একটি_রাতের_গল্প পর্ব-০২,০৩

0
2463

#একটি_রাতের_গল্প
পর্ব-০২,০৩
কাহিনী ও লেখা : প্রদীপ চন্দ্র তিয়াশ।
০২

রাত প্রায় দশটা বাজে।শিমুল আপুর আসার কোনো নাম নেই এখনো।আমার ঘরটা বাসার দক্ষিন পাশে।তাই কেউ চাইলেই যখন যখন আমার রুমে ঢুকতে পারে।বাবা-মা ওপরের ফ্লরে থাকে।এতোক্ষণে তারা ঘুমিয়ে পড়েছে নিশ্চয়ই।এদিকে আমি শিমুল আপুর জন্য অপেক্ষা করে চলছি‌।আরোও আধা ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে যায়।হঠাৎ আমার মনে হতে লাগলো শিমুল আপু হয়তো তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেলেছে।হয়তো আসবে না ও।যা হয়েছে একদিকেই ভালোই হয়েছে।অনেক বড়ো একটা পাপের হাত থেকে রক্ষা পাবো আজ আমি।সত্যিই মনে মনে এটাই চেয়েছিলাম যেন শিমুল আপু আজ রাতে না আসে।আমি কখনোই চাইনি ওর আমার আমাদের ভেতরের বন্ধুত্বের সম্পর্কটা নষ্ট হোক।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে তারপর দরজাটা বন্ধ করে দিলাম।বিছানার ওপরে এসে বসতেই হালকা করে কেউ যেনো দরজায় ধাক্কা দিলো আমার।অমনি চমকে উঠলাম।শুনতে পাচ্ছি শিমুল আপু ফিসফিস করে বলছে।

—-পল্লব আমি এসেছি,দরজা খোল।

আমি গিয়ে দরজাটা খুলতেই শিমুল আপু হুড়মুড় করে ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ে তারপর দরজাটা বন্ধ করে দিলো।

—এতোক্ষণে আসার সময় হলো তোমার?

—তো কি সন্ধ্যাবেলায় সবার সামনে দিয়ে ঢ্যাং ঢ্যাং করে চলে আসতাম!

—আমি ভাবলাম তুমি হয়তো আসবে না।

শিমুল আপু গায়ে পেচানো চাদরটা খুলে চেয়ারের ওপরে রাখলো।তারপর আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে।

—আসবো না মানে কি,আমি না আসলে কিকরে চলবে।

শিমুল আপুর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি আমি।ওরদিকে এইভাবে কখনো তাকিয়ে থাকিনি আমি।আজ যেনো ওর ওপর থেকে চোখ সরাতেই ইচ্ছে করছে না।শরীরের ভেতর এক অদ্ভুদ দোলাচল শুরু হতে লাগলো আমার।নিশ্বাস দ্রুত থেকে দ্রুততর হতে থাকে।ঠান্ডার ভেতরেও ঘেমে যাচ্ছি আমি।এতোগুলো দিন শিমুল আপুর সাথে থেকেছি,ওর কাছাকাছি এসেছি কিন্তু এইরকম অদ্ভুদ আকর্ষণ কখনো অনুভব করিনি আগে।

—কিরে কি ভাবছিস এতো দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে,আয় শুরু কর!

শিমুল আপুর কথা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।

—শুরু করবো,কি শুরু করবো।আমি তো এসব করিনি কখনো?

—যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে।আমার হাতে বেশী সময় নেই।লোক জানাজানি হয়ে গেলে কি হবে ভাবতে পারিস।

শিমুল আপু আমাকে কোনো একটা কারণে বাইরে যেতে বলে।জানি না কেনো বলেছে।তারপর ঘরের ভেতরে ঢুকে আমার চোখ পুরোপুরি ছানাবড়া।এইভাবে ওকে কোনোদিন দেখতে হবে স্বপ্নেও কি ভেবেছিলাম।ওর দিকে চোখ তুলতে লজ্জায় মরে যাচ্ছি আমি।জানিনা ও কিভাবে দাঁড়িয়ে আছে আমার সামনে।দরজাটা বন্ধ করে দিলাম আমি।তারপর দুজন কাছাকাছি।ড্রিম লাইটটা অফ করতে চাইলাম,আপু দিলো না।এই প্রথম কারো সাথে শারিরীক সম্পর্ক হতে যাচ্ছে আমার।তাও বয়সে পাঁচ বছরের বড়ো কারোর সাথে।আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি শিমুল আপুর আমার জন্য ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।হালকা করে গোঙাতে লাগলো ও।

