#মি_পার্ফেক্ট,১৯,২০,২১
আতাউর রহমান হৃদয়
১৯
ওনি বেরিয়ে যাওয়ার পর একটু অবসর হলাম। মোটামুটি সকালের কাজ গুলো শেষ ঘণ্টা খানেকের মত ফ্রি তাই ভাবলাম ওনার ডায়েরির একটা পেজ পড়ে নিই..
পেজ ৬
বোনটা কি করে যেনো বুঝে গেলো অনুকে আমি পছন্দ করি। খোঁজই নিয়েছে সে। আমি যেখানে আজ তিন মাস ধরে এই অনুর বাবার খোঁজ নিতে ব্যর্থ সেখানে সে কিভাবে নিলো আমি বুঝে উঠতে পারছি না। যদিও আমি অনুর বান্ধবী রিনির কাছ থেকে তার খোঁজ সবসময় নিচ্ছি তবুও কেনো যেনো মনে হচ্ছে কম পড়ে যাচ্ছে। সকালে কাজে বেরুবো তখনই বোন টা এসে একটা পিক দেখালো অনুর। পিকটা দেখিয়ে বললো কেমন লাগে রে তোর মেয়ে টাকে। আমি তো পিকটা দেখে থ মেরে গিয়েছি। অনুর জোড়া দেখেই বুঝতে পেরেছি যে এটা অনুর পিক। আমার থেকে কোনো প্রতিউত্তর পাবে না বোনে। এটা বোধয় সে আগ থেকেই আচ করতে পেরেছে। বোন বলে উঠলো আজ আমরা যাচ্ছি তাদের বাড়ি। তবুও আমি কিছু বলছি। আসলে একটা ঘোরের মাঝে ছিলাম। স্বপ্নের মাঝে ছিলাম। আমার কোনো হুদিস না পেয়ে বোন ড্রয়ার থেকে টাকা নিয়ে চলে গেলো। বললো যে বিকেলে লাগবে। আসলে বোনটা এমনই করে টাকা লাগলে এসে ড্রয়ার থেকে নিয়ে যাবে। আমিই তাকে এই উন্মুক্ত টা দিয়েছি। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরার পর নীলু বলে উঠলো মামা আমি তো মামী ঠিক করে ফেলছি বলেই জড়িয়ে ধরলো। নীলুর কথা শুনে বোনের দিকে তাকালাম। বোন বলে বললো, পছন্দ হয়েছে…এখন তুই কি বলিস…?
— আমি আর কি বলব…? আম্মু গেছিলো..?(আমি)
— নাহ…(বোন)
— তো আম্মু তুমি দেখবে না…?(আমি)
— আমার দেখা লাগবে না তোর ছোট মা দেখছে তো এতেই হবে আমি নাহয় একবারে বরণ করে নেওয়ার সময় দেখবো…?(আম্মু অনেকটা খুশি হয়ে বললো। এতে বুঝলাম মায়ের এতে কোন প্রকার বিদ্রুপ নেই)
— তো বোন তুই কি বলিস..?(আমি)
— আমার দিক থেকে ওকে….?এখন তুই তোর ভাগনীকে জিগা…?(বোনও অনেকটা খুশি বুঝলাম অনুকে ভাবি করে নিয়ে আসতে সে উৎফুল্ল হয়ে আছে।)
— মামু তুমি কি বলো..?(ভাগনী একটা চুমু খেয়ে বললাম)
— আমার পছন্দ হয় নি.. (ঘাল ফুলিয়ে বললো নীলু)
— কেনো?? তখন তো বললি…ওকেই তোর মামী হিসেবে চাই… এখন আবার কি হলো…?(বোন রাগী ভাবেই বললো নীলুকে)
— মেয়েটা আমাকে আদর করে নি কেনো…?(গাল টা ফুলিয়ে রাখছে)
— আহারে…আচ্ছা ঠিক আছে রাজমাতা…বিষয়টাকে নিয়ে পরে তদন্ত করা হবে…আপনি যথাযথ শাস্তি দিয়ে দিবেন… এছাড়া আর কোনো অভিযোগ আছে আপনার…?(নীলুকে বললাম)
— নাহ আমার কোন অভিযোগ নেই…(নীলু)
