অবাধ্য_প্রেম( দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ) #পর্ব_১২

0
1049

#অবাধ্য_প্রেম( দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ)
#পর্ব_১২
#নন্দিনী_নীলা

সময়টা নিবিড় হসপিটালে ভর্তি তখনকার ছিল। প্রথম দিন লুকিয়ে চুরিয়ে নিবিড়ের সাথে দেখা করেছিল ছোঁয়া। বিষন্ন অবিশ্রান্ত মন নিয়ে ছুটে এসেছিল প্রিয় মানুষের কাছে। এক নজর তাকে দেখতে। কিন্তু কে জানত সেই দেখতে যাওয়াটাই ওর জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে! এতো সাবধান সহিত দেখা করেও কাজ হয়নি। কিভাবে যেন নিবিড়ের মায়ের চোখে সেটা পড়ে গিয়েছিল। সেটা সেদিন জানতে না পারলেও জানতে পারি দুইদিন পর সন্ধ্যায়। সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করেই কলিং বেল বেজে ওঠে আমি নিজের রুমে ছিলাম। দেখা করতে যাওয়ায় নিবিড় এতটা উত্তেজিত হয়ে অসুস্থ হয়ে গেছিল যে আর দেখা করতে যেতে পারছিলাম না ভয়ে। আমি চোখ মুছে দরজা খুলি। এই সময়ে আর কে আসবে হয়ত লিলি। কিন্তু দরজা খুলে চমকে উঠি। দরজার সামনে লিলি নয় নিবিড়ের মা দাড়িয়ে আছে।
আমি চমকানো গলায় বললাম,” আপনি?”
নিলাশা বেগম বলেন,” হ্যাঁ আমি। তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে ভেতরে আসতে দেবে না?”
আমি দরজা থেকে সরে দাঁড়ালাম। উনি ভেতরে আসলো। উনি কেন এসেছে আমি বুঝতে পারছি না। নিলাশা বেগম যথেষ্ট গম্ভীর মুখ করে ভেতরে এসে দাঁড়িয়ে চারপাশ খুঁটিয়ে খুটিয়ে দেখছে।
আমি কি করব ভেবে পাচ্ছি না বসতে দেওয়ার মতো ও কিছু নাই‌। না আমার রুমে কোন চেয়ার আছে আর না খাট আছে নিচে আমি একটা তোশক আর চাদর বিছিয়ে ঘুমায় আমি। আমি ভদ্রতার সহিত নিলাশা বেগম কে রান্নাঘর থেকে একটা মোড়া এনে বসতে দিলাম।

নিলাশা বেগম বসল। আর বলল,” চা আছে?”
আমি বললাম,” জি আছে!”
” থাকলে আমার জন্য এক কাপ চা নিয়ে আসো।”
আমি ছুটে চলে এলাম চা করতে। চা এনে দিলাম। নিবিড়ের মা খুব শান্ত গলায় বলল,” আজকে তোমার সাথে কিছু মীমাংসা করতে এসেছি।”
আমি ঢোক গিলে বললাম,”মানে?”
“তোমাকে আমি বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগে কি বলেছিলাম মনে আছে। আমার ছেলে তীর সীমানায় আর আসবে না। কিন্তু তবুও তুমি এসেছ। হসপিটাল পর্যন্ত চলে গেছো। আমার ছেলে হাইপার হয়ে গেছিল আমি জানি সেটা তোমার জন্যই হয়েছে। কি করেছিলে গিয়ে সেখানে?”
হসপিটালে গিয়েছিলাম এটা জানলো কিভাবে? ভয়ে আমি চুপসে গেলাম। উনি আমাকে বসতে বলল আমি ওনার মুখোমুখি বসেছিলাম তোশকের উপর।
“কি হলো কথা বলার মত কিছু খুঁজে পাচ্ছ না?”
