স্বপ্নের প্রেয়সী ? Part – 13,14

0
1250

? স্বপ্নের প্রেয়সী ?
Part – 13,14
ফাতেমা তুজ
13

সেই দিনের পর থেকে আমি পড়াশুনাতে অনেক মনোযোগী হয়ে গেছি,মানে ইংরেজি তে।এভাবেই কেটে যায় একটি সপ্তাহ। ফারহান ভাইয়া আমাকে রোজ পড়ান এখন।কিন্তু আজ দুইদিন ধরে ফারহান ভাইয়া ও রিফাত ভাইয়া ঢাকাতে গেছেন।তাদের পরীক্ষার কিছু কাজ নিয়ে। আমরা ঢাকা থেকে আব্বুর বিশেষ ট্রান্সফারের কারনে দুই বছর আগে সিলেট আসলে ও রিফাত ভাইয়া ঢাকাতেই পড়াশুনা করেন।আর ফারহান ভাইয়া তো আমাদের সিলেট আসার সাত দিনের মাথায় সিলেটে ওনার বড় মামার বাড়ি চলে এসেছেন। কিন্তু ওনার বড় মামার বাড়ি হালি শহর থেকে বিশ কিলোমিটার দূরে। যার কারনে ওনি এক দিন বাদে বাদে রিফাত ভাইয়ার সাথে দেখা করতে আমাদের বাসায় আসতেন।দুই বেস্ট ফ্রেন্ড বলে কথা যার কারনে ফারহান ভাইয়া ঢাকা থেকে সিলেট সেটেল হলেন।
সেই ছোট থেকে এদের বন্ধুত্বের প্রশংসা সবার মুখে
মুখে।দুটি তে পারে ও বটে।কিন্তু পাঁচ মাস যাবত ওনি হালি শহরে ওনার ছোট আন্টির বাড়ি চলে এসেছেন ।
আমাদের বাসা থেকে এক কিলোমিটার দূরে ওনার আন্টির বাসা।আগে ওনার আন্টি কোরিয়া থাকতেন এখন সিলেটে শশুড় বাড়িতে সেটেল হয়েছেন।শশুড় বাড়ির লোক বলতে বৃদ্ধা শাশুড়ি ওনার শশুর কয়েক মাস আগে মারা যান।আর তাই বৃদ্ধা শাশুড়ির জন্য সিলেটে চলে এসেছেন তা ও এক বছরের জন্য।এক বছর পরে ওনার শাশুড়ি কে নিয়ে আবার কোরিয়া চলে যাবেন।এখন ওনাদের বাসায় ওনি ওনার হাসবেন্ড , ছেলে , মেয়ে, শাশুড়ি আর ফারহান ভাইয়া থাকেন ।

দুই দিন পর আজকে রিফাত ভাইয়া আমাকে ভিডিও কল দিয়েছে।কিন্তু আমি কল ধরতে পারি নি শুধু মাত্র আমার ঘুমের জন্য।তাই তাড়াতাড়ি রিফাত ভাইয়া কে কল বেক করলাম। কল করলাম একবার , কিন্তু ধরলো না।আবার কল দিলাম এবার ধরলো।কিন্তু ভিডিও কলে ফোন ধরা মানুষটিকে দেখে আমার শ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমি না পারছি ফোন টা রাখতে আর না পারছি ধরে রাখতে।কেমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি কারন ফোন টা যে ধরেছে তিনি আর কেউ নন দ্য ওয়ান এন্ড অনলি গ্রেট ফারহান ভাইয়া।

বেশ কিছুক্ষণ কাঁচুমাচু করে কেটে গেল।কিন্তু ফারহান ভাইয়া একটা কথা ও বলে নি শুধু এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছেন।যেন কতো দিনের তৃষ্ণাতে ওনার চোখ গুলো আজ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

কিছুক্ষণ পর ফারহান ভাইয়া বললেন
– ফারাবি কেমন আছিস।ঠিকমতো খাস না নাকি?
কেমন শুকনো শুকনো লাগছে।

আমি বললাম
– ভালো আছি। না খাই তো , এমনি ফোনে শুকনো শুকনো লাগছে।

তারপর চুপ হয়ে গেলাম কয়েক সেকেন্ড পর বললাম
– আপনি কেমন আছেন?

উনি হালকা হেসে বলল
– হুমম ঠিক ঠাক। তো পড়াশুনা চলে কেমন?

আমি একটু সাহস জুগিয়ে বললাম
– হুমমম। সব কমপ্লিট যা , যা পড়া দিয়েছিলেন সব।

ফারহান ভাইয়া আর পড়াশোনা নিয়ে কিছু বললেন না কিন্তু যা বললেন তাতে আমি উওর দিতে পারলাম না ।
তিনি বললেন
– ফারাবি আমাকে মিস করেছিস?

