ছদ্মবেশ,পর্ব ৫৯,৬০

0
837

#ছদ্মবেশ,পর্ব ৫৯,৬০
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ
৫৯

গ্রুপ C1 এর এতগুলো লোক কে হ’ত্যা করা হলো। কে করেছে তার কোনো প্রমান মিলেনি। আর যাই হোক অন্তত নিলয়ের মতো ছেলের কাছে বিষটা লজ্জা জনক।
কারণ নিলয়ের থেকে আজ অব্দি কোনো শত্রুপক্ষ বেশি দিন গোপন থাকতে পারেনি। রুশানের মত একটা ছেলের সিক্রেট বের করে ফেললো সে। অথচ যে তার এত গুলো লোককে এভাবে নির্মম ভাবে মে’রে দিয়ে গেলো তার কোনো নিশানাই খুজে পায়নি। আবার ওয়ার্নিংও দিয়ে গেছে। কে এই লোক? রুশানও তো হসপিটালে। নতুন করে কে আবার তাদের পিছে লাগলো?

এদিকে জরুরি তলব পেয়ে নির্জনের আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেলো নিলয়। চার পাশে অ’শ্র হাতে দাড়িয়ে আছে অনেকে। তার মাঝখানে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে নির্জন। নিলয় গিয়ে তার সামনে দাড়ালে নির্জন হাতের ইশারায় বলে,
– বসো।
নিলয় চুপচাপ বসে নির্জনের দিকে তাকালে নির্জন কিছুক্ষন নিরব থেকে বলে,
– নিলয় কোথায়? নিলয়কে ডেকেছি আমি।

নিলয় কিছুটা অবাক হলো নির্জনের কথায়। পাশ থেকে পিন্টু কিছুটা নার্ভাস মুখ নিয়ে বলে,
– এইতো নিলয় ভাই।
নির্জন সাথে সাথেই আবার বলে,
– কই আমি তো দেখতে পাচ্ছি না তাকে? আমি তো আমার সামনে বসা কিছু বিড়াল ছানা ছারা নিছুই দেখতে পাচ্ছি না।

অপমানে নিলয়ের মুখটা থমথমে হয়ে গেলো। চার পাশটায় ভয়ানক নিস্তব্দতা বিরাজ করলো কিছুক্ষনের জন্য। কিছুক্ষন নিশ্চুপ থেকে নির্জন মুখে একটা ‘চ’ সূচক শব্দ করে বলে,
– না, কিছুতেই মিল পাচ্ছি না আমি। আগের নিলয় আর এই নিলয়ের মাথে অনেক পরিবর্তন এসে গেছে। এখন দেখে মনে হচ্ছে শরিরে একটা বিড়ালের তেজও নেই। সব জায়গায় বাঘের মত গর্জে উঠা নেই নিলয় এখন বিড়ালের মতো ঘাপটি মেরে বসে আছে। উত্তপ্ত তেল এখন পানির মত নিস্তেজ হয়ে গেছে।

নির্জনের কথা শুনে পাশ থেকে একজন খিল খিল করে হেসে উঠলে নিলয় নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে উঠেই ওখানে থাকা ড্রিংকসের একটা বোতল ভে’ঙেই লোকটার গ’লায় ঢুকিয়ে দিলো। চার পাশ টা আবার নিরব হয়ে গেলো। লোকটা ধপ করে পরে গেলো মাটিতে৷
নিলয় এবার মুখ খুলে থমথমে গলায় বলে,
– আমাকে কি এখানে কোনো তামাশা দেখতে ডাকা হয়েছে?

নির্জন আবার কিছুক্ষন নিরব থেকে নিলয়ের দিকে চেয়ে একটা মুচকি হাসলো। নিলয় আবার চেয়ারে বসে স্বাভাবিক হলে নির্জন বলে,
– এমন চলতে থাকলে অল্পদিনেই সব ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি চাইনা এমনটা হোক। তোমার মাঝে দিন দিন যেই অবনতি ঘটছে তাতে মনে হয় না তুমি বেশি দিন নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারবে। তেজ হারিয়ে যাচ্ছে তোমার থেকে। এভাবে চলতে থাকলে সামনে তোমার জায়গা থেকে সব পরিচালনা করবে সামির(আরোহির সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে থাকা ছেলেটা)।