—আপু প্লিজ শব্দ করো না,আম্মা আব্বা জেগে যেতে পারে।

আমার কথা শুনে শিমুল আপু নিজের হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলো।আর আমাকে তাড়া দিতে লাগলো তেনো তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করি।কেনো জানি না আমার ইচ্ছে করছে না এক্ষুনি এসব বন্ধ হোক।সময়টা দীর্ঘায়িত হোক এটাই কামনা করছি মনে মনে।মনে হচ্ছে এর থেকে সুখের অনুভূতি আর কিছু হতে পারে না কারোর জীবনে।শিমুল আপুর মুখের ওপর থেকে হাতটা সরে যায়।ওর মুখের গোঙানীর আওয়াজ আমার ঘরটাকে আন্দোলিত করে তুললো।অমনি আমি শক্ত করে ওর মুখটা চেপে ধরি।তারপর সুখের সাগরে বিচরণ করতে থাকি।শিমুল আসুকে ভীষণ অসহায় মনে হচ্ছিলো তখন আর মনে হচ্ছে আমি যেনো অত্যাচার করছি ওকে।তবুও এই অত্যাচার করতেই ভালো লাগছে আমার,ওর প্রতি কোনোরকম সহানুভূতি কাজ করছে না।নিজেকে দেখে নিজেই অবাক হচ্ছি।সত্যি শরীরের আকাঙ্খা বোধহয় এমনই হয়।এই সময়ে নিজের সুখ ব্যতীত আর কিছু ভাবার অবস্থায় নেই আমি।এক পর্যায়ে সেই কাঙ্খিত মূহুর্ত এলো শিমুল আপু যেটা পাবার জন্য সমস্ত যন্ত্রনা মুখ বুঝে সহ্য করে গেছে।আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো ও।এরপর দুজনেই চুপ।চারদিকে পিনপতন নিরবতা।শিমুল আপুর থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিলাম।এরপর হাঁপাতে হাঁপাতে বিছানায় উঠে বসলো শিমুল আপু।আমি টাওয়ালটা কোমড়ে জড়িয়ে বাথরুমের দিকে চলে যাই।ফ্রেশ হয়ে ঘরে এসে দেখি কেউ নেই ভেতরে।শিমুল আপু চলে গিয়েছে।জানিনা আজকের এই ঘটনার পরে আর কোনোদিন ওর সামনাসামনি হতে পারবো কিনা।যদি কোনোদিন হতে হয় সেটি হবে আমার জীবনের সবথেকে লজ্জাজনক অধ্যায়।
তবে মনে প্রানে চাই ও যেনো মা হতে পারে।ওর লাইফের সমস্ত প্রবেলেম দূর হয়।ও ভালো নেই এটা জানতে পারলে আমি নিজেও ভালো থাকতে পারবো না।
হঠাৎ উপরের বারান্দা থেকে আম্মার গলার আওয়াজ শুনে যেনো আঁতকে উঠলাম আমি।

—কিরে পল্লব এখনো ঘুমাসনি?

—এইতো এক্ষুনি ঘুমাবো আম্মা।

—কি করেছিস এতোক্ষণ লাইট জ্বালিয়ে?

—কিছু না,

এই বলে তড়িঘড়ি করে লাইট বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম।




সকাল বেলা মেসেজ নোটিফেশনের আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে গেলো।মোবাইলের লকটা খুলে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি একটা আইডি থেকে কেউ ভিডিও মেসেজ পাঠিয়েছে।ভিডিওটা অন করতেই চোখজোড়া যেনো কপালে উঠলো আমার।ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগলো!
—-হায় খোদা,এতো আমার আর শিমুল আপুর ঘনিষ্ঠ মূহুর্তের ভিডিও!!?ভিডিওতে শিমুল আপুর মুখটা দেখা না গেলেও আমাকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে…!!!

চলবে…..

