#তোমার_আমার_প্রণয়,last_part
#israt_jahan_arina
মেঘের অন্তরালে খেলা করছে ছোট শাকিলের দল।এই রাস্তা,পুকুর ঘাট,আমগাছ সব কিছুই সেই আগের মতই আছে।বাড়ির সামনে গাড়ি থামতেই দৃশ্যর মনে দোলা দেয় এক অসীম আনন্দের।এই জায়গার বাতাসও আজ তাকে স্বাগতম জানাচ্ছে। সেই চিরচেনা উঠোন।পাশের বেল গাছটাও আগের মতই আছে।শুধু বদলে গেছে মানুষ গুলো।সবার জীবন ধারা অনেকটা বদলে গেছে।
ফাহিম সাবধানে দৃশ্যকে গাড়ি থেকে নামিয়ে কোলে করে দোতলায় নিয়ে আসলো।বাসার দরজায় দাড়িয়ে ছিলো বড়ো চাচি আর চাচু।দৃশ্যকে দেখেই বড়ো চাচি দৃশ্যকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো।বাড়ির মেয়ে আজ এতো বছর পর বাড়িতে এসেছে।তিনি আয়োজনের কোনো কমতি রাখে নি।নার্গিস আপুকে দেখে দৃশ্য ভীষণ খুশি হলো।আপন মানুষ গুলোকে পাশের পেয়ে দৃশ্যর খুশির সীমা রইলো না।
শামসুন্নাহার বেগম দরজা আটকে বসে আছে।বাড়ির সব মানুষের প্রতি সে ভীষণ বিরক্ত।তার কথা কেউ শুনছে না।এই দুনিয়াতে কি মেয়ের অভাব আছে যে ওই আশরাফের মেয়েকে ঘরে তুলতে হবে?তার ছেলের বউ ও তার কথার মূল্য দিচ্ছে না।একটু আগে আখি রহমান শাশুড়ির সাথে কথা বলে গেছেন।
-“আম্মা আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।আমি দৃশ্যকে এই বাড়িতে ধুমধাম অনুষ্ঠান করে তুলতে চাইছি।আপনার কি মতামত?”
-“আমার মতামতের কোনো দাম আছে নাকি?তোমার সবাই নিজের যা মন চায় করতাছো।আমি বুড়া মানুষ।তোমাগো কাছে বোঝা হইয়া গেছি। এমনি কয়দিন পরে আমার পোলার কাছে যামুগা।”
-“আম্মা এই ভাবে বলবেন না।আপনার মতামতের অবশ্যই দাম আছে।আম্মা আপনি নিজেও মাহাদকে অনেক ভালোবাসেন।আর তাকে চেনেন ও। মাহাদের খুশি কিসে সেটাও আপনি জানেন।অতীতের সব ভুলে আমাদের উচিৎ বাচ্চা গুলোর খুশির কথা চিন্তা করা। মাহাদ দৃশ্যকে নিজের চাইতে বেশি ভালোবাসে।”
-“ওই আশরাফের মাইয়া তোমাগো মাথা খাইছে।হের লাইগা তোমরা এই সব করতাছো।”
-“আম্মা দৃশ্য মোটেও খারাপ মেয়ে না।মেয়েটাকে আপনি নিজেও দেখেছেন।ভীষণ লক্ষী একটা মেয়ে।আমার ছেলে বেস্ট কাউকেই জীবন সঙ্গী করেছে।আমার ছেলের উপর আমার ভরসা আছে।দৃশ্য আমাদের পরিবারে আসলে দেখবেন সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।আর আপনার ছেলের শেষ ইচ্ছা এইটাই ছিল।”
শামসুন্নাহার বেগম কিছুই বললেন না।কিন্তু ছেলের বউয়ের ডিসিশনে মোটেও সম্মতি প্রকাশ করলেন না। মাহাদ নিজেও এসেছে দাদীর সাথে কথা বলতে।
-“দাদী তুমি আমার উপর রেগে আছো?”
-“আমি কেডা যে রাগ করমু?”
-“তুমি আমার মিষ্টি দাদী।”
-“পাম মারবি না।তোগো ওতো রং ধং দেখার ইচ্ছা নাই।”
-“দাদী তুমি আমার বউয়ের উপর এতো রেগে আছো কেনো?নাকি তোমার সতীন বলে?”
-“ফাইজলামি করবি না।ওই আশরাফের মাইয়ার মইধ্যে কি পাইছস যে এমনে পাগল হইছস?”
