শূন্যতায় অস্তিত্ব (৬ষ্ঠ পর্ব)
লেখাঃ তাজরীন খন্দকার
হয়তো তিয়াসের প্রতি আমাকে আরো দূর্বল করার জন্য এটাই সবচেয়ে বড় কারণ ছিল!
কারণ পরেরদিন ঘটলো এক বিষ্ময়কর ঘটনা।
সারাদিন সবাই মন খারাপ করে বসে থাকার পরে বিকালে হঠাৎ তিয়াস রুহির নাম্বারে ফোন করে নুজহাতকে নিয়ে আমাদেরকে নিচে নামতে বললো।
আমরা কিছুটা অবাক হলেও নুজহাতকে নিয়ে গেইটের বাইরে গেলাম। যাওয়ার সাথে সাথে চমকে উঠলাম। সা’দ এবং তার মা-বাবাসহ তিয়াস এখানে দাঁড়িয়ে আছে। নুজহাতকে দেখার সাথে সাথে সা’দের মা তাকে বুকে জড়িয়ে নিলো। সা’দের বাবা সা’দের দিকে তাকিয়ে রাগী স্বরে বলতে লাগলো,
___এতো সুন্দর লক্ষী মেয়েটার থেকে দূরে যেতে চাইছিলি? ভাবতেই পারছিনা তুই আমার ছেলে। ভুল করেছিস অথচ সেটাকে নিয়ে সাহস করে বাঁচার চেষ্টা নেই? তুই ভালো করেই জানিস তোর মা-বাবা মেনে নিবে,তাও বলিস নি? কেন রে এরপর আরেকটা মেয়ের সর্বনাশ করার ইচ্ছে ছিল? আজকে যদি তিয়াস আমাদের সব না জানাতো কি হতো মেয়েটার? এখন চল ওদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যেতে হবে।
নুজহাত তিয়াসের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
___তিয়াস তোমার এই ঋণ আমি ভুলতে পারবোনা।
সা’দ এগিয়ে এসে নুজহাতকে সরি বলতে লাগলো।
আর আমার চারপাশটা মূহুর্তেই আবার রঙিন হয়ে উঠলো।
আমি কিনা তিয়াসের মতো একটা ছেলেকে ভুল ভেবে কাল সবখান থেকে ব্লক করে দিয়েছি?
আজকে ওর জন্মদিনে আমাকে সাজতে বলছিল, সেটাও কিনা আমি ভুলে গেছি। এখনো তো সময় আছে! আমি ওদের ভীড় থেকে এক দৌঁড়ে উপরে চলে গেলাম। তারাহুরো করে শাড়ী পরে আর কোনোভাবে একটু সাজগোজ করে আবার নিচে নেমে দেখি আমাদের রুমের বাকিরা রুমের দিকে আসতেছে। আমাকে দেখে ওরা হাসতে শুরু করে দিলো। আমি আঙুল দিয়ে বাইরে দেখিয়ে বললাম,
___ তিয়াস চলে গেছে?
ওরা পেছনে তাকিয়ে বললো এতক্ষণে চলে গেছে হয়তো, কিন্তু সা’দের মা-বাবা আর নুজহাত চলে গেছে। তারপরও আমি শাড়ীর কুচিতে মুঠো করে ধরে গেইটের বাইরে গেলাম। গিয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। তিয়াস এখনো বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে সে হাসলো। আর ইশারা করলো এসে বসতে।
আমার হাতে সময় ছিল মাত্র এক ঘন্টা। কেননা সন্ধ্যার পরে আমাকে আবার ভেতরে আসতে দিবেনা।
তাই কাছাকাছি একটা ক্যাফেতে বসলাম।
সেখানে নামার পরে তিয়াস আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে হঠাৎ বসে গেলো। প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি। নিচে তাকিয়ে দেখলাম বাইকে বসে শাড়ীর ভাজ হয়ে উপরে উঠে গেছে। তিয়াস সেটাই ঠিক করে দিচ্ছে।এই ব্যপারটা আমার অসম্ভব ভালো লাগছিলো। তারপর হাত ধরে একটা জায়গায় বসলো আর বললো,
___ তুমি রঙিন শাড়ী না কিনে এমন একটা হালকা রঙের শাড়ী পছন্দ করার পরে আমি অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু এটাতে তোমাকে এতো সুন্দর দেখাচ্ছে সেটা দেখে আমি আবারও অবাক হলাম। এরপর মাত্র ১৫ মিনিটে তুমি শাড়ী পরে তৈরি হয়ে যেতে পারো সেটা দেখে..
