন...?(আমি) -- শালী মানুষ একটু হেসে কথা বললে কোনো অপরাধ হয়ে যায়...? ওনি -- হুম হয়...শালীর বোনের সাথে বলবেন যা বলার...যা দরকার শালীর বোনের কাছ থেকে নিবেন...শালীর কাছে কী. হুহ...?(আমি) -- হুম বুঝছি...তবে..?(আমি) -- তবে কি..? -- যদি ওদের সাথে একটু কথা না বলি ওরা কি ভাববে? (ওনি) -- কি ভাববে...?(আমি) -- ওরা ভাববে...তাদের বোনের বর টা কিছু জানে না...ওদের বোনটা কে ঠিক ভাবে আদরও করে না...(ওনি) -- তো কি হয়েছে...? আমি তো জানি আপনি কেমন...ওরা জানার কি দরকার...?(আমি একটু রেগে) -- ওরা পরে তোমাকে নিয়ে আপসুসে থাকবে না...?(ওনি) -- তো... -- এতে তে ওরা কস্ট পাবে...?(ওনি) -- ওওও..ওরা কস্ট পাবে তাই ওদের সাথে এত কথা..তো জান না ওরা একা ঘুমিয়ে আছে ওদের কাছে যান...ওদের গিয়ে আদর করুন... আমার কাছে কি...?(রাগের একদম চরম পর্যায়ে) -- ওমা তাই...ঠিক আছে আমার এক ঢিলে দুই পাখি...??(ওনি) -- কিহ...? কি বললেন আপনি...?(আমি) -- যা বলছি শুনতেই পেয়েছো...?(ওনি) -- আচ্ছা যান তো দেখি..আপনি যান কি করে আমিও দেখে নিবো...?(রাগের যদি কোনো সীমার তার সীমান্ত পেরিয়ে গেছে) -- আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি।। প্রতিদিন এক স্বাদ কি ভালো লাগে..?(ওনি) -- কি...আমাকে আর ভালো লাগে না...?(ওনি) -- ওমন টা বলা হয় নি..?(ওনি) -- তো কেমন টা...আচ্ছা আপনি তাদের কাছেই যান আমাকে তো প্রতিদিনই পান আজ নাহয় তাদেরই স্বাদ নিলেন..আমি তো পুরাতন হয়ে গেছি.?(আমি) -- হুম যাচ্ছি... বলেই ওনি পা বাড়াবেন ওনি ওনার কলার টা ধরে বিছানায় শুইয়ে দিলাম... -- কোথায় যাচ্ছেন..? (আমি) -- তুমি না বললে ওদের কাছে যেতে...?(ওনি) -- আমি বলছি বলেই যেতে হবে...?(আমি মনটা খারাপ হয়ে গেলো) -- হুম বউ একটা কথা বলেছে তা আমি না শুনি কি করে...?(ওনি) -- বউয়ের সব কথা কি শুনতে হয়।(।আমি) ওনার দিকে ঝুকে আছি... -- উপস এতক্ষণ রাগী ভাব টাই ঠিক ছিলো...?(ওনি) -- কিসের...? (আমি..ওনার এই কথা টার মানে বুঝলাম না..) -- কিছু না সরো আমি শালীদের কাছে যাবো ওরা একা একা কি করছে না করছে ওদের একটু কোম্পেনী দিয়ে আসি..একটু আদরের ভাগও পাবো...?(ওনি) -- কিহ কুত্তা দাড়া দেখাচ্ছি তোর শালীদের কাছে যাওয়া... বলেই চেপে ধরে কিস করতে শুরু করলাম...রেগে চুমু খাচ্ছি। মুখে কয়েকটা কামড় বসিয়ে দিলাম ওনার।। -- উপস...কি করলে এটা..?(ওনি) -- আর বলবেন এসব...?(আমি) -- বললে তো দেখি ভালো কিছু পাওয়া যায় তাই বলা যেতে পারি.. তবে আজ আর বলছি না...যে শাসন বউ করছে...