আমি উওর দিতে পারলাম না কারন টা আমি নিজেই জানি না।আসলেই কি মিস করি নি নাকি করেছি?
নিজের মনেই প্রশ্ন আওলাতে লাগলাম।আমার মন টা বড্ড পাসান্ড হয়ে গেছে।আমি কোনো সঠিক উওর খুজে পেলাম না।কেমন সব কিছু কনফিউশনে চলে গেছে। আমি নিশ্চুপ ফারহান ভাইয়া অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছেন।

আমি বলব যখন হ্যাঁ মিস করেছি।ঠিক তখনি রিফাত ভাইয়া ফারহান ভাইয়া কে বলল
– কে ফারহান?
ফারহান ভাইয়া বলল
– ফারাবি নে কথা বল।

এই বলেই ফোন টা রিফাত ভাইয়া কে দিয়ে চলে
গেলেন।

( কারো ভালোবাসার অনুভূতি যদি তার ভালোবাসার মানুষটি না বুঝতে পারে সেটা যে কতো টা কষ্টের তা সত্যিই সেই মানুষটি বাদে আর কেউ বুঝতে পারে না।
ঠিক তেমনি ফারহানের মনের ভেতর চলছে শুধু দহন ।
কিন্তু সে তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারছে না।)

রিফাত ভাইয়ার সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা হলো।কিন্তু মন টা অস্থির লাগছে , কিছু ই ভালো লাগছে না।
রিফাত ভাইয়ার সাথে কথা বলেই রাত এগারোটায় সাওয়ার নিতে ছুটলাম।বড্ড বাজে অনুভূতি হচ্ছে।
ঝড়না ছেড়ে প্রায় এক ঘন্টা বসে রইলাম।একে তো হিম লাগানো শীত।তার ওপর ঠান্ডা পানিতে বসে থাকায় শরীর অসাঢ় হয়ে গেছে।তাড়াতাড়ি চেন্স করে ঘুমাতে চলে গেলাম। মনের অস্থিরতা কাটছেই না।কেন এমন হচ্ছে, বার বার কেন ফারহান ভাইয়ার চোখের সেই আকুলতা ভেসে উঠছে।

মনে হচ্ছে ভুল করে বসেছি। কিছুই ভালো লাগছে না চোখে ঘুম নেই , মনে নেই শান্তি কিন্তু শরীর যে বড্ড ক্লান্ত।

বেশ কয়েক ঘন্টা পর শরীরের প্রতি টা কোষ ক্লান্তির সাথে পেরে না উঠতে পেরে সংকুচিত হয়ে ঢলে পড়ল ঘুমের দেশে।

অন্য দিকে
___________

কেউ একজন ব্যালকনিতে দাড়িয়ে সিগারেট ফুকছেন।যেই মানুষটির সিগারেটের নামেই এলার্জি সেই মানুষটি নিমেষেই শেষ করে দিলো ছয় টি সিগারেট। মনে হচ্ছে পুরিয়ে দিতে চাচ্ছে বুকে জমে থাকা কষ্ট টাকে।
পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিলো।হাতে থাকা সপ্তম সিগারেট টা ফেলে দিয়ে পা দিয়ে পিষে নিলো।তারপর বলল
– ফারহান ক্ল্যাম ডাউন।কিছু পাওয়ার জন্য কষ্ট করতেই হবে। তবে এখন কাজ হচ্ছে প্রিয় মানুষটির ঘোর লাগানো চোখের সাধ নেওয়া।

ফারহান ভাইয়া এক মুহূর্ত দেরি না করে প্লেনের টিকেট কাটলেন।সকাল ছয় টার টিকেট। তারপর ই রিফাত ভাইয়া কে টেক্সট করে জানিয়ে দিলেন ফারহান ভাইয়ার কাজ যেহেতু শেষ তাই সে সিলেট বেক করছে।
এভাবেই ব্যালকেনিতে দাড়িয়ে হাতে সেই ওড়না টা জড়িয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন
– হে চাঁদ তোমার থেকে ও স্নিগ্ধ কাউকে পেতে চাচ্ছি ।
আমার ভালোবাসার সাক্ষী স্বরূপ সঙ্গী হয়ে থেকো।

চাঁদের দিকে তাকিয়ে ওড়নাটাকে বুকে জড়িয়ে চুমু দিলেন এভাবেই রাতটি নির্ঘুম কাটিয়ে দিলেন।
____________________