কথাটা শুনে পাশ থেকে সামনির একটু ভাব নিয়ে নিজের ব্লেজার ঠিক করার মত একটু অঙ্গিভঙ্গি করলো।
নিলয় সেদিকে একবার আড় চোখে চেয়ে পরক্ষনে নির্জনের দিকে তাকিয়ে বলে,
– আপনি ছারা আমার আগে পা বাড়িয়ে কেও হাটতে চাইলে, এক পা ফেললে দ্বিতীয় পা ফেলার সুজুগ দিবো না আমি। সেটা যত বড় মাফিয়া হোক না কেন? আই ডোন্ট কেয়ার।

বলেই নিজের সানগ্লাসেখানটা পরে সেখান থেকে উঠে হাটা ধরলো নিলয়। পাশ থেকে সামির নির্জের দিকে চেয়ে বলে,
– ওর সাহস দেখলেন, আপনার কথার কোনো দামই দিলো না৷ আপনাকেই মুখের উপর থ্রেট দিয়ে গেলো।
নির্জন একটু মুচকি হেসে বলে,
– এমন সাহস আছে দেখেই তো সে পুরো টিমের ক্যাপটেন। আমি না থাকলেও সে সব সামলে রাখতে পারছে। আজ ওকে এসব বলেছি যেন সে নিজের অবস্থান ভুলে না যায়।
সামির আবার বলে,
– তাকে এভাবে সুজুগ দিতে থাকলে তো একদিন আপনার উপরে উঠে হাটতে চাইবে।
নির্জন কিছুটা স্বাভাবিক ভাবে বলে,
– ও এমনটা চাইলে অনেক আগেই আমার জায়গাটা দখল করে ফেলতে পারতো। এমন অনেক সুজুগ দিয়ে দেখেছি তাকে। সব রকম পরিক্ষাই করেছি। কিন্তু তার এমন কোনো উদ্দেশ্যই নেই। সে আর যাই করুক নিজের মানুষের ক্ষতি করার মত ছেলে সে না।
,
,
আজ রুশানকে হসপিটাল থেকে নিয়ে যাচ্ছে বাসায়। নিবিড় ও রাজ তাকে ধরে গাড়িতে নিয়ে বসালো। নিলয় তুষার সামনে গিয়ে বসে। আর পেছনে রাজ ও নিবিড় রুশানকে নিয়ে।
রুশানের ফ্যামিলি মেম্বার ও ফরিদা আন্টি অন্য গাড়িতে গিয়ে উঠে।

রুশানের সাথে তাদের পরিচয়ের পর আজ প্রথম রুশানদের বাসায় যাচ্ছে সবাই। অনেক দিন পর হসপিটাল থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে গাড়ি নিয়ে চললো রুশান ও তার প্রিয় মানুষ গুলো। গাড়ির সামনে ও পেছনে পুলিশ সিবিলে বাইক নিয়ে গার্ড দিচ্ছে।

বাড়ি বেশি দুরে না হওয়ায় কিছুক্ষনের মাঝে পৌছে গেলো তারা। গেট পেরিয়ে বাড়ির সামনে গিয়ে দাড়ালে গাড়ি থেকে নামলো তারা

সবাই রুশানকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও নিবিড় ও তুষার দুজন হা করে বিশাল জায়গার উপর করা এই বড় বাড়িটা ও আশে পাশের সব কিছুতে চোখ বুলাতে লাগলো।
কিছুক্ষন অবাক হয়ে চার পাশে চেয়ে তুষার বলে,
– ভাই আমি আর তুই ছারা দুনিয়ার সবাই দেখি বড় লোক।
নিবিড়ও তুষারের কাধে হাত রেখে চার পাশে চেয়ে বলে,
– হুম তাই তো দেখতেছি।
তুষার এবার একটু ভাবুক দৃষ্টিতে নিবিড়ের দিকে চেয়ে বলে,
– রাজও এতো বড় লোক রুশানও দেখছি এমন। সেই জায়গায় আমরা এতো সাধারণ ছেলে হলেও তারা কখনো আমাদের ছোট করে দেখেনি। বরং নিজেদের সাথে মিশিয়ে নিয়েছে আমাদের। আমরা তাদের লেভেলের অনেক ছোট হলেও কোনো শ্রেনি বিবাদ দেখেনি তারা।

এর মাঝে নিলয় ঘরের ভেতর থেকে বেড়িয়ে এসে বলে,
– তোরা আবার এখানে দাড়িয়ে কি করছিস? ভেতরে সবাই খুজছে তোদের।

নিলয়ের কথায় ভাবনা থেকে বেড়িয়ে ভেতরের দিকে পা বাড়ায় তারা।
সবার আথিতেয়তা ও খাওয়া দাওয়া শেষে বিকেলে ফরিদা আন্টি আরশি, আরিশা সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিলো।

