#গল্পঃ শিশিরের কহিনুর,০২,০৩
লেখিকাঃআরোহী নুর
পর্বঃ০২
প্রায় এক মাস আগে…..
ঘর থেকে হন হন করে বেড়িয়ে যাচ্ছে শিশির,একটু আগেই রুমের সবকিছু ভাঙচুর করলো,এবার হন হন করে রাগে ফুসতে ফুসতে বেড়িয়ে গেলো,রুশানা খান পিছনে ডাকতে গিয়েও ডাকলেন না,শায়েলা খান অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন ওর যাওয়ার পানে,উনার কাধে হাত রেখে ভোর বললো।
কষ্ট পেয়ো না দাদু তুমি তো জানো ভাই কেমন,ও না হয় বাবাকে সহ্য করতে পারে না কিন্তু বাবাও তো কম যান না কথায় কথায় ওকে টেনে আনার কি আছে।
শায়েলা খান কিছুই বললেন না,সুদীর্ঘ একটা নিশ্বাস ত্যাগ করে স্থান ত্যাগ করে নিজের রুমের দিকে প্রস্থান করলেন।
শিশির গাড়ি দৌঁড়িয়ে চলে গেলো একটা পাবে,সেখানে ঢুকেই পর পর ড্রিংক করতে শুরু করলো,একসময় হাত থেকে একটা মদ্যের বোতল ছুঁড়ে ফেললো আর হিংস্র স্বরে বললো,
আই হেইট ইউ মম আই হেইট ইউ ডেড,আই হেইট এভ্রিওয়ান,তারপর ওপর একটা মদ্যের বোতলের গায়ে চুমু দিয়ে ওটা পান করা শুরু করলো।চোখ গুলো মরিচের ন্যায় লাল আকার ধারন করে আছে,দেখেই বুঝা যাচ্ছে ওর ভিতর জমে আছে অসংখ্য রাগ, অভিমান,কষ্ট,না জানি এসবের কখনো কোনো সমাপ্তি ঘটবে কি না।
আমার মা -বাবা আদর করে নাম রেখেছেন আরোহী চৌধুরী নুর,আমার এই চৌধুরী নাম টা মোটেও ভালো লাগে না তাই নিজেকে আরোহী নুর হিসেবেই পরিচয় দেই সবাই আমাকে আরু বলেই ডাকে,আমি সিলেট বিভাগের একটা ছোট্ট উপজেলায় থাকি,আমি জন্ম থেকেই পাক্কা সিলেটি তবে যেহেতু গল্প তাই শুদ্ধ ভাষায়ই বলি আপনারা নয়তো বুঝবেন না ,আমি বাবা-মার তৃতীয় এবং শেষ সন্তান,আমার বড় আমার একটা বোন আছে আর ওর বড় একটা ভাই,ওরা দুজনেরই বিয়ে সাদি হয়ে এক একটা বাচ্চা আছে,আমার বাবা তাহের চৌধুরী, মা সালমা চৌধুরী, ভাই রাজু চৌধুরী বোন তাসলিমা চৌধুরী আর আমাকে তো আপনারা চিনেনই,আর আমার গুরুঠাকুর মানে আমার জেবিন আপি আমার ফেবারিট আপি, জেবিন আপি হলো আমার বড় চাচার একমাত্র মেয়ে,চার ভাইয়ের এক বোন ও,২বছর আগে প্রেম করে পালিয়ে গেছিলো পরিবার মানে নি বলে অবশ্য এখন পরিবার মেনে নিয়েছে,ওর স্বামী অনাথ, ঢাকার একটা ছোট কোম্পানিতে চাকরি করে,দুজনই ঢাকায় থাকে,আপি ভার্সিটিতে পড়ে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে আর আমায় বার বার ফন্দি দেয় ইন্টার পরিক্ষাটা দিয়ে না কি ওর ওখানে চলে যেতে,একসাথে না কি দুজন পড়ালেখা করবো সেথায়, আমার আর কি, হয়ে গেলো,অনেক আগ থেকেই শখ ভার্সিটি পড়লে ঢাকার কোনো ভার্সিটিতে পড়বো মুক্ত বিহঙ্গে উড়বো কেউ ধরে রাখতে পারবে না আমায়,ডিসেম্বরের ২১ তারিখ এসএসসির ঘাট পেরুলাম মানে পরিক্ষা দিয়েছি,কমার্সের ছাত্রী ছিলাম,পড়ালেখায় অনেক ভালো হলেও ঢাকায় আসার ফন্দিতো আমার স্বাধীনতার জন্য করা,মা-বাবা কেউ মানতে চায় নি,ছোট মেয়ে তো অনেক আদরের,আমাকে চোখের আড়ালও