#ফাগুন_ এলো_বুঝি!
(২৫)
সময় পেরিয়ে গেছে অনেকটা।পূর্ণতা ফিরছেনা দেখে উৎকন্ঠিত সকলে।ধীর বারবার হাতঘড়ি দেখছে।একটা মানুষের ওয়াশরুম থেকে আসতে এতসময় লাগে?
আশরাফ বাবুর্চিদের রান্নার জায়গায় তদারকি করছিলেন।খবর পেলেন পূর্ণতা নেই।দ্রুত পায়ে সায়রার কাছে গেলেন তিনি।
‘পূর্নতা কোথায়?আর মিশরাকেও তো দেখিনি সারাদিন।
সায়রা বললেন,
‘পূর্নতা ওয়াশরুমে।মিশু কোথায় জানিনা।হয়ত কোথাও আড্ডা দিচ্ছে। এসে যাবে।
‘তুমি তাহলে যাও,পূর্ণতাকে নিয়ে এসো।তোমার বড় আপা আমাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করছেন মেয়ে কোথায়?পালাল নাকি?এটা কোনো কথা!
সায়রা মাথা নেড়ে শ্বাস ফেলে বললেন
‘আপাও না।আজও কথাবার্তা শুধরালোনা। যাচ্ছি আমি।
সায়রা পা বাড়ালেন।হঠাৎ পেছন থেকে ডেকে ওঠে ধীর।
“ফুপি!
সায়রা পিছু ঘুরলেন,
‘ ধীর,স্টেজ থেকে নেমে এলি যে!
‘পূর্নার কাছে যাচ্ছিলে?
‘হ্যা।
‘তোমাকে যেতে হবেনা। আমি দেখছি ও কোথায়?
সায়রার ইচ্ছে হলোনা ধীরকে যেতে দিতে।কিন্তু মুখের ওপর মানাও করতে পারলেন না।মেকি হেসে বললেন,
” আচ্ছা যা।
ধীরের মুখ কালো। পূর্ণতা আর আগের পূর্ণতা নেই।যে সারাক্ষন ধীর ভাইয়া, ধীর ভাইয়া করত।মালার মত জপতো তার নাম।বিয়ের কথা উঠতেই কী ওর এত পরিবর্তন?
ভাবতে ভাবতে ওয়াশরুমের সামনে এলো ধীর।দরজার ছিটকিনি বাইরে থেকে দেয়া।মানে ভেতরে কেউ নেই।পূর্ণতা কি ওপরের ওয়াশরুমে গেল?নাকি রুমে গিয়েছে?
ধীর ফিরে আসতে ধরবে এর মধ্যে পেছন থেকে শেরওয়ানির কোনা টেনে ধরল কেউ একজন।কৌতুহল নিয়ে ফিরে চাইল ধীর।তার চাচাতো ভাইয়ের ছোট্ট মেয়েটা দাঁড়িয়ে। ধীর আলতো হেসে ঝুঁকে গেল।গাল টেনে বলল,
‘কিছু বলবে মুন্নি?
মুন্নি মাথা ঝাঁকাল।মানে বলবে।ধীর জিজ্ঞেস করল,
‘কি বলবে বলো।
সাড়ে তিন বছরের মেয়েটা কথা না বলে ধীরের দিকে একটা ছোট কাগজ বাড়িয়ে দিল।ধীর ভ্রু কোঁচকায়।
‘এটা কী?
‘একতা আন্তি দিয়েছে।
‘কোন আন্টি?
মুন্নি পেছন ফিরল।খোঁজার চেষ্টা করল সেই আন্টিকে।না পেয়ে ধীরের দিক তাকাল আবার।মাথা চুল্কে ধীরের হাতে কাগজ ধরিয়ে দিয়েই ছুট লাগাল।ধীর চেয়ে রইল বোঁকার মত।মোড়ানো কাগজ খুলে টানটান করে মেলে ধরল চোখের সামনে।
“স্টোরে রুমে এসো ধীর ভাইয়া,আমি অপেক্ষা করছি।
(পূর্ণতা……)
ধীরের অবাক লাগল প্রথমে।পূর্ণতা এভাবে তাকে ডাকতে পারে এ ছিল ধারনাতীত।পূর্ণতা কী তাহলে বদলাইনি?একিরকম আছে?বাড়ি ছেড়ে যাবে বলেই এই মনমরা হয়ে থাকা?হতেও পারে।
নাহলে এভাবে চিরকূট লিখে ডাকবে কেন?নিশ্চয়ই
বিয়ের আগে অল্প সল্প কাছাকাছি আসতে চাইছে ও।ধীর মুচকি হাসল।নিজে নিজে আওড়াল,
“বেশ রোমান্টিক তো আমার বউটা!আমিতো আরও ইতস্তত করছিলাম এসব নিয়ে।
ধীর আনন্দ মনে স্টোর রুমের দিকে পা বাড়াল।
গিয়ে দেখল দরজা হা করে খোলা।ধীর ভেতরে ঢুকল।জানলার পাল্লা গুলো সব আটকানো। আলো আসার উপায় নেই।ঘরের মধ্যে অন্ধকার।দরজা দিয়েই যতটুকু আলো আসছে,তাতেও ধীর দেখতে পাচ্ছেনা কিছু।অন্ধকারের মধ্যে পূর্ণতা কী করছে?ধীর উঁচু কন্ঠে ডাকতে গেল,তখন মনে পড়ল কেউ এভাবে দেখলে খারাপ ভাববে।হোক কাল বিয়ে।কিন্তু এর মধ্যেই বর কনে স্টেজ থেকে নেমে এখানে এসেছে।এসব অনেকেই ভালো চোখে দেখবেনা।ধীর চাপা কন্ঠে ডাকল,
” পূর্না!এই পূর্না!