পরের দিনই ফারহান ভাইয়া সিলেটে চলে আসলেন।
হালি শহরে আসতে আসতে আটটা বেজে গেলো।
উনি সোজা আমাদের বাসায় এসেছেন।ওনাকে সকাল বেলা আসতে দেখেই বড় মা আর আম্মু বললেন
– ফারহান সব ঠিক আছে তো?
ফারহান ভাইয়া বললেন
– হুম কাকি সব ঠিক ঠাক আছে। কিন্তু এখন তাড়াতাড়ি খেতে দাও খুব খিদে পেয়েছে।

আম্মু হেসে বললেন
– ভেতরে গিয়ে বস। আমি এখনি নাস্তা দিচ্ছি।

বড় মা বললেন ‘ তা ফারহান বাবু এতো ফাস্ট চলে আসলেন যে।কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি?’

ফারহান ভাইয়া বললেন
– আরে না কাকি কোনো সমস্যা হয় নি।কাজ শেষ তাই চলে এসেছি।কিন্তু তোমার ছেলেকে রেখে এসেছি যাতে তার জানে মানের সাথে ঠিক ঠাক কিছু দিন চলতে পারে।

বড় মা ফারহান ভাইয়ার কান ধরে বললেন
– তাইইই। নাকি নিজের গালফেন্ড কে এই সিলেটে পেয়ে গেছিস তাইই।

ফারহান ভাইয়া বললেন
– উফফফ কাকি লাগছে । এখন খেতে দাও আন্টির বাসা তে যেতে হবে তো।

বড় মা বললেন
– আচ্ছা আয় আগে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে নে।

বড় মা ফারহান ভাইয়া কে নিয়ে ভেতরে চলে গেলেন।
তারপর ফারহান ভাইয়া বললেন
– ফারাবি কে দেখছি না।ওর তো সকাল সকাল পড়তে বসার কথা সাথে নাস্তা করার ও কথা।

আম্মু বললেন
– দাড়া দেখে আসছি।

ফারহান ভাইয়া বললেন
– আচ্ছা তুমি খাবার রেডি করো আমি ওকে নিয়ে আসছি।

এই বলেই ফারহান ভাইয়া আমার রুমে আসলেন।

আমি কম্বল জড়িয়ে মুখ ঢেকে শুয়ে আছি। ফারহান ভাইয়া আমাকে কয়েকবার ডাক দিলেন কিন্তু আমি উঠছি না।ফারহান ভাইয়া আবার ডাক দিলেন কিন্তু তা ও উঠছি না। তখনি ফারহান ভাইয়া আমাকে টেনে উঠাতে গেলেন।আমার কপালে তার হাতের স্পর্শ লাগায় তিনি কেঁপে উঠলেন।তিনি আবার কপালে হাত দিলেন তারপর গলায় হাত ছুঁইয়ে বললেন
– ওও মাই গড এতো জ্বর হলো কিভাবে!

ফারহান ভাইয়া এখান থেকেই আম্মু আর বড় মা কে ডাকতে লাগলেন।

ফারহান ভাইয়ার ডাকে আম্মু আর বড় মা ধর পরিয়ে আসলেন।তারপর ফারহান ভাইয়া কে জিজ্ঞাসা করলেন
– কি হয়েছে?

তখন ফারহান ভাইয়া বললেন
– ফারাবির গায়ে তো প্রচুরজ্বর।

এই কথা শুনা মাত্র বড় মা আমার কপালে হাত দিলেন।তারপর বললেন
– ফারাবির গা তো জ্বরে পুরে যাচ্ছে।

আর ঐ দিকে আম্মু পানি পট্টি দেওয়ার ব্যবস্থা
করলেন।আম্মু মাথায় পানি পট্টি দিচ্ছে কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। কারন আমার জ্বর মারাত্মক।সচরাচর আমার জ্বর হয় না।আর যখন হয় তখন যেতে চায় না।
ফারহান ভাইয়া থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে বললেন
– এখনো 104৹ । ওকে হসপিটালে এডমিট করাতে হবে।
আমি ওকে হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি।তাড়াতাড়ি তোমরা নিচে আসো।

ফারহান ভাইয়া আমাকে কোলে করে নিচে নামিয়ে আনলেন।আমার কোনো জ্ঞান নেই।আমার জ্বর সম্পর্কে সবার ভালো অভিজ্ঞতা আছে।যার জন্য আমাকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে গেলেন।
হসপিটাল নিয়ে যাওয়ার পর ই ডাক্তার ইনজেকশন দিলেন। বড় আব্বু কে আর আব্বু কে ফোন দেওয়া হয়েছে তারা সোজা হসপিটালে আসবেন।আমি অচেতন হয়ে পড়ে আছি।কোনো জ্ঞান নেই আমার।
ফারহান ভাইয়া আমার হাত ধরে বসে আছেন।বেশ চিন্তিত ওনি ঐ দিকে আম্মু আর বড় মা চোখের পানি ফেলতে ব্যস্ত। আচানাক ফারহান ভাইয়া আমার হাতে চুমু এঁকে দিলেন।