করতে চায় না কভু,আমায় নিয়ে সবসময় সবার টেনশন চার চামচ এক্সট্রা থাকে, অনেক কেঁদে কুটে জেবিন আপুকে দিয়ে বলিয়ে সবাইকে রাজি করিয়ে অবশেষে ২১ তারিখ সন্ধ্যায় বেরুলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে,কয়েকমাস কোচিং করে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভালো একটা ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার আশা করে এসেছি ,ট্রেন জার্নি করে পরদিন সকালে পৌঁছুলাম ঢাকায়,সেদিন আমার নাচটা কে দেখে,মানুষ যার্নি করে এসে পরে পরে ঘুমোয় সে জায়গাম আমি সারাঘরে হৈ-হুল্লোড় করে বেড়িয়েছি সারাদিন,মা বলে কোনো জিনিস নিয়ে বেশি হৈ-হুল্লোড় করতে নেই সে জিনিসে না কি নজর লাগে কিন্তু কে শোনে কার কথা,আমি তো আমিই,কখনো কারো কথা শুনি না,যা মন চায় তা করি,কারো হাতে আসার মেয়ে আমি নই, আমি তো মুক্ত পাখি,আর আজ তো একদম স্বাধীন এখন কে আমায় আটকায়,আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কনিকাও ঢাকায় এসেছে, ও এখানে ওর মামার বাসায় থেকে বাকি পড়া চালাবে,আসলে আমরা দুজন একসাথেই পড়ার প্লেন করে এসেছিলাম।যাকগে,কনিকা আমার আসার পরদিন এলো এখানে তাই জেদ করা শুরু করলাম ওর সাথে দেখা করবো ওর মামার বাসায় যাবো বলে,ওকে নিয়ে অনেক ঘুরবো বলেও,আপি তো এককথায়ই মানা করলো নতুন শহরে এসেছি উনি আর দুলাভাই ছাড়া কারো সাথেই বেরুনো যাবে না,আর আজকে দুলাভাইয়ের অনেক কাজ আর উনি তো মহারানী উনি জার্নি করে এসেছেন উনার এই ক্লান্তি কয় মাসে ফুরাবে শুধু ওই যানে,আসতো অলস খাতাস একটা,বেরুতে দিলো না বরং আটাশিটা কথা শুনিয়ে রুমে ঢুকিয়ে বাইরে তালা মারলো,কই এসেছিলাম মুক্ত বিহঙ্গে ঘুরবো কিন্তু শাঁকচুন্নিটা আশা দেখিয়ে এনে সব আশাতে জল ঢাললো,এখন তো মনে হচ্ছে গান্ডিটা আমাকে নিজের ঘরের কাজ করাতে এনেছে আমি যে কাজকর্মে বড়ই নিপুন,এই একটা গুণ আছে বটে আমার।
তারপর রুমে অনেক পাইচারী করে মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চাপালাম,আমাকে না কি বন্ধি রাখবো,মুক্ত পাখিকে কে কি কখনো বন্ধি অবস্থায় খাটে আপনারাই বলেন,রুমের ছোট বারান্দা দিয়ে শাড়ী ঝুলিয়ে অনেক কষ্টে নিচে নেমে এলাম,বাড়িটা দোতলা তাই বেশি কষ্ট হলো না,হা হা,তারপর কনিকা কে ফোন করে আনিয়ে নিলাম,ওকে নিয়ে কতো ঘুরাঘুরি শুরু করলাম,তারপর ওর মামার বাসায় গেলাম,ওখানে যা আড্ডা দিতে শুরু করলাম তা শুধু আমি জানি,আমি আবার বরই মিশুক, মানুষ দেখলে কথা না বলে পারিই না,এদের সাথে প্রথম দেখায় এমন ভাব করলাম যেনো এরা আমার জনম জনমের পরিচিত,এদিকে ভাব জমাতে গিয়ে আমার খেয়ালই রইলো না যে সারাদিন ধরে আমি বাসায় নেই,সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়,এদিকে ফোনেও কোনো ফোন না আসায় আমি আর কোনোদিক খেয়াল করি নাই,এরাও আসতো জোকার পেয়ে ইনজয় করছে কই কেউ কিছু খেয়াল করাবে তা না,হঠাৎ কনিকা বললো।