একটি_রাতের_গল্প
পর্ব—-০৩
কাহিনী ও লেখা : প্রদীপ চন্দ্র তিয়াশ।

—-হায় খোদা,এতো আমার আর শিমুল আপুর ঘনিষ্ঠ মূহুর্তের ভিডিও!!?ভিডিওতে শিমুল আপুর মুখটা দেখা না গেলেও আমাকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে…!
এটা দেখে আমার হাত পা ভয়ে ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগলো।মাথাটা মূহুর্তেই চক্কর দিয়ে উঠলো।চোখে যেনো অন্ধকার দেখছি।
ভিডিওর নিচে আবারো কিছু টাইপিং মেসেজ আসলো।
“কি ভেবেছিলে,পার পেয়ে যাবে তুমি।আমি থাকতে যে সেটা সম্ভব নয়।”

—-কে তুমি?এই ভিডিও তোমার কাছে গেলো কিকরে?
আমি রিপ্লাই দিলাম।

—আমি কে সেটা জানা জরুরী নয়,তুমি নিজের কথা ভাবো!

—দেখুন আপনি আমাকে এইভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে পারেন না।আমি কিন্তু….

—কি করবে তুমি?তুমি কারোর সাথে স হ বা স করছো আর সেটা কেউ রেকর্ড করে ফেলেছে?কি ভেবেছো এটা বলে সবার থেকে সহানুভূতি কুড়াবে তুমি??

—আমি যাই করি না কেনো,সেটা আমার নিজস্ব ব্যপার।আপনি আমার অনুমতি ছাড়া আমার আপত্তিকর ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন না!

—একই অন্যায় করেছো,আবার বড়ো বড়ো কথা।

—শুনুন আমি যদি অন্যায় করে থাকি,আপনিও গোপনে সেটা ক্যামেরাবন্দী করে অন্যায় করেছেন।

—আমি আর নতুন করে কিছু বুঝতে চাই না‌।তবে তোমার কি হয় দেখতে থাকো।অনেক কিছুর হিসেব বাকি তোমার থেকে আমার।

—আমি কি ক্ষতি করেছি আপনার।কেনো শুধু শুধু পেছনে পড়েছেন আমার?

—ক্ষতি!?যেটা না হয় যেদিন দেখা হবে সেদিন বলবো।একেবারে মুখোমুখি হয়ে।সামনাসামনি।

—কে আপনি,প্লিজ আমাকে বলুন কে আপনি?এইভাবে কেনো গেম খেলছেন আমার সাথে?

লেখাটা টাইপ করে সেন্ড বাটনে ক্লিক করতেই “you can not reply to this conversation” লেখা আমাকে বুঝিয়ে দিলো লোকটা ব্লক করে রেখেছে আমায়।আমি সত্যি জানি না কে সে?গতরাতে আমার আর শিমুল আপুর ভেতরে যা হয়েছে আমরা দুজন ছাড়া তো কেউ জানতো না।তাহলে কারোর পক্ষে আগে এসেই ক্যামেরা সেট করে রেখে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব।যখন আমরা একে অপরের সাথে শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছি ঘরের সমস্ত দরজা জানালা তো বন্ধই ছিলো।বাইরের থেকে কেউ ভিডিও করবে সেটাও অসম্ভব।আর তাছাড়া এই ভিডিও দেখে একটিবারেও মনে হচ্ছে না এটা ঘরের বাহির থেকে রেকর্ড করা হয়েছে।কে থাকতে পারে এসবের পেছনে?কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না আমার।কার সাথে আমার এতো বড়ো শত্রুতা।কি করতে চাইছে সেই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি আমার সাথে?আমার কোনোপ্রকার ইচ্ছে ছিলো না শিমুল আপুকে ভোগ করার।আমি যেটা করেছি ওর ভালোর জন্যই করেছি।ওর উপকার করাই মুখ্য উদ্দেশ্য ছিলো আমার।সেটা করতে গিয়ে এইভাবে ফেঁসে যাবো কখনো ভাবতে পারিনি।এই ভিডিও যদি পাবলিক হয়ে যায় কোনোপ্রকারে আমার পরিস্থিতিটা কি হবে তখন এটা চিন্তা করতে আর স্থির রাখতে পারছি না নিজেকে।মাথাটা ব্যথা করতে লাগলো চিনচিন করে।
হঠাৎ আমার চোখজোড়া বিছানার চাদরের ওপরে যায়।সাদা বিছানার চাদরে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ।আর বুঝতে বাকি রইলো না আমার এটা কোনো স্বাভাবিক রক্ত নয়,এতোগুলো বছর ধরে আগলে রাখা আমার কুমারত্ব অবসানের চিহ্ন এগুলো।এক রাতের বিশাল ব্যবধান ঘটে গেলো আমার জীবনে।রক্তের দাগ ধূয়েও দূর করা যায় না।এটা আমার জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে আজ থেকে আর প্রতিনিয়ত স্মরণ করিয়ে দেবে গতকালকের রাতের মূহুর্তগুলো।

