#হৃদয়ের_শুভ্রতা??
(পর্ব-৫)
#ফাবিহা_নওশীন
??
“মাম্মা তুমি কি বলছো?আমি ওর সাথে কিভাবে কথা বলবো?ও যেভাবে বোম হয়ে ঘুরে বেড়ায়,কখন ঠাস করে ফেটে যায়।”
হৃদের মাম্মা মুচকি হেসে ভ্রু কুচকে বললো,
—-বাই এনি চান্স তুই কি শুভ্রাকে ভয় পাচ্ছিস?
হৃদ আমতা আমতা করে বললো,
—-ভয়!! আমি ওকে কেন ভয় পাবো?এই ছোবড়াকে আমি ছোটবেলায় কত মেরেছি।আর আমি নাকি ওকে ভয় পাবো কি যে বলো।
হৃদের মাম্মা শব্দ করে হেসে দিলো।
—-বাব্বাহ ছেলে আমার বিয়ের আগেই বউকে ভয় পেতে শুরু করেছে।
হৃদ গাল ফুলিয়ে বললো,
—-জ্বি না।হুহ।দেখোনা ও কেমন আমাকে অপমান করার তালে থাকো।তাই আর কি।
আমি এখন যাই।
হৃদ চলে যেয়েই হৃদের মাম্মা আবার হাসতে শুরু করলো।
হৃদ যাচ্ছে আর মনে মনে বলছে,
এ কি আর সেই প্যানপ্যানানি শুভ্রা আছে।যেই ঝাঝ কথায় বাবারে।আমাকে কি আর আগের মতো ভয় পাবে?উহু,,একদম না।কিছু বললে খেয়ে ফেলবে।
শুভ্রার মাথায় একি কথা ঘুরছে।বিয়ে!
শুভ্রা রুম জোরে পাইচারি করছে।
—-ও মাই আল্লাহ কি যন্ত্রণায় ফেলেছো?এখন আমি কি করি?পথ দেখাও।ওই ব্যাটা এত শান্ত আছে কি করে?সকালে নাস্তার টেবিলে দাদার কথা তো শুনেছে।তাহলে?
ওকে তো আমি…
শুভ্রা মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো,
—-কি করা যায়।হ্যা পেয়েছি।
ওকে আমি হ্যাংগারে ঝুলিয়ে পিটাবো।
ওহহ কাম অন শুভ্রা মে তেরা কেয়া কারো?
তুই ভাব বিয়ে কি করে আটকাবি।
শুভ্রা রাগে ফুসফুস করতে করতে হৃদের রুমে গেলো।হৃদ ল্যাপটপে কিছু একটা করছে।এতটাই মনোযোগ যে শুভ্রার দিকে খেয়াল নেই।শুভ্রার রাগে গা জ্বলছে।ও দাড়িয়ে আছে অথচ তার খেয়াল ই নেই।
এখন শুভ্রা কি করবে?কি বলবে?শুভ্রা টেবিলের উপর থেকে একটা গ্লাস এনে ঠাস করে ফেলে দিলো।
হৃদ চমকে গিয়ে ফ্লোরে তাকালো।শুভ্রাকে দেখে অবাক।ফ্লোরের গ্লাস পড়ে থাকতে দেখে মনে মনে বললো,
—-বিস্ফোরণ তাহলে ওখানে হয়েছে।ভাগ্যিস আমার মাথার উপর ফেলেনি।
শুভ্রা সাপের মতো ফুসছে যেনো এখুনি কামড়ে দেবে।হৃদ বিছানা থেকে নেমে দাড়াতেই শুভ্রা বললো,
—-এই বিয়ে আমি করছিনা।বাড়ির কাউকে আমি কিছু বলতে পারছিনা।তাই আপনি বলবেন।
হৃদ চোখমুখ শক্ত করে শুভ্রার দিকে এগুচ্ছে।শুভ্রা হৃদের এমন রুপ দেখে ভয় পেয়ে গেলো।তারপর পিছাতে লাগলো।হটাৎ হৃদ থেমে গেলো।শুভ্রা হৃদের বরাবর থেকে অন্য দিকে সরে দাড়ালো।তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে
হৃদের উত্তরের অপেক্ষা করছে।হৃদ অন্যদিকে ঘুরে হালকা হেসে বললো,
—-কেন বিয়ে করতে পারবেনা?
শুভ্রা এই প্রথম হৃদের কন্ঠস্বর শুনলো।হৃদের কন্ঠস্বর শুনে শুভ্রার মনে শীতল শিহরণ বয়ে গেলো।আর হৃদের মুখে তুমি শুনে অবাকের চূড়ায়।
কেয়া বাত হে শুভ্রা মি.হার্টলেস তুমি করে বলছে।বাহ!
আর বলবেই বা না কেন?আমি যে তাকে আপনি করে সম্মান দিচ্ছি তা কম কিসে।
—-আ’ম আস্কিং ইউ সামথিং।
শুভ্রা ভাবনা থেকে বের হয়ে এসে বললো,
—-আশ্চর্য,,আমার ইচ্ছে আমি বিয়ে করবোনা।কাউকে কৈফিয়ত কেন দিবো।
হৃদ শুভ্রার দিকে ঘুরে বললো,
—-আমার কি দায় পড়েছে।আমি কেন বলবো?বিয়ে না করার রিজন না বললে আমি কাউকে কিছু বলতে পারবোনা।
শুভ্রা ভ্রু কুচকে বললো,
—-ওকে ফাইন।
তো বিয়ে করার কি রিজন?বিয়ে করার কোনো রিজন নেই তাই বিয়ে করবোনা।
হৃদ পাল্টা প্রশ্ন করলো,
—-বিয়ে না করার একটা রিজন দেখাও।বিয়ে করার হাজার রিজন আমি দেখাচ্ছি।
হৃদের কথা শুনে শুভ্রার রাগে গা জ্বলছে।শুভ্রা দাতে দাত চেপে বললো,
—-কারণ আপনাকে আমার পছন্দ না।আপনি একটা অসহ্যকর মানুষ।দেখলেই রাগ উঠে যায়।
হৃদ গাল চুলকে মৃদুস্বরে হেসে বললো,
—-আমার কথা আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে?নতুন কিছু বলো।
শুভ্রা হৃদের কথা শুনে বোকা হয়ে গেলো।
এভাবে ইনসাল্ট করলো।
—–দেখুন আপনার আমাকে পছন্দ না আমার আপনাকে পছন্দ না।একটা বিয়ে না হওয়ার জন্য এর চেয়ে বড় রিজন আর হতে পারেনা।
হৃদ শুভ্রার কিছুটা কাছে এসে বললো,
—-কে বললো আমার তোমাকে পছন্দ না।৷
শুভ্রা মনে মনে বলছে,আরে বাস,,এখন হটাৎ এতো পছন্দ হয়ে গেলো।আমাকে তো দুই চোক্ষে কখনো দেখতে পারেনি।আমি বলদ,বিরক্তিকর।আর আবার অন্য কথা।
শুভ্রা কিছুটা দূরে সরে চিতকার করে বললো,
—-আপনি একটা দুমুখো সাপ।এই যে আপনি,আমি এই পুরো মানুষটাকে ঘৃণা করি।আপনার পুরো ক্যারেক্টারকে ঘৃণা করি।আপনার ক্যারেক্টার জঘন্য।
শুভ্রার মুখে ওর ক্যারেক্টার নিয়ে কথা বলায় হৃদের প্রচন্ড রাগ হলো।হৃদ শুভ্রার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো,
—-মাই ক্যারেক্টার?
