সুখহীন নিশিদিন পর্ব 8

0
402

সুখহীন নিশিদিন
পর্ব 8

দীপার ঘুম ভাঙলো অনেক ভোরে I তখনো সূর্যের আলো ভালো মতো ফুটে ওঠেনি I দীপা পাশে তাকিয়ে দেখল মেঝেতে বসে বিছানায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে বাবা I ছোটবেলা থেকেই বাবা এরকম করে I ওর জ্বর হলে সারারাত ঘুমায় না I হাত বাড়িয়ে বাবার চুলগুলো ছুয়ে দিল দীপা I হঠাৎ চোখে জল এসে গেল I ওর কারনে কত কষ্ট হয়েছে বাবার I কি দরকার ছিল বৃষ্টিতে ভেজার I যার জন্য এত কষ্ট পাচ্ছে দীপা , তার তো কোন অনুভূতি নেই ওর জন্য I দীপা আস্তে করে বিছানা থেকে নামল I সাবধানে, যেন বাবার ঘুম না ভাঙ্গে I পা টিপে টিপে ওয়াশ রুমে চলে গেল I হাতমুখ ধুয়ে বেরিয়ে এসে বাবাকে আর দেখল না I দীপা বিছানায় এসে বসেছে I মাথা ঘুরছে I খুব দুর্বল লাগছে I কিন্তু আর শুয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে না I
তৌহিদ ফিরে এলেন স্যুপের বাটি হাতে নিয়ে I এসে দেখলেন দীপা খাটে বসে আছে I একরাতে মেয়েটার কি অবস্থা হয়েছে I উনি কাছে এসে দীপার কপালে হাত ছোঁয়ালেন I জ্বর নেই I বিছানায় বসতে বসতে বললেন
হা কর I আমি সুপ টা খাইয়ে দেই
আপত্তি করল না দীপা I খেতে বিস্বাদ লাগছে I খাওয়ানো শেষ করে তৌহিদ জানতে চাইলেন
এবার বল কি হয়েছে ?
দীপা জবাব দিল না I চোখ নামিয়ে শুধু দুই দিকে মাথা নেড়ে না বলল Iবাবার দিকে তাকাতে ওর ভয় করছে I মনে হচ্ছে ওর চোখ দেখলেই বাবা সব বুঝে যাবে I
কারো সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে ?
দীপা আবারো দুই দিকে মাথা নাড়লো I তবে এবার ওর চোখ বেয়ে বড় বড় দুই ফোটা জল বুকের উপর পড়ল I কষ্টে তৌহিদের বুকটা ফেটে যেতে লাগলো I তার এত লক্ষী মেয়েটা এইভাবে কষ্ট পাচ্ছে I তৌহিদ মেয়েকে দুই হাতে বুকে টেনে নিয়ে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন
তুই কি কাউকে ভালবাসিস ?
দীপা উপরে নিচে মাথা নাড়লো I মুখে কিছু বলল না
তো এতে এত কান্নাকাটির কি আছে ? ছেলেটা কে? আমি চিনি ?
না
ইউনিভার্সিটির কেউ?
না
তাহলে কোথায় দেখা হয়েছে?
স্কুলে
স্কুলে ? ! স্কুল মাস্টার ?
না I বাবা তুমি অনেক বিরক্ত করো
আচ্ছা আচ্ছা I দেখতে কেমন ?
সুন্দর
অনেক সুন্দর ?
হ্যাঁ
আমার চেয়েও সুন্দর ?
যাও বাবা I আমি তোমাকে আর কিছু বলবো না
আচ্ছা বলতে হবে না I একদিন ওকে বাসায় ডাক I আলাপ করি
ও আসবে না I ও আমাকে ভালোবাসে না
ও তোকে বলেছে সেই কথা ?
না
তুই ওকে বলেছিস যে তুই ওকে ভালোবাসিস ?
না
তাহলে আগ বাড়িয়ে এত কথা ভাবছিস কেন ?
তুমি বুঝবে না
না বললে বুঝবো কি করে ? সবটা আমাকে বল I কিছু বাদ দিবি না
পরে বলব
পরে না I এখনই বলI তুই না বলা পর্যন্ত আমি কিছুই খাবো না I
দীপা তবুও কিছু বলছে না দেখে তৌহিদ বললেন
– আমি কাল রাত থেকে কিছু খাইনি
দীপা তবুও নিরব I তৌহিদ একবার আড়চোখে মেয়েকে দেখে বললেন
কালকে দুপুরেও খাইনি I ভেবেছিলাম তুই আসলে খাব I
আচ্ছা আচ্ছা বলছি I আগে তুমি খাবার নিয়ে এসো

