The_Colourful_Fragrance_Of_Love? Part: 10

0
1460

?#The_Colourful_Fragrance_Of_Love?
Part: 10

তিশাঃ বাহ হিয়া তুমি তো কামাল করে দিলে,এরকম করে মেয়েটা কে অপদস্ত করলে,,সত্যি তোমার সাহস আছে বলতে হবে

হিয়াঃ আমার ইচ্ছে তো করছিলো আটা ময়দা মাখা মুখটায় দুম করে একটা ঘুসি বসিয়ে দেয়,তাহলে থোঁতা মুখটা ভোঁতা হয়ে যেতো, তখন খুব খুব ভালো হতো,বেয়াদব মেয়ে একটা

সন্ধিঃ রিলাক্স,কুল কুল,মাথা ঠান্ডা করো এতো রাগলে চলবে,,,,তুই ই বা এরকম ভ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে কি দেখছিস,হিয়াকে একটা থ্যাংকস দে,কি রে থ্যাংকস বল

সন্ধির ঘুতানিতে উজান একটু আগের ট্রমা টা থেকে ফিরে আসে,নিজেকে হালকা করে নিয়ে কিছু বলতে যাবে ওমনি খেয়াল করে হিয়া ট্রের গ্লাস গুলো থেকে গ্লাস তুলে ঢকঢক করে তখনো রাগে কটমট করতে করতে ড্রিংক গিলছে তো গিলছেই

উজানঃ শীট,,,,শীট শীট শীট,,,,হিয়া হিয়া হিয়া

বলেই উজান হিয়ার হাত থেকে গ্লাস টা কেড়ে নেয়

হিয়াঃ কি হয়েছে,আপনি আমার গ্লাস টা ওরকম করে কেড়ে নিলেন কেনো,,,,,দিন বলছি,আমার গলা কিন্তু এখনো শুকিয়ে আছে,দিন

উজানঃ অনেক হয়েছে আর না,উঠো বাড়ি যাবো

হিয়াঃ বাড়ি যাবো মানে

উজানঃ বাড়ি ফিরবো মানে বাড়ি ফিরবো,উঠো

সন্ধিঃ এরকম টানছিস কেনো ওকে,যাবোই তো বাড়ি,সবাই চলে যাগ আগে

উজানঃ তুই জানিস না কি হয়েছে

সন্ধিঃ কি আবার হবে

উজানঃ হিয়া বিয়ার খাইছে,,এগুলো গ্লাসে সব বিয়ার আর ওয়াইন ছিলো

সন্ধিঃ হোয়াট,এগুলো এই গ্লাসে,কার কার কাজ এগুলো

উজানঃ তোর হাসবেন্ড আর আমার গুনোধর ফ্রেন্ড তুষার আর অভিকের কাজ ছাড়া কারই বা কাজ হতে পারে এগুলো

সন্ধিঃ তু তু তুষার এগুলো এনেছে

উজানঃ হুম

সন্ধিঃ আজকে ওর একদিন কি আমার,বদ পোলা কোথাকার,,,তুষার তুষার

তুষারঃ হ্যা হ্যা জানপাখি বলো

সন্ধিঃ তখন তারমানে সাব্বির এই বোতল গুলোর কথাই বলছিলো

তুষারঃ ইয়ে মানে হ্যা মানে

সন্ধিঃ এজন্য এজন্য আমাকে আর হিয়াকে ড্রাইভারের সাথে করে বাড়ি ফিরতে বলা তো তোমার,কি মনে করছো আমি ধরতে পারবো না,গেটের এক্সট্রা চাবি টা দেও

তুষারঃ কেনো?

সন্ধিঃ দিতে বলছি দেও

তুষারঃ এই যে নেও

সন্ধিঃ আজকে থেকে আগামী এক সপ্তাহ তোমার আমার বাড়িতে যাওয়া বন্ধ,এই কদিন তুমি যেখানে খুশি গিয়ে থাকো বাট আমার দরজায় গিয়ে যদি নক করা দেখছি তাহলে তোমার একদিন কি আমার একদিন,হু

তুষারঃ সন্ধি শোনো সন্ধি,,জানপাখি ওয়েট,সন্ধি লিসেন সন্ধি,সন্ধি

তুষার সন্ধির পেছন পেছন চলে গেলে অভিক এসে উজানের কাঁধে হাত রাখে

অভিকঃ তিন গ্লাসে কিচ্ছু হবে না দোস্ত

উজানঃ Shut Up অভিক,,হোয়াট তিন গ্লাস,,,,,,এসব হিয়া খেতে যাবেই বা কেনো,যেখানে আমি এসব জিনিস লাইক করি না সেখানে হিয়াকে আমি এসবে এলাও করবো ভাবলি কি করে??