এই আরু বাসায় যাবি না সন্ধ্যা হতে এলো তো।
ওর কথায় ধ্যান ভাঙলো আমার,ফোনের দিকে তাকিয়ে ওটা চেক করে বুঝতে পারলাম চার্জ না থাকায় সে কবেই বন্ধ হয়ে গেছে তাই কোনো ফোন আসছিলো না এদিকে সবাই হয়তো এতসময়ে আমার জন্য টেনশনে মরা মরা অবস্থায় আছে,তাই আর দেড়ি না করে বেরুনোর কথা মাথায় আনলাম,কাউকে ভয়ে আর কারো ফোন থেকে ফোন করতে যাই নি না হলে ফোনেই জেবিন আপি আমার চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করবে ভাবলাম সামসামনি যাই তখন না হয় যতগুষ্টি উদ্ধার করার করে নেবে,বেড়িয়ে গেলাম, কনিকা আর ওর মামার পরিবার অনেক জেদ করলো ওদের কাউকে সাথে নিয়ে আসতে যেহেতু সন্ধ্যা হয়েই এসেছে এতো বড় শহর একা কি করে যাবো আর আপনারাতো আমায় জানেনই মুক্ত পাখি যা করি স্বাধীনভাবে করতে চাই তাই আর ওদের কথা শুনলাম না ফুরুৎ করে পালিয়ে আসলাম ওখান থেকে,কিন্তু এখন অনেক ভয় করছে,অন্ধকার নেমে এসেছে,এদিকে বৃষ্টি আসার ভাব,ফোনটাও বন্ধ, আর ওই শাঁকচুন্নির মামার বাসা অনেকটা নির্জন এলাকায়,রাস্তা দিয়ে একটা গাড়িও যাচ্ছে না কি যে করি,এই বড় শহরগুলো আমাদের ওই ছোট্ট উপজেলাগুলোর মতো হয় না আজ হাঁড়ে হাঁড়ে টের পাচ্ছি তবে আর কি করার বড়দের কথা না মানলে যে এরকমই হয়,হঠাৎ দেখলাম একপাশ থেকে একটা সিএনজি আসছে ওটাকে ইশারা করতেই ওটা থামলো,গাড়িতে একটা ড্রাইবার আর পিছনে একটা গুন্ডামার্কা ছেলে,ওদের দেখে ভয় করলো কিন্তু এখন আর কি করার আছে এদিকে আর গাড়ি পাবো বলে মনে হচ্ছে না তাই আল্লাহর নাম নিয়ে উঠে পরলাম,ছেলেটি থেকে অনেক দূর হয়ে বসেছি আমি,বার বার কালিমা তায়্যিবা পড়ছি আর বুকে ফুঁ দিচ্ছি,বাসার ঠিকানা ড্রাইবারকে বললেও যখন বুঝলাম ড্রাইবার ভুল দিকে গাড়ি টানছে তখন সন্দেহ হলো,গাড়ি থামাতে বললেও থামালো না,আমি আবার মোটেও বোকা নই অনেক জেদি হলেও বুদ্ধি মাথায় অনেক যাকে বলে কটুবুদ্ধি, তাই তৎক্ষনাৎ গাড়ি থেকে লাঁফ দিবো তার আগেই ছেলেটি খপ করে আমার হাত ধরে ফেললো দুজনই শয়তানি হাসি হাসতে শুরু করলো।
এদিকে শিশির, ও নিজেও জানে না কয়টা মেয়ের সাথে ওর রিলেশন আছে,আজ একটা তো কাল আরেকটা,ও যেনো মেয়েদের কাছে একটা মৌঁচাক আর মেয়েগুলো মৌমাছি,ওর লুকে ঘায়েল হয় না এমন মেয়ে আদোও আছে কি না সন্দেহ, ওরও আবার মেয়েদের নিয়ে অনেক নেশা,কারো কাছেই টিকে না বেশিক্ষণ, তবে নিজের কাজের প্রতি অনেক সিরিয়াস,সন্ধ্যা হয়ে গেছে আজকে কাজ কম থাকায় গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো পাবের উদ্দেশ্যে আজ অনেক ড্রিংক করবে,অনেক ফুর্তি করবে এটাই উদ্দেশ্য, মাঝপথে কোনো একজনকে দেখে গাড়ি থামালো শিশির,ওকে দেখে একটি অসম্ভব সুন্দরী মেয়ে মুচকি হাসলো আলতো করে,এটা একটা প্রত্যাশার হাসি, শিশির নেমে এসে ওকে উদ্দেশ্য করে বললো।
তুমি এখন আবার কি চাই তোমার?
