#ডেভিল,03,04,05
#জয়ন্ত_কুমার_জয়
[3]
দারাও!!!! ( কিছু ছেলে বাইকে বসে আছে।মনে হয় কলেজের সিনিয়র ভাইয়া)
নেহা__জ্বি ভাইয়া কিছু বলবেন?আমাদের একটু লেট হয়েছে ক্লাস শুরু হয়ে গেছে মনে হয়। তারাতাড়ি বলেন
এদের মধ্যে থেকে একজন—
__ও লেট হয়েছে জানেমন ??তাহলে যাও। ক্লাস শেষ হলে আমার সাথে দেখা করবা বুঝেছো?
__(কিছু বললাম না)
তারপর নীলা আর আমি ক্লাসে ডুকলাম।একটু পর—
একটি ছেলে___স্যার আসবো??
স্যার__এতো দেরি কেন?
ছেলেটি__স্যার রাস্তায় জ্যাম ছিল তাই দেরি হলো
স্যার__আচ্ছা বুঝলাম।কিন্তু তোমায় তো আগে কখনো ক্লাসে দেখিনি
ছেলেটি__স্যার আমি টি.সি নিয়ে এসেছি।আজকেই আমার প্রথম ক্লাস
স্যার__প্রথম ক্লাসে তোমায় স্বাগত। তোমার নাম কি??
ছেলেটি__আদনান
স্যার__আদনান এরা হলো তোমার নতুন বন্ধু (ক্লাসের সবার উদ্দেশ্য) আর এ হলো আদনান তোমাদের নতুন বন্ধু। যাও বসো
ছেলেটি__ধন্যবাদ স্যার
ছেলেটি আমার সাথের সিটেই বসলো।একটু ইনোসেন্ট ধরনের। ক্লাস শেষে ক্যামপাসে নীলা আর আমি বসে আছি তখন দেখি ছেলেটা একা একা বসে আছে।ব্যাপারটা আমার খারাপ লেগেছিল।তাই নীলাকে বললাম–
আমি__নীলা দেখ ওই ছেলেটাকে কেমন একা একা বসে আছে
নীলা__হ্যা আছে তাতে তোর কি?
__আরে পাগলি ও তো আমাদের নতুন বন্ধু তাই না??আজ ওর প্রথম দিন তাই কোনো বন্ধু এখনো হয়নি।চল পরিচিত হয়ে আসি
__তোরে নিয়ে আর পারি না।
__জানিস যখন তখন বলিস কেন চলতো
নীলাকে নিয়ে ছেলেটার কাছে গেলাম।ছেলেটা ক্যামপাসের বড় বটগাছের নিচটায় বসে ছিল।
আমি__হাই
ছেলেটি__হ্যালো
আমি__এখানে বসতে পারি??
ছেলেটি__হুম অবশ্যই
আমি__ধন্যবাদ। নাম কি তোমার?? (যদিও নামটা স্যার ক্লাসে বলেছিল তবুও বললাম)
ছেলেটি__আদনান।
__এখানে একা একা বসে আছো যে?
__আসলে কলেজে আমার আজকে প্রথম দিন।তাই বন্ধু হয়নি এখনো।তাই বসে আছি
__আমাদের বন্ধু মনে না বুঝি??
__না ঠিক তা না
__আচ্ছা আজ থেকে আমরা বন্ধু ঠিক আছে?? তুই কি বলিস নীলা?
নীলা__হুম।আদনান তুমি রাজি তো আমাদের বন্ধু হতে?
