রক্তিম_চন্দ্র #পর্ব_১২

0
400

#রক্তিম_চন্দ্র
#পর্ব_১২
#তুষার_আব্দুল্লাহ_রিজভী

রিপ তার কক্ষে এখনো। রিপ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তার মনে৷ কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছে না। তখন রিপ রেডিসের দিকে তাকাল আর ডায়েরিটা বন্ধ করে ফেলল।
রেডিস রিপকে চিন্তিত দেখে জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছে, রিপ?”
রেডিস আপনি থেকে তুমিতে চলে আসলো রিপের সাথে সে নিজেও বুঝতে পারলো না।
রিপ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “আমার প্রায় সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছি কিন্তু…”
রেডিস বলে উঠল, “কী কিন্তু?”
“কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনো রয়ে গেল,” একটু থেমে আবার বলল, “পেয়েও পেলাম না মনে হলো।”
“আমাকে বলো কী প্রশ্নের উত্তর খুঁজছো আমি খুঁজে দিচ্ছি।”
“আচ্ছা, আমার মামী তো খুন হয়েছিল তাই না?” নিচু স্বরে জিজ্ঞেস করল রিপ।
“হ্যাঁ, খুন করা হয়েছিল তাকে।”
“তবে খুনটা কে করেছিল জানেন কিছু? বলতে পারবেন আমাকে?” আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইল রিপ রেডিসের কাছে।
“হ্যাঁ, অবশ্যই।” দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে রেডিস বলতে লাগল, “শোনো তাহলে, তোমার মামী যখন থেকে এখানে আসতেন ঠিক তখন থেকেই তোমাদের মানুষ জাতির একটা দল তাকে অনুসরণ করতো। কীভাবে যেনো বুঝে যায় তোমার মামী এলেক্সা ভ্যাম্পায়ারদের সাথে যোগাযোগ করছে। তাকে সবসময় অনুসরণ করতে থাকে। একটা সময় নীল হীরার কথাও তারা জানতে পারে৷ তখন থেকেই তারা খোঁজ নিয়ে বুঝতে পারে নীল হীরার মাধ্যমে কিং হলিকের ভ্যাম্পায়ার রাজ্যে প্রবেশ করা যায়। আর এটাই এক মাত্র রাজ্য যেখানে প্রবেশ করতে নীল হীরা লাগবেই। না হলে প্রবেশ করা যাবে না। তারা চাইতো এটা তাদের করে নিতে আর আমাদের ক্ষতি করতে। কারণ আমরা চাইলেও তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবো না। এসব আবার খেয়াল করতো অন্য রাজ্যের ভ্যাম্পায়াররা। তারা সকলে একত্রিত ছিল। সেই ভ্যাম্পায়ার গুলো সেই মানুষদের সাথে হাত মিলিয়ে ফেলে। সেই মানুষগুলোও জানে না যে তারাও ধ্বংস হবে যদি ওই রাজ্য গুলোর ভ্যাম্পায়ারদের সাথে হাত মেলায়। তাদের স্বার্থ একটাই আমাদের রাজ্য ধ্বংস করা। তারা এটা করতে পারলেই তাদের হাতে এই রাজ্য চলে আসবে। আর এটা আসলেই তারা মানুষ জাতিকে শেষ করে দিতে পারবে৷ কারণ এই রাজ্যের মধ্যে লুকিয়ে আছে মানুষ জাতীকে ধ্বংস করে দেওয়ার একটা বিষ। যার দু’ফোটাও যদি পৃথিবীর বাতাসে ছড়িয়ে দেওয়া যায় বাতাস রুপে তাহলে পুরো পৃথিবীর মানুষ জাতি বাতাসের গতিতে শেষ হয়ে যাবে। এজন্য নীল হীরা তারা চাইতো সবসময়৷ প্রবেশ করতে পারলেই তো সব স্বার্থ হাসিল হয়ে যেতো। এজন্য একটা সময় তোমার মামীকে সুযোগ বুঝে হত্যা করে ফেলে তারা। কিন্তু তোমার মামীও কম ছিলেন না। তোমার মামী জানতেন তার সাথে খারাপ কিছু হতে চলেছে। তাই তিনি এক ধরনের নীল হীরা তৈরি করেন ২০-২৫ টার মতো৷ আর আলাদা আলাদা জায়গায় রাখেন। এর ফলে তোমার মামীর হত্যাকারীরা এখনো সেই আসল নীল হীরা খুঁজে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়।”
“বুঝতে পারলাম কিছুটা কিন্তু আমার কাছে কীভাবে আসলো আসল ডায়মন্ডটা। ওই বইটা আমার মামার হাতেই বা কেন পড়ল? যদি না পড়তো। অন্য কেউ যদি পেতো এটা তাহলে তো আমি থাকতাম না এখানে?”