চলবে
ফাতেমা তুজ

? স্বপ্নের প্রেয়সী ?
part – 14
____________________________

পুরো ছয় ঘন্টা বাদে আমার জ্ঞান ফিরলো। জ্ঞান ফিরতেই পাশে আব্বু, আম্মু , বড় মা , বড় আব্বু কে দেখতে পেলাম।তাদের দিকে তাকাতেই চোখ গুলো সচ্ছ হয়ে উঠলো। শরীর এখনো প্রচন্ড দূর্বল জোড় পূর্বক একটু হাসলাম। বড় মা আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন।আম্মু আমার হাত ধরে চুমু খেয়ে বললেন
– ঠিক আছিস তুই?
আমি অনেক কষ্ট করে আম্মুর হাতে হাত রেখে উওর দিলাম
– আম্মু আমি ঠিক আছি।

আম্মু এবার হু হু করে কেঁদে দিলেন।আব্বু আম্মু কে কাঁদতে দেখে কিছুটা বিরক্ত মুখে বললেন
– আহহহ।মেয়েটা আমার অসুস্থ আর তুমি এভাবে কাঁদছো।কি মেয়েটার জন্য একটু পুষ্টিকর খাবার রান্না করবে তা না করে মেয়েটার সামনেই এভাবে কাঁদছো!

আব্বুর কথা শুনে বড় আব্বু বললেন
– থাম মায়ের মন এমন ই। আর তাছাড়া আমাদের ফারাবির জ্বর যে স্বাভাবিক না তা তো আমরা জানি।
যে কোনো কিছু হতে পারে তার নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারবো না। মনে নেই ফারাবির যখন তিন বছর তখন এই সমস্যা ধরা পরে।

(আমার যখন তিন বছর তখন আমি এই জ্বর রোগে আক্রান্ত হই। আমার তিন বছরে কখনো জ্বর হয় নি।
কিন্তু হঠাৎ করে একদিন শরীর কাঁপিয়ে জ্বর আসে।
মৃত্যু সয্যায় ছিলাম , বাঁচার চান্স ছিলো খুবই স্বল্প।
অনেক কষ্টে এই জ্বর সারানো হয়। দীর্ঘ দুই মাস হসপিটালে এডমিট ছিলাম। তারপর ই ডাক্তার বলে দিয়েছেন আমার এটা স্বাভাবিক জ্বর নয়। এটা অস্বাভাবিক ভাবে শরীরে জেকে বসেছে। এই জ্বর সেরে তো যাবে কিন্তু প্রায় সময় ই যেকোনো কারনে এই জ্বর দেখা দিতে পারে। সাধারণত সিজনাল জ্বর আসতে পারে কিন্তু সেটা তে সমস্যা নেই। কিন্তু অস্বাভাবিক জ্বর হলে আমার জীবন সংশয় হতে পারে।
তারপর থেকে আমার হালকা কয়েকবার জ্বর হয়েছে কিন্তু তেমন গুরুতর নয় । )
__________________________

বেশ কিছুক্ষণ সবার সাথে কথা হলো।সবাই কে ফেলে চোখ জোড়া গেলো দরজার কাছে। দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছেন ফারহান ভাইয়া।চেহারা একদম শুকিয়ে গেছে।ওনার এই চেহারা দেখেই বুকের ভেতর ছ্যাত করে উঠলো।কারন টা সম্পূর্ণ অজানা।ওনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই মানুষটি নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন সাথে ক্ষুধার্ত।কিন্তু এই সবের থেকে ও বেশি চোখে পরছে ক্লান্ত শরীরের স্নিগ্ধ চাউনি।মনে হচ্ছে বুকের মধ্যে পাথর চাপা পড়ে ছিলো যেই পাথরের চাপায় ব্যথিত হয়েছেন বেশ কিছুক্ষণ যা এখন ক্ষানিকটা নির্মুল হয়েছে।তার ক্লান্ত শরীরের এমন স্বস্তির চাউনিতে আমার চোখ জোড়া থমকে গেল। কি অমায়িক লাগছে ওনাকে। ওনার চেহারায় অসম্ভব মায়া ফুটে উঠেছে যা আগে কখনো দেখি নি! আজকে ওনাকে স্নিগ্ধ লাগছে সবসময়ের মতো রাগি দেখাচ্ছে না। কতোক্ষন ওনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম জানি না।

