#অভিমান
#পর্বঃ৫,০৬
#তানিশা সুলতানা
০৫
চোরের মতো উঁকি ঝুঁকি মারছে মেঘ। বোঝার চেষ্টা করছে তোহা কি ঘুমিয়েছে? না কি জেগে আছে?
রুমের লাইট অবশ্য অফ করা। কিন্তু বেলকনির লাইট অন। যার ফলে স্পষ্ট পুরো রুমটা দেখা যাচ্ছে।
কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে তোহা। চুল গুলো খাট ছাড়িয়ে ফ্লোরে পরে আছে। বিরক্ত হয় মেঘ।
মেয়েটা কি চুলের একটু যত্ন নিতে পারে না? সব সময় এমন খুলে রাখে কেনো? সুন্দর করে বিনুনি করে রাখতে পারে তো। নাহলে খোপা করে বেলি ফুলের মালা দিলো। বেশ লাগতো তাহলে। মুখটা বের করে ঘুমলে একটু দেখতে পারতো। কিন্তু ইডিয়েটটা মুখ ঢেকে ঘুমচ্ছে।
নিজের ভাবনায়,নিজেই বিরক্ত মেঘ। কই আগে তো অহরহ মেয়ে দেখেছে মেয়েদের সাথে মিশেছে কারো দিকে ভালো করে তাকাইও নি পর্যন্ত। কিন্তু এই মধ্যে কি এমন আছে যা মেঘকে মুগ্ধ করলো। চোখ ফেরাতে বাঁধা দিলো?
এখন আবার চোরের মতো মেয়েটার রুমের সামনে এনে দাঁড় করালো?
কিছু তো একটা আছেই।
মেঘ রুমে ফিরে আসে। এভাবে কারো রুমে ঢোকা ঠিক না। বাড়ির কেউ জানলে খারাপ হবে। মেয়েটাও হয়ত মেঘের ওপর অসন্তুষ্ট হবে। রেগে যাবে। চলেও যেতে পারে এই বাড়ি থেকে।
তখন তো আর দেখতেও পাবে না। অবশ্য মেঘও তো সকালে চলে যাবে ঢাকায়। এখানে তো ও পারমানেন্টলি থাকতে আসে নি।
দশ বছর আগে মেঘের যখন আঠারো বছর বয়স ছিলো তখন মেঘ বাবার থেকে তিন লাখ টাকা মুলধন নিয়ে জামাকাপড় বানানোর গার্মেন্টস দিয়েছিলো
দুটো মেশিন আর দুই জন কর্মচারি নিয়ে ব্যবসায় শুরু করেছিলো। সেই ব্যবসায় এখন মেঘকে টিপ বিজনেসম্যান বানিয়েছে। পুরো বাংলাদেশে মেঘরাজ নামটা ছড়িয়ে দিয়েছে।
সকাল সকাল আবার তোহা বায়না ধরেছে বাসায় ফিরে যাবে। এখানে একটুও ভালো লাগছে না। নিজের বাড়ি গেলে ভার্সিটিতে যেতে পারবে। ফ্রেন্ড কাজিন সব মিলিয়ে মনটা ভালো থাকবে। কিন্তু এখানে একা একা রুমে বসে থেকে পুরোনো কষ্ট গুলো তাজা হয়ে যাচ্ছে।
তোহার মা আর মামি কোনো কথা বলছে না। তোহা মায়ের পারমিশন ছাড়া এখান থেকে এক পা নড়বে না এটা জানে তারা।
“ঠিক আছে যাও। তবে তোমার নানাভাইয়ের থেকে পারমিশন নিয়ে তবেই যাবে।
মা বলে দেয়। তোহা খুশি হয়ে যায়। নানাভাইকে মেনেজার করা খুব সহজ। কাঁদো কাঁদো ফেস করে বললেই যেতে দেবে।
এক দৌড়ে বেড়িয়ে যায়।
যাওয়ার সময় আকাশের রুমে একবার উঁকি দেয়। আকাশ আর মায়া কালকে বউ ভাতের পরেই মায়া দের বাসায় গেছে। তোহা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
” আংকেল আমি তোহাকে বিয়ে করবো।
মেঘ বাবা দাদা আর তোহার বাবার সামনে বলে ফেলে। সবাই কিছু জরুরি কথা বলবে বলে এক জায়গায় করেছে।
সবাই কিছুটা চমকে তাকায় মেঘের দিকে।
“তোহার বিয়ে আমরা ঠিক করে ফেলেছি।
কাঠকাঠ গলায় বলে দেয় দাদু।
” আমিও ঠিক করে নিয়েছি বিয়েটা তোহাকেই করবো।
মেঘ নাছোরবান্দা। বাঁজখাই গলায় বলে দেয়।
“আর আমি কারো থেকে পারমিশন চাই নি। জাস্ট জানিয়ে দিলাম।
কোনোরকম জড়তা ছাড়াই বলে দেয় মেঘ।
” আমরা তোহার গার্ডিয়ান। তো আমাদের পারমিশনটা জরুরি।
তেঁতে উঠে বলে মেঘের বাবা।
“আংকেল আমার কাছে টাকা আছে। বাড়ি গাড়ি সব আছে। আপনার মেয়ে ভালো থাকবে। সুখে থাকবে। রানীর মতো করে রাখবো।
এবার আপনি ঠিক করুন কিভাবে আমাদের বিয়েটা দেবেন? মানুষ জন জানিয়ে ধুমধাম করে না কি আমি তুলে নিয়ে বিয়েটা করে নেবো?