“আপনি আমাকে বাসা থেকে বের হতে বলেছেন। আপনার বাসায় থাকতাম এজন্য আমি আপনার কথা শুনেছি আর বের হয়ে এসেছি। এখন আমি আর আপনার বাসায় থাকি না যে আপনার সব কথা আমার শুনতে হবে। আর আপনার ছেলের কাছে আমি যাইনা সেই আমার কাছে আসে সব সময়। আমি আপনার ছেলের সাথে প্রেম করতে যাইনি হসপিটালে। একজন অসুস্থ মানুষকে দেখতে গিয়েছিলাম মানবিকতা থেকে।”
আমার কথা শুনে নিলাশা বেগম রেগে গেল। আঙ্গুল তুলে বলল,”আমার কথা তুমি শুনবে না সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি। যার কথা শুনবে তাকে দিয়ে আজকে বলাবো।”
“আমি নিজে থেকে আপনার ছেলের কাছে কখনো যাবো না। কিন্তু সে যদি আশে আমি আর তাকে ফিরাবো না। নিজের ছেলেকে নিজের আঁচলে বেঁধে রাখুন এতই যদি ভয় থাকে।”
“বেয়াদব মেয়ে!”

মন চাচ্ছিল ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় বাসা থেকে। কিন্তু এতটাও ভদ্র এখনো হতে পারেনি। এজন্য সামনে বসে রইলাম দাঁত চেপে। উনি ফোনে কাউকে ফোন দিল। একটু পরেই ভিডিও কলে ভেসে উঠলো তাহমিনা আপুর মুখ। নিবিড়ের কথাটা তাহমিনা আপুকে এখন আমি জানায়নি। উনি আবার আমার উপর রাগ করবে নাকি। আমি কিছুটা ভয় পেলাম। কিন্তু তবু হাসি মুখে আপুকে জিজ্ঞেস করলাম,, কেমন আছো আপু?
” ভালো আছি তুই। কেমন আছিস ?”
“আছি আলহামদুলিল্লাহ। ফিরবে কবে?”
“একটু ঝামেলা হয়েছে। ফ্রিতে কয়েকদিন লেট হবে!”
“কাকা কোথায়?”
“বাইরে গেছে একটু!”
পেছন থেকে নিলাশা বেগম গম্ভীর সরে বলল,,”খেজুরা আলাপ পাড়তে ফোন দেয়া হয়নি তোমাকে তাহমিনা।”
হাসি হাসি মুখটা আপুর চুপসে গেল তিনি খুব অনুরোধ গলায় আমাকে বলল,”ছোঁয়া তুই নিবিড়ের থেকে দূরে চলে যা।”
আমি অবাক গলায় বলল,” কি সব বলছো? তুমি এসব কিভাবে জানলে?”
” আমাকে ভাবি সব বলেছে!”
” সব জানো তাহলে আমাকে কেন দূরে চলে যেতে বলছ। ওনার ছেলেকে ওনাকে সামলাতে বলো!”
“নিবিড় বেঁচে থাকতে তোকে ছাড়বে না! ও তোর জন্য অনেক ডেস্পারেট তুই নিজে থেকে ওকে ছেড়ে দে।”
“আপু আমি এখনো উনাকে গ্রহণ করিনি। সব সময় উনাকে দূর দূর করে এসেছি।”
“এভাবে হবে না। তুই যত দূর দূর কর ও তোর সাথে চিপকে থাকবে! তুই এই শহর ছেড়ে চলে যা। তুই ওর সামনে থেকে চোখের আড়াল হয়ে গেলে ও তোকে ভুলে যাবে।”
“তোমাকে আমি চিনতে পারছি না আপু! তুমি এমন কথা কেন বলছো? নিবিড় কে আমি অনেক দূর দূর করেছি। কিন্তু আমি ওর চোখের আড়ালে যেতে পারবো না। আর আমি ভেবেছি এবার আমি নিবিড় কে মেনে নেব। অনেক কষ্ট দিয়েছি। অনেক দূর দূর করেছি। আর না। যে আমাকে এত ভালবাসে তার ভালোবাসা কে সম্মান করে আমি তাকে আপন করে নেব! আর তুমি এখন এই মহিলাটার পক্ষে গিয়ে আমার বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছ?”