অভিকঃ Sorry,এখন কি করবি সেটা ভাব

উজানঃ কি আবার করবো,সবাই কে তাড়াতাড়ি বিদায় দে,বস কোথায়,আমি ওনার সাথে দেখা করেই বেড়িয়ে যাবো,এরপর হিয়ার নেশা উঠলে ওকে তুই থামাতে পারবি

অভিকঃ আচ্ছা তুই তোর কাজ টা গুটায় নে,আমি তোতোক্ষন হিয়ার সাথে আছি,তুই গেলে না হয় আমি বাদ বাকি সব টা সামলে নেবো

উজানঃ হুম
___________________________
রাত এখন সাড়ে বারোটা,হিয়ার নেশা পুরো টা ধরে গেছে,হিয়া এখন আর নিজের হুঁশে নেই,উজান সাব্বির কে দিয়ে টক জল টানলেও কোনোভাবে হিয়াকে খাওয়াতে সক্ষম হয় না,গাড়ি টা গ্যারেজের কাছে রেখেই উজান হিয়াকে নিয়ে লিফটে উঠতে যাবে ওমনি দেখে লিফট টা নষ্ট হয়ে আছে,উজানের মেজাজ তো আরো পুরো বিগড়ে যায়,এখন এই ছ তলা অবধি হিয়াকে নিয়ে উপরে উঠবে কি করে ও

হিয়াঃ লিফট বন্ধ,,হে হে,,চলুন আমরা আবার সন্ধি আপুর কাছে ফিরে যাই

উজানঃ হেই কোথায় যাচ্ছ,ওয়েট

হিয়াঃ উমহুম হাত টা ছাড়ুনননন,,আমি আপু যাবোওও

উজানঃ এক পা ও নড়বে না,আসো আমার সাথে,,সিড়ি দিয়ে উঠো

হিয়াঃ কোথায় সিড়ি!!ঔ তো সিঁড়ি

হিয়া দৌড়ে গিয়ে সিড়ি দিয়ে উঠে প্রথম ফ্লোর পার হয়,উজান হিয়ার পিছে পিছে দ্রত সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে আসে

হিয়াঃ আ আ আ আমার শাড়ি,,

উজানঃ আস্তে পড়বে,,শাড়ি থেকে হাত ছাড়ো,আমার হাত ধরো

হিয়াঃ ছিঃ অসভ্য হাত ধরতে বলে,,মা’কে বলে দেবো তোমার ছেলে আমার হাত ধরতে চাইছে

উজানঃ যা ইচ্ছে বলো গিয়ে আই ডোন্ট কেয়ার

উজান রাগে হিয়ার হাত ধরে টানতে টানতে ২য় ফ্লোর পাড় হয়,তৃতীয় ফ্লোরের অর্ধেক গিয়ে হিয়া এবার টুক করে সিঁড়ি তে বসে পড়ে

উজানঃ হোয়াট দা

হিয়াঃ আসুন না আমার পাশে বসুন

উজানঃ হিয়া সিঁড়ি তে ময়লা,,কি করছো কি উঠে আসো প্লিজ

হিয়াঃ না আগে আপনি আমার পাশে এসে বসুন,আ হা বসুন না,বসুন বসুন

হিয়া ওর আঁচল দিয়ে সিঁড়ির এক পাশ পরিষ্কার করতে যাবে ওমনি উজান হিয়াকে থামিয়ে দিয়ে হিয়ার পাশে গিয়ে বসে

উজানঃ কেউ এখন সিঁড়ি দিয়ে আসলে বা নামতে ধরলে কি ভাববে আমাদের কোনো ধরনা আছে,,,,দেখি এই বোতলের জল গুলো সব শেষ করো তো তাহলে তোমাকে সন্ধি বাড়ি নিয়ে যাবো প্রমিস

হিয়াঃ সত্যি?

উজানঃ হ্যা সত্যি,এখনই নিয়ে যাবো পাক্কা

হিয়াঃ ঠিক তো

উজানঃ হুম,কিন্তু পুরো টা গিলতে হবে তবেই

হিয়াঃ গিলছি গিলছি

হিয়া উজানের হাত থেকে বোতল টা নিয়ে ঢকঢক করে সব গিলে ফেলে,আর টকে দাঁত মুখ পুরো খিঁচে উঠে তার,হিয়ার ওরকম খিচুনি দেওয়া মুখ দেখে উজান মনে মনে হাসতে হাসতে শেষ

হিয়াঃ এয়াক কি বিশ্রী,,ছিঃ,,কি টকক

উজানঃ হুমম চলো এখন

হিয়াঃ কুতায় যাবো

উজানঃ কেনো সন্ধি বাড়ি

হিয়াঃ হ্যা তাই তো,চলুন চলুন

হিয়া উঠে দাঁড়ায়,হিয়ার সাথে উজান,উজান উঠে প্রথমেই উপর নিচ দেখে হিয়াকে টুক করে কোলে তুলে নেয়

হিয়াঃ এই এই আপনি আমাকে তুলে নিলেন যে

উজানঃ তা কি করবো,যেভাবে ঢলে ঢলে উঠছো,পড়ে গিয়ে হাত পা ভেঙে ফেলার ইচ্ছে আছে বুঝি খুব

হিয়াঃ হে হে

উজান হিয়াকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে শুরু করে,এ-র মাঝে পাঁচ তলায় রিয়াদের গেট খোলা থাকায় রিয়াদের চোখ পড়ে উজানের উপর,রিয়াদ হালকা হেসে দিয়ে

রিয়াদঃ ভাই তো দেখছি ভাবীর এইটুকু সিড়ি দিয়ে উঠে আসা কষ্ট সহ্য করতে পারছে না,,তা ভাবী ভালোই চলছে তাহলে দিনকাল

উজানঃ একদম বাজে বকবি না,যা নিজের ঘরে যা,?

উজান হিয়াকে নিয়ে এবার ছ তলা অবধি উঠে ওদের ফ্লোরে গিয়ে কলিংবেল বাজালে বাসবি গেট খুলে দিয়ে উজানের কোলে ওভাবে হিয়াকে দেখে থ হয়ে মুখ টিপে হেঁসে ফেলে

উজানঃ মা প্লিজ হাসি টা বন্ধ করো,,

হিয়াঃ মাআআআআ,,মা মা দেখো আমি হাওয়ায় দোল খাচ্ছি,কি সুন্দর ভাসছি আমি দুলে দুলে?