এদিকে নিবিড় ও রাজ মিলে খুব ভাব জমিয়েছে রুশানের দাদির সাথে। দাদিও অনেক রসিক মানুষ। ওদের সাথেও নিজের নাতির মতো মিশে গেলো। নাতির বন্ধুরাও নাতিই তো হবে। এমনিতেই নিবিড় এমন একটা ছেলে, যে কয়েকটা কথা বলেই সবার সাথে মিশে যেতে পারে।
তাদের আড্ডার মাঝে তুষার ও নিলয়ও রুশানের কাছ থেকে উঠে এই রুমে এসে জয়েন হলো।

রুশানের দাদির রুমে একটা লোকের অনেক গুলো ছবি টাঙানো। তা দেখে তুষার তাকে প্রশ্ন করে,
– আচ্ছা দাদি, লোকটা কে? আপনার আরেক ছেলে, আই মিন আঙ্কেল মানে রুশানের বাবার কোনো ভাই?
দাদি নিজে নিজে আস্তে করে দুই গালে দুইবার হাত লাগিয়ে বলে,
– তওবা তওবা, এটা রুশানের দাদার ছবি।
নিবিড় এবার তুষারের দিকে রাগি চোখে চেয়ে বিড়বিড় করে বলে,
– শালা ব’লদ, চুপ থাক।

এর মাঝে রাজ দাদার কথা জিজ্ঞেস করলে দাদির মনটা বিষণ্ন হয়ে উঠে। আজও তার চোখে ভেষে উঠে, তার দাদার সাথে ঘটে যাওয়া সেই বিশ্বাস ঘাতকতার কথা।
রুশানের দাদিকে এমন বিষণ্ন ও চোখ ভিজে উঠতে দেখলে তার কারণ জিজ্ঞেস করে নিবিড়।
দাদি বিষণ্ন মনে বলে,
– খুব খারাপ হইছে মানুষটার সাথে। আমাদের সবার সাথেই খুব খারাপ হয়েছে। সেদিনের পর থেকে আজও মানুষটার কোনো খোজ পাইনি।

নিখোজ শব্দটা শুনলেই বিষয়টা খুব রহস্য জনক মনে হলো সবার কাছে। উৎসাহ নিয়ে সবাই বিষয়টা জানতে চাইলে দাদি বলতে শুরু করে,
– রুশানের দাদা ছিলো এই শহরের একজন নাম করা বিজনেস ম্যান। রুশানের বাবা রিদ ডাক্তারিতে আসক্ত ছিলো দেখে তার এসব বিজনেস এর দিকে মন ছিলো না। তখন বাসায় আরো একটা ছিলে ছিলো, তাকেও ছোট বেলা থেকেই বড় করেছিলাম আমরা। আমরা ভাবতাম সেও আমাদের আরেকটা ছেলে। তার নাম ছিলো নির্জন। রুশানের দাদার সাথে সব কিছু সামলাতো সে। এর পর একদিন সে বিশ্বাস ঘাতকতা করে সব নিজের নামে করে নিয়ে আমাদের নিঃস্ব করে নিলো। যাকে নিজের ছেলে ভাবতাম সেই ছেলেই আমাদের পরিবারকে একেবারে এলোমেলো করে দিলো। তারপর থেকে রুশানের দাদার আর কোনো খোজ পাইনি। বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েও লাভ হয়নি। কোনো বিচার পাইনি আমরা। পাইনি আগের মত হাসিখুশি সংসার টা। সেই থেকে আইনের প্রতি তীব্র ঘৃনা ছিলো আমাদের। রুশানকেও তার বাবা চেয়েছিলো ডাক্তার বানাতে। কিন্তু রুশান ছোট বেলা থেকেই এসব শোনার পর পুলিশের পেশাটাই বেছে নিয়েছে। ভালো মানুষের আড়ালে তার খারাপ মুখশ টা সবার সামনে টেনে খুলবে বলে। বিশ্বাস ঘাতকতা করে আমাদের সুন্দর সংসারটা একবারে টুকরো টুকরো করে দিয়েছিলো সেই ছেলেটা। ছেলেটা কে জানো তোমরা? সারা দেশে এখন আদ্রিয়ান মাহমুদ নির্জন নামে যে সবার কাছে একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত, সেই নির্জন।

তুষার ও নিবিড় ভেবলার মতো চেয়ে আছে এসব শুনে। রাজ নিশ্চুপ হয়ে আছে শুধু। তার মানে নির্জনের সূত্রপাত ঘটেছিলো এখান থেকে। এর পরের ২৫ বছরে নিজেকে আজ এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।