“আমাকে তুই ভুল বুঝিস না। তুই নিবিড় কে আপন করে নিলে। আমার সংসার ভেঙে যাবে।”
“তোর কাছে হাত জোর করে অনুরোধ করছি। প্লিজ আমার সংসারটা ভাঙ্গিস না। তুই তো নিবিড় কে ভালোবাসিস না। তাহলে কেন সারা দিবি। চলে যা প্লিজ দূরে কোথাও। যেখান থেকে নিবিড় তোকে খুঁজে পাবেনা একটু শান্তি দে আমাকে।”
“আবোলতাবোল কি সব বলছো? আমার আর নিবিড়ের জন্য তোমার সংসার কেন ভাঙবে? ভুলে যেও না সব পরিস্থিতিতে আমি তোমার পাশে ছিলাম। আর আজকে তুমি আমাকে দুঃখের সাগরে ভাসাতে চাচ্ছ। আর কে বলেছে আমি নিবিড় কে ভালবাসি না? আমি নিবিড় কে ভালবাসি।
উনাকে আমি কোন মূল্যে ছাড়তে পারবো না সরি।”

শুরু হয়ে গেল আপুর কান্না। আমি বুঝতে পারছি না আমার আর নিবিড়ের জন্য আপুর সংসার কেন ভাঙবে? আমার মাথায় কিছুই ঢুকছেনা তখন আপু একটা কাহিনী বলল,,
“তোকে একটা কাহিনী বলি ছোঁয়া মনোযোগ দিয়ে শোন! রাফসান আর আমার রিলেশন চলছি। আমরা তিন বছর ধরে রিলেশন করেছি। খুব মাখামাখি প্রেম আমাদের ভার্সিটির সবাই জানত আমাদের প্রেমের কথা। হাত ধরে ঘোরাফেরা করতাম। দুজনে এক সিটে বসতাম। সবার মাঝে আমাদের প্রেম নিয়ে অনেক গুঞ্জন হতো হঠাৎ করে রাফসানের জব হয়ে যায়। ওর অনেক শখ থাকে আর্মি অফিসার হওয়ার। ধরতে গেলে স্বপ্ন। এ জন্য যত বার জব সার্কোলার আসতো ও সবকিছু ছেড়ে ছেড়ে চলে যেত পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। দু’বছর পরীক্ষা দিয়েও টিকে নাই ফাইনাল ইয়ারে গিয়ে ও টিকে যায়। ওকে আর পায় কে এত খুশি হয়‌। ওর খুশি দেখে আমারও খুব ভালো লাগে। তো টিকে যাওয়ার পর ও একটু ওই সব বিষয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তখন আমাদের মধ্যে একটু দূরে তো চলে আসে। ও অনার্স পরীক্ষা না দিয়েই চলে যায় ট্রেনিং এ। ভার্সিটিতে কম আসা যাওয়া শুরু হয় কারন কয়েকদিন পর আবার ওকে ট্রেনিং এ যেতে হবে। সেজন্য অনেক কিছু ঠিক করা লাগে। তখন ভার্সিটি বাইরে আমার একটা ছেলের সাথে ফ্রেন্ডশিপ হয় ফেসবুকে। রাফসান আমাকে কম সময় দিতো এজন্য আমি অনেক মন খারাপ হতো। কিন্তু বলতাম না। তো বাইরে সময় কাটাতে গিয়ে একটা ছেলের সাথে খুব ফ্রেন্ডশিপ হয়ে যায় ওকে আমি বলতে পারি না। কারণ একটা ছেলের সাথে যেহেতু সম্পর্ক করেছি ও যদি মাইন্ড করে আমি তো শুধু জাস্ট টাইম পাস করার জন্যই এমন করেছি। এক মাসে পরেই রাফসানকে ট্রেনিং এর জন্য যেতে হয় ছয় মাসের জন্য। ও খুব কান্নাকাটি করে কিন্তু স্বপ্ন পূরণ করতে হবে তো। সেখানে নাকি ফোন নেয়া যাবে না। কথা বলা যাবে না। অনেক করা নিয়ম। ও আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না একদমই। এজন্য আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কাঁদে। আমাকে