কতো ফোন করছিলাম ফোন ধরছিলে না কেনো?দেখো শিশির আমি এখন রিয়েলাইজ করতে পারছি যে আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি, প্লিজ আমাকে একটা চান্স দাও,প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দাও,আবার আমায় নিয়ে নাও তোমার জীবনে।
দেখো তুমি ভালো করেই জানো এসব প্রেম ভালোবাসায় আমি ইন্টারেস্টেড না,আমার কাছে সবই হচ্ছে টাইম পাস,আর যেই আমার সাথে রিলেশনে আসে সবাই এটা জেনেই আসে,আর যারা আমার সাথে রিলেশনে থাকে তাদের আমি কখনো নিজেদের লাইফ এনজয় করতে বাঁধা দেই না,কারন ওদের সাথে আমার সম্পর্ক বেশিদিনের না আমি জানি,তোমার সাথেও আমি সিরিয়াস ছিলাম না সেটা তুমি ভালোয় জানতে,এমনিতেই আমি তোমার সাথে ব্রেক আপ করে নিতাম তারপর জানলাম তুমি ওলরেডি কারো সাথে কমিটেড হয়ে আছো,তারপর তো আর আলাদা করে ব্রেকআপের প্রশ্নই আসে না তুমি ওকে নিয়ে হেপি আর আমি আমার লাইফ নিয়ে।
বাট শিশির, বেবি আমার কথাটা শুনো।কথাটা বলে মেয়েটা শিশিরের পাশে যাবার চেষ্টা করলো
স্টে এওয়ে,পাশে আসবে না বলে দিলাম,তুমি ভালো করেই জানো মাহি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে কেউ টাচ করুক আমার তা একদম পছন্দ না,আর আমার কথার উপর কথা বলাও আমি সহ্য করতে পারি না,আজকের পর থেকে যেনো তোমায় আমি আমার আশেপাশে না দেখি,
শিশিরের অগ্নিদৃটিতে ওর দিকে তাকিয়ে বলা কথাগুলোতে আর কিছু বলার সাহস হলো না মাহির,শিশির গাড়িতে উঠে চলে গেলো।
সেই কখন থেকে দৌঁড়াচ্ছি আমি,তখন ছেলেটির হাতে আমার ধারালো দাঁত ফুঁটিয়ে লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দৌঁড়াতে শুরু করেছি আমি,শয়তানগুলো আমার পিছনেই,জীবনে যেনো সুন্দরী মেয়ে দেখে নি,বৃষ্টিও আর অপেক্ষা করতে পারলো না এসেই পড়লো,আমার মতো যখন যেখানে যাওয়ার গিয়েই শান্তি হবে,যাকগে ভিজতে ভিজতে দৌঁড়াচ্ছিলাম,কাউকেই আশেপাশে দেখছি না আমায় বাঁচানোর মতো,হঠাৎই সামনে থেকে একটা কারের হেডলাইটের আলো দেখতে পেলাম,মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়লাম আমি হেল্প বলে চিৎকার করে,এদিকে তৎক্ষনাৎ গাড়ি থামালো গাড়ির ভিতরে থাকা ব্যাক্তিটি হুট করেই নিচে নেমে এলো,আমি নিজেও জানি না কেনো যেনো ব্যক্তিটিকে দেখে মনে অনেক সাহস পেলাম,মনে হলো এখন যেনো আমার আর কিছুই হবে না,লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম লোকটাকে,জানিনা খনিকে কিভাবে কারো জন্যে মনে এমন বিশ্বাস চলে এলো আমি তো আবার সবাইকে বিশ্বাস করি না আর ছেলে মানুষকে তো একদমই না,তবে আজ এমন কেনো করলাম জানি না,হয়তো ভয়ে,লোকটার মুখ আমি অন্ধকারে ভালো করে দেখতে না পেলেও ওর প্রতি আলাদা বিশ্বাস চলে এলো মনে তখন,ওকে জড়িয়ে ধরে নিজের ভয় হ্রাস করতে পারলেও অন্য কিছুও তখন হ্রাস পাচ্ছিলো আমার আর সেটা হলো আমার জ্ঞান, ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পরছি আমি তা বুঝতেই পারলাম।
চলবে…….
