আনটোল্ড_ডিজায়ার #পর্ব_৯_১০_ও_১১

0
507

আনটোল্ড_ডিজায়ার
#পর্ব_৯_১০_ও_১১
লেখক_হাসিবুল_ইসলাম_ফাহাদ
০৯

মেয়েটা আমার বেশ বড় হয়ে গেছে।
ক্ষুধার্ত ব্যক্তির সামনে খাবার না থাকলে যে কষ্টটুকু পাবে, তার থেকেও বেশি কষ্ট পাবে তার সামনে লোভনীয় সব খাবার রাখলে। একইভাবে অতি প্রিয়জনকে না দেখার চেয়ে আড়াল থেকে দেখাটা আরো বেশি কষ্টের। আমি এখন ঠিক সে কষ্টটাই বুকের মাঝে অনুভব করছি। সাফাকে এত কাছ থেকে দেখেও ওকে ধরতে পারছি না, ছুতে পারছিনা, আদর করে কোলে নিতে পারছিনা।
ওকে নিয়ে মাঝে মাঝেই ঘুরতে বের হয় সাবিহা, সাথে থাকে মনিকাও।মনিকাকে সাথে নিয়েই ঘোরাঘুরি করে, কখনো পার্কে কখনো বা কোন রেস্তোরায়।
আমি আড়াল থেকে খুব সন্তোপর্ণে ওদেরকে অনুসরণ করি। আমার একটা দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো,
সাবিহাকে অনুসরণ করলে আমি অবশ্যই ফারহানকে খুঁজে পাবো।
এবং আমার বিশ্বাস আমার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে না।
সাবিহাকে একদিন সাফাকে নিয়ে একা বের হতে দেখি।সাথে মনিকা ছিল না।
মনে মনে আমার সন্দেহ জাগে যে সাবিহা হয়ত ফারহানের কাছে যাচ্ছে।তাই বরাবরের মত ওকে আমি ওকে ফলো করতে শুরু করলেও এবার আমার আগ্রহটা দ্বিগুণ ছিল।
সাবিহা একটা সি. এন জি নিয়ে যাত্রা শুরু করে।
লম্বা যাত্রা,
গুলশান, বারিধারা পার হয়ে ভাটারার ভিতর থেকে সাবিহার সি এন জি গিয়ে থামে এভারকেয়ার হসপিটাল এর সামনে। পূর্বে যা এপলো হসপিটাল হিসেবে পুরো বাংলাদেশে পরিচিত ছিলো।
সামনে কি হতে যাচ্ছে তা আমার ধারণার বাইরে।
সাবিহা প্রথমে হাসপাতালে ঢুকে রিসিপশনে থাকা মেয়েটার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে লিফটের ভেতরে প্রবেশ করলো। লিফটের দরজা বন্ধ হওয়ার পরে ও কোন তলায় গেল তা আর আমি অনুমান করতে পারলাম না।
একবার ভাবলাম রিসিপশনে কথা বলে জেনে নিব কিনা, পরবর্তীতে মনের ভেতরে কেমন যেন একটা না বোধক অনুভূতি আসলো। রিসিপশনের মেয়েটাকে আবার অনেক জবাবদিহি করতে হবে, আমি কে বা কি! কোন ভাবেই আমার অস্তিত্ব কাউকে বুঝতে দেয়ার এক চুল সুযোগ ও রাখা যাবে না।
ওয়েটিং রুমে বসে ভাবতে লাগলাম কি করা যায়।
অনেক্ষন বাদে সাবিহা নিচে নামল। ক্যাশিয়ারের কাছে বেশ কিছু টাকা বুঝিয়ে দিয়ে সে চলেও গেল। ওর গন্তব্য এখন নিজের বাসা।সুতরাং ওকে আর ফলো করে লাভ নেই। একটা বিষয় বারবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে,
ও ক্যাশে টাকা দিল কেন? নিশ্চয়ই ওর কোন রোগী আছে এখানে।
কিন্তু ও কার চিকিৎসার ভার বহন করছে? আমার জনামতে ওর তো পরিচিত কেউ নেই!
