শ্রাবন_আধারে_তুমি,১৮,১৯,২০

0
820

#শ্রাবন_আধারে_তুমি,১৮,১৯,২০
লেখিকা:আফরিন ইসলাম
পার্ট: ১৮

সাদির গাড়ী এসে খান বাড়ীর সামনে থামলো ৷সাদি দারোয়ানকে গেট খুলে দিতে বলল ৷কিন্তু সে সাদির গলা পেয়েও খুললো না ৷কারন তাকে নিষেধ করা হয়েছে ৷যেন সাদিকে বা রাইকে ভেতরে ঢুকতে না দেয় দারোয়ান ৷ দারোয়ান যখন গেট খুললো না ৷তখন সাদির মেজাজ আরো বিগড়ে গেল ৷ সাদি রেগে দারোয়ানকে বলল

দারোয়ান চাচা গেট টা খুলে দাও ৷আমার মাথাটা তুমি গরম করো না প্লিজ ৷

আমি গেট খুলতে পারমু না সাদি বাবা ৷আমি আপনেরে ডুকতে দিলে আমার চাকরি থাকবো না ৷

সাদি এবার আর নিজের রাগ সামলাতে পারলো না ৷পাশে পরে থাকা পাথর গুলো সজোরে গেটে মারতে লাগল ৷গেট ভাঙ্গচুর করতে লাগলো ৷ আবরার মাত্রই রেডি হয়ে নিচে আসে নাস্তা করার জন্য ৷কিন্তু হঠাৎ ভাঙ্গচুরের আওয়াজ শুনে থেমে যায় ৷ এদিকে দারোয়ান খুব ভয় পেয়ে যায় সাদির কাজে ৷তাই দৌড়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে যায় ৷

দারোয়ানকে এভাবে দৌড়ে আসতে দেখে আর ভাঙ্গচুরের আওয়াজে আবরার বলল

কি হয়েছে চাচা ৷আপনি এভাবে দৌড়ে কেন এলেন ৷আর বাইরে এত কিসের আওয়াজ আসছে ৷

দারোয়ান হাপাঁতে হাপাঁতে বলল আবরার বাবা বাইরে সাদি বাবা আইসে ৷সে বাড়ীর ভেতরে ঢুকতে চাইছে ৷কিন্তু আপনে না করছেন তাই ডুকতে দেই নাই ৷এর জন্য গেট পাথর দিয়া আঘাত করতাছে ৷আর খুলতে কইতাছে ৷

আবরার ছোট করে একটা নিঃশ্বাস নিল ৷তারপর বলল ওকে ভেতরে আসতে দাও ৷যাও গেট খুলে দাও ৷

দারোয়ান দৌড়ে গেল গেট খুলতে ৷দারোয়ান গেট খুলতেই সাদি ভেতরে ঢুকলো ৷সাদি ভেতরে আসতেই দেখলো বাড়ীর সবাই আছে ৷সাদি একবার মিশকার দিকে তাকালো ৷তারপর বলল

বেশ ভালোই হয়েছে এখানে সবাই আছে ৷ তা না হলে সত্য কথা গুলো কাদের বলতাম এখন ৷

এখানে কেন এসেছিস তুই সাদি ৷আবরার শান্ত গলায় বলল ৷

সাদি আবরার কথায় জবাব দিল না ৷খাবারের টেবিলের দিকে একবার তাকালো ৷তারপর বলল

ও মা এখানে দেখছি ভোজ সভা চলছে ৷তা এত খাবার কি করে তোদের গলা দিয়ে নামছে আবরার ৷আমি থাকতে তো এ খাবার তোদের গলা দিয়ে নামবে না ৷সাদি কথা গুলো বলেই খাবারের টেবিলের সব খাবার উল্টে ফেলে দিল ৷ কাচের জিনিস গুলো ঠাস ঠাস করে ভেঙ্গে গেল ৷কাচ টুকরোতেপুরো ড্রয়িং রুম ভরে গেল ৷ হঠাৎ সাদির গালে ঠাস করে একটা থাপ্পর পড়লো ৷ চারিদিকে পিনপিন নিরবতা ৷

সাদি সেই দিকে একবার তাকিয়ে দেখলো মিশকা দাড়িয়ে আছে ৷হ্যা মিশকাই থাপ্পরটা মেরেছে ৷ সাদির চোখে চিকচিক করছে পানি ৷ মিশকা সাদির কলার ধরে বলল

আর কত ঠকাবে আমাদের ৷আমাদের ভাই বোনের জীবনটা নষ্ট করে শান্তি হয় নি ৷এখন বাড়ীতে এসে অশান্তি কেন করছো ৷আর যার জন্য এমন করেছো তাকে তো পেয়েছো ৷তাহলে আবার কি চাই ৷অবশ্য তোমাদের মতো চরিত্রহীন লোকেরা এর থেকে আর কি বা করতে পারে ৷

