মি_পার্ফেক্ট,২২,২৩,২৪

0
965

#মি_পার্ফেক্ট,২২,২৩,২৪
আতাউর রহমান হৃদয়
২২

সকালে আজানের স্বরে ঘুম থেকে উঠে দেখি ওনার বুকেই আছি তবে বিছানাতে। কিন্তু একি আমার এই অবস্থা কেনো…?
কি হয়েছে আমার…?

হয়ত রাতে বেলকনিতেই ওনার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ওনি হয়ত আমাকে বিছানায় এনে শুইয়ে দিয়েছেন….
কিন্তু ঝামেলা হলো আমার শরীরের জামা চেঞ্জ। নাইট ড্রেস টা চেঞ্জ করলো টা কে…?
উপসস মাথায় আসছে…ওনি ছাড়া তো রুমে কেউ নেই… তবে কি ওনিই কাজটা করেছেন??
শোয়া থেকে উঠতে যাবো বাট পারছি না ওনি শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছেন। এমন ভাবে ধরে রেখেছেন যেন চেয়ে দিলে আমি কোথায় হারিয়ে যাবো। ইসস ওনি জেগে থেকে যদিও এখন এমন করে জড়িয়ে ধরেন না তবে ঘুমের ঘোরে ঠিকই ধরে রেখেছেন। এর অর্থটা দাঁড়ায় ওনি অভিমান করে আছেন আমার উপর। তবে আমার প্রতি ভালবাসা টা ঠিকটা ঠিক আছে ওনার মনে।

কথা গুলো ভাবছি আর মুচকি মুচকি হাসছি। ওনার বুকে থুতনিটা রেখে ওনার মুখমন্ডলের পানে চেয়ে আছি। কতটা গভীর ঘুমে ঘুমাচ্ছেন ওনি। এতটা গভীর ঘুম কেউ ঘুমাতে পারে। হয়ত পারে। যেমন টা ওনি ঘুমাচ্ছেন। ওনার বাম গালে একটা চুমু খেলাম। শুনেছি একটা চুমু খেলে নাকি ছেলেদের বউ মরে যায়। আর ওনার বউটা যদি মরে যায় তাহলে ওনার কি হবে। জ্বালাবে কে ওনাকে…? তাই ডান গালেও একটা চুমু দিলাম। ব্যাটা টা আজকাল ঠিক মত আদর করছে না আমায়। একদমি ভাল্লাগে না। মন চায় মাঝে মাঝে তারে ধর্ষন করি। ব্যাটা লুচু। আগে কত সুন্দর করে আদর করতো। আর এখন ছুঁয়ে দেখা তো কথা। এক ঝলক তাকিয়েও দেখে না। ব্যাটা টা কি বুঝে না। তার একটু ছোঁয়া পেতে আমার মনটা প্রতি টা ক্ষনে ছটপট করে।

ইসস ব্যাটা টার ঘুমানো দেখতে দেখতে আমার নামাজের সময়টা মিস করে ফেলব।

কিন্তু নামাজ যে পড়ব আমার শরীর টা পবিত্র আছে তো??

ব্যাটা টা ঘুমের মাঝে যদি কিছু করে থাকে। করতেও কি তারই তো বউ। আর করলে তো ভালোই। বাট করছে কি না বুঝতে তো পারছি না।।।

একটা টেকনিক ব্যবহার করি। তাহলে জানতে পারব কিছু করছে কিনা?

