#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2,51,52,53
#ফাতেমা_তুজ
#part_51
মৃদু ছন্দে গান বাজানো হচ্ছে। লাইটিং এ ছাঁদের চারপাশ চকচক করছে। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা । ফারহানদের প্লান মোতাবেক সব ই হচ্ছে। বড় মা আর বড় আব্বু এখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। মোট কথা বড় রা কেউ ই জেগে নেই।
বারোটা বাজার পাঁচ মিনিট আগে শুরু হবে এক নাটক।
ফারাবি ফিস ফিস করে ফারহান কে বলল
_ সব ঠিক আছে তো ? রিফাত ভাইয়া কে জামা টা পড়ানো হয়েছে ?
আর মেকাপ টা কে করিয়েছে ?
_ আরে হ্যাঁ সব ওকে। মেকআপ টা আমি করে দিয়েছি। যা দেখতে লাগছে না। প্রথমে তো রাজি ই হচ্ছিল না।
ফারাবি ফিক করে হেসে দিলো। ফারহান তাড়া দিয়ে বলল
_ এখন কিচেনে গিয়ে ফ্রিজ থেকে কেক নিয়ে ঝটপট কেক টা সাজিয়ে ফেল।
_ আচ্ছা আমি তাহলে ডাইনিং এ যাচ্ছি।
_ হুমম ফাস্ট। আর পা টিপে টিপে যাহহ। শব্দ বেশি হলেই সবাই জেগে যাবে। দ্যান কোনো মজাই হবে না।
ফারাবি নিঃশব্দে মাথা ঝাঁকিয়ে ডাইনিং এ চলে গেল। ফারহান করিডোরে গিয়ে ফাহিমের কাঁধে হাত রাখতেই ফাহিম ভয় পেয়ে খানিক টা চিৎকার করে উঠলো।ফারহান ফাহিমের মুখ চেপে ধরে বলল
_ শালা থাম , কেস খাওয়াবি তো ? আরেক টুর জন্য প্লান টা যেত ভেস্তে।
ফাহিম উমমম উমম শব্দ করছে। অর্থাৎ সে কিছু বলতে চাচ্ছে কিন্তু ফারহান মুখ চেপে ধরায় মুখ থেকে উম উম শব্দ বের হচ্ছে। ফারহান বিরক্ত হয়ে ফাহিমের মুখ টা ছেড়ে দিলো ।লম্বা লম্বা দম ফেলে ফাহিম বলল
_ আরে ভাই মেরে ফেলবা নাকি ? আর শোনো আমি তোমার শালা হই কেমনে ? ভাবি তো আগে আমার ভাবি তারপর বোন। তাছাড়া আমার থেকে ছোট ওহ।
আর শালা তো তুমি আমার হবে। যদি ওহ তুমি বড় , তবে তোমার বোন তো আমার ই বউ।
ফারহান ধুম করে ফাহিম এর পিঠে কিল বসিয়ে দিলো। ফাহিম আহ করে উঠলো। পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলল
_ ভাই এখনো আগের মতোই মারছো ? এবার তো অফ যাও।
_ আমার বোন তোর বউ না।
_ মানে ?
_ মানে এখনো তদের বিয়ে হয় নি সো হবু বউ বল।
ফাহিম মেকি হাসি দিয়ে বলল
_ ঐ আর কি। কিন্তু একটা কথা বলো রিমি কোথায় ?
_ রিমি আছে মনিকার সাথে। ফুল গুলোর পাপড়ি ছড়াচ্ছে। একটা কথা সত্য তুই আমার বোন কে অনেক ভালোবাসিস।
ফাহিম স্মিত হাসলো । খুব করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে আমি ওকে আমার প্রানের থেকে ও বেশি ভালোবাসি। কিন্তু এক আড়ষ্টতা এসে ভর করলো। হয়তো হবু স্ত্রী র বড় ভাই তাই এই অস্বস্তি।
এক ঝুরি ফুলের পাপড়ি ছাড়াচ্ছে রিমি আর মনিকা।রজনী গন্ধা ফুল হওয়াতে কষ্ট টা চার গুন হয়ে গেছে। মনিকা তো হাল ই ছেড়ে দিলো । রিমি ভ্রু কুঁচকে বলল
_ আরে বসে পরলে কেন ? এখনো কত ফুল রয়েছে। আসো আসো , কতো কাজ এখনো ।
_ ছাড় তো আমি আর পারবো না। ঘন্টা খানেক ধরে একি ফুল ছাড়াচ্ছি। অন্য ফুল হলে এতো কষ্ট হতো না। এই রজনী গন্ধার কি প্রয়োজন।
রিমি মৃদু হাসলো। তার মনে ও একি প্রশ্ন এসেছে। এই রজনী গন্ধা ফুল দিয়েই কেন সাজাতে হবে । তবে মানসিকতা নেই সেই দিকে পাত্তা দেওয়ার।
বুকের ভেতর ই চেঁপে রাখলো দীর্ঘশ্বাস গুলো। ফুলের পাপড়ি ছাড়িয়ে ডাইনিং এর টেবিলে এ রেখে দিলো।
_ এই রিমি শোন না ।
ফারাবির কন্ঠে রিমি পেছন ফিরে তাকালো। কিচেনে যেতেই ফারাবি ভ্যাগা ভ্যাগা করে বলল
_ দেখ না মোম গুলো তো লাগিয়েছি তবে এই ম্যাজিক লাইট টা লাগাতে পারছি না। তোর ভাই কে একটু ডেকে দে না।
_ আচ্ছা আমি ডেকে দিচ্ছি। আচ্ছা একটা কথা বলতো।
_ হুমমম বল
_ সব কিছু রজনী গন্ধা দিয়েই সাজানো হচ্ছে কেন ?