আদনান__হ্যা অবশ্যই।
ক্লাসের আগে যে ছেলেগুলো আমায় আর নীলাকে দারাতে বলেছিল সেই ছেলেগুলো —
__আমাদের মাফ করে দাও বোন।তখন জানেমন বলার জন্য সরি।কলেজে কোনো সমস্যা হলে আমায় বলবে।আমরা আসি।
আমি__ঠিক আছে
ছেলেগুলোর কারো হাত কারো পা কারো মাথায় ব্যান্ডেজ করা।কিভাবে কি হলো কিছুই বুঝতে পারছিনা।আমায় জানেমন বলেছিল সেজন্য ওদের কে কি কেউ মেরেছে?? কিন্তু কে মেরেছে??ব্যাপারটা রহস্য থেকে গেল।
নীলা বাসায় চল। ভাল লাগছে না।নীলাকে নিয়ে বাসায় আসলাম।তারপর ঘটনাটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝতেই পারিনি।আনুমানিক রাত ২টার দিকে হঠাৎ পেটে কারো স্পর্শ পেলাম। নখ দিয়ে আমার পেটে আছর কাটছে।অসম্ভব ব্যাথায় কুকড়ে উঠলাম এবং মাতাল করা এক পারফিউম। চোখ খুলতেই কেউ একজন আমার মুখ চেপে ধরলো।আমার শরীর ভয়ে কাপতে লাগলো।গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে চাচ্ছি কিন্তু ছেলেদের শক্তির কাছে মেয়েদের শক্তি সর্বদা স্বল্পতাই থাকে।আমার মুখে হাত দিয়ে শক্ত করে শোয়া অবস্থায় বালিশের সাথে চেপে ধরে আছে।কিছু বলতে পারছি না।তারপর লোকটা আমার হাতে একটা চিরকুট দিয়ে আমার পেটে হাত বুলাচ্ছে।অনেক রাগ হচ্ছে লোকটির ওপর কিন্তু কিছুই করতে পারছি না।তারপর কপালে কিস করে চলে যাচ্ছে।ঘরটা অন্ধকার থাকায় লোকটিকে দেখতে পারছি না। আবছা আলোয় কিছুটা আন্দাজ করতে পারছিলাম।লোকটার হুডি পড়ে ছিল।লম্বা প্রায় ৬ফুটের কাছাকাছি।লম্বা চুলগুলা হুডির বাধা না মেনে বাতাসে উড়ছে ঠিক বন্দী পাখিকে মুক্ত করলে যেভাবে উরাল দেয় সেভাবে।চোখের পলকে লোকটা উধাও হয়ে গেল।একি!! লোকটা গেল কোথায়?? বাহিরে গিয়ে কি দেখে আসবো?? না বাবা থাক।কিন্তু চিরকুটটা দিলো কেন?? কি লেখা এখানে??দেখিতো —
কি করবো বলো??তোমার সাথে কেউ কথা বললেও আমি সহ্য করতে পারি না।তাই বাধ্য হয়ে এসব করতে হলো।এখন এতো না ভেবে চুপচাপ শুয়ে পড়ো।কাল আবার কলেজ আছে।গুড নাইট।
ইতি,
তোমার প্রিও
তার মানে এই লোকটাই কলেজের বড় ভাইদের মেরেছে? কিন্তু কেন?লোকটা কি আমায় ফলো করে?কে ইনি?আমি কার সাথে কথা বলি সেটা নিতান্তই আমার ব্যাপার উনি বলার কে?? মাগো পাগল হয়ে যাবো এবার।হাজারো চিন্তা নিয়ে কখন ঘুমিয়েছি জানিনা।
চলবে….???
#ডেভিল
#জয়ন্ত_কুমার_জয়
[4]
সকালে নীলার ডাকে ঘুম ভাঙলো।আজ নাকি ছেলেপক্ষ ওকে দেখতে আসবে।শুনে ভাল লাগলেও একটু খারাপ লাগাও তৈরী হচ্ছে।কারন ওকে ছারা আমাদ একটা দিনও ভাল কাটে না।যাক ওসব বাদ দিয়ে ফ্রেশ হয়ে সকালের নাশতা করে নিলাম।তারপর নিচে গেলাম।
আন্টি__নেহা মা নীলাকে একটু তোর মতো সাজিয়ে দেতো রে মা।
আমি__আন্টি তুমি তো জানো আমি সাজি না।হালকা সেজে থাকি
__হালকা সাজেই তোকে পরি লাগে।না জানি সাজলে
__হইছে হইছে এবার থামো।আর ধপ দিয়ো না তো
__ধপ কোথায় দিলাম যা সত্য তাই বললাম।
__নীলা এমনিতেই অনেক সুন্দর। ওকে আলাদা করে সাজা লাগবে না তাতেই ওর জামাই পাগল হয়ে যাবে হিহিহিহি
__পাগলি একটা
__নীলা কই? আমায় ঘুম থেকে ডেকে তুলে আর দেখতে পাচ্ছি না যে
__ও মনে হয় ছাদে আছে
__ওহ আচ্ছা। তুমি কি রান্না করছো দেখি? ওয়াও বিরিয়ানি? দারাও আমি একটু হেল্প করি।
__আমার হেল্প করা লাগবে না তুই নীলাকে একটু তৈরি কর।ও তো সাজতেই চায় না
__আচ্ছা ঠিক আছে
ছাদে যাচ্ছি নীলার উদ্দেশ্যে।গিয়ে দেখি নীল ভাইয়াকে জরিয়ে ধরে সে কি কান্না নীলার !! আমি আর না এগিয়ে ওখানেই দারালাম।
নীলা__তোর কষ্ট হবে না আমায় ছাড়া থাকতে ??