— এই মিস্টার শুনছেন…?(ওনাকে হালকা একটু নাড়া দিতেই চোখ খুললেন..)
— হা কি…?(চোখে তার ঘুম)
— নামাজ পড়বেন না…?(আমি)
— হুহ পড়ব তো…(ওনি)
— তো উঠুন শুয়ে আছেন কেনো…?(আমি)
— হুহ উঠছি।। (বলেই আবার চোখ বন্ধ করে নিলেন)
— আরে আবারো ঘুমিয়ে পড়ছেন কেনো…? নামাজ পড়ে তারপর ঘুমান..? (আমি)
— হুহ…[ওনি উঠে দাড়ালেন…ওমা ওনার শরীরেও কিছু নেই একটা সেন্টু গেঞ্জি আর শর্ট প্যান্ট (হাটু অবধি)]
— গোসল করবেন নাকি…?(আমি…একটু সিউর হওয়ার জন্য বললাম)
— নাহ তো.. কেনো..?(ওনি বোধয় অবাক হলেন)
— গোসল করবেন না..?(আমি)
— আরে কেনো করবো…?(ওনি)
— কেনো রাতে কি কিছু করেন নি…?(আমি)
— কি করব..?(ওনি)
— তাহলে…(আমার আর ওনার শরীরের দিকে ইশারা করে বুঝালাম)
— আরে রাতে কারেন্ট চলে গেছিলো যার ফলে গরমে তুমি ঘামিয়ে গেছিলে তাই আমি তোমার ড্রেস টা চেঞ্জ করে দিয়েছি(ওনি)
— ওও কিছু করেন নি তাহলে…(নিরাশ হলাম)
— নাহ তো…(ওনি)
— ওওহহ কিন্তু আপনি আমার ড্রেস কেনো চেঞ্জ করতে গেলেন…?(আমি)
— তো কে করবে…?(ওনি)
— জানিনা।।। বাট আপনি তো আমার সব দেখে নিলেন…?(কান্নার ভান ধরে বললাম)
— এ আর নতুন কি…?(ওনি)
— তাই বলে…(আমি)< ওনি আর কিছুনা বলে লুঙ্গি আর গেঞ্জি পড়ে টুপি টা নিয়ে চলে গেলেন মসজিদে.... ভাবছি ওনি আমার ড্রেসটা কেনো চেঞ্জ করতে গেলেন। করছে ভালো কথা তবে ওনি তো আমার সব দেখে নিলেন। এটা ভেবেই আমার কান্না আসছে....তবুও তাতে কি ওনি তো আমারই।।।আর আমি তো ওনার দেখতেই পারেন। তাই বলে আমাকে ঘুমের ঘোরে রেখে। দুর কিছুতেই শান্ত হতে পারছি না। ওনার প্রতি রাগ হচ্ছে খুব.. নামাজ শেষ কোরআন শরিফ তেলোওয়াত করছি। ওনি এসে বিছানার কোণে বসে বসে আছেন চোখ বুজে হয়ত আমার তিলাওয়াত শুনছেন। তবে খুব গভীরভাবেই শুনছেন তিনি। তাই আমিও একটু জোরেই পড়ছি। তবে তিলাওয়াতের শব্দ টা রুমের মধ্যেই যেন সীমাবদ্ধ থাকে এমন সূরে পড়ছি। কারণ মেয়েদের কোরআন তেলওয়াতের শব্দ ঘরের বাহিরে যাওয়া নিষেধ আছে। তাই এমন ভাবে পড়ছি যাতে ওনিই শুধু শুনতে পান। -- আপনি এখনি বেরুবেন নাকি একটু লেট হবে...?(আমি...) -- কিছুক্ষণ পর বের হবো...কেনো বলো তো..?(ওনি) -- কিছুক্ষণ পর বের হলে তো নাস্তা বানাতে হবে না...আপনি নাস্তা করবেন না...?(আমি) -- বাহিরে করে নিবো নি....(ওনি) -- হুহ বাসায় বউ থাকতে ওনি বাহিরের খাবার খাবেন তাই না...আর আপনি বাহিরের খাবার খেতে পারেন না তবুও খেতে বলছেন কেনো....?নাকি আমি রান্না করবো দেখে...?(আমি) -- আরে এতটা গভীরে যাচ্ছো কেনো...? আমি তো এমনিতেই বলেছি...(ওনি) -- হুহ আমি জানি কেনো বলেছেন...?