ফারাবি অধর কোনে হাসি ফুটিয়ে নিলো । ফ্রিজ থেকে ছোট ছোট চকলেট বল বের করে কেকের উপর ছড়িয়ে দিলো। কেক টা ফারাবির মা নিজ হাতে বানিয়েছেন। ওনার কেক বানানোর হাত অসাধারন।
_ কিরে বলছিস না যে ?
_ উমম জানতে পারবি। এটা নিয়ে মজার একটা কাহিনী আছে । এখন প্লিজ প্লিজ তোর ভাই কে ডেকে দে ।
_ যাচ্ছি বাবা । বর কে দেখতে ইচ্ছে করছে তা বললেই হয়।
রিমির কথা টা শুনেই ফারাবি ফিক করে হেসে দিলো। মেয়েটা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছে দেখেই ফারাবির বুক টা ভরে উঠলো। রিমি একটু চেষ্টা করলেই হবে বাকি পথ নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব তো ফাহিমের।
মিনিটের মধ্যে ফারহান এসে হাজির। ফারাবি তখন কাপ কেকে ক্রিম লাগাচ্ছে। কয়েকটা চুল কানের পিঠ থেকে বেরিয়ে কপালে আঁচড়ে পরেছে। ঠোঁট দুটো কামড়ে ক্রিম লাগাচ্ছে। যেন পৃথিবীর সব থেকে কষ্টের কাজ সে করছে। ওড়নার এক কোন কখন থেকে যে মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে সেই দিকে তার ধ্যান ই নেই।
সমস্ত ধ্যান ধারনা রয়েছে কাপ কেকের দিকে। ফারহান প্রায় মিনিট খানেক হলো তার সামনে দাড়িয়ে । কিন্তু তাতে খেয়াল ই নেই। ফারহানের বেশ রাগ হচ্ছে। কাপ কেক কি তার থেকে ও গুরুত্বপূর্ন হয়ে গেল।
ফারহানের ইচ্ছে হচ্ছে মেয়েটার কানের নিচে দিতে। ফাজিল মেয়ে বরের প্রতি কোনো খেয়াল নেই। দেখা যাবে বর কে কেউ নিয়ে চলে যাচ্ছে তা ও ওনি কাপ কেকে ক্রিম ই লাগাচ্ছেন।
ফারহান খ্যাক করে কাশলো। ফারাবি চমকে তাকালো। হঠাৎ কারো উপস্থিতি টের পেয়ে ভয় পেয়েছে খুব । বুকে থু থু দিয়ে বলল
_ এভাবে ভয় দেখাচ্ছেন কেন ?
_ ভয় দেখালাম আমি ?
_ তো কে ? এখানে কি আপনি বাদে আর কোনো হনুমান আছে ? আমি তো দেখতি পাচ্ছি না।
_ ফারাবি খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু । একটু ভালোবাসি বলে যখন তখন আমাকে ধমকে দিচ্ছিস।
ফারাবি দাঁতে দাঁত চেপে রইলো। ভেতরে ভেতরে ভয়ে ফুটো বেলুন হয়ে গেছে। কিন্তু সে ঠিক করেছে ফারহানের সামনে নিজের দুর্বলতা তুলে ধরবে না আর। এখন থেকে ফারহান কেই শাসন করবে।
গুগল এ সার্চ ও করেছে স্বামী কে কি করে শাসন করতে হয়।
পরিশেষে যা এসেছে তা হলো স্বামীর পিছে লেগে থাকো আর কি। স্বামীর যত্ন ব্লা ব্লা । কিন্তু ফারাবির বর টা যে সবার থেকে আলাদা । একে টাইট দেওয়ার ট্রিক কি আদৌ তৈরি হয়েছে।
উহহু হয় নি । তবে ফারাবি নিজ জ্ঞানে চেষ্টা করছে। যদি পেরে যায় তো কেল্লাফতে। বহুত প্যারা দিয়েছে এবার ফারহান কে প্যারা দেওয়ার পালা ।
ফারাবি পৈশাচিক হাসি তে মেতে উঠলো। ফারহান মুখের সামনে তুরি বাজাতেই ভয় পেয়ে দশ হাত দূরে চলে গেল। ফারহান বাঁকা হেসে বলল
_ আমাকে টাইট দেওয়ার প্লান করছিলি না ? আমি তুরি বাজাতেই দশ হাত ছিটকে গেলি ?