নীল__হুম হবে একটু
নীলা__আমি তোদের ছাড়া থাকতে পারবোনা ভাইয়া
__হুম এখন তো বলছিস পারবি না যখন বিয়ে হয়ে যাবে তখন জামাই ছারা তো এক মূহুর্ত থাকবি না
__ভাইয়া আমি ইয়ার্কি করার মুডে নাই। আমার সত্যিই অনেক খারাপ লাগছে
__সব ঠিক হয়ে যাবে
__আমি চলে গেলে কার জন্যে চকলেট আনবি?কার জন্য এলাকায়,কলেজে মারপিট করবি?টিভির রিমোটের জন্য কার সাথে মারামারি করবি?
__তখন তো কেউ থাকবে না তাই ওসবো করবো না
__তুই খুব পচা যা তোর সাথে কথা বলবো না।
বলেই নীলা কান্না করতে করতে নিচে নামতেই আমায় দেখে জরিয়ে ধরে অনেক কাদলো।তারপর নিচে গেল।আমি নীল ভাইয়ার কাছে গেলাম।উনি নীরহারা পাখির মতো আকাশের পানে চেয়ে আছে।ওনার ওপর কিছুটা বিরক্তি আর অনেকটাই রাগ হলো।নিজের বোনকে তো একটু শান্তনা দিতে পারতো?তাও করলো না।ওনার পিছনে দারিয়ে বললাম–
আমি__নীল ভাইয়া
নীল ভাইয়া__হুম বলো
__আপনি এরকম কেন?
__কিরকম
__নীলাকে তো একটু শান্তনাও দিতে পারতেন?তা না করে আপনি মজা করছেন এটা আমার কাছে একদম ভাল লাগছে না।ওকে একটু শান্তনা দিলো মানসিক ভাবে কিছুটা ভাল লাগতো।কিন্তু আপনি
__জানো তো? কিছু কিছু মুহুর্ত মজা করে উড়িয়ে দিতে হয়।
উনি আমার দিকে ঘুরতেই অবাক হয়ে গেলাম।নীল ভাইয়া কান্না করছে তার চোখ রক্তিম বর্ন ধারন করেছে।
__ঠিক বুঝলমা না
__এখন আমি যদি ওকে শান্তনা দিতাম তাহলে ও আরো বেশি কষ্ট পেতো।এই মুহুর্তের সব কথাগুলো ওর বার বার মনে হতো আর বার বার কষ্ট পেতো।এখন একটু কষ্ট পেলেও এটা বেশিক্ষন মনে থাকবে না।
__আপনায় যতো দেখি ততই অবাক হই।আপনার চিন্তাধারা সবার চেয়ে অনেক আলাদা।
__জানোতো নীলাকে আমি চোখের মনি করে রাখতাম।যখন যা লাগতো সব না চাইতেই এনে দিতাম।যখন রাত করে বাসায় ফিরতাম পাগলিটা আমার ঘরে খাবার নিয়ে বসে থাকতো।আমায় না খাইয়ে নিজেও খেতো না।ওকে ছাড়া এই বাড়িটা অনেকটাই ফাকা লাগবে।কষ্ট তো আমারো হবে কিন্তু সে কষ্ট কেউ দেখবে না,কেউ জানবে না।সেটা নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
__ভাইয়েরা মনে হয় এরকমি হয়।আমার তো রীতিমতো নীলাকে হিংসা হচ্ছে। ওর এরকম একটা ভাই আছে
__আচ্ছা একটু পর ছেলেপক্ষ আসবে।নীলাকে একটু সাজিয়ে দাও(চোখের জল মুছতে মুছতে)
__আচ্ছা আপনিও নিচে আসুন।
এরপর নীলাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিলাম।ওকে দেখার লোকজন আসলো।ছেলেটা হ্যান্ডসাম ছিল।পেশায় একজন সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার।বাসার সবারি ছেলেকে পছন্দ।নীলার অনার্স ফাইনাল ইয়ারের পরিক্ষা শেষ হলেই বিয়ে।ওইদিন সারাদিন অনেক আনন্দ করেছিলাম।
পরেরদিন ___
চলবে…??