হঠাৎ কারোর আগমনে আমার ভাবনার রেশ কাটে।সিমরান ভাবি চায়ের কাপ আর বিস্কুটের প্লেট হাতে নিয়ে ঢুকে পড়লো আমার রুমে।আমি একটু অবাক হলাম তাকে দেখে।

—একি তুমি…?কখন এলে তোমরা?

—এইতো একটু আগে।

—ওমা এতো সকাল সকাল?

—সকাল?কয়টা বাজে ঘড়িতে দেখেছো চোখ বুলিয়ে?

ভাবিকে কিকরে বুঝাই আমার ওপর দিয়ে যা ঘটে গেছে তাতে সময় খেয়াল করার সুযোগ পেলাম কোথায়।ভাবির কথা শুনে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে নয়টা বাজে।তার মানে সত্যিই অনেকটা বেলা হয়ে গেছে।আকাশে মেঘ করার কারণে আন্দাজ করা যাচ্ছে না।

—ভাইয়া কোথায়,ভাইয়া এসেছো তো?

—হ্যাঁ,তোমার ভাইও এসেছে।সারা রাত জার্নি করে এসেছে তো তাই এখন পরে পরে ঘুমাচ্ছে।

—আচ্ছা ঠিক আছে।তুমি এগুলো রেখে যাও।আমি একটু পরে পরে খাবো।

—চা ঠান্ডা হয়ে যাবে কিন্তু?

—হোক!

ভাবি আর আমার কোনো কথার অপেক্ষা না করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।আমি টাওয়ালটা কাঁধে জড়িয়ে বাথরুমের ভেতরে ঢুকলাম।ট্রাউজারের ফিতাটা আলগা করতেই সেটা গড়িয়ে পায়ের কাছে লুটোপুটি খেতে লাগলো।সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালাম।নিজেকে দেখে এই মূহুর্তে একটা অদ্ভুদ অনুভূতি হচ্ছে আমার।যেনো নিজের প্রতিবিম্বর ওপর থেকে চোখ ফেরাতে পারছি না।নিজের শরীরে প্রতিটা অঙ্গ প্রতঙ্গের ভাজে ভাজে চোখ বুলিয়ে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করছি।গতকাল রাতে শিমুল আপু কাছাকাছি আসতে যে অনুভূতি কাজ করছিলো এখন যেনো সেটা আবার জাগ্রত হচ্ছে ধীরে ধীরে।সামান্য আঙ্গুলের স্পর্শ শরীরে শিহরণের সৃষ্টি করতে লাগলো যেটা একেবারেই স্বাভাবিক নয়।আমি বুঝতে পারছি এই মূহুর্তে আমার শরীর একটা নারীদেহের প্রত্যাশা করছে কিন্তু আমি শরীরের এই চাহিদা পূরণে আপারগ।নিজেকে শান্ত করতে পারছি না কিছুতেই।যেনো রক্তের ভেতরে গরম লাভা ঢেলে দিয়েছে কেউ যা শিরা উপশিরা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ধীরে ধীরে হাতটা নিচের দিকে যেতে লাগলো আমার।তারপর একটা নরম আদর মাখানো স্পর্শ।এই অভাস্যের সাথে একেবারেই সংযোগ ছিলো না আমার।কিন্তু আজ এটা চর্চা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।নিজেকে সংবরণ করার জন্য নিজের অভ্যাসের বিরুদ্ধচর্চা করতে লাগলাম।উপলব্ধি করছি এটা আমাকে গতরাতের শতভাগের একভাগও আনন্দ দিচ্ছে না।আবার চাইলে এক্ষুণি বন্ধও করতে পারছি না।এর শেষপ্রান্তে না পৌঁছানো পর্যন্ত শান্তি নেই আমার।যাই হোক আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চর্চাটা চালিয়ে যেতে লাগলাম।এভাবে নিজেকে নিজে উপোভোগ করতে করতে এক পর্যায়ে শান্ত হয়ে গেলাম।সারা শরীর অদ্ভুদ এক ঝাকুনি দিয়ে উঠলো।আমার দ্রুতশ্বাসের শব্দ বাথরুমের চার দেয়ালের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়।কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাফাতে থাকি।এরপর গোসল সেরে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসলাম।এখন অনেকটা হালকা লাগছে নিজেকে।নাস্তাটা সেরে নিজের কিছু জরুরী কাজ সেরে ফেললাম।এর ভেতরে ভিডিও রেকর্ডের কথাটা বেরিয়ে গিয়েছিলো মাথা থেকে‌।