“না, থাকতে না। স্বয়ং আমাদের ঈশ্বর যেখানে আমাদের সাথে আছেন সেখানে তো সবকিছুই ঠিক হবেই তাই না।”
বিস্মিত কন্ঠে রিপ বলল, “মানে! ঈশ্বর অভিশাপ দিয়েছে আপনাদের আর আপনাদের সাথেই আছেন তিনি, বুঝলাম না বিষটা?”
“স্বয়ং ঈশ্বর তোমার মামীকে সব কিছু বলেছিলেন ভবিষ্যতে কী ঘটবে? তাকে কী কী করতে হবে সব কিছুই বলে দেয় আর সব সেই অনুযায়ী তোমার মামীও সব করেন। যার ফলে তুমি হীরাটা পাও।” রিপের দিকে তাকিয়ে সামান্য হাসল রেডিস।
“কিন্তু আপনাদের ঈশ্বর এটা কেন করলেন?”
“তিনি চাইতেন তুমি আমাদের রক্ষা করবে। তোমাকে আমাদের রক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। এজন্য তোমাকে সেই ভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।”
“কিন্তু ঈশ্বর তো সব জানেন। তার উপর তোমাদের অভিশাপ দিয়েছেন। তারপর আমাকে সৃষ্টিই কেনই বা করলেন আপনাদের রক্ষক হিসেবে?”
আগ্রহ বাড়ছে আরো রিপের। তাই আগ্রহ নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করে চলেছে। জানতে চাইছে তার সব প্রশ্নের উত্তর।
রেডিস বলল, “হ্যা, কিন্তু অভিশাপের কারণটাতো শুনবে নাকি?”
“বলুন, সব বলুন আমাকে।” উত্তেজনা বেড়ে গেল রিপের। সব জানার ইচ্ছে তার মাঝে এখন।
রেডিস বলতে শুরু করল আবার, “ঈশ্বর সবি জানতেন শুরু থেকে কী হতে চলেছে। ঈশ্বর এটাও জানতেন ১১ টা রাজ্যের মধ্যে ১০ টা রাজ্যের কিং’রা মিলিত হয়ে মানুষ জাতিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করবে। ১১টা রাজ্য এক হলেই ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। কারণ আমাদের রাজ্যে লুকিয়ে আছে সেই বিষ। ১১ টা রাজ্য এক হলেই ওরা এতো দিনে ধ্বংস করে দিতো মানুষ জাতিকে। কিন্তু কিং হলিক কখনো এটা চাননি। কিং হলিক কখনো এক হয়নি। ঈশ্বর ছিল নিরপেক্ষ। তার কাছে বেশিরভাগ রাজ্যের মতামত এক হলে সেটাই মানতে হতো৷ কারণ সেই ঈশ্বরের উপরেও আছে আরো এক ঈশ্বর। তাই তিনি চাইলেও কিছু নিজে থেকে করতে পারতেন না তার উপরের জনের হুকুম ছাড়া। তার সেই ক্ষমতা ছিল না৷ কারণ ঈশ্বরদেরও ঈশ্বর ভ্যাম্পায়ারদের ঈশ্বরকে সেই ক্ষমতা দেন নি। অতঃপর তাই ঘটলো। মিথ্যে অপবাদ দিলো সব সাম্রাজ্যের কিং’রা মিলে আমাদের কিং হলিক ও আমাদের বিরুদ্ধে। তখন ঈশ্বর সেটাই মেনে নিলেন এক প্রকার বাধ্য হয়েই। তারা এই অপবাদ দিলেন আমাদের বিরুদ্ধে যে আমরা নাকি মানুষের ক্ষতি করছি। তাদের রক্ত পান করছি। তাদের হত্যা করছি। এই অপবাদের ফলে ঈশ্বর আমাদের এই অভিশাপ দেয় আমরা কখনো এখান থেকে বের হতে পারবো না। এই রাজ্য চিরতরে আটকে থাকবো আর আমাদের কিং হলিকও ধ্বংস হয়ে যাবেন। এরপর একসময় ঈশ্বর নিজে এখানে আসেন। তিনি আগে থেকেই এসব জানতেন তাই হলিককে লুকিয়ে লুকিয়ে সব বলে দেয় যাতে এইরকম কখনো না হয়। এটা হলে পৃথিবী ও ধ্বংস হয়ে যাবে। তখন ভ্যাম্পায়াররাও থাকবে না। মানুষ জাতি শেষ মানে তারাও শেষ। ১০টা রাজ্যের ভ্যাম্পায়াররা এই বিষয়ে অবগত নয়। যে কারণে এই বিশাল একটা বড় ভুলের দিকে সকলে পা বাড়াচ্ছে। এজন্য তিনি কিং হলিককে ২টা নীল হীরা দেন বাহিরে যাওয়া আসার জন্য আর কী কী করতে হবে সময় থাকতে সব করতে বলেন। কারণ তার ধ্বংসের অভিশাপ কখনো বদলাতে পারবে না। এজন্য কিং হলিক খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তোমার বাবা ড.