#ডেভিল
#জয়ন্ত_কুমার_জয়
[5]
ফোনের শব্দে ঘুম ভাংলো। ঘুম ঘুম চোখে ফোন স্কিনে তাকিয়ে দেখি বাপি(বাবা) ফোন করেছে—
_হ্যালো বাপি!! কেমন আছো
_ভাল আছি রে মা তুই কেমন আছিস?
_তোমায় ছাড়া একটু খারাপ আছি।আচ্ছা তুমি ঔষধ ঠিকমতো খেয়েছিলে?? এখানে নতুন পরিবেশে এসে তোমায় ফোন করতেই গেছি সরি বাপি
_আমি জানি আমার মামুনি টা অনেক আনন্দ প্রিও।একটু আনন্দে থাকলেই বাকি সব ভুলে যায়।আমারো কাজের চাপে ফোন দেওয়া হয়নি। যাক যে জন্য তোকে ফোন করেছিলাম সেটা হলো কাল আমি বাসায় যাচ্ছি
_ওয়াও কাল কখন আসবে?
_ভোরে রওনা দিবো।সকাল ৯টার দিকে পৌঁছাবো। রাখি রে মা পরে ফোন দিবোনি একটা ফাইল দেখতে হবে।
_ও আচ্ছা।আর হ্যা ঔষধগুলা মনে করে খেয়ো
_আচ্ছা টাটা।।
ফ্রেস হয়ে নিচে গেলাম গিয়ে দেখি নীলা আর আন্টি রান্না ঘরে রান্না করছে।ইসস রে আমি এতোক্ষণ পড়ে পড়ে ঘুমালাম আর এদিকে আন্টি কষ্ট করে রান্না করছে।
_আন্টি তুমি সরো তো আজ আমি রান্না করবো
_তুই রান্না করবি কেনো?? আগুনের তাপে তো আমার এই মিষ্টি মেয়েটার স্কিন খারাপ হয়ে যাবে
_ধুর কি যে বলো না তুমি।দাও আমি রান্না করছি
_না আমি থাকতে তুই রান্না করবি কেন শুনি?? তুই বরং এক কাজ কর কফিটা নীলের ঘরে দিয়ে আয়
_আচ্ছা দাও
নীল ভাইয়ার রুমের দিকে যাচ্ছি। খুব সুন্দর একটা পারফিউম পাচ্ছি। দরজায় নক দিবো তাতেই দেখি দরজাটা খোলা।কি লোক রে বাবা ঘরের দরজাটা খোলা রেখেই ঘুমোচ্ছে।বিছানার সাথেই একটা ড্রেসিং দেখলাম তাই কফিটা ওখানেই রেখে নীল ভাইয়া কে ডাকছি–
“ভাইয়া, ভাইয়া আপনার জন্য কফি নিয়ে আসছি।ওনার কোনো সাড়া নেই। হঠাৎ চোখ পড়লো ওনার চুল গুলায়।ছেলেদের চুলও এতো সুন্দর হয়?? অনেকটাই অগোছালো হয়ে আছে তারপরেও ওনাকে এলোমেলো চুলগুলাই দারুণ মানিয়েছে।গালে খোঁচা খোঁচা চাপ দাড়ি”
আচ্ছা উনি কি আমার থেকে ফর্সা?একবার দেখিতো।ওনার হাতের কাছে আমার হাত নিয়ে দেখছিলাম কে ফর্সা এমন সময় ভাইয়ার ঘুম ভেঙে গেলো–
_কি করছো তুমি( ঘুম ঘুম কন্ঠে)
_ন…ন…না মা…মা….মানে
_এখানে কি করছো?