নির্জনের সব বিজনেসের ফাইল নিলয় দেখেছে। এগুলো আগে কোন পর্যায়ে ছিলো এখন কোন পর্যায়ে আছে। সব কিছু জানা তার। কিছুক্ষন নিরবতার মাঝে নিলয় বলে উঠে,
– দাদার নাম কি রুদ্র চৌধুরী?
দাদি চোখের পানি মুছে উপরে নিচে মাথা নেড়ে হ্যা সূচক স্বম্মতি জানালো। পাশ থেকে নিবিড় বলে,
– তুই কিভাবে জানিস?
নিলয় নিজের বোকামি বুঝতে পেরে ধরা খাওয়ার আগে বলে,
– রুশান বলেছিলো একদিন।

,
,
পরদিন সকালে রুশানদের বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার জন্য রওনা দিলো সবাই। নিবিড় অনেক্ষন নীলার বাসার সামনে রাস্তায় দাড়িয়ে ছিলো নীলাকে দেখবে বলে। বাট দেখা আর হলো না। বেলা নেমে এলে বাধ্য হয়ে নিরাকে যেখানে রেখেছে, সেখামে চলে গেলো সে।
আর রাজ, তুষার, নিলয় ফরিদা আন্টির সাথে তার বাসায়।
রুশান বাড়িতেই থেকে গেলো। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পর ফিরবে সে।

বিকেলে DNA রিপোর্ট হাতে পেয়ে সোজা বাসয় আসে তুষার। ফরিদা আন্টির কাছে গিয়ে বলে,
– যাকে নিজের ছেলের মত ভাবতেন, তাকে কি এখন একটুও মিস করেন না আন্টি?
ফরিদা আন্টি একটা দির্ঘশ্বাস নিয়ে বলে,
– এতো কিছুর পরও তুমি এসব বলছো? আমি কখনো কল্পনাও করিনি নিবিড়ের মত ছেলে এমনটা করতে পারবে। ওর জন্য মান ইজ্জত কোথায় গিয়ে দাড়ালো আমাদের? সেটা কি ভেবে দেখেছো?
তুষার এবার একটু হেসে বলে,
– ওর জন্য নাকি নিরা নামের সেই মেয়েটার জন্য?
ফরিদা আন্টি কিছুটা অবাক হলে বলে,
– পার্থক্য কোথায়?
তুষার এবার DNA রিপোর্ট টা ফরিদা আন্টির হাতে দিয়ে বলে,
– নিবিড় মিথ্যা বলেনি। বরং আমরাই ভুল বুঝেছি তাকে। মেয়েটার নাটকের মাঝে পরে আমরা নিজের মানুষকে বুঝতে পারিনি। পরে আমি গোপনে সব টেষ্ট করে দেখি বাচ্চার বাবা নিবিড় না। রাহাত নামের একটা ছেলের বাচ্চা ঐ নিরা নিবিড়ের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চেয়েছে। আর তা বহন করতে করতে প্রতিনিয়ত শেষ হয়ে যাচ্ছে সে।

ফরিদা আন্টি কিছুক্ষন DNA রিপোর্টের দিকে চেয়ে থেকে হা হয়ে গেলো। কিছুক্ষন নিরব থেকে ফরিদা আন্টি আফসোসের সহিত বলে,
– নিজের ছেলে বলে সম্বোধন করেও তাকে আমি ছেলের মতো বুঝতে পারিনি। সব না জেনে মে’রে বাসা থেকে পর্যন্ত বের করে দিয়েছি আমি।
তুষার তাকে শান্তনা দিতে বলে,
– ভুলতো আমরা মানুষরাই করি তাই না আন্টি? তার জন্য আফসোস না করে ভুলটা সুধরে নিলেই তো নতুন করে শুরু করা যায়। আরেকটা কথা কি জানেন? নীলাকে ছারা থাকতে পারবে না সে। আর কালকে সেই নীলার গায়ে হলুদ। এখনো সব ঠিক করার অনেক সময় বাকি আছে। আমি নিবিড়কে নিয়ে আসতে যাচ্ছি। প্রোজনে সবাই মিলে সব আবার আগের মত সুন্দর করে নিবো। আর DNA টেষ্ট এর এই কপিটা আপনার কাছে রেখে দিন। আরেক কপি আমার কাছে আছে। বলা তো যায় না ঐ মেয়ে আবার কি করে বসে। তাই দুই তিন কপি করে রাখলাম। এখন যাচ্ছি আমি। সন্ধার আগে নিবিড়কে নিয়ে বাসায় ফিরবো। রাজ, নিলয় এদের সবাইকে নিয়ে রেডি থাকবেন আপনি। ওখান থেকে ফিরেই নীলার বাবার কাছে যেতে হবে বিয়ে বন্ধ করার জন্য। আমার বিশ্বাস, বুঝিয়ে বললে ও সব বুঝবে।