ওপাশ থেকে উত্তর নেই।ধীর এক দুপা এগিয়ে ফের ডাকল।এবারেও না।ধীর বিরক্ত হয়ে বলল,
“নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে কেউ মজা করেছে।ধ্যাত!
ধীর ফিরে যাওয়ার জন্যে কদম ফেলল।ঠিক তখনি ভেসে এল চিকন মেয়েলী কন্ঠ।
“ধীর ভাইয়া!কোথায় যাচ্ছো?
আমিতো এখানে…
থমকাল ধীর।পরিচিত স্বর শুনে চোখ সরু করল।
‘কে?
‘সেকি!আমাকে চিনতে পারছোনা?
ধীর কিছু বলবে হুট করে স্টোর রুমের দরজা কেউ টেনে বন্ধ করে দিল।ধীর ভঁড়কে তাকাল।দরজার দিক যাবে এর মধ্যে কন্ঠটি ফের বলে ওঠে,
‘পূর্নতা ডাকল আর তুমি চলে এলে ধীর ভাইয়া?কী করতে এলে?হবু বউকে চুঁমু খেতে?
ধীর দাঁত কিড়মিড় করল।বেশ বুঝেছে এটা কে?নিশ্চিত হতে যত্র দেয়াল হাতড়ে সুইচ টিপল।পুরো ঘর আলোকিত হলো। আলোর মধ্যে মিশরাকে দেখতেই ধীর ধমকে বলল,
‘তুই এখানে কী করছিস?
মিশরা এগিয়ে এল।
” অবাক হলে?ভেবেছিলে পূর্ণতা থাকবে।আর নষ্টামি করবে দুজন!
ধীর দাঁত পিষে ধরল,
‘মুখ সামলে কথা বল বেয়াদব।
মিশরা নিজের ঠোঁটে আঙুল চেপে বলল,
‘শশশ!আজ তোমার কোনও হম্বিতম্বি চলবেনা ধীর ভাইয়া।আজ শুধু মিশরার কামাল দেখবে।কীভাবে সে তোমার জীবনটা নরক বানিয়ে দেয়।
শেষ কথাটা চিবিয়ে চিবিয়ে বলল মিশরা।ধীর গায়ে মাখলনা।পেছন ফিরে দরজা খোলার চেষ্টা করল।দরজা বাইরে থেকে বন্ধ বুঝতে পেরে মিশরাকে কটমট করে বলল,
‘দরজা কে বন্ধ করেছে?এক্ষুনি খুলতে বল মিশরা।
মিশরার নিরুদ্বেগ জবাব,
‘আমি কী জানি?আমি নিশ্চয়ই ভেতরে বসে অদৃশ্য হাতে বন্ধ করিনি।দরজা যেই লাগাক,সেও হয়ত চাইছে তুমি এখানেই থাকো।
” ফাজলামো করার সময় এটা নয় মিশরা।ওখানে সবাই আমার আর পূর্নার জন্যে অপেক্ষা করছে।
ধীর যথাসাধ্য নিজেকে ঠান্ডা করে বলল।মিশরা হাসল।দুর্বোধ্য হাসি।
‘অপেক্ষা করে কী লাভ ধীর ভাইয়া?বিয়ে যদি আটকে যায়?
‘সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাস না মিশু।এবার কিন্তু তোর গায়ে হাত উঠে যাবে আমার।দরজা কে লাগিয়েছে?খুলতে বল।
ধীরের আগুন দৃষ্টিতে কোনো তোয়াক্কাই করলনা মিশরা।
‘গায়ে হাত দেবে?দাওনা।আমিওতো তাই চাইছি।আচ্ছা দাঁড়াও,তোমার কাজটা এক ধাপ এগিয়ে দিচ্ছি আমি।যাতে বাকীদের বুঝতে সুবিধে হয়।
ধীর বিভ্রান্ত হয়ে চেয়ে রইল।কী করতে চাইছে এই মেয়ে?মিশরা ক্রুর হেসে গলায় ঝোলানো স্কার্ফ দূরে ছুড়ে মারল।ধীর অবাক হলো।
মিশরা টান মেরে টপ্সের হাতা দুটো ছিড়ে ফেলল।পরপর ছিড়ে ফেলল বুকের কাছের অংশটুকুন।অন্তর্বাস উন্মুক্ত হলো সঙ্গে সঙ্গে। ধীর চমকে বলল,
‘এসব কী করছিস?