_কফি দিতে এসেছিলাম
_তা বুঝলাম। আমার হাতের সাথে হাত দিয়ে আছো কেন
_মা..মানে ভাইয়া আমি দেখছিলাম কে বেশি ফর্সা আপনি না আমি(ফর্সা পরিক্ষা করার জন্য ওনার হাতের সাথে আমার হাতটা লেগে দেখছিলাম)
_দেখা হয়ে গেলে যাওতো এখান থেকে আমার ঘুমটা নষ্ট করে দিলো যত্তসব
_হু যাচ্ছি যাচ্ছি। একটু হাত লেগেছে তো কি হয়েছে শুনি?আমার একটু স্পর্সে আপনার হাতটা কি পুরে গেছে নাকি
_যেতে বলছি না?আর তুমি ঘরে ডুকলে কিভাবে। কারো ঘরে ডুকলে নক করতে হয় জানোনা? (রাগি দৃষ্টিতে)
_দরজা খোলা রাখলে তো যে কেউ ডুকবে তাই না
_কফি দিয়েছো?
_হ্যা
_এবার যাও
_হ্যা যাবোই তো আমি কি এখানে থাকতে আসছি নাকি? কালকেই আমার বাসায় যাচ্ছি
_ঠিক আছে যেও।এখন আমার রুম থেকে যাও। এমনিতেই ঘুমটা নষ্ট করছো
_বা রে!! কফিটা যে আনলাম খাবেন না? আর ক টা বাজে খেয়াল আছে?আবার ঘুমাচ্ছেন যে?
_ও মাই গড!! এই তুমি যাও তো (একটু চেচিয়ে)
_যাচ্ছি তো এতো চিল্লান কেন মাইকের মতো
উনি বিরক্ত হয়ে সারা গায়ে কম্বল মুড়ি দিলেন।হাহাহাহা ওনাকে জ্বালাতে কি যে ভাল লাগছে বলে বোঝাতে পারবো না। মিঃ নীল এই নেহা কি চিজ সেটা আপনি জানেন না।আপনায় তো এতো সহজে ছাড়ছি না।উমম কি করি কি করি!! হ্যা পেয়েছি। ওনার একটা নখ কফিতে দিলে কেমন হয়?? উফফ নেহা তোর কি বুদ্ধি!!
চুপি চুপি গিয়ে ওনার ডান হাতের একটা নখ কফির ভেতরে ধরতেই এক লাফে বিছানা থেকে উঠে নখে ফু দিয়ে যাচ্ছে।
আর এদিকে হাসতে হাসতে আমার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু করেছে।পেটে হাত দিয়ে একতালে হেসেই যাচ্ছি।এবার একদম ঠিক হয়েছে।ওনার মতো ডেভিল লোকের জন্য এটাই পারফেক্ট। উনি রাগি লুক নিয়ে আমার দিকে এগোতে লাগলো আর নিমিষেই আমার হাসি থেমে ভয় পেয়ে গেলাম।উনি এক পা করে এগোচ্ছে আর আমি পিছিয়ে যাচ্ছি। এক পর্যায়ে আমায় দেয়দলের সাথে চেপে ধরতেই ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করলাম।তারপর
বেশিক্ষণ ফোনের স্কিনে তাকালে আমার চোখের একটু সমস্যা হয় তাই পার্ট গুলি ছোট হচ্ছে।পার্ট ছোট হওয়ার জন্য দুঃখিত।
ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে আছি, ওনার গরম নিশ্বাস আমার মুখে পড়ছে,কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।তারপর অনুভব করলাম যে ওমার নিশ্বাস আর আমায় স্পর্শ করছে না।ভয়ে আস্তে আস্তে চোখ খুললাম।একি উনিতো সামনে নেই? গেলো কোথায়?ভুত নাকি?যাই হোক এখন এখান থেকে পালাই নইলে মরেই যাবো। এক দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে নিচে আসলাম।
আন্টি__কিরে মা এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন?পড়ে যাবি তো
সাধে কি দৌড়াইছি নাকি?তোমার সাইকো ছেলেটার জন্যই তো।মাগো আর একটু হলে মরেই যেতাম(মনে মনে ফিসফিস করতে করতে)
আন্টি_কি ভাবছিস??