ডিসিশন আপনার।
ভনিতা না করেই কাঠকাঠ বলে দেয় মেঘ।
তোহার বাবা ঠিক কি বলবে বুঝতে পারছে না। মেঘকে ওনার একদম পছন্দ না। গুন্ডা ছেলে একটা৷ দুইদিন পরপরই টিভিতে নিউজ দেখা যায় মেঘরাজের লোকেরা অমুক জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে তমুক জায়গায় দুটো লাশ পাওয়া গেছে। প্রমাণ না থাকায় আটক করা যাচ্ছে না মেঘরাজ কে।
তারওপর আবার মেয়ে বাজ। এরকম ছেলেকে উনি কখনোই নিজের একমাত্র মেয়ের জামাই বানাবে না।
কিন্তু কথাটা মেঘের মুখের ওপর বলার সাহস নেই। বারকয়েক ঢোক গিলে গলা ভিজিয়ে নেয় তিনি।
” আপনার এই নিশ্চুপ থাকা টাকে আমি কি ধরে নেবো? আপনি চাইছেন আমি তুলে নিয়ে বিয়ে করি?
উওর না পেয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে মেঘ।
“বারাবাড়ি একটা সীমা থাকে মেঘ। দুটাকা রোজগার করে নিজেকে কি মনে করো তুমি?
তেঁতো উঠে আঙুল তুলে কিছুটা চিৎকার করে বলেন মেঘের বাবা।
” দুটাকা না কোটি কোটি টাকা। নিজেকে খুব বড়লোক মনে করি। আর আমি তোহাকে বিয়ে করছি এটা ফাইনাল।
তোহার বাবা কিছু বলার জন্য মুখ খুলছিলো তখনই দৌড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে রুমটাতে ঢোকে তোহা।
“নানা ভাই আমি বাসায় যাবো এখন। আমাকে ভার্সিটির
পুরো কথা শেষ হওয়ার আগেই থেমে যায়,তোহা। মেঘকে এখানে বাবা মামা আর নানার সাথে দেখে ভরকে যায় তোহা। সবাই কেমন গম্ভীর মুখ করে তাকিয়ে আছে তোহার দিকে।
নিশ্চয় মেঘ তোহার নামে নালিশ দিতে এসেছে।
” সরি নক করে ঢোকা উচিৎ ছিলো আমার।
মাথা নিচু করে অপরাধীর মতো করে বলে তোহা।
মেঘ তোহার দিকে তাকিয়ে আছে। এলোমেলো চুল গুলো। মনে হয়,সকালে মাথা আচড়ায় নি। এলোমেলো চুলগুলো খোপা করে নিয়েছে।
হালকা হালকা কাজল লেগে আছে চোখে। সদ্য স্নো নেওয়াতে স্কোর মিষ্টি একটা সুভাষ ভেসে আসছে মেঘের নাকে।
“মামনি চলো আমি তোমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসবো।
মেঘের বাবা আলতো হেসে বলে।
তোহা অবাক হয়৷ তবুও ভদ্রতা বজায় রাখতে আলতো হাসে।
” চলো
তারা দিয়ে বলেন উনি।
“তোমার জামাকাপড় গুছিয়ে নাও।
নিজে পার্স খুঁজতে খুঁজতে বলে।
তোহার বাবা আর নানা কোনো কথা বলছে না
তোহা যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই মেঘ তোহার হাত ধরে।
সবাই বেশ বিরক্ত হয়। তোহা ভয় পায়। কপালে ভাজ ফেলে তাকায় মেঘের দিকে।
” আমি কি বলেছি শুনতে পান নি আপনারা?