মিশরা ঠোঁটের লিপস্টিক লেপ্টে দিল।ঝুঁটি বেধে রাখা চুল ছেড়ে এলোমেলো করে দিল হাত দিয়ে।ধীর আর্তনাদ করে বলল,
‘মিশু?পাগল হয়েছিস তুই?
মিশরা রহস্য হাসল।পরমুহূর্তে চিৎকার করে উঠল,
” বাঁচাও! বাঁচাও!
ধীর ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দাও।প্লিজ যেতে দাও আমাকে।বাঁচাও আমাকে। দরজা খুলে দাও কে আছো?
ধীর স্তম্ভিত।হতভম্ব হয়ে বলল,
“চিৎকার করছিস কেন? আমিতো কিছু করিনি।মিশু চুপ কর। চুপ করতে বলেছি তোকে।
ধীরের চোখ রাঙানো,মোটা কন্ঠ কোনও কাজেই এলোনা।মিশরার চিৎকার গতি উলটে বেড়েছে।
ধীর বুঝলো পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।মিশরার চেঁচানো শুনলে যাচ্ছেতাই কান্ড হবে।ওকে এক্ষুনি থামানো দরকার।ধীর লম্বা পায়ে এগিয়ে গিয়েই মিশরার মুখ চেপে ধরল।কিড়মিড় করে বলল,
“এসবের মানে কি?তুই__
হুট করে দরজা ঠেলে দিল কেউ।খট করে শব্দ হলো।ধীর মিশরার মুখ চেপে ধরা অবস্থায়ই তাকাল।দরজায় দাঁড়ানো লোকগুলোকে দেখে চটজলদি মিশরার মুখ থেকে হাত সরাল।ছাড়া পেয়েই দৌড়ে গিয়ে সায়রার বুকে ঝাপিয়ে পরলো মিশরা।হুহু করে কেঁদে বলল,
” মম,ধীর ভাইয়া,ধীর ভাইয়া আমাকে এখানে ডেকে এনে__
মিশরা হাউমাউ করে কাঁদছে।যেন কান্নার তোপে কথা বলতে পারছেনা।ধীর স্তব্ধ।মাথায় আকাশ ভেঙে পরল দুই পরিবারের সদস্যদের।রাগে চোখ মুখ শক্ত হলো আশরাফের।
“এতো বড় সাহস তোমার ধীর? তুমি আমার মেয়ের সাথে__
ধীর উদ্বিগ্ন হয়ে বোঝাতে গেল,
” আংকেল,আংকেল ও মিথ্যে বলছে।আমি কিচ্ছু করিনি।মা বিশ্বাস করো।বাবা বিশ্বাস করো তুমি, আমি কিছু করিনি।নাটক করছে মিশরা।
সবার মধ্যে পূর্ণতাও দাঁড়িয়ে।সে নিশ্চল চোখে চেয়ে চেয়ে দেখছে সব।মন-মস্তিষ্ক,খেয়াল কোনোটাই এদিকে নেই।সবটাই অন্য কোথাও,অন্য কারো দখলে।
সায়রা মিশরাকে বুকে চেপে রেখে ধীরকে বললেন,
” তাহলে এই ঘরে তুই কি করছিলি ধীর?তুইতো পূর্ণতাকে খুঁজতে গিয়েছিলি তাইনা?তবে ঠিক কি কারনে স্টোররুমে এসেছিস তুই?বোঝা আমাদের।
“হ্যা ফুপি, আমিতো পূর্নাকেই খুঁজতে গেছিলাম।আমি নিজে আসিনি এখানে।পূর্নার চিরকুট পেয়ে এসেছি।
মেহবুব পূর্ণতাকে শুধালেন,
সায়রা বললেন,
‘ও তোকে চিরকুট দেবে?কীভাবে?ওতো এলোই আমাদের সঙ্গে।
‘আমি সত্যি বলছি ফু__
মেহবুব হাত উঁচু করে থামতে বললেন ধীরকে।পূর্ণতাকে শুধালে,
‘তুমি কী ওকে কোনও চিরকুট পাঠিয়েছ পূর্ণতা?
পূর্ণতা অন্যমনস্ক ছিল।মেহবুবের কন্ঠে নড়ে উঠে বলল,
‘হু?