#গল্পঃশিশিরের কহিনুর
#লেখিকাঃআরোহী নুর
#পর্বঃ৩
পিটপিটিয়ে চোখ খুলে তাকালাম আমি,নিজেকে একটা আলিশান রুমে আবিস্কার করলাম,একপাশে চোখ ঘুড়াতেই চোখ পড়লো ঘুমিয়ে থাকা এক বলিষ্ঠদেহী নরের উপর,লোকটা সোফাতে ঘুমিয়ে আছে মুখটা আমার দিকে করা ঘুমোনোর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত যেনো আমার দিকেই তাকিয়ে ছিলো,বজ্জাত লোক হয়তো ঘরে বউ নেই তাই আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো,কিন্তু ছেলেটি থেকে কেনো যেনো আমার চোখ সরাতে ইচ্ছে হলো না,ইনি এই প্রথম ছেলে যার দিকে আমি একাধারে ৪ মিনিট প্রায় তাকিয়ে ছিলাম,কখনো কোনো ছেলের দিকে একবার তাকালে অন্যবার তাকাই না,ছেলেদের বরাবরই অসহ্য লাগে আমার,এদের ধার কাছ আমি কখনো ঘেঁষি না, আমিই হয়তো প্রথম মেয়ে যে নাকি কখনো ক্রাশ খায় নি,তবে আজকে নিজের রেকর্ড ভেঙে দিলাম,হয়তো ক্রাশ খাইছি তাই চোখ সরাতে ইচ্ছা হচ্ছে না,এদিকে যে এখনি বাড়ি না পৌঁছালে সেই রকমের বাঁশ খাবো সেদিকে খেয়াল নেই আমার,আমার বাড়ির লোকগুলো না আবার থানা পুলিশে চলে গেছে কে জানে,ওয়ারেন্ট যে বেরুলে জেবিন আপুর নামেই বেরুবো,এসব ভাবনা যে মাথায়ই আসছে না একধ্যানে চেয়ে আছি ছেলেটার দিকে,আমাকে আজ এ কোন ভুতে ধরলো কে জানে,যাকগে অবশেষে আমার ধ্যান ভাঙলো ফোনের রিংটনে,পাশেই বেজে উঠলো ফোনটা ছেলেটার ঘুম নষ্টের চিন্তা ঠিকই আমার মাথায় আসলো তাই ঝটফট ফোন রিসিভ করলাম,ওপর পাশ থেকে ভেসে আসলো জেবিন আপুর নাক টানা হেচকি মারা কান্নার সাউন্ড, আমার জন্য কেঁদে কেঁদে এ হাল হয়তো বেচারির,তবে আমার জন্যই যখন কাঁদছিস তবে ফোন ধরে আমার সাথে ভালো ব্যবহারই করতে পারতি সে কি আর ও করবে যা তা বলতে শুরু করলো আমায়,বাড়ির সবাইকেও না কি বলেছে সবাই ঢাকার উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়ার ধান্দায় লেগে পড়েছে, আমার মার তো না কি কান্না করতে করতে খারাপ অবস্থা,ওর ধমকানী,গালি প্লাস অনেক ইমোশনাল কথা,নাকের টানের সাউন্ড সব মুখ বুঝে সহ্য করার পর একটা কথাই বললাম বাসায় এসে সব বলছি তারপর কুত করে ফোন কেটে ফোন আবারও অফ করলাম,না হলে আবারও ফোন করে করে প্রাণ খাবে,একটু সময়ে ওর এতো ক্যালেঙ্কারি করার কি দরকার ছিলো হে,সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে রাক্ষসী এবার আর কি ঢাকা থাকতে পারবো আল্লাহই জানেন,কিন্তু ফোনটাতো আমার বন্ধ ছিলো কিন্তু ওটা অন হলো কি করে তাও ফুল চার্জ দেওয়া,হয়তো ওই মরা ব্যাঙের মতো ঘুমিয়ে থাকা লোকটা দিয়েছে,যাকগে ফোন কেটে ঘরে টাঙানো বড় ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে বুঝতে সক্ষম হলাম রাত ১২ টা বাজে,হঠাৎ খেয়াল করলাম নিজের কাপড়ের দিকে কাপড়গুলো তো আমার না,আর ওটা বড় কথা না বড় কথা হলো আমার কাপড় কে চেঞ্জ করলো,আমি তো অজ্ঞান ছিলাম তার মানে কি এই ছেলেটা,না এ হতে পারে না এ ছেলেটা আমার কাপড় চেঞ্জ করেছে না কি,এ আমার সাথে উল্টা পাল্টা কিছু করে নি তো,তার মানে আমার মতো পবিত্র পদ্মফুলে এই ব্যাঙটা বসে