এখন প্রায় তিনটা বাজতে চলল। আম্মু আর বড় মা বাসায় গেছেন আমার জন্য পুষ্টিকর খাবার রান্না করতে।আর তাদের ছাড়তে গেছে আব্বু।বড় আব্বু খাবার আনার জন্য বাইরে যেতে চাইলেন। তখনি ফারহান ভাইয়া বলল
– চাচ্চু আমি ওর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার আনিয়ে
নিয়েছি।তুমি যাও বাসায় গিয়ে রেস্ট নাও।আমি ওকে খাইয়ে দিবো নে।

বড় আব্বু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন।সকাল বেলা খবর টা শুনে সেই বিশ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে চলে এসেছেন।ক্লান্ত শরীর , অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ চলছে তাই সারাক্ষণ কাজের মাঝে থাকতে হয়।কিন্তু আমার জন্য এতোটা কষ্ট করতে হলো ওনাকে।এই অবস্থা তে নিজেকে বেশ অপরাধী লাগছে। বড় আব্বু আমার মাথায় হাত বুলালেন তারপর বললেন
– তোর সমস্যা হবে মা?
আমি হালকা হেসে বললাম
– কোনো সমস্যা হবে না বড় আব্বু।তুমি চিন্তা করো না আর বাসায় গিয়ে রেস্ট নাও কালকের আগে অফিস যাবে না বুঝেছো, না হলো আমি রাগ করবো।

বড় আব্বু মৃদু হেসে বললেন
– তাই হবে।কিন্তু তুই তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আয় ।

আমি হালকা হাসলাম।তারপর বড় আব্বু আমাকে আর ফারহান ভাইয়া কে বিদায় জানিয়ে চলে আসলেন।
ফারহান ভাইয়া এতোক্ষন একটি বারের জন্য ও আমার কাছে আসেন নি,এখনো আসছেন না। কিছুক্ষণ ঐ ভাবেই কেটে গেলো।তারপর ফারহান ভাইয়া আমার কাছে এসে বেডের পাশে রাখা ঢুল টাতে বসলেন।
কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন স্নিগ্ধ সেই দৃষ্টি তে।আমি আড়চোখে ওনাকে দেখে যাচ্ছি সরাসরি তাকাতে পারছি না কেন যেন।

কিছুক্ষণ পর ফারহান ভাইয়া আমার ডান হাত নিজের দুহাতে আবদ্ধ করলেন।হঠাৎ তার স্পর্শে কেঁপে ওঠে আমার শরীর ।

ফারহান ভাইয়া আমার হাত তার হাতের মুঠোয় আবদ্ধ রেখেই বললেন
– জ্বর হলো কিভাবে?

তার হঠাৎ এমন কথার আক্রমনের আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম।আমি নিশ্চুপ হয়ে আছি কিভাবে বলব আমি।এটা শুনলে যে কেউ বকা দিবে এই শীতের রাতে তা ও ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করেছি আমি।

আমাকে চুপ থাকতে দেখে ফারহান ভাইয়া আবার বললেন
– উওর দে?

আমি তাও নিশ্চুপ।এইবার ফারহান ভাইয়া খানিকটা উঁচু গলায় বললেন
– কথা কানে যাচ্ছে না।তোর সাহস কি করে হয় এই হীম লাগানো শীতের মধ্যে এতো রাতে তা ও ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার?

আমি এবার অবাকের চরম পর্যায়ে।ফারহান ভাইয়া জানলেন কি করে আমি এই শীতের রাতে গোসল করেছি।

ফারহান ভাইয়ার চোখ গুলো সচ্ছ থেকে লাল বর্ন ধারন করেছে,ভয় হচ্ছে আমার।

আমি ভয়ে চুপসে গেলাম।আমাকে ভয় পেতে দেখে ফারহান ভাইয়া শান্ত হয়ে বললেন
– আর যদি কখনো এই হীম লাগানো শীতের রাতে গোসল করেছিস তো আমার একদিন না হয় তোর একদিন।

কথাটা বলেই ফারহান ভাইয়া রুম থেকে বের হয়ে গেলেন।কয়েক মিনিট পর একটা নার্স কে নিয়ে রুমে
আসলেন।নার্সের হাতে খাবার ছিলো , খাবার টেবিলে রেখে ফারহান ভাইয়া কে বিদায় জানিয়ে চলে গেলেন।