— তো তোরা তো ওকে করলি…ওদিক থেকে কি তারা করবে…?(আমি)
— মেয়ের বাবা বললো জানাবে…
— আচ্চা ঠিক আছে…
পেজ ৭
অনুর বাবা এসেছিলো…দেখে গেলেন আমার ব্যবসা গুলো।।বাসায়ও গিয়েছিলেন। ওনার সাথে অনুর ভাই এসেছিলো। ওনারা দুজন। কথা বলে বুঝতে পারলাম খুবই সেনসেটিভ তারা। পরিবার নিয়ে খুবই সতর্ক। খুব প্রশ্ন করছিলেন তিনি। কিভাবে এই ব্যবসা গুলো দাড় করালাম। ওনার প্রশ্ন গুলো আমার অস্বাভাবিক লাগে নি। কারণ একজন বাবা ওনি। ওনার কলিজাটা আমার বাড়িতে পাঠাবেন একটু খোঁজ না নিয়ে কি দিয়ে দিবেন। বাবা রা তার মেয়ে কে যে মা বলে ডাকে ঐ মা কে একটা ছেলের হাতে তুলে দেওয়ার আগে হাজার বার তো ভাববেনই। একজন বাবা তার মেয়ের প্রতি কতটা যত্নশীল আর দায়িত্বশীল এটা ওনার প্রশ্নগুলো করার মাধ্যমেই প্রকাশ পেয়েছে। ওনি তো বাবা আর আমি তো আমার বোনের ভাই তবুও পাক্কা ১ মাস খোজ নেওয়ার পর বোনের বিয়ের কথা পাকাপোক্ত করেছি। যাই হোক এখন পর্যন্ত জানিনা তাদের কেমন লেগেছে আমাকে তাদের মেয়ের জামাই হিসেবে। কেমন লেগেছে আমার ঘর বাড়ি। তাদের মেয়ে আমার বাড়ি এসে থাকতে পারবে কী না এটাতো তাদের ভাবতে হবে। এই ভাবনায় কিছুটা সময় লাগতে পারে স্বাভাবিক। এর আগেও অনুর বাবা অনুর জন্য আরো কয়েকটা সম্বন্ধ দেখেছেন ওগুলো বাদ দিয়ে দিয়েছেন যার কারণ ছেলে গুলোর এলাকায় তাদের রেকর্ড ভালো ছিলো না। তবে ওনি আমার এলাকায় কেমন রিপোর্ট পেয়েছেন জানিনা।
ওনাদের দিক থেকে কি রিপ্লাই আসে এই চিন্তায় ঘুম আসছে না।
পেজ ৮
অনুর বাবার কল আসছিলো…মায়ের সাথে কথা বলছিলেন। ওনাদের দিক থেকে কিছুটা হ্যাঁ সম্বোদক আভাস পাওয়া গেছে তবুও ওনারা আরো একবার ঘুরে যেতে চান। আর আমার অভিভাকদের সাথে কথা বলতে চান।
পেজ ৯
ছোট মামা আসছেন আজ। আমার অভিভাবক তিনি। ছোট থেকে খুব যতন করে শাসন করেছেন আমায়। ওনি না থাকলে হয়ত আমিও রাস্তার ধারে পথ হারা বেপোয়া ছেলে হয়ে যেতাম। আমার আজ এউ ব্যাবসায়ের প্রথম যে মূলধনটা ওনারই দেওয়া। ফেরত দেই নি। ওনার কাছে ঋনী হয়ে থাকতে চাই।
মামার সাথে অনুর বাড়ির লোকজন কথা বলে বিয়েটা পাকাপোক্ত করে নিয়েছেন। শুধু যে মামা ছিলেন এমনটা নয়। সমাজের কিছু লোকজন আর আমা জেঠা সেজো টাও ছিলেন। কাবিন নানা টাও ফিক্সড করে ফেলেছেন ওনারা।
আজ কিছুটা শান্তি লাগছে মনে। জীবনে সব কিছুই হাসিল করে নিয়েছি শুধু একজন জীবন সাধীর প্রয়োজন ছিলো সেটাও হয়ে গেলো। এখন শুধু তাকে ঘরে নিয়ে আসব।
পেজ ১০