বসে রইলাম হাসপাতালেই।সাবিহা কার কাছে এসেছে সেটা কিভাবে বের করা যায় ভাবতে ভাবতে মাথায় এলো ইলিয়ানা বা সিদ্দীকের কথা।ইলিয়ানার ঠিকানা আমার রাখা হয়নি। আমি জানি সিদ্দীক কোথায় থাকে।
ওকে একটু ভুলিয়ে ভালিয়ে ম্যানেজ করে আনতে পারলেই…….
ভাবনার জগতে এটুকু আগানোর পর আমার মাথা থেকে সব চিন্তা নিমিশেই দূর হয়ে গেল। আমি বুঝতে পারলাম সাবিহা কার সাথে দেখা করতে এসেছিল।ঠিক এই মাত্রই আমার চোখের সামনে লিফটের দরজা খোলার পর বের হয়ে এলো ফারহান। শার্টের হাতা গোটাতে গোটাতে ও হেঁটে আসছে, ওর চেহারা অদ্ভুত রকমের ফ্যাকাশে ।ওকে দেখামাত্রই আমার মস্তিষ্কের নিউরণ গুলো কাঁপা-কাঁপি শুরু করে দিল।
চোখ বুজে একটা বড় নিশ্বাস নিলাম। নিজেকে ঠান্ডা রাখা জরুরি। তাও মন্দের ভালো ফারহানকে খুঁজে পেতে আমাকে তেমন বেশি একটা পরিশ্রম করতে হয়নি।
কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো ফারহান হেঁটে সোজা ক্যাশিয়ারের কাছে গেল। ক্যাশিয়ার ফারহানকে বেশ কিছু টাকা দিল। একটা টিস্যু দিয়ে ও নিজের মুখমণ্ডল মুছতে মুছতে রিসিপশনের মেয়েটার সাথে হাশিমুখে কথা বলল কিছুক্ষন।
এরপরে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে একটা রিকশা নেয় ফারহান।
ওর পেছনে ফলো করার জন্য আমিও একটা রিকশা নেই। চালক মামাকে আমি ডিরেকশন দিচ্ছিলাম কখন কিভাবে চালাবে। কেউ আমার উপর সন্দেহ করা তো দূরে থাক, আমি যে কাউকে ফলো করছি সেটাই বুঝতে পারবেনা।
এতক্ষন যা যা ঘটেছে তা আমি নিজের মত করে কোন একটা ব্যখা দাঁড় করিয়ে মিলিয়ে নিলেও এখন আমার চোখের সামনে যা ঘটলো সেটা দেখার জন্য আমি একটুও প্রস্তুত ছিলাম না।
বেশ সুন্দর করে সেজে গুজে রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল মণিকা।
ফারহানের রিকশা গিয়ে থামল মণিকার সামনেই। টুপ করে মণিকা উঠে পরে রিকশাতে।
দৃশ্যটা দেখে আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই।
রিকশা নিয়ে ওদের ফলো করতে থাকি।
দুজনে গিয়ে সি শেল রেস্তোরার সামনে নামে।
সেখানে দুজনেই ভরপেট খাওয়াদাওয়া করে। এরপর তাদের গন্তব্য হয় কাছেরই একটা আবাসিক হোটেলে।
প্রায় পাচ ঘন্টা একত্রে সময় কাটিয়ে মণিকা বের হয়ে চলে যায়। ফারহান থেকে যায় ঐ হোটেলেই।
সারারাত এখানে থাকা যাবেনা। এসব রাস্তায় গভীর রাতে পুলিশি টহল হয়। আমাকে সন্দেহক্রমে ধরে কোন প্রশ্ন করে বসলে উপযুক্ত জবাব তো দিতে পারব ই না উলটো ধরা পরে যাওয়ার ভয় আছে।। সুতরাং আজ মাতৃছায়া হোস্টেলে ফিরে যেতে হবে। যাওয়ার আগে একবার সিদ্দীকের সাথে দেখা করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। এই ছেলেটাকে আমার সবথেকে বেশি কাজে লাগবে।
সিদ্দীকের বাসার সামনে যখন পৌঁছালাম,
গেটে তখন প্রচুর লোকজন। সিদ্দীককে হাতকড়া পড়িয়ে রাখা হয়েছে। সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রশ্ন করে যাচ্ছে ওকে। সিদ্দীক কোন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে উচ্চস্বরে কান্না করতে করতে বলে চলেছে,
“আমি কিছু জানিনা ভাই,