এতক্ষন চুপ থাকলেও এবার আর চুপ থাকলো না সাদি ৷কারন এবার মিশকা তার চরিত্র নিয়ে কথা বলেছে ৷ সাদি এবার সজোরে সবার সামনে থাপ্পর মারলো মিশকার গালে ৷মিশকা ছিটকে পড়লো ফ্লোরে ৷

সাদি কিছু বলবে তার আগেই আবরার ওকে এলোপাথারী মারতে লাগলো ৷আবরার সাদিকে মারতে মারতে বলল

তোকে আমি কখনো বন্ধু ভাবি নি ৷তোকে সব সময় ভাই ভেবে এসেছি ৷আর তুই আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছিস ৷আমার ভালোবাসার মানুষটাকে কেড়ে নিয়েছিস ৷আর এখন আমার বোনের গায়ে হাত দিস ৷তোকে আজ আমি মেরেই ফেলবো ৷

সাদি একটা কথাও বলল না ৷একের পর এক থাপ্পর আর ঘুষি খেয়েই গেল ৷এক সময় আবরার ক্লান্ত হয়ে গেল তাই থেমে গেল ৷এদিকে সাদির নাক মুখ থেকে রক্ত বের হচ্ছে ৷আবরার সাদিকে ছেড়ে দিয়ে বলল

চলে যা এখান থেকে ৷তুই আর কখনো আমার সামনে আসিস না ৷চলে যা তুই ৷নয়তো অনেক খারাপ কিছু হয়ে যাবে ৷ আমি চাই না তোর মায়ের কোল খালি হোক ৷

আবরার উঠে যেতেই সাদি বলল আমাকে কি সত্যি কখনো ভাই মনে করেছিস আবরার ৷ যদি সত্যি নিজের আপন মনে করতিস তাহলে একটা বার আমাকে সবটা বলতে পারতিস ৷সাদি চোখের পানি মুছে বলল আমি আসলে এগুলোরই প্রাপ্য ৷ তা না হলে এত কিছুর পরেও কেউ আসে নাকি ৷যাই হোক তুই যে বলিস আমি রাইকে কেড়ে নিয়েছি ৷ তোর কাছে কি এমন প্রমান আছে এর বিরুদ্ধে ৷

আবরার পেছনে ঘুড়ে বলল একটা কথা কি জানিস তো কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না ৷আর বেইমানরা কখনো নিজেদের বেইমানির কথা শিকার করে না ৷যাই হোক তোর প্রমান চাই তো ৷দাড়া তোকে প্রমান দিচ্ছি ৷

আবরার নিজের ফোন বের করলো ৷তারপর সাদি আর রাইয়ের বেশ কিছু ছবি দেখালো ৷যেখানে স্পষ্ট সাদি রাইকে প্রপোজ করছে ৷ আর রাই সাদির প্রপোজ গ্রহন করছে ৷ কিছু ছবিতে একজন আরেক জনকে খাইয়ে দিচ্ছে ৷ আরেকটা ভিডিওতে সাদি আর রাই নাচ করছে ৷

সাদি ছবি গুলো দেখে উচ্চ স্বরে হেসে দিল ৷ সাদি এখন নিজের শরীরের কথা ভুলে হাসতে ব্যস্ত ৷ সাদিকে হাসতে দেখে আবরার বলল

হাসছিস কেন এভাবে ৷এরপরও বলবি সব মিথ্যা ৷কিছু নেই তোদের মাঝে ৷

সাদির হাসি থেমে গেল ৷চেহারায় দেখা দিল হাজারো অভিভান ৷সাদি ফোনটা নিয়ে মিশকার কাছে গেল ৷তারপর বলল

মিশকা আবরার কি কখনো তোমাকে আমার আর রাইয়ের কোনো ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়েছে ৷

না দেখায় নি আমাকে মিশকা বলল ৷

তোমার মনে আছে মিশকা তোমাকে প্রপোজ করার কিছু দিন আগের কথা ৷ঐ দিন আমি তুমি আর রাই ঘুরতে গিয়ে ছিলাম ৷তুমি আমাকে ডেয়ার দিয়ে বলে ছিলে রাইকে প্রপোজ করতে ৷

মিশকা মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো ৷

সাদি বলল ঐ দিনের ভিডিও আর ছবি গুলো সবাইকে দেখাও ৷

মিশকা সাদির কথা মতো তাই করলো ৷আর ঐ দিন যে শুধু একটু মজা করে সাদি রাইকে প্রপোজ করেছে তা আবরার বুঝে গেল ৷