আমি কি করেছি তোর সাথে?কি এমন করেছি যার জন্য আমার ক্যারেক্টার খারাপ?কোনো দিন তোকে বাজেভাবে ছুয়েছি?তোর হাত ধরেছি?তোর গায়ে হাত দিয়েছি?তুই দিনরাত আমার রুমে পড়ে থাকতি আমি কি কিছু করেছি তোর সাথে?তুই এতটাই অবুঝ ছিলি,আমার উপর এতটাই নির্ভর ছিলি আমি চাইলেই তোর সাথে অনেক কিছু করতে পারতাম।তুই আমাকে বাধা দিতিনা।কিন্তু আমি তোর কোনো সুযোগ নেইনি।বল নিয়েছি?
শুভ্রা চুপ করে আছে।কেননা প্রতিটি কথা সত্য।ছোটবেলায় অনেক অবুঝ ছিলো।অনেক পাগলামি করেছে।
হৃদ চেচিয়ে বললো,স্পিক আপ।
শুভ্রা হৃদের দিকে চেয়ে বললো,
না।
—-তাহলে আমার ক্যারেক্টার খারাপ কেন?আমি তোর বিএফ হয়নি তাই না সেদিন কিস করিনি তাই?বল কেন?
শুভ্রার লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে।
—–দেখুন আমি ছোট ছিলাম না বুঝে ভুল করেছি।
—-আমি খুব বড় ছিলাম না শুভ্রা।মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় আগে বড় হয়,ওদের বুঝ আগে হয় ছেলেদের তুলনায়।কিন্তু আমি তোর মতো আবেগে ভেসে যাইনি।তোকে আস্কারাও দেইনি।আমি তোর থেকে সবসময় নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছি।আমি চাইনি তোর পাগলামির জন্য,বোকামির জন্য আমি কোনো ভুল করে ফেলি।তোর কোনো ক্ষতি হোক।আমার এই চাওয়ায় কোনো পাপ ছিলো না।আমি কখনোই তোর খারাপ চাইনি।সবসময় আগলে রেখেছি।আমি একটা ছেলে।যে বয়সে তুই পাগলামি করেছিস সে বয়সে ছেলেমেয়েরা অনেক আবেগপ্রবণ থাকে।আমিও ছিলাম।আমার মনও আমাকে বারবার ভুল পথে নিয়ে যেতে চাইতো।কিন্তু আমি নিজেকে সামলে নিয়েছি বারবার।কিন্তু কতবার নিজেকে সামলে নেওয়া যায় বলতো?তাই তোকে সবসময় দূরে থাকতে বলতাম।আমি তোর আশেপাশে কখনো যেতাম না।
আমি চেয়েছি শুভ্রাকে যেনো কোনো পাপ,কলংক না ছুতে পারে।এটাই কি আমার ভুল ছিলো?
শুভ্রা কি বলবে বুঝতে পারছেনা।হৃদেএ কথায় যুক্তি আছে তবুও একটা কিন্তু থেকে যায়।
শুভ্রা না গলে ঝাঝালো কন্ঠে বললো,
—-আচ্ছা তাই নাকি।এ নায় হয় আবেগে ভেসে যাওয়ার বয়সের কথা বলছেন কিন্তু ছোট বেলায়?
হৃদ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—-তুই কি এখনো অবুঝ?
আমি যখন ছোট ছিলাম কাকাই আমাকে কোনো মেয়ের সাথে মিশতে দিতোনা খেলতে দিতোনা।স্কুলেও কোনো মেয়ে আমার সাথে খেলতোনা।আমি তখন ছোট ছিলাম এতকিছুর মানে বুঝতাম না।ছেলে-মেয়ের পার্থক্য কি জানতাম না শুধু বুঝতাম খেলা।কিন্তু ওরা আমাকে খেলতে নিতো না কিংবা কাকাই আমাকে খেলতে দিতোনা তাই কাকাইয়ের উপর রাগ হতো কিন্তু কিছুই বলতে পারতাম না।তাই যখন তোর সাথে কাকাই খেলতে বলতো রাগের কারণে তোর সাথে আমার খেলতে ইচ্ছে করতো না।
তাই বকাবকি করতাম যেনো তুই না খেলিস।কিন্তু কখনো অবহেলা করিনি।কেননা কাকাইয়ের মেয়ে ছিলি তুই।
তারপর হৃদ আবার কন্ঠ শক্ত করে বললো,
—–কিন্তু যখন আরেকটু বড় হলাম,যখন ছেলে মেয়ের তফাত বুঝতে পারলাম তখন থেকে আমি আর অন্য মেয়েদের সাথে মেশার জন্য পাগল হইনি।কারো সাথে ইচ্ছে করেই মিশিনি।তোর সাথেই মিশেছি।কিন্তু তুই যতই বড় হতে শুরু করলি ডেস্পারেট হয়ে যাচ্ছিলি।উদ্ভব কাজকর্ম,আবদার আমার সামনে খোলে বসতি।আমি তোর এই আবদার গুলোকে ভয় পেতে শুরু করলাম।তাই তোর থেকে দূরে থাকতে চাইতাম।।
তারপর তো পড়াশোনা সব ছেড়ে আমার রুমেই পড়ে থাকতি।তোমার পড়াশোনা লাগবেনা,ক্যারিয়ার লাগবেনা কিন্তু আজ সব হয়েছে।আজ তোমার এগুলোই লাগবে আমাকে আর লাগবেনা।কি অদ্ভুত?