মেহবুব ফের একই কথা শুধালেন,
‘তুমি কি ধীরকে কোনও চিরকুট পাঠিয়েছ?
পূর্ণতা আগেপিছে কিছুই শোনেনি।শুধু আস্তে করে জবাব দিল মেহবুবের প্রশ্নের,
‘না।পাঠাইনি।
ধীর বিস্মিত হয়ে বলল,
” তার মানে?সেখানে তো তোর নাম লেখা ছিলো পূর্ণা।
” চিরকুট টা আমাকে দেখাও ধীর।
মেহবুবের গম্ভীর,মোটা আওয়াজ।ধীর
মাথা নিচু করে ফেলল।চিরকুট তো সেখানেই ফেলে এসেছে।সে কী জানত এরকম একটা নোংরা পরিস্থিতিতে ফেঁসে যাবে এসে?
” কি হলো? তোমার বাবা কি বললেন শুনতে পেলেনা?দেখাও আমাদের।
আশরাফের কথায় ধীর চোখ নামিয়ে বলল,
” ওটা আমার কাছে নেই আংকেল,আমি ফেলে দিয়েছি।
আশরাফ বললেন,
” বাহ!এরপর এ- ও তোমাকে বিশ্বাস করতে বলছো?
ধীর উত্তেজিত হয়ে বলল,
” হ্যা বলছি।বলছি আমি।কারণ আমি কিচ্ছু করিইনি।ধীর তড়িঘড়ি করে পূর্ণতার কাছে গেল।ওর হাত ধরে বলল,
“এই পূর্ণা তুই অন্তত আমাকে বিশ্বাস কর! পূর্ণা করিস তো আমাকে বিশ্বাস?বলনা!
পূর্ণতা কী বলবে বুঝে উঠছেনা।
” ধীর ভাইয়া আমি__
পূর্ণতা কিছু বলার আগেই ওকে ধীরের থেকে টেনে আনলেন সেলিনা।নিজের এতক্ষনের নিরবতা ভঙ্গ করে বললেন,
” না।ও তোকে বিশ্বাস করেনা।কিভাবে বিশ্বাস করবে?ওর সাথে বিয়ে ঠিক করে তুই ওর বোনের দিকে হাত বাড়িয়েছিস। আর ও কীনা তোকে বিশ্বাস করবে?ব্যাপার টা কি হাস্যকর নয় ধীর?
ধীর এক পা পিছিয়ে গেল।অবিশ্বাস্য চোখে তাকাল মায়ের দিকে।
‘মা তুমিও?
সেলিনা কেঁদে ফেললেন,তবুও শক্ত কন্ঠে বললেন,
‘হ্যা আমিও।,মিশুর এই অবস্থা দেখে আমি কেন সারা বিশ্ব বুঝবে ওর সাথে তুই কী করতে যাচ্ছিলি!
ধীর আর্তনাদ করে বলল,
‘মা আমি কিছু করিনি।
‘বললেই হলোনা ধীর।মিশুর দিক তাকালেই স্পষ্ট প্রমান মিলছে তুই কি করেছিস!বা কি করতে চাইছিলি।
সায়রার কথায় ধীর চোয়াল কঠিন করে মিশরার দিক তাকাল।লাল লাল চোখ দুটো নিবদ্ধ হলো মিশরার মেকি কান্নারত মুখটায়।ধীরকে তাকাতে দেখে মিশরা কান্নার মধ্যে বাঁকা হাসল।
ধীরের হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে গেল।ক্ষুব্ধতায় ঘিরে ফেলল মস্তিষ্ক।
“এইসব তোর জন্যে হচ্ছে।তোকে আমি মেরেই ফেলব।
ধীর দাঁত কপাটি খিঁচে মিশরার কনুই ধরে টান মারল।ভঁড়কে গেল সবাই। আক্রোশে ফেঁটে পরে মিশরার গলা চেপে ধরল।আঁতকে উঠল সকলে।উদ্যত হলেন ধীরের থেকে মিশরাকে ছাড়াতে।বেগ পুহিয়ে ধীরকে সরাতে পারলেন মেহবুব।মিশরার কাশি উঠে গেছে।মেহবুব সঙ্গে সঙ্গে ঠাস করে চড় বসালেন ছেলের গালে।সেলিনা শাড়ির আঁচলে মুখ চেপে ধরলেন।
ধীর অবাক নেত্রে বাবার দিক তাকাল।অস্পষ্ট কন্ঠে বলল
” আমাকে মারলে বাবা?
