স্বপ্নের প্রেয়সী ? Part – 27,28

0
998

? স্বপ্নের প্রেয়সী ?
Part – 27,28

27

ভোর বেলা ঘুম ভাঙলো মনিকা আপুর ডাকে।
মনিকা আপু আমাকে টেনে তুলে দিলো।
মনিকা আপুর মুখ দেখেই বুঝতে পারলাম রেগে আছে।
কিন্তু কার উপর , আর কেন ই বা রেগে আছে।
মনিকা আপু আমাকে ফ্রেস হতে বলে গট গট করে বের হয়ে গেল ।
মনিকা আপু যেতেই দেখলাম রিফাত ভাইয়া দরজার কাছে দাড়িয়ে ছিলো।
মনিকা আপু রিফাত ভাইয়ার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে হন হনিয়ে চলে গেল।
রিফাত ভাইয়া ও মনিকা আপুর রাগ ভাঙাতে পেছন পেছন দৌড়।
কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে রইলাম।
পরক্ষণেই মাথা খেলিয়ে বুঝে গেলাম বিষয় টা।

সব হলো ঐ বেটা বজ্জাত হনুমান ফারহানের কারবার।
নিশ্চয়ই রিফাত ভাইয়া কে দিয়ে মনিকা আপু কে এই ভোর বেলা উঠিয়ে আমার এখানে পাঠিয়েছেন।
কেন রে ভাই তুই আসলে কি হয়।
যত্তসব

সব চিন্তা ঠেলে আরমোরা ভেঙে উঠে দাঁড়ালাম।
ব্যালকনির দিকে তাকাতেই দেখলাম হালকা আলো ফুটছে।
তাই তাড়াতাড়ি ব্যালকনিতে চলে গেলাম।
দীর্ঘ একটা নিশ্বাস নিলাম , মহান আল্লাহর সৃষ্টি এ সুন্দর প্রকৃতির ঠান্ডা ফ্রেস বাতাস অনুভব করলাম।
কিছুক্ষণ পর গোলাপ গাছটা কে একটু স্প্রে করে নিলাম।
বাহহহ ছয়টা ফুল ফুটেছে।
বেশ লাগছে তো দেখতে , গোলাপ গাছটার সাথে কিছু কথা বলে সোজা রুমে এসে বাথরুমে চলে গেলাম।

ফ্রেস হয়ে এসে বই নিয়ে বসে পড়লাম।
বেশ কিছু পড়া বাকি তাই তাড়াতাড়ি কমপ্লিট করার চেষ্টা করলাম।
এর মাঝে মিনু কে দিয়ে আম্মু কফি পাঠিয়ে দিয়েছে।
কফি টা ও প্রায় শেষ আর আমার পড়া ও ।
আহহহ বেশ লাগছে এখন , ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলাম 8’40 বাজে।
বড় মা এসে বলে গেল নাস্তা করতে।

আমি ও বই গুছিয়ে নাস্তা করার জন্য চলে গেলাম।
আপন মনে খেয়ে চলছি , তখনি আব্বু বললো
– তো আমরা কাল ই ঢাকা যাই।
ফারাবি তো অলমোস্ট সুস্থ আর ভাইয়ার কাজ ও শেষ হবে আজকে।
দেরি করে লাভ কি।

আমি ঢাকা যাওয়ার কথা শুনে লাফ দিয়ে উঠলাম।

আমাকে এভাবে লাফাতে দেখে ফারহান ভাইয়া রাগি চোখে তাকিয়ে রইলো।
আর রিফাত ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বোকা বনে গেল।
কারন আমি তো অসুস্থ ।

বড় মা খাবার দিতে দিতে বলল
– আহা ফারাবি ।
এখনো তোর বাচ্চা মো গেল না।

আমি বড় মার কথায় চুপসে গেলাম।
এরা আমাকে কেন বাচ্চা বলে।
আমি কি কখনোই বড় হবো না।
ধ্যাত