তাহেরা বেগম ফজরের নামাজের পর তাড়াতাড়ি দীপার প্রিয় লুচি , হালুয়া , ভাজি বুন্দিয়া তৈরি করে ফেলেছেন I ট্রেতে খাবার সাজিয়ে দীপার ঘরে নিতেই যাচ্ছিলেন ততক্ষণে তৌহিদ রান্নাঘরে ঢুকে পরল
মা তাড়াতাড়ি খাবারটা দিয়ে দাও তো I আমি ওকে খাইয়ে আসি I
উঠছে নি ?
হ্যাঁ উঠেছে
তর টাও দিয়া দেই ? একলগে খায়া ল
আচ্ছা দাও
তৌহিদ খাবার নিয়ে ফিরে এলেন I লুচি ছিড়ে বুন্দিয়া দিয়ে মেয়ের মুখে তুলে দিলেন I দীপার মুখে কোন স্বাদ নেই I মিষ্টি কিছু খেতে ইচ্ছা করছিল I বুন্দিয়া দেখে ভালো লাগলো I দিপা বলল
তুমি খাও
না আগে তুই সব বল আমাকে
খেতে খেতে দীপা সমস্তটাই বলল বাবা কে I শেষটুকু বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলল I সব শুনে তৌহিদ আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে হাসতে লাগলেন I দীপা রাগ রাগ মুখ নিয়ে বলল
তোমার হাসি পাচ্ছে ? হাসছো তুমি ?
হাসবো না তো কি করব ? এই ছেলে তো তোর প্রেমে পাগল হয়ে আছে I আর তুই বলছিস তোকে ভালবাসে না I
তাহলে এমন কেন করছে ?
এমন করছে কারণ ও তো তোকে জানে না ? যখন জানবে তখন আর এমন করবে না I
জানবে মানে ?
জানবে মানে তুই সপ্তর্ষি সেটা না I ওর তো জানতে হবে তুই আসলে কেমন ? যখন জানবে তখন তোকে না ভালোবেসে পারবেইনা
দীপার মনে হলো সত্যিইতো নিষণ তো জানেই না ও কেমন I হঠাৎই ওর মনের মেঘ কেটে গেল I দুপুর পর্যন্ত ভালই ছিলো I বিকেলের দিকে ফোনটা এলো I ফোন করেছে রানা I হড়বড় করে বলল
দোস্ত একটা গ্যাঞ্জামে লাইগা গেছে
কি হয়েছে ?
নিষণ ভাই তোর নাম্বার চাইছিল I আমি দিয়া দিসি I
সর্বনাশ কোন নাম্বার দিয়েছিস ?
বুদ্ধি কইরা ল্যান্ডলাইন নাম্বার দিসি
ভালো করেছিস
শোন রানা I তুই আমার একটা উপকার করবি ?
এনিথিং ফর ইউ দোস্ত
আমি বলছি তোকে শোন মনোযোগ দিয়ে

দীপা রানার সঙ্গে কথা শেষ করে আর অপেক্ষা করল না I ঝটপট নিষণকে ফোন দিয়ে ফেলল I পাছে আবার ল্যান্ডলাইন নাম্বারে ফোন করে বসে I নিষণ ফোন পেয়ে ছোঁ মেরে ফোনটা রিসিভ করল Iসকাল থেকে ও কয়েক হাজার বার ফোন করেছে ও I ফোন বন্ধ ছিল I দীপা বহু কষ্টে ওর কণ্ঠস্বর ঠিক রেখে বলল
কেমন আছ নিষণ ?
তুমি কেমন আছো ? কোথায় এখন ? কি হয়েছিল কাল ?
আস্তে, আস্তে I এত প্রশ্ন একসঙ্গে করলে কি করে হবে ?
এলেনা কেন কাল ?
এসেছিলাম
তাহলে ? দেখা করলে না কেন ?
তোমাকে দেখলাম তুমি অন্য একটা মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিলে I তাই আর সামনে আসিনি
আমি ঠিক এই ভয়টাই পেয়েছিলাম I লুক , সপ্ত তুমি যা ভাবছো সেইরকম কিছুই না
মেয়েটা কে ?
এমনি, পরিচিত একজন
তুমি ওকে ভালোবাসো , তাই না ?
না একেবারেই না I নট এনিমোর
দীপা হতভম্ব হয়ে গেল I এই কথার মানে কি ? নট এনিমোর I কোনমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো
তারমানে একসময় ভালবাসতে ?
সে অনেক আগের কথা
কত আগের ?
স্কুল লাইফের I
ও তোমাকে ভালোবাসতো ?
জানিনা I হয়তো I
তুমি ওকে কখনো জিজ্ঞেস করোনি ? কিংবা তোমার নিজের মনের কথা জানাওনি ?
না
কেন ?
আমার লাইফটা অনেক কমপ্লিকেটেড ছিল I তাছাড়া ও খুব চমৎকার একটা মেয়ে I হাসিখুশি, উচ্ছল I ওকে দেখলে আমার মনে হতো আমার মা হয়তো একসময় এরকম ছিল I অথচ আজকে তার লাইফটা নষ্ট হয়ে গেছে I ও অনেক ভালো একটা লাইফ ডিজার্ভ করে I আমি ওকে আমার বিচ্ছিরি জীবনের মধ্যে টেনে আনতে চাইনি I
দীপার ইচ্ছা হল একটা লাফ দিতে Iতবু মুখে গাম্ভীর্য বজায় রেখে বলল
আর এত বছর পর ওকে দেখে তোমার কিছু মনে হয়নি ?
না I ও আর আমার লাইফে নেই I তাছাড়া ও এখনো আগের মতই আছে I আমার অবস্থা বোঝার মতন গভীরতা ওর নেই I
এমনও তো হতে পারে যে তোমরা এখনো পরস্পরকে ভালোবাসো I শোন নিষণ তুমি আর আমাকে ফোন করো না I আমার মনে হয় আমাদের সবটা এখানেই শেষ হওয়া উচিত I
নিষণ কে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে দীপা হাসতে হাসতে ফোন রেখে দিয়ে সুইচ অফ করে দিলো I তারপর ঠিক করলো আজ রাতেই ও নিষণ কে সব বলে দেবে I