শেষের কথাগুলো বলার সময় শুভ্রার দিকে তাকায়নি।শুভ্রা খেয়াল করলো ওর গলা কাপছে।
হৃদ মুচকি হেসে বললো,
—-তোমাকে আর কেউ বিয়ের কথা বলবেনা।আই প্রমিস।
হৃদ রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।দরজার সামনে গিয়ে দাড়ালো তারপর পিছনে ঘুরে বললো,
—-প্রকাশ না করেও ভালোবাসা যায়।সারাক্ষণ ভালোবাসি ভালোবাসি বললেই ভালোবাসা হয়না।গোপনে যতনে ভালবাসা যায়।যা লোভ দেখানো না,হৃদয়ের মাঝে গুপ্ত থাকে।নিস্পাপ,পবিত্র।
হৃদ আর দাড়ালো না।শুভ্রার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।এই হৃদকে যেনো চিনতে পারছেনা।
ওর কানে একটা কথাই বাজছে প্রকাশ না করেও ভালোবাসা যায়।
হৃদ মাম্মা পাপার রুমের দরজা নক করছে।
ফুল দরজা খোলে দিলো।রোদ ল্যাপটপে কিছু একটা করছে।হৃদ দরজার সামনে দাড়িয়ে মাম্মাপাপাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—-শুভ্রাকে কেউ আর বিয়ের কথা বলবেনা।এই বাড়ির কেউ যেনো না বলে।
হৃদ কথাটা বলে এক মুহুর্ত দাড়ালো না।
ফুল রুম থেকে বের হতে চাইকেই রোদ আটকে দিলো।ফুল বিচলিত কন্ঠে বললো,
—-হৃদ কি বলে গেলো শুনলেনা।ওর সাথে কথা বলতে হবে।জানতে হবে কি হয়েছে।
রোদ বললো,
—-হ্যা বলবে।আগে রিলেক্স।দেখিস নি ওর চোখমুখ লাল হয়ে আছে।শরীর কাপছে রাগে।
কিছু একটা হয়েছে তাই ওকে একটু সময় দে নিজেকে সামলে নেওয়ার জন্য।
.
.
হৃদ শুয়ে আছে।ফুল গিয়ে ওর পাশে বসতেই হৃদ মায়ের কোলে মাথা তুলে দিলো।ফুল ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
—-কি হয়েছে আমার বাবাটার।
হৃদ অভিমানী কন্ঠে বললো,
—–শুভ্রা আমাকে বিয়ে করবেনা।আমাকে ওর পছন্দ না।ও না চাইলে আমি জোর করবোনা।ও যদি কোনোদিন চায় তবেই বিয়ে করবো নয়তো নয়।আর প্লিজ এ নিয়ে আমি কারো কোনো কথা শুনতে চাইনা।
—–আচ্ছা।কেউ কিছু বলবেনা।তোদের ব্যাপার তোরা মিটিয়ে নে।কিন্তু একটা কথা শুভ্রাও তোকে ভালোবাসে কিন্তু অভিমান করে আছে।একটু বুঝিস ব্যাপারটা।
—–আমি চলে যাবো।
—-কোথায় যাবি?
—-লন্ডন।আমার এখানে দম বন্ধ হয়ে আসছে।
??
শুভ্রা হৃদের সাথে কিছু হয়েছে?ও এমন কেন করছে?
ফুল শুভ্রার বেডে বসতে বসতে বললো।
শুভ্রা আমতা আমতা করে বলল,
—–হ্যা মানে আমাদের কথা হয়েছে।
—-তা কি কথা হয়েছে আমি জানতে পারি?হৃদ তো খোলে কিছুই বলছেনা।
শুভ্রা চুপ করে আছে।
ফুল শুভ্রাকে চুপ দেখে বললো,
—–শুভ্রা চুপ থাকিস না।হৃদ লন্ডন ফেরত যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শুভ্রার বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো হৃদের চলে যাওয়ার কথা শুনে।
শুভ্রা কাচুমাচু হয়ে বললো,
—–আসলে মামনি আমি বলেছি তোমার ক্যারেক্টার জঘন্য।আমি আসলে,,
ফুল অবাক হয়ে বললো,
—–শুভ্রা!! হৃদের ক্যারেক্টার খারাপ?তুই বুঝতে পারছিস তুই কি বলছিস?ও কি করেছে তোর সাথে?
—–মামনি তুমি ভুল ভাবছো।আমি তা মিন করিনি।আমি মিন করেছি এটাই যে হৃদ ভাইয়া মানে(শুভ্রার মুখে অনেক দিন পর হৃদ ভাইয়া কথাটা উচ্চারিত হলো তাই অস্বস্তিতে পড়ছে)তোমার ছেলে যে আমাকে দুচোখে দেখতে পারতো না সে হটাৎ বলে আমাকে তার পছন্দ আমাকে বিয়ে করতে চায়।তাই আমি বলেছি,,
ফুল শুভ্রার আরেকটু কাছে এসে বললো,
—–শুভ্রা তুই কিছুই জানিস না।হৃদ বরাবরই তোকে পছন্দ করতো,এখনো করে।তোরটা প্রকাশিত ছিলো আর ওরটা অপ্রকাশিত।শুভ্রা আমি জানি আজও তুই হৃদকেই ভালোবাসিস।
শুভ্রা নিজেকে আর সামলাতে পারেনি কেদে দিয়ে বললো,
—–তোমরা কেউ আমার দিকটা দেখছোনা।কেন দেখছোনা?তুমি তো আমাকে রোজের মতোই ভালোবাসো তবে কেন বুঝতে চাইছোনা?আমার মাম্মা,পাপা কেউ বুঝতে চাইছেনা।
—–শুভ্রা তোকে আমি হৃদ আর রোজের মতোই ভালোবাসি।আমি সবসময় ভেবে এসেছি আমার তিন সন্তান।হৃদ হওয়ার পর রাহাত চাইতো ওর মেয়ে হোক,আমার ছেলের সাথে বিয়ে দেবে।আমি এসব কখনো সিরিয়াসলি নেইনি।এসব তুই জানিস,হাজারবার শুনেছিস।তারপর তুই যখন শাওরিনের কোল জুড়ে এসেছিস,আমার তখন মনে হয়েছিলো এই মিষ্টি মেয়েটাই আমার হৃদের বউ হবে।তবে আমি কিংবা আমরা তোদের উপর কোনো সম্পর্ক চাপিয়ে দিতে চাইনি।তোর আচার আচরণ বলে দিতো তুই হৃদকে ছাড়া থাকতে পারবিনা।তোর ছোট্ট মন হৃদকে ভালোবাসে।আর হৃদ আমার ছেলে।ও আমার কাছে আয়নার মতো।ও ওর বাবাকে আইডল মানলেও বাবার মতো খোলামেলা মনের হয়নি।তোর বাবাইকে তো জানিস,,মনের কথা মনে আসার আগেই মুখে এসে পড়ে।কিন্তু আমি খুব চাপা স্বভাবের ছিলাম এখনও আছি তবে দায়িত্ব,সংসার এসব আমায় পরিবর্তন করে দিয়েছে।হৃদ আমার মতো চাপা স্বভাবের।ও সবকিছু প্রকাশ করতে পারেনা।মনের ইচ্ছে মনেই পুষে রাখে।আমি মা তাই বুঝতে পেরেছি।এখন তুই বল।তোর মনের কথাগুলো আমাকে বল হৃদের মা হিসেবে না তোর মামনি হিসেবে।
শুভ্রা আস্বস্ত হয়ে বললো,
—–আজকে আমি অন্য হৃদকে আবিষ্কার করেছি।ছোটবেলায় যাকে দেখেছি সে নয়।আজ আমায় অনেক কথা বলেছে তাতে মনে হচ্ছে কোথাও না কোথাও আমাকে,,
—-তোকে কি?