মাহাদ মুচকি হেসে বললো
-“মধু পাইছি দাদী।মধু।সেই মধুর নেশায় তোমার নাতি টাল মাতাল হয়ে গেছে।তাই আমাকে সামলানোর জন্য তাকে লাগবে।”
বলেই বাঁকা হেসে চলে গেলো।শামসুন্নাহার বেগম আরো চটে বিলাপ করা শুরু করলেন।
-“বেসরমের দল।লুইচ্ছা পোলা।ওই আশরাফের মাইয়া তোরে কি মধু খাওয়াইয়া বশ করছে?এমন বেসরম হইয়া গেছস?আমি আজই হুজুর দিয়া তোর ঝার ফুক করামু।”
তখনই মাহিম ঢুকলো দাদীর রুমে।দরজায় হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আপেল খাচ্ছে আর দাদীর কাণ্ড দেখছে।মাহিম কে তাকিয়ে থাকতে দেখে তিনি বিলাপ বন্ধ করলেন।আর বললেন
-“এমনে কি দেহস?”
মাহিম আপেল চিবুতে চিবুতে বললো
-“তোমার নাটক দেখি।তোমাকে এখন বাংলা সিরিয়ালের কুটনি বুড়ির মতো লাগছে।আমার দাদাজান তোমাকে হ্যান্ডেল কি করে করতো বলতো?”
শামসুন্নাহার বেগম চটে গিয়ে বললেন
-“ওই শয়তান আমারে তুই কুটনি বুড়ি কইলি?”
-“হুমম বললাম।”
-“আল্লাহ গো আল্লাহ।ওই শয়তান মাইয়া আমার ঘরের হোগ্গলের মাথা চিবাইয়া খাইয়া লাইছে।”
-“চুপ করো বুড়ি।ভাবিকে নিয়ে কোনো বাজে কথা বলবে না।তোমার কি মনে হয় তোমার এই নাটক দেখে ভাইয়া ভাবিকে নিজের জীবনে আনবে না?মোটেও না।দরকার পড়লে তোমার নাতি এই বাড়ি ছাড়বে কিন্তু ভাবিকে না।তোমার সাত কপাল ভাবির মতো এতো ভালো মেয়ে নাতবৌ হিসেবে পেয়েছো।কারণ আজকালের বউরা নিজের শাশুড়িকে সহ্য করতে পারে না সেখানে তুমি জটিল বুড়ি।আমার বউ কিন্তু এতো ভালো হবে না।তাকে ইট মারলে সে পাটকেল ছুড়ে মারবে।আমার হবু বৌয়ের আবার কড়া মেজাজ।তোমার সাথে একদম টক্কর দেওয়ার মতো।তাই বলছি সময় থাকতে শুদ্রে যাও।”
মাহিম চলে যেতেই তিনি চিন্তায় পরে গেলেন।এই ছেলে কি তাকে থ্রেট দিয়ে গেলো?নিশ্চয়ই কোনো ধানি লংকা মেয়ে পছন্দ করে বসে আছে।দৃশ্য মেয়েটাকে তার খারাপ লাগে তেমন না।মেয়েটাকে প্রথম দেখায় তার মনে ধরেছে।কিন্তু তার বাবার কথা জানার পর থেকে সে আর মেয়েটাকে ভালো চোখে দেখতে পারেনি।
মাহাদ রুমে এসে দৃশ্যকে কল করলো।প্রথম বারেই দৃশ্য রিসিভ করলো।
-“কি করো পিচ্ছি? শরীর ভালো আছে তো?”
-“আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।”
-“বাসায় কোনো সমস্যা হচ্ছে?হলে বলো আজই নিয়ে আসবো তোমাকে।”
-“নিজের বাসায় কি সমস্যা হবে?সবাইকে পেয়ে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি।”
-“হে তাইতো আমাকে ভুলে বসে আছো।”
দৃশ্য বুজলো তার পাগলটা অভিমান করে বসে আছে।তাই ওকে আরো একটু রাগিয়ে দিতে বললো
-“আরে বাসায় আসার পর থেকে ভাইয়া পুরো বাড়ি মাথায় তুলে রেখেছে।আমি কি খাবো না খাবো,মেডিসিন নিচ্ছি কিনা, পায়ে ব্যাথা আছে কিনা?এই সব নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে।তাছাড়া বাসা ভর্তি গেষ্টরা এসেছে।তাই বেশি কথা বলতে পারছি না।ভাইয়া আমাকে সারাক্ষণ চোখে হারায়।”
-“হে তোমার ভাই তো নষ্টের গোড়া।এই শালার জন্যই নিজের বৌয়ের কাছ থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে।এই শালা গুলার জন্মই হয় বোন জামাইদের প্যারা দেওয়ার জন্য।আর আমার টা তো সেই ঘাড় তেরা।”
দৃশ্য মুচকি হাসলো।কিন্তু মাহাদকে ধমক দিয়ে বললো
-“খবরদার তুমি আমার ভাইয়াকে নিজে বাজে কথা বলবে না।”