কালকে রুম থেকে আর বের হওয়া লাগবে না...(ওনি) -- একদম ঠিক করছি...শালীদের সাথে হেসে কথা বলা না..(আমি) -- জীবনের শিক্ষা হয়ে গেছে.. আর কি যেনো বলছিলে... তুমি পুরনো হয়ে গেছো..? -- হুম তা নয় তো কি.. নতুন ছোয়ার আশায়ই তো শালীদের কাছে যেতে চাইছেন...?(আমি) ওনি শুয়ে আছেন আমি ওনার মুখের কাছে ঝুকে আছি..আমার চুল গুলো ওনার মুখের উপর বারবার পড়ছে... -- আরে পাগলি বউ আমার..তুমি আমার কাছে ঠিক প্রথম যেদিন দেখেছিলাম সেদিনকার মতই আছো...বুড়ে বয়সে যখন নাতিদের সাথে গল্প করার সময় দুজন পানের বাটা নিয়ে বসবো তখনও ঠিক এখনকার মত থাকবে তুমি...নতুন বউয়ের মত..বুঝলে...(ওনি) -- হুম বুঝছি.৷। -- গুড বলেই ওনি আমাকে -- চলবে... ধন্যবাদ হে প্রিয়...আমার মনের রাজ্যে অনুর বেসে থেকো সারাজনম।।। #মি_পার্ফেক্ট পর্বঃ ১২ -- আরে পাগলি বউ আমার..তুমি আমার কাছে ঠিক প্রথম যেদিন দেখেছিলাম সেদিনকার মতই আছো...বুড়ো বয়সে যখন নাতিদের সাথে গল্প করার সময় দুজন পানের বাটা নিয়ে বসবো তখনও ঠিক এখনকার মত থাকবে তুমি...নতুন বউয়ের মত..বুঝলে...(ওনি) -- হুম বুঝছি.৷। -- গুড বলেই ওনি আমাকে জড়িয়ে নিলেন ওনার বুকে পাজরে সকাল থেকে রুমের মধ্যে বসে আছেন ওনি...বেরুতেই চাচ্ছেন না...আমাকে কড়া ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন যাতে রুমের ভিতর কেউ প্রবেশ করতে না পারে। ওনার রুম থেকে বের না হওয়ার কারণ টা আমি বুঝতে পেরেছি। রাতে যে রাগের মাথায় ওনার গালে একটু জোরেই কামড় বসিয়েছি সেখানটায় স্পষ্ট দাগের চাপ বুঝা যাচ্ছে। ইসস ওনি যদি রুম থেকে বের হয় ওবার চাইতে বেশি লজ্জা তো আমিই পাবো... সবাই কি ভাববে?? ইসস রে ভাবতেই আমার কাছে কেমন যেনো লাগছে.... ওনাকে রুমের মাঝে খাবারগুলো আমিই এনে দিচ্ছি। আমার কাজিন রা বিষয়টা খেয়াল করলো ওনার রুম থেকে বের না হওয়া টা... -- কিহ দুলা ভাই নতুন বউয়ের মত দেখছি রুম থেকে বেরুচ্ছেন না...লজ্জা লাগে বুঝি...?(আমার এক কাজিন রিয়া) -- আরে হবে কেনো...এমনিই শরীর টা দুর্বল লাগছে....(বালিশের মাঝে কামড়ের দাগ টা ঢাঁকা দিয়ে রাখছেন।।বুদ্ধি আছে বলতে হয়।) -- কেনো এত দুর্বল হলে চলবে....আমার বোনটা তো তাহলে বিনা সুখেই জীবনটা কাটাতে হবে....(এই রে জায়গা মত হাত দিয়েছে) -- সে আর বলতে এমন একটা বোন আমায় দিয়েছো...আমার চাইতে তার জেদ টাই বেশি...(ঘুরালো কথা টা) -- সে তো আছেই বটে...কিন্তু এত অল্প তে হার মানলে কি চলবে...?(অন্য একটা কাজিন....ইভা) -- হার মানবো...হ্যাঁ মানতেই পারি।।