মেহবুবের শরীর রাগে কাঁপছে।
” মারলাম।আজ অব্ধি কখনও তোমাদের গায়ে হাত তুলিনি। সব সময় আমার ছেলেদের নিয়ে গর্ব করেছি আমি।কিন্তু আজ?? আজ আমার নিজেকে বড্ড ছোট মনে হচ্ছে ধীর!আর সেটা তোমার মত ছেলে আমি জন্ম দিয়েছি বলে।ছি! শেষ পর্যন্ত নিজের ফুপাতো বোনের সাথে__
ধীর কেঁদে উঠল এবার।
” বাবা আমি কিছু করিনি বাবা।কেনো বুঝতে চাইছোনা তুমি?আমিতো পূর্ণাকে ভালোবাসি।
তখন আশরাফ বললেন,
“না ধীর।এরপর আর আমার মেয়েকে ভালোবাসার কথা মুখেও এনোনা তুমি।তোমার মত ছেলের হাতে আমি আমার মেয়েকে তুলে দেবোনা।
আশরাফ মেহবুবের দিক চেয়ে বললেন,
‘আমি দুঃখিত ভাইজান।আমি আপনার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিতে চাইছিনা।
ধীরের মাথায় বাঁজ পরল।মিশরা মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে বিজয়ী হাসল।মেহবুব ধীরের দিক চেয়ে বললেন,
“আমিও চাইনা আশরাফ,এরকম একটা ছেলের সাথে আমাদের পূর্ণতার বিয়ে হোক।আমি এক্ষুনি পুলিশকে ফোন করছি।
ধীরের চোখ বেয়ে জল গড়াল,
” বাবা!
সেলিনা আর্তনাদ করে বললেন “এসব কী বলছো তুমি?
মেহবুব অটল তার সিদ্ধান্তে
” না শেলী,ও আজ যা করেছে তার কোনও ক্ষমা নেই।নিজের ছেলে বলে ওর এতো বড় অপরাধ কিছুতেই মেনে নেবোনা আমি।ওর মত দুশ্চরিত্রবান ছেলের জেলেই থাকা উচিত।
চারপাশে শুরু হলো চাপা গুঞ্জন।বিয়ে বাড়ির অর্ধেক লোক জড়ো হয়ে গেল।সেলিনা কাঁদছেন।মান সন্মান আর অবশিষ্ট নেই।এরকম নোংরা ব্যাপার লোক জানাজানি হলো,এখন মুখ লোকাবেন কোথায়?
সেলিনা আক্ষেপে নেতিয়ে গেলেন,
“কেন এরকম করলি ধীর?মেনেই তো নিয়েছিলাম তোর আবদার।তাও কেনো এরকম একটা কাজ করতে গেলি তুই?
ধীর ভেজা কন্ঠে বলল,
” তোমরা সবাই আমায় অবিশ্বাস করলে?
কারো কোনো জবাব এলোনা।মেহবুব পকেট থেকে ফোন বের করলেন।পুলিশকে কল দেওয়ার জন্যে।সবাইকে চমকে দিয়ে মিশরা ফোন ছিনিয়ে নিল।কৌতুহলি চোখগুলো সব আছড়ে পরল মিশরার ওপর।
“না মামা।তুমি পুলিশকে কিছু জানাবেনা।
মেহবুব ভ্রু গোঁটালেন ‘ কেন?
মিশরা চোখের জল মুছে নরম কন্ঠে বলল,
“আজ ধীর ভাইয়াকে পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে।কাল বাদে পরশু সে ছাড়া পাবে। তা নাহলে বড়জোড় সাত বছরের জেল হবে।এইতো?কিন্তু আমার কি হবে মামা?সব লোকজন জেনে গিয়েছে এখানে কি হয়েছে!ব্যাপার টা বাইরে ছড়াবে এরপর।আমার চরিত্রে তো দাগ লেগে গেল।আমি কি করে সমাজে মুখ দেখাব?কেই বা আমাকে তার ঘরে বউ করে তুলবে?সবাইতো আমাকে খেতাব দেবে আমি “ধর্ষিতা! কয়জন দেখতে আসবে যে আমার কোনো ক্ষতি হয়নি?
প্রত্যেকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করল।ধীর সন্দিহান চোখে চেয়ে।চোয়াল মড়মড় করছে।চুলের মুঠি ধরে দেয়ালে ঠুকে দিতে মন চাইছে মিশরাকে।আবার কোন প্যাচ ফেলছে এই রাক্ষসী!