-“তোমার ভাই তো প্ল্যান করে এমন করেছে।আমাকে পেইন দেওয়ার জন্য।এই শালাকে আরেক দিন রাম ধোলাই দিতে হবে।”
দৃশ্য এবার সত্যি সত্যি রেগে গেলো।আর বললো
-“তোমার সাথে কোনো কথা নেই।আমার ভাইকে ধোলাই দিবে সাহস কতো?খবরদার আমাকে কল দিবে না।”
বলেই দৃশ্য কল কেটে দিলো।অন্য দিকে মাহাদ বুজলো বউ তার সত্যি সত্যি রেগে গেছে। ভাইকে নিয়ে কিছু বললে সহ্যই করতে পারেনা। আল্লাহ শত্রুকেও যেন এমন শালা না দেয়। ভাই-বোন দুইজনই এক। তাকে পেইন দিয়ে মজা পায়।সে বার বার দৃশ্যকে কল করতে লাগলো কিন্তু দৃশ্য রিসিভ করছে না।
দৃশ্য দের বাড়িতে আজ যেন মেলা বসেছে। সকল আত্মীয়-স্বজনকে এসেছে দৃশ্যকে দেখতে। এতদিন পর মেয়েটা বাড়ি ফিরেছে। তাই সকালেই দৃশ্যকে দেখতে এসেছে। বাড়িতে মেহমান দের মাঝে দৃশ্য ফোনটা চেক করতে ভুলেই বসে আছে।সকলের সাথে আড্ডায় দিন কেটে গেল।
রাত তখন প্রায় এগারোটা বাজে। আখি রহমান ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।সেই সময় মাহাদ তার রুমে প্রবেশ করলো। মাহাদকে দেখে কপাল কুচকে বললেন
-“কীরে এতো রাতে কোথায় যাচ্ছিস?”
-“মা আসলে..
-“আরে কি হয়েছে বলবি তো?”
-“মা আমি দৃশ্য দের বাসায় যাচ্ছি।”
-“এতো রাতে?”
-“মনটা অস্থির হয়ে আছে ওর এই অবস্থায় দূরে থাকতে ইচ্ছে করছে না।আর ফাজিলটা আমার কল রিসিভ করছে না।”
-“তোর না কাল রেকর্ডিং আছে?”
-“ডেট পিছিয়ে দিয়েছি।”
আখি রহমান বুঝতে পারলেন ছেলের অস্থিরতা।মনে মনে চিন্তা করলেন ছেলের বউকে আর বেশি দিন দূরে রাখা ঠিক হবে না।দৃশ্যর পরিবারের সাথে কথা বলে খুব দ্রুত কিছু করতে হবে।তিনি বললেন
-“এতো রাতে একা যাবি?রবিন বা মাহিম কে নিয়ে যা।লোক সমাগমে সিকিউরিটি ছাড়া চলা ঠিক হবে না।তুই আর সাধারণ ব্যক্তি নেই।”
-“রবিন কে নিয়ে যাচ্ছি মা।ওকে আসি।”
-“আচ্ছা যা।”
সারাদিনের ব্যাস্ততার পর দৃশ্য ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়ে।ফাহিম দৃশ্যকে নিজের হাতে খাইয়ে মেডিসিন দিলে ঘুমিয়ে পড়তে বললো। এখন তার রেস্ট প্রয়োজন।দৃশ্য লক্ষী মেয়ের মতো খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
রাত প্রায় তিনটার দিকে বাসার ডোরবেল বেজে উঠলো।ফাহিম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়।এতো রাতে কে আসতে পারে।তার কোনো শত্রু পক্ষ না তো?রাজনীতির কারণে অনেক সময়ই অনেকের সাথে তার মনমালিন্য হয়ে থাকে।কিন্তু বাসার বাইরে তো সিকিউরিটি থাকে।তবে কে এলো।সে উঠে দরজা খুলে মাহাদকে দেখে চমকে গেলো। মাহাদ নিজেও একটু লজ্জায় পড়ে গেলো।রবিন সব কিছু চুপ চাপ দেখছে।এতো বিত্তশালী বাড়ির মেয়ে দৃশ্য সে ধারণা করতে পারেনি।
দৃশ্য ঘুমের মাঝে ফিল করলো কেউ তার সারা মুখে চুমু খাচ্ছে।কিন্তু ঘুমের কারণে চোখ খুলতে পারছে না।সে আবার ঘুমিয়ে পড়ল।কিন্তু সকালে নিজেকে মাহাদের বুকে দেখে ভীষণ ঘাবড়ে গেলো।সে ভেবেছে এটা তার কল্পনা।কিন্তু না।জলজ্যান্ত মানুষটা গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে।তার মানে কাল কল রিসিভ না করায় পাগলটা বাসায় চলে এসেছে।
ধীরে ধীরে রুম থেকে বেরিয়ে সোফায় ফাহিম আর রবিনকে দেখে কিছুটা লজ্জায় পরে যায় সে।মানুষটা এতো রাতে এসে তাকে কি লজ্জায় ফেলেছে।বাসার সবাই কি ভাবছে?ফাহিম দৃশ্যকে দেখে বললো
-“কীরে তোর পাগল এখনো ঘুমায়?”