বাসবিঃ হ্যা মা দেখছি তো,এতোওও সুন্দর দোলনা তোর

উজানঃ কি হচ্ছে কি মা,সরো সামন থেকে

বাসবিঃ সন্ধি বললো আমাকে সব ফোন করে,ভাগ্যিস তুষার ওগুলো নিয়ে আসছিলো, নাহলে এতো সুন্দর হাওয়াতে ভেসে দোল খাওয়া দেখবার সৌভাগ্য ক’জন মায়ের হয় বলতো

উজানঃ (হিয়াকে নামিয়ে দিয়ে)কোথায় তুমি তুষারকে ফোন দিয়ে শাসন করবে তা না করে তুমি ওকে সাপোর্ট করছো,কীভাবে

বাসবিঃ আচ্ছা হয়েছে,হিয়াকে নিয়ে রুমে যা আমি আসছি

উজান হিয়াকে নিয়ে রুমে গিয়ে ওভাবেই সোফায় গিয়ে দুম করে বসে পড়ে,উজান এখন ভীষণ ক্লান্ত,তারপর হিয়াকে কোলে নিয়ে এতোদূর,সারাদিনের সব অবসাদ এসে মুহুর্তে গ্রাস করে উজানকে,,নিজের ক্লান্তি একটু কমতে উজান যেই চোখ টা বন্ধ করতে যাবে ওমনি হিয়া এসে টুক করে উজানের কোলে এসে বসে পড়ে দুহাতে উজানের গলা জড়িয়ে ধরে

হিয়াঃ আমার সুন্দর বর টা?

উজানঃ তুমি কি ক্লান্ত হও নি

হিয়াঃ ক্লান্ত কি জিনিস

উজানঃ ঘুমাবা??চলো ঘুমাই

হিয়াঃ ঘুম কি জিনিস

উজানঃ আমি শার্ট টা চেঞ্জ করে আসি

হিয়াঃ কেনো,এটাতে তো সুন্দর সুন্দর লাগছে,,

উজানঃ হ্যা এগুলো পড়ে তো রাতে ঘুমোনো যাবে না না,ঘেমে গেছে,এগুলো পড়ে ঘুমোলে তো শরীর খারাপ করবে

হিয়াঃ না করবে না,পরে চেঞ্জ করে নিয়েন,আমি এখন আপনার গাল খাবো

উজানঃ হোয়াট

হিয়াঃ গাল খাবো গাল,নরম নরম গাল

বলেই হিয়া উজানের গালে দুম করে একটা কাপড় বসিয়ে দেয়

উজানঃ কি করছো হিয়া কেউ আসবে

হিয়াঃ গাল গুলো কি টেস্টি?

উজানঃ সব ছেড়ে আমার গাল টাই খেতে হলো তোমার

হিয়াঃ গাল গুলো যে খুব সুন্দর

উজানঃ (হিয়ার শাড়ির আঁচল টা ঠিক করে দিয়ে) আর কিছু সুন্দর না আমার

হিয়াঃ আপনার তো সবই সুন্দর,এই গাল গুলো এই চোখ গুলো এই ঠোঁট গুলো,,,ঠোঁট গুলো খাই একটু

উজানঃ নেভার,,কখনো না

হিয়াঃ কেনো,খাই না একটু

উজানঃ না আমার ঠোঁট টেস্টি না

হিয়াঃ তাহলে কার টা টেস্টি,মার টা,,ঠিক আছে আমি তাহলে গিয়ে মার ঠোঁট খেয়ে আসি ওয়েট

হিয়া উঠে দৌড়ে যেতে ধরলে উজান খপ করে হিয়াকে ধরে গেট লাগিয়ে দেয়

উজানঃ পাগল হইছো তুমি,,কি করতে যাচ্ছিলে,,ইডিয়ট,,দেখি

হিয়াঃ কি

উজানঃ শাড়ি টা খুলো

হিয়াঃ শাড়ি খুলতে বলছে,অসভ্য কি রকম দেখো?

উজান রাগে গটগট করে হিয়ার লাগেজ থেকে একটা জামা বের করে হিয়ার হাতে দিয়ে বলে শাড়ি খুলে নিয়ে এটা পড়তে,উজান হিয়ার হাতে শাড়ি ধরিয়ে দিয়ে নিজে ওর শার্ট টা খুলে বিছানায় রেখে দিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে ওর হাফ টাওজার আর গেঞ্জি পড়ে বের হয়,হিয়ার এতোক্ষণ শাড়ির অর্ধেক খোলা শেষ,হিয়া জামার বদলে গায়ে পড়ে উজানের খুলে রাখা খয়েরী শার্ট টা,আর যেই নিচের পেটিকোট টা খুলতে যাবে ওমনি উজান এসে হিয়াকে থামিয়ে দেয়

উজানঃ হোয়াট দা তোমাকো আমার শার্ট কে পড়তে বলছে,খুলে জামা পড়ো বলছি?