ফারহান ভাইয়া আমার কাছে এসে আমাকে শোয়া থেকে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে উঠালেন।এমন অবস্থাতে ও আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। উনি বললেন চুল টা এখনো ভেজা।রাতে গোসল করে চুল না মুছেই বেঁধে রেখেছিল তাই মাথায় আর ও বেশি ঠান্ডা লেগেছে।

আচ্ছা এবার বুজলাম তাহলে এই ভেজা চুলের জন্য ওনি বুঝেছেন।

ফারহান ভাইয়া আমার চুল গুলো খুলে দিলেন।

আমাকে আধশোয়া রেখে ট্রে থেকে ফ্লয়েম পেপারে মুরানো বাটি টা বের করলেন।হুমম স্যুপ ই এনেছেন কিন্তু এটা রোগী দের জন্য করা স্যুপ নয়।দেখে তো মনে হচ্ছে স্পেশাল কোনো সেফ দিয়ে রান্না করানো হয়েছে।
ফারহান ভাইয়া স্যুপ এর বাটি থেকে কিছু টা স্যুপ অন্য একটা বাটিতে নিলেন।

আমি এই রকম ঘন স্যুপ খেতে পারি না।আমি সবসময় থিন স্যুপ খাই , কিন্তু ফারহান ভাইয়া এটা কি এনেছেন।

চুপ হয়ে আছি কারন খাওয়ার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে নেই।

ফারহান ভাইয়া চোখ রাঙালেন। আর আমার হাতে কেনলা থাকার কারনে আমি নিজ হাতে খেতে ও পারব না।তাই অনিচ্ছাকৃত হয়ে ও ফারহান ভাইয়ার হাত থেকেই খেতে হবে।আর ফারহান ভাইয়ার মুখের উপর কিছু বলা বা করা আমার কর্ম নয়।ফারহান ভাইয়া আমাকে চুপ থাকতে দেখে বললেন
– একটু খেয়ে দেখ ভালো না লাগলে আর খেতে হবে
না ,জাস্ট একটু।

তার এমন করুণ আবেদনে কি করে বারন করি!

ফারহান ভাইয়ার হাত থেকেই এক চামচ স্যুপ খেলাম।ওমাআআ এটা স্যুপ নাকি অন্য কিছু! অসম্ভব মজা আমি তো পুরো টাই শেষ করে দিবো। কিন্তু আমি তো থিন স্যুপ ছাড়া খেতেই পারি না।এই স্যুপ টা এতো মজা কেন?

ফারহান ভাইয়া আমার মুখের ভঙ্গিতেই বুঝে গেছেন আমার এই স্যুপ টি ভালো লেগেছে কি না। তাই এই করুণ মুহূর্তে ও আমাকে না জ্বালিয়ে ছাড়লেন না।
টপাটপ এক দুষ্ট বুদ্ধি চাপলেন।

আমার আড়ালে বাকা হেসে বললেন
– ফারাবি এই স্যুপ টা একদম ভালো না তাই না।আর খাওয়া লাগবে না।আমি বরং এটা অন্য কাউকে দেওয়ার ব্যবস্থা করি।আমার মুখটা মলিন হয়ে গেল।
এই স্যুপ টা আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।অসাধারণ খেতে যে , কিন্তু ওনি এই স্যুপ টা অন্য কাউ কে দিয়ে দিবেন।উনি স্যুপের বাটি টা হাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালেন তখনি আমি ফারহান স্যার বলে ডাক দিলাম আমার ডাকে ওনি দাড়িয়ে গেলেন।
তারপর ফারহান ভাইয়া কে মলিন মুখে বললাম
– স্যুপ টা অনেক ভালো লেগেছে, আমি ই স্যুপ টা খেতে চাই।

এই বলেই মন খারাপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে
রইলাম।আর মাঝে মাঝে ফারহান ভাইয়া কে আড় চোখে দেখছিলাম। আড় চোখে দেখলে ও ফারহান ভাইয়ার চোখ ফাঁকি দিতে পারলাম না।ওনার সাথে চোখাচোখি হয়েই গেল।ধ্যাত আবার লজ্জা পেলাম।
ফারহান ভাইয়া আমাকে লজ্জা পেতে দেখে মৃদু হেসে বললেন
– ফারাবি তুই নিজেকে অনেক চালাক ভাবতে শুরু করেছিস।কিন্তু ফারহানের কাছে তুই হাতের তালুর মতো।বুঝেছিস

এই বলেই মাথায় হালকা করে গাট্টা দিলেন।আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম
– আমি মোটে ও নিজেকে চালাক মনে করি না।