(ভেংচি কেটে চলে আসছি) সবার আগে গল্প পেতে নিচের লিংকে joind করেন⬇ https://facebook.com/groups/985984408460727/ ওনি বেরিয়ে পড়েছেন আপাতত আমার আর কোনো কাজ নেই ১০ টার আগে। ওনার ডায়েরি টা হাতে নিয়েছি। পেজ ১১ খুব ইচ্ছে করছে অনুকে দেখতে। সব বাধা অতিক্রম করে নিয়েছি। তবুও দেখতে যেতে মনের মাঝে হাজারো বাধা জমে আছে। তবে এটা ভেবে শান্তি পাচ্ছি আর দুদিন পর অনুকে চিরতরে আমার করে নিবো। মেয়েটা খুবই চঞ্চল। খুব ভালো লাগে তার চঞ্চলতা। ঐ দিন যখন সে তার বন্ধুদের সাথে মাঠের কোনায় দুস্টুমিতে মেতে উঠেছিলো তখন যে কেউ একজন তাকে মন ভরে দেখছিলো সে কি জানতো। একটা মেয়ে ইন্টারে পড়ে তবুও সে কি করে এমন লাফালাফি করতে পারে আমার জানা নেই। কিন্তু তার এমন লাফালাফি করাটাও যে আমার কাছে ভালো লাগে...আমার সামনে দিয়ে যখন সে হেঁটে যাচ্চিলো কিসব ভাষায় সে কথা বলছিলো তার বন্ধুদের সাথে। কিসব খাবার নাম সে জানে আল্লাহই ভালো জানেন। তেলাপোকার চড়চড়ি। টাকি মাছের ফ্রাই। উগান্ডার গন্ডারের হাড়ের জোস। ইদুরের পটির ভর্তা। ইয়াক থু ভাবতে নয় শুনতেই আমার ভমি আসে। তবুও ওর সব কিছুই আমার কাছে ভালো লাগে....হয়ত ভালবাসার মানুষের সব কিছুই ভালো লাগাটাকেই ভালবাসা বলে। আমি ভালোবাসি আমার অনুকে....তবে... হুট করেই একটা শব্দ হলো আমি ভয়ে ভয়ে তাকাতেই আমার কলিজায়.... চলবে... #মি_পার্ফেক্ট ২৩ হয়ত ভালবাসার মানুষের সব কিছুই ভালো লাগাটাকেই ভালবাসা বলে। আমি ভালোবাসি আমার অনুকে....তবে... অনু আমাকে ভালবাসে তো। এখন হয়তো তার সাথে আমার তেমন কথা নেই। পরিচয় টাও নেই ঠিকঠাক ভাবে।বিয়ের পর সে আমায় ভালবাসবে তো। আমি যেমন টা তাকে নিয়ে ভাবি সে আমাকে নিয়ে ভাববে তো। পেজ ১২ অনুকে আজ বিয়ে করে নিজের করে নিলাম চিরতরে। মেয়ে টা যে এতটা সুন্দর জানতাম না। বিয়েড আগে তার চোখ গুলোই দেখেছিলাম। আর বোনের দেখানো পিকটাতে এক ঝলক তাকিয়েছিলাম তাও শুধু চোখ গুলো দেখেছিলাম। তবে আজ একটু দেখলাম তাকে। একটুর বেশি তার দিকে তাকানোর ক্ষমতা আমার হয়নি। খুব বেশি সৌন্দর্যের অধিকারীনি সে। খুব সুন্দর লাগছিলো আজ তাকে। লাল শাড়ী নেয় নি আমার বোন বিয়ের শাড়ী টা। নীল কালারই নাকি তার পছন্দ। তাই তো নিজের পছন্দের রংয়ের শাড়ীটাই নিলো তার ভাবির জন্য। শুনেছি অনুর নাকি নীল শাড়ীই পছন্দ৷ তবে আমার যে কালো শাড়ীই পছন্দ এটা তো বোনের অজানা নয়। হয়ত কালো রং টা শোকের প্রতীক। তাই বলে বিয়ের শাড়ী টা কালো রং হয় না। বিয়ের স্টিজে যখন অনুর পাশাপাশি বসলাম। তখন মনে হলো মেয়েটা আরে দুর মেয়ে কিসের আমার বউ। বউ আমার। সে স্বস্তিতে বসতে পারছে না। বিষয়টা নজর এড়ালো না আমার। আমার পাশে কম্পিটবল না নাকি অন্য কোনো বিষয়। শুনেছি মেয়েদের পার্সোনাল প্রবলেম হলে ওদের বসতে চলতে ফিরতে সমস্যা হয়। হয়ত অনুরও তেমন কিছু হয়েছে। তবুও যে তাকে বসতে হয়েছে আমার পাশে। কিছু সময় পর রিনী কে জিজ্ঞেস করলাম গোপনে। বিষয়টা ক্লিয়ার আমার কাছে। অনুকে যখন গাড়ীতে উঠানো হচ্ছিলো মেয়ে টা কাঁদে নি তবে খুব কস্ট সহ্য করছিলো। সেটা তার মুখ দেখেই বুঝা যায়। গাড়িতে বসে লক্ষ করলাম খুব কাঁদছে সে।