হিয়াঃ আমি খুলবো না খুলবো না খুলবো না

উজানঃ হিয়া

হিয়াঃ আমাকে বকলে কিন্তু আমি এখন কান্না করে দেবো

উজানঃ কথা শুনো হিয়া প্লিজ,,

হিয়া উজানের কথা না শুনে ওরকমই নিচের দিকে লেপ্টে ধরা শাড়ি দুহাতে মুঠ করে ধরে বিছানায় গিয়ে ধপ করে বসে পড়ে,,

হিয়াঃ আমার শাড়ি,আমার শাড়ি

উজানঃ প্লিজ হিয়া,,নামো বলছি,জামা টা পড়ে নেও,ঔ শার্ট টা আজ আমি সন্ধ্যে থেকে পড়ে আছি

হিয়াঃ না না আমি খুলবো না,ওতা ওতা পড়বো না,,

উজান এতো করে হিয়াকে রিকুয়েষ্ট করে জামা পড়তে কিন্তু হিয়া পড়ে না,উজান আর পারে না,মুখ দিয়ে যে আর কিছু বের করবে সেই এনার্জি টুকু তার আর নেই,রাত এখন দেড় টা,কাল আবার অফিস,উজান বাধ্য হয়ে সব দরজা জানালা লাগিয়ে হিয়ার পাশে গিয়ে বালিশে হেলান দিয়ে শুইয়ে পড়ে,হিয়া গিয়ে উজানের কাছে একি বালিশে হেলান দিয়ে উজানের বুকে মাথা রাখে

উজানঃ একদম লাফঝাপ করবা না আর,চুপচাপ যেভাবে মাথা রেখে আছো ওভাবেই ঘুমিয়ে পড়,কুইক

হিয়াঃ না ঘুমোলে

উজানঃ আমি রাগ কারবো,ভীষণ রাগ করবো

হিয়াঃ তাহলে আমিওওওওও

বলেই হিয়া উজানের পুরো মুখে মন ভরে চুমু এঁকে দেয়????

উজানঃ (হিয়ার চুল গুলো কানের পাশে গুঁজে দিয়ে) কে শিখিয়েছে এসব তোমায়

হিয়াঃ সন্ধি আপু,আপু বলেছে ভাইয়া রাগ করলে আপু ওনাকে এরকম করে আদর দিয়ে দেয় তখন আর বরফ ভাইয়া আপুর উপর রাগ করতে পারে না?

উজানঃ তাই

উজান হিয়ার কপালে একটা স্নেহের পরশ একে দিয়ে বালিশ টা হালকা নামিয়ে হিয়াকে শুইয়ে দিয়ে চাদর টা হিয়ার গলা অবধি দিয়ে দেয়

হিয়াঃ আপনি আমায় আদর করছেন আজ হে হে

উজানঃ এটা আদর না,দেখি চোখ বন্ধ করো,কুইক

হিয়াঃ(আবার উঠে উজানকে জড়িয়ে ধরে) এখানে ঘুমোই আজ আমি

উজানঃ না তুমি বালিশে

হিয়াঃ প্লিজজ

হিয়ার আবদারে উজান হিয়াকে ওর বুকে আগলে নেয়

উজানঃ এবার না ঘুমোলে কিন্তু আমি?

হিয়াঃ ঘুমোচ্ছি তো,এখন ঘুম না আসলে আমি কি করবো?

উজানঃ আবার কথা

হিয়া চুপ করে উজানকে জড়িয়ে কিছুক্ষণ পর ঘুমের ঘোরে হঠাৎই বলে উঠে

হিয়াঃ নীলিমা আপু!!

উজানঃ হিয়া

হিয়াঃ (হালকা চোখ খুলে উজানের দিকে তাকিয়ে)নীলিমা আপু!!আপনি কি কখনো আমাকে নীলিমা আপুর মতো ভালোবাসবেন না,,কখনো আমাকে আপুর মতো মন থেকে গ্রহন করবেন না

কথাটা বলেই হিয়া আবার উজানের বুকে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে,উজান স্তব্ধ,হঠাৎ হিয়া ওদের মাঝে কেনো আনলো নীলিমাকে

পরেরদিন খুব সকাল সকাল হিয়ার ঘুম ভেঙ্গে আসে,,শরীর টা আড়মোড়া দিয়ে উঠতে গিয়েই হিয়া নিজেকে উজানের বাহুডোরে আবিষ্কার করতেই পুরো বিস্মিত হয়ে পড়ে,রোজ তো সোফায় ঘুমায় তাহলে আজ এভাবে বিছানায়,কাল রাতে কি হয়েছিলো কিছুই তো স্মরণে আসছে না তার,এখন উপায়,হিয়া বোকার মতো তাকিয়ে থাকে উজানের মুখের দিকে,একটা সময় পর উজান ঘুম থেকে উঠে, হিয়াকে জড়িয়ে ধরে থাকা ওর বেষ্টন টা হালকা আলগা করে উঠে বসে

উজানঃ কাল থেকে অনেক ভুগিয়েছো আমায়,তোমার এজন্য শাস্তি পাওনা উচিৎ বুঝলা

হিয়াঃ কি করেছি আমি,আর আমি এখানেই বা কি করে আসলাম,আমার গায়ে এই এই আপনার শার্ট কেনো,,

উজানঃ শুধু শার্ট টাই দেখলে,অন্য কিছু চোখে পড়ছে না

হিয়াঃ কি কি চোখে পড়ছে না

উজানঃ (উঠে গিয়ে হিয়ার শার্টের দুটো বোতাম লাগিয়ে দিয়ে)শার্টের বোতাম খোলা!!