আমি কিছু করিনাই।
মাফ কইরা দেন ভাই,
আমারে মাফ কইরা দেন মাফ কইরা দেনন ভাইইইইইইই।”
অদ্ভুত ব্যপার। ও কিছু না করলে মাফ কেন চাচ্ছে।
ভীড় ঠেলে ঠুলে ওর কাছে গেলাম। ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, সিদ্দীক তোমাকে কেন আটকে রেখেছে, সিদ্দীক আমার দিকে তাকালো। আমার ডাক শুনে বেশ কিছু পুলিশ ও সাংবাদিক ও আমার দিকে তাকাল। বুঝলাম ভুল করে ফেলেছি। তবে ভাগ্য ভালো আমাকে এক নজর দেখে তারা সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। সিদ্দীক আমার কথার কোন জবাব না দিয়ে ঐ দুই লাইন ই জিকিরের মত আওড়াচ্ছে।
আমি আবার ও ডাক দিয়ে বললাম, তুমি যদি কিছু না-ই করে থাকো, তাহলে মাফ চাচ্ছো কেন?
কথাটা বলার সাথে সাথে সিদ্দীক থেমে গেলো,
বেশ কিছুক্ষন নিরব থেকে তারপর আবার উচ্চস্বরে কান্না করতে করতে আওড়াতে থাকলো..
“আমি কিছু জানিনা ভাই
আমি কিছু করিনাই,
ছাইড়া দেন ভাই,
আমারে ছাইড়া দেন, ছাইড়া দেন, ছাইড়া দেন ভাইইইই।”
ওর প্রতিভা দেখে আমার এখন অজ্ঞান হয়ে যেতে মন চাচ্ছে। তবে হঠাৎ করেই একজন পুলিশ অফিসার ছুটে এলো।সিদ্দীককে যে দুজন হাতকড়া পড়িয়ে রেখেছিলো তাদের উদ্দেশ্য করে বললো, সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। দাঁড়োয়ান নিজের কাজে গেটেই পাহাড়া দিচ্ছিলো। খুনী পেছনের গেট টপকে ভেতরে প্রবেশ করেছে। ওকে ছেড়ে দিন।
সিদ্দীকের হাতকড়া খুলে দেয়া হলো৷ ও আমার দিকে কৃতজ্ঞতার চোখে তাকালো। সিদ্দীককে ছেড়ে দেয়ার পর সাংবাদিকরা পুলিশকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে ব্যস্ত হয়ে গেলো।
এই সুযোগে সিদ্দীক ভীড়ের মাঝ থেকে কোথায় যেন ছুটে গেলো।
আমি ভীড় থেকে বের হয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম।
হঠাৎ সিদ্দীক এসে আমার সামনে দাঁড়ালো। আমার দু হাত চেপে ধরে বললো, বস আপনে আমার কবিতার ভুল ধরাইয়া না দিলে আমি জীবনেও ছাড়া পাইতাম না। সব আপনার বুদ্ধির খেলা বস।
আমি হাসলাম৷ ওকে বললাম এমন কিছুই না। তবে কাহিনী কি বলোতো। হুট করেই সিদ্দীকের চোখে পানি দেখতে পেলাম।
ও কান্না করতে করতে বললো, ভাইজান,কাল রাতে নাকি আফামনিকে খুন করে গেছে৷ খালি শরীলডা পাওয়া গেছে।
মাথা পাওয়া যায়নাই।
আমরা কেউ টের পাইনাই৷ আজ আফামনির ক্লাবে যাওয়ার কথা। কথাটা বলেই দাঁত দিয়ে জিভ চেপে ধরলো সিদ্দীক। কথা ঘুরিয়ে বললো,
আজ আফামনির বাইরে যাওয়ার কথা৷ সারাদিনেও যখন তাকে পাইলাম না৷ আমি সন্ধ্যায় দরজা নক করি। কেউ খুলেনা। কয়েকবার কল দেই। কেউ রিসিভ করেনা। অনেক্ষন পর আমি তিনডা ৯ এ কল দিয়ে সাহায্য চাইলে পুলিশ আসে আর তার লাশ উদ্ধার করে।
– হুম।
সিদ্দীককে অনেক প্রশ্ন করার ছিলো।
কিন্তু এখন ওকে কিছুই জিজ্ঞেস করা যাবেনা৷
মানসিক ভাবে ও একটু শক্ত হোক। তারপর ওর কাছ থেকে অনেক তথ্য নেয়া যাবে।
সিদ্দীককে বললাম, এখানে আজ তোমার থাকা ঠিক হবেনা৷ তুমি বরং আমার সাথে আমার বাসায় চলো।
সিদ্দীক বলা মাত্রই রাজি হয়ে গেল। ওকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
.