শক্ত কন্ঠে গমগম করে বলে মেঘ।
“ওর হাতটা ছেড়ে দাও।
নানা বলে।
” ছাড়ছি না। এক পা নড়বে না ও এই বাড়ি থেকে। নাহলে পা কেটে আর ওর।
তোহার দিকে তাকিয়ে দাঁত কটমট করে বলে মেঘ। তোহার চোখে পানি টলমল করছে। এসব কি হচ্ছে বুঝতে পারছে না। মেঘই বা সবার সামনে এভাবে হাত ধরে আটকে দিয়েছে কেনো?
হয়ত এখন গার্লফ্রেন্ডকেই দেখছে। কিন্তু চোখটা তো একটু ডলে নিতে পারে। এভাবে বড়দের সামনে হাত ধরাতে তো তোহার অস্বস্তি হচ্ছে লজ্জা লাগছে সাথে ভয়ও হচ্ছে। এটা কে বোঝাবে এই দানবটাকে?
চলবে
#অভিমান
#পর্বঃ৬
#তানিশা সুলতানা
তিন জন উকিল দুই জন হুজুর হাজির করেছে শুভ। মেঘ ইমারজেন্সি জোগাড় করতে বলেছিলো। শুভ ছেলেপেলে নিয়ে একদম তুলে নিয়ে এসেছে। বাইরে পাহারা দিচ্ছে ছেলেপেলেরা।
তোহার হাত এখনো ছাড়ে নি মেঘ। তোহার হাত ধরেই সোফায় বসে আছে। তোহা হাতটা ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু ব্যর্থ। হাত ব্যাথা হয়ে গেছে। ফর্সা হাতটা লাল টকটকে হয়ে গেছে। সেদিকে খেয়াল নেই মেঘের।
উকিল আর হুজুর ভয়ে ভয় বসে আছে।
“তো আংকেল এবার সিদ্ধান্ত আপনার। আমি কি এখনই বিয়ে করবো না কি
তোহার বাবার দিকে এক পলক তাকিয়ে বিরক্ত নিয়ে বলে মেঘ।
তোহার বাবার মেঘের বিপরীতে কাচুমাচু হয়ে বসে আছে।
” ফাজলামোর একটা লিমিট থাকে মেঘ।
শ্বাশিয়ে বলেন মেঘের বাবা।
মেঘ ঠোঁট গোল করে বিরক্তর নিঃশ্বাস ছাড়ে।
মানুষ গিজগিজ করছে। আত্মীয় স্বজন কমে নি। কালকে রিসেপশন শেষ হয়েছে। আজকে সব আত্মীয় স্বজনদের চলে যাওয়ার কথা। সকালের খাবার খেয়েই চলে যাবেন। তার মধ্যে ই এমন হট্টগোল এ সবাই ছুটে আসে ড্রয়িং রুমে।
তোহার মা আর মেঘের মা মেঘ আর তোহার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের কোনো কথা বলার রাইট নেই। তারা শুধুই দর্শক।
মেঘের দাদিমা এসে মেঘের পাশে বসে।
“দাদু ভাই বিয়েটা ছেলেখেলা নয়। তুমি বললে এই গ্রামের সব থেকে সুন্দরী মেয়ের সাথে তোমার বিয়ে দেবো। কিন্তু তোহা আমাদের বড় আদরের। তাকে কি করে?