ফারাবি বোকার মতো চেয়ে রইলো। এই ছেলেটা কি করে বুঝলো ? ওহহ তো মনে মনে বলছিলো । ফারহান খ্যাক করে কেশে বলল
_ আমি আমার বউ এর মন পড়তে পারি।
_ মোটে ও না। আপনি আমার মন একটু ও পড়তে পারেন না।
_ তোর মন কেন পড়তে যাবো ?
_ মানে একটু আগেই তো বললেন আপনি আমার মন পড়তে পারেন।
_ কখন বললাম ? আমি তো বলেছি আমার বউ এর মন পড়তে পারি।
ফারাবি চোখ দুটো ছোট ছোট করে তাকিয়ে রইলো। দুটো কথা মেলানোর চেষ্টা করলো। নাহ ঠিকি তো আছে। সে তো ভুল কিছু বলে নি।
_ ভুল কি বলেছি ? আপনি ই তো বললেন বউ এর মন পারতে পারেন ।
_ তুই আমার বউ ?
ফারাবি মাথা নিচু করে নিলো। হঠাৎ করেই লজ্জা পেয়ে গেল। ফারহান মুখ চেপে হেসে ফারাবির কাছে এসে দাঁড়ালো। ফারাবি কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে গালে চুমু খেয়ে নিলো । ফারাবি লজ্জায় লাল টুকটুকে হয়ে গেছে। ফারহান কে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলল
_ কি করছেন কি ? কেউ এসে পরলে ।
_ উহহু কেউ আসবে না।
_ ছাড়ুন তো।
ফারহান ছাড়লো না। ফারাবির আরেকটু কাছে এসে মৃদু হাসলো। কপালে কপাল ঠেকিয়ে ঠোঁটের দিকে আগাতেই রিমির চিৎকার।
_ এই আমি কিছু দেখি নি। আমি তো শুধু বলতে এসেছিলাম বারোটা বাজতে দশ মিনিট বাকি।
ফারাবি নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পরলো। কিন্তু ফারহান ছাড়ছেই না। এই লোকটার কি কোনো লজ্জা সরম নেই ? ছোট বোনের সামনে বউ কে জড়িয়ে ধরে আছে । রিমি চলে গেল । ফারহান ড্রেভিল স্মাইল দিয়ে ফারাবির ঠোঁটে চুমু খেয়ে নিলো।
চলবে
#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2
#ফাতেমা_তুজ
#part_52_53
52
রিফাত কে দেখে সবাই অট্টহাসি তে ফেটে পরলো। রিফাত ফারহানের দিকে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই ফারহান মাথা চুলকালো। ফারাবি খোঁচা মেরে বলল
_ ভাইয়া তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
রিফাত ভ্রু কুঁচকে নিলো । আস্ত এক ভুত সাজানোর পর সত্যি ই কি তাকে সুন্দর লাগছে ? ভুত সাজানোর জন্য ওকেই কেন বেছে নেওয়া হলো । আর ও অনেকে ই তো ছিলো। তাদের কেন ভুত সাজালো না।
_ কি রে ভাই কি ভাবিস ?
_ আমাকেই কেন ভুত সাজালি বল তো ? এই সাদা ঢিলেঢালা চাদরে মতো কি একটা কস্টিউম এনেছি । ইয়াক
মনিকা তাচ্ছিল্য হেসে বলল
_ পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে এই কস্টিউম বানানো হয়েছে। তাতে ও ওনার চুলকোনির শেষ নেই।
পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে কস্টিউম বানিয়ে আনতাম ?
রিফাত কোমরে হাত গুঁজে নিলো। মনিকা এতো ফুঁসলে গেল তার মানে এই প্ল্যান টা ওর ছিলো। দাঁত কিরমির করতে করতে স্থান ত্যাগ করলো। পানি খেতে যেতেই সবাই হুমরি খেয়ে পরলো।
রিফাত অবাক হয়ে তাকালো। এদের সমস্যা টা কি তা বুঝে উঠতে পারলো না।
_ পানি খাওয়া যাবে না ।
_ কেন ?
