#ভালোবাসি_বুঝে_নাও??
#পর্ব_৩,০৪
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
০৩
চারিদিকে স্টিমারের বিকট শব্দ আর পানির কলকল আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙে গেলো।গাড়িতে উঠার পর পরই আমি ঘুমিয়ে পরেছিলাম,, কিন্তু আমি এখন কোথায়?? গাড়ির জানালা দিয়ে মুখ বার করে দেখি ওমা আমি ফেরিতে,, তারমানে আমি এখন মাঝ নদীতে?? তাহলে তো অনেকক্ষণ ঘুমিয়েছি,, পাশে তাকিয়ে দেখলাম মেহরাব ভাইয়া ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে,, আর মেঘলা আপু আর মুনির গাড়ির জানালা দিয়ে মুখ বার করে সব কিছু দেখছে,, আর সুহান চুপচাপ বসে আছে,,,
কিরে ঘুম হলো??তুই তো দেখি কুম্ভকর্ণ কেউ হার মানিয়ে দিবি,,,,সেই সাত সকালে গাড়িতে উঠে ঘুমালি আর এখন দুপুর হতে চলল।
আমি,, কপট রাগ দেখিয়ে বললাম,,তাতে আপনার কি?? আমি ১যুগ ধরে ঘুমাবো,,
ঘুমা তোর যত ইচ্ছে ঘুমা,, কিন্তু তার আগে তো কিছু খেতে হবে নাকি?? মহারানির নিশ্চয়ই ক্ষিধে পেয়েছে??
আমি চট করে মাথা উপর নিচ করে বললাম,, হমম অনেক,,
তারপর মেহরাব ভাইয়া গাড়ি থেকে নেমে ফেরির মধ্যে থেকে খাবার আর পানি কিনে আনল সবার জন্য,,, খাওয়া দাওয়ার পর।
ভাইয়া আমরা এখন মাঝ নদীতে তাই না??(হাসি মুখে)
জি,, তবে আপনি যতই দাঁত কেলান না কেনো আপনাকে গাড়ি থেকে নামতে দেওয়া হবে নাহ, তাই আলাপ করে কোনো লাভ নাই।
আমি বুঝি না, এই ভাইয়াটা আমার মনের কথা বুঝে যাই কীভাবে,,, কোথায় ভাবলাম গাড়ি থেকে নেমে চারপাশটা একটু ঘুরে দেখবো,, নদীর ছোট ছোট ঢেউগুলো দেখবো,, নাহ তা আর হলো না,,,,
বেশি পাকামো না করে চুপচাপ বসে থাক,,
প্রায় অনেকক্ষণ পর আমরা উপারে পৌঁছালাম তারপর জ্যাম থেকে বেরোতে বেরোতে যোহোরের আযান দিয়ে দিলো।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে ভাইয়া ড্রাইভ করছে,, আব্বু দের গাড়ি আমাদের আগে ওনাদের গাড়ি ফলো করেই যাচ্ছি,, চিনি না তো তাই,, ভাইয়া অবশ্য গিছিলো তাও ভালো করে মনে নেই,,, আর আমি তো সেই পিচ্চি কালে গিছিলাম,,, আসোলে দূরের পথ তো তাই আর কারো যাওয়া হয় না।
শহরের রাস্তা শেষ করে আমরা গ্রামের ভিতর ঢুকলাম,, তখনি আসরের আযান দিলো,,, আমি গাড়ি থেকে মাথা বার করে মাঠ গুলো দেখছি,,,
মাহি মাথা ভিতরে আন এভাবে গাড়ি থেকে মাথা বার করতে হয় না,, আর গাড়ির কাচ লাগা ধূলো আসছে তো (ড্রাইভ করতে করতে বলল মেহরাব)
ওহহ আমি তো ভুলেই গিছিলাম ভাইয়ার ধূলোই এলার্জী আছে,, আমি গাড়ির কাচ লাগাতে যাবো তখনি সামনে দেখি মুনিরের বয়সী একটা ছেলে একটা মহিলার আচল ধরে কান্না করছে হয়ত কিছু বলছে। আমাদের গাড়ি আসা দেখে গাড়ির দিকে তাকালো,, আসোলে এই অজপারা গায়ে এমন বড় গাড়ি কখনো ঢুকিনি মনে হয় তাই এমন করে দেখছে।
আমি ও শয়তানি করে ওই পিচ্চি টাকে ভেঙ্গিয়ে দিলাম,, জিব্বা দেখিয়েই গাড়ির কাচ লাগিয়ে দিয়ে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখি সে কান্না অফ করে আমাদের গাড়ির দিকে তাকিয়ে আছে।
কিরে অমন চুপিচুপি হাসছিস কেনো??