শুভ্রা মাথা নিচু করে নিচুস্বরে বললো,
—–ভালোবাসতো।আমার সামনে যেমন দেখাতো তেমন নয়।দুটো ক্যারেক্টার প্লে করতো।কিন্তু তবুও আমার সাথে অন্যায় হয়েছে এটা আমি কি করে ভুলবো।
ফুল দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—-তোর আর দোষ কি?আমরা তোকে যা বুঝিয়েছে,যা দেখিয়েছি তুই তাই দেখেছিস,তাই বুঝেছিস।তুই দিন দিন অন্যরকম হয়ে যাচ্ছিলি।আর এসবের জন্য হৃদ নিজেকেই দায়ী ভাবতো।তুই নিজের অজান্তেই বখে যাচ্ছিলি।তবে সবটা হৃদকে ঘিরে।তাই হৃদ অপরাধবোধ অনুভব করতো।তোর নিজের বলে কিছু ছিলো না।নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে হৃদের মাঝে বিলীন হয়ে যাচ্ছিলি।তোর সবটা ঘিরে হৃদ ছিলো।তারপর পড়াশোনা একদম করতি না।সামনে এইচএসসি পরীক্ষা দিবি কিন্তু মেধাবী ছাত্রী হয়েও ফার্স্ট টার্মে ৪০-৫০এর বেশি পাসনি।এটা দেখে বাড়ির সবাই দেখে আপসেট।বিশেষ করে রাহাত।তুই একমাত্র মেয়ে ওর।তোকে নিয়ে ওর অনেক আশা ভরসা ছিলো।তখন হৃদ চুপ করে ছিলো।কিছু বলেনি।
পরে আমার রুমে গিয়ে বলেছিলো,ও চলে যাবে।
আমরা কেউ মানছিলাম না।কিন্তু ও নাছোড়বান্দা।আমাকে বারবার বলেছিলো,আমার শুভ্রার ভালোর জন্য আমাকে যেতে হবে বাধা দিওনা।
শুভ্রা ও তোর জন্য ওর পরিবার ছেড়েছে।ওর মা-বাবা ছেড়েছে তোর জন্য।এটুকু মাথায় রাখিস।আমরাও আমাদের ছেলেকে দূরে পাঠিয়েছি তোর জন্য।এটুকুর মূল্য দিস শুভ্রা।ও যাওয়ার সময় তোর সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে।সব ইচ্ছে করে করেছে।আপন মানুষের সাথে অভিনয় করা অনেক কষ্টকর।সেটা ও করেছে।তোকে ওইদিন হার্ট না করলে আজ তুই এতো স্ট্রং হতে পারতিনা।তুই তো রুমেই ছিলি।ও রুম থেকে কাদতে কাদতে বেরিয়েছে।কারো সাথে কথা বলে নি।দুহাত দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে গাড়িতে উঠে চুপ করে বসে ছিলো।
এয়ারপোর্ট গিয়ে সবার আড়ালে আমাকে জড়িয়ে হাওমাও করে কেদেছে আর বলেছে,
—-মাম্মা আমার শুভ্রা অনেক কষ্ট পেয়েছে আজ।আমি এর আগে ওকে অনেক বকেছি,মেরেছি কিন্তু এমন চুপ হয়ে যায়নি।আজ ও চুপ হয়ে গেছে।ওকে তুমি দেখো।আমি তোমার উপর ওর দায়িত্ব দিয়ে গেলাম।
আমি ওকে কখনো এভাবে কাদতে দেখিনি।আমি তোকে সবসময় চোখে চোখে রেখেছি।তোর দায়িত্ব নিয়েছি।তখন তুই পড়াশোনা আর ড্রান্সের দিকে ফোকাস করলি।তারপর একের পর এক টপ রেজাল্ট করেছিস।ড্রান্সে ভালো করেছিস।হৃদ আমার কাছ থেকে তোর সব খোজ নিয়েছে।তোর সাথে কথা বলতে চাইলে তুই বলতিনা।
শুভ্রা কাদতে কাদতে বললো,
—-তোমরা সবাই সব জানতে?
ফুল অপরাধীর মতো বললো,হুম সবাই।
—–মামনি আমাকে একটু একা থাকতে দেও।
ফুল ওর মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলো।
ফুল যেতেই শুভ্রা বললো,তোমরা সবাই এই অন্যায়ের ভাগীদার।আমার লাইফের ৭টা বছর হারিয়ে গেছে।হৃদ তুমি অনেক বড় অভিনেতা।তুমি আমাকে ভালোবাসো,আমার ভালোর জন্য সব করেছো।নিজে কষ্ট পেয়েছো কিন্তু আমাকে কিছুই বুঝতে দেওনি।তবুও এটা সত্য যে,আমার অবুঝ মনের ভালোবাসাকে অবহেলা করেছো।
ফুল,রোদের বুকে মুখ গুজে চুপ করে রইলো।
রোদ ফুলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
—-কি হয়েছে আমার ফুলকলির?
—-শুভ্রা আর হৃদের কথা ভাবছি।তোমার ছেলে তো চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রোদ মুচকি হেসে বললো,
—-ও যাবেনা।
ফুল মাথা তুলে বললো,
—–তোমাকে কে বললো?
—-আমি আমার লাইফ এক্সপেরিয়েন্স থেকে বলছি।হৃদ যাবেনা।যেতেই পারেনা।শুভ্রার উপর অভিমান করে বলেছে কিন্তু যাবেনা শিওর।
—-এত শিওর কিভাবে?
—-তুই কি বোকাই থেকে যাবি?
—-এই খবরদার আমাকে বোকা বলবেনা।
এখন বলো কিভাবে বুঝলে?
—-ওই যে আমিও চলে যেতে চেয়েছিলাম কানাডা মনে আছে।
—-থাকবেনা কেন?
—–আমি কি যেতাম নাকি,এমনি তোকে দেখানোর জন্য বলেছিলাম।দেখছিলাম তুই কি বলিস।
ফুল ভ্রু কুচকে চোখ ছোট ছোট করে রোদের দিকে চেয়ে বললো,
—–এতবড় ড্রামা?
তুমিও তো দেখছি হৃদের চেয়ে কম না।
—–তুই কম কিসে?তুই তো আমার চেয়ে বড় ড্রামা করেছিলি।আমি তোমাকে ভালোবাসি না।হুহ।
ফুল বললো,সেটা তো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলো।
—-সবই পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
হৃদ আর শুভ্রাকে নিয়ে ভাবতে হবেনা।ওরা একে অপরকে ভালোবাসে সো ওরা এক হবে।এতো সহজে সব পেয়ে গেলে প্রেমের কোনো মজা নেই।একটু বিরহ না হলে জমেনা।
—–আরে বাবা,প্রেমের মাস্টার।প্রেমের উপর সব ডিগ্রি উনিই নিয়েছে।
রোদ ফুলকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে বললো,
—-আবার জিগায়।
চলবে…#হৃদয়ের_শুভ্রতা??