বিয়ের দিন টা ঘনিয়ে আসছে। মাঝে মাঝে অনুর সাথে কথা বলতে মন চায়। বলতে পারি না। জানতে ইচ্ছে করে কেমন অনুভুতি হচ্ছে তার। নতুন জীবনের আভাস টা কেমন লাগছে তার৷ তার কনটাক্ট নাম্বার টা আছে আমার নিকট।তবুও কেনো যেনো কল দিতে ইচ্ছে করে না। ইচ্ছে করলেও দিই না। থাকনা কিছু কথা অব্যক্ত। অব্যক্ত অনুভুতি গুলো সত্যিই অসাধারণ লাগে। আচ্ছা অনুও কি আমার মত করে আমায় নিয়ে ভাবছে যেমন টা আমি ভাবি তাকে নিয়ে। আমি তো নাহয় তাকে জানি। সে কি আমায় জানে..?
ডায়েরীটা আর বেশি পড়া যাবে না। কারণ একদিনে সব পড়তে গেলে বিপদে পড়ে যাবো। কখন আবার ওনি এসে পড়ে।
ডায়েরি টা জায়গা নত রেখে দিলাম।
ইসস আমি বিয়ের আগে কতটা চিন্তিত ছিলাম এই ভেবে কেমন হবেন ওনি। তার ভাবনা গুলো কেমন হবে। সে কি আমায় বুঝবে?.?/ আর এদিকে ওনি আমাকে বিয়ের আগ থেকেই জানতেন। আনার চোখের প্রেমেও পড়েছেন। তবে আজ পর্যন্ত দেখলাম ওনাকে আমার চোখের গভীরতায় হারিয়ে যেতে।
এসব ভাবতে ভাবতে রুম থেকে বেরুবো তখনই…
চলবে…
#মি_পার্ফেক্ট
২০
ইসস আমি বিয়ের আগে কতটা চিন্তিত ছিলাম এই ভেবে কেমন হবেন ওনি। তার ভাবনা গুলো কেমন হবে। সে কি আমায় বুঝবে?.?/ আর এদিকে ওনি আমাকে বিয়ের আগ থেকেই জানতেন। আমার চোখের প্রেমেও পড়েছেন। তবে আজ পর্যন্ত দেখলাম ওনাকে আমার চোখের গভীরতায় হারিয়ে যেতে। আস্ত একটা মিথ্যুক শালা…
আচ্ছা ওনি আমার প্রেমে তো বহু আগেই পড়েছেন তবে কেনো একথা করেছেন আমার থেকে গোপন।।। চাইলে তো আমাকে জানাতে পারতেন। জানালে তো ভালোই হতো অন্তত প্রেমটা তো করা হতো।।।
ধর কিসব বলছি।।।আমার তো প্রেমের শখ কখনোই হয় নি। কতসব ছেলে আমাকে প্রপোজ করেছে। কত স্মার্ট পোলারা করছে। তাদের কে প্রপোজ গ্রহণ করি নি৷ ওনার টাও করতাম না হয়ত।
একদিক থেকে ভালোই হলো। ওনি আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন নি। দিলে হয়তো আমি ওনাকে বিয়েও করতাম না। আর ওনাকে বিয়ে না করলে আমি এত কিউট, স্মার্ট আর কেয়ারিং বর টা পেতাম না।
তবে একটা বিষয় রিনি কুত্তি সব বলছে ওনারে। আমি করছি কি পছন্দ করি। আমার সব কিছুই ওনাকে বলে দিয়েছে। শালী একটা। তাই তো বলি ওনি আমার সম্পর্কে এত কিছু জানলেন কি করে।
কিছুক্ষণ পর ওনি আসছেন। হাতে একটা ব্যাগ। বাজার নিয়ে এসেছেন।
এই ওনার একটা সমস্যা যেখানেই যান যেটা ভাল লাগে হাতে করে নিয়ে আসেন। এখন আবার কি নিয়ে আসছেন আল্লাহয় ভাল জানে।
রুমে বসে কিসব করছে। পুরো রুম টাকে নাজে হাল করে ফেলছেন।
— একি অবস্থা করেছেন রুম টার…?(আমি রুমে ডুকেই বললাম)
— আমার দিকে এক নজর তাকিয়ে আবার ফাইলে চোখ বুজলেন..