সে বলার বলার আগেই আমি বললাম,
___ সেটা দেখে আরো অবাক হয়েছো?
তিয়াস হাসতে হাসতে বললো,
___ হ্যাঁ সত্যি তোমাকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। শুনো একটা বুদ্ধি দেই, তোমার বিয়েতেও তুমি লাল,খয়েরী না পরে এমন হালকা রঙের বেনারসি পরবে ওকে?
আমি লজ্জায় হাসলাম। তিয়াস বিষয়টা খেয়াল করলেও কিছু বললো না।
পরক্ষণে খাবার আসলো। আমি খেতে খেতে বললাম,
___আচ্ছা তিয়াস তুমি এখান থেকে বের হয়ে কোথায় ভর্তি হবে?
তিয়াস চিবুতে চিবুতে বললো,
___ দেখা যাক।
আমি উৎসুক হয়ে বললাম,
___আমরা দেশের আর কোথাও চেষ্টা করবোনা। চট্রগ্রামেই থেকে যাবো। কি বলো? পাবলিক ইউভার্সিটিতে না আসলে প্রাইভেট কিংবা ন্যাশনালে থাকবো। কিন্তু আমরা চট্টগ্রামে থাকবো কেমন?
তিয়াস আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে বললো,
___ প্রীলি। এতো এডভান্স চিন্তা করো না। দেখা যাক কি হয়। তাছাড়া আমার বাবার চাকরির মেয়াদ বেশিদিন নেই। এরপর অন্য চাকরির সুবাদে অসংখ্য জায়গায় এমনকি বিদেশেও যেতে পারে।
আমি তিয়াসের এই কথার অর্থ তখন ধরতে পারিনি।
আর জিজ্ঞাসাও করিনি তার বাবা কিসের চাকরি করে।
তারপর কিছুক্ষণ কথা বলে আমরা তারাহুরো করেই চলে আসলাম। সন্ধ্যার আগে আগে রুমে এসে পৌঁছালাম। আমাকে দেখে সবাই এসে পাশে বসে বললো,
___কিরে তোদের প্রেমটা তাহলে হয়েই গেলো?
আমি লাজুক হাসিতে বললাম,
___নারে কিছু বলতে পারিনা।
রুহি বললো,
___সেও কি কিছু বলে না? কিংবা তুই কিছু বুঝতে পারিস না?
আমি না সূচক মাথা নাড়লাম। তারা হাহুতাশ করতে করতে আবার সরে গেলো।
ইয়ার ফাইনাল চলে গেলো। আমি কোনো রকম পাশ করছি। বাবাকেও রেজাল্ট জামাইনি। এর মধ্যে পড়ালেখার অজুহাতে বাড়িতেও বেশি যাইনি।
অন্যদিকে নুজহাতকে সবাই মেনে নিয়েছে। সা’দও আর এখন ভালো হয়ে গেছে। তবে নুজহাত হোস্টেলেই বেশি থাকে।
দেখতে আরো কয়েক মাস চলে গেলো। নুজহাত তাদের বাসায় এখন,কারণ ওর বেবি হওয়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে। সব ঠিকঠাক কিন্তু আমার যাবতীয় পরিক্ষার রেজাল্ট খারাপ। তবে তিয়াসের প্রতি আমার ভালোবাসা আরো তীব্রতর। কারণ তিয়াসের সাথে পরিক্ষার আগে আগেই অন্য রকম একেকটা ঘটনার সম্মুখীন হই, যেটা তার প্রতি আমাকে এতটা দূর্বল করে যে আমি সারাক্ষণ তাকেই ভাবতে থাকি।
এতদিন অপেক্ষা করেছি সে নিজে কিছু বলবে। কিন্তু বলছেনা। এখন তো অন্তত আমার পড়ালেখা করা দরকার। এখন যদি না বলি হয়তো আর বলা হবে না। ২০ দিন পরে নির্বাচনী পরিক্ষা। নুজহাতকে নিয়ে সবাই চিন্তায় আছে,পরিক্ষা দিতে পারবে কিনা।
এদিকে আমি রুমের সবার সাথে সিদ্ধান্ত নিয়ে ঠিক করে ফেললাম আমি নিজেই তিয়াসকে প্রপোজ করবো!