(পর্ব-৫)
#ফাবিহা_নওশীন
??
“মাম্মা তুমি কি বলছো?আমি ওর সাথে কিভাবে কথা বলবো?ও যেভাবে বোম হয়ে ঘুরে বেড়ায়,কখন ঠাস করে ফেটে যায়।”
হৃদের মাম্মা মুচকি হেসে ভ্রু কুচকে বললো,
—-বাই এনি চান্স তুই কি শুভ্রাকে ভয় পাচ্ছিস?
হৃদ আমতা আমতা করে বললো,
—-ভয়!! আমি ওকে কেন ভয় পাবো?এই ছোবড়াকে আমি ছোটবেলায় কত মেরেছি।আর আমি নাকি ওকে ভয় পাবো কি যে বলো।
হৃদের মাম্মা শব্দ করে হেসে দিলো।
—-বাব্বাহ ছেলে আমার বিয়ের আগেই বউকে ভয় পেতে শুরু করেছে।
হৃদ গাল ফুলিয়ে বললো,
—-জ্বি না।হুহ।দেখোনা ও কেমন আমাকে অপমান করার তালে থাকো।তাই আর কি।
আমি এখন যাই।
হৃদ চলে যেয়েই হৃদের মাম্মা আবার হাসতে শুরু করলো।
হৃদ যাচ্ছে আর মনে মনে বলছে,
এ কি আর সেই প্যানপ্যানানি শুভ্রা আছে।যেই ঝাঝ কথায় বাবারে।আমাকে কি আর আগের মতো ভয় পাবে?উহু,,একদম না।কিছু বললে খেয়ে ফেলবে।
শুভ্রার মাথায় একি কথা ঘুরছে।বিয়ে!
শুভ্রা রুম জোরে পাইচারি করছে।
—-ও মাই আল্লাহ কি যন্ত্রণায় ফেলেছো?এখন আমি কি করি?পথ দেখাও।ওই ব্যাটা এত শান্ত আছে কি করে?সকালে নাস্তার টেবিলে দাদার কথা তো শুনেছে।তাহলে?
ওকে তো আমি…
শুভ্রা মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো,
—-কি করা যায়।হ্যা পেয়েছি।
ওকে আমি হ্যাংগারে ঝুলিয়ে পিটাবো।
ওহহ কাম অন শুভ্রা মে তেরা কেয়া কারো?
তুই ভাব বিয়ে কি করে আটকাবি।
শুভ্রা রাগে ফুসফুস করতে করতে হৃদের রুমে গেলো।হৃদ ল্যাপটপে কিছু একটা করছে।এতটাই মনোযোগ যে শুভ্রার দিকে খেয়াল নেই।শুভ্রার রাগে গা জ্বলছে।ও দাড়িয়ে আছে অথচ তার খেয়াল ই নেই।
এখন শুভ্রা কি করবে?কি বলবে?শুভ্রা টেবিলের উপর থেকে একটা গ্লাস এনে ঠাস করে ফেলে দিলো।
হৃদ চমকে গিয়ে ফ্লোরে তাকালো।শুভ্রাকে দেখে অবাক।ফ্লোরের গ্লাস পড়ে থাকতে দেখে মনে মনে বললো,
—-বিস্ফোরণ তাহলে ওখানে হয়েছে।ভাগ্যিস আমার মাথার উপর ফেলেনি।
শুভ্রা সাপের মতো ফুসছে যেনো এখুনি কামড়ে দেবে।হৃদ বিছানা থেকে নেমে দাড়াতেই শুভ্রা বললো,
—-এই বিয়ে আমি করছিনা।বাড়ির কাউকে আমি কিছু বলতে পারছিনা।তাই আপনি বলবেন।
হৃদ চোখমুখ শক্ত করে শুভ্রার দিকে এগুচ্ছে।শুভ্রা হৃদের এমন রুপ দেখে ভয় পেয়ে গেলো।তারপর পিছাতে লাগলো।হটাৎ হৃদ থেমে গেলো।শুভ্রা হৃদের বরাবর থেকে অন্য দিকে সরে দাড়ালো।তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে
হৃদের উত্তরের অপেক্ষা করছে।হৃদ অন্যদিকে ঘুরে হালকা হেসে বললো,
—-কেন বিয়ে করতে পারবেনা?
শুভ্রা এই প্রথম হৃদের কন্ঠস্বর শুনলো।হৃদের কন্ঠস্বর শুনে শুভ্রার মনে শীতল শিহরণ বয়ে গেলো।আর হৃদের মুখে তুমি শুনে অবাকের চূড়ায়।
কেয়া বাত হে শুভ্রা মি.হার্টলেস তুমি করে বলছে।বাহ!
আর বলবেই বা না কেন?আমি যে তাকে আপনি করে সম্মান দিচ্ছি তা কম কিসে।
—-আ’ম আস্কিং ইউ সামথিং।
শুভ্রা ভাবনা থেকে বের হয়ে এসে বললো,
—-আশ্চর্য,,আমার ইচ্ছে আমি বিয়ে করবোনা।কাউকে কৈফিয়ত কেন দিবো।
হৃদ শুভ্রার দিকে ঘুরে বললো,
—-আমার কি দায় পড়েছে।আমি কেন বলবো?বিয়ে না করার রিজন না বললে আমি কাউকে কিছু বলতে পারবোনা।
শুভ্রা ভ্রু কুচকে বললো,
—-ওকে ফাইন।
তো বিয়ে করার কি রিজন?বিয়ে করার কোনো রিজন নেই তাই বিয়ে করবোনা।
হৃদ পাল্টা প্রশ্ন করলো,
—-বিয়ে না করার একটা রিজন দেখাও।বিয়ে করার হাজার রিজন আমি দেখাচ্ছি।
হৃদের কথা শুনে শুভ্রার রাগে গা জ্বলছে।শুভ্রা দাতে দাত চেপে বললো,
—-কারণ আপনাকে আমার পছন্দ না।আপনি একটা অসহ্যকর মানুষ।দেখলেই রাগ উঠে যায়।
হৃদ গাল চুলকে মৃদুস্বরে হেসে বললো,
—-আমার কথা আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে?নতুন কিছু বলো।
শুভ্রা হৃদের কথা শুনে বোকা হয়ে গেলো।
এভাবে ইনসাল্ট করলো।
—–দেখুন আপনার আমাকে পছন্দ না আমার আপনাকে পছন্দ না।একটা বিয়ে না হওয়ার জন্য এর চেয়ে বড় রিজন আর হতে পারেনা।
হৃদ শুভ্রার কিছুটা কাছে এসে বললো,
—-কে বললো আমার তোমাকে পছন্দ না।৷
শুভ্রা মনে মনে বলছে,আরে বাস,,এখন হটাৎ এতো পছন্দ হয়ে গেলো।আমাকে তো দুই চোক্ষে কখনো দেখতে পারেনি।আমি বলদ,বিরক্তিকর।আর আবার অন্য কথা।
শুভ্রা কিছুটা দূরে সরে চিতকার করে বললো,
—-আপনি একটা দুমুখো সাপ।এই যে আপনি,আমি এই পুরো মানুষটাকে ঘৃণা করি।আপনার পুরো ক্যারেক্টারকে ঘৃণা করি।আপনার ক্যারেক্টার জঘন্য।
শুভ্রার মুখে ওর ক্যারেক্টার নিয়ে কথা বলায় হৃদের প্রচন্ড রাগ হলো।হৃদ শুভ্রার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো,
—-মাই ক্যারেক্টার?