ভ্যালির সম্পর্কে আর তার মাধ্যমে সব করানো হয়। কিছু ভ্যাম্পায়ারকে তোমাদের খবর রাখার জন্য সাম্রাজ্যের বাহিরে রাখা হয়। তারা তোমাদের প্রতিটা পদক্ষেপ এর খবর এনে আমাদের দিতো সবসময়।”
“সবি বুঝতে পারলাম কিন্তু মানুষ জাতি ধ্বংস হয়ে গেলে ভ্যাম্পায়াররা ধ্বংস হবে কেনো?” আগ্রহ আরো বেড়েছে রিপের।
“কারণ মানুষ জাতি ধ্বংস হলে সব ধরনের প্রাণীও ধ্বংস হয়ে যাবে আর আমাদের মানে ভ্যাম্পায়ারদের প্রধান খাবার হলো কাচা মাংস ও রক্ত। বিশেষ করে রক্ত না হলে আমাদের ধ্বংসও শুরু হবে। এখন বুঝে নাও বাকিটুকু।”
“বুঝতে পারলাম সব।” রিপ নড়ে চড়ে দাঁড়াল। নিজেকে শক্ত রেখে বলল, “আমাকে কী করতে হবে এখন?”
“তুমি আমাদের রক্ষক। তোমাকে যুদ্ধে নামতে হবে তাদের বিরুদ্ধে। তোমাকে সেই ১০ জন কিং’এর বিরুদ্ধে এক ময়দানে এক সাথে লড়তে হবে। তাদের হারাতে পারলে ঈশ্বর আমাদের অভিশাপ থেকে মুক্ত করে দেবেন। আর তুমি হবে “ভ্যাম্পায়ার কিং” সব রাজ্যের কিং।”
রিপ সকল বিষয় বুঝতে পারল। নিজের মনকে শক্ত করল। বললো, “আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করছি রেডিস আপনার কাছে, আমি আপনাদের রাজ্যকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করাবো আর পুরো মানব জাতিকে ক্ষতির হাত থেকে মুক্ত করবো।”
রেডিস অত্যন্ত খুশি হলো রিপের প্রতিজ্ঞাতে। বলল, “দেখো রিপ, তুমি চাইলেও এখন তাদের সাথে যুদ্ধে যেতে পারবে না। এজন্য তোমাকে এই রাজ্যের কিং হতে হবে। নিজেকে অনেক প্রস্তুত করতে হবে। তারপর তাদেরকে যুদ্ধের জন্য আহ্বান জানাতে হবে। এই রাজ্যের কিং যদি যুদ্ধ ঘোষণা করে তাহলে লড়াই করতে বাধ্য তারাও।”
“আমি তৈরি রেডিস সব করতে। আমি আজই কিং এর আসন গ্রহণ করতে চাই। আর খুব দ্রুতই ওদের মোকাবিলা করতে চাই।” জোর গলায় বলল রিপ।
“রিপ তুমি যোদ্ধা হও নি। অনেক সময় লাগবে পুরোপুরি যোদ্ধা হতে।”
“সেটা আমি বুঝবো। আপনি ব্যবস্থা করুন সব।”
“যৌবন বয়সে রক্ত গরম থাকে রিপ মনে রেখো।” দীর্ঘ নিঃশ্বার ফেলল রেডিস।
তাকালো রিপের দিকে। চোখে চোখ রাখল রিপের। রেডিস রিপের চোখে চোখ রেখে দেখতে পেলো আগুন জ্বলছে তার ভিতরে। খারাপদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের আগুন। তার বাবাকে হারানোর আগুন। তার মামীকে হত্যার প্রতিশোধের আগুন। তার জীবনের উদ্দেশ্য আজ সফল হয়েছে। রেডিস এতদিন যা দেখতে চেয়েছিল তাই পেয়েছে সে এইমাত্র রিপের মাঝে।
রেডিস আবার বলল, “আজ থেকে তুমি হলে এই রাজ্যের কিং।”
জেনি এতক্ষণ সব চুপচাপ শুনে যাচ্ছিল।
রেডিস জেনির দিকে তাকিয়ে ইশারার মাধ্যমে সব বুঝিয়ে দিলো। জেনি কক্ষ থেকে বেড়িয়ে গেল।
রিপ বলে উঠল, “আমি নিজেকে তৈরি করতে চাই খুব শীঘ্রই।”
“আচ্ছা, তুমি বিশ্রাম গ্রহণ করো রিপ, আমি সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছি,” বলল রেডিস।