কিছু না,,
নিশ্চয়ই কিছু করেছিস নইলে ওমন করে হাসছিস কেনো??
আসোলে আমি না একটা পিচ্চি কে জিব্বা দিয়ে ভেঙ্গাইছি (এটা বলে হাসতে লাগলাম)
এখানে এসেও বাদরামি শুরু করেছিস?? কেনো চুপচাপ বসে থাকা যাই না??
—————————————————
মাগরিবের আযানের একটু আগে বাড়ি এসে পৌছালাম,,,, আমার নানু বাড়ি আর ভাইয়ার দাদু বাড়ি,, একতালা একটা বাড়ি গাড়ি থেকে নেমেই আমি অবাক কেনোনা পুরো উঠান জুড়ে পিয়াজের ছড়াছড়ি আর অনেক গুলো মহিলা মিলে পিয়াজ কাটছে।
আচ্ছা ভাইয়া এখানে এতো পিয়াজ কেনো??
আরে বোকা এটা পিয়াজ তুলার সময়,, তাই পিয়াজ তুলে এরা কাটছে,, আর তারপর এই সব পিয়াজ বিক্রি করা হবে,, ও তুই এতো বুঝবি না চলতো ভিতরে চল।
তারপর আমরা ভিতরে গেলাম,, নানুর সাথে দেখা করলাম নানু এখন অনেকটা ভালো আমাদের সবাইকে দেখে অনেক খুশি হয়েছে,,,
কিরে পিচ্চি আমাকে চিনতে পারছিস??(ইশিতা)
হ্যাঁ চিনবো না কেনো তুমি তো ইশিতা আপু (মাহি)
হুমম মনে আছে দেখছি,,,আর আমাদের চিনতে পারছো??(রকি+রাকিব)
হুমম তোমরা রকি আর রাকিব কিন্তু কে কোনটা সেটা বুঝতে পারছি না।।
তুই বুঝতে পারবিও না,, বোকারা কিছু বোঝেনা (পাশ থেকে মেহরাব বললো)
আমি মোটেও বোকা নয় ভাইয়া,, আপনি শুধু বেশি বলেন(মুখ গোমড়া করে বললাম)
হা বোকারা কি কখনো কি বলে যে আমি বোকা??
আহ তোমরা চুপ করো তো,,, আর ভাইয়া তুই শুধু মাহির পিছনে লাগিস কেনো বলত ,, বাচ্চা মেয়ে (মেঘলা)
ও বাচ্চা?? আজ বিয়ে দিলে কালকে বাচ্চার মা হয়ে যাবে।
এই তোরা খেতে আয়(মা ডাকলো)
তারপর সবাই একসাথে বসে খেয়ে নিলাম,, অনেক জার্নি করার ফলে সবাই ক্লান্ত তাই বেশি রাত না করে,, ঘুমিয়ে পড়লাম।
,,,,সকালে,,,,
পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো,,, প্রতিদিন কাকের কাকা শব্দে ঘুম ভাঙে,,,কিন্ত আজকের সকালটা একদম অন্য রকম,,পাশে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই,, কিন্তু আমার স্পষ্ট মনে আছে রাতে আমি মেঘলা আপু আর ইশিতা আপুর সাথে ঘুমাই ছিলাম তাহলে ওরা কই গেলো?? পাশ থেকে ফোন নিয়ে দেখি বেলা ৮ টা বাজে, হায় হায় এতো বেলা হয়ে গেলো??
পাশ থেকে উড়না টা নিয়ে গায়ে জরিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসলাম,, কাউকেই খুঁজে পাচ্ছি না,, তখনি দেখলাম ছোট মামার ছেলে কিন্তু এটা রকি নাকি রাকিব জানি না,, জমজ তো তাই বুঝতে পারি না,,
এই পিচ্চি শোনো এদিকে আসো একটু।
হ্যাঁ বলো আপু কিছু বলবা??(রকি)
আচ্ছা আমার আম্মু কে দেখেছো?? কোথাও আর ইশিতা আপু মেঘলা আপু ওনারা কোথায়??
ফুপি তো রান্না ঘরে আর আপু আর ভাইয়ারা সবাই,, মাঠের দিকে গেছে।।
কেনো?? এতো সকালে মাঠে কেনো??