দৃশ্য লজ্জা পেয়ে মাথা নেড়ে হে জানায়।রবিনের সাথে কুশল বিনিময় করে সে রুমে চলে আসলো। মাহাদ তখনও ঘুমে।দৃশ্য বিছানার পাশে বসে মাহাদের চুলে হাত বুলাতে থাকলো।এই কিউট ছেলেটা তার হাজবেন্ড ভাবতেই কেমন লাগে।কতো শত মেয়েরা এই ছেলেটার জন্য পাগল।আর এই মানুষটা তার জন্য।নিজেকে ভীষণ স্পেশাল পার্সন মনে হচ্ছে। মাহাদ চোখ খুলে দৃশ্যকে দেখে মুচকি হাসলো।সে তো তার জীবনের প্রতিটা সকাল এই মিষ্টি মুখটা দেখে শুরু করতে চেয়েছে।আর আজ সেটা পূরণ হলো।সে বললো
-“গুড মর্নিং বউ।”
এতো ছোট শব্দ দৃশ্যর মনে যেনো অনুভূতির তুফান তৈরি করেছে। পাগলটা তাকে কথার বানে মারতে চাইছে।সে বললো
-“রাতে কখন এসেছো?এতো রাতে এই ভাবে কেউ আসে?”
-“আমি আসি।রাগ করে কল কেটে বসেছিলে কেনো?তার জন্যই আসতে হয়েছে।তাছাড়া আমার বউকে না দেখে থাকতে পারছিলাম না।”
দৃশ্য আর কিছুই বললো না।সবাই নাস্তার টেবিলে বসেছে।।আনিকা কবির সকালে ঘুম থেকে উঠে জানতে পেরেছেন মেয়ের জামাই এসেছে।তাইতো সকাল থেকেই তার কতো ব্যাস্ততা।জামাই আজ বিয়ের পর প্রথম এসেছে। মাহাদ আশরাফ হুসেনের সাথে তেমন একটা কথা বলেনি।আসলে কিছু সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক হয় না।বাবার অপমানিত হওয়া সে কখনো মন থেকে ভুলতে পারবে না।তাই এই মানুষটার প্রতি এখনো ঘৃণা রয়ে গেছে।আশরাফ হুসাইন নিজেও বুঝতে পেরেছে।তাই মাহাদের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন।
বিকেলে মাহাদ বারান্দায় দাড়িয়ে ফোন কথা বলছে।তাকে ঢাকায় ফিরতে হবে।সে কল শেষে দৃশ্যর সামনে বসে দুই হাত জড়িয়ে বললো
-“প্লিজ চলো না আমার সাথে।এই দূরত্ব জাস্ট সহ্য হচ্ছে না।আমার সাথে বাসায় চলো।”
-“সবাই মিলে তো বিয়ের আয়োজন করছে।মাত্র পনেরো দিন অপেক্ষা করো।শপিং করতে করতেই চলে যাবে।”
-“পনেরো দিন মানে বুঝতে পারছো?এই অনুষ্ঠানের কোনো দরকার নেই। এমনি চলো।একবার তো বিয়ে করেছি।কতবার করবো?”