বাপরে কি ভাব ঠিক মত আমাকে দেখছেনও না… এই বুঝি ওনার ভালো বাসা। রুম গোছাচ্ছি আর নিজে নিজে বক বক করছি।।
ইচ্ছে করছে ওনার কোলে চড়ে বসছে। কিন্তু পারছি না। ওনি কাজ করছেন। ওনাকে ডিস্টার্ব করা টা কি ঠিক হবে। আর ওনি তো আজকাল আমার দিকে চেয়েও দেখেন না। হ্যাহ প্রথম প্রথম কত্ত কেয়ার। আর এখন ফিরে তাকানোর প্রয়োজন বোধ টুকুও মনে করছেন না৷ যেন আমি ওনার কেউই না। কোথায় গেলো ওনার সেই কেয়ার গুলো। উদাও হয়ে গেলো নাকি।
নাকি নতুন করে কারো চোখের প্রেমে পড়েছেন। পড়তেও কি?? আজকাল তো আমার চোখে দেখারই সময় হয় না ওনার।
— নীলু…?(নীলুকে ডাক দিলেন ওনি)
— জ্বি মামা..?(নীলু দৌড়ে এসে বললো)
— মামার জন্য চা নিয়ে আসতো তোর নানু কে বলে…(ওনি)
(নীলু রুম থেকে বের হওয়ার আগে আমি ডাক দিলাম তাকে)
— কি মামনী…?(নীলু)
— তুমি না তখন আমার ফোন চেয়েছিলে…গেমস খেলবে বলে…?(আমি নীলু কে বললাম)
— হুসসস…(ইশারায় বললো তার মামা আছে)
— কি হয়েছে…?(আমি)
— কিছু না…(বলেই দৌড় দিলো…ওনার দিকে তাকিয়ে দেখি ওনি পিছন ফিরে আছেন। হয়ত নীলু ওনার ভয়ে এমন দৌড় দিছে।)
আমি আর কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে পড়লাম। ওনি আমাকে চায়ের কথা না বলে নীলুকে ডাক দিয়ে বললেন। কাহিনী কি এতটা রাগ কিসের ওনার….
চা টা এনে টেবিলের রাখলাম।
ওনার চেয়ারের পাশেই দাড়িয়ে আছি। ওনাকে অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কি বলব তা-ই খুজে পাচ্ছি না।
কোনো কথা না বলে ওনার কোলে বসে পড়লাম। ওনি আহম্মকের মত নিশ্চুপ হয়ে গেছেন আমার এমন আচরনে। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।
আমার মুখের দিকে নিঃশব্দে চেয়ে আছেন। ওনাকে আমি ইশারায় কাজ করতে বললাম।
ওনার চায়ের কাপ টায় আমিও একটু ভাগ বসালাম।
ইসস আমার আরো একটা শখ আর ইচ্ছে পূরন হয়েছে।
খুব ইচ্ছে ছিলো প্রিয়জনের সাথে কোন এক বৃষ্টির দিনে এক কাপে দুজন ভাগাভাগি করে চা খাওয়ার৷ আজ সেই ইচ্ছে টাও আমার পূর্ণ হলো।
ওনাকে কিস করার প্রচন্ড ইচ্ছে জাগছে মনে।
ওনার গাল ধরে আমার দিকে ফিরালাম।
আমার ওনাকে চুমু খেতে ইচ্ছে করছে।
ইশারায় বলছি সব ওনাকে মুখে কিছু বলার সাহস পাচ্ছি না।
ওনি কিছু না বলে কাজ করেই যাচ্ছেন…..