ফরিদা আন্টির থেকে বিদায় নিয়ে নিবিড়দের বাসায় চলে গেলো তুষার। দেখে নিরা রুমে বসে আছে আর নিবিড় বেলকনিতে বসে নীলার নাম্বারে একের পর এক ফোন দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ফোনে পাচ্ছে না।
তুষার তাকে ডাক দিলে রুমের ভেতর আসে সে। তুষার নিরার সামনে একটা চেয়ার টেনে বলে,
– কেমন আছেন ভাবি?
নিরা এক গাল হেসে বলে,
– ভালো আছি ভাইয়া।
তুষার আবার বলে,
– রাহাত ভাইয়া কেমন আছে?

মুহুর্তেই নিরার মুখটা চুপসে গেলো। কিছুটা না জানার মত ভঙ্গি করে বলে,
– মম.. মানে কি? কোন রাহাতের কথা বলছেন?
তুষার একটু হেসে বলে,
– ওভার স্মার্ট। বাট আপনার এবারের অভিনয়টা পাক্কা নয়।
পাশ থেকে নিবিড় কিছুটা অবাক হয়ে বলে,
– কিসব বলছিস? কোন রাহাত, আর কিসের অভিনয়!
তুষার এবার রিপোর্ট টা নিবিড়ের দিকে দিয়ে বলে,
– বলেছিলাম না, একটা সারপ্রাইজ আছে? এই নে সেই সারপ্রাইজ।

To be continue……………

#ছদ্মবেশ (পর্ব ৬০)
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ

কিছু না বুঝে তুষারের হাত থেকে DNA রিপোর্ট টা হাতে নিয়ে কিছুক্ষন স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে থাকে নিবিড়।
এদিকে পাশে বসে থাকা নিরার অস্থিরতা ক্রমশ বেড়েই চলছে। রাহাতের কথা তুষার কিভাবে জানলো? আর সে নিবিড়ের হাতেই বা এটা কিসের কাগজ দিলো। নিবিড় এবার রিপোর্ট থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিরার দিকে তাকায়? এক মুহুর্তের নিরবতা ভেঙে আহত দৃষ্টিতে নিরার দিকে চেয়ে থেকে বলে,
– কেন করলে এমন? কেন আমার জীবনটা এভাবে দোজখ বানিয়ে দিলে তুমি? আমি নাহয় একটা ভুল করেছিলাম। তার জন্য তোমরা সবাই মিলে শাস্তিও দিয়েছো। বলেছিলো আর যেন তোমাদের সামনে না পরি। আমি তো আর কখনো তোমাদের সামনে যাই নি। ভেবেছিলাম ভালোই থাকবে তোমরা। তোমাদের কথার মুল্য দিয়েছিলাম। এরপরও কেন আমার সাথে এমনটা করলে? কেন অন্যের বাচ্চা তুমি আমার ঘাড়ে চাপাতে চাইলে? নীলার আর আমার সুন্দর সম্পর্কটা কেন ভেঙে দিলে তুমি?

নিজের মাঝে রাগ জমতে থাকলেও নিবিড় নিজেকে শান্ত রেখে নিরার উত্তরের অপেক্ষায় চেয়ে থাকে তার দিকে।
নিবিড়ের হাত থেকে রিপোর্ট টা টেনে নিয়ে ওটাতে চোখ রাখলে দেখে সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে, নিরা ও তার বাচ্চার DNA সেম্পল, রাহাত আমিনের থেকে নেওয়া DNA সেম্পলের সাথে ৯৯.৯৯% মিল পাওয়া যায়। নিরা এখনো বুঝতে পারছেনা তুষার এই সেম্পল গুলো সংগ্রহ করেছে কোথায় থেকে?
এক মুহুর্তের জন্য কিছু বলার মতো ভাষা খুজে পেলো না নিরা। কিছুক্ষন চুপ থেকে তৎক্ষনাৎ বলে উঠে,
– এগুলো সব ফেইক। এসব ফেইক রিপোর্ট এনে আমাদের সুন্দর সংসার নষ্ট করতে চাইছেন কেন? অন্তত আপনার থেকে এমনটা আশা করিনি তুষার ভাই।