তবে নিঃশব্দে। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়েই চলেছে তার। হয়ত এতদিনের চিরচেনা বাড়িটাকে চেয়ে আসতে কস্ট হচ্ছে তার। রেখে আসছে ছোটবেলার হাজারো স্মৃতিময় সেই রঙিন স্বপ্ন গুলো। মা-বাবা ভাইকে রেখে কখনো হয়ত থাকে নি। কি করবে বাস্তবতা টাই যে এমন। মেয়েদের নির্দিষ্ট কোনো বাড়ি থাকে না। জন্মের পর বিয়ের আগ পর্যন্ত বাবার বাড়ি। বিয়ের পর স্মামীর বাড়ি। শেষ বয়সে ছেলের বাড়ি। তবে এরা মায়ের জাত। যখন যে বাড়িতেই অবস্থান করে এরা সেই বাড়িটাই ওদের। মেয়ে বিহীন একটা বাড়ী সবসময়ই অসম্পূর্ণ। এদের মর্যাদা সবসময়ই সবার উপরে। পুরো বাড়িটাকেই এরা সুন্দর করে নিজের হাতে সাজিয়ে রাখতে পছন্দ করে। যখন যেথায় যেই পরিস্থিতিতে অবস্থান করে এরা সেথায় নিজেকে সেই পরিস্থিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে জানে এরা। যেটা একটা ছেলে চাইলেও করতে পারে না। সময়টা রাত সাড়ে দশটার একটু বেশি রাস্তার কুল ধরে হাটছি উদ্দেশ্য নিকস্থ বাজার। বৃষ্টি নামবে হয়ত। দ্রুত পা চালানো শুরু করলাম। বাসায় ফিরতে হবে। সদ্য বিয়ে করা বউকে রুমে বসিয়ে আমি রাস্তায় হাটছি। এইটা বোধয় ইতিহাসে বিরল। তবে কি করবো বউয়ের জন্য এটুকু তো করতেই পারি। চাইলে বন্ধুদের দিয়ে জিনিস গুলো আনিয়ে নিতে পারতাম। তবে হারামিরা পরে আমাকে ঠাট্টায় মেতে উঠতো। তাই নিজেই চলে এলাম।
বাজার থেকে ফিরে রুমের সামনে আসতে আসতে সাড়ে এগারোটা বেজে গেলো। দরজাটা একটু ফাঁক করে খাটের দিকে তাকাতেই একটু ধমকে দাড়ালাম। মেয়েটা দুপা খোছ করে হাটুতে মাথা ঘুছে দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। হয়ত আমার আগমনের অপেক্ষায় সে অপেক্ষার প্রহর গুনছে। এটাই যে নিয়ম। নিয়ম ভেঙ্গে যে সে নিয়মের বাহিরে যেতে পারবে না। ভয়ে আছে সে বোধয়। এই বুঝি নিজের অধিকার টা নিয়ে নিবো আমি। আহারে সে বোধয় জানে না। আমার দেহের চাইতে মনের ক্ষুদা বেশি। আমি তো তাকে সবসময় নয়ন ভরে দেখতে চাই। নীল শাড়ী পড়ে নীল পরীটাহ আমার জন্য অপেক্ষা করছে আর আমি সেই দৃশ্য একটু আড়াল থেকে দেখছি। বিষয়টা সত্যিই অনুভব করার মুহুর্ত। এমন মুহুর্ত হয়ত কোন ছেলে বর বেসে তার সদ্য বিয়ে নববধু হতে অনুভাবিত করতে পারে নি। সবাই যে সবকিছু অনুভব করতে পারে না। আমিও হয়ত কোনো না কোন কিছু মিস করেছি অনুভাবিত করতে। কাছে গিয়ে খুব বলতে ইচ্ছে করছে কি গো বউ ভয় কিসের তোমায় বিয়ে করেছি সারাজনমের জন্নে। এই একটা রাত তোমায় কাছে না পেলেও আমার চলবে। আমি চাই সারাজনম তোমায় কাছে পেতে। তবে আজ যে আমার বউটার জন্মদিন হয়তো সে ভুলেই গেছে। কিন্তু আমি যে ইচ্ছে করেই আজ বিয়ের দিন টা ঠিক করেছি যে তার এই জন্মদিন টায় তার সাথে কাটাতে পারি। বউটাকে আর কত দুর থেকে দেখব এবার তো একটু কাছে যাই।