তার কাছে হার মেনপ যদি তার মুখে হাসি ফুটাতে পারি এতেই যে আমার সার্থকতা...(ওনি) -- ওরে বইনা পাইলি তো একটা বর নিজের মনের মত...(আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো রিয়া) -- হুহ.৷ (আমি) --আচ্ছা তোর সব চাওয়া যে ছিলো...বরকে ঘিরে ওগুলার কি হৈছে রে...?(ইভা) -- কি আর হবে...(একটু মুচকি হেসে) -- খুশি আসিস নাকি.... -- হুহ.. দুপুরের খাওয়া টাও ওনি রুমে খেলেন.... -- ঐ বাড়ি যাবো...(ওনি) -- হুহ..কখন..?(আমি) -- বিকেলে...(ওনি) -- সন্ধ্যায় গেলে হয় না...(আমি) -- তোমার কি থাকতে ইচ্ছে করছে...? (ওনি) -- নাহ এমন না..তবে অন্য একটা কারণ আছে যাওয়ার পথে বুঝে যাবেন...(আমি) -- হুহ.. সন্ধ্যায় বেরোনের সময় ওনি মুখে মাক্স পড়ে বেরুলেন.. সবাই তাকে জিজ্ঞেস করলে ওনি উত্তর দিলেন ধুলাবালি নাকে ডুকলে নাকি ওনার নাকে সমস্যা হয়...কি বুদ্ধি রে শালার।। ওনার বাইকের পিছনে বসে আছি... ধীর গতিতে বাইক চালাচ্ছেন ওনি... ওনাকে জড়িয়ে ধরে আছি...দিনে হলে লোকসরমে এটা করতে পারতাম না। একটা মেয়ে যখন কোন ছেলের বাইকের পিছনে উঠে তখন ঐ ছেলেটা যদি বাইক জোরে চালায় তাহলে ছেলেটা কখনোই মেয়েটিকে ভালোবাসতে পারে নি। কারণ ভালবাসার মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি কখনোই কেউ নিতে পারে না। ওনার এই কাজটা আমাকে ওনার প্রতি বিশ্বাস টা আরো হাজার গুনে বাড়িয়ে দিয়েছে। হেলমেট টা ওনি না পড়ে আমাকে দিয়েছেন... ইসস ওনাকে চুমু খেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু পারছি না একে তো হেলমেট। যদিও হেলমেট টা খুলে ওনাকে কিস করি এতে ওনার বাইক চালাতে মনযোগ বিনষ্ট হবে।তাই আর করলাম না। বাসায় আসার পরে... -- জার্নি কেমন লাগলো..?(ওনি) -- হুম অনেক ভালো...(আমি খুশি হয়ে) -- এমন টাই তো চেয়েছিলে...? (ওনি) -- হুম..তাই তো রাতে আসতে বলছি...(আমি) -- হুম...তবে কিস করতে ইচ্ছে করছিলো তোমার করলে না কেনো...?(ওনি) -- এতে আপনার বাইক চালাতে অসুবিধা হতো...কিন্তু...? (আমি) -- কিন্তু কি৷.? (ওনি) -- আপনি বুঝলেন কি করে যে আমার কিস করতে ইচ্ছে করছিলে আপনাকে...?(আমি..ভাবান্তর হয়ে) -- জানিনা... তবে মনে হলে তাই বললাম...(ওনি) -- ওও..(আমি) -- দাড়িয়ে থাকবে নাকি...ভিতরে যাবে...?(ওনি) -- চলুন... একটা মেয়ের জীবনে আর কি চাই...এমন মনের মত একটা বর হলে। যে সবসময় তাকে বুঝবে...তার ইচ্ছে গুলো কে প্রাধান্য দেবে। মনের কথা বুঝে নিবে। সব দিক থেকে খেয়াল রাখবে। আপুর কাছ থেকে শুনেছি..ওনি নাকি..