বলেই উজান একটা বাঁকা হাসি দিয়ে উঠে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে চলে যায়,এদিকে হিয়া তো লজ্জায় পুরো টমেটো হয়ে বালিশে মুখ লুকিয়ে নেয় নিমিষে,,

______________________________

এদিকে উজান অফিসে চলে গেলে হিয়া বাসবি আর সন্ধির থেকে কালকের সব ঘটনা শুনে লজ্জায় কোথায় মুখ লুকাবে সারাদিনে সেই জায়গা খুঁজতে থাকে,আর ভাবতে থাকে সবার সামনে এরকম কাজ করলে না জানি উজানের সামনে আরো কতো কি করেছে সে,ধুর

সন্ধ্যে তে উজান আসার পর থেকেই হিয়া লজ্জায় আর কোনোভাবে উজানের সামনে যায়নি,যে রকম করে পারছে যেভাবে পারছে কথা কেটে কেটে দিয়ে উজানের থেকে পালিয়ে পালিয়ে থাকবার চেষ্টা করছে,উজানো হিয়ার এই লুকোচুরি টা বেশ ইনজয় করছে

রাত এখন সাড়ে বারোটা,হিয়া কোনোরকম মুখ নামিয়ে,চোখমুখ খিচে,ঘরে এসেই দুম করে ওর সোফায় গিয়ে উল্টো হয়ে আঁটোসাটো হয়ে শুইয়ে পড়ে,উজান তখন ওর ল্যাপটপে অফিসের শেষ ফাইল টা চেক করছিলো,,চেক করা শেষ হলে রাতের যাবতীয় কাজ মিটিয়ে,রুমের লাইট ওফ করে দিয়ে উজান ওর গিটার টা নিয়ে বারান্দায় গিয়ে উঁচু টুল টায় বসে গিটারে টুংটুং শব্দ করে সুর তুলতে শুরু করে

গিটারের টুংটাং ধ্বনি তে হিয়া চোখ খুলে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে উজান ওর বিছানায় নেই,হিয়া আলতো করে পা টিপে টিপে ব্যালকুনিতে উজানের পেছনে গিয়ে দাঁড় হয়,উজানের গলায় গান শুনবে বলে,কিছুক্ষণ পর

উজানঃ জানো হিয়া,,দু বছর আগে আমার জন্মদিনে নীলি আমাকে এই গিটার টা গিফট দিয়েছিলো আর বলেছিলো রোজ যেন ঘুমোতে যাবার আগে আমি ওকে এই গিটার বাজিয়ে গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেই

হিয়া কি বলবে বুঝতে পারে না,এদিকে যে ও এতো সাবধানতার সাথে পেছনে এসে দাঁড়াল সেটাই বা উজান বুঝলো কি করে??হিয়াকে চুপ থাকতে দেখে উজান পেছন ঘুরে হিয়ার একটা হাত ধরে,একটা পা দিয়ে পাশে থাকা আরেকটা টুল ওর কোলের কাছে মাঝ বরাবর রেখে হিয়াকে টুলে বসিয়ে দেয়,তারপর আলতো করে গিটার টা হিয়ার কোলে রেখে উজান হিয়াকে বুকের কাছে টেনে নিয়ে হিয়া সহ গিটার টা জড়িয়ে ধরে হিয়ার কানের এক পাশে মুখ গুজিয়ে দেয়

উজানঃ গিটার টা বাজাবা

হিয়াঃ আমি গি–টার বা–জাতে পারি না তো

উজানঃ আমি শিখিয়ে দেবো

হিয়াঃ না আমি শিখতে গেলে আবার তার গুলো সব ছিড়ে আসবে তখন,,

উজানঃ আসবে না

উজান হিয়ার হাত গুলো ধরে হিয়াকে দিয়ে টুংটাং ধ্বনি তুলতে শুরু করে

হিয়াঃ আমি যেভাবে বাজাচ্ছি,,পুরো এলাকার সবাই ঘুম থেকে উঠে এসে আপনাকে বকা দিয়ে যাবে?

উজানঃ পুরো এলাকাবাসী না আসলেও,তোমার ছোট দেবর এসে আমার পিন্ডি চটকে দিয়ে যাবে

হিয়াঃ হে হে,,আপনি একটা গান শুনান না,খুব ইচ্ছে করছে আপনার গান শুনতে,প্লিজজজ

উজানঃ অনেকদিন হলো অভ্যেস নেই,ভালো লাগবে না তোমার শুনতে

হিয়াঃ কে বলেছে ভালো লাগবে না,বললেই হলো,ভালো না লাগলেও আমি শুনবো,নিন শুরু করুন রেডি ওয়ান টু থ্রী

উজানঃ শোনাতেই হবে

হিয়াঃ হুমমমমম হবে হবে হবে

উজানঃ (হিয়ার মাথার সাথে মাথা ঠুকে একটা হালকা হাসি দিয়ে) শুনা-চ্ছি

উজান গিটারের সুর তুলে গান শুরু করে,ব্যালকুনির উপর তখন দমকা বাতাস,সেই বাতাসের বেগ এসে আছড়ে পড়ে হিয়ার চুলে,সেই চুল গিয়ে আছড় খায় উজানের মুখে