.
.
রাত তিনটার কাছাকাছি সময়ে হঠাৎ আমার ফোন বেজে উঠে। আমি মোটামুটি শিওর ছিলাম, এটা ইলিয়ানা ছাড়া আর কেউ ই না। কারণ আমার ফোন নম্বর ও ছাড়া আর কেউ জানেনা।
ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে একটা হাসির শব্দ ভেসে আসলো।
আমি জিজ্ঞেস করলাম – কে?
ওপাশ থেকে একটা প্রশ্ন ভেসে এলো- What is your untold desire??
ভয়েসটা এত গম্ভীর ও ঠান্ডা যে শুনেই আমার বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো।

#পর্ব_১০
____________________
ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে একটা হাসির শব্দ ভেসে আসলো।
আমি জিজ্ঞেস করলাম – কে?
ওপাশ থেকে একটা প্রশ্ন ভেসে এলো- What is your untold desire??
ভয়েসটা এত গম্ভীর ও ঠান্ডা যে শুনেই আমার বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো।
কিছুক্ষন সময় চুপ থেকে ভাবছিলাম কি উত্তর দিব। আমার কাছে আনটোল্ড ডিজায়ার শব্দটাকে খুব পরিচিত মনে হচ্ছিলো। কিছু না বলে ফোন রেখে দিলাম। কিন্তু এর পর ও সেম নম্বর থেকে বেশ কয়েকবার কল আসে।
আমি রিসিভ না করে মোবাইল অফ করে রাখি।
.
.

সিদ্দীক মানুষ হিসেবে খারাপ না। মাথার কাছে বসে মাথা টিপে দিচ্ছে।
ও আবার স্পেশাল সরিষা তেলের মাসাজ খুব ভালো দিতে পারে। পাশের রুমে থাকা শরীফের কাছ থেকে একটুখানি সরিষা তেল আনিয়ে নিয়েছি। শরীফ ছেলেটা বেশ রগচটা। তবে এ ক’দিনে ওর সাথে মোটামুটি একটা খাতির গড়ে উঠেছে। শরীফের সাথে কথা বলে যা বুঝলাম,
কোন এক কারণে এখানের ম্যাচ ম্যানেজারের উপর সে প্রচন্ড বিরক্ত।পরে অবশ্য কারণ খুঁজে পেয়েছি। শরীফ নিজেই এখানের ম্যানেজারের পদে বসতে চায়। আমার সাথে সে একটু খাতির জমিয়ে কথা বের করতে চাইছে আমি কিভাবে কি এখানে আছি।
যাই হোক শরীফের ব্যপারটা মাথার একপাশে রেখে আমি সিদ্দীকের হাতের মালিশ উপভোগ করছিলাম।কপাল ভ্রু এবং মাথার তালুর চামড়া টেনে টেনে অদ্ভুত সুন্দর একটা ম্যাসাজ করে দেয়। বেশ রিলাক্সিং এবং আরামদায়ক।

কি মনে করে যেন হুট করেই সিদ্দীক কে জিজ্ঞেস করলাম,
তোমার ম্যাডামকেও কি ম্যাসেজ করে দিতে?
স্পষ্ট টের পেলাম সিদ্দীকের হাত কেপে উঠলো।
খানিক বাদে সে এক কথায় উত্তর দিলো – ” না ”
আমি আর কথা বাড়ালাম না।
.