&তার হাতে একটা প্যাকেট আর কালো রংয়ের ওয়ান পিচ জামা দিলাম। হয়ত এটাই তাকে কালো রংয়ের প্রথম কাপড় দেওয়া তবে এটা শেষ নয়। হয়ত প্রতিবারই কালো রংয়ের কাপড় পাবে সে আমার কাছ থেকে।

(সবার আগে গল্প পেতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন⬇

https://facebook.com/groups/985984408460727/ )

পেজ ১৩

ইসস বউটাকে কালো রংয়ে একদম আমার রানীর মত লাগছে। আমার রানীর মত কেনো?? সে তো আমারই রানী।
তার সামনে কেক টা রাখাতে সে একটু বেশিই চমকে উঠলো হয়ত।

সকালে ঘুম থেকে উঠে তো আমি অবাক। কালো শাড়ী পড়ে আমার বউ ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাড়িয়ে চুল ঝাড়ছে। হয়ত গোসল করে বেরিয়েছে। বুদ্ধি আছে বউয়ের বলতে হয়। যদি গোসল না করতো তাহলে নানা কটুক্তি হজম করা লাগতো তার।

ইচ্ছে করছে তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরতে। তার কোমর থেকে শাড়ী টা একটু সরে গিয়েছে। ইসস এই দৃশ্য দেখলে মনে হয় না কোনো পুরুষই নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমি কেমনে করি। তবুও করতে হবে। বউটা আমার অসুস্থ। পরে বেশি অসুস্থ হলে আমারই ভোগান্তি। গলার হাড় গুলো ইসস এতটা ভাংগা দেখা গেলে যে কেউ বলবে ভিটামিনের অভাবে ভুগছে। তবে আমার যে এমনই পছন্দ। কিন্তু তার কোমর থেকে যে আমার চোখটা সরছেই না। এক দিকে ঝুকে চুল গুলো সাইডে নিয়ে মুছেই চলেছে সে।

আজকে আর পড়া যাবে না। ওনি এসে পড়বেন যেকোনো সময়।

তবে ওনি আমাকে এতটা গভীর ভাবে দেখেন সবসময় আর আমি বুঝতেই পারি না। শুনেছি মেয়েদের নাকি পিছন থেকেও যদি কেউ দেখে তাহলে সেটাও নাকি তারা দেখে ফেলে। আর ওনি আমাকে কত সময় কত এঙেল থেকে দেখেন আর আমি বুঝতেই পারি না…বুদ্ধু একটা আমি।

হুট করেই ডাক পড়লো…কিন্তু কে ডাকলো বুঝে উঠতে পারলাম না…ডায়েরি টা হাতেই আছে আমার…

চলবে…

#মি_পার্ফেক্ট
২৪

হুট করেই ডাক পড়লো…কিন্তু কে ডাকলো বুঝে উঠতে পারলাম না…ডায়েরি টা হাতেই আছে আমার…