এভাবে বলবো বলবো করে সময় মূহুর্ত সব এলোমেলো করলে তো আর হবে না । একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া দরকার।
সেদিন ছিল মেঘলা আকাশ, সকাল থেকে সারা আকাশ জুড়ে মেঘেদের আলোরণ। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। চারদিক নিরব,রাস্তায় আজ গাড়ীদের যানজটও তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। অথচ তিয়াস কেন জানি আগেরদিন জানিয়ে দিয়েছে আমি তার সাথে বিকাল ৩ টায় যেন দেখা করি। একটা রেস্টুরেন্টে আসার কথা বলছে।
আর আমি গত ৫ মাস থেকে ক্লাস থ্রির বাচ্চাকে পড়িয়ে কিছু টাকা সঞ্চয় করে ওর জন্য একটা রিং কিনেছিলাম। সেটা দিয়েই প্রথম শুরু হয়েছিল আমার টিউশন জীবন। আর প্রথমবার কারো জন্য উপহার কেনা। জানিনা মেয়েদের পক্ষ থেকে ছেলেদেরকে এইরকম উপহার দেওয়াটা কতটা যুক্তিযুক্ত! কিন্তু অন্য রকম একটা আবেগ থেকেই আমি এটা করেছিলাম। ভেবেছিলাম এই দেখাতেই ওকে প্রপোজ করে ফেলবো।
বিকেলে ছাতা নিয়ে বের হয়ে গেলাম। আমি রেস্টুরেন্টে পৌঁছাতেই দেখলাম আলাদা একটা জায়গা আগে থেকেই সাজানো। যার মধ্যখানে তিয়াস দাঁড়িয়ে আছে। এটা দেখে আমার মনে হচ্ছিলো তিয়াসই বুঝি আমাকে আগে প্রপোজ করবে। তবুও আমি যেহেতু ভেবে এসেছি তবে আমিই আগে করবো। তাছাড়া একজন আগে করলেই হলো। আমি হাসিমাখা মুখে ওর কাছাকাছি গিয়ে রিংটা বাড়িয়ে বললাম,
___যেদিন তোমায় প্রথম দেখেছিলাম সেদিনই আমার মধ্যে সবচেয়ে অচেনা অনূভুতিরা ভীড় করেছিল। তখন বুঝতে পারিনি এটা কি,তবে এর কিছুদিন পর থেকেই আমি বুঝতে পারি আমি তোমাকে ভালোবাসি। এতদিন বলতে চেয়েও আমি পারিনি, অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু আমি প্রতিবার প্রতিনিয়ত, প্রতিটা সময় ব্যর্থ হয়েছিলাম। তাছাড়া আমি জানি তুমিও আমাকে…
বলার আগেই তিয়াস আমার কাঁধ বরাবর একটা ধাক্কা দিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো,