গেলো,ছি ছি এসব কি বলছি আমি,আল্লাহ এমন কিছু যেনো না হয়ে থাকে,ওকে দেখে তো ভদ্র ছেলে মনে হচ্ছে আর আমার সাথে কিছু হলে আমি তো তা অনুমান করতে পারতাম বাট এমন কিছুই এখন আমার অনুভব হচ্ছে না,না না আল্লাহ আমার সাথেই আছেন এমন কিছুই হয়নি হয়তো,আমি এখনও পবিত্র পদ্মফুলই আছি আল্লাহ ভরসা,এখন মানে মানে কেটে পরি এখান থেকে আর অন্য কিছু ভাবার সময় নেই এখন বাড়ি না গেলে বাড়ি এখানে মানে বাড়ির লোক এখানে এসে ক্যালেঙ্কারি করবে,তবে চলেই যাই যদি ব্যাঙটা উঠে আমায় যেতে না দেয়,সুন্দরী মেয়েকে কেই বা হাতছাড়া করে,তাই দিমি দিমি পায়ে বাইরে বেরুতে যাবো তখনি পিছন থেকে আমার নাজুক হাতটা শক্ত একটা হাতের মাঝে আটকা পরে,মানে কেউ আমার হাত ধরে নিয়েছে পিছন থেকে,পিছন ফিরে তাকাতেই দেখি সেই মরা ব্যাঙটা মানে সেই ঘুমন্ত ব্যাঙটা জেগে উঠে খপ করে আমার হাত ধরে ফেলেছে,আমি টান দিয়ে আমার হাতটা ছাড়িয়ে ভয়ে পিছু হটলাম মুখে হয়তো ভয়টা আমার স্পষ্ট ভেসে উঠেছে তখন,ব্যাঙটা আমার দিকে খনিক এগিয়ে এসে মুখে সরল একটা স্মাইল টানিয়ে আমাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে বললো।
আরে আরে ভয় পেয়ো না আমি তোমার কোনো ক্ষতি করবো না,আমার কথা শুনো।
আমি ওর কথা শুনার জন্য প্রস্তুত না কথাটা বুঝিয়ে দিলাম ওকে জোরে একটা কান্না করে।
হে হে হে আমি বাড়ি যাবো আমায় বাড়ি দিয়ে আসেন আমি বাড়ি যাবো।
আরে আরে কাঁদছো কেনো আমি বললাম তো আমি তোমার কোনো ক্ষতি করবো না আমার কথা অনততো শুনো।
কে শুনে কার কথা,আমার কান্নার বেগ বেড়েই চলেছে চিৎকার করে করে কাঁদছি আর বলছি আমি বাড়ি যাবো, আমায় বাড়ি দিয়ে আসেন,লোকটা অনেক কিছু বলে আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না হঠাৎই জোরে ধমক দিয়ে উঠলো।
শাট আপপপপপপপপপপপপ
লোকটার প্রচন্ড ধমকে ভয় পেয়ে কান্না থামিয়ে নিলাম কিন্তু ফোঁপানো টা জারি আছে,এবার লোকটা আবারও একটু শান্ত হলো আবারও ঠোঁটের কোনে হাসি ঝুলালো আর শান্ত স্বরে বললো।
ওকে ফাইন তুমি বাড়ি যাবে তো,আমি তোমায় বাড়ি নিয়ে দিয়ে আসবো,কেমন৷ চলো আমার সাথে,কথাটা বলে লোকটা আমার দিকে একটু এগিয়ে এলে আমি খনিক পিছালাম লোকটা আবার বললো।
আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমার দিকে আসছি না আমি আগে যাই তুমি আমার পিছন আসো।
তারপর লোকটার কথামতো কাজ করলাম,লোকটা আগে আগে আমি পিছু পিছু,বিড়ালের ছানাগুলো যেমন বিড়ালের পিছন পিছন যায় ওকে ফলো করে ঠিক তেমনি,কিন্তু যেতে যেতে যেনো রাস্তা ফুরাচ্ছে না এতো বড় বাড়ি আমার তো সন্দেহ হচ্ছে এটা বাড়ি না কি কোনো আসতো একটা ক্রিকেট মাঠ,এতো বড় বাড়িতে এই কুনোব্যাঙটা একা থাকে ভাবতেই কেমন গা ছমছম করছে,একা থাকে এজন্য বলছি কারন বাড়িতে এই মুহুর্তে কেউ আছে বলে আমার মনে হচ্ছে না,যাকগে অবশেষে মেইন ডোর দিয়ে বাইরে বেরুতে পারলাম,বাইরে বেরুতে কিছু লোককে দেখতে পেলাম কিন্তু এরা লোক না রোবট কে জানে সবাই কালো পোশাক পরে হাতে রিভালবার নিয়ে ঠায় খাঁড়া আছে,এদের মনে হয় মশা মাছিও