মা ডেকেছেন বোধয়।

— আম্মু ডেকেছেন আমায়….?(আমি মায়ের রুমে গিয়ে)
— হ্যাঁ মা…বস এখানে.. (ওনার পাশে বসতে বললেন)
— (মায়ের পাশে বসলাম)
— আমার চুল গুলো তে একটু তেল দিয়ে দিবি….(মা আমাকে অনুরোধের স্বরে বললো)
— হুম দিন মা৷৷ (আমি)
— জানো বউমা একটা সময় আমার চুলগুলো অনেক সুন্দর আর বড় ছিলো ঠিক কোমরে এসে পড়ত…(মা খুব আবেগী হয়ে বললেন)
— তাই নাকি মা..এতদিন আপনার চুলে তেল লাগিয়ে দিতো কে….?(খুব আগ্রহী হয়ে)
— কখনো ইফতি আবার কখনো তোমার ননদে…(ওনি)
(বাহ আমার বরটা দেখি সব কাজই জানে যাক তাহলে মাঝে মাঝে আমি লাগিয়ে নিতে পারবো)
— ওও তাই নাকি… (অবাক হলাম)
— হুহ…একদম তাই…(শাশুড়ী মা)
— আচ্ছা মা একটা কথা বলি…(অনুরোধী গলায়)
— হুম বলো…(আম্মু)
— আপনি তো কলেজও পড়েছেন…তাই না…(আমি)
— হুহ…(মা)
— কখনো কোনো ছেলে আপনাকে প্রপোজ করেনি…?(মা)
— হুম করেছে তো…(মা)
— প্রেম করেছেন..?(আমি)
— নাহ…আমার ভাইয়েরা অনেক স্ট্রিক্ট ছিলো আর তেমন ইন্টারেস্ট ছিলো না…(মা)
— ওওও…আচ্ছা আপনাকে ছেলেরা কিভাবে প্রপোজ করেছে…?(আমি)
— তোমাদের মত তো আর ফোন কলে বা মেসেজের যুগ চিলো না তখন।।। তখন তো চিঠির যুগ ছিলো…আর তখনকার প্রেম গুলো তে এখন কার এত চাহিদা ছিলো না…(মা)
— ওও..
— একবার একটা সিনিয়র ভাই আমার এক বান্ধবীর মাধ্যমে আমার বইয়ের ভিতর একটা চিঠি দিয়ে ছিলো…জানো ওর চিঠি টা অনেক সুন্দর ছিলো…হাতের লিখা গুলো সুন্দর ছিলো আর চিঠি তে থাকা কথা গুলো অসম্ভব সুন্দর ছিলো।। পরে একবার জানতে পেরেছিলাম কোন একটা উপন্যাস হতে কপি করেছিলো…তাতে কি হাতের লিখা চিঠি। (মা)
— চিঠি টা কি করেছিলেন পরে…?(আমি)
— বান্ধবী কে দিয়ে দিছিলাম…আমার কাছে থাকলে যদি ভাই কিংবা আমার মায়ের হাতে পড়ত তাহলে খবর করে দিতো…(মা)
— ওওও..আচ্ছা আম্মু.. (আমি)
— হুহ বলো…
— আব্বু কেমন ছিলো…?মানে ওনি মানুষ হিসেবে কেমন ছিলেন…?(আমি)