___দীপ্তি তুমি এসে গেছো!
আমি রিংটা হাতের মুঠোতে পুরে পেছনে তাকিয়ে দেখি দীপ্তি। বর্তমানে আমাদের ক্লাসের ভালো রেজাল্ট করা ছাত্রী। সকল শিক্ষকদের চোখের মণি।
যেটা আমার থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিয়াসকে পাওয়ার পর থেকে আমার স্থান পরিচয় এমনকি পুরো দুনিয়া বদলে গেছে। তিয়াস গিয়েই ওকে হালকা জড়িয়ে বলতে লাগলো,
___কতক্ষণ ধরে ওয়েট করছি বলোতো।
দীপ্তি মৃদু হাসি টানিয়ে বললো,
___সবাইকে নিয়ে আসতে এতো দেরি হয়ে গেলো। তাছাড়া আজকে দিনটাও কেমন যেন।
পেছনে তাকিয়ে দেখি সত্যি আমাদের ক্লাসের অনেকেই এখানে উপস্থিত। তারাও সবাই ক্লাস টপার।এসব দেখে এমন মেঘলা ঠান্ডা দিনেও আমার সারা শরীর ঘেমে একাকার। আমি বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছে। তবে আঁচ করছিলাম আমি ভীষণভাবে ঠকে যাচ্ছি।
আমার সামনে বসে তিয়াস দীপ্তিকে হাঁটু গেড়ে বসে প্রপোজ করছিল। মনে হচ্ছিল আমার কলিজাটা ছিড়ে ভেতরে শনশন করে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। দাঁড়িয়ে থাকার পুরো শক্তি আমার হারিয়ে গেছে।
সামনে রাখা বিরাট কেকটার ঢাকনা খুললো। যেখানে লিখা
“Five Years Together ”
দীপ্তির হাসির রেশ থামছিলই না। সে কেক কাটলো।
একে অপরকে খাওয়াচ্ছে। কিন্তু আমার মাথায় যাচ্ছিলোনা ওদের পরিচয় ৫ বছর ধরে হলে এখন পর্যন্ত আমি কেন জানলাম না? প্রায় দেড় বছরেরও অধিক সময় ধরে তিয়াসের সাথে আমার পরিচয়। অথচ আজ পর্যন্ত কিচ্ছু বললো না। এসব কিছু না বুঝলেও এটা বুঝতে পারছিলাম তিয়াস আমাকে এখানে অপমান করতে ডেকেছে।
দীপ্তির গাল ঠোঁট কেক লেগে নাজেহাল সে হাত উপরে তুলে ওয়াশরুমের দিকে ছুটলো। তখনি তিয়াস সবাইকে উদ্দেশ্য করে আমার দিকে আঙুল করে বললো,
___গাইজ গাইজ, আজকে একটা মজার ব্যপার ঘটেছে। প্রীলি আমাকে প্রপোজ করেছিল। হাতে একটা রিং ছিল মেবি, ওহহো তোরা চলে আসায় ততটা খেয়াল করতে পারিনি।
তিয়াসের কথা শুনে বাকি সবাই হুহু করে হেসে উঠে একজন বললো,
___আরে কোটিপতি বাবার সুন্দরী ক্লাস টপারের বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে এইরকম নিম্নবিত্ত পরিবারের গেঁয়ো ব্যাকবেঞ্চার স্বপ্ন দেখে? মাই গড।
তিয়াস একজনের কাঁধে হাত রেখে বললো,