দৃশ্য মুচকি হেসে বললো
-“এইবার আমরা পরিবারে সামনে বিয়ে করবো।তাদের সবার দোয়া নিয়ে জীবন শুরু করবো।”
-“ধ্যৎ! ভালো লাগছে না।l সবাই মিলে আমাকে পেইন দিচ্ছ।বিশেষ করে তোমার ভাই।মা বললো সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বেবস্থা করতে।কিন্তু তোমার ভাই বাগড়া দিলো।এই শালাকে তো দেখে নিবো।”
দৃশ্য খিল খিল করে হেসে দিলো। মাহাদ মুগ্ধ নয়নে সেই হাসি দেখলো।
ফাহিম বোনের বিয়ে বিশাল বড়ো আয়োজন করে দিতে চায়।তাই কিছুটা সময় নিয়েছে।একমাত্র বোনের বিয়েতে কোনো কিছুর কমতি রাখতে চায়না।তার উপর বর যদি হয় সেলিব্রেটি তবে তো কথাই নেই।
এর মধ্যে মিডিয়াতে মাহাদের বিয়ের ঘোষণা দেওয়া হলো।সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন মাহাদ।সবার মধ্যেই আগ্রহ তৈরি হয়েছে কে সেই মেয়ে যাকে রকস্টার মাহাদ বিয়ে করছে।কতো মেয়ের যে হৃদয় ভেঙেছে তা ধারণা নেই। শোবেজ পাড়ায় হাজারো গুঞ্জন তৈরি হতে থাকে।সোসিয়াল মিডিয়াতে মাহাদের বিয়ের নিউজ ট্রেন্ডিং চলছে।
আজ তাদের বিয়ে।চারিদিকে হইহুল্লোড় শুরু হয়েছে।দৃশ্যকে স্টেজ আনতেই মাহাদ যেনো থমকে গেলো।কি অপুরুপ লাগছে তার পরীটাকে। লাল বেনারসিতে তার বউকে মোহনীয় লাগছে।মাহাদের হার্ট প্রচন্ড গতিতে বিট করছে।দীর্ঘ অপেক্ষার পর নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে সকলের সামনে সীকৃতি দিয়ে নিজের করে পাচ্ছে। এ যেনো সীমাহীন আনন্দ।সে প্রাণ ভরে প্রিয়তমাকে দেখছে।দৃশ্য ভীষণ লজ্জা পাচ্ছে।এই ছেলেটা এমন করে কেনো তাকায়?কই সে তো এমন করছে না।ব্রাউন শেরওয়ানি তে মানুষটাকে ভীষণ আকর্ষণীয় লাগছে।কিন্তু লজ্জার জন্য সে তাকাতে পড়ছে না।অন্য সময় হলে হয়তো টুপ করে কয়েকটা চুমু খেয়ে নিতো।
দৃশ্য আর মাহাদের সব বন্ধুরাও এসেছে।অনেকদিন পর সবাইকে দেখে দৃশ্য ভীষণ খুশি হয়।আরো খুশি হয় জয় আর মৌ এর বিয়ে হয়েছে জেনে।মৌ এই অবস্থায় ও বন্ধুবির বিয়েতে উপস্থিত হয়েছে।সবাই মিলে ভীষণ এনজয় করেছে।
মাহিম আজ বর্ষার উপর থেকে চোখ সরাতে পারছে না। শাড়ি যেনো এই মেয়েটার জন্যই সৃষ্টি হয়েছে।নাহলে এতো সুন্দর লাগছে কেনো?স্টেজ উঠে মাহিম দৃশ্যকে বললো
-“ভাবী ও বর্ষা।আমার ফ্রেন্ড।”
-“ফ্রেন্ড নাকি গার্লফ্রেন্ড ভাইয়া?”
দৃশ্যর কথায় মাহিম কিছুটা লজ্জা পেলো।সে কপাল চুলকে বললো
-“কেমন মানিয়েছে ভাবী?”
-“একদম ফাটাফাটি।”
মাহাদ বললো
-“বর্ষা তোর পাশে আছে তাই এমন ভালো লাগছে।বর্ষা একটু দূরে দাড়ালেই তোকে বাঁদরের মতো লাগে।”
বর্ষা মুচকি হেসে বললো
-“ভাসুর আমার একদম ঠিক বলেছেন।বাঁদরের গলায় মুক্তোর মালা।”
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।মাহিম মুখটা গুমরা করে নিলো।বর্ষা বললো
-“আমার জা কিন্তু সেই মিষ্টি।বাচ্চা ভাবী।ভাবী আমি কিন্তু অনেক কথা বলি।বিরক্ত হবে না তো?”