রেডিস কক্ষ থেকে হাসি মুখে বেরিয়ে গেল। রিপ বিশ্রামের জন্য শুয়ে পড়ল বিছানায়।

***

এক বৈঠক সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে ১০ রাজ্যের ১০ জন ভ্যাম্পায়ার কিং এসেছে। সবাই একটা গোল টেবিলে চারপাশে বসে আছে। সাথে রাখ হয়েছে বিভিন্ন ধরনের পানীয়।
এদের মধ্যে প্রধাণ তিনজন হলো কিং সিরবিয়া, কিং নইরুস আর কিং স্রোতিস। এরাই সকল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বাকি ৮ জন তাদের অধীনস্থ।
সাম্রাজ্যে দখলের শুরটা হয় কিং সিরবিয়াকে দিয়ে। কিং সরিবিয়া অত্যন্ত লোভী একজন কিং। তার অন্য কিছুতে লোভ জন্মায় নি। সে শুধু চাইতো পুরো ভ্যাম্পায়ারের গোটা ১১ টা রাজ্য তার অধীনে থাকবে। এই ইচ্ছেটা এমনি এমনি জন্মায়নি তার।
ভ্যাম্পায়ায়ের পুরো দুনিয়াতে একটা নিয়ম প্রচলন আছে, “যে রাজ্যের কিং পুরো ১০টা রাজ্য আয়ত্ত করতে পারবে অর্থ্যাৎ তার দখলে আনতে পারবে তাকে ঐশ্বরিক ক্ষমতা দানের মাধ্যমে সব রাজ্যের কিং বানিয়ে দেয়া হবে। ভ্যাম্পায়ারদের পুরো সম্রাজ্যের কিং হবে সেই। আর যদি কেউ একটা রাজ্য দখল করতে গিয়েও কোনো যুদ্ধে একটা রাজ্য দখলেও পরাস্ত হয়ে যায় তাহলে তাকে নিশ্চিত ধ্বংস করে দেওয়া হবে।”
এই নিয়মের কারণে কারো মনে যদি ঈশ্বর হওয়ার ইচ্ছে থাকে। তবুও ধ্বংস হওয়ার ভয়ে কখনো যুদ্ধে নামে না। যদিও ঈশ্বর হওয়ার চেষ্টা কেউ না করে থাকেনি এমনও নয়। বহু কালে বহু ভ্যাম্পায়ার রাজ্যগুলোর কিং’রা চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের একটা যুদ্ধে ব্যর্থতার কারণে ধ্বংস হতে হয়েছে। এসবের কারণে বর্তমান কিংদের কেউই সেই সাহস করেনি তেমন।
কিং সিরবিয়া রণে বনে কৌশলে যুদ্ধ করা শুরু করে। তার ঈশ্বর হওয়ার স্বপ্ন পুরণ করতে থাকে। সে তার থেকে দূর্বল রাজ্যের সাথে যুদ্ধ করতে থাকে। একে একে ৪ টা রাজ্য দখল করে নেয়। তবে সে বুদ্ধি আঁকে মাথায়। ভ্যাম্পায়ারদের দুনিয়াতে আরো একটা নিয়ম আছে, “রাজ্যে রাজ্যে যুদ্ধ হলে কখনো আরেক রাজ্য জানতে পারবে না। যার সাথে যার যুদ্ধ হবে তারা ছাড়া কারো এ সম্পর্কে কোনো খবর থাকে না।
এই বিষয়টাকে কাজে লাগায় সিরবিয়া। সে যুদ্ধ করে পরাজিত করে আবার সেই রাজ্যের কিং কেই আসনে বসিয়ে রাখতো। শুধু শর্ত তার কথা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। তা না হলে নিয়মানুযায়ী ধ্বংস হতে হবে। সবাই তার হয়ে কাজ করে টিকে থাকতে চায়।
কিং সিরবিয়া এভাবে ৪ টা রাজ্য তার অধীনে আনে। তারপর আর কোনো রাজ্যে আক্রমণের সুযোগ পায় না। কারণ মানব জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার চিন্তা তার মাথায় ঢুকে পড়ে। এটাকেই আসল উদ্দেশ্য করে ফেলে সে। এই চিন্তাটাও সিরবিয়ার মাথায় প্রথমে আসে।
মানব জাতির প্রতি তার রাগ একটাই। তারা তার প্রাণের স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করে ফেলে। সেই রাগ থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশ্যে পুরো মানব জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার ইচ্ছা জাগে।