তারপর সাদি মিশকাকে বলল মিশকা তুমি আমি আর রাই একবার ঘুরতে গিয়ে ছিলাম ৷তোমরা রাস্তায় ফুচকা খেতে চেয়ে ছিলে ৷কিন্তু আমি ফুচকা খেতাম না ৷তাই রাই আমাকে জোড় করে ঐ দিন তোমার সামনে ফুচকা খাইয়ে দিয়ে ছিল ৷ঐ দিনে ছবি গুলো আবরারকে দেখাও তোমার ফোন থেকে ৷সাদির কথা মতো মিশকা আবরারকে দেখালো ৷

অতঃপর সাদি বলল মিশকা তোমাকে প্রপোজ করার পর আমি তোমাকে আর রাইকে নিয়ে মজা করে নেচে ছিলাম ৷ঐ দিনের ভিডিও গুলো দেখাও আবরারকে ৷

সব কিছু দেখার পর আবরার হিসাব ওলট পলট হয়ে যাচ্ছে ৷কারন সব জায়গায় মিশকা ছিল ৷আর মিশকার ফোনের পিক গুলো দেখলে তা বোঝা যায় ৷ কিন্তু তার ফুপু যখন ছবি গুলো তাকে দিত তখন তো মিশকার ছবি সেখানে থাকতো না ৷

সাদি আবরারকে বলল আর কোনো প্রমান আছে আবরার ৷

আবরার শান্ত হলো না ৷ কঠিন গলায় বলল বুঝলাম সব মিথ্যা ৷তাহলে রাই কলেজ ফাকি দিয়ে কেন তোর সাথে দেখা করতো ৷

লাইক সিরিয়াসলি ৷রাই আমার সাথে দেখা করতো ৷কে বলেছে তোকে আবরার ৷নিজের চোখে না দেখেই বিচার করলি হ্যা ৷ তুই সত্যি জানতে চাস রাই কোথায় যেত ৷

আমি আর কিছু জানতে চাই না ৷আর না কিছু বুঝতে চাই ৷আমি আজকের ফ্লাইটে চলে যাচ্ছি এটাই শেষ কথা ৷

চলে যা আমি বাধাঁ দেব না ৷যাওয়ার আগে সত্যি গুলো জেনে যা ৷তুই একটু দাড়া আমি আসছি ৷

সাদি আস্তে আস্তে নিজের গাড়ির কাছে গেল ৷হাটঁতে খুব কষ্ট হচ্ছে ৷কপাল ফেটে রক্ত ঝড়ছে ৷হাত দিয়ে নাকের রক্ত মুছতে মুছতে সাদি হেটে চলল ৷পায়ে কাচেঁর টুকরা লেগে অনেক জায়গায় কেটে গেছে ৷তাই হাটতে পারছে না ৷

প্রায় পনেরো মিনিট পর সাদি এলো ৷সাদির হাতে তিনটা ফাইল ৷সে ফাইল গুলো একটা একটা করে খুলল ৷তারপর পড়তে লাগলো ৷ যেখানে স্পষ্ট লেখা দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত রোগী ব্রেন টিউমারে ভুগছে ৷মাথার চারিদিকে টিউভার ছড়িয়ে পড়েছে ৷যে কোনো সময় রোগীর নাক কান মুখ থেকে রক্ত আসবে ৷রোগীর থেমে থেমে জ্বর আসবে ৷ শেষ সময় রোগীর খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে ৷ রোগীর মাথার চুল পরে যাবে ৷রোগী চোখে ঝাপসা দেখবে ৷সাদি এক এক করে সব টেস্ট আর ডাক্তারের সকল নির্দেশনাবলি পড়ে শুনালো ৷কিন্তু সাদি কেন এগুলো বলছে এটাই কেউ বুঝতে পারছে না ৷

এগুলো কেন আমাদের পড়ে শোনাচ্ছিস আবরার বলল ৷

সাদি হাসল ৷তারপর কাগজ গুলো আবরার কাছে দিয়ে বলল রোগীর নামটা তো আগে দেখ ৷

আবরার একরাশ বিরক্তি নিয়ে কাগজ গুলো নিল ৷না চাইতেও একবার রোগীর নামটা দেখলো ৷ আর এতেই তার পায়ের নিচের মাটি সরে গেল ৷

#শ্রাবন_আধারে_তুমি
লেখিকা: আফরিন ইসলাম
পার্ট : ১৯

আবরার চোখ থেকে দুই ফোঁটা নোনাজল গড়িয়ে পড়ল ৷যতই রাইয়ের উপর রাগ দেখাক কিন্তু ভালো তো বাসে ৷ সাদি আবরার দিকে কিছু কাগজ এগিয়ে দিয়ে বলল

এগুলো যেই যেই দিন রাই ডাক্তারের কাছে গেছে তার কাগজ ৷তারিখ গুলো দেখলেই বুঝবি ৷রাই ঠিক ঐ দিন গুলোতে কলেজ যায় নি ৷ আর ঐ দিন রাই আমার সাথে দেখা করতে যায় নি বরং ডাক্তারের কাছে গিয়ে ছিল ৷