-“মোটেও না।দেবরের হবু বউ কিন্তু আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে।”
মাহিম মুচকি হাসলো।বর্ষা বললো
-“এই তোর সেই দাদী কই।তাকে দেখার ভীষণ আগ্রহ।”
-“আরে আমার প্রাণের দাদী ওই দিকে মুখ গোমড়া করে বসে আছে।চলো তার মুড ঠিক করে আসি।”
শামসুন্নাহার বেগম আর বিয়েতে আপত্তি করেনি।কারণ দিন শেষে তিনি ও মাহাদকে সুখী দেখতে চান।কিন্তু আশরাফ কে দেখে এখন তার মুড অফ।এই লোককে সে কোনো দিন মাফ করতে পারবে না।
আমরিন দূরে দাঁড়িয়ে মাহাদ আর দৃশ্যকে দেখছে।মানুষ দুটির মুখে কতটা প্রশান্তির হাসি।হয়তো দিন শেষে প্রাপ্তির হাসি এটা।সে হয়তো শুদ্ধ ভাবে ভালোবাসতে পারেনি।তাইতো মাহাদ আজ তার না।দৃশ্য মেয়েটাকে সে কখনোই পছন্দ করত না।কিন্তু মেয়েটার মাহাদের প্রতি ভালোবাসা দেখে সে মুগ্ধ হয়েছে।সে হয়তো নিজের ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখতে এতটা সংগ্রাম করতে পারতো না।এই মানুষ দুটিকে আল্লাহ হয়তো পরিপূরক করে পাঠিয়েছেন।
দুই পরিবারের উপস্থিতি তে মাহাদ আর দৃশ্যর বিয়ে সম্পন্ন হয়।সবাই আজ ভীষণ খুশি।ফাহিমের চোখ বার বার ভিজে আসছে।এতদিন পর বোনকে পেয়ে বেশি দিন কাছে রাখতে পারলো না।আজ তাকে বিদায় দিতে হবে।
হাজারো ফুলে মোড়ানো বিছানায় দৃশ্য বসে আছে।মন ভীষণ অস্থির হয়ে আছে।এই রাতটা তাদের জীবনে হয়তো আরো আগেই চলে আসতো।কিন্তু জীবনের উত্থান পতনের পর ফাইনালি তারা নিজেদের ভালোবাসাকে পূর্ণতা দিতে পেরেছে।একটু আগে তাকে রুমে দিয়ে গেছে সবাই।বিশাল রুমটা সে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো।এই রুমটা আজ থেকে তার।এমনকি রুমের মালিক ও তার।একান্ত তার।
বিয়ের সাজে সে বেশ হাপিয়ে উঠেছে।তাই গোসল করে শাড়ি চেঞ্জ করে সেই পিংক শাড়ীটা পরে নিলো।মানুষটা তো একদিন তাকে ঠিক এই ভাবে এই রাতে দেখতে চেয়েছিল।সে চোখে কাজল আর ঠোটে হাল্কা লিপস্টিক দিয়ে নিলো।অনেকক্ষণ যাবত সে বসে মাহাদের জন্য অপেক্ষা করছে।কিন্তু এই ছেলের কোনো খবর নেই।
হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে দৃশ্য কিছুটা কেপে উঠলো।ভীষণ লজ্জা লাগছে তার। মাহাদ এসেই দৃশ্যর সামনে বসলো।দৃশ্যর দিকে গভীর ভাবে তাকালো।দৃশ্য সেই পিংক শাড়ি পরে বসে আছে।গায়ে তার দেয়া সকল ডায়মন্ডের অর্নামেন্টস।গোলাপি শরীর মাঝে সাদা পাথর গুলো চকচক করছে।ভেজা চুলে বেশ আকর্ষণীয় লাগছে দৃশ্যকে। মাহাদ যেনো ঘোরে চলে যাচ্ছে।এই মেয়েটা তাকে যে কোনো রূপে বশ করতে পারে।এই চেহারায় যেই শুভ্রতা জড়িয়ে আছে তা আর কারো মুখশ্রীতে খুঁজে পায়নি।সে নেশা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো
-“আমাকে মেরে ফেলার প্ল্যান করেছো?”
দৃশ্য কিছুই বললো না।সে লজ্জায় আজ মরেই যাবে। এই মানুষটি এমন ভয়ানক দৃষ্টিতেই তাকে ধ্বংস করে ছাড়বে।মাহাদ দৃশ্যর দুই হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো
-“মাশাল্লাহ আমার বউটাকে একদম হুর লাগছে।আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর ব্রাইড।তবে সেদিন আর আজকের মধ্যে একটু পার্থক্য আছে।”
-“কি পার্থক্য?”
-“সেইদিন ছিলে বাচ্চা বউ।আর আজ আকর্ষণীয়,মোহনীয় আর ম্যাচিওর বউ।তবে ঘায়েল আমি সব ভাবেই হয়েছি।”
-“হুম।আচ্ছা চলো আগে নামাজ নেই।আর যেই বাজে অভ্যাস তৈরি করেছো তার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে।জীবনে আর কোনোদিন ওইসব বাজে জিনিস খেতে দেখলে মেরে ফেলবো।”
মাহাদ দৃশ্যর উন্মুক্ত কোমরে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।দৃশ্য শিঁউরে উঠলো। মাহাদ ফিসফিসিয়ে বললো
-“তুমি পাশে থাকলে আমি সব বাজে অভ্যাস ছাড়তে রাজি আছি।”
তারপর তারা দুজনেই নামাজ পরে সুন্দর জীবন কামনা করলো সৃষ্টিকর্তার কাছে।আগের সব ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলো আল্লাহর কাছে।
দৃশ্যকে সামনে বসিয়ে তারপর দৃশ্যর কপালে চুমু খেয়ে বললো
-“জীবনে যেই ঝড় বয়ে আসুক এই হাত কোনোদিন ছাড়বো না পিচ্ছি।একবার যেই ভুল করেছি সেটার জন্য অনেক পস্তাতে হয়েছে।তাই সেই ভুল আর করবো না।শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমি মাহাদ শুধু মাত্র দৃশ্যর।দৃশ্যর একান্ত ব্যাক্তিগত সম্পত্তি।আচ্ছা তোমার কাধের তিলটা প্রথম কবে দেখেছি জানো?”