স্বামী আর ছেলের দিকে এক পলক তাকিয়ে মেঘের পিঠে হাত বুলিয়ে বলেন উনি।
তোহা চমকে ওঠে। এতোখন ওকে কেনো এখানে ধরে রাখা হয়েছে এটা তোহা জানতো না। কিন্তু এখন নানুর মুখে তোহা আর বিয়ে শব্দটা শুনে পুরোটা ক্লিয়ার হয়ে যায়। মুহুর্তেই চোখ ভরে ওঠে। মেঘের মুখের দিকে এক পলক তাকায়।
” আমার ওকেই চাই। আমি ওকেই বিয়ে করবো ইটস ফাইনাল।
মেঘ চোয়াল শক্ত করে তোহার হাতটা আরও একটু শক্ত করে ধরে বলে।
টুপ করে তোহার চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে।
চোখ বন্ধ করে নেয়।
তোহার মা আর মেঘের মা অসহায় দৃষ্টিতে একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে।
“চাপকে তোমায় সিধে করে দেবো। নাটক করছো? বড়দের মুখে মুখে তর্ক করাটা তোমার ফ্যাশন হয়ে গেছে। এনিয়ে আমার কোনো মাথাব্যাথা নেই। তোমাকে নিয়ে ভাবিই না আমি।
তোহার হাতটা ছেড়ে দাও। আর এই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাও।
কাঠ কাঠ গলায় বলে দেয় মেঘের বাবা আরমান চৌধুরী।
দাঁত কটমট করে ওঠে মেঘ। হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নেয়।
” আরমান তুই থাম। এভাবে কথা বলছিস কেনো দাদু ভাইয়ের সাথে। এটা ওরও বাড়ি।
চোখ রাঙিয়ে বলেন আয়শা বেগম (মেঘের দাদিমা)
চুপসে যায় আরমান। মা বাবার মুখের ওপর কখনোই তিনি কথা বলেন না।
“দাদু ভাই
তুমি পাখিকে দেখবে? তোহার থেকে হাজার গুন বেশি সুন্দরী। গ্রামের সব ছেলেরা তাকে পছন্দ করে। দেখবে তুমি? আমি আনবো ওক
মেঘ দাদিমার দিকে শক্ত চোখে তাকায়। তিনি চুপ করে যায়৷ মেঘের রাগ সম্পর্কে সবারই ধারণার আছে। মেঘ কি করতে পারে তা সবাই জানে।
তোহার বাবা শুধু অসহায়ের মতো মেঘের বাবা আর দাদুর মুখের পানে তাকিয়ে আছে।
” শুনতে পাও না? আমার তোহাকেই লাগবে। তোহার মতো কাউকে বা তোহার থেকে সুন্দরী কাউকে না। জাস্ট তোহাকে লাগবে। এজ এ ক্লিয়ার?
বলেই দম নেয় মেঘ। সবাই অসন্তুষ্ট। মেঘ সবার দিকে এক পলক তাকায়।
” যা বোঝার আমি বুঝে গেছি। আপনারা বিয়ের কার্যক্রম শুরু করে দিন। কি কি করতে হবে আমাকে বলুন।
হুজুর আর উকিলকে তারা দিয়ে বলে মেঘ।
“আপনারা এখান থেকে চলে যান।
আনোয়ার চৌধুরী মেঘের দাদা হুঙ্কার তুলে বলেন। উপস্থিত সবাই কেঁপে ওঠেন ওনার হুঙ্কারে। হুজুর আর উকিলরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
তোহা কাচুমাচু হয়ে বসে আছে। অনবরত চোখ থেকে পানি গড়াচ্ছে।
“মা ও মা
তোহা শব্দ করে কেঁদে মাকে ডেকে ওঠে।
তোহার মা তোহার পাশে থাকায় তোহা ডাকার সাথে সাথে তোহার কাঁধে হাত রাখতে যায়
” স্টুপিট
কাঁদছো কেনো? সবাই আমাকে বকা দিচ্ছে। আর এক ফোঁটা চোখ থেকো পানি গড়ালে চোখ তুলে ফেলবো।
মেঘের হুঙ্কার দিয়ে বলা কথায় তোহা সিঁটিয়ে যায়। তোহার মাও কিছুটা পিছিয়ে যায়।
হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে তোহা।
“তুমি কি যেনো বলছিলে? তুমি তোহাকে ভালো রাখবে।
দাদু শান্ত গলায় বলে।
” হ্যাঁ ভালো রাখবো। টাকা দিয়ে মুরিয়ে রাখবো।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে মেঘ।
“বাবা আপনি একে এখান থেকে চলে যেতে বলেন।
চোখ বন্ধ করে দুই হাতে মাথা চেপে ধরে বলে আরমান।
” ওকে ফাইন
মেঘ উঠে দাঁড়ায়। তোহার হাত ছেড়ে দেয়।
“এখানে সবাই ড্রামা করবে। কিন্তু আমার কাছে সময় নেই৷ টিপ বিজনেসম্যান বলে কথা।
বাবার দিকে তাকিয়ে বলে।
” চলে যাচ্ছি।
বলেই তোহার হাত ধরে টেনে তুলে হাঁটা শুরু করে। তোহা শব্দ করে কেঁদে মা বাবা বলে ডেকে যাচ্ছে।
তোহার মাও কেঁদে ফেলে। তোহার বাবা শশুড়ের পা জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলে
“মেঘকে ফেরান বাবা। আমার মেয়েটাকে নিয়ে যাচ্ছে।
আনোয়ার চৌধুরী জামাইকেও সরিয়ে মেঘের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
” তোমার সাথে তোহার বিয়ে দেবো।
মেঘ দাঁড়িয়ে যায়। উপস্থিত সবাই হতোবাক হয়ে যায়। তোহার বাবা মাথায় হাত দিয়ে বসে।
“বাবা কি বলছেন আপনি?