??
তোমাকে না লেখা চিঠিটা ডাকবাক্সের এক কোণে
সাদা খামের না লেখা নাম একেছে তার গানে
তোমাকে না লেখা চিঠিটা ডাকবাক্সের এক কোণে
সাদা খামের না লেখা নাম একেছে তার গানে
সেই চিঠির যতো লেখা থাকে একা একা
সেই গানের না শোনা সুর একা একা আঁকা
ছুঁয়ে যায়ে তবু কখন এসে!
যদি বলি সে সবই তোমারই?
একা চিঠি একা আঁকা গান
যদি বলি সে সবই তোমারই?
একা চিঠি একা আঁকা গান

আমি আমিতে ভাসি নি কোনদিনও নীলে
তুমি তোমার দু’চোখে সেই নীল ছুঁলে
আমি আমিতে ভাসি নি কোনদিনও নীলে
তুমি তোমার দু’চোখে সেই নীল ছুঁলে
আজও আমার সারাটা নীল থাকে একা একা
সেই চিঠির না পড়া সুর একা একা আঁকা
ছুঁয়ে যায়ে তবু কখন এসে!
যদি বলি সে সবই তোমারই?
দু’চোখে ভেসে যাওয়া নীল আমার
যদি বলি সে সবই তোমারই?
দু’চোখে ভেসে যাওয়া নীল আমার
??

গান শেষ হলে উজান একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে হিয়ার খোলা ঘাড়ে,হিয়া দু হাতে তালি বাজিয়ে নেয় টপাটপ

হিয়াঃ খুব তো তখন বললেন অভ্যেস নেই,ভালো হবে না,,,,,এখন কি রকম হলো বলুন দেখি?

উজানঃ তোমার আমার গান ভালো লেগেছে

হিয়াঃ ভীষণণণণণ ভালো লেগেছে,,,,জানি আবদার করা টা উচিৎ হবে না তবু যদি কখনো মন চায়

উজানঃ কি

হিয়াঃ যদি কখনো মন চায় তো আমাকেও নীলি আপুর মতো মাঝে মাঝে গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেবেন,,রোজ রোজ আপুর মতো শুনাতে হবে না ঔ একটু মাঝে মাঝে

উজানঃ ঠিক-আছে,,,একটা কথা জিজ্ঞেস করি হিয়া

হিয়াঃ বলুন

উজানঃ তোমার কি সত্যি নীলির কথা শুনলে খারাপ লাগে না,,শুনেছি মেয়েরা নাকি তাদের হাসবেন্ড কে নিয়ে একটু পজেসিভ থাকে কিন্তু তুমি কখনোই আমাকে নীলিকে নিয়ে কথা শুনাও নি

হিয়া উজানের বুকে পেছন থেকে হেলান দিয়ে ওর পুরো ভার ছেড়ে দেয়,উজান গিটার টা সাইডে থুইয়ে হিয়াকে দুহাতে পেছন থেকে আগলে ধরে

হিয়াঃ কষ্ট আমি তখনই পেতাম যদি আপনি আমাকে বিয়ে করবার পর অন্য কোনো মেয়েকে ভালোবাসার কথা বলতেন,,কোনো মেয়ের পক্ষে এটা সহ্য করা সম্ভব না___কিন্তু আপনার জীবনে আমি আসার আগে থেকে নীলিমা আপু ছিলো,,আর আপনি আপনার সব কিছু উজার করে তাকে ভালোবেসেছিলেন,,আপনাদের বিয়ে হয় নি সেটা নিশ্চয় আপনাদের ভালোবাসার দোষ না এটা এই সমাজ টার দোষ,,,,,তাই নীলিমা আপুর প্রতি আপনার যেই ভালোবাসা সেটাকে আমি শ্রদ্ধা করি মন থেকে,,আর তাছাড়া

উজানঃ তাছাড়া

হিয়াঃ আমাকে একটা কথা বলুন এই যে আমি যদি আজ আপনাকে বলি নীলি আপুকে আপনি ভুলে যান,,আপনি আমার কথা শুনে ভুলেও গেলেন এখন ধরুন কখনো কেউ যদি এসে আমাকে বলে আপনাকে ভুলে যেতে আমি কি তা পারবো??পারবো না

উজানঃ কেনো

হিয়াঃ ভালোবেসে ফেলেছি আপনাকে তাই❤️

উজানঃ হিয়া!!

হিয়াঃ আচ্ছা ওসব ছাড়ুন,,আমাকে নীলি আপুর জায়গা দিতে না পারলেও এখন যেভাবে সব কিছু তে আগলে আগলে রাখেন ওটা রাখলেই হবে,,ছোট থেকে ভালোবাসা চেয়ে চেয়ে বেড়িয়েছি সবার কাছ থেকে মামু মামি চিএা এমনকি বাড়িতে কাজ করতে আসা খালার থেকেও,,,সবার কাছে একটু ভালোবাসা ভিক্ষে চেয়েছিলাম পাই নি কখনো আজ যখন আপনি,আপনার মা,সন্ধি আপু,আমাকে এতো টা আগলে ধরে রেখেছেন তখন আমি কি করে আপনার থেকে আপনার ভালোবাসা টা মুছে ফেলার মতো অন্যায় আবদার করবো বলতে পারেন

উজানঃ কাঁদছো কেনো তুমি,,একদম কাঁদবে না,,তোমার জন্য এখন আমি আছি,,কারো কাছে ভালোবাসা ভিক্ষে করতে হবে না তোমাকে(হিয়ার চোখ মুছে দিয়ে)

হিয়াঃ হুম

উজানঃ তা সন্ধ্যে থেকে আজ যেরকম করে পালিয়ে পালিয়ে ছিলে এরপর আর কখনো এ-র কম করে পালিয়ে পালিয়ে থাকলে কিন্তু

হিয়াঃ কিন্তু

উজানঃ আর কখনো গান শুনাবো না,গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া তো দূরে থাক,মনে থাকবে

হিয়া একটা লজ্জা সূচক হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে বলে হুম থাকবে মনে
________________________

??