এরপর সন্ধ্যা বেলা।
দর্পণ ভাইয়ার সাথে দুপুরে খাবার খাওয়ার সময় একপলক দেখা হয়েছিলো,তারপর আর হয় নি।ভাবলাম দুইভাই মিলে বাইরে গিয়ে একটু আড্ডা দিলে আসলে মনের দুশ্চিন্তাগুলো একটু হলেও লাঘব হবে।এমনিতে বিভিন্ন কারণে সকাল থেকে ঘেঁটে আছি।এই ভেবে ভাইয়ার রুমের দিকে যাই।রুমের দরজাটা খুলতেই দেখি কেউ নেই ঘরে।আম্মাকে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করি ভাইয়ার বিষয়ে,তিনি কিছু বলতে
পারলেন না।ভাবিও নেই আশেপাশে।আর ওদের রুমের ভেতরে পা বাড়ালাম না।দরজাটা আবার বন্ধ করে বেরিয়ে আসতে যাবো ঠিক তখন একটা জিনিসের দিকে চোখ পড়লো আমার।ভাইয়াদের বিছানায় বালিশ চাপা দিয়ে কিছু একটা রাখা হয়েছে।কৌতুহলবশত রুমের ভেতরে ঢুকে পড়লাম জিনিসটা কি দেখার জন্য।কাছে গিয়ে বালিশটা তুলতেই চমকে উঠলাম আমি।এতো একটা ভিডিও রেকর্ড ক্যামেরা।বেশ ভালো দাম দিয়ে কিনেছে বোঝা যাচ্ছে।কিন্তু ভাইয়া ভাবি তো একটিবারের জন্যেও বললো না এটা আমায়।ভীষণ খটকা লাগছে বিষয়টা।ওরা তো কিছু লুকোয় না আমার থেকে।নাকি বলতে ভুলে গিয়েছিলো কে জানে।যদি ভুলেই যাবে এটা এভাবে বালিশের নিচে লুকিয়ে রাখবে কেনো?
লক্ষ্য করলাম টেবিলের পাশে কতোগুলো কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে।তার ভেতরে দুটো ট্রেনের টিকিট।টিকিটের দিকে তাকিয়ে আরোও বেশী অবাক হলাম।এগুলো তো গতকালকের দুপুরের শিফটের টিকিট।সেই অনুয়ায়ী ওদের বাসতে ফিরতে সন্ধ্যা হবার কথা।তাহলে সকালে ফিরেছে বললো কেনো?ভাইয়া ভাবি রাতেই বা কোথায় ছিলো?অদ্ভুদ ব্যপার এটাও গোপন করে রেখেছে আমাদের থেকে!ছোটোবেলা থেকে দেখে আসছি বাইরে গিয়ে একটা হোঁচোট খেলেও ভাইয়া বাসার সবার সাথে শেয়ার করে।ওর স্বভাবটাই এমন।কোনো কিছু হাইড করে রাখার মানুষ ও নয়।অথচ এখন,ক্যামেরা আর টিকেটের বিষয়টা এভাবে গোপন করলো আমাদের থেকে?
এটা ভাবতেই সকালের ভিডিওর কথা মাথায় চলে আসলো আমার?আমার আপত্তিকর ভিডিও,ব্ল্যাকমেইলের সাথে এই ঘটনাগুলোর কোনো যোগসূত্র নেই তো?

—ছি ছি!হেদায়েত করো খোদা!এসব কি ভাবছি আমি নিজের ভাই আর ভাবিকে নিয়ে?

ওদের কি শত্রুতা আমার ওপর….আর ওরা কেনো এরকম একটা জঘন্য কাজ করতে যাবে আমার সাথে?
তবে এটাও ঠিক।এই মূহুর্তে যে ক্লুগুলো পেলাম আমি সেগুলো একেবারেই ফেলা দেবার মতো নয়!জানি না কি হচ্ছে আমার সাথে?

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here