ওনাকে একটা চুমু খেয়ে ওনার বুকে মাথাটা ঘুছে দিলাম
আচ্ছা আমি ওনাকে কিস করলাম এতে কি ওনার মনে একটুও অনুভুতি কাজ করে নি। ওনার মনের কোণায় একটুও কড়া নেড়ে উঠে নি। আমি কি এতটাই লাঞ্চনা ডিজার্ভ করি। যতটা লাঞ্চনা ওনি আমায় করছেন।
ওনি নাকি আমাকে ভালোবাসেন এই বুঝি ওনার ভালবাসা।
এহ এহ প্রথম প্রথম ওনার কত কেয়ার। এখন ওনার সেই কেয়ারিং গুলো কই গেলো।
সত্যিই ওনার এই অবহেলা গুলে আমি আর নিতে পারছি না। বুকটা ফেটে কান্না আসছে। ইচ্ছে করছে চিৎকার দিয়ে কাঁদি কিন্তু পারছি না।
ওনার বুকে মাথা গুছে কেঁদে চলেছি নিঃশব্দে। কাঁদতে কাঁদতে আমার হেঁচকি উঠে গেছে।
— এই কি হয়েছে তোমার…?(আমার কান্নার আমেজটা হয়তো ওনি বুঝতে পেরেছে হেঁচকি উঠাতে।)
— কিছুনা।।(নাক টেনে…ওনার বুকেই মাথা রাখা৷ তবে একটা ব্যাপার ভালো লাগছে যাই কিছু হোক ওনার বুকে মাথা রেখে কাঁদতে তো পারছি। এটাও এক ধরনে শান্তি।)
— তাহলে এভাবে কেঁদে সাগর কেনো বানিয়ে দিচ্ছো আমার বুক টাকে…?(ওনি)
— তো কি করব…?(কান্না তো বাবা চলছেই)
— কান্না কেনো করছো…?(ওনি)<
-- কান্না ফেলে কাঁদবো না তো কি হাসবো...?(আমি)
-- কিন্তু কান্না করার একটা তো কারণ আছে তাই না...?(ওনি)
-- হুহ..(নাক টেনে)
-- কারণ টাকি...?(ওনি)
-- আপনি আমাকে এড়িয়ে চলছেন কেনো...?(আমি)
-- আমি তোমাকে এড়িয়ে চলছি.???(ওনি)
-- হুহ..(আমি মুখটা গোমরা করে আছি)
-- কখন...?(ওনি)
-- আজকে কতদিনই তো আপনি আমার কাছে আসেন না জড়িয়ে ধরে ঘুমান না...একটা কিস পর্যন্ত করেন নি...আমি আপনাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে গেলে আপনি অন্যদিকে ঘুরে যান...এই যেমন এখন আপনি কি করলেন..? (আমি নাক টেনে টেনে কথা গুলো বলছি সাথে হেঁচকি তো আছেই)
-- কি করছি...?(ওনি)
-- আমি রুমে থাকা সত্তেও আপনি নীলু কে ডেকে চায়ের কথা বললেন... সেটা নাহয় বাদই দিলাম আমি যে এখন আপনার কোলে বসে আপনাকে এত গুলা কিস করলাম আপনি একটা চুমুরও প্রতিক্রিয়া করেছেন। করেন নি...আমি কি এতগুলা চুমুর পরিবর্তে একটা চুমুও ডিজার্ভ করি না। (আমি কান্না কিছুটা কমে আসছে কথা গুলো বলতে পেরে)
-- হুম ডিজার্ভ করতে কিন্ত এখন করোনা কারণ......