কিং সিরবিয়া যখন জানতে পারে মানব জাতিকে মুহুর্তের মধ্যে ধ্বংস করে দেওয়ার মতো শক্তিশালি বিষ কিং হলিকের কাছে আছে তখন সে হলিককে সে জানায়। কিন্তু হলিক রাজি হয় না। হলিক জানতো মানব জাতিকে পুরোপুরি ধ্বংসে করে দিলে তাদের ধ্বংসও নিশ্চিত। কিং সিরবিয়া তা মানতে নারাজ। হলিককে বোঝানোর চেষ্টা করলেও হলিক তার কথায় নড়চড় করে না।
সেজন্য সে বুদ্ধি করে আরো বাকী ১০ টা রাজ্যের কিং-দের সাথে হাত মিলিয়ে কিং হলিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে দেয় তারা। কোনো উপায় না পেয়ে ঈশ্বরের মাধ্যমে হলিকসহ তার রাজ্যকে অভিশাপ দেওয়ায়।
এরপর থেকে তারা খুব খুশি-ই ছিল। তাদের জন্য সহজ রাস্তা হয়ে গিয়েছিলো। পথের কাটা আর রইলো না। এবার শুধু ওই বিষটাকে আনাতে হবে কিং বিহীন রাজ্যে আক্রমণ করা খুব কঠিন কিছু না। কিং সিরবিয়া প্রস্তুতি নিচ্ছিল কিন্তু একটা পত্র এসে তার প্রস্তুতিটাকে বদলে দিল। চিন্তায় ফেলে দিল তাকে।
আজ সেই কারণেই বৈঠকের আয়োজন করেছে কিং সিরবিয়া। ডেকেছে বাকি সকল কিং-দের। তাদের কাছেও ইতিমধ্যে বার্তা পৌঁছে গেছে।
সকলে চুপচাপ বসে আছে আর ভাবছে কী করা যায়।
কিং নুইরাস বলে উঠল, “কী আর করবো এখন যুদ্ধে নামতে হবে কিং-দের সকলের। বিশাল ময়দানে লড়াই করতে হবে।”
কেউ কিছু বলল না৷ সকলেই ভাবতে লাগল।
“কেউ কিছু বলছেন না যে?” জিজ্ঞেস করল নুইরাস।
“কী বলবো বলুন, কিং নুইরাস। যুদ্ধ ঘোষণা তো হয়েই গেছে,” হতাশ কন্ঠে বলে উঠল কিং স্রোতিস।
কিং সিরবিয়া বলে উঠল, “আমার কথা হচ্ছে কিং হলিকের রাজ্যে নতুন কিং কে হল? কোথায় থেকে এলো সে?”
“খবর পেয়েছি নতুন কিং নাকি ঈশ্বরের দান। সে নাকি তাকে হলিকের রাজ্যকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা…” থেমে গেল কিং নুইরাস। বলতে গিয়েও বলল না সে।
পুরোটা শোনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠল কিং সিরবিয়া, “বলো নুইরাস কী সেই বড় কথা?”
“না মানে, বর্তমান কিং একজন মানব,” আস্তে করে বলল কিং নুইরাস।
হো হো করে সকলেই হেঁসে উঠল। হাসির হুল্লোড় পড়ে গেল পুরো বৈঠকে।
“এ আর কী কঠিন ব্যপার। সে তো আমাদের একজনের কাছেই টিকতে পারবে না,” হাসতে হাসতে বলল কিং সিরবিয়া।
“একজন মানুষ জাতি থেকে এসেই আমাদের যুদ্ধের বার্তা পাঠালো অভিশাপ থেকে হলিকের রাজ্যকে মুক্ত করার জন্য এটাকে কম ভাবে নিচ্ছেন কীভাবে আপনারা?” রাগান্বিত কন্ঠে বলল নুইরাস। “সে এসেই আমাদেরকে ময়দানে লড়াইয়ের বার্তা পাঠালো। তার হয়তো কিছুটা হলেও সাহস আর গায়েবি শক্তিও থাকতে পারে।”
“মানুষ জাতী আর গায়েবি শক্তি,” উচ্চ স্বরে হাসল কিং সিরবিয়া। “সম্ভব না। যুদ্ধের সময় ঠিক করা হয়নি আমাদের ঠিক করতে বলেছে। যুদ্ধের বার্তা যেহেতু পাঠিয়েছে সেহেতু যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পালানোর উপায় নেই। আর আমরা পালানোর মতো ভ্যাম্পায়ারও না। সকলে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিন আর সময় ঠিক করে নেওয়া যাক এখন কী বলেন আপনারা?”