ফারাবি ফাঁকা ঢোঁক গিলে নিলো। রিফাত যদি একবার নিজেকে দেখে তো নিজেই ভয় পেয়ে যাবে । ওকে পুরো অশরীরীর মতো লাগছে। যে কেউ ভয় পেতে বাধ্য।
মনিকা পরিস্থিতি সামলাতে আমতা আমতা করে বলল
_ তোমার ঠোঁটে যে সাদা পাউডার লাগানো হয়েছে সেটা চলে যাবে।
রিফাত সন্দিহান চোখে ফাহিম এর দিকে তাকালো। ফাহিম ও মনিকার কথাতে সায় দিলো। বিরক্তি তে ভরে উঠলো রিফাতের মুখ। সবাই কে আস্ত গিলতে ইচ্ছে করছে। বিরক্তির কারনে মুখ দিয়ে চ এর মতো শব্দ করলো। সবাই মুখ চেপে হাসছে। কিছু বলবে তার আগেই রাফাজ লাফিয়ে এলো।
_ তাড়াতাড়ি আয় , আর পাঁচ মিনিট বাকি।
রিফাত মাথা ঝাঁকালো । সবাই মুখ টা এমন করে রাখলো যেন কোনো বিশ্ব যুদ্ধে নেমেছে তারা। ফারাবি কাঠ হয়ে যাওয়া ঠোঁট টা জ্বিভ দিয়ে ভিজিয়ে নিলো।
যদি ও বকা খাওয়ার চান্স নেই। তবু ও পচন্ড ভয় হচ্ছে। প্লান টা সাকসেসফুল হলেই হয়। রিফাত এক পা এক পা করে এগোলো । ফারাবি ওহ পেছন পেছন যাচ্ছিলো । ফারহান দু হাতে চেপে ধরে বলল
_ তুই কোথায় যাচ্ছিস ? ধরা খাওয়ার শখ হয়েছে নাকি ?
ফারাবি মাথা হেলিয়ে বলল
_ উহহু একদম না।
_ এই দিকে আয়। আমরা সবাই আড়াল থেকে দেখবো।
রিফাত ধীর পায়ে বাবা মায়ের রুমের কাছে আসলো। সবাই আড়াল হয়ে আছে।
রিফাত দরজায় দু বার খটখট আওয়াজ করলো। করিডোরের লাইট টা কাটিং করা হয়েছে। মিনিট যাওয়ার পর ই দরজা খুলে গেল। রিফাত একটু আড়াল হয়ে গেল।রিফাতের বাবা এদিক ওদিক ঘুরে তাকিয়ে চলে গেলেন। আবার দরজায় খটখট আওয়াজ হলো ওনি আবার এসে ফিরে গেলেন। আবার দরজায় খটখট আওয়াজ হতেই খুলে দিলেন। রিফাত পালাতে যেতেই ওনি দেখে ফেললেন। হালকা করে চিৎকার করে উঠলেন। ফলে রিফাতের মা ও জেগে গেলেন। রিফাত একটু একটু করে হাঁটতে লাগলো। রিফাতের মা বাবা ও হাঁটতে লাগলেন।
ওনারা রিফাত কে চোর ভেবেছেন। আবার সাদা কাপড়ের ছায়া দেখে ও ভয় পেলেন খানিকটা। তবু ও পিছু নিলেন । করিডোরের লাইট টা জ্বলছে না দেখে ওনারা আতঙ্কিত হলেন।
এক পা দু পা করে আগাতে আগাতে সবাই ছাঁদে উঠে গেল। ছাঁদ ঘুটঘুটে অন্ধকার। রিফাতের বাবা লাইট টা আনেন নি। কোথা থেকে যেন মিন মিন করে ভুতুরে সুর ভেসে আসছেন। রিফাতের মা রিফাতের বাবার হাত ধরে বললেন
_ আগে লাইট নিয়ে আসি চলো।
_ সময় নেই। চোর টা পালিয়ে যাবে।
_ গেলে যাক আসো।
রিফাতের বাবা শুনলেন না। আরেকটু আগাতেই রিফাত সামনে এসে হাত দুটো নাড়াতে লাগলো। আর ছাদের এক ছাইটের পজেক্ট এ ভুতের বিকৃতি ছবি চলে আসলো। রিফাতের মা চিৎকার করে উঠলেন। ওনার স্বামী কে জড়িয়ে ধরতেই লাইট জ্বলে উঠলো।
সবাই চিৎকার করে বলল
_ happy 30 marriage anniversary.
