The_boss Part:16

0
3329

The_boss

Part:16

Aarizona Ella

সকালে খুব ভোরে ঘুম ভাঙ্গলো মায়ার,,পাশে তাকাতেই ৮৮০ ভোল্ট এর ঝটকা খেয়ে কাঁত হয়ে গেছে সে।।কারন মেঝেতে বিছানায় মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে আছে ইলমাজ।।?
এই দৃশ্য দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না মায়া ব্যাঙ্গের মতো একলাফে উঠে বিছানা থেকে নেমে ইলমাজকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে শুরু করলো সে।ইলমাজের এভাবে ঘুমিয়ে থাকার মানে এখনো খুজে পাচ্ছে না সে।।

ঘুমের মধ্যে এতটা খারাপ লাগে না লোক টি কে।কত্তো কিউট রে বাবা,,আপনি যদি সারাজীবন এভাবেই ঘুমিয়ে থাকতেন,,তাহলে আমি শান্তিতে বাঁচতে পারতাম।।ইলমাজের মুখের কাছে নিজের মুখ কিছুটা নিয়ে বলছে মায়া।

ইলমাজ হঠাৎ চোখ খুলতেই মায়ার মুখের সাথে স্বজোরে ধাক্কা লেগে চেচিয়ে উঠলো দুজনই।।

what the hell are u doing stupid???রাগান্বিত স্বরে বললো ইলমাজ।

আহহহ,,,সরি স্যার,আমি জানতাম না আপনি এভাবে জেগে যাবেন।মুখ হা করে বললো মায়া।

মানে???সুযোগের ফায়েদা উঠাচ্ছিলে??ছিঃ তোমার কাছ থেকে আমি এতো জঘন্য কিছু আশা করি নি মিস মায়া।।ভ্রু কুচকে মুখ বেকে বললো ইলমাজ।

মায়া ঝটকার উপর ঝটকা খাচ্ছে,,?,মুখ হা করে চোখ উল্টে দিয়েছে সে।

ছিঃ৷ স্যার আমি এতটা জঘন্য না,এই প্রশ্ন তো আমার আপনাকে করা উচিত, আ,,আপনি সারারাত আমার রুমে ছিলেন।।আর আমি না জানি কেমন অবস্থায় ছিলাম।?আমতা আমতা করে বললো মায়া।

ওহ রিয়্যালি,!!বসা থেকে উঠে দাড়ালো ইলমাজ,,

সিরিয়াসলি,একটা মানুষ কতটা অকৃতজ্ঞ হতে পারে সেটা তোমাকে না দেখলে কখনোই বুঝতে পারতাম না ?।।(ইলমাজ)

মানে,কি স্যার?ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো মায়া।।

মানে আপনি গত রাতে মদ খেয়ে পাগলামি করছিলেন আর আপনার পাগলামির স্বীকার হতে হয়েছে আমাকে।।(ইলামাজ)

ক,,কি করেছি স্যার?(মায়া)

শোনার ক্ষমতা রাখেন তো?ইলমাজ মায়ার দিকে এগুচ্ছে আর মায়া সেই আবারো এক পা এক পা পিছিয়ে যাচ্ছে।।ইলমাজ মায়ার সামনে এসে দাঁড়াতেই মায়া ইলমাজকে ধাক্কা দিয়ে ওয়াশ্রুমে ঢুকে পড়লো আর সেখান থেকেই বলতে লাগলো,,

আমি কিছু করি নি,আর আমার কিছু শোনার ও দরকার নাই স্যার।।(মায়া)

ইলমাজ নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে রুম ত্যাগ করলো।। মায়া ফ্রেশ হয়ে এসে দেখছে তার ফোন বাজছে।।ইলমাজের নাম ফোনের স্ক্রিনে দেখেই গা কাঁপলো মায়ার।
ঢোক গিলতে গিলতে ফোন রিসিভ করলো।।

হ্যা,হ্যালো জ্বী স্যার??(মায়া)

১০ টার দিকে এয়ারপোর্টে রওয়ানা দিব সো বি রেডি টু গো ব্যাক।।ফোনের ওপাশ থেকে ইলমাজ।

মায়াকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে লাইন কেটে দিলো ইলমাজ।।এখনো অলরেডি ৮:৩০ বাজে,লেট হলে আবারও ওইদিন এর মতো সবার সামনে বেইজ্জত করবে।।ব্যাস রেডি হয়ে আধা ঘন্টা আগ থেকে বসে আছে মায়া।।

গাড়িতে ওঠার সময় ড্রাইভিং সীটের পাশে কোন এক মহিলার পিছন দিক দেখে ভ্রু কুচকালো মায়া।।ইলমাজ আগে থেকেই ড্রাইভিং সীটে বসা ছিলো,, লুকিং গ্লাসে মায়াকে এভাবে তাকাতে দেখে ইলমাজ বলতে লাগলো,,

আমাদের এভাবে দর্শন করা বন্ধ হলে এবার আপনি গাড়িতে উঠতে পারেন মিস মায়া আজহারী।।?