তুই কিভাবে জানলি রাইয়ের এই অবস্থা ৷আবরার বলল ৷

রাই যেই ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিত ৷সে আমার কাছের একজন বান্ধবী প্রিয়ন্তী ৷ঐ দিন রাই যখন ডাক্তারের কাছে যায় ৷আমিও সেই দিন প্রিয়ন্তীর কাছে যাই বিশেষ দরকারে ৷আর সেখানে রাইকে দেখতে পাই ৷তারপর এক এক করে সব জানতে পারি ৷তারপর অনেক জোর করে ওকে পৌছে দিয়ে যাই ৷

তাহলে ঐ দিন যে তোরা একে ওপরকে জরিয়ে ধরে ছিলি ওটা কি ছিল আবরার বলল ৷

রাই নিজের মেডিকেলের কাগজ গুলো নিতে ভুলে গিয়ে ছিল ৷তাই আমি সে গুলো দিতে তোদের বাড়ীর দিকে রওনা দেই আবার ৷কিন্তু তোদের বাড়ীর সামনে এসে দেখি রাই গেটের সামনে বসে কাদঁছে ৷ মেয়েটা বড্ড কষ্ট পেয়ে ছিল ৷তাই কথা বলতে বলতে আমাকে জরিয়ে ধরে ছিল ৷

আবরার নিজের ফুপুর দিকে তাকালো ৷এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ৷হঠাৎ আবরার ওর ফুপুর দিকে তেড়ে গেল ৷আর গলা টিপে ধরলো ৷আবরার বলতে লাগলো

তোমাকে আমি ছাড়বো না ৷আজ তোমার জন্য আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেছে ৷তুমি দিনের পর দিন আমাকে মিথ্যে কথা বলেছো ৷তোমাকে বিশ্বাস করে আমি অনেক বড় ভুল করেছি ৷তুমি কেন আমার জীবনটা নষ্ট করলে ৷তোমাকে তো নিজের মায়ের মতোই আমি ভালোবাসতাম ৷তাহলে কেন ফুপু কেন এমন করলে ৷

আফজাল খান ,মিশকা সবাই এসে আবরারকে আটকালো ৷কারন আর কিছুক্ষন আবরার যদি ওর ফুপুর গলা ধরে রাখে ৷তাহলে সে মারা যাবে ৷

আবরার ফুপু ছাড়া পেতেই কাশতে লাগলো ৷আবরার চিৎকার করে বলল আমাকে ছেড়ে দাও ৷দিনের পর দিন আমাকে এই মহিলা ঠকিয়েছে ৷আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে ৷শুধু এর জন্য আমি আড়াই বছর ধরে ঠিক মতো ঘুমাই নি ৷আমার সব শেষ করে দিয়েছে এই মহিলা বাবা ৷আবরার হাউমাউ করে কাদঁতে লাগলো ৷আবরার ফ্লোরে বসে কাদঁতে লাগলো ৷ফ্লোরে দুই হাত দিয়ে আঘাত করতে লাগলো ৷

আফজাল খান বোনের কাছে গিয়ে ঠাস করে একটা চড় মারলো ৷তারপর বলল কেন এমন করলি বল ৷ কি এমন করে ছিল আমার ছেলে যার জন্য তাকে এত বড় শাস্তি দিল ৷

রাইয়ের ফুপু এবার চিৎকার করে বলল আমি কি করে ছিলাম ভাইয়া ৷যে তোমরা আমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছো ৷শুধু তো ভালোই বেসে ছিলাম ৷ তুমি আর বাবা মিলে দ্বীপ কে কেড়ে নাও নি আমার থেকে ৷ তোমাদের জন্য আমার সংসার হয় নি ৷আমি আমার ভালোবাসার মানুষ হারিয়েছি ভাইয়া ৷আমি যখন দ্বীপকে নিয়ে সুখী হতে পারি নি ৷তখন তোমার ছেলে মেয়েরাও পারবে না ৷আমি সুখী হতে দেব না কখনো ৷

বাড়ীর সবাই থমকে গেল ৷আফজাল খান বোনের কাছে যেয়ে বলল তুই আমাকে ভুল বুঝলি বোন ৷কে তোকে বলেছে দ্বীপকে আমরা কেড়ে নিয়েছি তোর থেকে ৷

দ্বীপ নিজে আমাকে বলেছে ৷ শুধু আমার জন্য ও নিজেও এখনো বিয়ে করে নি ৷তোমরা ওকে বল নি আমার জীবন থেকে ওকে সরে যেতে৷নইলে তোমরা ওর পরিবারকে মেরে ফেলবে ৷