আমি_না কিছু না।আমি কলেজে যাই কলেজের সময় হইছে। ওই নীলা তুই যাবি না?
নীলা_না রে আজ ভাল লাগছে না।তুই যা
_ঠিক আছে তুই রেস্ট নে আমি রেডি হয়ে আসি
তারপর আমার রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে কলেজ যেতেই —
আন্টি__খাবি না?
– না আন্টি কলেজের দেরি হয়েছে।ক্যান্টিনে খেয়ে নিবো
_না খেয়ে তারপর যাবি।দারা বলছি(রেগে ধমক দিয়ে)
_আচ্ছা।ইসস রে কলেজের সময় হইছে (আন্টির যেকোনো কথা আমি ফেলতে পারি না)
_তুই বস আমি খাইয়ে দিচ্ছি
আমি সোফায় বসলাম।আন্টি আমায় খাইয়ে দিচ্ছে।আমায় কখনো এভাবে কেউ খাইয়ে দেয়নি।বাবা তো ব্যাস্ত ছিলেন ছোট থেকে অনেকটাই একাকি বড় হয়েছি।অজান্তেই চোখে পানি চলে আসলো।
আমি_জানো আন্টি আমায় না কেউ এভাবে খাইয়ে দেয়নি।হঠাৎ মায়ের কথা মনে পড়ছে।মা থাকলেও আমায় এভাবে খাইয়ে দিতো(এতক্ষনে কান্না করে দিছি)
_পাগলি মেয়ে একটা আমি কি তোর শুধু আন্টি? মা না??
_(নির্বাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছি)
__আজ থেকে আমায় মা বলে ডাকবি কেমন?এখন থেকে
মার ২টা মেয়ে
_আন্টিকে জরিয়ে ধরে কান্না করছি)
“আচ্ছা মা তোমার ২টা মেয়ে?তাহলে ছেলেটা কোথায় গেলো?”(শিড়ি দিয়ে নামতে নামতে নীল ভাইয়া শার্টের কলার ঠিক করে কথাটি বললো)
আন্টি_কোথায় ভুললাম।আমিতো মেয়ের কথা বলছি
নীল ভাইয়া _আমি বেড় হলাম
আন্টি_কোথায় যাবি?
_একটা কাজ আছে সেখানে যেতে হবে
_খেয়ে যা
_না এখন খাবো না বাইরে খেয়ে নিবো
_তুই তো বাহিয়ে খেতে পারিস না। আয় এখানে বোস।আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
_মা আমার সময় নেই।
_বসতে বলছি(ধমক দিয়ে)
নীল ভাইয়া বাধ্য ছেলের মতো সোফায় বসলো।আন্টি একবার আমায় আর একবার নীল ভাইয়া কে খাইয়ে দিচ্ছে।খাওয়া শেষে–
খাবো না খাবো না করছিলি এখন খাবারগুলা কার পেটে গেলো হ্যা?আমার হয়েছে যত্তো জ্বালা।
আমি আন্টিকে বিদায় জানিয়ে রাস্তায় দারিয়ে আছি।একটা রিক্সাও নেই।বুঝতে পারছি না এখন রিক্সাগুলা এখানে আসে না কেনো।এমনিতেই লেট হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় দেখি নীল ভাইয়া বাইক নিয়ে বেড় হচ্ছে। আচ্ছা নীল ভাইয়াকে বললে আমায় পৌছে দিবে?উনিতো আমায় সহ্যই করতে পারেন না,থাক বলবো না বললে আমাকেই অপমান করবে।কোনো উপায় না পেয়ে হাটতে লাগলাম।পিছন থেকে হঠাৎ একটা বাইক আমার সামনে কষে ব্রেক করলো।আমি তো রীতিমতো ভয় পেয়ে গেছি।একি!!এটাতো নীল ভাইয়া!! উফফ এই লোকটা সকাল থেকে ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে।