সাবধানে থাকতে বলে আর এটাও বলে যে ট্রেনিং শেষ করে আসার পরে নাকি আমাকে বিয়ে করবে। রাফসান ট্রেনিংয়ে চলে যাওয়ার পর আসলেই কথা হয় না ১৫ দিন পরে এসে তার সাথে যোগাযোগ হয়। ততদিন আমি তো অভিমানে ফুলে গেছি আর এদিকে আমার নতুন ফেসবুক ফ্রেন্ড রাসেলের সাথে আমার সম্পর্কটা অনেকটা ঘনিষ্ঠ হয়ে গেছে। কল দিয়ে আমার মান ভাঙ্গাবে কি দুইটা কথা বলেই ফোন কেটে দেয়। ইচ্ছা করে করছেনা আসলে ওইখানে ফোনে কারো সাথে কথা বলা যায় না শুধু পরিবারের মানুষ ছাড়া। এমন কি আমাকে কল করতো লুকিয়ে পাঁচ মিনিটের উপরে কথা বলতে পারত না আর আমিও বোকার মতো রাগ করে অভিমান করে ভাবি হয়তো আমাকে ভালবাসে না। এইভাবে রাফসানের সাথে আমার দূরত্ব তৈরি হতে থাকে।তিন মাসে তিন বার কথা বলেছি। লাস্টের দিকে আমি আর কল ধরতাম না কারণ এই তিন মাসে রাসেলের সাথে আমার রিলেশন শুরু হয়ে গেছে। আমাদের সম্পর্ক অনেক গভীরে চলে যায়। রাসেল আমাকে অনেক কেয়ার করতো। আর আমিও এতদিনের ভালবাসার কে ভুলে রাসেলকে আপন ভাবতে থাকি। ওর ভালোবাসায় গলে যাই। আমি আর রাফসানের খোঁজখবর নেই না জানি ও না ওর কি অবস্থা। এদিকে আমি একটা বিরাট বড় ভুল করে ফেলি। রাসেলের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করি। ভয়ে আতকে যাই। তার ফল স্বরুপ আমার পেটে রাসেলের বাচ্চা চলে আসে। এদিকে রাফসানের কথা বেমালুম ভুলে যায়। তখন আমি দিশেহারা। মা থাকে মামার বাড়ি সেখানে গেলেও মামা আমাকে আর মাকে থুথু সিটিয়ে দিয়ে বের করবে বাসা থেকে ভয়ে আমি তার কাছে যেতে পারি না। রাসেলের কাছে ছুটে যায়। আমাকে নিয়ে একটা সংসার পাতে। তখন জানতে পারি রাসেল এতিম সন্তান। কিন্তু সম্পর্কের শুরুতে আমাকে মিথ্যা বলেছে। ওর নাকি বিরাট বড় বাড়ি, গাড়ি আছে। কিন্তু পরে সব চোখের সামনে আসে কিন্তু তবু ভালো যেহেতু বেসেছি সন্তান যেহেতু পেটে নিয়েছি তাকে মেনে নেই। দুই মাস ওর সাথে ভালো করে সংসার করতে পারিনা। আছড়ে পরে আমার বাচ্চার মিসক্যারেজ হয়ে যায়। আর এদিকে বাচ্চা মিস ক্যারেজ হয়ে যাওয়ার পরে রাসেলের চরিত্র আমার সামনে ধরা পড়ে। আমি ছাড়া আরও অনেক মেয়ের সাথে রিলেশন আছে। অন্য মেয়েদের সাথে সম্পর্ক রাখতে মানা করলে আমাকে মারধর করে ওর মার খেয়ে ওর সংসারে পড়ে থাকি এক বছর। ও আমাকে মারতে মারতে অতিষ্ট করে ফেলে । আগেও দুইটা মেয়েকে বিয়ে করেছিল তারা ওর অত্যাচার অতিষ্ঠ হয়ে ওকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছে। দুই বছর আমি ওর সংসারে মাটি কামড়ে পড়ে থাকি। তারপর উপায় না পেয়ে আমিও ডিভোর্স দিয়ে বেরিয়ে আসি। মামার বাসায় যেয়ে জানতে পারি আমার নিখোঁজ হ‌ওয়ায় মা স্টপ করে মারা গেছে। আমার দুনিয়া