আমি কি করেছি তোর সাথে?কি এমন করেছি যার জন্য আমার ক্যারেক্টার খারাপ?কোনো দিন তোকে বাজেভাবে ছুয়েছি?তোর হাত ধরেছি?তোর গায়ে হাত দিয়েছি?তুই দিনরাত আমার রুমে পড়ে থাকতি আমি কি কিছু করেছি তোর সাথে?তুই এতটাই অবুঝ ছিলি,আমার উপর এতটাই নির্ভর ছিলি আমি চাইলেই তোর সাথে অনেক কিছু করতে পারতাম।তুই আমাকে বাধা দিতিনা।কিন্তু আমি তোর কোনো সুযোগ নেইনি।বল নিয়েছি?
শুভ্রা চুপ করে আছে।কেননা প্রতিটি কথা সত্য।ছোটবেলায় অনেক অবুঝ ছিলো।অনেক পাগলামি করেছে।
হৃদ চেচিয়ে বললো,স্পিক আপ।
শুভ্রা হৃদের দিকে চেয়ে বললো,
না।
—-তাহলে আমার ক্যারেক্টার খারাপ কেন?আমি তোর বিএফ হয়নি তাই না সেদিন কিস করিনি তাই?বল কেন?
শুভ্রার লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে।
—–দেখুন আমি ছোট ছিলাম না বুঝে ভুল করেছি।
—-আমি খুব বড় ছিলাম না শুভ্রা।মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় আগে বড় হয়,ওদের বুঝ আগে হয় ছেলেদের তুলনায়।কিন্তু আমি তোর মতো আবেগে ভেসে যাইনি।তোকে আস্কারাও দেইনি।আমি তোর থেকে সবসময় নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছি।আমি চাইনি তোর পাগলামির জন্য,বোকামির জন্য আমি কোনো ভুল করে ফেলি।তোর কোনো ক্ষতি হোক।আমার এই চাওয়ায় কোনো পাপ ছিলো না।আমি কখনোই তোর খারাপ চাইনি।সবসময় আগলে রেখেছি।আমি একটা ছেলে।যে বয়সে তুই পাগলামি করেছিস সে বয়সে ছেলেমেয়েরা অনেক আবেগপ্রবণ থাকে।আমিও ছিলাম।আমার মনও আমাকে বারবার ভুল পথে নিয়ে যেতে চাইতো।কিন্তু আমি নিজেকে সামলে নিয়েছি বারবার।কিন্তু কতবার নিজেকে সামলে নেওয়া যায় বলতো?তাই তোকে সবসময় দূরে থাকতে বলতাম।আমি তোর আশেপাশে কখনো যেতাম না।
আমি চেয়েছি শুভ্রাকে যেনো কোনো পাপ,কলংক না ছুতে পারে।এটাই কি আমার ভুল ছিলো?
শুভ্রা কি বলবে বুঝতে পারছেনা।হৃদেএ কথায় যুক্তি আছে তবুও একটা কিন্তু থেকে যায়।
শুভ্রা না গলে ঝাঝালো কন্ঠে বললো,
—-আচ্ছা তাই নাকি।এ নায় হয় আবেগে ভেসে যাওয়ার বয়সের কথা বলছেন কিন্তু ছোট বেলায়?
হৃদ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—-তুই কি এখনো অবুঝ?
আমি যখন ছোট ছিলাম কাকাই আমাকে কোনো মেয়ের সাথে মিশতে দিতোনা খেলতে দিতোনা।স্কুলেও কোনো মেয়ে আমার সাথে খেলতোনা।আমি তখন ছোট ছিলাম এতকিছুর মানে বুঝতাম না।ছেলে-মেয়ের পার্থক্য কি জানতাম না শুধু বুঝতাম খেলা।কিন্তু ওরা আমাকে খেলতে নিতো না কিংবা কাকাই আমাকে খেলতে দিতোনা তাই কাকাইয়ের উপর রাগ হতো কিন্তু কিছুই বলতে পারতাম না।তাই যখন তোর সাথে কাকাই খেলতে বলতো রাগের কারণে তোর সাথে আমার খেলতে ইচ্ছে করতো না।
তাই বকাবকি করতাম যেনো তুই না খেলিস।কিন্তু কখনো অবহেলা করিনি।কেননা কাকাইয়ের মেয়ে ছিলি তুই।
তারপর হৃদ আবার কন্ঠ শক্ত করে বললো,
—–কিন্তু যখন আরেকটু বড় হলাম,যখন ছেলে মেয়ের তফাত বুঝতে পারলাম তখন থেকে আমি আর অন্য মেয়েদের সাথে মেশার জন্য পাগল হইনি।কারো সাথে ইচ্ছে করেই মিশিনি।তোর সাথেই মিশেছি।কিন্তু তুই যতই বড় হতে শুরু করলি ডেস্পারেট হয়ে যাচ্ছিলি।উদ্ভব কাজকর্ম,আবদার আমার সামনে খোলে বসতি।আমি তোর এই আবদার গুলোকে ভয় পেতে শুরু করলাম।তাই তোর থেকে দূরে থাকতে চাইতাম।।
তারপর তো পড়াশোনা সব ছেড়ে আমার রুমেই পড়ে থাকতি।তোমার পড়াশোনা লাগবেনা,ক্যারিয়ার লাগবেনা কিন্তু আজ সব হয়েছে।আজ তোমার এগুলোই লাগবে আমাকে আর লাগবেনা।কি অদ্ভুত?