সকলেই কিং সিরবিয়ার কথার সাথে একমত পোষণ করল।
কিং সিরবিয়া আবার বলল, “সামনেই তো আকাশে রক্তিম চন্দ্র উঠার সময় হয়ে আসছে। সেই সময়ই উপযুক্ত সময়। তখনি লড়াইয়ের সময় ঘোষণা করলে কেমন হয়?”
সকলেই এবারও একমত পোষণ করল।
কিং সিরবিয়া আর কথা বাড়াল না। সকলের মত নিয়ে নির্দিষ্ট করে নিল সময়টাকে। সকলকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বলে কিং সিরবিয়া বৈঠক শেষ করল।

***

বড় এক বৃক্ষের নিচে বসে আছে জেনি। আকাশের চাঁদটাকে দেখছে। ভালো লাগছে না জেনির। মনটা বিষণ খারাপ। উপায় নেই কোনো। মনের কথা শোনার মতো কেউ নেই গোটা রাজ্যে। বলতে গেলে ছিল না তবে হয়তো এখন আছে। কিন্তু সে কী শুনবে তার মনের কথা, হয়তো না।
ভ্যাম্পায়ার হয়েও সৌন্দর্যতা পেয়েছে জেনি। অন্য ভ্যাম্পায়ারদের মত নয়। একমাত্র জেনিই মানব জাতির মতো রুপ পেয়েছে। তাকে দেখতে ভ্যাম্পায়ার মনে হয় না। কিন্তু সে ভ্যাম্পায়ার কন্যা। তার রুপ পরিবর্তনের শক্তি আছে। এটাও নাকি সে ঈশ্বরের কাছ থেকে পেয়েছিল কিং হলিকের অনুরোধে।
যে কোনো জাতি বা প্রাণী-ই হোক না কেন বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ থাকবেই। এটাই ঈশ্বরের সৃষ্টি। কিং হলিক যে শুধু তার রাজ্যের কথা ভেবে ছিলেন তা কিন্তু নয়। রিপ কী শুধু যুদ্ধের জন্য এসেছে এখানে। কিং হলিক চাইতো রিপ যেন সবসময় এখানে সুখী থাকে। এখানে এসে তার চাহিদার যেনো কোনো কমতি না হয়। কখনো নিজেকে একলা না ভাবে।
ঈশ্বর সবি জানেন বুঝেন। কিং হলিকের অনুরোধে জেনিকে সৃষ্টি করা হয়। রিপের জন্য জেনির সৃষ্টি। সে যখন সব জানতে পারে সব তখন থেকে শুধু রিপকেই চাইতো। রিপকে ভালোবেসে গেছে তাকে না দেখেই।
যখন ও প্রথম রিপকে দেখে রিপের রুপের বেশে তার সামনে যায়। সেই সময় রিপের মুখ আর তার অবস্থা দেখে ভিতরে ভিতরে অনেক হেসে ছিল। রিপকে বুঝতে দেয় নি। তবে তার সামনেও কম হাসেনি জেনি।
রিপের বহু সময় কেটে গেছে এই রাজ্যে এসে এখানকার কিং হয়েছে। তবুও জেনি তার সাথে ঠিক মতো কথা বলে নি। জেনি ভাবতো হয়তো সে মানব জাতির কোনো নারীকে ভালোবাসতে পারে। এটা ভেবেই তার থেকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেছে কথা বলায়।
জেনি তার পক্ষ থেকে ভালোবেসে গেছে সবসময় কিন্তু কখনো রিপকে বলতে পারেনি। বলার সুযোগ কম পায়নি কিন্তু বলার সাহস হয়নি।
রিপ কিং হওয়ার পরপরই সারাক্ষণ প্রশিক্ষণ গ্রহণে ব্যস্ত। নিজেকে যোদ্ধা বানাচ্ছে। লড়তে হবে রিপকে ১০ রাজ্যের কিং-দের সাথে।
জেনি তার মনকে কখনো এই কাজ থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা করতেও পারে না। কারণ সে চায় না কোনো কারণে রিপের মন ঠিক জায়গা থেকে সরে যাক। রিপ তো তাদের জন্যই এসব করছে। জেনি মনে মনে ঠিক করেছে, যদি রিপ যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ফিরে আসে তারপর একসময় জানান দেবে তার ভালোবাসার কথা। রিপের জন্যই তো তার সৃষ্টি।