রানা আজকে ওদের বাসার ছাদে একটা বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করছে I মামার কাছ থেকে পারমিশন নেওয়া হয়েছে Iওর সব বন্ধুরা আসছে I মেয়েদেরকেও বলা হয়েছে I টুম্পা, দিলরুবা আর দীপা আসছে I মীরা বাসা থেকে পারমিশন পায়নি I মামা অবশ্য একটু আপত্তি করেছিল মেয়েদের আসা নিয়ে I রানা আশ্বস্ত করেছে এগারোটার সময় মেয়েরা চলে যাবে I দীপার গাড়ি এসে সবাইকে নিয়ে যাবে I বাড়িতে পৌঁছে দেবে I এই কথাটা বলতেই নিষণ এর ঘরে ঢুকে চমকে উঠলো রানা I পুরো ঘর এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে I মাটিতে একটা ভাঙা ফুলদানি I আরো কিছু জিনিসপত্র এদিক ওদিক ইতস্তত ছড়ানো I রানা বারান্দায় গিয়ে দেখল নিষণ রেলিংয়ের ওপর ভর দিয়ে সিগারেট খাচ্ছে I ওর চোখ মুখ গম্ভীর I রানা কিছু বলার সাহস পেলো না I ভাবলো পরে জানানো যাবে I

বারবিকিউ পার্টি শুরু হয়ে গেছে Iসবাই এখনো এসে পৌঁছায়নি I গ্রিল মেশিনে চিকেন দেয়া হয়েছে I মারুফ আর নেহাল বারবিকিউ এর দায়িত্বে আছে I সাউন্ড সিস্টেম এর ব্যবস্থা করা হয়েছে I চড়া ভলিয়্যুমে মিউজিক চলছে I Iনিষণদের ফ্ল্যাটটা টপ ফ্লোরে Iবারান্দা থেকে গানের শব্দ শোনা যাচ্ছে I এমনিতেই মেজাজ খারাপ হয়ে আছে তার উপর এই গানের শব্দ অসহ্য লাগছে I এরমধ্যেই রানা ওকে ডাকতে এল I রানার পেছনে দীপাকে দেখে নিষনের আরো মেজাজ খারাপ হয়ে গেল I রানা বলল
বস উপরে বারবিকিউ পার্টি হচ্ছে I চলেন না
আমি যাব না I তোরা ইনজয় কর I
আরে চলেন না
এত লাউড মিউজিক আমার ভালো লাগেনা
মিউজিক বন্ধ করে দিতেছি I আজকে দীপা গান গাইব
একথা শুনে নিষনের মাথায় রক্ত উঠে গেল I ওর কারণেই সপ্তর্ষির সাথে সম্পর্কটা ভেঙে যাচ্ছে I এর মধ্যে আবার এখন ওর গান শুনতে হবে ? নিষণ তেতে উঠে বলল