আফজাল খান বোনের দিকে তাকিয়ে বললেন ঠিক আছে আজ তোকে সব পরিষ্কার করে বলবো ৷তার আগে দ্বীপ চৌধুরীর সাথে তো কথা বলি ৷

আফজাল খান দ্বীপ চৌধুরীকে কল করলো ৷ আর স্পিকার অন করে দিল ৷কিছুক্ষন পর কল রিসিভ হতেই ওপাশ থেকে একটা ভারী কন্ঠ ভেসে এলো ৷

কি ব্যাপার মিঃ খান ৷হঠাৎ আমাকে কেন কল করলেন ৷কল তো আমি আপনাকে করি প্রতিবার ৷

ছেলে মেয়ে নিয়ে কেমন আছো দ্বীপ ৷

আমি ভালো আছি ৷তারা কিছু দিনের মধ্যেই আসবে বলেছে এই দেশে ৷কিন্তু আপনার বোকা বোনটা তো এর কিছুই জানে না ৷আহারে বেচারী আমার জন্য জীবন যৌবন সব শেষ করলো ৷ কিন্তু আমাকে দেখুন আমি তার গোপনে বিয়ে করে সন্তানের বাবাও হয়ে গেলাম ৷ আর প্রতিমাসে আপনার থেকে বিশ লাখ করে টাকা তো পাচ্ছি ৷টাকা না দিলে কি করবো বলুন তো ৷আপনার বোনকে নিয়ে আসবো ৷তারপর বিদেশে পাচার করে দেব হা হা হা ৷আর আপনার বোনটা মনে করে আমি তাকে কত ভালোবাসি ৷নিজের মা বাবাকে বাচাঁতে তাকে বিয়ে করছি না ৷কিন্তু সে তো আর জানে না আমার মা বাবাই আসলে নেই ৷সব নকল মানুষ ৷কিন্তু দেখুন আপনার আর আপনার বুড়ো বাপটার সাথে চালাকি করে আর পারলাম না ৷বুড়ো টা তো মরেছে ৷আমি যে অনেক মেয়ের সাথে চিট করেছি তা ঠিক জেনে গেলেন ৷ আর টাকার বিনিময়ে নিজের বোনটাকে বাচিঁয়ে রাখলেন ৷ আফজাল খান ফোনটা কেটে দিলেন ৷এতক্ষন সবাই সব কিছু শুনেছে ৷আবরার ফুপুর কাছে এখন সব পরিষ্কার ৷সে ফ্লোরে বসে পড়লো ৷ চোখ দুটো পানিতে ভরে এলো ৷ দ্বীপ তাকে এত বছর ধরে ঠকিয়ে আসছে ৷আর সে বুঝতেই পারলো না ৷

সাদির ফোনে হঠাৎ একটা মেসেজ এলো ৷সাদি ফোনটা অন করতেই দেখলো প্রিয়ন্তীর মেসেজ ৷সাদি মেসেজটা পরে নিল ৷তারপর পেছন দিকে ঘুরে আবার হাটা শুরু করলো গাড়ীর দিকে ৷

আবরার সাদির দিকে তাকিয়ে দেখলো সে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছে আর চলে যাচ্ছে ৷ আবরার দৌড়ে গেল সাদির কাছে ৷আবরার দৌড়ে যেয়ে বলল

সাদি ভাই আমার আমাকে একবার রাইয়ের কাছে নিয়ে যাবি তুই ৷একবার নিয়ে চল না প্লিজ ৷

সাদি আবরার দিকে তাকালো না ৷নিজের মতো হেটে চলল ৷

এবার আবরার সাদির দুই পা জরিয়ে ধরলো আর চিৎকার করে কাদঁতে কাদঁতে বলল

আমার মতো পাষান হয়ে যাস না তুই ৷একটু দয়া কর আমার ওপর ৷ আমি আজকের পর আর রাইয়ের কাছে যাব না ৷কথা দিচ্ছি তোকে ৷একটু নিয়ে চল না আমাকে ৷তোর দুটো পায়ে পরি ভাই ৷আমার সব কিছু তুই নিয়ে নে ৷কিন্তু রাইয়ের কাছে একবার নিয়ে চল না সাদি ৷