দৃশ্য চমকে তাকালো। মাহাদ মুচকি হেসে কাধের আঁচলটা একটু নামিয়ে কাধের তিলে চুমু খেয়ে নিলো।দৃশ্য শিউরে উঠলো। মাহাদ ফিসফিসিয়ে বললো
-“যেদিন স্কুল ছুটির পর রাস্তায় আমার গায়ের শার্ট তোমার কোমরে বেধে দিয়ে ছিলাম।হঠাৎই সেখানে আমার চোখ আটকে গেছিলো।আমি সত্যি কয়েক মুহূর্তের জন্য থমকে গেছিলাম।একটা বার সে খানে ছুয়ে দিতে ইচ্ছে হয়ে ছিলো।কিন্তু তখন সেটা সম্ভব হয়নি।”
দৃশ্য কেপে উঠলো। মাহাদ দৃশ্যর চিবুকে দুই হাত রেখে দৃশ্যর অনেকটা কাছে চলে আসলো।ফিসফিসিয়ে বললো
-“এই মুখটা দেখার সাধ আমার এই জীবনে মিটবে না।হাজারো মানুষের ভিড়ে এই মুখটা দেখলে আমার চোখ থমকে যায়।আমার হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়।আমি বেশামাল হলে পরি।আমার মন মস্তিষ্ক সবটা জুড়ে শুধু তোমার বিচরণ।এই কাপা ওষ্ঠ জোড়া আমাকে ঠিক কতবার বেসামাল করেছে জানা নেই।বহু কষ্টে নিজেকে দমিয়ে রেখেছি।আমার রক্তে মিশে গেছো তুমি বউ।”
বলেই দৃশ্যর ওষ্ঠ জোড়া দখল করে নিলো।দৃশ্য যেনো অনুভূতির সাগরে ভাসতে লাগলো।পবিত্র স্পর্শে ঠিক কতটা প্রশান্তি।সে মাহাদকে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলো।তার সেই পাগল প্রেমিক আজ তার স্বামী।নিজেকে পরিপূর্ণ লাগছে।নিজের ভালোবাসার মানুটিকে জীবনে চলার পথে পাশে পেলে সত্যি ভীষণ সুখ অনুভব হয়।তাই তারা আজ সবচেয়ে বেশি সুখী মানুষ।তাদের প্রণয় আজ পূর্ণতা পেয়েছে।
পরিশিষ্ট:
নিউ ইয়র্কে আজ মাহাদের কনসার্ট চলছে।সে মাতিয়ে তুলেছে পুরো স্টেজ।দৃশ্য স্টাজের পাশে দাড়িয়ে মাহাদের গান এনজয় করছে।তার কোলে আছে তিন বছরের আদ্রি।তাদের মেয়ে।সেও বাবার গান ভীষণ এনজয় করছে আর মাঝে মাঝে হাত তালি দিচ্ছে।মেয়েটা পুরো বাবা পাগল হয়েছে।তাই মাহাদ দেশের বাইরে গেলেও বউ আর মেয়েকে ছাড়া যায়না।এই দুইজন মানুষ মাহাদের প্রাণ। মাহাদ গান গাইছে আর মাঝে মাঝে তাদের দিকে ফ্লাইং কিস ছুড়ে দিচ্ছে। মেয়েও বাবাকে ফ্লাইং কিস ছুড়ে দিচ্ছে।
মাহিম আর বর্ষার বিয়ে হয়েছে বছর খানেক আগে।দাদী আর বর্ষার মধ্যে কখনো গলায় গলায় ভাব আবার কখনো দা নেউলে সম্পর্ক। এদের মধ্যে এসব চলতেই থাকে।রেগে গেলে মাহিমকে বলে
-“কি রণ চণ্ডী বাইত আনছস?কিছু কওন যায়না।উল্টা আমারে জব্দ কইরা রাখে।আর মাহাদরে দেখ।কি লক্ষী বউ আনছে।বউ আমার উপরে কোনো কথাই কয়না।আশরাফের ঘরে হীরা জন্মাইছে।আর তুই আমার জীবন তেনা বানানের লাইগা এই ধানি লংকা মেয়ে পছন্দ করছিস।”
আবার একটু পরই তিনি দুই নাত বউকে নিয়ে গল্প জুড়ে দেন।আদ্রি এই বাড়ির প্রাণ।সারা বাড়ি সে মাতিয়ে রাখে।তার সবচাইতে প্রিয় হলো বাবা আর চাচী।বর্ষার প্রাণ আদ্রি।পিচ্ছিটা একদম বাবার মত কিউট হয়েছে। এরা দুজন মিলে শামসুন্নাহার বেগম কে তারা করে বেড়ায়।