সঙ্গে সঙ্গে রজনী গন্ধা ফুলের পাপড়ি গুলো ওনাদের মাথায় এসে পরলো। সবাই হৈ হুল্লর করে উঠলো।
রিফাতের মা বাবা অবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন। বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়েরা এই সব কি আয়োজন করেছে।
বিস্ময়ে হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন।
সবাই জোড়ে চিৎকার করে উঠলো। উপর থেকে পার্টি স্প্রে ঝরানো হলো। সাথে পার্টি পেপার।
এবার পুরো লাইট অফ হয়ে গেল। সাদা প্রজেক্ট এ বড় মা আর বড় আব্বুর হাস্য উজ্জল ছবি গুলো আসতে লাগলো। পুরনো কতো স্মৃতি। রিফাতের বাবা যেদিন রিমাতের মা কে দেখতে যান সেদিন ই পছন্দ হয়ে যায়।
আর তারপর একদিন আলাদা করে দেখা করেন। সেদিন রজনী গন্ধা ফুল দিয়ে ভালোবাসা নিবেদন করেছিলেন ওনি। সেটাই ছিলো ওনাদের ভালোবাসার কিংবা সম্পর্কের প্রথম প্রেম ময় সংলাপ।
আর যার দরুন সব ডেকোরেশন করা হয়েজে রজনী গন্ধা দিয়ে।
সবাই হৈ হুল্লর করতে লাগলো। ফারহান আর ফারাবির বাবা মা ও এসে পরেছেন। সবাই রিফাতের মা বাবা কে উইস করলেন।
ওনারা খানিক টা লজ্জা পেলে ও বেশ খুশি হয়েছেন।
আজ ত্রিশ বছর পর পুরনো স্মৃতি গুলো। দুজনের চোখেই পানি চিক চিক করছে। অধিক সুখে চোখে জল যাকে বলে।
সবাই হাত তালি দিয়ে কেকের দিকে এগিয়ে গেলো। কেক টা কেঁটে সবাই মিলে আনন্দ করতে লাগলো।
অজ্রস ছবি তুলে নিলো। সবাই মিলে আনন্দ করে যে যার রুমে চলে গেল। কারন কাল সন্ধ্যা তে দারুন সব পার্টি আছে। ফারহান বলেছে কি সব সিক্রেট কাজ ও আছে। তাই সবাই কে এক টা করে শপিং ব্যাগ ধরিয়ে দিয়েছে।
আর বলেছে যেন সন্ধ্যার দিকেই শপিং ব্যাগ খুলে দেখে।
সবাই তাতেই সম্মতি জানিয়ে চলে গেছে।
ফারাবি নিজের ঘরে থাকবে বলে ঠিক করেছে কিন্তু ফারহান টেনে হিঁচড়ে তাকে তাদের বাসায় নিয়ে গেছে।
তার জন্য ফারাবির ভীষন রাগ হয়েছে।
গোমড়া মুখ করে বেডের উপর পা তুলে বসে আছে। পরনে ঢিলে ঢালা এক টা কুর্তি।
ফারহান বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসে ট্রাওয়াল টা ফারাবির দিকে তাক করে ছুঁড়ে মারলো। ফারাবি ভ্রু কুঁচকে থেকে মুখ টা মলিন করে ফেললো।
এবার ফারহানের সত্যি ই খারাপ লাগলো। ফারাবির কাছে ধীর পায়ে এগিয়ে আসলো। ফারাবি মুখ তুলে তাকালো ও না।
ফারহান হাঁটু গেড়ে বসে ফারাবির কোলে মাথা রাখলো। ফারাবির কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। ফারহান কষ্ট পেল। ফারাবি কি আদৌ বুঝতে পারলো তার নিরবতা ফারহানের বুকে রক্ত ক্ষরন করে চলেছে। নাকি ফারাবি বুঝে ও না বুঝার চেষ্টা করলো।
ফারাবির হাত দুটো মুঠো বন্দী করে চুমু খেল। আবেগ প্রবন কন্ঠে বলল
_ এতো টা কষ্ট দিয়েছি আমি ?
