মুখোশের অন্তরালে,পর্ব-০১

0
2302

#মুখোশের অন্তরালে,পর্ব-০১
#সম্প্রীতি রায়
#ধারাবাহিক
#প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য

নির্জন বালিয়াড়ি দিয়ে প্রাণপণে ছুটে চলেছে মেয়েটা,পিছু পিছু তাড়া করছে ক্ষুধার্ত নেকড়ের দল,খোলা চুল দমকা হাওয়ায় অবিন্যস্ত.. পরনের পোষাক ছিন্নভিন্ন প্রায়,জায়গায় জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে।
হঠাৎই হোঁচট খেয়ে বালিতে মুখ থুবড়ে পড়ে মেয়েটি,ফের ছোটার চেষ্টা করতেই গুঙিয়ে ওঠে.. মচকে গিয়েছে পা টা।
গতিরোধ হতেই শিকারি নেকড়ের দল ততক্ষনে চক্রব্যূহে বেঁধে ফেলেছে মেয়েটিকে, বাঁচবার করুণ আর্তিতেও লোলুপ হিংস্রতা বৃত্তটিকে ছোট করছে ক্রমশ।
নেকড়েগুলো মধ্যেকার ফিসফাস ক্রমশ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে..এরই মধ্যে একটা নেকড়ে মেয়েটার লুটিয়ে পড়া আঁচলের বেশ খানিকটা কামড়ে ছিড়ে নিল, আবছা চাঁদের আলোয় নেকড়ের মুখটা দেখার চেষ্টা করতেই ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে রিক্ত ।

ওহ্!

শীততাপনিয়ন্ত্রিত রুমেও কপালে নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে, ঘোরটা কাটতে সময় নিল বেশ কিছুটা..লিজা পাশে ঘুমাচ্ছে নিঃসাড়ে ,
জিরো ওয়াটের মৃদু আলোয় পাতলা বেডকভারে আবৃত ওর নিরাভরণ শরীরটা ওকে আবারো টানছে ..
চাদরটা টেনে এক ঝটকায় ওকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই চড়ে বসল ওর উপর.. স্বপ্নটা চোখে ভাসছে আবারো,
এক ধাক্কায় ওকে সরিয়ে সিগারেটটা জ্বালিয়ে বিছানায় ধপ করে বসে পরলো রিক্ত।
“কি হলো?” লিজার অস্ফুট আওয়াজ কানে পৌঁছালো উত্তর দেওয়া প্রয়োজন বোধ করলো না ও,
পরপর দুটো সিগারেট ধ্বংস করে পাশ ফিরে শুয়ে পড়লেও স্বপ্নটা মুছলোনা কিছুতেই,
“নেকড়েটার মুখটা যে আমার মুখ,নেকড়ের হিংস্রতায় তাড়া করেছিলাম আমি মেয়েটাকে!”

সারা রাত্রের জন্য খরচাটা একটু বেশি হয়ে গেলেও
দু-এক ঘন্টার কন্ট্রাক্টে মনটা ঠিক ভরে না ফিল্ম প্রোডিউসার রিক্ত বসুর ,
আর লিজার বরাবরই রাঘববোয়ালদের দিকে বেশি নজর,কাজেই সারারাত হোক বা কয়েকঘন্টা ,ব্যাপারটা ম্যাটার করেনা ওর কাছে।
মেয়েটাকে বিদায় করার পর প্রোটিন শেকটা খেয়ে সোজা ঢুকে গেল পাশের রুমে , ট্রেডমিল,cable crossover মেশিন,weight instrument বসিয়ে ঘরটাকে ছোটখাটো জিমখানাই বানিয়ে নিয়েছে ,
ঘন্টাখানেক ঘাম ঝরিয়ে সোজা স্নানঘরে ঢুকে পড়ে রিক্ত, বাথরোবটা ছেড়ে আয়নায় নিজের নিরাভরণ শরীরটা দেখতে লাগলো খুঁটিয়ে, মধ্যচল্লিশ পেরোলেও বয়স টাকে এখনো ত্রিশের কোঠায় আটকে রেখেছে,
ছ-ফুট দীর্ঘদেহী ফর্সা পেশীবহুল শরীরটায় কোথাও এক টুকরো বাড়িতে মেদ নেই,ঘন ঠাসা মাথাভর্তি চুল সমবয়সী যেকোনো পুরুষের ঈর্ষার কারণ ও বটে..

হঠাৎই চোরা অস্বস্তিতে মনটা কেমন খচখচ করে ওঠে ওর..।
ঝটপট স্নানটা সেরে ব্রেকফাস্টটা করে নিল রিক্ত।
“আজ আর প্রোডাকশন হাউস হয়ে যাওয়া হলো না” আপন মনে কথাটা বলে জরুরী দু’তিনটে ফোনকল সেরে উঠে বসলো সদ্য কেনা অডি-টায়
ড্রাইভিংটা বরাবরই নিজে করে রিক্ত।
গতিবিধির হদিশও পাওয়া যায়না চট করে,আর প্যাশনও বটে ওর।

ক্যাচ করে ব্রেক কষল গাড়িটা একটা বহুতল বিল্ডিং এর সামনে,গাড়িটা পার্ক করে সানগ্লাসটা শার্টের খাজে ঢুকিয়ে দৌড় দিল রিক্ত লিফটের দিকে,
তাড়াহুড়োতে লক্ষ্য করলোনা,একজোড়া চোখ ওকে অনুসরণ করে চলেছে ক্রমাগত..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here