নীল ভাইয়া_বাইকে ওঠো।কলেজে পৌছে দিচ্ছি
_না ভাইয়া থাক আমি যেতে পারবো
_তোমার নাকি কলেজে দেরি হচ্ছে?রাস্তায় তো কোনো রিক্সাও নেই চলো আমি নিয়ে যাচ্ছি
_হেটেই যেতে পারবো
_উঠতে বলছি (রাগি লুক নিয়ে)
_উঠছি তো রাগ দেখানোর কি আছে একটু ভাল করে বললেও তো হয়
মিঃ নীল আপনি যদি নাও বলতেন তবুও আমি বাইকে উঠতাম।কিন্তু আপনার মুখ থেকে শুনার জন্য না করেছিলাম হিহিহি।আজকে আপনার খবর করবো চলুন শুধু কলেজে।
নীল _কি ভাবছো?ভাল করে বসো।আমি জোরে বাইক চালাই পরে গেলে কিন্তু তোমায় খুজে পাওয়া যাবে না
_কিন্তু হেলমেট তো একটাই। আপনি কি পড়বেন?
_আমার লাগবে না।তুমি পরে থাকে তাহলেই হবে
_আচ্ছা
নীল ভাইয়া বাইক স্টার্ট করলো।যেমন কথা তেমনি কাজ,বাতাসের বেগে বাইক চালাচ্ছে। আর এদিকে আমার অবস্থা অশোচনীয়। এ লোকটা কি পাগল নাকি?এতো স্পিডে কেউ বাইক চালায়? মনে তো হচ্ছে আকাশে উড়ছি।ওনার শার্ট খামচে ধরে চোখ বন্ধ করে আছি, এভাবে চালালে নির্ঘাত আমার হার্ট এটাক হবে।ওনার পিঠে একটা চিমটি দিলাম।চিমটিটা একটু জোরেই হয়েছে মনে হয়।নীল ভাইয়া খুব কষে ব্রেক করলেন।আর আমি সম্পুর্ন ঝুকে ওনার গায়ের ওপর পড়লাম।
ভাইয়া_এই পাগল মেয়ে সমস্যা কি?
_আপনি আর আপনার বাইক
_সাট আপ(চেচিয়ে)
_(চুপ করে আছি)
_তুমি জানো বাইক চালানো অবস্থায় এতো জোরে চিমটি দেওয়ায় কতো বড় এক্সিডেন্ট হতে পারতো?কোনো আইডিয়া আছে? ইউ ফুল
_আমি তো আস্তে চিমটি দিছি(ইনোসেন্ট মুডে)
_ও মাই গড আর কি বলবো এই মেয়েকে
_পনি কি বলবেন হ্যা? এবার তো আমি বলবো।এতে জোরে কেউ বইক চালায়? আমার চেহারাটা দেখছেন?কতো চিকন আমি। যদি উড়ে যেতাম তাহলে কি আমায় আটকাতে পারতেন?আর আমাকেই জ্ঞান দিচ্ছেন যে (ওনার চেয়ে দ্বিগুণ চেচিয়ে বললাম।এখন ভাল লাগতাছে)
উনি পিছন ফিরে আমার দিকে তাকিয়ে আবার বাইক স্টার্ট করলেন।একটু পর কলেজে পৌছালাম। গেইটে কিছু বান্ধবিকে দেখে ওদের কানে ফিস ফিস করে নীল ভাইয়াকে জব্দ করার বুদ্ধি দিলাম।
_কিরে তোরা পারবি তো?
_হ্যা পারবো না মানে খুব পারবো তুই শুধু দেখ (হারামি গুলা সবাই মিলে বললো)
নীল ভাইয়া গাড়ি ঘুরাচ্ছে তখনি হারামিগুলা ওনাকে বললো–
চলবে?