আরমান এগিয়ে গিয়ে বলে। আনোয়ার হাত উঁচু করে থামিয়ে দেয়।
” তবে একটা শর্তে।
“বলুন
মেঘ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে।
” তোহাকে নিয়ে তোমায় এখানে থাকতে হবে। জরুরি কাজ থাকলে একা যেতে হবে। তোহা এই বাড়ি থেকে যাবে না।
মেঘ তাচ্ছিল্য হাসে।
“আগেই গ্রেস করেছিলাম। ওকে ফাইন
বাট তোহা যদি আমার সাথে যেতে চায় তবে তো আমি নিয়ে যাবোই। কেউ আটকাতে পারবে না।
মেঘের কথা শেষ হতেই তোহা ঢলে পড়ে। ফ্লোরে পড়ার আগেই মেঘ কোমর জড়িয়ে ধরে। সবাই হুলুস্থুল শুরু করে দেয় তোহাকে নিয়ে।
” সাট আপ
মেঘ জোরে ধমক দেয়। সবাই চুপ হয়ে যায়। মেঘ তোহাকে কোলে তুলে নেয়।
“আংকেল ইমিডেন্টলি ডাক্তারকে কল করুন।
তোহার বাবা উদ্দেশ্য করে কথাটা বলেই মেঘ তোহাকে নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। তোহার মা আর মেঘের মা মেঘের পিছু ছুটে।
আনোয়ার চৌধুরী হতাশার নিশ্বাস ফেলে। আয়শা বেগম ছেলের কাঁধে হাত রাখে।
” সব ঠিক হবে বাবা। তুই এতো চিন্তা করিস না।
“কিভাবে ঠিক হবে মা। আমার নিজের রক্ত তোহার মতো একটা ফুলের জীবন নষ্ট করে দেবে। সংসার ওকে দিয়ে হবে না। দুই তিন মাস পরে তোহার নামের পাশে ডিভোর্সী ট্যাগটা বসবে। এটা আমি কি করে হতে দিবো?
চোখের কোনে পানি চলে আসে।
” মায়ের ওপর একটু ভরসা রাখ।
ডাক্তার তোহাকে স্যালাইন দিয়ে আর কিছু ঔষুধ লিখে দিয়ে চলে গেছে। তোহার বাবা ঔষুধ আনতে গেছে। বাকি সবাই তোহার পাশে বসে আছে।
“মেঘ শোন
আনিকা (তোহার মা? মেঘকে বলে। সবাই আনিকার দিকে তাকায়।
আনিকা মেঘকে নিয়ে বেড়িয়ে যায়।
” ফুপি ট্রাস্ট মি আমি তোহাকে ভালো রাখবো।
আনিকার হাত ধরে বলে মেঘ।
“আমি জানি সেটা। আমি আছি তোর পাশে। ছোট থেকেই তো আমার ইচ্ছে তোর সাথে তোহার বিয়ে দেবো।
মেঘ ফুপিকে জড়িয়ে ধরে।
” লাভ ইউ ফুপি
“কিন্তু মেঘ তোর একটু সময় নেওয়া প্রয়োজন ছিলো।
চোখ বন্ধ করে বলে আনিকা।
মেঘ ছেড়ে দেয় ফুপিকে। হো হো করে হেসে ওঠে মেঘ।
” যার বাব আর ভাই আমার বিরুদ্ধে সে কি করে পহ্ম নেবে?
ধ্যাত দুই সেকেন্ডের জন্য ইমোশনাল হয়ে গেছিলাম।
চলবে