— হ্যাহ…(একটা দীর্ঘ শ্বাস নিলেন) ইফতিকে দেখছো…ঠিক ওর মত তবে ধবধবে ফর্সা ছিলেন তিনি। আর ওনার আচরণ ছিলো অনেক ভালো…সবাই ওনাকে অনেক সম্মান করতো। কখনো কারো সাথে ঝগড়া হতো ওনর সাথে। আর ওনি স্মামী হিসেবে ছিলেন একদম পার্ফেক্ট। আমার অনেক যত্ন নিতেন। জানো যখন ইফতি গর্ভে ছিলো তখন আমাকে দুচোখের আড়াল হতে দিতেন না। আমার প্রায় কাজ গুলো ওনি করে দিতেন। কত ধরনের ফল যে আমাকে খাওয়াইছেন তার হিসেব নেই যেনো তার সন্তান টা পৃথিবীতে পরিপূর্ণ হয়ে আসে। যখন ইফতি ভূপৃষ্ঠ হলো তখন সে কুচকুচে কালো হয়ে জন্মেছিলো তবুও ওনার কোনো অভিযোগ ছিলো না। অনেক খুশি ছিলো। আমি শুধু বলেছিলাম ছেলে তো আমাদের কালো। ওনি আমাকে এমন একটা ধমক দিয়েছিলেন না…আমার এখনো মনে পড়লে ভয় লেগে উঠে। প্রথম সন্তানের বাবা হলে ছেলেরা কতটা খুশি হয় সেটা আমি ওনাকে দেখে বুঝেছিলাম। কত স্বপ্ন ছেলে নিয়ে তার। তবে ছেলে রা আরো বেশি খুশী হয় যখন প্রথম সন্তান ছেলে হওয়ার পর দ্বিতীয় সন্তান মেয়ে হয়। তখন তারা আত্মহারা হয়ে উঠে খুশিতে। তবে আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী তে আমার মেয়েটা তার বাবার মতই হয়েছে। তবে ওনার সব ভালোর মাঝে একটা খারাপ দিক ছিলো।
(মা খুব আবেগী হয়ে কথা গুলো বলছেন। একটা মেয়ের যখন বয়স হয়ে যায়। তবুও তার আবেগ কমে না৷ এটা আমার শাশুড়ী কে দেখে বুঝলাম। ওনার মনে অনেক প্রেম। তবে ওনার কথা বলতেই হয় খুবই সাধারণের উপর অসাধারণ এক মহিলা তিনি। সংসার টাকে খুব শক্ত করে রেখেছেন।)
— কী..?(আমি)
— খুব রাগী ছিলেন। ( ওনি)
— ওও কখনো রাগ করেছেন আপনার উপর…(আমি)
— হুম করেছে তো…(মা)
— কখন…?(আমি)
— একবার আমি আমার এক চাচাতো ভাইয়ের সাথে অনেকটা হেসে হেসে কথা বলেছিলাম বলে….সে কি রাগ ওনার। ২ মাস কথাই বলেন নি আমার সাথে…(আম্মু)
— ওও…আপনার ছেলেরও কি এমন রাগ আছে…?(আমি)
— ওর বাবার থেকে আর একটু বেশি…(আম্মু)
— কি বলেন…?(আমি)
— হুম…আমরা তো ভুল করেও ওকে রাগাই না…(আম্মু)
— ওওও..।
— বাহ শাশুড়ী বউমার তো দেখি ভালোই জমেছে দেখছি…(হুট করেই ওনি এসে কথা গুলো বললেন)
— তুই কখন আসলি…?(আম্মু)
— এই তো এখন…সরো তো….কি করছে দেখো তো…(মায়ের চুল থেকে আমার হাত সরিয়ে দিলো.)
— কি করছে…?(আম্মু)
— সব চুলগুলো জট বেঁধে ফেলছে…(ওনি)