শেষের কথাগুলো বলার সময় শুভ্রার দিকে তাকায়নি।শুভ্রা খেয়াল করলো ওর গলা কাপছে।
হৃদ মুচকি হেসে বললো,
—-তোমাকে আর কেউ বিয়ের কথা বলবেনা।আই প্রমিস।
হৃদ রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।দরজার সামনে গিয়ে দাড়ালো তারপর পিছনে ঘুরে বললো,
—-প্রকাশ না করেও ভালোবাসা যায়।সারাক্ষণ ভালোবাসি ভালোবাসি বললেই ভালোবাসা হয়না।গোপনে যতনে ভালবাসা যায়।যা লোভ দেখানো না,হৃদয়ের মাঝে গুপ্ত থাকে।নিস্পাপ,পবিত্র।
হৃদ আর দাড়ালো না।শুভ্রার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।এই হৃদকে যেনো চিনতে পারছেনা।
ওর কানে একটা কথাই বাজছে প্রকাশ না করেও ভালোবাসা যায়।
হৃদ মাম্মা পাপার রুমের দরজা নক করছে।
ফুল দরজা খোলে দিলো।রোদ ল্যাপটপে কিছু একটা করছে।হৃদ দরজার সামনে দাড়িয়ে মাম্মাপাপাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—-শুভ্রাকে কেউ আর বিয়ের কথা বলবেনা।এই বাড়ির কেউ যেনো না বলে।
হৃদ কথাটা বলে এক মুহুর্ত দাড়ালো না।
ফুল রুম থেকে বের হতে চাইকেই রোদ আটকে দিলো।ফুল বিচলিত কন্ঠে বললো,
—-হৃদ কি বলে গেলো শুনলেনা।ওর সাথে কথা বলতে হবে।জানতে হবে কি হয়েছে।
রোদ বললো,
—-হ্যা বলবে।আগে রিলেক্স।দেখিস নি ওর চোখমুখ লাল হয়ে আছে।শরীর কাপছে রাগে।
কিছু একটা হয়েছে তাই ওকে একটু সময় দে নিজেকে সামলে নেওয়ার জন্য।
.
.
হৃদ শুয়ে আছে।ফুল গিয়ে ওর পাশে বসতেই হৃদ মায়ের কোলে মাথা তুলে দিলো।ফুল ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
—-কি হয়েছে আমার বাবাটার।
হৃদ অভিমানী কন্ঠে বললো,
—–শুভ্রা আমাকে বিয়ে করবেনা।আমাকে ওর পছন্দ না।ও না চাইলে আমি জোর করবোনা।ও যদি কোনোদিন চায় তবেই বিয়ে করবো নয়তো নয়।আর প্লিজ এ নিয়ে আমি কারো কোনো কথা শুনতে চাইনা।
—–আচ্ছা।কেউ কিছু বলবেনা।তোদের ব্যাপার তোরা মিটিয়ে নে।কিন্তু একটা কথা শুভ্রাও তোকে ভালোবাসে কিন্তু অভিমান করে আছে।একটু বুঝিস ব্যাপারটা।
—–আমি চলে যাবো।
—-কোথায় যাবি?
—-লন্ডন।আমার এখানে দম বন্ধ হয়ে আসছে।
??
শুভ্রা হৃদের সাথে কিছু হয়েছে?ও এমন কেন করছে?
ফুল শুভ্রার বেডে বসতে বসতে বললো।
শুভ্রা আমতা আমতা করে বলল,
—–হ্যা মানে আমাদের কথা হয়েছে।
—-তা কি কথা হয়েছে আমি জানতে পারি?হৃদ তো খোলে কিছুই বলছেনা।
শুভ্রা চুপ করে আছে।
ফুল শুভ্রাকে চুপ দেখে বললো,
—–শুভ্রা চুপ থাকিস না।হৃদ লন্ডন ফেরত যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শুভ্রার বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো হৃদের চলে যাওয়ার কথা শুনে।
শুভ্রা কাচুমাচু হয়ে বললো,
—–আসলে মামনি আমি বলেছি তোমার ক্যারেক্টার জঘন্য।আমি আসলে,,
ফুল অবাক হয়ে বললো,
—–শুভ্রা!! হৃদের ক্যারেক্টার খারাপ?তুই বুঝতে পারছিস তুই কি বলছিস?ও কি করেছে তোর সাথে?
—–মামনি তুমি ভুল ভাবছো।আমি তা মিন করিনি।আমি মিন করেছি এটাই যে হৃদ ভাইয়া মানে(শুভ্রার মুখে অনেক দিন পর হৃদ ভাইয়া কথাটা উচ্চারিত হলো তাই অস্বস্তিতে পড়ছে)তোমার ছেলে যে আমাকে দুচোখে দেখতে পারতো না সে হটাৎ বলে আমাকে তার পছন্দ আমাকে বিয়ে করতে চায়।তাই আমি বলেছি,,
ফুল শুভ্রার আরেকটু কাছে এসে বললো,
—–শুভ্রা তুই কিছুই জানিস না।হৃদ বরাবরই তোকে পছন্দ করতো,এখনো করে।তোরটা প্রকাশিত ছিলো আর ওরটা অপ্রকাশিত।শুভ্রা আমি জানি আজও তুই হৃদকেই ভালোবাসিস।
শুভ্রা নিজেকে আর সামলাতে পারেনি কেদে দিয়ে বললো,
—–তোমরা কেউ আমার দিকটা দেখছোনা।কেন দেখছোনা?তুমি তো আমাকে রোজের মতোই ভালোবাসো তবে কেন বুঝতে চাইছোনা?আমার মাম্মা,পাপা কেউ বুঝতে চাইছেনা।
—–শুভ্রা তোকে আমি হৃদ আর রোজের মতোই ভালোবাসি।আমি সবসময় ভেবে এসেছি আমার তিন সন্তান।হৃদ হওয়ার পর রাহাত চাইতো ওর মেয়ে হোক,আমার ছেলের সাথে বিয়ে দেবে।আমি এসব কখনো সিরিয়াসলি নেইনি।এসব তুই জানিস,হাজারবার শুনেছিস।তারপর তুই যখন শাওরিনের কোল জুড়ে এসেছিস,আমার তখন মনে হয়েছিলো এই মিষ্টি মেয়েটাই আমার হৃদের বউ হবে।তবে আমি কিংবা আমরা তোদের উপর কোনো সম্পর্ক চাপিয়ে দিতে চাইনি।তোর আচার আচরণ বলে দিতো তুই হৃদকে ছাড়া থাকতে পারবিনা।তোর ছোট্ট মন হৃদকে ভালোবাসে।আর হৃদ আমার ছেলে।ও আমার কাছে আয়নার মতো।ও ওর বাবাকে আইডল মানলেও বাবার মতো খোলামেলা মনের হয়নি।তোর বাবাইকে তো জানিস,,মনের কথা মনে আসার আগেই মুখে এসে পড়ে।কিন্তু আমি খুব চাপা স্বভাবের ছিলাম এখনও আছি তবে দায়িত্ব,সংসার এসব আমায় পরিবর্তন করে দিয়েছে।হৃদ আমার মতো চাপা স্বভাবের।ও সবকিছু প্রকাশ করতে পারেনা।মনের ইচ্ছে মনেই পুষে রাখে।আমি মা তাই বুঝতে পেরেছি।এখন তুই বল।তোর মনের কথাগুলো আমাকে বল হৃদের মা হিসেবে না তোর মামনি হিসেবে।
শুভ্রা আস্বস্ত হয়ে বললো,
—–আজকে আমি অন্য হৃদকে আবিষ্কার করেছি।ছোটবেলায় যাকে দেখেছি সে নয়।আজ আমায় অনেক কথা বলেছে তাতে মনে হচ্ছে কোথাও না কোথাও আমাকে,,
—-তোকে কি?