মেহবুব শুধালেন,
“তাহলে তুই কি চাচ্ছিস মিশু? ধীর কে কি শাস্তি দিবি তুই?তুই যা বলবি তাই হবে।
মিশরা জ্বিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাল,
” আমি চাই, যে আমার এই অবস্থার জন্যে দ্বায়ী,আমার বাকি জীবনের ভার সেই বহন করবে।মানে, আজ এখানে পূর্ণতার নয়, ধীর ভাইয়ার সঙ্গে আমার বিয়ে হবে।
সবাই বাক্যহীন হয়ে তাকিয়ে রইল মিশরার দিকে।ধীর চেঁচিয়ে উঠল,
‘কক্ষনও না।তোর মত একটা মিথ্যেবাদী মেয়েকে আমি বিয়ে করবনা।
মেহবুব গুমোট গলায় বললেন,
” করবে।মিশু যা চাইছে তাই হবে।অন্যায় যখন করেছ, শাস্তি তো পেতেই হবে ধীর।
” বাবা আমি কোনও অন্যায় করিনি।
ধীরের দৃঢ় কন্ঠ। মেহবুব ধমকে বললেন,
“- চুপ করো!আর একটা কথাও নয়।আজ, এই মুহুর্তে তোমার সাথে মিশরার বিয়ে হবে।তাতে তোমার মত থাকুক বা না থাকুক।আমার সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে আমি ভুলে যাব যে ধীর নামে আমার কোনও সন্তান আদৌ ছিল।
ধীর রেগে ঘুষি মারল দেয়ালে।সায়রা শান্ত ভাবে বললেন,
“কিন্তু ভাইজান,আমার একটা মেয়ের গতি না হয়ে করলে কিন্তু আমার আরেকটা মেয়ে?ওর কি হবে?বিয়ে ভাঙা মেয়েকে সমাজ মেনে নেবে? ওর জীবন টাও যে নষ্ট হয়ে যাবে ভাইজান।
বিস্মিত সকলে,সায়রার আচরন দেখে।মিশরার চোখ ফেটে বেরিয়ে আসবে প্রায়।
পূর্ণতা মেঝের দিক চেয়ে।যেন ইহজগতে সে নেই।তার মাথায় তখনও বাজছে,
‘ধ্রুব আমাকে ঠকাল।
মিশরা বিভ্রান্ত হয়ে পরল
“মমের আবার কি হলো হঠাৎ? পূর্ণতার হয়ে কথা বলছে? তাও আবার ডিরেক্ট নিজের মেয়ে বললো ওকে?এই মেয়ে কী সত্যিই আমার মাকে জাদুটোনা করল?
সায়রা এগিয়ে এসে পূর্ণতার কাছে দাঁড়ালেন।ওর মাথায় হাত রাখতেই পূর্ণতার ধ্যান ভাঙল।সায়রা বললেন,
‘ওর তো এখানে কোনও দোষ নেই ভাইজান।ও এই বিয়ে করতেও চায়নি নিজে থেকে।পরিবার রাজি বিধায় আমার মেয়েও রাজি হয়েছে।অথচ দেখো,ধীরের সব থেকে খারাপ দিকটা সামনে এলো আজ।ভাগ্যিশ এলো,নাহলে মেয়েটা সারাজীবন ধুকে ধুকে মরত।স্বামীর চরিত্র খারাপ হলে স্ত্রীর কষ্টের কোনও সীমা থাকে?
সায়রা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।মনে পড়ল তার প্রথম স্বামীর কথা।আশরাফের যেন বুকে বাঁধল সায়রার বাক্যটা।মাথা নামিয়ে ফেললেন।সায়রাকে আজ অব্দি স্ত্রীর মর্যাদা দেয়নি।অথচ আজ তাকে অবাক করে দিয়ে কী সুন্দর পূর্ণতার হয়ে কথা বলছে।
সায়রা ফের বললেন,
” মিশরার ধীরের সঙ্গে বিয়ে হলে ওর কলঙ্ক মুছে যাবে।কিন্তু পূর্ণতা?ওর গায়েও তো কলঙ্ক লাগল।বিয়ে ভাঙার কলঙ্ক।এবার ওর কী হবে ভাইজান?
মিশরা আর ধীরের বিয়ের কথা শুনে পূর্ণতা অবাক চোখে ওদের দিক তাকাল।এসব আলোচনা কখন হলো?সেতো শোনেইনি।এর মানে ধীরকে তার বিয়ে করতে হচ্ছেনা?তৎক্ষনাৎ পূর্ণতার বুক থেকে কষ্টের ভারী পাথর নেমে গেল ।পরমুহূর্তে মুখ কালো হলো ভেবে,বিয়ে না হোক,ধ্রুব তো আর ফিরবেনা তার কাছে।ভালোবাসবেনা তাকে।
তাও ভালো বিয়েটা ভেঙে যাক।মৃতের মত বাঁচার চেয়ে বিয়ে ভাঙার তকমা গায়ে লাগা ঢের ভালো।সবাইকে নিশ্চুপ থেকে সায়রা উদ্বেগ নিয়ে বললেন,
‘কি হলো ভাইজান?কিছু বলো!