তুষার কিছুটা হেসে বলে,
– এটা ছারাও আরো প্রমান আছে আমার কাছে। আপনার দেখানো রিপোর্ট আর আমার এই রিপোর্ট, দুটুর মাঝে সত্যতা জাচাই করে দেখুন কোনটা ফেইক?
নিরা এবার অচেতন হয়ে কি করবে তা ভেবে পাচ্ছে না৷ কিছুক্ষন অস্থিরতা দেখিয়ে হুটকরে রিপোর্টটা ছিড়ে ফেলে বলে,
– এসব ফেইক রিপোর্টের সত্যতা যাচাই করে সময় নষ্ট করতে যাবো কেন? আপনার রিপোর্ট আপনার কাছেই থাক।
বলেই ছিড়ে ফেলা রিপোর্ট টা তুষারের মুখের উপর ছুড়ে মারে।

পাশ থেকে নিবিড় এবার নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে নিজের সবটা শক্তি দিয়ে একটা চ’র বসিয়ে দেয় নিরার গালে। ছিটকে ফ্লোরে পরে গেলো নিরা।
নিবিড় রাগের মাথায় কয়েকটা গালি দিয়ে বলে, আর কখনো যেন তার আর নীলার মাঝে আসার চেষ্টা না করে।
এদিকে ছিঁড়ে ফেলা রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে একটু বাঁকা হাসলো তুষার। নিরা এমন কিছুই করতে পারে এটা সে আগেই ভেবে রেখেই তো মেইন কপি ফরিদা আন্টির কাছে রেখে কপিটা নিয়ে এসেছে।

ফ্লোরে বসে গালে হাত দিয়ে নিরা বলে,
– কাউকে শান্তিতে থাকতে দিবো না আমি। প্রথমে তোর নামে নারী নির্যা’তনের কে’স দিবো। তারপর আত্মহ’ত্যা করে সুইসাইড নোটে তোর নাম লিখে যাবো। আমিও দেখে নিবো ঐ মেয়েকে নিয়ে কিভাবে শান্তিতে থাকিস তুই।

নিবিড় চলে যেতে গেলেও কথাটা শুনে থমকে গেলো। নিরার দিকে চেয়ে পাশ থেকে তুষার বলে,
– তুই যেই বা* টা ছিড়তে পারবি ছিড়ে দেখা।
বলেই নিবিড়ের হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে বলে,
– তুই আবার লক খেয়ে গেলি কেন? চল বাড়ি যাবি, নীলার বিয়েটা আটকাতে হবে না? নাকি অন্য কারো হয়ে যেতে দিবি তাকে?
,
,
নিবিড়কে নিয়ে ফরিদা আন্টির সামনে দাড়ায় তুষার। নিবিড় এখনো ফরিদা আন্টির সামনে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে।
সত্য হোক আর মিথ্যা হোক, নারী কেলেংকারী শব্দটা অনেক মারাত্মক। এক মুহুর্তেই নিজের অর্জিত সম্মানটুকু ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

রাজ ও নিলয় ফরিদা আন্টির পাশেই দাড়িয়ে আছে। নিলয় বুকে হাত গুজে বলে,
– তোরে তো আমি অনেক চালাক ভাবতাম নিবিড়। কিন্তু এতোটা বোকার পরিচয় দিবি তা তো ভাবতেই পারিনি। যেখানে তোর কোনো দোষই নেই সেখানে তুই সত্যটা না খুজে সব মেনে নিতে গেলি কেন?

নিবিড় সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে শান্ত ভাবে বলে,
– ও আমায় ব্লেকমেইল করতো। বলতো সে আত্মহ’ত্যা করে আমায় ফাঁসিয়ে দিবে। আমার তো বাবা মা কেও নেই। আর নিরা এমনটা করলে, আর আমার দোষ প্রমানিত হলে নির্ঘাত দশ বছরের জেল হয়ে যেত। তখন আমায় বাচাতো কে?

নিবিড়ের কথা শুনে রাজ কিছুক্ষন চুপ থেকে শান্ত ভাবে বলে,
– কারো সাপোর্ট না পেলে কি রুশান ও তার সাথে হওয়া মা’র্ডার কে’স থেকে বাচতে পারতে তুমি? আর তোমার সাথে আমরা এতগুলো মানুষ আছি। আমাদেরকে কি আপনই মনে করোনা তুমি। যে খুব সহজেই বলে দিলে আমার কেও নেই।
নিবিড় আর কিছু না বলে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো। কিছুটা জড়তা নিয়ে ফরিদা আন্টির দিকে চেয়ে বলে, স্যরি আন্টি।
,
,
আগামি কাল নীলার গায়ে হলুদ। আজ রাতটা পার হলেই কাল সব আয়োজন শুরু হয়ে যাবে। সেই সাথে নীলাদের যেই কয়জন রিলেটিভ আছে তারাও আসতে শুরু করবে।