শেষ মেষ ঠিক হলো , কাল কেই যাবো আমরা।

আব্বু আজকেই কালকের সন্ধ্যার এয়ার টিকেট কাটবেন।

আহা কতো দিন পর ঢাকা যাবো ।

সমস্ত স্মৃতি ডানা মেলে উড়ছে।

খাওয়া শেষ করে সবার সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে রুমে চলে আসলাম।
কারন 10 টা বেজে গেছে।
এখন আমার প্রান প্রিয় স্যার ফারহান আমাকে পড়াবেন।
এই বেটার জ্বালা আর ভালো লাগে না।
ফারহান ভাইয়া বেশ কিছুক্ষন আমাকে পড়ালেন।
মাঝে কয়েকবার বকা ও দিয়েছেন।
কেন রে ভাই পড়া পারলে ও কেন বকা দিস।
লজ্জা করে না এই ছোট্ট অবলা মেয়েটাকে কষ্ট দিতে।
ফাজিল পোলা ,

যাই হোক পড়া তো পেরেছি এতেই শান্তি।
ফারহান ভাইয়া আর ও কিছু পড়া দিয়ে চলে গেলেন।
ওনি চলে যেতেই কোনো মতে বই গুছিয়ে এক দৌড় দিলাম ।
দৌড়াতে দৌড়াতে সোজা বাগানে চলে আসলাম।
বাগানে বেশ কিছুক্ষণ ঘুরলাম।
ফুল গাছ গুলো কে ছুঁয়ে দিলাম।
প্রতি টা গাছেই কুয়াশার পানি রয়েছে।
আহা কি সুন্দর সে দৃশ্য ।
আর ও কিছু ক্ষন ঘুরে অন্য কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা রুমে ঢোকে শুয়ে পরলাম।
সিলিং এর দিকে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ তারপর ই সাওয়ার নিতে চললাম।
গোসল শেষ করে বরাবরের মতোই ভেজা চুল নিয়ে ছাদে চলে আসলাম।
ছাদের দোলনা তে বসে কিছুক্ষণ রোদ পোহালাম আর দোল খেলাম।
বেশ মজা ই লাগছে, দোলনা তে বসে কিছুক্ষণ আর ও রোদ পোহালাম।
তারপর পুরো ছাদ জুড়ে বেশ কয়েকবার চক্কর মারলাম।

চক্কর মারতে মারতে ভাবতে লাগলাম।
আজকের সন্ধ্যা তে কি পড়া যায়।
গ্রাউন বা লেহেংগা তো গরজিয়াজ হয়ে যাবে।
আর থ্রি পিস এ শীত মানবে ও না।
কি করা যায় ভাবতেই হঠাৎ করে একটা শপিং ব্যাগ আমার সামনে চলে আসলো।
আমি অবাক হয়ে আছি, এটা আলাদ্দিন এর চিরাকের কোন জিন এনে দিলো।
ভাবা মাত্র ই একেবারে সামনে চলে আসলো।
কে সে , দেখার জন্য পেছন ফিরতেই দেখি ফারহান সাহেব দাড়িয়ে আছেন।

আমি ওনাকে একপলক দেখে নিচু হয়ে রইলাম।
ফারহান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে ব্যাগ টা হাতে ধরিয়ে দিলেন।

আমি ওনার দিকে হালকা তাকিয়ে বললাম
– এটা কিহ ?

ফারহান ভাইয়া পকেট থেকে কিছু একটা বের করতে করতে বললেন
– এটা তোর আজকের সন্ধ্যার ড্রেস।
আজকে এটা পরেই যাবি ঠিকআছে।

আমি মাথা ঝাঁকিয়ে বললাম
– আচ্ছা।

ফারহান ভাইয়া পকেট থেকে বের করা ছোট্ট বক্স টা হাতে দিয়ে বললেন
– এটাতে এক জোড়া ইয়ারিং আছে ।
এই ইয়ারিং টাই পরবি।
আর হ্যাঁ চুল খোলা রেখে যাওয়া যাবে না , ভারি মেকআপ তো একদম ই না।
মনে থাকবে তো?