কি বলো আপু কই এতো সকাল দাখো কত রোদ উঠে গেছে আর ভাইয়ারা তো সেই কখন ব্রাশ করতে করতে গেছে এখন তো চলে আসার সময় হয়ে গেলো।
ওহ,,, আমাকে রেখেই বেড়াতে চলে গেলো?? আসুক আমি কারো সাথে কথা বলবো না (অভিমান করে বললাম)
আমি তাহলে গেলাম আপু (এই বলে রকি চলে গেলো)
আমিও গালটা ফুলিয়ে ব্যাগ থেকে ব্রাশ আর পেস্ট নিয়ে,, নিচে নেমে আসলাম,,, তখনি দেখি মেহরাব ভাইরা হাসতে হাসতে বাড়িতে আসছে,,, মেহরাব ভাই তো তার প্যান্ট টা হাটু অবধী গুটিয়ে রেখেছে,, আর ওনার পায়ে কাদা বাকি সবার পায়েই কাঁদা।
তোমরা আমাকে রেখে চলে গিছিলে কেনো??
তো কি করবো তোর যে ঘুম কুম্ভকর্ণ ঘুমের মতো হাজার ডাকলেও উঠিস না তাই তোকে রেখেই চলে গিছি,, আর তুই না গিয়েই ভালো হয়েছে,, পিচ্চি মানুষ কাঁদায় পড়ে গেলে আবার ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাদতি,, এখন যা তো এখান থেকে (পাগলি টা সারা রাস্তা জার্নি করে এসে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলো,, তাই জন্যই তো তোকে ডাকিনি,, আর মাঠে অনেক কাদা ছিলো,,, আর তুই তো খালি পায়ে আবার হাঁটতে পারিস না, যদি পা কেটে যেতো তাই আর তোকে ডাকিনি,, মনে মনে বলল মেহরাব)
আপনি খুব খারাপ মেহরাব ভাই,, শুধু সবার সামনে আমায় পচান,, যান গা যেখানে খুশি আমি যাবো না আপনাদের সাথে (এই বলে আমি চলে আসতে নিলে মেঘলা আর ইশিতা বলল)
আহ ভাইয়া সব সময় মেয়েটার সাথে এমন করিস কেনো??(মেঘলা)
সত্যি মেহরাব ভাই তোমার এমন করা মোটেও ঠিক না,, তুই চিন্তা করিস না মাহি বিকালে আমরা আবার যাবো,, আর তোকে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গায় নিয়ে যাবো (ইশিতা)
সত্যি বলছো ইশিতা আপু??
হুম সত্যি এখন যা তো মুখটা ধুয়ে খেতে আয়,,
তারপর আমি মেহরাব ভাইকে একটা ভেংচি কেটে চলে আসলাম।
,,,,ইশিতা আপু তোমরা গাছে উঠতে পারো আমি পারি না আমিও তোমাদের সাথে গাছে উঠবো,, (মেহরাব ভাই ল্যাপটপে কাজ করছে আর মেঘলা আপু মেঘ ভাইয়ার সাথে ফোনে কথা বলছে,,, আমি রকি রাকিব আর ইশিতা আপু,,, ওদের বাগানে এসেছি,, এখানে বড় একটা পিয়ারা গাছ আছে আপুরা সবাই গাছে উঠেছে পিয়ারা পারতে কিন্তু আমি তো উঠতে পারি না তাই নিচে দাড়িয়ে আছি)
তুই উঠবি??
হুম আমিও উঠবো।
আচ্ছা ঠিক আছে,, শোন তাহলে আমি এই ডালের উপর বসে আমার একটা পা নিচে ফেলছি তুই সেটা ধর তারপর আমি পা সহ তোকে উপরে তুলবো আর একটু উপরে আসলে রকি আর রাকিব তোকে ধরে এখানে উঠিয়ে নেবে বুঝেছিস??
হুম তুমি পা ফালো আমি রেডি।
তারপর আপু উপর থেকে পা ফেললো আমিও আপুর পা ধরে ঝুলে পরলাম একটু উচুতে উঠতেই আমার পিঠে চুলকানো শুরু করলো আমিও আপুর পা ছেড়ে পিঠ চুলকাতে গেলাম আর ঠাস করে নিচে পরতে গেলাম,,,
কিন্তু নিচে পড়ার আগেই কেউ আমায় ধরে ফেললো,, তাকিয়ে দেখি মেহরাব ভাই,, আমার দিকে কেমন রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।
এসব কি??(রেগে বললো মেহরাব)
আমি তো ভয়ে চুপ করে মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
চলবে,,,,,?
#ভালোবাসি_বুঝে_নাও??