ফারহান ভাইয়া এবার একটু জোড়ে ই হাসলেন। আহা লোকটি কে একটু হাসাতে ই কতো টা অমায়িক লাগছে।আর এই বেটা বজ্জাত হনুমান সারাক্ষণ গোমরা মুখ নিয়ে থাকে।একটু হাসলে কি হয়?ইসসস যদি এই কথা গুলো এই মানুষটি কে বলতে পারতাম।
ধুর সোজা থাপ্পর মেরে দিতো এতো ভেবে তোর কাজ নেই ফারাবি চুপ করে থাকা ই শ্রেয় এই বলে নিজের মন কে শান্তনা দিলাম। এবার ফারহান ভাইয়া আমার কপালে হাত দিয়ে বললেন এখনো জ্বর আছে।
ডাক্টর বলেছেন এক সপ্তাহ এডমিট থাকতে।এই কথা শুনা মাত্র আমার মাথায় বাঁচ ভেঙে পড়ল।আমি কোনো ভাবেই এতোদিন হসপিটালে এডমিট থাকতে পারবো না।হসপিটালের উগ্র গন্ধ আমার সহ্য হয় না।ফারহান ভাইয়ার দিকে অসহায় দৃষ্টি তে চেয়ে আছি আমার চোখ গুলো ছলছল করছে।

ফারহান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে দেখলেন চোখের পানি টলমল করছে তারপর ওনি আমার চোখের কার্নিশ থেকে পানি মুছে দিতে দিতে বললেন
– এভাবে কাঁদছিস কেন।আমি হসপিটাল অথরিটির সাথে কথা বলে রেখেছি তো , এভাবে কাঁদে না।তোর শরীর এখনো অসুস্থ অনেক।আর কাঁদবি না বুঝেছিস।

আমি নিজেকে সামলিয়ে ফারহান ভাইয়া কে মৃদু স্বরে বললাম
– কি কথা বলেছেন।

ফারহান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে তারপর ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা টানিয়ে বললেন
– সমস্যা নেই। কালকের দিনটা দেখব তোর শরীরের কি অবস্থা।অবনতির দিকে না গেলে পরশু নিয়ে যাবো।
হসপিটালে কোনো সুস্থ মানুষ ই দুই দিন থাকলে অসুস্থ হয়ে যাবে।আর তুই তো অসুস্থ বাচ্চা তোকে নিয়ে রিস্ক নিবো না।

আমি ওনার কথায় হুমড়ি খেয়ে পড়লাম।আমি বাচ্চা কি বলে এই লোকটা ,ওনার মাথা ঠিক আছে তো।

ফারহান ভাইয়া’ বললেন কি হয়েছে কি , বির বির করছিস কেন?’
আমি ভ্রু কুঁচকিয়ে ফারহান ভাইয়া কে বললাম
– আমি বাচ্চা?কোন দিক দিয়ে আপনার মনে হয় আমি বাঁচ্চা?

ফারহান ভাইয়া শরীর টাকে নাড়িয়ে একটা শ্বাস নিলেন তারপর বললেন
– তুই যদি বড় হতিই তাহলে এতো দিন ধরে আমাকে

এই বলেই চুপ হয়ে গেলেন।তারপর কথা পালটিয়ে বললেন
– তুই যদি বড় হতি ই তাহলে এখনো খাবার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো না আমায়। এখন চুপচাপ হা কর খেয়ে রেস্ট নিবি।

আমি বললাম
– ওওও
ফারহান ভাইয়া আমার মুখে চামচ এগিয়ে দিলেন
তারপর বললেন
– হা কর।
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম
– আপনি খেয়েছেন?
ফারহান ভাইয়া হালকা হেসে বললেন
– আমি খেয়ে নিবো নে, তুই এখন হা কর তো।

আমি বললাম
– এখানে অনেকটা স্যুপ আছে আমি এতো খাবো
না।আপনি ও একটু খেয়ে নিন।

ফারহান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বললেন
– হঠাৎ আমার জন্য চিন্তা করছিস যে।

আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললাম
– আপনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে না খেয়ে আছেন।
আর আমি কাউকে অনাহার রেখে খেতে পারি না।
ফারহান বললেন
– আচ্ছা ঠিক আছে চল আমি ও খাবো।কিন্তু আগে তুই হা কর।
আমি আমার হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম
– প্রমিস

ওনি আমার হাতে হাত রেখে বললেন
– প্রমিস

আমি হেসে বললাম
– ঠিক আছে।

ফারহান ভাইয়া আমাকে খাইয়ে দিতে লাগলো সাথে নিজে ও খেয়ে নিলেন।

খাওয়া শেষ হলে আমাকে শুইয়ে দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল
– রেস্ট নে।আমি আসছি।