আমি বললাম
– হুমম।

ফারহান ভাইয়া আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আমার একদম কাছে এসে বললেন
– গুড গার্ল।

তারপর আমার মুখে ফু দিতেই বরাবরের মতো চোখ জোড়া আপনাআপনি বন্ধ হয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পর চোখ মেলে তাকাতেই দেখি ফারহান ভাইয়া নেই ।
আবার লজ্জা পেলাম, ধ্যাত ।

বেশ কিছুক্ষণ ছাদে ঘুরে সোজা নেমে রুমে ঢুকে গেলাম।
ব্যাগটা খোলার জন্য হাত বাড়াতেই মিনু এসে বলল
– বড় মা খেতে ডাকছে ।

ব্যাগটা না খুলেই কাবাডে রেখে সোজা ডাইনিং এ চলে গেলাম।
খাওয়া শেষ হতেই ফারহান ভাইয়া আমাকে অনলাইন ক্লাসের জন্য বসিয়ে দিলেন।

অনলাইন ক্লাস শেষ করে কিছুক্ষণ পড়ালেন ।
পড়তে পড়তে বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেল।

ফারহান ভাইয়া আমাকে ছেড়ে বলল
– হুমম বেশ কিছুক্ষণ পড়েছিস।
পাঁচ মিনিট রেস্ট নিয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আয়।
আর হ্যাঁ যা বলেছি মনে থাকে যেন।

আমি মাথা ঝাঁকিয়ে চলে আসলাম।

রুমে ঢুকেই সোজা বেডের উপর শুয়ে পরলাম।
ক্লান্ত লাগছে শরীরটা , হঠাৎ মনে পড়ল ফারহান ভাইয়ার দেওয়া ড্রেস এর কথা।
তাড়াতাড়ি উঠে কাবাড থেকে ব্যাগ নামিয়ে বসে পরলাম।

ব্যাগ খুলেই মনটা ফুরফুরে হয়ে গেল।
বাহহহ কি দারুন জিনিস এনেছেন।
লোকটার মাথায় বুদ্ধি আছে দেখছি।
আমি তো ভেবেছিলাম পুরো টাই গোবর দিয়ে ভরা।

কালো জিন্স পেন্ট এর উপর স্টোন বসানো।
পায়ের নিচের দিকটা তে হালকা ডিজাইন করা।
বেশ সুন্দর , আর সাথে আছে একটা জিন্স এর লং শার্ট টপস।
যার মধ্যে সুন্দর ডিজাইন করা সাথে স্টোন বসানো।
মেচিং করে শর্ট উড়না।
উফফফ সেই পুরো ফরমাল লুক যাকে বলে।
ইয়ারিং এর বক্স টা খুলতেই চোখ জোড়া আটকে গেল।
স্টোন এর রিং এর মধ্যে আবার ছোট্ট পাথর দিয়ে ডিজাইন করা।
উফফফ পুরো ঝাকাস।
লোকটার চয়েজ আছে বলতেই হয়।
এর সাথে যদি ও সু বেশি মানায় কিন্তু আমি সু হিল পরবো।
এরা আমাকে কথায় কথায় বাচ্চা বলে , পরে দেখবো এদের বুকের নিচে পড়ে থাকবো।
তার থেকে ভালো সু হিল ই পরবো।
খারাপ লাগবে না দেখতে।

ফারহান ভাইয়ার কথা মতোই সব করলাম।

হালকা নুড লিপস্টিক , আইলেসে মাশকারা আর আয়লেনার।
সাদা কাজল দিয়ে নিলাম, কারন আমার চোখ বড় বড় না।
কালো কাজল দিলে আমার চোখ দেখাই যাবে না।
উঁচু করে ঝুঁটি বেধে নিলাম , সাথে আমার ছোট্ট পার্স।

বাহহহ আয়না তে নিজেকে দেখে নিজেই বললাম
– আহা কী লাগছে।
একটু কাজলের ফোঁটা দিয়ে যাই ।
নজর না লেগে যায়।

কানের পিঠে কাজলের ফোটা দিয়ে নিলাম।
তারপর কয়েকটা সেলফি তুলে মনিকা আপুর রুমে গেলাম।

মনিকা আপুর রুমে গিয়ে হা হয়ে আছি ।
মনিকা আপু ও প্রায় সেইম কালেকশন এর ড্রেস , যদি ও কালার টা আর ডিজাইন টা ভিন্ন।
যার দরুন বুঝতে পারলাম ফারহান ভাইয়া আর রিফাত ভাইয়া মিলেই করেছে এগুলো।

মনিকা আপুর রেডি প্রায় শেষ।
মনিকা আপু আমাকে দেখে বলল
– হায় রে ফারাবি । আজকে তো তুই গেলি , সাবধানে রাখতে হবে তোকে।
আমি একটা মেকি হাসি দিয়ে বললাম
– মোটে ও না ।
আজকে আমার ভাই তোমাকে নিয়েই উড়াল দিবে ।