থমকে দাঁড়ায় আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে এতদিন নিখোঁজ থাকায় মামা আমাকে ঘরে তোলে না। রাস্তায় বেরিয়ে পরি একা একা কোথায় যাব কি করব ভেবে পাইনা। আমার এক বান্ধবী সাহায্য একটা বাসা ভাড়া করে জব শুরু করি যেহেতু আমি অনার্স কমপ্লিট করেছিলাম বেসরকারি জব করি। আমার দিন কাটে মাস কাটে বছর কাটে এভাবেই চলে যায় অনেকগুলো বছর। আমি ও আর রাফসানের খোঁজখবর নেই না। ভাবতে থাকি ও হয়তো বিয়ে করে সুখে আছে আমি আর ওর কাছে কাছে যায় না যেহেতু আমি ওকে ঠকিয়েছি কোন মুখে ওর সামনে যেতাম। কিন্তু এতগুলো বছর পর অপ্রত্যাশিত‌ ভাবে ওকে ফিরে পাই। এটাও জানতে পারি ও আমার ভালবাসায় এতটাই সিক্ত ছিল যে এখন অব্দি বিয়ে করেনি। ওই কথাগুলো ভেবে আমি ওর জীবনে ফিরে আসতে চাইনি কিন্তু তোদের সবার কথাই ওর জীবনে ফিরে এসেছি। আমি অতিত লুকিয়ে গেছি ভয়ে। এখন যদি এসব জানতে পারে আমাকে ক্ষমা করবে না। আমাকে জীবন থেকে সরিয়ে দিবে। কিন্তু আমি আবার যে আশা দেখেছি। সংসার করার যে লোভ জন্মেছে তা হারাতে চাইনা। আমি এখন আর আমার এই সংসার হারাতে চাই না। এসব কিছু ভাবি জানেন কিভাবে জেনে গেছে। আমি জানি না। উনি আমাকে হুমকি দিয়েছে সব রাফসান কে বলে দেবে।আর রাফসান কে আমি ঠকিয়েছিলাম জানলে আমাকে ও আর ওর জীবনে রাখবে না। তুই প্লিজ এই বোনটার সংসার ধ্বংস করিস না বোন। হাত জোর করছি তোর কাছে।”

আপু কথা গুলো বলে কাঁদছে। আমি চোখ বন্ধ করে আছি।
” তুমি আমায় আপন ভাবোনি কখনো‌। আমি জানি কিন্তু আমি তোমাকে সত্যি নিজের বড় বোন ভাবতাম। তাই আজ তোমার জন্য নিজের ভালোবাসার মানুষ কে ছেড়ে যেতে রাজি হলাম। কিন্তু আমি জানি নিবিড় আমাকে খুঁজে পাবে। আর একবার আমার দুয়ারে গেলে তাকে আমি খালি হাতে ফেরাবো না। আরেকটা কথা আপু কাকাকে আগে একবার ঠকিয়ে ছিলে আর এখন সেই সব কিছু লুকিয়ে আরেকবার ঠকালে। সত্য কখনো ধামা চাপ দিয়ে রাখা যায় না। কোন না কোন ভাবে সেটা প্রকাশ পাবেই। তুমি যত কষ্ট করেই লুকিয়ে রাখো না কেন! এই সব কিছু কাকা একদিন জানতে পারবে। আজ যদি আমি তোমার কথা না শুনি হয়তো বা তোমার সংসার ভাঙার জন্য তুমি আমাকে দায়ী করবে। আমাকে অভিশাপ দেবে। তাই আমি তোমার কথা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু আমি চলে যাওয়ার পর ও এই সব কিছু কাকা জানতে পারবে। সেদিন তোমার জন্য কি অপেক্ষা করছে আমি জানিনা। কিন্তু আজকে কাকা তোমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে আমি তোমার পাশে দাঁড়াতাম। কিন্তু সেই দিন আমি তোমার দিকে ফিরে ও তাকাবো না। আজ তুমি আমার মন থেকে উঠে গেলে। ভালো থেকো তুমি।”

#চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here