কিছুক্ষণ আগে বার্তা এসেছে কিং সিরবিয়ার তরফ থেকে। যুদ্ধের সময় ঠিক করা হয়েছে। রক্তিম চন্দ্র উঠবার সঙ্গে সঙ্গে ময়দানে যুদ্ধ শুরু হবে বিশাল ময়দানে। বছরে একবার রক্তিম চন্দ্র উঠে উত্তর আসমানে। সেই চন্দ্র ঘুরে আবার উত্তর আসমানে ডুবে যায়। সেই সাথে ভেসে আসে মেঘেদের গর্জনের আওয়াজ। জেনিদের রাজ্যের চন্দ্র লাল থাকে সর্বদা। কিন্তু রক্তিম চন্দ্র আলাদা৷ ওইদিন চারদিক গাঢ় লালে পরিণত হয়। ওটা রক্ত দিয়ে তৈরি চাঁদ।
কিং রিপ প্রশিক্ষণে থাকায় কিছু জানাতে পারেনি এখনো জেনি। জেনি বার্তা নিয়ে অপেক্ষা করে আছে। যখন রিপ প্রশিক্ষণ করে বিশ্রামের থাকবে তখন তাকে গিয়ে খবরটা জানাবে সে নিজের মুখে। সেই অপেক্ষায় আছে জেনি।

***

রিপ বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম করছে ওর নিজ কক্ষে। বেশির ভাগ সময় প্রশিক্ষণেই কাটছে। তাকে একা একাই প্রশিক্ষণ করতে হয়। কারণ সে নিজে থেকে নিজেকে তৈরি করছে। কিন্তু ভ্যাম্পায়ারদের অলৌকিক শক্তি আছে। সেই শক্তির বিপক্ষে লড়তে হবে। তার ভিতরের শক্তিকে জাগাতে হবে। এজন্য একা একা প্রশিক্ষণ করাটাই উত্তম।
রিপের ভিতরেও নাকি অলৌকিক শক্তি আছে। ও সেটাকে বের করবে কীভাবে। ওর কাছে কোনো উপায় জানা নেই। সেই শক্তি তার নিজেকেই খুঁজতে হবে। এখনো খুঁজে পেলো না রিপ। তবে সে বেশি অপেক্ষা করতে চায় না। সে তার মানব শক্তি নিয়েই লড়তে চায় সকলের সাথে। বার্তা ইতিমধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সবার নিকট।
জেনি ঢুকলো রিপের কক্ষে। প্রশিক্ষণের সময় শেষ করে বিশ্রামে থাকে রিপ নির্দিষ্ট সময়ে। সেই সময়টা ভালো করে জানে জেনির। তাই নির্দিষ্ট সময়ে রিপের কাছে এসেছে ও।
জেনিকে ঢুকতে দেখে বিছানা থেকে উঠে বসলো রিপ।
জেনি দেখে বলে উঠল, “কিং আপনাকে উঠতে হবে না। বিশ্রাম করুন, আমি আপনাকে একটা বার্তা দিয়ে চলে যাবো।”
“না ঠিক আছে,” জোর করে হাসল রিপ। “কী বার্তা জেনি।”
“যুদ্ধের সময় নির্দিষ্ট করা হয়ে গেছে,” মন খারাপ হল জেনির।
“কী হয়েছে জেনি? এরকম মাথা নিচু হয়ে গেল কেন আপনার মাথা? মনে হচ্ছে মন খারাপ হয়ে গেছে আপনার,” উঠে দাঁড়াল রিপ। এগিয়ে গেল জেনির দিকে।
“কিছু না, কিং,” বৃথা হাসি হাসল জেনি।
“আপনার মন খারাপ কেন, জেনি?” আবারও জিজ্ঞেস করল রিপ।
“কিছু না বললাম তো,” রাগান্বিত স্বরে বলল জেনি। ঘুরে দাঁড়াল বিপরী দিকে।
রিপ জেনির সামনে গিয়ে দাঁড়াল। জেনি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। জেনির মুখ ফুলে আছে। রাগ করেছে ভীষণ বোঝায় যাচ্ছে।
রিপ কখনো স্পর্শ করেনি জেনিকে। আজ না করে পারল না। জেনির থুতনিতে ধরে মুখ উপরের দিকে উঠিয়ে বলল, “জেনি, আপনার এমন রাগ হয়েছে কেন? বলুন তো আমাকে।”
জেনির চোখ নিচের দিকে। বললো, “যুদ্ধটা আর কিছু সময় পর করলে হতো না। আপনিও প্রশিক্ষণ করতে পারতেন আরো কিছু সময়। নিজেকে আরো ভালোভাবে তৈরি করতে পারতেন।”
“জেনি, আমি কিং হয়েছি বেশি সময় হয়নি কিন্তু আমি চাই খুব দ্রুতই আপনাদের এই রাজ্যকে অভিশাপ মুক্ত করতে,” একটু থামল রিপ। “আপনাদের মুক্ত করে আমি ফিরে যেতে চাই আমার পৃথিবীতে। এই ভিন্ন জগৎটাকে ভালো লাগলেও আমার ঠিকানা ওই পৃথিবী। আমার মামার কাছে আমার ঠিকানা।”
“এখানে থাকবেন না আপনি?” তাকাল রিপের দিকে। “তাহলে এসব কে সামলাবে?”