চলবে...
#মি_পার্ফেক্ট
২১
-- আমি রুমে থাকা সত্তেও আপনি নীলু কে ডেকে চায়ের কথা বললেন... সেটা নাহয় বাদই দিলাম আমি যে এখন আপনার কোলে বসে আপনাকে এত গুলা কিস করলাম আপনি একটা চুমুরও প্রতিক্রিয়া করেছেন। করেন নি...আমি কি এতগুলা চুমুর পরিবর্তে একটা চুমুও কি ডিজার্ভ করি না। (আমি কান্না কিছুটা কমে আসছে কথা গুলো বলতে পেরে)
-- হুম ডিজার্ভ করতে কিন্ত... (ওনি)
-- কিন্তু কি?
-- কিছুনা...
-- ওহ.(আমি)
-- দেখি সরো তো....(ওনি)
-- কেনো..?(আমি)
-- আমার টি-শার্ট টা যে এভাবে ভিজিয়ে দিলে...? (ওনি)
-- সরবো না আমি...(মুখটা গোমরা করে আহ্লাদী স্বরে)
-- ভিজা এটা নিয়ে থাকবো নাকি... (ওনি)
-- হুহ থাকবেন... আমি আরো ভিজাবো....আপনার কি?? (আমি)
-- তো আমার জামা কেনো...?যাও না তোমার সেই বন্ধুর কাছে???(ওনি)
-- আমার বন্ধুর কাছে কেনো???(আমি)
-- যার সাথে তোমার মেসেঞ্জারে সংসার...(ওনি)
আর কিছু বলার মত অবস্থা আমার নেই। বুঝে গেছি ওনি কি কারনে আমার সাথে এমন করছেন। ভুল টা আমারই। ওনার সাথে করা ব্যবহারগুলো আমাকে ফেরত দিচ্ছেন। ওনি বলেছিলেনও বরে, ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়।
কথাটা বলার উদ্দেশ্য আমি এখন বুঝতে পারছি। ওনার মনে অভিমান জমেছে খুব। তবে একটা বিষয় পুরো ক্লিয়ার আমি আমাতে আসক্ত তিনি। যার ফলে আমি অন্য কারো সাথে কথা বলি এটা ওনার অপছন্দ। ভালোই হলো একদিক থেকে ওনার মনে আমি কতটুকু জায়গা করে নিয়েছি এটা অন্তত বুঝতে পারছি।
ওনার কাজ শেষ।
-- দেখি ওঠো..?(ওনি)
-- কেনো..?(আমি
-- উঠবে না কেনো...?(আমি)
-- ভালো লাগছে আমার কাছে এভাবে থাকতে..? (আমি)
-- তাই বলে আমি ওয়াসরুমেও যেতে পারব না...?(ওনি
-- ওওও বলবেন তো আগে...(আমি)
-- বলার সুযোগ দিলে কই...?(বলেই ওনি ওয়াসরুমে চলে গেলেন)
ওনার কাজ করা ফাইল গুলো একটু খুললাম....বাপ রে আমার মাথায় তো কিছুই ডুকছে না। সব টাকার হিসাব। এত হিসাব কেমনে করে। ওনি পারেনও বটে। তবে ওনার হিসাব করার সিস্টেম টা অনেক দ্রুত। ক্যালকুলেটর কেও হার মানান তিনি।
-- ওই...?(আমি...ওনি ওয়াসরুম থেকে বের হওয়ার সাথেই বললাম।)
-- হুম..?(ওনি)
-- হিসাববিজ্ঞান টা একটু বেশিই বুঝতেন?? (আমি)
-- জানিনা...তবে টেনেটুনে পাশ করেছি..?(ওনি)
-- কত পেয়েছিলেন...?(আমি)
-- কত পেয়েছি জানিনা...তবে এ+ ছিলো ম্যাট্রিক ইন্টারে।
-- এটাকে কি পাশ করা বলে???(অবাক হয়ে)
-- তো কি বলে...?(ওনি)
-- বাপরে এ+ পাওয়ার পরেও বলে টেনেটুনে পাশ করেছে...?(আমি)
-- হুহ...