মিশরা নাকমুখ কুঁচকে বলল,
‘মম তোমার কী হয়েছে?তুমি পূ__
সায়রা চোখ পাঁকালেন,
‘তুই চুপ কর।
প্রথম বার মায়ের ধমক খেয়ে চুপসে গেল মিশরা।থমথমে চেহারা হলো।মেহবুব সময় নিয়ে উত্তর দিলেন,
“পূর্ণতা কে নিয়ে ভাবতে হবেনা সায়ু।ওর জীবন আমি থাকতে নষ্ট হবেনা।কিন্তু আগের কাজ আগে সাড়া উচিত আমাদের।
আর এক মুহুর্ত দাড়ালেন না মেহবুব।বেরিয়ে গেলেন স্টোর রুম ছেড়ে।একে একে সবাই বের হলো তার পিছনে।মিশরা একবার ধীরের দিক তাকাল।মুখ দিয়ে চুঁ চুঁ শব্দ করে চোখ টিপল।মিশরার যাওয়ার দিক চেয়ে হাত মুঠো করল ধীর।শপথ নিল,
” তোর জীবন আমি নরক বানিয়ে ছাড়ব মিশু।আজকের ফল তুই পাবি।
____
দুহাত বুকে ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে আছে ধ্রুব।ঘরের মধ্যে পিনপতন নীরবতা।বিছানায় আধশোয়া মেহবুব।তার পায়ের কাছে বসে সেলিনা।কাউচে বসে আশরাফ,সায়রা।পাঁচজন মানুষের নিঃশ্বাস ব্যাতীত অন্য কোনও শব্দ নেই এখানে।
ধ্রুব এসে পৌঁছেছে একটু আগে।সকালে সেলিনা যখন মেহবুব কে বলতে গেলেন ছেলে চলে যাচ্ছে,ধ্রুব সেই ফাঁকেই বেরিয়েছে।ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
ধ্রুব চিটাগং পৌঁছাতে পারেনি।মাঝপথ থেকেই ফেরত এসছে।বলতে গেলে একরকম ছুটে এসছে।সেলিনার ফোন থেকে তাকে মেসেজ পাঠানো হয়েছিল,মেহবুবের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।খবরটা শুনলে কোন ছেলে ঠিক থাকতে পারবে?ধ্রুবও পারেনি।অথচ আসার পর থেকে একের পর এক কান পোড়ানো খবর শুনছে সে।প্রথম, মেহবুব সুস্থ,সম্পূর্ণ সুস্থ।দ্বিতীয়,
মেসেজটি স্বয়ং তিনিই পাঠিয়েছেন।আর তৃতীয় খবরটা ছিল ভয়াবহ, ধীরের সঙ্গে মিশরার বিয়ে।
তারা এখন স্বামী -স্ত্রী।
ধ্রুবর মাথা চক্কর দিচ্ছে।ধীরের সাথে মিশরার বিয়ে?এ কী করে সম্ভব হলো?ভাইয়াতো মায়াপরিকে ভালোবাসে।সে নিজে পড়েছে ওর ডায়রি।
তারপর সায়রার থেকে শুনলো পুরো ঘটনা।ধ্রুবর বিশ্বাসই হচ্ছেনা,তার ভাই এরকম করবে।নিশ্চয়ই পেছনে কোনও গল্প আছে।কিন্তু একটা মেয়ে নিজের চরিত্রে যেচে পরে কালি লাগাবে কেন?যা রটে,তার কিছুতো বটে।ভাইয়া এমনিই মিশুকে দেখতে পারেনা।হয়ত আজকেও রেগেমেগে কিছু করতে গেল,আর মিশু ভেবে নিল অন্য!না, ব্যাপারটা সিরিয়াস নাহলে পূর্ণতার সঙ্গে বিয়ে ভেঙে মিশরার সঙ্গে বিয়ে দেয়া হতোনা।এটা নির্ঘাত মারাত্মক ইস্যু!কিন্তু বাবা মিথ্যে বলে ওকে কেন ডেকে আনলেন?
ধ্রুব এসে থেকে পূর্ণতাকে দৃষ্টি দিয়ে খুঁজছে।কোথায় তার মায়াপরিটা?এই কয়েক ঘন্টায় কেমন হয়েছে চেহারার হাল?
অনেকক্ষনের মৌণতা ভঙ্গ করলেন মেহবুব।গলা ঝেড়ে সবাইকে বললেন,
তোমরা একটু বাইরে যাবে?আমার ধ্রুব’র সাথে কথা আছে।
প্রত্যেকে মাথা নেড়ে বেরিয়ে গেল। মেহবুব দূরে দাঁড়ানো ধ্রুবকে বললেন,
‘এদিকে আয়।
ধ্রুব শান্ত পায়ে এগিয়ে এল।
‘বোস।
ধ্রুব বসল।মেহবুব আধশোয়া থেকেই বললেন,
‘তোকে মিথ্যে বলে আনার জন্যে স্যরি!ভুল বুঝিসনা।তোর মায়ের কাছে শুনলাম,যেভাবে বেরিয়ে গেলি তাতে এ ছাড়া উপায় ছিলনা।চিন্তা করেছিস অনেক?