সাদি আবরার কাছ থেকৈ নিজের পা ছাড়ালো ৷তারপর বলল

রাইয়ের কাছে যেয়ে কি করবি আর ৷ সহ্য করতে পারবি না আবরার ৷ও এখন আর আগের রাই নেই ৷ জীবন মরনের শেষ প্রান্তে মেয়েটা এখন ৷এতক্ষনে সবাই চলে এসেছে ৷সাদি মিশকার দিকে তাকিয়ে বলল জানিস মিশকা বলতো রাইয়ের চুল নাকি অনেক সুন্দর ৷কিন্তু আজ রাইয়ের মাথায় একটা চুল খুজে পাবি না ৷ আন্টি বলতো রাইয়ের চোখে নাকি হাজারো মায়া কিন্তু আজ রাইয়ের চোখের নিচে কালো কুচকুচে হয়ে গেছে ৷ মেয়েটা পরশু রাতে ওয়াসরুমে অঙ্গান হয়ে পরে ছিল ৷মরার মতো নিয়ে গেছি ওকে আমি হাসপাতালে ৷ডাক্তার বলেছে আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে ঞ্জান না আসলে ওকে মৃত ঘোষনা করবে ৷একটু আগে ঞ্জান ফিরেছে ৷কিন্তু অবস্থা ভালো না ৷প্রিয়ন্তী আমাকে ওর আত্মীয় স্বজনকে ওকে শেষ বারের মতো দেখে আসতে বলেছে ৷আমি ওর বাড়ীতে জানিয়েছি ৷ যদি শেষ বারের মতো দেখতে চাস তাহলে চল তোর রাইকে দেখতে ৷

চলবে

#শ্রাবন_আধারে_তুমি
লেখিকা:আফরিন ইসলাম
পার্ট:২০

আবরার বাড়ীর সবাইকে নিয়ে বের হয়েছে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে ৷আবরার যত দ্রুত সম্ভব গাড়ী চালাচ্ছে ৷আবরার বারবার নিজের চোখের পানি হাত দিয়ে মুছে নিচ্ছে ৷সাদির বলা ঠিকানায় আবরার সবাইকে নিয়ে যাচ্ছে ৷

অপর দিকে আবরার ফুপু বাড়ী থেকে বের হয়ে গেল ৷সবাই চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পর সেও বেড়িয়ে গেল ৷গাড়ী চালাতে চালাতে আবরার ফুপু তার প্রেমিক দ্বীপ চৌধুরীকে কল করলো ৷কল করার কিছুক্ষন পরেই দ্বীপ ফোন রিসিভ করলো ৷রিসিভ করেই দ্বীপ চৌধুরী বলল

কি হয়েছে এই অসময়ে কল কেন করলে ৷

তোমার সাথে একটু দেখা করা প্রয়োজন ৷আমি বাসা থেকে টাকা পয়সা ,গহনা সব নিয়ে চলে এসেছি ৷তুমিও চলে এসো তাড়াতাড়ি ৷

দ্বীপ চৌধুরীর চোখ টাকা আর গহনার কথা শুনে চকচক করে উঠলো ৷নিজেকে সামলে সে বলল

এখন তুমি কোথায় আছো ৷

তোমার ফার্ম হাউজের কাছেই আছি আমি ৷তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো ৷আর হ্যা সাথে করে ড্রাইভার বা অন্য কাউকে নিয়ে এসো না ৷বুঝতেই তো পারছো কোটি কোটি টাকার ব্যাপার ৷কেউ দেখলে সন্দেহ করবে ৷ তারপর তুমি আর আমি যেখানে খুশি চলে যাব ৷এসে পড় ৷ আবরার ফুপু ফোন কেটে দিল ৷এদিকে দ্বীপ চৌধুরী খুশিতে মনে হয় পাগলই হয়ে যাবে ৷ সে সাথে সাথে নিজের অফিস থেকে বের হয়ে ফার্ম হাউজের দিকে রওনা দিল ৷

অন্যদিকে আবরার গাড়ী হাসপাতালে এসে পৌছে গেছে ৷আবরার গাড়ী থামিয়ে হাসপাতালের ভেতর দৌড়ে গেল ৷সাদির কথা মতো আবরার তিন তলায় চলে গেল ৷আবরার কোনো হুশ নেই ৷কিন্তু আবরার সেই কেবিনের কাছে যেয়ে দেখলো কেবিনটা ফাঁকা ৷কেবিনে কেউ নেই ৷আবরার একটু দুরেই একজন নার্সকে দেখতে পেল ৷ আবরার তার কাছে দৌড়ে গেল ৷ তারপর বলল

এই কেবিনে রাই নামের যেই রোগী ছিল উনি কোথায় ৷

নার্স বলল আপনি কি ওনার বাড়ীর লোক ৷

আমি ওর স্বামী ৷একটু দয়া করে বলুন না কোথায় আছে ৷এতক্ষনে সবাই চলে এসেছে আবরার কাছে ৷

নার্স নিরাশ কন্ঠে বলল রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ ৷ঞ্জান ফেরার পর থেকেই শুধু সাদি নামের কাউকে খুজছে রোগী ৷কিন্তু অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে আমরা তাকে স্পেশাল কেবিনে পাঠিয়ে দিয়েছি ৷আপনারা আমার সাথে আসুন ৷

নার্স কিছুক্ষন পর সবাইকে নিয়ে গেল ৷কেবিনের ভেতরে ঢোকা নিষেধ ৷ তাই নার্স গিয়ে ডাক্তারকে খবর দিল যে সাদি এসেছে ৷ সাথে সাথেই কেবিনের ভেতর থেকে সিনিয়র ডক্টর বের হলেন ৷তারপর বললেন