ওর গান শোনার কোনো আগ্রহ আমার নেই
দীপার প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হয়ে গেল I ও ঠিক করেছিল আজকে নিষনের অনেক প্রিয় একটা গান গাইবে I গান শুনলে নিশ্চয়ই ওকে চিনে ফেলবে I তারপর ওকে সবকিছু বলার প্ল্যান ছিল Iএখন ওর ভাব দেখে গা চিড়বিড় করছে
এই তুমি ওর সঙ্গে কি কথা বলছ ? যা বলার আমাকে বল
বললাম তো একবার I তোমার গান শুনতে চাই না
কেন ? আমার গান শুনলে কি তোমার খরগোশের মত কান খুলে পড়ে যাবে ?
স্টপ ইট দীপা
লিসেন, খুব শিগগিরই তুমি আমাকে বলবে যে আমার গান না শুনলে তোমার ঘুম আসেনা
তাই নাকি I সেই ভ্রমেই থাকো I দ্যাটস নট গনা হ্যাপেন
আর ইউ চ্যালেঞ্জিং মি ?
আই ডোন্ট হ্যাভ টাইম টু চ্যালেঞ্জ ইউ
ফাইন I টুয়েন্টি ফোর আওয়ার এর মধ্যে তুমি আমাকে এই কথা বলবে I
স্বপ্ন দেখা বাদ দাও
যদি এটা হয় তাহলে কি করবে ?
তুমি যা বলবে তাই করব
ফাইন, সি ইউ দেন

দীপা রেগেমেগে ছাদে চলে গেল I রানা গেল ওর পেছন পেছন I সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে বলল
দোস্ত সব তো কেচায়া গেল I বস এরকম করবো ভাবি নেই
তোর বস কে তো আমি এমন শিক্ষা দেব…
বাসায় চইলা যাবি ?
আরে না I চল বারবিকিউ খাই
দীপা নিজের কারণে কারো আনন্দ নষ্ট করল না I এগারোটা পর্যন্ত থেকে ,সবাইকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে তবে বাড়ি ফিরল I বাড়ি ফিরে যে গানটা গাইবে ঠিক করেছিল সেটা রেকর্ড করে আপলোড করে দিল I তারপর অনলাইনে ঢুকে চুপচাপ বসে রইলো I কিছুক্ষণের মধ্যেই নিষণ ফোন দিল I

হ্যালো
আজকে যে আমাকে না শুনিয়েই গানটা দিয়ে দিলে ?
ভুল ছিল গানে?
না I গানে ভুল ছিল না I মনে হয় আমার কোন ভুল ছিল I আমাকে দেখে কি তোমার এতই খারাপ লেগেছে যে তুমি আর আমার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতে চাও না ?
না এটা ঠিক না
তাহলে ?
গানটা কেমন হয়েছে বল ?
অনেক সুন্দর I এটা আমার প্রিয় গান I
আমি জানি I আমি ঠিক করেছি সব গান ডিলিট করে দেবো I আর কোনদিন গান গাইব না I
কেন ?
তোমারতো আমার গান ভালো লাগেনা
কে বলল ?
ভালো লাগে ?
অবশ্যই I আমি প্রতিদিন তোমার গান শুনতে শুনতে ঘুমাই
কেন ? আমার গান না শুনলে তোমার ঘুম আসেনা ?
না
কি বললে ? আবার বল
তোমার গান শুনে আমার ঘুম আসেনা I এবার তো দেখা করো I প্লিজ I আমি তোমার সব ভুল ভাঙ্গিয়ে দেবো I
তুমি তো শর্ত হেরে গেলে নিষণ
মানে ?
টুয়েন্টি ফোর আওয়ার বলেছিলাম I তিন ঘন্টা ও হয়নি I
তু- তুমি কি… ?
হ্যাঁ আমি দীপা
ঘরের মধ্যে বোমা ফাটলেও হয়তো নিষণ এতটা অবাক হতো না I নিজের কানকে বিশ্বাস হচ্ছে না I তারমানে এতদিন ধরে দীপা ওর সঙ্গে মজা করছে ? কখনো সপ্তর্ষি কখনো দীপা হয়ে ওর সঙ্গে তামাশা করেছে ? এসব কি ছিল ? ছোটবেলায় করা ওর ব্যবহারের প্রতিশোধ ?

কি হলো ? কথা বন্ধ হয়ে গেল কেন ? তুমি বলেছিলে আমি যেটা বলব তুমি সেটাই করবে I মনে আছে তো ?
নিষণ থমথমে গলায় বলল
কি করতে হবে বলো I
তোমাকে একটা হোল ডে আমার সঙ্গে স্পেন্ড করতে হবে
হোয়াট ?
হোল ডে বলেছিI নাইট তো বলি নি I এত ভয় পাচ্ছ কেন ?
নিষনের রাগে গা কাঁপতে লাগলো I অসভ্য মেয়ে একটা I কথার কি ছিরি I
নিষণ দাঁতে দাঁত চেপে বলল
ওকে ফাইন I বাট আফটার দ্যাট আই এম ডান উইথ ইউ
মি টু

চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here