সন্ধা হয়ে গেলো। নীলা চুপচাপ রুমের মাঝে বসে আছে। একটা দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে কাটাচ্ছে সে। নিবিড় ফিরে আসার পরও বাবা এক বারের জন্যও নিবিড়ের সাথে দেখা করতে দেয় নি।

হটাৎ ড্রয়িং রুমে কারো কথাবার্তা শুনে সেদিকে একটু ভালো করে লক্ষ করে সে। মাঝে মাঝে একটা কন্ঠ ফরিদা আন্টির মত লাগছে।
উঠে ড্রয়িং রুমের দিকে পা বাড়াতে গেলেই হুট করে এসে রুমে ঢুকে যায় নিবিড়।
নিবিড়কে দেখে যেন এক মুহুর্তের জন্য কোনো জড় পদার্থ হয়ে যায় নীলা।

নীলার খুব কাছাকাছি এসে দাড়ায় নিবিড়। রুমের নিস্তব্দতার মাঝে দুজনের ঘনঘন নিশ্বাস টা যেন একে অপরের কান কে স্পর্শ করছে বার বার। সেই সাথে ক্রমশ বেড়েই চলছে বুকের ধুক ধুক শব্দটা।
কয়েকটা বড বড় স্বস্থির নিশ্বাস ছেরে নীলাকে আচমকাই খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিবিড়। নীলা হয়তো কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছিলো এমন কিছুই হবে। তাই এখনো জড় পদার্থের মত চুপচাপ মিশে আছে নিবিড়ের বুকে।
নীলাকে জড়িয়ে ধরে কয়েকটা বড় বড় নিশ্বাস ফেললো নিবিড়। খুব ভয় ও কষ্টের পর কিছু পাওয়ার অনুভুতি টা যেমন হয় ঠিক তেমন।

কিছুটা সময় অতিবাহিত হলে নীলা এবার নিজের ঘোর থেকে বেড়িয়ে নিবিড়ের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো। নিবিড় আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,
– অনেক কিছুর পর তোমার কাছে ফিরে আসতে পেরেছি। ছাড়তে বলো না প্লিজ।

নীলা তবুও নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিবিড়ের দিকে চেয়ে বলে,
– এখন কেন এসেছো বলো? কষ্টটা আবার বাড়িয়ে দিতে?
নিবিড় কিছুটা হাস্যজ্জল ভাব নিয়ে নীলার দুই গালে হাত রেখে বলে,
– কষ্টটা একেবারে দুর করে দিতে এসেছি। নিরা আমাদের সাথে চিট করেছে। বাচ্চাটা আসলে আমার না। এটা ওর আরেক বয়ফ্রেন্ডের বাচ্চা। যা আমার ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছিলো। যেটা আমি তোমাদের অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছি যে আমার কোনো দোষ নেই। কিন্তু কেউই আমাকে বিশ্বাস করেনি। এখন আমি একধম প্রমান সহ নিয়ে এসেছি। এখন কেও আমার থেকে তোমাকে দুরে সরিয়ে দিতে পারবে না।

নীলা কিছুক্ষন চুপ থেকে হটাৎ চোখে মুখে ঝিলিক দেওয়ার মতো করে বলে উঠে,
– সত্যি?
নিবিড় এবার হাস্যজ্জল মুখে নীলার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে বলে,
– হুম আমাদের লাইফে আর কোনো বাধা নেই।

বলেই কিছুক্ষন নিশ্চুপ থেকে নীলার নাকের সাথে নাক ঘসতে লাগলো। নীলাও নিশ্চুপ ভাবে চোখ বন্ধ করে নিলো। তার শরির জুড়ে যেন এক শীতল শিহরণ বয়ে যাচ্ছে বার বার।
দুজনই নিশ্চুপ হয়ে অনুভব করছে একে অপরের কাছে পাওয়া ও তাদের প্রতিটি স্পর্শ। যা এতোদিন এক সেকেন্টের জন্যও পায়নি তারা। দুজনের মাঝেই হয়তো একটা ভাবনা, ইশ সময়টা যদি এখানেই থমকে যেত?
,
,
নীলার বাবা পুরো বিষয়টা বুঝলেও নিশ্চুপ হয়ে আছে। আজ বাদে কাল গায়ে হলুদ, পর দিন বিয়ে। এমন একটা সময়ে এসে এখন এসব দাড়ালো যে কি করবে কিছুই বুজতে পারছে না।
যদিও তার মেয়ের সুখটাই তার কাছে সবচেয়ে ইনপর্টেন্ট। একটাই মেয়ে তার। সে সুখে থাকলেই তার সুখ।