শুভ্রা মাথা নিচু করে নিচুস্বরে বললো,
—–ভালোবাসতো।আমার সামনে যেমন দেখাতো তেমন নয়।দুটো ক্যারেক্টার প্লে করতো।কিন্তু তবুও আমার সাথে অন্যায় হয়েছে এটা আমি কি করে ভুলবো।
ফুল দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—-তোর আর দোষ কি?আমরা তোকে যা বুঝিয়েছে,যা দেখিয়েছি তুই তাই দেখেছিস,তাই বুঝেছিস।তুই দিন দিন অন্যরকম হয়ে যাচ্ছিলি।আর এসবের জন্য হৃদ নিজেকেই দায়ী ভাবতো।তুই নিজের অজান্তেই বখে যাচ্ছিলি।তবে সবটা হৃদকে ঘিরে।তাই হৃদ অপরাধবোধ অনুভব করতো।তোর নিজের বলে কিছু ছিলো না।নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে হৃদের মাঝে বিলীন হয়ে যাচ্ছিলি।তোর সবটা ঘিরে হৃদ ছিলো।তারপর পড়াশোনা একদম করতি না।সামনে এইচএসসি পরীক্ষা দিবি কিন্তু মেধাবী ছাত্রী হয়েও ফার্স্ট টার্মে ৪০-৫০এর বেশি পাসনি।এটা দেখে বাড়ির সবাই দেখে আপসেট।বিশেষ করে রাহাত।তুই একমাত্র মেয়ে ওর।তোকে নিয়ে ওর অনেক আশা ভরসা ছিলো।তখন হৃদ চুপ করে ছিলো।কিছু বলেনি।
পরে আমার রুমে গিয়ে বলেছিলো,ও চলে যাবে।
আমরা কেউ মানছিলাম না।কিন্তু ও নাছোড়বান্দা।আমাকে বারবার বলেছিলো,আমার শুভ্রার ভালোর জন্য আমাকে যেতে হবে বাধা দিওনা।
শুভ্রা ও তোর জন্য ওর পরিবার ছেড়েছে।ওর মা-বাবা ছেড়েছে তোর জন্য।এটুকু মাথায় রাখিস।আমরাও আমাদের ছেলেকে দূরে পাঠিয়েছি তোর জন্য।এটুকুর মূল্য দিস শুভ্রা।ও যাওয়ার সময় তোর সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে।সব ইচ্ছে করে করেছে।আপন মানুষের সাথে অভিনয় করা অনেক কষ্টকর।সেটা ও করেছে।তোকে ওইদিন হার্ট না করলে আজ তুই এতো স্ট্রং হতে পারতিনা।তুই তো রুমেই ছিলি।ও রুম থেকে কাদতে কাদতে বেরিয়েছে।কারো সাথে কথা বলে নি।দুহাত দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে গাড়িতে উঠে চুপ করে বসে ছিলো।
এয়ারপোর্ট গিয়ে সবার আড়ালে আমাকে জড়িয়ে হাওমাও করে কেদেছে আর বলেছে,
—-মাম্মা আমার শুভ্রা অনেক কষ্ট পেয়েছে আজ।আমি এর আগে ওকে অনেক বকেছি,মেরেছি কিন্তু এমন চুপ হয়ে যায়নি।আজ ও চুপ হয়ে গেছে।ওকে তুমি দেখো।আমি তোমার উপর ওর দায়িত্ব দিয়ে গেলাম।
আমি ওকে কখনো এভাবে কাদতে দেখিনি।আমি তোকে সবসময় চোখে চোখে রেখেছি।তোর দায়িত্ব নিয়েছি।তখন তুই পড়াশোনা আর ড্রান্সের দিকে ফোকাস করলি।তারপর একের পর এক টপ রেজাল্ট করেছিস।ড্রান্সে ভালো করেছিস।হৃদ আমার কাছ থেকে তোর সব খোজ নিয়েছে।তোর সাথে কথা বলতে চাইলে তুই বলতিনা।
শুভ্রা কাদতে কাদতে বললো,
—-তোমরা সবাই সব জানতে?
ফুল অপরাধীর মতো বললো,হুম সবাই।
—–মামনি আমাকে একটু একা থাকতে দেও।
ফুল ওর মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলো।
ফুল যেতেই শুভ্রা বললো,তোমরা সবাই এই অন্যায়ের ভাগীদার।আমার লাইফের ৭টা বছর হারিয়ে গেছে।হৃদ তুমি অনেক বড় অভিনেতা।তুমি আমাকে ভালোবাসো,আমার ভালোর জন্য সব করেছো।নিজে কষ্ট পেয়েছো কিন্তু আমাকে কিছুই বুঝতে দেওনি।তবুও এটা সত্য যে,আমার অবুঝ মনের ভালোবাসাকে অবহেলা করেছো।
ফুল,রোদের বুকে মুখ গুজে চুপ করে রইলো।
রোদ ফুলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
—-কি হয়েছে আমার ফুলকলির?
—-শুভ্রা আর হৃদের কথা ভাবছি।তোমার ছেলে তো চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রোদ মুচকি হেসে বললো,
—-ও যাবেনা।
ফুল মাথা তুলে বললো,
—–তোমাকে কে বললো?
—-আমি আমার লাইফ এক্সপেরিয়েন্স থেকে বলছি।হৃদ যাবেনা।যেতেই পারেনা।শুভ্রার উপর অভিমান করে বলেছে কিন্তু যাবেনা শিওর।
—-এত শিওর কিভাবে?
—-তুই কি বোকাই থেকে যাবি?
—-এই খবরদার আমাকে বোকা বলবেনা।
এখন বলো কিভাবে বুঝলে?
—-ওই যে আমিও চলে যেতে চেয়েছিলাম কানাডা মনে আছে।
—-থাকবেনা কেন?
—–আমি কি যেতাম নাকি,এমনি তোকে দেখানোর জন্য বলেছিলাম।দেখছিলাম তুই কি বলিস।
ফুল ভ্রু কুচকে চোখ ছোট ছোট করে রোদের দিকে চেয়ে বললো,
—–এতবড় ড্রামা?
তুমিও তো দেখছি হৃদের চেয়ে কম না।
—–তুই কম কিসে?তুই তো আমার চেয়ে বড় ড্রামা করেছিলি।আমি তোমাকে ভালোবাসি না।হুহ।
ফুল বললো,সেটা তো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলো।
—-সবই পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
হৃদ আর শুভ্রাকে নিয়ে ভাবতে হবেনা।ওরা একে অপরকে ভালোবাসে সো ওরা এক হবে।এতো সহজে সব পেয়ে গেলে প্রেমের কোনো মজা নেই।একটু বিরহ না হলে জমেনা।
—–আরে বাবা,প্রেমের মাস্টার।প্রেমের উপর সব ডিগ্রি উনিই নিয়েছে।
রোদ ফুলকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে বললো,
—-আবার জিগায়।
চলবে…