#পর্ব_৪
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
কাজ শেষ করে বাইরে বেরিয়ে ফুপির কাছে মাহির কথা জিগাস করতেই বললো ও নাকি ইশিতার সাথে বাগানে এসেছে,,, তাই আমিও বাগানে আসলাম দেখতে ও কি করছে,, এসে দেখলাম কি সুমাচার।
আমি না ধরলে কি হতো এখন হুম(ধমক দিয়ে বলল মেহরাব)
ভাইয়া ওকে বকো না, আমিই ওকে গাছে উঠাচ্ছিলাম(গাছের উপর থেকে ইশিতা বলল)
তুই চুপ কর,, ওর হয়ে সাপাই গাওয়া বন্ধ কর,, আর আমি ছোট মামাকে বলছি তোর কথা, যে দুই এই ভর দুপুরে গাছে উঠেছিস (মেহরাব)
না ভাইয়া প্লিজ আব্বু কে বলো না আমি এখনি নামছি আর উঠবো না (এই বলে ইশিতা আর রকি রাকিব গাছ থেকে নেমে পড়ল)
আর আপনি (মাহিকে উদ্দেশ্য করে) গোসল করা লাগবে না??
হুম৷ করবো তো,, আপু তোমাদের গোসল খানা কোথায় বলো আমি গোসল করবো।
ওই যে বাথরুমের সামনে কলপাড় আছে তুই ওখানে গোসল কর।
আর তোমরা??
আমরা তো পুকুরে গোসল করবো।(ইশিতা)
কিহ সত্যি?? আমিও তাহলে তোমাদের সাথে পুকুরে গোসল করবো(মাহি)
নাহ কোনো দরকার নাই,, তুই সাঁতার জানিস না,, তুই আর মেঘলা কলে গোসল কর,,, (মেহরাব)
প্লিজ ভাইয়া,, আমি নিচে নামবো না শুধু পাড়ে বসে তোমাদের গোসল করা দেখবো প্লিজ প্লিজ(মাহি)
আমরা তো আছি ভাইয়া কিছু হবে না,, আমি ওকে দেখে রাখবো (ইশিতা)
আচ্ছা ঠিক আছে চল,, বেশি গভীরে যাবি না ওকে (মেহরাব)
ওকে ভাইয়া,,চলো চলো,,,
ছোট মামার একটা বড় পুকুর আছে,, বাধানো ঘাট,,, নামার জন্য কয়েকটা সিঁড়ি ও দেওয়া আছে সিঁড়ি গুলো পানির অনেকটা গভীর পযন্ত দেওয়া,,,, আমি সিঁড়ি উপর বসে পা গুলো পানির ভিতর দিয়ে বসে আছি,, আর আমার পাশে মেঘলা আপু বসে গায়ে সাবান মাখছে,,,,,
ইশিতা আপু রকি রাকিব আর মেহরাব ভাইয়া সাঁতার কেটে পুকুরের মাঝখানে যাচ্ছে আবার পাড়ে আসছে,,, আর আমি পাড়ে বসে ওদের সাঁতার কাটা দেখে খুশিতে হাতপা ছুঁড়ে ওদের দিকে পানি দিচ্ছি,,,
বলেছিলাম না তুই সত্যি একটা অকর্মার ঢেঁকি,, দ্যাখ তোর থেকে ছোট হয়েও রকি রাকিব সাঁতার কাটছে আর তুই ভেবলার মতো পারে বসে আছিস(সাঁতার কাটতে কাটতে বললো মেহরাব ভাইয়া)
ভাইয়া আমি যাবো,, (হাত বারিয়ে বললাম)
হুম তোকে নিয়ে এসে মাঝখানে ছেড়ে দেবো তখন বুঝবি।
ভাইয়ার কথা শুনে মুখ গোমড়া করে বসে থাকলাম,,, তখনি মনে হলো পানির নিচে থেকে কেউ যেনো আমার পা টানছে,, আমি ভয় পেয়ে চেচিয়ে উঠলাম।
আআআআআআআআ।
এই চুপ আমি,, এমন ভাবে চিৎকার করছিস যেনো মনে হচ্ছে কুমির ধরেছে (পানির নিচে থেকে মাথা বার করে বললো মেহরাব)
ও আপনি আমি তো ভেবেছিলাম সত্যি কুমির,
হুম তোর নানা এখানে কুমির পোষে জানিস না তুই,, পাগল ছাগল,, এখন আয়।
কোথায়??
কেবলি তো বললি মাঝখানে যাবি,, তো আয় আমি নিয়ে যাচ্ছি,,,, শোন তুই আমার পিছন থেকে গলা জরিয়ে ধরে পা দুটো পানির উপরে ভাসিয়ে রাখবি আর আমি সাঁতার কাটবো ওকে??