আমি পাশে বসে দেখতে লাগলাম…খুব যত্ন করে ওনি মায়ের চুল গুলো আঁচড়ে দিচ্ছেন….একটা ছেলে কি করে এতটা কাজ কি করে জানে… বাহিরে যেমন ব্যবসা দিক থেকে ফীট। তেমনি বাসায়ও পার্ফেক্ট। সব দিক থেকে পার্ফেক্ট। আমার মিঃ পার্ফেক্ট।

ওনি রুমে বসে বসে মোবাইল টিপতেছে….

— ওই…(আমি)
— হুহ…(ওনি)
— আপনাকে কিছু বলার আছে…?(আমি)
— হুহ কি…?(ওনি)
— আপনাকে ভালবাসি…(লজ্জায় আমি নিচু করে আছি)
— হুহ…(ওনি)
— আপনার পার্ফেক্ট বউ হতে চাই….আপনাকে অনেক ভালবাসা দিতে চাই…আপনার কাছ হতে অনেক অনেক ভালবাসা চাই…(আমি মাথা নিচু করে কথা গুলো বলছি। ভাবছি এই বুঝি ওনি আমাকে জড়িয়ে নিলেন নিজের মাঝে।।কিন্তু নাহ ওনি এমন কিছুই করছেন না।
— হুহ….(মাথা টা তুলে দেখি ওনি ফোনের মাঝে ডুবে আছেন আমার কথায় তার কোনো হুদিসই নেই।)
ওনার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে দেখি ওমা ওনি ফেসবুকে গল্প পড়ছেন….শালা আমার কথা না শুনে গল্প নিয়া আছে কেমন টা লাগে কও তো দেহি। < -- কি হলো ফোন টা নিলে কেনো...?(ওনি) -- আপনি আমার কথা গুলো শুনেছেন...?(আমি) -- কি বলছো তুমি...?(ওনি) -- কিছুই শুনেন নি...?(আমার কান্না আসছে এতটা আবেগ আর আশা নিয়ে ওনাকে কথা গুলো বললাম আর ওনি এভাবে নিরাশ করে দিলেন আমায়...নিরাশ তো করেন নি আমার কথা গুলো ওনি শোনেনই নি নিরাশ করবেন কি করে....মনে হচ্ছে ওনার কাছে আমার কোনো গুরুত্বই নাই) -- হুহ...(ওনি) ওনি কি আসলেই শোনেন নি নাকি শুনেও না শোনার ভান করছেন..? -- এতটা কাছ থেকে বললাম...তবুও শোনলেন না..?(আমি) -- নাহ..(ওনি) -- তাহলে এখন শোনেন...(আমি) -- হুহ বলো...(ওনি) -- আমার বেবী লাগবে...?(আমি...খুব স্ট্রিট ভাবেই বললাম...ভাবলাম বেবীর মারপতে হলেও ওনার আদর ভালবাসা পাবো..) -- আচ্ছা ঠিক আছে আমি হাসপাতালে যোগাযোগ করছি...?(ওনি) -- ওই...আমি কি বন্ধা নাকি আপনি....আমার বাচ্ছা লাগবে।।।আপনার বাচ্চা আমার গর্ভে....(আমি কড়া গলায়...) -- এটা কি বাজারে পাওয়া তোমার ফুচকা নাকি যে বললেই এনে দিলাম...(ব্যাটার বুদ্ধি দেখছো আমাকে ফুচকার কথা বলে কথা ঘুরানোর চেস্টা করছে...কিন্তু এতটা সহজ না বাপু আমাকে মানানো আমি তো আজ তোমাকে আমার করে চাই...আজ নয় সারাজনমই চাই...) -- এতকিছু জানিনা... আগামী মাস থেকে যেনো রুমে মাদার হরলিক্স পাই...আর খেতে পারি।।। আমার ইচ্ছে করছে মাদার হরলিক্স খেতে মন চাচ্ছে...এটা তো স্বাভাবিক ভাবে খাওয়া যায় না তাই আমার অস্বাভাবিক চাই...(নরম ভাবে মাথা নিচু করে) -- তার জন্য আমার কি করতে হবে...একটা মাদার হরলিক্স কিনে আনলেই তো হয়...(ওনি) -- ওই সবকিছু বুঝে না বুঝার ভান কেনো করছেন...? (আমি) -- তো কি করবো....আর বাচ্চা আমার কাছে কেনো চাচ্ছো....?(ওনি) -- তো কার কাছে চাইবো...আমার কি আরো কয়টা বর আছে নাকি...?(আমি) -- সেটা তো তুমিই জানো....যাও না তোমার সেই..... ওনার কথাটা শুনে আমার কান্না আর থমে রাখার অবস্থা নেই...ওনি এমন কথা বলতে পারলেন... কি করে এই কথা টা ওনি আমাকে বললেন...ওনার মুখে কি কথাটা বলতে একটুও আটকালো না.... চলবে...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here