আমি বললাম
– আচ্ছা।একটু তাড়াতাড়ি আসবেন।আমার হসপিটালে একা থাকতে অস্বস্তি বোধ হয়।
ফারহান ভাইয়া বললেন
– জাস্ট 20 মিনিট।
– ওকে।

ফারহান ভাইয়া দরজার কাছে গিয়ে আবার দাঁড়িয়ে গেলেন। তারপর আশে পাশে তাকিয়ে আবার ফিরে আসলেন।আমাকে বললেন
– আবার একটু উঠতে হবে ফারাবি।
আমি বললাম
– কেন?
ওনি বললেন
– চুল গুলো কেমন হয়ে গেছে দেখেছিস। আর এখন শুকিয়ে ও গেছে।এভাবে থাকলে তোর অস্বস্তি লাগবে।
চুল বাঁধতে হবে আর এতোক্ষনে নার্স ও এসে পরবে।
একা না রেখে যাওয়াই বেটার।

এই বলে আমাকে আবার আধ শোয়া করালেন।
তারপর সুন্দর করে মাথা আছড়িয়ে দুই টা বিনুনি করে দিলেন।
আমি অবাক হয়ে আছি এই লোকটার বুঝি চুল বাধার গুন ও আছে!
ফারহান ভাইয়া হেসে বললেন
– অতো ভাবিস না।আমি আরো অনেক কিছু ই পারি।

আমি এখনো হা হয়ে আছি।বিনুনি করা শেষ হতে না হতে নার্স এসে হাজির।ফারহান ভাইয়া বললেন
– আমি বেক না করা অব্দি ম্যাম কে এক মুহূর্ত একা রেখে যাবেন না।
নার্স মাথা দুলিয়ে বললেন
– ওকে স্যার।

তারপর ফারহান ভাইয়া আমাকে বললেন
– কিছু দরকার হলে নার্স কে বলবি।
আমি বললাম
– আচ্ছা।

উনি আমাকে বিদায় জানিয়ে চলে গেলেন।
____________________________

প্রায় দশ মিনিট পর দেখলাম
রিফাত ভাইয়া, মনিকা আপু , ছোট চাচ্চু এসেছেন।

আমি অবাক হলাম না। কারন আমার একটু কিছু হলে ও এরা দৌড়াতে দৌড়াতে আসবেন। আর এখন তো অস্বাভাবিক জ্বর হয়েছে। কিন্তু কিছুটা অস্বস্তি বোধ করলাম।কারন আমার জন্য সবাই কে কষ্ট করতে হলো।সব কাজ কর্ম ফেলে এতো দূর থেকে জার্নি করে আসতে হলো সবাইকে।মনের ভেতর কেমন অপরাধবোধ কাজ করছে ।

চাচ্চু এসেই বলল
– আমার আম্মি জানের শরীর ঠিক আছে এখন।

আমি হেসে বললাম
– আমি ঠিক আছি চাচ্চু।শুধু শুধু এতো কষ্ট করতে গেলে কেন।

চাচ্চু কে উওর না দিতে দিয়ে রিফাত ভাইয়া বলল
– মারবো এক থাপ্পর।কষ্ট হয়েছে কে বলেছে তোকে, অসুস্থ হয়ে নিজে পরে আছে।অথচ আমাদের সান্ত্বনার বানী শোনানো হচ্ছে।সুস্থ হয়ে কথা বলবি।

মনিকা আপু রিফাত ভাইয়া কে থামিয়ে বলল
– আহা। রিফাত মেয়ে টাকে বকো না তো।এমনিতেই অসুস্থ তার ওপর এভাবে বলছো কেন।

রিফাত ভাইয়া ক্ষানিকটা চুপসে গেলেন।তারপর ই আমার কপালে হাত দিয়ে বললেন
– জ্বর কমেছে।কিন্তু তাই বলে যে আজকেই বাসায় যাওয়ার বায়না ধরবি তা হবে না।ফারহান বলেছে কালকের দিন হসপিটালে থেকে সব ঠিক ঠাক থাকলে পরশু নিয়ে যেতে।

আমি বললাম
– হুমম।

ফারহান ভাইয়ার কথা শুনে মনটা আনচান করে উঠল।

চাচ্চু আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন আর বললেন
– চিন্তা করিস না।তোকে পরশু ই নিয়ে যাবো বাসায়।

চাচ্চু র কথা এই মুহূর্তে আমার কান অব্দি পৌছোলো নাকি তা নিয়ে আমি সন্দিহান।বেশ কিছুক্ষণ পার হয়ে গেল।

কিন্তু আমার চোখ জোড়া এখন কাউকে খুঁজছে।কিন্তু কোথায় সে?

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here