আপনাদের মধ্যে সাদি কে ৷রোগী তাকে দেখতে চাইছে ৷আপনি তাড়াতাড়ি যান ৷

সাদি দেরি করলো না ৷ভেতরে প্রবেশ করলো ৷

একটু দূরেই একটা স্বচ্ছ বিছানায় রাই শুয়ে আছে ৷সাদিকে দেখে তার মুখে যেন হাসি ফুটঁলো ৷ সাদি কাদঁছে ৷সাদি রাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিল ৷তারপর বলল

আমায় এত কেন খুজতে ছিলি ৷ আমি তোর কে হই ৷

সাদি ভাই এভাবে বল না ৷ তুমি আমার মায়ের পেটের ভাই না হলেও তার থেকে বেশি ৷ এত দেরি কেন করলে আসতে ৷আর একটু দেরি করে এলে হয়তো আমাকেই আর পেতে না ৷ তোমার কি হয়েছে ৷তোমাকে কি কেউ মেরেছে ৷

আমার কথা বাদ দে ৷আগে বল তুই কেমধ আছিস ৷

আমার কথা ছাড়ো ৷ আমার একটা কথা রাখবে ভাই ৷ধরে নাও শেষ ইচ্ছে ৷প্লিজ ৷

একদম আজেবাজে কথা বলবি না ৷তোর যা চাই সব আমি এনে দেব ৷বলে ফেল কি চাই তোর ৷

একবার আবরার কে আসতে বলবে ৷তাকে বড্ড দেখতে ইচ্ছে করছে ৷তাকে একবার ফোন করে আসতে বল না সাদি ভাই ৷আমার হয়তো আর বেশি সময় নেই ৷ তার কাছে যে আমার অনেক কিছু চাওয়ার আছে ৷অনেক পাওনা মেটানোর আছে ৷ প্লিজ তাকে একবার এখানে আসতে বল ৷

আবরার বাইরে আছে ৷আমি ওর কাছেই গিয়ে ছিলাম ৷আমি ওকে পাঠিয়ে দিচ্ছি ৷রাইয়ের চোখে জল চলে এলো ৷লোকটা তার সব কথা বোঝে ৷সাদি বাইরে চলে গেল ৷তারপর আবরারকে দেখে বলল

ভেতরে যা আবরার ৷রাই শেষবারের মতো তোকে দেখতে চায় ৷দেরি করিস না আবরার যা তাড়াতাড়ি ৷

আবরার আর দেরি করলো না ৷কেবিনের মধ্যে ঢুকে গেল ৷আবরারকে দেখে বাকি সব নার্স আর ডাক্তাররা বেড়িয়ে গেল ৷

আবরার পা কাপঁছে ৷তার চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে ৷আবরার তো এই রাইকে চেনে না ৷এই মেয়েটাই কি কয়েক দিন আগেও তার সব কাজ করতো ৷না এটা তার রাই হতেই পারে না ৷তার রাইয়ের এই কি অবস্থা ৷ আবরার এক ধ্যানে রাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে ৷

আবরারকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে রাই বলল

কি ব্যাপার দাড়িয়ে আছেন যে ৷আমার কাছে আসবেন না ৷একটু আসুন না আমার কাছে ৷খুব বেশিক্ষন কষ্ট দেব না আপনাকে ৷

আবরার দৌড়ে রাইয়ের কাছে গেল ৷তারপর ঝাপটে জরিয়ে ধরলো ৷আবরার হাঊমাউ করে কাদঁতে কাদঁতে বলল

এত বড় একটা রোগের কথা আমাকে আগে কেন বললে না ৷আমি কি এতটাই অপদার্থ যে চিকিৎসা করাতাম না ৷এত রাগ আমার ওপর তোমার যে সব লুকিয়ে গেলে ৷আমি এখন কি নিয়ে বাচঁবো ৷তুমি এটা কেন করলে ৷

আপনি এভাবে কাদবেন না দয়া করে ৷আপনার কষ্ট দেখলে আমার বড্ড কষ্ট হয় আবরার ৷আমি আপনার কান্না সইতে পারি না ৷রাই কথা গুলো বলতে বলতে অক্সিজেন মাস্কটা খুলে ফেলল ৷রাইকে মাস্ক খুলতে দেখে আবরার বলল

এটা কেন খুলছো তুমি ৷

রাই হাসল ৷তারপর বলল এমনিতেও আমার প্রান বায়ু ফুরিয়ে এসেছে আবরার ৷আজরাইল আসবে এটা আর কেউ না বুঝলেও মৃত ব্যক্তি বোঝে ৷যেমন আমি বুঝছি এখন ৷আজ আমি যা যা বলবো আপনি ঠিক তাই তাই করবেন কথা দিন আবরার ৷