ইলমাজের কথায় হুশ ফিরলো মায়ার,,আর আতংকিত হয়ে বলতে লাগলো,,

জ,,জ্বী স্যার,?।।মায়া পিছনের সীটে গিয়ে বসলো আর আড়চোখে বার বার সামনের দিকে তাকাচ্ছে।।মায়ার খেয়াল পড়লো এই মেয়ে সে যে ইলমাজের গলা জড়িয়ে নাচতেছিলো।।?

এখন কেমন আছেন মিস কুইন??ইয়ানা মায়াকে উদ্দেশ্য করে বললো।।

মায়া গাড়ির এপাশ ওপাশ কাউকে খুজছে,,।

আপনাকে বলছি মিস মায়া।।(ইয়ানা)

আমাকে?বেকুবের মতো প্রশ্ন করে বসলো মায়া।।

জ্বী আপনাকেই বলেছি,মহিলাদের মধ্যে আমি আর আপনি ব্যাতিত তো আর অন্য কেউ নেই এখানে তাই না?খুবি ভদ্রতার সহিত বললো ইয়ানা।।

না,মানে মিস কুইন বলাতে একটু অবাক হয়েছিলাম তাই,চাপা হেসে জবাব দিলো মায়া।

আচ্ছা!আমি ইয়ানা,ইলমাজের বেস্ট ফ্রেন্ড,,(ইয়ানা)

ওহ!?আ,,আমি মায়া,ইলমাজের বলা মাত্রই মুখে হাত দিয়ে জিব্বাহ্ কামড়ে ধরলো।ইলমাজ মায়ার দিকে আড়চোখে তাকালো।।,

না মানে আমি ইলমাজ স্যারের এম্পলয়।।(মায়া)

এখন কেমন আছেন আপনি?(ইয়ানা)

কেন আমি তো সবসময় ভালো থাকি।।এখনো ভালোই আছি।।?(মায়া)

জ্বী,, কাল রাতে আপনার ঘারে চার বোতাল ভোডকার নেশা চড়েছিলো তো তাই জিজ্ঞেস করছি।।বলেই হো হো করে হেসে উঠলো ইয়ানা।

মানে,কি করেছিলাম কাল রাতে?ভয়ার্ত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করলো মায়া।।

মাত্রাতিরিক্ত ড্রিংক্স করে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন,ভাগ্যিস ইলমাজ ছিলো নাহলে কি হতো আল্লাহ ই ভালো জানেন।।?(ইয়ানা)

আচ্ছা,,মুখটাকে বাংলার পাঁচ বানিয়ে চাপা হাসছে মায়া।।

রাস্তায় একটা ফুসকার স্টল দেখে লাফিয়ে উঠলো ইয়ানা।।আর বলতে লাগলো।।

ইলমাজ গাড়ি থামাও,আমি ফুসকা খাবো।?(ইয়ানা)

আজিব!!!গাড়ি থামালে ফ্লাইট মিস হয়ে যাবে আমাদের।।আর স্ট্রিট ফুড খাওয়া এখনো ছাড়ো নি তুমি।।(ইলমাজ)

আমাদের ফ্লাইট ১১:৩০ এখন মাত্র ১০ টা বাজে,আরও দেড় ঘন্টা সময় আছে,খামাকা বোর হয়ে যাবো।। মাত্র আধা ঘন্টা ই তো লাগবে,,প্লিজ্জজ্জজ্জজ।।গাড়ি একটু ব্যাক করো।।আকুতির স্বরে বললো ইয়ানা।

মায়া হাব্লুর মতো শুধু তাদের কান্ড দেখছে।।

মায়া আপনি বলেন না প্লিজ,,,(ইয়ানা)

আয়ায়ায়া,,,স্যার উনি যেহেতু এতো ইনসিস্ট করছেন গাড়ি টা একটু থামালে কি হয়।।(মায়া)

মায়ার কথা শুনে নাক ফুলিয়ে গাড়ি ব্রেক করে আবার উল্টো দিকে ব্যাক করলো ইলামাজ।।

ফুসকার স্টলের সামনে দাগাড়ি থামাতেই আনন্দের সাথে লাফিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো ইয়ানা।।

মায়া আপনিও আসেন,ভাল্লাগবে।।মায়াকে উদ্দেশ্য করে বললো ইয়ানা।।

মায়া ইলমাজের দিকে একবার তাকিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে দুজন একসাথে ফুসকা খেতে শুরু করলো।।

ইলমাজ তুমিও আসো না প্লিজ।।বাইরে থেকে চেচিয়ে বললো ইয়ানা।
ইলমাজ ইশারা করে তাদের খেতে বললো।।

ইয়ানা আর কথা না বারিয়ে ফুসকা খেতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।।

ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো এতক্ষন,মায়ার কান্ড দেখছিলো,কারন মায়া যেদিকটায় থাকুক না কেন সে প্রতিটি বর্নের সাথে নিজেকে মিশিয়ে নিতে পারে।।ইলমাজ মুগ্ধ হয়ে দেখছে মায়াকে।একটা ঝগড়াটে মেয়ের ২য় রুপ এতটা মিশুক আর মাসুম হতে পারে তা হয়তো মায়াকে না দেখলে কখনোই জানতে পারতো না ইলমাজ।।