ওনি শুয়ে আছেন... রুম টা গোছগাছ করে ওনার পাশেই শুয়ে আছি। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না...ইচ্ছে করছে ওনার সাথে বসে সারা রাত গল্প করতে। কিন্তু ওনি তো শুয়ে আছেন।
-- উঠুন...(ওনার হাত ধরে টানতে টানতে বলছি...)
-- কি হয়েছে?? (ওনি)
-- আমার কাছে ভালো লাগছে না...?(আমি)
-- তো চোখ বন্ধ শুয়ে থাকো...(ওনি)
-- নাহ...ঘুম আসছে না....(আমি আহ্লাদী হয়ে)
-- তো কি..? (ওনি)
-- চাঁদ দেখবো...(আমি
-- তো যাও...আমাকে টানছো কেনো...?(ওনি)
-- আপনার বুকে মাথা রেখে আমি তারা গুনবো...(আমি)
-- আমার বুকে ব্যাথা করছে...?(ওনি)
দেখছি নি ব্যাটার অবস্থা অজুহাত দেখাচ্ছে।।।দেখাচ্ছি আমি কি করে তুই ঘুমাস আমিও দেখে নিবো।।।টানছি তো আমি টেনেই চলেছি। যতক্ষণ না তাকে নিয়ে বেলকনিতে যাচ্ছি আমার মনে কি আর শান্তির মা আসে।।।
আহ আমি পেরেছি ব্যাটাকে টেনে তুলতে আল্লাহ গো কি শক্তি তাকে শোয়া থেকে টেনে তোলা যায়। উঠে বেলকনির দিকে যাবে তখনই তার হাত টা ধরে ফেললাম।।।
-- কি??(ওনি)
-- কোলে নেন..?(আমি আহ্লাদী স্বরে)
-- তুমি কি খুকি...?(ওনি)
-- নাহ... ভবিষ্যৎ খুকির আম্মু আর আপনি আব্বু তাই এখন আপনি আমাকে কোলে নিবেন....?(আমি)
-- নাহ আমি পারবো না...(ওনি)
-- আপনি কোলে না নিলে আমি কিন্তু চিৎকার দিয়ে কান্না করবো...(আমি)
-- তো করো..?(ওনি)
-- কান্না কেনো করছি কেউ জিজ্ঞেস করলে বলব আপনি আমাকে মেরেছেন... (আমি)
-- তো...(ওনি)
-- কারণ জিজ্ঞেস করলে বলব যৌতুকের জন্য মারছেন।(আমি)
-- আমি মোহরানা দিয়ে বিয়ে করছি যৌতুকের জন্য কেনো মারব...?(ওনি.)
-- সেটা তো আপনি আর আমি জানি সবাই কি জানে নাকি...?(আমি মুখ বাকা করে)
-- মাপ চাই বোন....কোলে নিয়ে কোথায় যেতে হবে বল...তবুও এত বড় অপবাদ আমাকে দিস না...(ওনি হাত জোড় করে)
-- ঐ কে আপনার...?( চোখ গরম করে)
-- সরি ভুল হয়ে গেছে...
