ছদ্মবেশ,গল্পের সামনের কিছু অংশ

0
811

#ছদ্মবেশ
গল্পের সামনের কিছু অংশ,,,

১-
নির্জন পায়ের উপর পা তুলে বসে ফোন কানে নিয়ে হাসি মুখে বলে,
– তুমি কি বলছো তা বুঝতে পারছো তো নিলয়? ভালো করেই জানো এই পথে যে একবার পা রাখে তার বের হওয়ার কোনো রাস্তা থাকে না। একটাই রাস্তা থাকে আর তা হলো ‘মৃত্যু’। তুমি এই রাস্তা থেকে সরতে চাইলেও বিষয়টা এমনই দাড়াবে। তুমি তো ম’রবেই, সাথে তোমার বন্ধুদেরও কুকু’রের মতো মা’রবো।

নিলয় কাধে একটা ব্যাগ নিয়ে বলে,
– আমি বেচে থাকতে আমার বন্ধুদের গায়ে একটা ফুলের টোকাও পড়তে দিবো না। আপনি চেষ্টা করতেই থাকুন।

২-
নিবিড়ের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে ইকবাল সানি একগাল হেসে বলে,
– হাই আমি ইকবাল সানি।
নিবিড় চার পাশটায় তাকিয়ে বলে,
– আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন কেন?
ইকবাল সানি একটু হেসে বলে,
– আপনার নিরাপত্তার জন্য মি. রাজের কথায় আপনাকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। চার পাশে পুলিশ খুজে বেড়াচ্ছে আপনাকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এখানে গা’ঢাকা দিয়ে থাকুন। সব রকম নিরাপত্তা পাবেন এখানে।

৩-
আরোহির মা ফোন কানে নিয়ে বিষণ্ন গলায় বলে,
– আরোহির বিয়ে দু’দিন পর। তার বাবা তার মতোই একজনের সাথে আরোহির বিয়ে দিচ্ছে। কয়দিন ধরে মেয়েটা অনেক পাগলামি করছে। ঘরের সব জিনিস ভাঙচুর করছে। আবার কখনো রুমে দরজা বন্ধ করে নিরবে কাঁদছে। পাগল হয়ে যাচ্ছে মেয়েটা।
রাজ শান্ত ভাবে বলে,
– যা খুশি করতে দিন তাকে। শুধু খেয়াল রাখবেন সে যেন নিজের কোনো ক্ষতি না করে। ওর কিছু হবে না। সময় হলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে।

৪-
তুষারের কান্ড দেখে ফারিহা রেগে বলে,
– শুধু ভাইয়ার বন্ধু দেখে আপনাকে কিছু বললাম না। নয়তো ধরে নিয়ে খালের পানিতে চুবাতাম। খবিশ একটা।
তুষার হেসে বলে,
– আমিও শুধু নিবিড়ের বোন দেখে কিছু বললাম না। নয়তো,,,,
ফারিহা এবার দুই হাত কোমড়ে রেখে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,
– নয়তো কি করতেন হুম?

৫-
অপারেশন থিয়েটার থেকে বের আইসিইউ তে রাখা হয়েছে রুশানকে। অবস্থা ভালোর দিকে আসলে কেবিনে নিয়ে যাবে।
বাইরে ফ্লোরে বসে বাচ্চাদের মতো কাঁদছে রিমা। প্রিয় মানুষটার কিছু হয়ে গেলে কষ্টটা খুবই তীব্র হয়।
আগের কথা গুলো মনে পরছে বার বার। যখন রুশানের ধমক, শাসন এসব দেখে মনে মনে বিরক্ত হতো রিমা।
একদিন রুশান বলেছিলো,
– যদি কখনো তোর লাইফ থেকে খুব দুরে চলে যাই, তখন আর এসব নিয়ে কেও জ্বালাবে না তোকে।
ওসব কথা মনে পড়তেই কাঁন্নার গতিটা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে সে। কেউ আইসি’ইউ তে পড়ে আছে আর কেও বাইরে পাগলের মতো কাঁদছে। কোথাও কেউ ভালো নেই।

৬-
রাজকে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে গাড়িতে তুলে নিলো অরিণ। দুর থেকে রাজের গার্ড গুলো কিছু বলতে চাইলে হাতের ইশারায় তাদের থামিয়ে দেয় রাজ।

ড্রাইবিং করতে করতে অরিণ বলে,
– এখন সিট বেল্ট বাধা শিখেছো নাকি এখনো আগের মতো ক্ষেতই আছো?
রাজ একটু মুচকি হেসে বলে,
– ঐ দিন শিখিয়ে দিয়েছিলে না? মনে আছে।
অরিণ একটু হেসে রাজের দিকে কয়েকটা কার্ড এগিয়ে দিয়ে বলে,
– আমার বিয়ের কার্ড। তোমাদের সব বন্ধুদের ইনভাইট করলাম।
রাজ বলে,
– বর কি করে? আমার মতো ছোট লোক না নিশ্চই?
অরিণ একটু ভাব নিয়ে বলে,
– দেশে নাম করা RJ Cowdhury Group and Ind. এ জব করে। নাম শুনেছো কখনো? শুনবেই বা কি করে? গ্রামেই তো বড় হয়েছো। শহরে আসলে কয়দিন হলো?
অরিণের ইন-ডিরেক্টলি অপমান টা রাজ এক সাইডে ফেলে দিয়ে বলে,
– তোমার এবারের গাড়িটা কিন্তু খুব সুন্দর। নতুন নিয়েছো নাকি?
অরিণ হেসে বলে,
– এটা সাজিদ মানে আমার হবু বরের গাড়ি। এমন দুইটা আছে তার। একটা আমি নিয়ে এসেছি। তাকে অফিস থেকে গিফ্ট করেছে ব্যাবহারের জন্য।

অরিণের এতো ভাব দেখে একটু হাসলো রাজ। এক হাত বের করে আঙুলের ইশারা করলে পেছন থেকে লম্বা সারিবদ্ধ ভাবে এক এক করে গাড়ি আসতে শুরু করে।
অরিণ লুকিং গ্লাসে পেছন পেছন আসা কালো কালারের অনেক গুলো গাড়ি দেখে কিছুটা আতঙ্কিত হলেও মনে মনে ভাবে, হয়তো সাজিদ পাঠিয়েছে অরিণকে সিকিউরিটি দেওয়ার জন্য। তবুও বার বার লুকিং গ্লাসে তাকালে পাশ থেকে রাজ বলে,
– ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এরা তোমার সেই বিখ্যাত RJ Cowdhury Group and Ind. এরা মালিকের সিকিউরিটি।
বলেই সিটে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে রইলো রাজ। আর অরিণ গাড়ি থামিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে।

~ সামনে অন্য রকম কিছু হতে চলছে??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here