___থাক এসব নিয়ে আর কিছু বলিস না। বেচারি আর ক্লাসে প্রথম হওয়ার ক্ষমতা এমনিতেই রাখছেনা। এরপর এই বিরহবেদনা কাটাতে গিয়ে হতে পারে পরিক্ষায় দুটো সমানমাপের শূন্য নিয়ে আবার পাশের চেষ্টা করছে। তাই সত্যটা বলেই দেওয়া দরকার।
এতক্ষণ আমি তিয়াসের অন্য কাউকে ভালোবাসাটা দাঁড়িয়ে শুনতে পারলেও এই মূহুর্তে আমি আর নিতে পারছিনা। মনে হচ্ছে আমি আজকের পরে বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই পোষণ করবো না।আমার প্রচন্ড জোরে চিৎকার দিয়ে উঠতে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু আমি ভেতরের মৃত্যুটাকে নিশ্চিত করে তখনও চুপচাপ দাঁড়িয়ে শুনে যাচ্ছি।
তিয়াস বলছে,
___দীপ্তি কে জানো? এই শহরের বিরাট বিজনেসম্যান দিলীপ খানের মেয়ে। শুধুমাত্র আমার জন্য সে এই কলেজে ভর্তি হয়েছে। পরিক্ষার পরে আমরা একসাথে আমেরিকা চলে যাবো। দীপ্তিকে তুমি বুঝতে পারো নাই, কিন্তু সবাই জানে দীপ্তি কখনো কোনোকিছুতে সেকেন্ড হয়না। সেটা হোক দূর্নীতি, অন্যায় কিংবা অভিনয়ের ছলে। কিন্তু কলেজে এসে একমাসেই দীপ্তির চেহেরা মলিন হয়ে গিয়েছিল তোমার জন্য, সে আশাহত হয়ে গিয়েছিল তার পূর্বকার রেকর্ড তোমার জন্য ভেঙে যাবে। কারণ তুমি ক্লাসে খুব ব্রিলিয়ান্ট বলে ঘোষিত হয়ে যাচ্ছিলে,কিন্তু আমি সেটা কি করে দিতে পারি বলো? দীপ্তি আমার জীবন। আমাদের পরিচয় ৫ বছরের! তাইতো প্রতিটা পরিক্ষার আগে আমার পক্ষ থেকে তোমার জন্য বিশাল বিশাল সারপ্রাইজ থাকে। কিন্তু বিশ্বাস করো সব দীপ্তির জন্য।
তাকিয়ে দেখলাম দীপ্তি আসতেছে। আমি চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলাম। তখন তিয়াস আস্তে আস্তে বললো,
___ইচ্ছেটা তোমার। বিরহশোকে নেতিয়ে যেওনা। তাছাড়া আমার এই এক্টিংয়ের মনে হয়না আর কোনো দরকার আছে। কারণ তুমি এতো অল্প সময়ে কিচ্ছু পারবেনা। ভ্যাঁ ভ্যাঁ! (মুখ ভাংচিয়ে বললো)
আমি বাম হাতে মুখ মুছতে মুছতে বললাম,
___আমি প্রীলিয়া হাসান যদি রক্ত মাংসে গড়া মানুষ হয়ে থাকি তাহলে আমি নির্বাচনীতে নয়, বোর্ড পরিক্ষায় সর্বোচ্চ গ্রেট এনে দেখিয়ে দিবো। শুধু তোমার মতো একটা বিশ্বাসঘাতক প্রতারককে নিজের মুখ দেখাতে চাইবোনা।
বলেই আমি পা বাড়ালাম। তবে পেছনে শুনতে পেলাম দীপ্তি বলছে,
___ তিয়াস প্রীলিয়া মুখ দেখাতে চাইবেনা বললো কেন?
এরপর কি বলেছে আমি শুনিনি। তবে আমি আজ নিজের সর্বনাশের কথা শুনেছি। নিজের ভুলের জন্য নিজের এতো বড় অধঃপতন টের পেয়েছি।
তবে এই চ্যালেঞ্জ কেন করলাম আমি বুঝতে পারছি না। আমার পক্ষে স্বাভাবিক বেঁচে থাকা সম্ভব কিনা সেটাই সন্দেহের। সেখানে কিনা এমন একটা চ্যালেঞ্জ করে বসলাম।
আমাকে কেউ আজ এভাবে ঠকালো! আমার জন্য এটাই বুঝি প্রাপ্য ছিলো। কারণ আমিও যে আমার পরিবারকে ঠকিয়েছি। বাবার এতো কষ্টের টাকায় পড়ালেখা না করে একটা ছেলের জন্য উতলা হয়ে উঠেছিলাম। আমার জন্য এটা উচিত শিক্ষা ছাড়া আর কি?
চলবে……