শামসুন্নাহার প্রথমে দৃশ্যকে তেমন পছন্দ না করলেও ধীরে ধীরে তার রাগ কমে যায়।সে এখন দৃশ্যকে ভীষণ আদর করে।দৃশ্যকে চোখে হারায়।আর বর্ষার সাথে তার সম্পর্ক কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি।তবে বর্ষাকে ছাড়া দাদীর যেনো কোনো আড্ডাই জমে না।
আখি রহমান আজকাল স্বামীকে ভীষণ মিস করেন।এই সুন্দর সময়টা মানুষটি উপভোগ করতে পারেনি।তিনি নাতনিকে নিয়ে সারা দিন ব্যাস্ত।
ফাহিমের বিয়ে ঠিক হয়েছে তার এক রাজনীতিবিদের মেয়ের সাথে।মেয়েটার নাম পরী।দেখতেও ঠিক পরীর মতোই। পরী ফাহিমকে বাবার এক পার্টিতে দেখেছে।প্রথম দেখায় সে ফাহিমের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ে।আর তার বাবা এক মাত্র মেয়ের ইচ্ছায় তাদের বিয়ের বেবস্থা করে।ফাহিম আর মানা করেনি।সেও জীবনে মুভ অন করতে চায়।
এক রাতে দৃশ্য আদ্রিকে ঘুম পাড়িয়ে বারান্দায় এসে মাহাদের কোলে বসে পড়লো।তার স্বামী অভিমান করে বারান্দায় বসে আছে।সে রাগ ভাঙতে চেষ্টা করছে।সে মাহাদের গলায় জড়িয়ে ধরলো আর নাকে নাক ঘষে বললো
-“আমার মিস্টার রেগে আছে?”
-“না।রেগে থাকবো কেনো?আমার কাছে কেনো এসেছ? যাও মেয়ের কাছে।আমাকে একটু সময় ও দাও না।সবার জন্য সময় আছে শুধু আমার জন্যই নেই।আমাকে একটুও ভালোবাসে না।”
-“ওলে বাবা কি রাগ বাবুটার।কিন্তু যদি আরো কেউ এসে আদ্রির মতো আদরে ভাগ নে তখন কি করবে?”
-“অন্য কেউ মানে?”
দৃশ্য মুচকি হেসে মাহাদের হাত নিজের পেটের নিয়ে গেলো। মাহাদ চমকে তাকালো।ভীষণ এক্সাইটেড হয়ে বললো
-“সত্যি?আমাদের বেবি আসছে?”
-“হুম।”
মাহাদ দৃশ্যকে জড়িয়ে ধরলো।আর বললো
-“আমার জীবনে এসে আমাকে অনাবিল সুখ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ পিচ্ছি।”
-“আমি কি এখনো পিচ্ছি আছি নাকি?কয়দিন পর দুই বাচ্চার মা হয়ে যাবো।”
মাহাদ দৃশ্যর ওষ্ঠে ছোট করে চুমু খেয়ে বললো
-” তুমি আমার কাছে সারা জীবনই পিচ্ছি থাকবে।”
-“আমাকে এতো ভালোবাসো কেনো?”
-“ভালোবাসতে কোনো কারণ লাগেনা বউ।প্রথম যেদিন তোমাকে দেখেছি সেদিন কিছু ফিল করেছি।হয়তো আল্লাহ তোমার জন্য আমাকে তৈরি করেছে বলে সেই টান অনুভব করেছি।আমাকে বোকা বানিয়ে যাওয়া বাচ্চা মেয়েটা সেদিন শুধু আইসক্রিম না আমার মনটাও নিয়ে চলে গেছিলো। এখন এই মাহাদ তোমার গোলাম।শুধু হুকুম করুন রানী সাহেবা।”
-“আমি ঘুমাবো। নিউ যে আসছে তার রেস্ট প্রয়োজন।”
-“যথা আজ্ঞা মহারানী।”
বলেই দৃশ্যকে কোলে তুলে নিলো।তারপর বিছানায় শুইয়ে দিলো।পাশেই আদ্রি ঘুমাচ্ছে।কি মায়া মেয়েটার মুখে।একদম ছোট্ট পরী।এই মুখ দেখলে জীবন সার্থক মনে হয়।
সমাপ্ত
(এতো লম্বা সময় আমার সাথে থাকার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।সকলের মূল্যবান মন্তব্য কামনা করছি।গল্পটা আপনাদের কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন।আর ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।??)