আমাকে কোলে নিয়ে বেলকনির টুলটায় বসিয়ে ওনিও পাশে বসলেন। ওনি হয়ত ভাবছেন আমি কেমন মেয়ে নিজের স্মামীর নামে এমন মিথ্যা অপবাদ দিতে চাইছি। তবে ওনি তো বুঝতে পারেন নি হয়তো পেরেছেন। ওনার কাছ থেকে একটু মধুর মুহুর্ত লাভের জন্য আমি এমন ড্রামা টা করেছি। নিজের অধিকার টা তো নিজেই আদায় করে নিতে হবে। আপনি অভিমান করেছেন আমি ভাঙ্গাচ্ছি।
-- আচ্ছা আপনার বুকের কোথায় ব্যাথা করছে...?(আমি)
-- জানিনা...(ওনি)
-- ওও... আচ্ছা চাঁদের মা বুড়ি টা কোথায়...?(আমি)
-- আমি কি করে বলব..? আর চাঁদের মা কই পেলে..?(ওনি)
-- আরে ছোট বেলায় শুনছি না...সূর্য আর চাঁদ দুই ভাই ছিলো...ওরা একদিন দাওয়াত খেতে গেলো একসাথে। যাওয়ার সময় তাদের মা বলেছিলো দাওয়াত খেয়ে আসার সময় যেন তার জন্য এক টুকরো গোস্ত আনে। কারন ওরা তো গরীব ছিলো তাই গোস্ত কম পেতো দাওয়াত থেকে আনলে একটু খেতে পারতো।।।।ওরা দুই ভাই আসার পর মা যখন তাদের কাছে গোস্ত চাইলো কিন্তু তারা কেউই আনে নি। তারা দুজনেই ভুলে গিয়েছিলো। তৎক্ষণাৎ চাঁদের মনে পড়লো তার দাতের কোনার একটু ফাঁকা জায়গায় একটু খানি গোস্ত আটকে আছে সে তখন গোস্তের অংশ টা তার মাকে বের করে দিলো। কিন্তু সূর্য তো আনতে পারেনি। কারণ তার দাঁতের কোথায়ও একটু ফাঁকা জায়গা নেই যেটাতে করে সে মাংস আনবে...সূর্য মাকে ভালবাসে না এটা ভেবে সূর্যের মা তাকে ত্যাগ করে আর চাঁদের কাছে চলে যায়। সূর্য কস্ট পেতে পেতে চাই হয়ে যায় তাই তো তার রোদের এত তাপ। আর চাঁদের আলো এত মিস্টি। (আমি এতক্ষণ ওনাকে গল্প টা শুনালাম)
-- তোমাকে এইসব কথা বলল কে...?(ওনি)
-- এগুলা কথা নয় সত্য কথা...?(আমি)
-- সেই যাই হোক বলল টা কে...?(ওনি)
-- আমার দাদী।।।জানেন ছোট বেলায় যখন বাড়িতে কারেন্ট চলে যেতো তখন এরকম চাঁদের আলোয় আমার দাদী আমাদেরকে নিয়ে একটা বিছানা বিছিয়ে বসে এরকম কত সত্য ঘটনার গল্প শুনাতেন...(আমি উৎফুল্ল হয়ে)
-- তোমরা সেসব এখনো বিশ্বাস করো...?(ওনি)
-- হুহ...আরো একটা সত্য ঘটনা শুনবেন...বাগ আর সিংহের.. (আমি)
-- নাহ আজ নয় অন্য আজ যদি সব শুনে ফেলি তাহলে অন্যদিন কি শুনব...(ওনি)
-- আর অনেক গল্প আছে...যতই শুনবেন শেষ হবে না....(আমি)
-- না একদিনে সব একটার বেশি গল্প শুনতে হয় না...কালকে আবার শুনবো।
ওনার বুকে মাথা রেখে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছি। চাঁদের আলোর মত আমার মনটাও আজ আলোকিত হয়ে আছে ওনার বুকে মাথা রেখে যে শান্তি পাচ্ছি....এভাবেই যে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ছি জানা নেই।
সকালে আজানের স্বরে ঘুম থেকে উঠে দেখি ওনার বুকেই আছি তবে বিছানাতে। কিন্তু একি আমার এই অবস্থা কেনো...?
কি হয়েছে আমার...?
চলবে...