উজান হিয়ার বিয়ের প্রায় এক বছরের মতো হয়ে আসলো,কবে যে দেখতে দেখতে সময় গুলো চলে গেলো নিমিষে,উজান এখন আর আগের মতো নীলিমা কে নিয়ে বেশি পাগলামো করে না,মনের মাঝে যেটুকুই কষ্ট আসে সেটাকে নিজের মনেই চেপে দিয়ে ভালো থাকতে চেষ্টা করে,এপাশে হিয়া তো আছেই ওর মন ভালো করার ডোজ,সব মিলিয়ে বেশ ভালোই চলছিলো সময় গুলো,,,,

ডাইনিং টেবিলে হিয়া বাসবির সাথে হাতে হাতে দুপুরের খাবার বাড়ছে,আজ শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় উজান,সমরেশ,বিহান সবাই বাড়িতে,তার উপর ফুফুরা এসেছে আজ দুদিন হলো,,বিহানের জন্য নাকি কোন মেয়ে ঠিক করে রেখেছে সেই নিয়ে কথা বলতে,,ছেলেদের খাবার শেষ হলে হিয়া বাসবি ফুফু এরা বসে পড়ে খেতে,কিন্তু খাবার মাঝ পথেই ফুফু হিয়াকে জেরা শুরু করে,হাসি হাসি মুখ করেই ফুফু হিয়াকে ঠেস দিয়ে অনেক গুলো কথা শুনিয়ে দেয়,এতে হিয়া খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে,,

পিসিঃ হিয়া

হিয়াঃ জ্বী

ফুফুঃ ফুলসজ্জার রাতে তো বিড়াল মারতে পারলে না,তা এখনো কি ঔ একই রকম করে যাচ্ছে সব টা

হিয়াঃ বুঝলাম না ঠিক পিসি?

ফুফুঃ না ঔ ফুলসজ্জার রাতে তো বর কে হাত করতে পারোনি,সারারাত নাকি উজান বাহিরে কাটিয়েছিলো শুনেছি,তা এখনো দেখছি বরের মনে জায়গা করতে পারো নি

বাসবিঃ তা কেনো হতে যাবে নিপা,উজান হিয়াকে মন থেকে মেনে না নিলে কি এখন সবটা এ-র কম স্বাভাবিক চলতো,বলো তুমি

ফুফুঃ কি জানি,,তোর হিয়াকেই জিঙ্গেস কর না,,সকালে গিয়ে তো দেখলাম সোফায় ঘুমিয়ে আছে,,তা স্বামী স্ত্রী এক ঘরে থেকেও এক বিছানায় না ঘুমিয়ে আলাদা আলাদা,,,,আমার মনে হয় তোমার ছেলে এখনো নীলিমা কে ভুলতে পারে নি,নাহলে এভাবে??

বাসবিঃ ফুফু যা বলছে কথা টা কি ঠিক হিয়া

হিয়াঃ হ্যা মা আসলে,,উনি সারারাত জেগে কাজ করে তাই আমি

ফুফুঃ তাই আলাদা থাকো,,কি যে মেয়ে দেখে বিয়ে দিয়েছো বাসবি তোমার ছেলে কি না তাকে এখনো গ্রহন অবধি করলো না,,তারচেয়ে আমার বলা মেয়ে টার সাথে বিয়ে দিতে,দেখতে যেরকম সুন্দর ছিলো তেমনি আবার টাকা পয়সা দিয়েও কম ছিলো না

এসব শুনে বাসবি হতবাক,এমন না যে বাসবি এর আগে কিছু বুঝে নি কিন্তু হিয়ার প্রতি উজানের এতো কেয়ারিং দেখে কে বলবে ওরা শুধু উপরেই এরকম কিন্তু মন থেকে আজো কেউ কাউকে গ্রহন করে নি,,হিয়া কি বলবে বুঝে উঠতে পারে না,তাড়াতাড়ি শেষ লোকমা টা গিলে সবাই কে পাশ কাটিয়ে নিজের রুমের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে,দুপুরের তপ্ত রোদ এসে পড়ে হিয়ার মুখে,রোদের তাপে মুখ জ্বলে যাচ্ছে তবু হিয়ার সেদিকে কোনো মন নেই আজ,উজান এতোক্ষন ল্যাপটপে আবার সেই অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো,হিয়াকে তিন চার বার রুমে ডাকে কিন্তু হিয়া কোনো সাড়া দেয় না,শেষ মেষ উজান নিজে উঠে এসে হিয়াকে ডাকে

উজানঃ কি করছো এখানে এই রোদ এ দাঁড়িয়ে,কখন থেকে ডাকছি কথা কানে ঢুকছে না,,আসো ভেতরে

হিয়াঃ (আলতো করে চোখের জল টা মুছে দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে) একটা কথা জিজ্ঞেস করি

উজানঃ করো

হিয়াঃ আপনি কি কখনো আমাকে মন থেকে গ্রহন করতে পারবেন না!!