সারাজীবন তোমার কথা শুনবো ৷ তুমি শুধু আদেশ করে যেও ৷

সারাজীবন কথাটা আমার জন্য মানায় না আবরার ৷আপনার মনে আছে আপনি আমায় একদিন বলেছিলেন ৷আপনাকে সেবা করার বিনিময়ে আমার কি চাই ৷আজকে আমি তার বিনিময় চাইবো দিবেন আমাকে ৷

তুমি শুধু বলে যাও ৷

জানেন আপনার সাথে একবালিশে শুয়ে সারারাত গল্প করার বড্ড লোভ ছিল আমার ৷কিন্তু তা আর হলো না ৷আমার পাশে একটু শুয়ে পড়ুন না ৷আজ আপনার বুকে একটু শুতে দিবেন ৷আপনার বিছানার মতো বড় বিছানা নয় এটা কিন্তু ভালোবেসে আগলে নিলে জায়গা রয়েও যাবে ৷

আবরার দেরি করলো না রাইয়ের পাশে শুয়ে পড়লো ৷রাইকে নিজের বুকে জরিয়ে ধরলো আলতো হাতে ৷রাই তৃপ্তির হাসি হাসলো তারপর বলল

আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিবেন ৷আবরার রাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ৷একটু পর পর আবরার কেঁপে উঠছে ৷ হয়তো আজ আবরার ও কাদঁছে ৷

রাই নিজের ভাঙ্গা গলায় বলল আমার মাথায় এখন আর আগের মতো চুল নেই ৷আপনার কি খুব বিরক্ত লাগছে আবরার ৷বিরক্ত লাগলেও আজ আপনার নিস্তার নেই ৷আবরার জানের আপনাদের বাগানে যেই রক্ত জবার গাছটা আগে ঐখান থেকে আপনার বারান্দা স্পষ্ট দেখা যায় ৷আমার শেষ ঘরটা ওখানে বানিয়ে দেবেন আপনি ৷আপনি যখন অকারনে সেখানে এসে দাড়াবেন বারান্দায় ৷তখন আমি নয়ন ভরে আপনাকে দেখবো ৷আপনি যখন আপনার স্ত্রীকে নিয়ে চন্দ্রবিলাস করবেন ৷তখন আমি আপনাদের দেখে আমার নিজের চাওয়া গুলো মিটিয়ে নেব ৷

আবরার এবার জোড়েই কেঁদে দিল ৷তারপর বলল আর বল না প্লিজ ৷আমি আর পারছি না ৷

আজ আমায় বলতে দিন আবরার ৷আমি যে আর সময় পাবো না ৷জানেন আমার ছোট বেলা থেকে খুব শখ ছিল লালা বেনারসি পরে ,গয়না পরে ,লাল টুকটুক বউ সেজে শ্বশুড় বাড়ী যাব কিন্ত তা আর যাওয়া হলো না ৷ কিভাবে সবাই ধরে বেধে বিয়ে দিয়ে দিল ৷তবে এবার সাদা শাড়ী পড়ে যাব ৷আপনার বাড়ীতে হয়তো পালকিতে চরে যাওয়া হলো না ৷কিন্তু খাটিয়াতে করে যেতে পারবো এবার ৷আপনার আর আমার বিয়েতে কাজী এলো না ৷সবাই আমার কবুল বলার জন্য আর অপেক্ষা করলো না ৷কিন্তু জানাযায় ঠিকই আসবে ৷কাতারে কাতারে লোক দাড়াবে ৷আমাকে একটা চুমু দেবেন আবরার ৷একটা প্রথম আর শেষ চুমু দেবেন আমাকে ৷দয়া করে এই চাওয়াটা থেকে আমাকে বঞ্জিত করবেন না ৷

আবরার রাইয়ের মুখটা দুই হাতে আগলে নিল ৷এই মুখটা তার ভালোবাসার মানুষের ৷কই আগে তো এভাবে দেখা হয় নি ৷আগে তো এত কাছে আসা হয় নি ৷সবই অসম্পূর্ন রয়ে গেল ৷ আবরার রাইয়ের কপালে চুমু দিতে গিয়ে আবারো কেদেঁ দিল ৷

আপনি কাদঁছেন আবরার ৷আর আমার কত ভালো লাগছে আপনি জানেন ৷প্রেমিকে প্রথম চুমু অমৃতের মত কাজ করে ৷ যা প্রেমিকাদের বাচঁতে শেখায় হাজার বছর ৷

ওপর দিকে আবরার ফুপু হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে দাড়িয়ে আছে ৷তার চোখে পানি ৷একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে দ্বীপের কাছে তিনি ৷একটু দূরেই দ্বীপ চৌধুরী মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে ৷

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here