আক্রমন করে না কভু, কারন এরা নড়ে বলে আমার মনে হচ্ছে না,যাকগে ওই ব্যাঙটাকে দেখে ওই ধাতবমূর্তিগুলোও নড়লো,হাত উঠিয়ে সবাই স্যালুট করলো লোকটাকে,হয়তো কোনো মাফিয়া কিং এই ব্যাঙটা তাই এই রোবটগুলো এভাবে স্যালুট করছে,যাকগে রোবটটা ওর গাড়ির দরজা খুলে দিলে গিয়ে উঠে বসলাম,কেনো যেনো লোকটাকে আমার অবিশ্বাস হচ্ছে না কে জানে,লোকটা গাড়িতে উঠে গাড়ি চালাতে শুরু করলো আমি ওর পাশের সিটে,আমায় বাড়ির এড্রেস জিজ্ঞেস করলে আমি বললাম তারপর সে অনুযায়ী ড্রাইব করা শুরু করলো,মুখে আলতো হাসি ঝুলিয়ে রেখেই ড্রাইব করছে, মাঝে মাঝে আমার দিকেও তাকাচ্ছে,আমার কেমন জানি লাগছে তাই এদিক ওদিক চোখ ঘুরাচ্ছি,শালা ব্যাঙটার মতলব কি কে জানে,তবে কিছু করতে আসলেই আমার দাঁড়ালো দাঁত বসিয়ে দিবো এর হাতেও ভেবে নিয়েছি,এদিকে বার বার ভাবছি ব্যাঙটাকে জিজ্ঞেস করেই নেই আমার কাপড় কে পাল্টেছে কিন্তু পরক্ষণেই লজ্জা মাথা খাচ্ছে আমার, এরই মাঝে ব্যাঙটা বলে উঠলো।
তুমি হয়তো ভাবছো তোমার কাপড় কে পাল্টেছে তবে চিন্তা করো না আমি পাল্টাই নি,আসলে বৃষ্টিতে তুমি অনেক ভিজে গিয়েছিলে তাই আমার গার্ড দিয়ে মার্টকেট থেকে নতুন কাপড় আনিয়ে তারপর একটা নার্স ডেকে তোমার কাপড় পাল্টিয়েছি।
যাক বাবা বাঁচলাম,ব্যাঙটা খারাপ না,ভালোই হলো আমার মতো ওসব হিন্দি সিরিয়াল দেখে না নয়তো সেসব সো কোল্ড রোমান্টিক হিরোদের মতো চোখ বেঁধে নাইকার কাপড় পাল্টাতে লেগে যেতো,এর জায়গায় আমি হলে হয়তো আমিও তাই করতাম,ওই যে হিন্দি সিরিয়ালের সাইড ইফেক্ট,তাছাড়া এর মতো এতো খেদমত কে করে আজকাল,আচ্ছা যাকগে হঠাৎ দেখলাম বাড়ির ঠিক পাশে চলে এসেছি,কিন্তু বাড়ি অব্দি একে নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না এমনিতেই আপি ফায়ার হয়ে আছে আর সাথে একটা ছেলে দেখলে আজ নির্ঘাত আমার কপালে সিলেট যাওয়া লিখা আছে,তাই চিৎকার করে উঠে বললাম।
থামানননননননন।লোকটা আমার এহেন কাণ্ডে গাড়ি থামাতে বাধ্য হলো আর বললো।
আরে কি হলো ঠিকানা অনুযায়ী তোমার বাড়ি তো আরো ভিতরে আমি নিয়ে দিয়ে আসি।
লোকটার কথা শেষ হতে হতে গাড়ি থেকে নেমেই পড়লাম আমি আর মুখ ভেংচি দিবে বললাম।
ভিতরে নিয়ে দিয়ে আসি,হুহ শখ কতো,সুন্দরী মেয়ে দেখলে পটানোর ধান্দা চলে আসে না মাথায়,যাও যাও নিজের বাড়ি যাও,আমি একাই সব করতে পারি, আমার কাউকেই দরকার নেই,আমি একাই একশো, বুঝলে মি.কোনোব্যাঙ
কথাটা বলেই ভু দৌঁড় দিলাম আমি আগ পিছ না তাকিয়েই।
এদিকে শিশির আরোহীর এসব কান্ডে হাসতে হাসতে নেই,গাড়ি থেকে নেমে এসেছে বটে আরোহীর পিছু পিছু ও ঠিকমতো বাড়ি পৌঁছালো না কি দেখতে,তারপর দেখলো ও ঘরে পৌঁছে গেছে ঘরের বাইরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে তা দেখতে পেলো শিশির আর বললো।