ধ্রুব কথা তুলল ভিন্ন প্রসঙ্গে,
‘আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা বাবা,ভাইয়া মিশুর সাথে এরকম কিছু করবে।তোমাদের বিষয়টা নিয়ে আরো খতিয়ে দেখার প্রয়োজন ছিল।
মেহবুব কন্ঠ মোটা করে বললেন,
” একটা মেয়ের কাছে সবথেকে অমূল্য তার সন্মান।সেচ্ছ্বায় কেউ সেটা নষ্ট করবেনা ধ্রুব।মিশরার ধীরের সঙ্গে কী এমন শত্রুতা,যে ও এরকম নোংরা মিথ্যে বলতে যাবে?ধীরকে কি ও তুলে নিয়ে গেছিল স্টোর রুমে?তাছাড়া ঐসময় মিশুর অবস্থা তুমি দেখোনি তাই জানোনা।
ধ্রুব চুপ করে গেল।এই যুক্তিগুলো তার মাথাতে যে আসেনি তা নয়।কিন্তু ধীরের ডায়েরির লেখা মনে পড়লেই__
বিভ্রান্ত ধ্রুব মাথা নাড়ল।কিছুই ঢুকছেনা এখানে।কোনটা ঠিক,কোনটা ভুল একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন।ধ্রুব রয়ে সয়ে প্রশ্ন করল,
‘পপূর্নতা কোথায় বাবা?
‘ওর ঘরে।মেয়েটার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছেনা ধ্রুব।ঘটনা পাঁচকান হয়ে গেছে।কি শনি নামল আমার ভাগ্যে!
ধ্রুবর ইচ্ছে করছে একছুটে পূর্নতার কাছে যেতে।ওর মাথাটা বুকে জড়িয়ে বলতে,
‘আমি এসেছি।
মেহবুব সোজা হয়ে বসলেন।ধ্রুবর হাতের ওপর হাত রাখলেন।ধ্রুব তাকাল।মেহবুব কাতর কন্ঠে বললেন,
‘তোমার কাছে যদি কিছু চাই আমি, দেবে ধ্রুব?রাখবে বাবার একটা অযাচিত অনুরোধ?
ধ্রুব উদ্বেগ নিয়ে বলল,
“এভাবে কেনো বলছো বাবা?অনুরোধ কেন করবে তুমি?আদেশ করো।
মেহবুব ঢোক গিললেন।দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে সময় নিয়ে বললেন
– পূর্ণতাকে বিয়ে করবে ধ্রুব?
ধ্রুব চকিতে তাকাল।কপাল ছুঁলো মোটা ভ্রু দুটো।ঠিক শুনল কানে?নিশ্চিত হতে শুধাল,
” কী!
মেহবুব ধ্রুবর হাত আকড়ে ধরলেন এবার।
‘মেয়েটার বিয়ে ভেঙে গেছে।লোকমুখে প্রতিনিয়ত কটু কথা শুনবে।এমনিতেই মা মরা।ছোট থেকে অনেক উত্থান-পতনের স্বীকার হয়েছে।দুঃখ কাকে বলে ওর থেকে ভালো কেউ জানেনা।আমি চাইনা ওর জীবন,ওর সন্মান নষ্ট হয়ে যাক।তাই একমাত্র উপায়,তুমি ওকে স্ত্রীর মর্যাদা দাও।
ও খুব ভালো মেয়ে।সহজ-সরল! যেভাবে রাখবে সেভাবেই থাকবে।
ধ্রুব গভীর ভাবনায় ডুবে।
‘ভাইয়ার বিয়ে তো মিশুর সাথে হয়ে গেছে।মিশু এখন ওর স্ত্রী।তার মানে আমি যদি মায়াপরিকে বিয়ে করি এতে কোনও অন্যায় নেই,ভুল নেই।
মেহবুবের অস্থিরতা বাড়ল ধ্রুবর চুপ থাকায়।ব্যাকুল হয়ে ঝাঁকাল ওকে,
‘কিছু বলবেনা ধ্রুব?
ধ্রুব বাবার দিক তাকাল।উত্তেজনায় তার বুক কাঁপছে।আনন্দে হাঁসফাঁস লাগছে।সত্যিই মায়াপরিকে পাবে?এখনও আছে উপায়?
ধ্রুব শুধু ঠোঁট নেড়ে জবাব দিল,
‘বিয়ের আয়োজন করো বাবা।
মেহবুবের চোখে জল এসে গেল খুশিতে।ধ্রুবকে টেনে বুকে নিলেন।
‘আমাকে বাঁচালে ধ্রুব!
ধ্রুব চোখ বুজে শতকোটি শুকরিয়া জানাল সৃষ্টিকর্তার দরবারে।তার ভালোবাসা মিথ্যে ছিলনা।অবশেষে পূর্ণতাকে সে ফিরে পাচ্ছে।সত্যিই পাচ্ছে!
চলব