আমার কথায় মনিকা আপু লজ্জা পেলো।

লজ্জা মুখেই বলল
– থাম তো এবার।

আমি মুখ চেপে হাসলাম
তারপর বললাম
– আচ্ছা আমার ভাবি জান আপনাকে লজ্জা পেতে হবে না আর।
চলুন এবার যাওয়া যাক।

মনিকা আপু আমার গাল টেনে বলল
– হুমম ননদিনী চলুন যাওয়া যাক।

দুজনেই হেসে দিলাম।
তারপর বেড়িয়ে পড়লাম।

চলবে
ফাতেমা তুজ

? স্বপ্নের প্রেয়সী ?
Part – 28
___________________________

বাসা থেকে বের হয়ে নিচে চলে আসলাম।
ফারহান ভাইয়া দের নিচে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করার কথা।
নিচে চলে যাওয়ার সময় বাগান থেকে কয়েকটা কাঠগোলাপ নিয়ে নিলাম।
কাঠগোলাপ আমার কাছে বেশ ভালো লাগে।
বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেই পেছন থেকে রিফাত ভাইয়া ডাক দিলেন।
রিফাত ভাইয়া কে দেখে মনিকা আপু রেগে গেলেন।
দুজনের মান অভিমান হয়ে ছে কি না।

রিফাত ভাইয়া মনিকা আপুর হাত ধরে আটকে দিলেন।
আমি একটা মেকি হাসি দিয়ে চলে আসলাম।
বাইরে বেরোনোর সময় একটু পেছনে তাকাতেই সামনে কারো সাথে ধাক্কা খেলাম।
সেই পারফিউম, আহা নাকে প্রবেশ করতেই অদ্ভুত শান্তি অনুভব করলাম।
বুঝতে পারলাম এটা ফারহান ভাইয়া।
ওনাকে ছেড়ে একটু দূরে সরে আসলাম।
ফারহান ভাইয়া গাড়িতে পিঠ ঠেকিয়ে দাড়িয়ে আছেন তা ও আবার আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
ফারহান ভাইয়ার দিকে তাকাতে লজ্জা লাগছিল।
নিজের অপ্রস্তুত বোধ কাটিয়ে মাথা উঁচু করে তাকালাম।
কিছুক্ষণের জন্য চোখ জোড়া স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল।
সাদা শার্টের উপর কালো কোর্ট , কালো পেন্ট আর কালো সু।
একটা সাদা কালো ফ্রেম এর সানগ্লাস ।
চুল গুলো জেল দিয়ে সেট করা।
হাতে টাইটানিক এর ওয়াচ।
উফফফ যা লাগছে না।
পুরো ক্রাশ, কিন্তু আমি ক্রাশ খেলাম না।
নিজের চোখ জোড়া কে সংযত রেখে নিচের দিকে তাকালাম।
কিছুক্ষণ পর ফারহান ভাইয়া গাড়ি থেকে সরে এসে একদম আমার কাছে এসে দাড়ালেন।
কিছুক্ষণ আমাকে মাথা থেকে পা অব্দি স্ক্যান করলেন।

তারপর আমার কাছে এসে মুখে ফু দিলেন।
আর সেই আবেশে চোখ জোড়া আপনাআপনি বন্ধ হয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পর ফারহান ভাইয়া উচ্চ শব্দে হেসে উঠলেন।
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে হা হয়ে আছি।
ওনি কখনো উচ্চ শব্দে হাসেন না।
ওনার দিকে চোখ যেন অবাদ্ধ হয়ে গেছে আবার লজ্জা ও লাগছে।
এতো স্নিগ্ধ তার হাসি , না চাইতে ও চোখ জোড়া আটকে যাচ্ছে।
মনে হচ্ছে সময় টা থমকে যাক।
আর আমি এভাবেই তাকিয়ে থাকি।
কিছুক্ষণ পর ফারহান ভাইয়া হাসি থামিয়ে আমার সামনে হাত দিয়ে তুরি বাজালেন।
আর আমি চমকে গিয়ে লজ্জা পেলাম।
ফারহান ভাইয়া মুচকি হেসে বললেন
– পিচ্ছি টা।
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।
____________________