নো রেসপন্স । ফারহানের বুক টা কেঁপে উঠলো। ফারাবির নিরবতা ওকে ভেঙে দিয়েছে। ফারহান এক পলক তাকিয়ে ব্যলকনিতে চলে গেল।
চাঁদ টা আধারে ডুবে আছে। মধ্য রাত্রী হলে ও অদূরে লাইট জ্বলছে। সবাই তার নিজ নিজ কাজে মত্ত। ফারহান অল্প পরিমানে হাসলো। তবু ও হাসি টা মিলিয়ে গেল।
বুকের ভেতর যন্ত্রণা হচ্ছে। আকাশের দিকে তাকিয়েই রইলো। মৃদু বাতাসে চুল গুলো নড়ছে। হঠাৎ পেছন থেকে কারো অস্তিত্ব অনুভব করে ফারহান ঘুরে তাকালো।
ফারাবি মাথা নিচু করে আছে। ড্রিম লাইট এর আলোতে মুখ টা কেমন উসকো খুসকো দেখাচ্ছে।
ফারহান কাছে গেল। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে ফারাবি কে জড়িয়ে ধরলো।
ফারাবির অবাধ্য চোখ দুটো বৃষ্টির বর্ষন নামিয়ে দিলো। এই টুকু সময়ের একাকীত্ব ওকে ও যে ভেঙে দিয়েছে।
নাক টেনে ভাঙা গলায় বলল
_ আমি আর কখনো এমন করবো না। খুব ভুল করেছি । আমাকে ক্ষমা করুন প্লিজ।
আমি জানি আপনাকে ছাড়া আমি একটা নিশ্বাস ও ফেলতে পারবো না।
_ উহহু তোকে অনেক দিন বাজতে হবে। আমি থাকি বা না থাকি তোকে অপেক্ষা করতে হবে। এভাবে চোখে নোনা জলের স্রোত আমার একদম পছন্দ নয়।
এবার একটু হাঁস তো।
ফারাবি ছলছল নয়নেই হাসলো। ফারাবির গালে লেগে থাকা নোনা জল টুকু উষ্ণ অধরে শুষে নিলো ফারহান। ফারাবি খুব শক্ত করে ফারহান কে জড়িয়ে ধরলো । ফারহান মৃদু হেসে ফারাবি গলায় ছোট করে কামড় বসিয়ে দিলো।
ফারাবি রাগি দৃষ্টি তে তাকাতেই ফারহান খিল খিল করে হেসে উঠলো। মধ্য রাত্রী তে সে হাসি বিকট শব্দ তুলছে। সে হাসির শব্দে দালান বিস্ফোরিত না হলে ও ফারাবির মন দগ্ধ হয়ে গেছে । প্রেমাগুনে জ্বলে গেছে। তবু ও অদ্ভুত শান্তি।
53
গাড়ির হর্ন আর বিকট আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল ফারহানের। বিরক্তি তে নাক কুঁচকে নিয়েছে। চোখে মুখে সূক্ষ্ম ভাঁজ পরে গেছে। উঠতে গিয়ে টান অনুভব করলো। টানের উৎস দেখার জন্য পাশে তাকাতেই ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো। এক ফালি হেসে ঝুঁকে নিলো। ফারাবির তেলতেলে মুখ টা তে চেয়ে রইলো। সমস্ত বিরক্তি ভালো লাগা তে পরিনত হলো। মেয়েটা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। দেখতে কি নিষ্পাপ লাগছে। ফারাবির কপালে শুষ্ক ঠোঁট টা ছুঁইয়ে দিয়ে আবার আষ্ঠে পৃষ্ঠে জড়িয়ে শুয়ে পরলো। মেয়েটা ও উষ্ণতা পেয়ে ফারহান কে ঘুমের ঘোরে খামচে ধরলো। ফারহানের বুকে মুখ রেখেই শুয়ে রইলো।
ঘুম ভাঙলো সাড়ে আটটার দিকে। ফারাবি নিজেকে ছাড়াতে পারছে না। কারন ফারহান তাকে বুকে মিশিয়ে রেখেছে। ধীর হাতে ফারহানের বাহু ঝাঁকাতে লাগলো। ফারহানের ঘুম আসে নি। তাই একটু নড়চড়েই বুঝে গেল। আলতো হেসে উঠে পরলো। ফারাবি লম্বা হাই তুলে বলল
_ কাল এতো ঘুমিয়েছি । ফজরের সময় উঠতেই পারি নি।
_ কাল রাতে দেরি করে ঘুমানোর জন্য ই এমন টা হলো। যাই হোক ফ্রেস হয়ে নে। আমি নাস্তা বানিয়ে আনছি।
_ আপনি বানাবেন ?
ফারহান মাথা ঝাঁকালো । ফারাবি মোহনীয় দৃষ্টি তে তাকিয়ে বলল
_ যান আমি ও আসছি।
ফারহান সম্মতি জানিয়ে চলে গেল। ফারাবি দ্রুত ফ্রেস হয়ে কিচেনে চলে আসলো। ফারহান সব কিছু নামাচ্ছে।
_ কি বানাবেন ?
_ রুটি আর ভাজি । কিন্তু কি ভাজি করি বল তো। আলু তো কিছুতেই না।
_ আলুর পরোটা বানিয়ে দিন না।
_ একদম নয়। এভাবেই অসুস্থ হয়ে যাবি। অতিরক্ত তেল যুক্ত খাবার কম খেতে হবে। আমি বরং পেঁপে ভাজি করে নিই। ইয়া এটাই বেস্ট।
ফারাবি মুখ টা ছোট করে নিলো। খাবারের প্রতি এতো নজর ফারহানের। ফারহান এসেই তার প্রিয় খাবার গুলো আউট করে দিয়েছে। একটু তেল চর্বি জমলে খুব কি ক্ষতি ?