ওকে ওকে বুঝেছি,,,
তারপর আমি ভাইয়ার পিছন থেকে ভাইয়ার গলা জরিয়ে ধরে পা দিয়ে পানির উপরে সাতার কাটছিলাম আর ভাইয়া আমাকে নিয়ে পানির উপরে সাঁতার দিচ্ছিলো। প্রায় কিছু সময় পর আমরা পাড়ে আসলাম আমি তো সেই খুশি,, ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া হাফাঁচ্ছে তাই আমি জিগাস করলাম।
কি হয়েছে ভাইয়া ওমন হাফাচ্ছেন কেনো??
হাপাবো না তো কি করবো,, আর একটু হলে তো মেরেই ফেলতি,, এতো জোরে কেউ গলা চেপে ধরে??
আমি কি করবো, আমার ভয় লাগছিলো যদি ডুবে যাই,, সেই জন্যই তো আরো শক্ত করে ধরলাম।
হুম নিজে বেঁচে আমায় ডুবিয়ে দিচ্ছিলি,,, এখন উঠ অনেক গোসল হয়েছে,, ঠান্ডা লেগে যাবে,,, তারপর আমরা সবাই উঠে গেলাম,,,, মেঘলা মেহরাব এর দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতেছে।
কিরে ওমন করে হাসছিস কেনো??(মেহরাব)
নাহ কিছু না,,,, কুছ কুছ হোতা হে (এই গানটা বলতে বলতে চলে গেলো)
সব কটা পাগল,,,,।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
,,,,,বিকালে,,,,
আপু ঘুরতে যাবে না (মাহি)
হুম যাবো তো,, তার আগে আয় তোকে একদম গ্রামের মেয়ে সাজায়ে দিই (ইশিতা)
মানে??
আগে আয় তো,,, তার পর আপু আমায় একটা তাঁতের শাড়ি এরাকরে পরিয়ে আঁচল টা কমরে গুজে দিলো আর চুলগুলো ফিতে দিয়ে দুপাশে বেধে কান বেনি করে দিলো,, তারপর মেঘলা আপু আর ইশিতা আপুও একি রকম করে কাপড় পরে নিলো তারপর আমরা বাইরে বেরিয়ে আসলাম।
বাবা আমার মাহি নানু কে তো একদম গ্রামের রানি লাগছে (নানু)
সত্যি??
হুম সত্যি,,
বারে শুধু ওকেই সুন্দর লাগছে আর আমাদের বুঝি খারাপ লাগছে (মুখ গোমরা করে বলল মেঘলা আর ইশিতা)
না না আমার ৩ টা নাতনীই একেবারে রাজকুমারি,,, তারপর নানুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা মাঠের দিকে গেলাম,,, ছোট মামা বললো ভাইয়া নাকি বাগানে আছে ওখান থেকে ডেকে নিতে বলেছে।
বাগানে দাড়িয়ে ছিলাম তখনি দূরে মাহিকে এদিকে আসতে দেখলাম,,, তাতের শাড়ি পড়ে আঁচল টা কমরে গুজে,,, দেখে যেনো মনে হচ্ছে একদম গ্রামের পল্লী বধু।আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি,,,আমার,ডান হাতটা বুকের বা পাশে রেখে বললাম,, হায়!,, আর কত রুপ দেখবো তোমার,, আর কতভাবে মারবে আমায়।(মনে মনে)
ভাইয়া চলেন ঘুরতে যাবো,, মা বলেছে আপনাকে নিয়ে যেতে।
মাহির কথা যেনো আমার কানেই ঢুকছে না,, আমি এন ধ্যানে মাহির দিকে তাকিয়ে আছি।
ভাইয়া এমন করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কেনো,, আমার বুঝি লজ্জা করে নাহ,,কেমন নিলজ্জের মতো তাকিয়ে আছে (মনে মনে বলল মাহি)
ভাইয়া চলুন (একটু জোরে)
ওহ হ্যাঁ কিছু বললি??
বলছি যে চলেন সবাই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।
হ্যাঁ চল।
মাহি আগে আর মেহরাব ওর পিছন পিছন যেতে লাগলো।তোমাকে এরুপে দেখে আমার,, হুমায়ুন আহমেদ এর লিখা সেই গানটার কতা মনে পড়ে যাচ্ছে।
,,,,এক যে ছিলো সোনার কন্যা মেঘ বরণ কেশ,,
,,,ভাঁটি অঞ্চলে ছিলো সেই কন্যার দেশ,,
,,,দুচোখে তার আহারে কি মায়া,,
৷৷৷, নদীর জলে পরল কন্যার ছায়া,, তাহার কথা বলি,,
তাহার কথা বলতে বলতে নাও দৌড়াইয়া চলি,,
চলবে,,,,,,?