?. পিন দেওয়া লাইন গুলো অবশ্যই পড়ে নিবেন ।

কিছুক্ষণ পর রিফাত ভাইয়া আর মনিকা আপু আসলো।
দেখেই বুঝলাম সমস্ত মান অভিমান কাটিয়ে নিয়েছে।
দুজন কে দেখে মুখ চেপে হাসছি আমি।
হঠাৎ রিফাত ভাইয়া আমাকে হালকা করে গাট্টা মেরে বলল
– হাসছিস কেন।

আমি ব্রু কুঁচকে বললাম
– ইসসস । দুজোন প্রেম করছে, আর আমি হাসলে
ই দোষ।

ফারহান ভাইয়া ও আমার কথায় সায় দিলেন।
কিন্তু পরক্ষণেই কথা পুরো পাল্টে দিলেন।
ফারহান ভাইয়া মাথার চুল গুলো ঠিক করতে করতে বললেন
– হুমম তাই তো , তোরা প্রেম করবি।আর ফারাবি হাসলেই দোষ।
দিস ইজ নট ফেয়ার।

আমি উজ্জ্বল চোখ নিয়ে বললাম
– এক্সাকলি ।
বলুন ,বলুন ওদের।

রিফাত ভাইয়া অবাক হয়ে আছে ।

ফারহান ভাইয়া রিফাত ভাইয়া কে ধরে বলল
– তাই তো ।
এতে ফারাবির কি দোষ।
আরে ওর ও তো প্রেম করতে ইচ্ছে করছে ।
রিফাত ভাইয়া আর মনিকা আপু হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠে গেলো।

আমি ওনার কথা শুনে হা হয়ে গেলাম।
চোখ মুখ কুঁচকে বললাম
– আমি কখন বললাম।

ফারহান ভাইয়া মৃদু হেসে আমার কাছে মুখ নিয়ে বললেন
– তুই চাইলে ও পারবি না।
তোর লাইফ এর প্রেম , রিলেশন , ঘোরাঘুরি সব বন্দি।

আমি ওনার দিকে সন্দিহান চোখে তাকালাম।

উনি হালকা হেসে বললেন
– বড্ড বেশি পিচ্ছি তুই।
সময় হোক, আগে বড় হো তারপর সব বুঝিয়ে দিবো।

আমি ওনার কথার মাথা মন্ডু মিলাতে পারলাম না।
কিছু বোঝার আগেই ওনি আমার হাত ধরে নিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে দিলেন।

রিফাত ভাইয়া আর মনিকা আপু পেছনে বসেছেন।
তাই আমাকে ফ্রন্ট সিটেই বসতে হলো।

ফারহান ভাইয়া ড্রাইভিং করবেন।
উনি ড্রাইভিং সিটে বসে আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলেন তারপর বললেন
– সিট বেল্ট টা ও বেঁধে দিতে হবে।
উফফফ

পেছন থেকে মনিকা আপু আর রিফাত ভাইয়া ফোরন কেটে বলল
– আরে ও তো বাচ্চা।
ওকে বড় করতে হবে তোকেই।
একমাত্র তোকেই তো ভয় পায়, আর আমাদের সাথে শুধু লেগে থাকে।
দেখ ভাই এই বাচ্চা কে মানুষ করতে পারিস কি না।
না হলে একে বিয়ে দিতে গিয়ে ও হিমসিম খেতে হবে।

এই বলেই দুজোন হাসতে লাগলেন।
আর ফারহান ভাইয়া মৃদু হাসলেন।
তারপর আমার সিট বেল্ট বেধে দিলেন।
আর আমি ওদের দুজোন এর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছি।
দুজোন আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে ইনোসেন্ট ফেস এ তাকালো।
আমি ওদের ভেংচি কেটে সামনের দিকে নজর দিলাম।
ফারহান ভাইয়া গাড়ি চালাতে থাকলেন।
গাড়ি ও চলল আপন মনে।
শীতের মাজে ও হালকা ফুরফুরে বাতাস বেশ ভালো লাগছে।
রাতের পৃথিবী দেখতে কিন্তু বেশ সুন্দর।
মনের ভেতর অজানা সব অনুভূতি হচ্ছে।
কিছুর অভাব তো বোধ করছি।
কিন্তু সেটি কি ?
এইসব প্রশ্ন আওরাতে থাকলাম কিন্তু কোনো উত্তর পেলাম না।