ফারহান কফি মগ ঠা ফারাবির দিকে এগিয়ে ইশারায় খেতে বললো।
ফারাবি কফি নিয়ে চুমুক দিলো। ব্ল্যাক কফি , ফারাবির ও খুব পছন্দ।
ফারহান একটু চুমুক দিয়েই আটা নামিয়ে নিলো। রুটি মেকার দিয়ে তো রুটি ভেজে নিবে। কিন্তু মাখতে তো হবেই।
ফারাবি কফি কাপ টা রেখে ফারহানের দিকে এগিয়ে এলো। বোলে আটা নিয়ে বলল
_ আটা আমি মাখতে পারি। আপনি পেঁপে বাজি করুন।
ফারহান মৃদু হেসে চলে গেল। ফারাবির বাবা প্রতি দিন রুটি খেতেন। একদিন মা অসুস্থ থাকায় আর বড় মা বাসাতে না থাকায় ওহ আটা মেখেছিল। বেশ চেষ্টা চালিয়ে সক্ষম হয়েছিলো। তাই রুটি বানাতে পারে সে। তবে অবশ্য ই রুটি মেকারে।
*
ফারহান সকালের দিকে ফারাবি কে বাসায় নামিয়ে দিয়ে কোথাও একটা চলে গেছে। কি নাকি কাজ আছে। ফারাবি থম থমে মুখ করে বাসা থেকে বেরিয়ে রিমির কাছে চলে গেল। খুব সম্ভবত রিমি কানে ইয়ারফোন গুঁজে গান শুনছে।
রিমির অভ্যাস এটা।
রাফাজ বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে। শুধু রাফাজ নয় বাসার সবাই বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে। একশ জনের আয়োজনের কথা থাকলে ও তিন শত জনের আয়োজন হচ্ছে। কারন ফ্যামিলির মানুষদের নিয়েই একশ জন পেরিয়ে গেছে। ঘনিষ্ঠ কিছু আত্মীয় স্বজন কে ও তো ইনভাইট করতে হয়। তাই সবার কাজ বেড়ে গেছে।
রিফাত গেট দিয়ে ঢুকছিলো ওমন সময় মালি পানির পাইপ ঘুরিয়ে নিলো।
আর পানি গিয়ে পরলো রিফাতের শরীরের। রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রিফাত চলে গেল।
মনিকা মুখ চেপে হাসতে লাগলো। কারন পানি তে চুপচুপ হয়ে গেছে রিফাত। মনিকা এবার হো হো করে হেসে দিলো। দাঁত কিরমির করতে করতে রিফাত চলে গেল।
মনিকা ফুলের ঝুরি নিয়ে আগাচ্ছিলো। হঠাৎ করেই আকাশ থেকে পানির বর্ষন হয়ে গেল। মনিকা হতবাক হয়ে গেল। হঠাৎ বৃষ্টির হেতু খুঁজতে উপরে তাকালো।
রিফাত বালতি হাতে হেসে যাচ্ছে। মনিকা ফুলের ঝুরি রেখে দিয়ে দৌড়ে গেল সে দিকে।
” এই মনিকা এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন ? ভিজে গেলি কি করে ?”
ছোট মায়ের কথায় থমকে দাঁড়ালো। ভ্যাগা ভ্যাগা করে বলল
_ তোমার ছেলে ভিজিয়ে দিয়েছে। দেখো কি করেছে ।
ছোট মা একটু আফসোস করে আদুরে কন্ঠে বললেন
_ থাক মা এখন রাগ করিস না। তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে আয়। আমি বকে দিবো।
মনিকা কথা বাড়ালো না। সামনে যেতেই রিফাতের মায়ের মুখোমুখি । এবার মনিকা কেঁদে ই দিলো। আদুরে কন্ঠে সব বলল। রিফাতের মা একটা ট্রাওয়াল হাতে দিয়ে বললেন
_ চেঞ্জ করে আয়। আমি দেখছি বাদর টা কোথায়।
মনিকা ঠোঁট দুটো প্রশস্ত করে চলে গেল।
দুপুরের দিকে ফারহান বাসায় আসলো। ঘেমে পুরো একাকার হয়ে গেছে। ফারাবি তখন কিচেনে। রিমি ফারাবিদের বাসাতেই ছিলো । মোট কথা আজ সবাই এ বাসাতে। ডাইনিং থেকে পানি নিয়ে ফারহানের দিকে এগিয়ে দিলো। শার্টের দুটো বোতাম খুলে আলগা করে নিয়ে সোফা তে বসলো।
পানি টা খেয়ে রিমি কে বলল
_ আমার পাশে বস তো।
রিমি বসলো। ফারহান ভালো করে দেখে বলল
_ ফাহিম কে বিয়ে করতে কোনো অসুবিধা আছে ? আমি প্রথমে জোড় করেই বলেছিলাম। কিন্তু তুই না চাইলে বিয়ে টা হবে না।
রিমি মলিন হাসলো। মনের শান্তির জন্য সে বিয়ে টা করছে না সবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বিয়ে টা করছে। এক জনের জন্য পুরো পরিবার কে কেন কষ্ট দিবে ?