কতো পালাবে মায়াবতী,তুমি আমার শান্তির ঘুমের কারন হয়ে গেছো খনিকে,তোমার ওই বৃষ্টির জ্বলে ভেজা মায়া ভরা মুখটা আমার সব নেশা কেরে নিয়েছে,সব নেশা মুহুর্তেই ভুলে গেলাম আমি,হাজারটা সুন্দরী মেয়ে,ওই নোংরা মদ্যের নেশা ভুলিয়ে দিয়েছে তোমার ওই মায়াবী মুখ খনিকে,আজ যেনো সব নেশা আমি তোমাতে ভুলে গেলাম,যখন তুমি ভয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলে তখন আমার ভিতর না জানি কি শান্তি বিরাজ করতে শুরু করেছিলো,যে শান্তির খোঁজে আমি না জানি কতো বছর ধরে ছিলাম,এই কয়েকঘন্টা তোমার পাশে থেকে আমি যেনো পুরো পৃথিবীর মায়া ভুলে গেছিলাম,জানি না কি জাদু আছে তোমার মাঝে কিন্তু এটা ঠিক, খনিকেই আমি তোমার ভালোবাসায় তলিয়ে গেছি মায়াবতী,জানি না প্রথম দেখায় ভালোবাসা হয় কি না তবে এটা জানি তোমাকে আমার চাই তাও জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত এট এনি কষ্ট,তুমি শুধুই আমার।
মুখ ফুলিয়ে শুয়ে আছি বিছানায়,চোখ বেয়ে জল গড়াচ্ছে,গড়াবে না কি করে এতো গালি যে এক জনমে খাই নি,বাসায় এসেই আপুর ভয়ে গড়গড়িয়ে সব বলেছি তারপর আপি যা তা বলেছে,বাড়ি থেকে তো ট্রেনের টিকিট অব্দি কাটা হয়ে গেছিলো শুধু ওরা বাড়ি থেকে বেরুনোর আগেই আমি চলে এলাম,তাও মা ফোনে আমার চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে বললো কালকেই আমায় নিতে আসছে,জেবিন আপিও মায়ের কথায় সায় দিচ্ছে এবার,তারপর অনেক কান্নাকাটি ইমোশনাল ব্লেকমেইল করে ওদের আমায় আরেকটা চান্স দেওয়ার জন্য মানালাম,যাক সবাই মুখটুক অনেক বাকা করার পর মেনেই গেলো,কিন্তু কারো গালি এখনও থামে নি,জেবিন আপু নামের এফএম রেডিও যে চালু হইছে বন্ধ হবার নামই নেই,গালি শুনতে শুনতে ঘুমের রাজ্যে তলালাম।
খুব ভোরে শিশির একটা কামিজ হাতে নিয়ে ওটা নাকের সাথে মিশিয়ে ওটার ঘ্রাণ নিচ্ছে,
উফ মায়াপরী কেনো তোমার ঘ্রাণটা এতো নেশাময়,এটা যে পাগল করে দিচ্ছে আমায়,
আসলে ওগুলা আরোহীর কালকের কাপড়গুলো,যা শিশিরের কাছে রয়ে গেছে।শিশির ওগুলোর ঘ্রাণ নিতে ব্যস্ত তৎক্ষনাৎ ওর ফোন বেজে উঠলো,ফোন বাজায় খনিক বিরক্ত হলো কারন এই ফোনটা ওর আর ওর মায়াবতীর অনুভুতির মাঝে এসেছে,কিন্তু ফোনের নাম্বারটা দেখে ওর বিরক্তির ঘাতটি হলো,ফোন রিসিভ করে খনিক এটিটিউডে বললো।
কাজ হয়েছে।
জ্যি স্যার।
হুম,এবার বলো
তারপর লোকটা আরোহীর সব পরিচয় বরবর করে বললো,
গুড জব,তুমি তোমার কাজের পুরষ্কার পেয়ে যাবে,কথাটা বলে ফোনটা কেটে দিলো শিশির, ঠোঁটের কোনে ডেবিল স্মাইল এনে বললো।
আরোহী নুর,নাহ কেমন জানি ফিকে লাগছে,ও তো আমার কাছে অমূল্য, ওর কোনো তুলনা নেই,আর তাই ওর নামটাও আলাদা হবে,ও আরোহী নুর না,ও হবে কহিনুর,#শিশিরের কহিনুর।
সকালে দরজার সামনের সোফায় বসে পা দুলিয়ে দুলিয়ে আপেলের স্বাদ গ্রহণ করছিলাম তখনি দরজার বেল বেজে উঠলো আমি এগিয়ে গিয়ে দরজা খুললাম,কিন্তু আশেপাশে তাকিয়ে কাউকেই পেলাম না,এ কি ভুত টুত আছে না কি এ বাসায়,মনে ভয় ঢুকলো খনিক,সুরা ইখলাস পড়ে ফু দিলাম বুকে তৎক্ষনাৎ দরজা লাগিয়ে নিবো তখনি চোখ পড়লো নিচে থাকা একটা নীল রঙের রেপিং করা গিফ্ট বক্স আর অজস্র লালগোলাপের একটা বুকের উপর।আমার লালগোলাপ আর নীল রং উভয়ই অনেক পছন্দের তাই মুখে এক ফালি হাসি টানিয়ে ওগুলো নিয়ে ভিতরে চলে আসলাম।
চলবে…..