বেশ কিছুক্ষণ যাওয়ার পর ফারহান ভাইয়া গাড়ি থামালেন এক বিশাল লেকের পাশে ।
অসম্ভব সুন্দর লেক টা , রাত বা দিন যেকোনো সময়ে ঘোরার জন্য একদম পারফেক্ট।
লেকটার চারপাশ ঘিরে গাছ লাগানো।
কিছুদূর পর পর বিভিন্ন ফুড কোড ও আছে।
খানিকটা হাতির ঝিল এর মতোই , অসাধারণ।
চারপাশে হালকা লাইটিং করা।
যাতে চলতে তেমন কোনো সমস্যা না হয় ।
গাড়ি থেকে নেমেই আমি খুশি তে গদগদ হয়ে গেলাম।
ইসসস এখন যদি শীত কাল না হতো , তাহলে আমি এই লেকের পারে বসে পা ভেজাতাম।
রিফাত ভাইয়া পাশেই একটা ফুড কোড এ যাওয়ার কথা বললেন।
ঐ ফুড কোডের ফুচকা নাকি এখানকার বেস্ট ফুচকা।

এখানে পার প্লেটে মোট 5 টা ফুচকা দেওয়া হবে।
তবে 5 রকমের , যার স্বাদ নাকি অসাধারণ।
আর ফুচকার সাইজ ছোট ফুচকার চার ডাবল।

ফুড কোড টা অনেক বড় না।
মোটামুটি 20 – 25 জন একসাথে বসে খেতে পারবে।

আমরা একটা টেবিলে বসে ফুচকা অর্ডার করলাম।
5 মিনিটের মাথায় ফুচকা চলে আসলো।
ফুচকা গুলো দেখতেই খুব লোভনীয় লাগছে।
এখানে দই ফুচকা , ডাল ফুচকা , বিফ ফুচকা , চুরমুর ফুচকা আর পানি ফুচকা ( পানি পুরি )
আছে।
আমি এর আগে ও এই সব ফুচকা খেয়েছি কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন করে ।
ফুচকা মুখে দিতেই বুঝলাম এটা অসাধারণ।
এই রকম কোথাও খাই নি।
সবার আগেই সব গুলো ফুচকা টপাটপ খেয়ে নিলাম।
সবাই নিজের খাওয়া ছেড়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি ফুচকা মুখে দিয়ে ব্রু কুচকালাম।আর সবাই হাহা করে হেসে দিলো।
আমি পাত্তা না দিয়ে ফুচকা খেতে লাগলাম।
আর ও এক প্লেট খেতে চাইলাম।
কিন্তু ফারহান কুমার বারন করে দিলেন।
প্রথমত আর ও অনেক খাবার খেতে হবে আর ফুচকা বেশি খেলে পেট খারাপ হওয়ার চান্স থাকবে।
তাই আমি ও আর কিছু বললাম না।
খাওয়ার মাঝে সবার কতগুলো ছবি ও তুলে নিলাম।
ফারহান ভাইয়া বিল পে করে আমাদের নিয়ে ফুড কোড থেকে বেরিয়ে পরলেন।
______________________

?. আজকের পার্ট ছোট হয়েছে কি না এটা নিয়ে অভিযোগ করবেন না প্লিজ।
কাল সন্ধ্যা তে এই টুকু লিখেছিলাম রাতে লেখা হয় নি আর। এর কারন 1-27 পার্ট অব্দি অনেক কমেন্ট পড়া হয় নি আমার।
তাই কাল রাত জেগে সমস্ত কমেন্ট পড়ার চেষ্টা করেছি আর উত্তর ও দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আমার কিছু রিডার্স এর বেশ কিছু কনফিউশন পেয়েছি আমি।
আমি আমার সাধ্য মতো কমেন্ট এ বুঝিয়ে দিয়েছি।
তবু ও আমি আমার রিডার্স এর সুবিধার জন্য কনফিউশন গুলো আবার ক্লিয়ার করে দিচ্ছি।
আমি জানি না সেই সব কনফিউশন এর জন্য তারা আমার গল্পের এই পার্ট অব্দি পড়বেন কি না।
হয়তো কনফিউশন এর জন্য গল্প টাই অনেক এর কাছে ভালো লাগে নি।
যাই হোক যদি কেউ আসে এই পর্যন্ত তাই আমি আমার দায়িত্ব বোধ থেকে লিখছি।

?.