উজান একটু থেমে গিয়ে আলতো করে হিয়ার দু বাহু ধরে হিয়াকে ওর দিকে ঘুড়িয়ে নেয়,হিয়ার মাথা তখনো অবনত

উজানঃ কে বলেছে আমি তোমাকে এখনো মন থেকে গ্রহন করি নি,,,,!!!!

হিয়াঃ সবাই তো তাই ভাবছে,,আর তাছাড়া আপনি তো মার কথা শুনে আমাকে বিয়ে করেছিলেন,,মন থেকে তো আপনি আজো আপুকেই ভালোবাসেন

উজানঃ হ্যা আমি আজো নীলিমা কে ভালোবাসি,খুব ভালোবাসি,,কিন্তু তারমানে এই না আমি তোমাকে অস্বীকার করবো,,,,

হিয়াঃ স্বীকার করে নেওয়া টাই কি সব

উজানঃ সব কি না জানি না,,,,তবে এটা জানি আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সব বেদনাদায়ক আঘাতের মধ্যে তুমি একটা অনাকাঙ্ক্ষিত সুন্দর আঘাত ছিলা,যেই আঘাতটার খুব প্রয়োজন এখন আমার,খুব প্রয়োজন❤️❤️
________________________

বাসবিঃ তোর কোনো অধিকার নেই হিয়ার জীবন নিয়ে খেলার,যদি ওকে বউ হিসাবে মেনে নিতে না পারিস তাহলে ডিভোর্স দিয়ে দে,,,মেয়েটার ছেলের অভাব হবে না??

উজানঃ জাস্ট স্টপ ইট মা,,,কি হলো তোমার হঠাৎ,,এরকম বিহেভ করছো কেনো তুমি,,,,এরকম বিহেভ করার মানুষ তো তুমি না

বাসবিঃ তা হলে কি রকম বিহেভ আমি করবো তুই বল আমাকে,,কি চাস তুই হিয়াকে এভাবে তোর প্রয়োজনে তুই হিয়াকে ব্যবহার করবি আর তোর পিসিরা অন্যদিকে হিয়াকে যা নয় তাই কথা শুনিয়ে যাবে

উজানঃ এক মিনিট,,,,কি হয়েছে,,,তখন হিয়াকেও দেখলাম কি রকম মন খারাপ করে কিসব বলে যাচ্ছে

বাসবি উজানকে একটু আগের সব ঘটনা খুলে বলে,,

বাসবিঃ এখন তুই ভাব তোর জন্য মেয়েটা কি রকম মানসম্মানে পড়ছে

উজানঃ তুমি যাও আমি দেখছি
_________________________
রাতে আবার সেই ডাইনিং এ

উজানঃ তা পিসি আসছো ভালোই হয়েছে,,,,কি বলো তো সামনের সোমবার আমার আর হিয়ার নতুন করে বউ ভাত হবে,,এর আগে তো নানা ঝামেলায় বউভাত ফুলসজ্জা কোনোটাই ঠিক মতো করা হয় নি তাই আমি ভাবলাম হিয়াকে এবার

উজানের মুখে এই কথা শুনে হিয়া ওখানেই কাপাকাপি শুরু করে,হাত থেকে ডালের বাটি টা পড়তে যাবে ওমনি জিনিয়া এসে টপ করে ধরে ফেলে

ফুফুঃ বউভাত ফুলসজ্জা কেনো হঠাৎ আবার,,

উজানঃ না সবাই হয়তো ভাবছে আমি নীলিমা কে ভুলে এখনো হিয়াকে মন থেকে গ্রহন করতে পারি নি তাই আমি চাই হিয়াকে আবার স্ব-সম্মানে এ বাড়িতে তুলতে,,আর তাছাড়া এ বাড়ি থেকে তো সে রকম বিয়ের আয়োজন করা হয় নি,আর হিয়ার বাড়ির লোকো তো নানা কথা ভাবতে পারে,,কি ঠাম্মি এই দুদিনে সব আয়োজন করতে পারবে না

ঠাম্মিঃ সে দুদিন কেনো তুই বললে একদিনই সব আয়োজন হয়ে যাবে,,তা দাদুভাই শুধু বিয়ে করেই আমার পরীটাকে ঘরের আনবি আমি কি একটু ঔ তোদের ছোট ছোট টোনাটুনি দের নিয়ে খেলবো না

উজানঃ হ্যা ঠাম্মি কেনো খেলবে না,সময় আসলে সেটাও হবে,তখন একটা না ডজনে ডজনে প্রতিবছর টোনাটুনি গিফট করবো তোমাদের,কেমন,,

এদিকে উজানের এই কথায় এবার হিয়া পুরো থ,বাসবি জিনি মুখ লুকিয়ে হেসে দিলেও হিয়া ঠিক ওর মুখ কোথায় লুকাবে তারই জায়গা খুঁজতে থাকে,শেষে লজ্জায় হিয়া ডাইনিং থেকে দৌড়ে পালিয়ে রান্নাঘরে জোরে জোরে শ্বাস নিতে শুরু করে

হিয়াঃ এই লোক কি পাগল হয়ে গেলো নাকি,,,ছিঃ ছিঃ ছিঃ লজ্জাশরম ভুলে সব আজ এভাবে,,কিচ্ছু কিচ্ছু কি আটকায় না নাকি এনার মুখে,,,বলে কি না ডজনে ডজনে প্রতিবছর বাবু নিবে,,(পেটে হাত দিয়ে),,আদৌও কি জানে বাবু কি করে হয়,,আমি এতো গুলো বাবু নিতে পারবো নাকি আজব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here