অনেক ভাবা-ভাবির পর ফাইনালি সিদ্ধান্ত নিলো, এখনো একদিন বাকি আছে। পাত্র পক্ষকে বলে বিয়ে কেনসেল করার চেষ্টা করবে। হয়তো একটু ঝামেলা বা কথা শুনাতে পারে। তবে তার মেয়ের সুখটাই তার কাছে সবচেয়ে ইনপর্টেন্ট।

পাত্র পক্ষের কানে বিয়ে কেন্সেল করার খবরটা পৌছাতেই এর তীব্র বিরোধিতা করে তারা। অলরেডি আত্মিয়-স্বজন সবাইকে দাওয়াত দেওয়া শেষ। এখন একদিন আগে বিয়ে কেন্সেল করাটা মোটেও যুক্তি যুক্ত নয়।

তাই খবর পাওয়া মাত্রই রাত ১০ টার দিকে ছেলে সহ ছেলের বাবা ও ছেলের ছোট ভাই এসে হাজির হলো নীলাদের বাসায়। পরিস্থিতি খুবই অশান্ত জনক। সবকিছু ঠিকঠাক রেখে এখন একদিন আগে বলছে বিয়ে হবে না এটা কিছুতেই তারা মেনে নিবে না।
এমনিতেও পাত্র নীলাকে দেখার পর বিয়ের ডেট আরো এগিয়ে নিয়ে এসেছে। সেই জায়গায় বিয়ে হবে না এটা তো মেনে নেওয়ার মতো না।

পাত্র পক্ষের সবাই খুব জোড় দেখাতে শুরু করলে নীলার বাবা এতো ঝামেলা নিতে না পেরে সোফায় গিয়ে বসলো চুপচাপ।

রাজ ঠান্ডা মাথায় বিষয়টা তাদের খুলে বললেও তারা মেনে নিতে চাইছে না। প্রয়োজনে নিবিড়কে এখানেই মে’রে ফেলার হু’মকি দিচ্ছে পাত্র।
রাজের সাথে এবার তুষারও ঠান্ডা মাথায় তাদের বুঝাতে গেলে ছেলেটা তাদের থ্রেট দিয়ে বলে,
– আমি যতদুর জানি আপনারা এখানে ব্যাচেলর ছেলে। একেকজন একেক জায়গা থেকে এখানে এসেছেন পড়াশুনা করতে। সো, স্টুডেন্ট মানুষ স্টুডেন্টের মতোই থাকুন। বেশি বাড়াবাড়ি করলে পড়ালিখা দুরে থাক, এই শহরেও ঢুকতে পারবেন না।

রাজ এবার কিছু না বলে নিজের রাগকে কনট্রোল করতে চুপচাপ এক পাশে সরে গেলো। নিলয় এতোক্ষন চুপ থাকলেও এবার একটু এগিয়ে গিয়ে পাত্রর কাধে হাত রেখে বলে,
– ভাইয়া একটু সাইডে আসুন তো, পার্সোনাল কথা আছে আপনার সাথে।
ছেলেটা এবার স্বাভাবিক ভাবে সাইডে গিয়ে তেজ নিয়ে বলে,
– কি বলবেন তারাতারি বলুন। তবে আমাদের কথার বাইরে কিছু বলতে যাবেন তো ভালো হবে না।

নিলয় এবার একটু হেসে বলে,
– না ভাইয়া, আপনাদের কথার বাইরে আর কি বলবো? আমাদের কি সেই সাহস আছে? আমরা হলাম সাধারণ মানুষ। সেখানে আপনারা হলেন কত উচু শ্রেনীর। আপানারা চাইলে আমাদের মা’রতেও পারবেন, আবার শহর থেকেও বেরও করে দিতে পারবেন। কিন্তু একটা জিনিস ভাবুন তো, আপনি সুন্দর ভাবে গাড়িতে চড়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন। হুট করে একটা ট্রাক এসে আপনার গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে ছিটকে রাস্তার বাইরে ফেলে দিলো। ট্রাকটা কিছুক্ষনের মাঝে উদাও হয়ে গেলো। লোকজন ভির জমালো আপনার ভাঙা গাড়ি ও আপনার লা’শ দেখতে। তখন আপনার অবস্থা কি হবে একটু ভাবুন তো। আরো সহজ ভাবে বলি, কারো সাথে কথা বলার সময় একটা জিনিস মাথায় রাখবেন যে, হাতের আঙুল সবগুলো এক সমান হয় না।

To be continue………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here