গল্পের শুরু তেই ফারাবি দশম শ্রেণীতে পড়ে তাহলে আবার 7 & 8 ক্লাস আসলো কী করে ?

– ফারাবি বর্তমানে দশম শ্রেণীতেই পড়ে । কিন্তু সে একটা সময় তো সপ্তম আর অষ্টম শ্রেণীতে পড়েছে তাই না।
আমি বলেছি ফারাবি মাঝে মাঝে তার অতীতের স্মৃতি তে ডুবে যায়।
যখন সে সপ্তম আর অষ্টম শ্রেণীতে পড়তো।
আমি ক্লিয়ার করেই লিখেছি যে স্মৃতি তে ডুবে ছিল বা কারো ডাকে ধ্যান ভাঙ্গলো।
আশা করি এই কনফিউশন টা এখন আর কারো থাকবে না।
যদি ও থাকে তো ইনবক্স এ আসবেন আমি আমার সাধ্য মতো বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশআল্লাহ ।

?.

ফারহান কি সবসময় ফারাবি দের বাসাতেই থাকে নাকি, ওর কি নিজের বাসা নেই?

– আমি গল্পের পার্ট এ লিখে দিয়েছিলাম ও ওর মামা বাড়িতে থাকে । কিন্তু কয়েক মাস আগে ওর আন্টির বাসাতে চলে এসেছে।
ওর মামা আর আন্টির বাসা সিলেট এই।
আর ফারাবি , ফারহান ওদের পৈত্তিক বাড়ি ঢাকাতেই।
সিলেট এ ফারাবি র আব্বুর বিশেষ ট্রান্সফারের কারনে চলে এসেছে।
আর ফারহান ও চলে এসেছে , কারন সে তার প্রেয়সী কে ছাড়া থাকতে পারে না।
এই লাইন টা আমার গল্পের শেষে দিতাম।কিন্তু কনফিউশন এর জন্য এই লাইন টা বলতে হলো ।
আশা করি কোনো কনফিউশন নেই, থাকলে অবশ্যই ইনবক্স এ বলবেন।
কারন কমেন্ট যদি গল্প দেওয়ার এক দিনের মধ্যে হয় তো আমি রিপলে দিতে পারি ।
বেশি দিন হয়ে গেলে সম্ভব হয় না। যার কারনে আমার পাঠকদের মনে হতে পারে লেখিকার গল্পে খামতি আছে তাই দেখে ও রিপলে দেয় না।

?.

ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এক জায়গায় কেন আছে ?

– আমি বলে দিচ্ছি এই গল্পে কেউ সংসার পাবেন না।
এই প্রেম কাহিনী টা হলো এমন যে একজন ভালোবাসি কিন্তু অন্য জন বুঝতে পারে না।
আর ফারহান নিজের ভালোবাসা টা প্রকাশ ও করে না।
এই গুলো শেষের পার্ট এ ক্লিয়ার হয়ে যাবেন।
কেন ফারহান তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারছে না।

?.

ফারহান তো ফারাবি কে 3 মাস ধরে পড়াচ্ছে তাহলে 8 মাস আসলো কি করে?

– এটা তো প্রথম পার্ট এই ছিলো। ফারহান ফারাবি কে 3 মাস ধরে পড়ায় । কিন্তু তার আগে ফারাবি 8 মাস অন্য টিচার দের কাছে পড়েছে।
8 মাসে 4 টি টিচার বদল হয়েছে। কারন কেউ ফারাবি কে পড়াতে পারে নি । যার কারনে ফারহান ফারাবিকে পড়ানো শুরু করেছে ।
কারন ফারহান কে ফারাবি প্রচন্ড ভয় পায়।
আর ফারহান তার ভালোবাসা এভাবেই প্রকাশ করে যার কারন শেষের পার্ট এ ক্লিয়ার হবেন।

আপাতত এই কয়েকটা কনফিউশন ই মনে পড়ছে। যদি কারো আরো কনফিউশন থাকে তো প্লিজ কমেন্ট করবেন গল্প দেওয়ার এক দিনের মধ্যে ।
আর হ্যাঁ ইনবক্স এ জানাতে পারেন ইনশআল্লাহ কনফিউশন ক্লিয়ার করার চেষ্টা করলাম ।

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here