ইয়ানার ডাকে হুশ ফিরলো ইলমাজের।।নিজেকে সামলিয়ে ইয়ানার দিকে কন্সানট্রেট করার চেষ্টা করলো।

ইলমাজ আমি না ক্যাশ আনি নি,ক্রেডিট কার্ড আছে সাথে,বিল টা দিতে পারছি না,একটু বাহিরে এসে ব্যাপারটা কে সর্ট আউট করবে প্লিজ?(ইয়ানা)

হুম,,ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়েই গাড়ি থেকে বের হলো, ফুসকার স্টলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।।

বিল কতো এসেছে ভাইয়া?ফুসকাওয়ালা কে উদ্দেশ্য করে বললো।।

২২০ টাকা ভাইজান।(ফুসকাওয়ালা)

ইলমাজ পকেটে হাত দিয়ে হঠাৎ চমকে উঠলো।।সেও ক্রেডিট কার্ড এনেছে।।

কি হয়েছে ইলমাজ এভাবে হা করে আছো কেন?(ইয়ানা)

শীট!!!আমিও মনে হয় ক্রেডিট কার্ড এনেছি।।ওয়েট,গাড়ির ডেক্সে চেক করে আসি।।(ইলমাজ)

একদৌড়ে ইলমাজ গাড়ির দিকে ছুটে গেলো।।মায়া আর ইয়ানা তাকিয়ে আছে।।ইলমাজ আবার এসে ফুসকাওয়ালার হাতে একটা হাজারের নোট গুজে দিয়ে বললো,

ভাগ্যিস এটা রেখেছিলাম।।নাহয় মান সম্মান সব যেতো?(ইলমাজ)

ভাইজান আমি গরিব মানুষ এতটাকা ভাংতি কেমতে দিমু?(ফুসকাওয়ালা)

আচ্ছা আপনি রেখে দেন এটা।।চেঞ্জ লাগবে না।।(ইলমাজ)

কিন্তু ভাই আমি হিসেব এর বাইরে কাজ করবার পারি না।।এইটা রাইক্ষা আমারে ভাংতি দেন।।(ফুসকাওয়ালা)

আরেহ আপনি বুঝতে পারছেন না?ক্রেডিট কার্ড এনেছি,এটা ছাড়া আর কোন ক্যাশ নেই আমার কাছে।।(ইলমাজ)

ইলমাজের রাগান্বিত চেহারা দেখে ভয়ে ঢোক গিললো মায়া আর ইয়ানা।

আমার কাছে আছে,দাঁড়ান।।মাঝখান থেকে মায়া বলে উঠলো।

তাহলে এতক্ষন চুপ ছিলে কেন??(ইলমাজ)

মায়া কথার কোন জবাব না দিয়ে একদৌড়ে গিয়ে গাড়ি থেকে ব্যাগ আনলো।দুইহাত একসাথে মুষ্টিবদ্ধ করে ওরনায় ভারী কিছু ঢেলে,,এক এক করে গুনতে লাগলো।।

ইলমাজ আর ইয়ানা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে।গুনা শেষ হলে হাতে নিয়েই অনেকগুলো দুটাকার পয়সা ফুসকাওয়ালার ভ্যানের দিকে এগিয়ে দিলো।।।

ইলমাজ আর ইয়ানার সাথে ফুসকাওয়ালা ও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।।

এইগুলা কতবসর ধইরা জমাইতাসেন আফা??(ফুসকাওয়ালা)

এগুলো ক্লাস টেন থেকে জমিয়ে রেখেছিলাম,প্রয়োজনে হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করার জন্যে।?আজ কাজে লাগলো।। (মায়া)

আপনার ধৈর্যের জয় হোক মা।।হাত জোর করে বললো লোক টি।।

মায়া একটা রাজ্য জয় করার মতো হাসি হাসলো।।

যাক,আজকে আপনার ২ পয়সার ফিক্সড-ডিপজিট কাজে আসলো।।দ্যা দুই পয়সার ব্যাংক অফ মায়া আজহারী।।?।।আসলেই,আপনার মতো এলিয়েন রা পৃথিবীতে আসে বলেই আমাদের মতো সাধারণ মানুষগুলো মঙ্গলগ্রহে জায়গা পায় না।।(ইলমাজ)

মায়া নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে ইলমাজের দিকে।।

চলবে।।
প্রথমত আমি দু:খিত এতদিন যাবৎ গল্প দিতে না পারার জন্য। পারিবারিক সমস্যার কারনে ফোন ভেঙ্গে ফেলেছি।।ছোট বোনের ট্যাব থেকে গল্প লিখেছি,ট্যাবে টাইপ করা খুবই কষ্টের,যদি টাইপিং ভুল ত্রুটি হয় তবে ক্ষমার চোখে দেখবেন।।এখন থেকে রেগুলার দেয়ার চেস্টা করবো।। আবারো সরি???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here