ফারহান এগিয়ে এসে বোনের মাথায় হাত বুলালো। রিমির কপালে হালকা করে চুমু দিয়ে বলল
_ ফাহাদ কে এখনো ভালোবাসিস ?
রিমি চোখ ঘুরিয়ে নিলো। চোখ ফেটে পানি আসছে। যথাসম্ভব পানি থামানোর চেষ্টা করলো। ফারহান কিছু বললো না। নিশ্বাস ফেলে বোনের হাত টা ধরলো। দু হাতে মুষ্ঠি বদ্ধ করে নিলো। রিমি স্বাভাবিক হয়ে বলল
_ আমার সমস্যা নেই ভাইয়া। আমি কেন থেমে থাকবো। আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করবো ফাহিম কে ভালোবাসার।
কথা টা বেশ কষ্ট করেই বললো রিমি। ভালোবাসা শব্দ টা যে ফাহাদের সাথে জুড়ে আছে। এর রেশ কেঁটে যাবে একদিন। কিন্তু কষ্ট টা কোথাও না কোথাও থেকে যাবেই। তবু চেষ্টা করবে মুভ অন করার। ফারহান অধর কোনে হেসে চলে গেল।
সিঁড়ি তে দাঁড়িয়ে সমস্ত টাই শুনেছে ফাহিম। ঠোঁটের কোন প্রশস্ত করে নিচে নেমে আসলো।
*
” ফারাবি এই ফারাবি। কোথায় তুই ”
ফারহানের মায়ের ডাকে কিচেন থেকে হন্তদন্ত হয়ে বের হলো ফারাবি। হাত টা মুছতে মুছতে বলল
_ আন্টি এই যে আমি।
ফারাবির কথাতে ভ্রু কুঁচকে নিলেন ওনি। কন্ঠে কাঠিন্য এনে বললেন
_ একটা চর মারবো। আমি তোর কি হই। আন্টি হই ? মা বলবি বুঝেছিস?
ফারাবি লজ্জা মিশ্রিত মুখ টা লুকিয়ে মাথা ঝাকলো। ফারহানের মা কাছে এসে বললেন
_ আমার ছেলেটা চোখে হারাচ্ছে তোকে। যাহহ তোর রুমে বসে আছে।
ফারাবি লাজুক হেসে চলে গেল। এই লোকটা আর কাউকে পেলো না বলার জন্য। ইসসস কি লজ্জা।
দুপুরে সবাই এক সাথে লাঞ্চ করলো। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান হবে। গেস্ট রা বিকেলের মধ্যেই চলে আসবে। তা নিয়ে ব্যস্ত সকলে। এই দিন টা কতোটা গুরুত্বপূর্ন হতে চলেছে তা কেউ ই জানে না।
ফারহান স্মিত হেসে সব দিক সামলাচ্ছে। ফারহান ফোন করে সকলের বন্ধু বান্ধব কে ও ইনভাইট করে দিয়েছে। যা সকলের অজানা।
সারপ্রাইজ এ হার্ট এটার্ক না হয়ে যায়। ফারহান কে একা একাই হাসতে দেখে ফারাবি ভয় পেল।
এই ছেলেকে কি জিন ভুতে ধরলো? ফারাবি বুকে থু থু দিয়ে এগিয়ে গেল। ফারহানের সামনে হাত নাচাতেই ফারহান ধমক দিয়ে দিলো।
ফারাবি ছিটকে সরে গেল। আমতা আমতা করে বলল
_ না মানে হয়েছে কি আপনি একা একাই হাসছিলেন।
ভাবলাম ভুতে ধরেছে।
ফারহান ভরকে গেল। খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে বলল
_ এমনি হাসছিলাম। একটু পাশে বস জড়িয়ে ধরবো।
ফারহানের সোজা কথায় ফারাবির চোখ কপালে। এটা কেমন কথা ?
ফারহান অপেক্ষা করলো না। ফারাবি কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে রইলো। মিষ্টি এক ঘ্রান ভেসে আসছে। আচ্ছা এই ছেলেটা গায়ে কি মাখে ?
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন ।
চলবে