একটু বেশিই কাজে বিজি থাকেন। রাত ছাড়া বাসায় ফিরতে পারেন না৷ একাধিক ব্যবসা পরিচালনা করেন। রাতে ওনাকে কাছে পাই সবসময় নিজের মত করে। বিয়ের একমাস হতে চললো... রাত ৯.৩০ টা.. ওনি রুমে বসে কিসব কাগজ পত্র নিয়ে বিজি আছেন। তাই ওনাকে ডিস্টার্ব করছি না..বার বার রুমে আসছি আর বেরুচ্ছি। আজ ফুচকা খেতে অনেক ইচ্ছা করছে... কিন্তু ওনাকে বলতেও পারছি না...কাজ করছেন ওনি। বলাটাও ঠিক হবে না... হুট করেই দেখলাম বাইকের চাবিটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন৷ একটা লুঙ্গি আর টিশার্ট পড়ে। এই গ্রামের ছেলেদের একটা সুবিধা আছে। নিজেদের কাছ কোন জায়গায় যেতে হলে প্যান্ট শার্ট পড়া লাগে না। লুঙ্গি পড়েই যেতে পারে। ওপস এতক্ষণ তো ভালই লাগছিলো ওনি রুমে ছিলেন অন্তত ওনাকে চোখের দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছিলাম। এখন তো ওনার উপর রাগ হচ্ছে...ওনি নাকি আমার মনের দুঃখ বুঝেন। কচু বুঝেন। শাশুড়ী মা হাদিসের বই পড়ছিলেন বিছানায় আধশোয়া হয়ে...আমি ওনার পাশেই গিয়ে শুয়ে পড়লাম... আমাকে হুট করেই এভাবে শুয়ে পড়তে দেখে শাশুড়ী বলে উঠলেন... -- কি গো মা শরীর খারাপ..?(আম্মু) -- নাহ..(আমি) -- খুদা লাগছে।।লাগলে খেয়ে নাও কিছু ইফতি আসলে এক সাথে খাবো সবাই..(আম্মু) -- নাহ...(আমি) -- মন খারাপ..? (শাশুড়ী) -- হুহ... -- তোমাদের বাড়ি কথা মনে পড়ছে..?(আম্মু) -- হুম...(আমি) -- দুর পাগলি যেতে ইচ্ছে করলে কালকে গিয়ে কয়দিন থেকে আসো..এভাবে মন খারাপ করে থাকার কি আছে..আমাকে বললেই তো ইফতিকে বলতাম তোমাকে দিয়ে আসতো...(আম্মু) -- ওনি দিয়ে চলে আসবেন.? (আমি) -- হুহ..(আম্মু) -- তাহলে আমি যাবো না...(আমি) -- পাগলি শাশুড়ী একটা মুচকি হাসি দিয়ে পড়ায় মনোযোগ দিলেন। আমার মাথা টা ওনার কোলে তুলে নিলেন। ইস একটা শাশুড়ীও পেয়েছি ঠিক মায়ের মত। কত সুন্দর বন্ধুর মত আমার মনের কথা গুলো বুঝে নিলেন। কিছুক্ষণ পর মহারাজের আগমন ঘটলো... রুমে এসে দেখি একটা ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে আছেন... -- কোথায় গেছিলেন....? (আমি) -- এইতো একটু বাজারে গেছিলাম..?(ওনি) -- কেনো...এত রাতে বাজারে কি..?(আমি) -- এজন্যে... বলেই ওনি আমার দিকে ওনার হাতে থাকা ব্যাগটা এগিয়ে দিলেন। ব্যাগটা খুলে তো আমি খুশি তে আত্মহারা... ওনি বুঝলেন কি করে...? খুশির ঠ্যালায় ওনাকে জড়িয়ে ধরে কয়টা চুমু খেয়েছি আমি বলতে পারবো না.... -- চলবে...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here