“আমি এসব চাই না। আপনি আর আপনার বাবা সামলাবেন এসব,” বললো রিপ।
“আপনাকে তো সৃষ্টি…”
জেনিকে থামিয়ে দিয়ে রিপ বলে উঠল, “আমি জানি আমাকে কেনো সৃষ্টি করা হয়েছে। এজন্যই আমি দ্রুত এসব শেষ করতে চাইছি।”
“যদি যুদ্ধে হেরে যান। তাহলে তো…” চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগল জেনির।
“একি আপনি কাঁদছেন কেন?” জেনির চোখের অশ্রু মুছে দিলো রিপ। “কিছু হবে না। আমি পারবো, জেনি। আমাকে পারতেই হবে। এখন শুধু অপেক্ষা আমার ভিতরের সেই অলৌকিক শক্তিকে জাগানোর।”
“আপনি এখনো পাননি সেই শক্তিকে,” অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো জেনি।
ঘুরে দাঁড়াল রিপ। বলল, “না এখনো পাইনি। তবে জানি খুব শীঘ্রই পাবো আমি। সেই শক্তিটাকে জাগাতে পারবো নিজের ভেতর। খুব কাছাকাছি আছি হয়তো সেটার। মাঝে মাঝে অনুভব করতে পারি সেটাকে।”
“এ আপনি কোন যুদ্ধে যাচ্ছেন কিং। নিজের ধ্বংসের লড়াইয়ে,” নিচু স্বরে বলল জেনি। “ওই শক্তি না পেয়ে লড়াইয়ে গেলে আপনার মৃত্যু নিশ্চিত হবেই হবে।”
“হতে পারে। তবে আমি যুদ্ধে নিজের সব শক্তি দিয়ে চেষ্টা করবো। আমি যে করেই হোক আপনাদের অভিশাপ মুক্ত করাবো,” জোর গলায় বলল রিপ। ভিতর থেকে একটা প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে রিপের।
“ঈশ্বর কোন পরীক্ষায় ফেলল আপনাকে,” আবারো চোখ দিয়ে অশ্রু পড়তে লাগল জেনির।
ঘুরে তাকালো জেনির দিকে। বলল, “আপনি আবারো কাঁদছেন? আপনার তো খুশি হওয়ার কথা। আপনাদের মুক্ত করার জন্যই তো এতকিছু করছি।”
“আপনি বুঝবেন না কিং,” নিজেকে সামালিয়ে নিলো জেনি। “যুদ্ধের সময় আজ বেশিদূর নেই।”
“তাহলে তো আর বেশি সময় নেই দেখছি।”
“এর মধ্যে আপনি আপনার শক্তিকে খুঁজে না পেলে…” নিচু স্বরে বলল জেনি।
“দেখা যাক কী হয়?” একটু থেমে রিপ বলল, “আপনি চিন্তা করবেন না আশা করি।”
“সেটা না হয় আমার উপর থাক,” অভিমানী কন্ঠে বলল জেনি।
রিপকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলো জেনি। সাথে নিয়ে গেলো কিছু অভিমান।
রিপ তাকিয়ে রইল জেনির যাওয়ার সময় এক দৃষ্টিতে। সে বুঝতে পারছে জেনির মনে তার জন্য জায়গা হয়েছে৷ জেনি তাকে ভালোবাসে।

চলবে?…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here