.
.

আমার স্ত্রী সাবিহার থেকেও মণিকার বিষয়টি আমার কাছে বেশি খটকা লাগছে।
ফারহানের সাথে সাবিহার একটা সম্পর্ক হয়ত ছিলো আগে। কিন্তু মণিকা ঢুকলো কোথা থেকে।
কিছুক্ষন চিন্তা করেও তেমন কোন লাভ হলোনা। ওদের কার্যক্রম ফলো করা ছাড়া আর উপায় নেই।
একটা ফ্রেশ ঘুম দিলাম। ঘুম ভাঙলো দরজা ধাক্কাধাক্কির শব্দে।
দরজা খুলতেই রুমে প্রবেশ করলো ম্যাচ ম্যানেজার। আজ মাতৃছায়া ম্যাচের মালিক এসেছে। মাসিক মিটিং হবে।
খুব দ্রুত আমাদেরকে একটা রুমে উপস্থিত হতে বলা হলো।
ম্যানেজার আরো কিছু বলতে চাচ্ছিলো আমাদের। এর ভেতরে শরীফ এসে দাঁড়ালো তার পাশে। বললো চলেন সবাই।মুখে কোন রকম পানির ঝাপটা মেরে, দরজা লাগিয়ে সিদ্দীক আর আমি তাদের সাথে বের হয়ে গেলাম।
মিটিং এ কার কি সমস্যা ম্যাচে থাকতে সে বিষয় নিয়েই মূলত কথা ওঠে।
এক পর্যায়ে আমার কাঙ্ক্ষিত বিষয়ে একজন অভিযোগ তোলে।
ছাদ থেকে জামা কাপড় বাতাসে উড়ে নিচে পরে হারিয়ে যায়৷ক্লিপেও কাজ হয়না। এ বিষয়ে কোন একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।। একজন এ বিষয়ে অভিযোগ তোলার পরে আস্তে আস্তে সবাই একত্রে অভিযোগ তুলল। কারো প্যান্ট, কারো শার্ট আবার কারো আন্ডারওয়্যার গায়েব হয়ে যাচ্ছে।
ম্যাচের মালিক নির্দেশ দিলেন ছাদের চারপাশে জাল দিয়ে লম্বা বেড়া দিয়ে দিতে।হিসেব করে দেখা গেল এই জালের বেড়া দিতে খরচ হবে প্রায় ৩ হাজার টাকা। ম্যাচের সবার কাছ থেকে টাকা তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
মিটিং শেষের পর্যায়ে এমন সময় আমি বাড়িওয়ালার কাছে কয়েকটা কথা বলার অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে দেখে বুঝলেন আমি এখানে নতুন। বললেন নাম পরিচয় দিয়ে আমার বক্তব্য উপস্থাপন করার জন্য।
গলায় খাকড়ি দিয়ে গম্ভীরমুখে নিজের নাম বললাম।সবাই আমার দিকে মনোযোগের দৃষ্টিতে তাকালো,
” সিদ্দীক কে ইশারা দিতেই সিদ্দীক আমার হাতে একটা প্যাকেট এগিয়ে দিল। আমি সেখান থেকে পুরানো কিছু শার্ট বের করলাম।
সবাই আমার হাতের শার্ট দেখে চোখ বড় বড় করে ফেললো।
এগুলো ম্যাচের সদস্যদের ব্যবহৃত শার্ট।
শরীফ বিষ্ফোরিত চোখে আমার হাতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। ওর চোখমুখ লাল হয়ে গেছে। এমনিতেই ছেলেটা একটু রগচটা তার উপর ওর চেহারার এ অবস্থা দেখে আমার হাসি পেল। সবার সামনে হেসে ফেললাম। ম্যাচ মালিম জিজ্ঞেস করলো, কি ব্যাপার এগুলো কাদের শার্ট?
আমি উত্তর দিলাম, এখানের সব শার্ট ই এই ম্যাচের মেম্বার্স দের।কিন্তু কোনটা কার শার্ট তা আমি জানিনা।
শরীফ উড়ে এসে ছো মেরে আমার হাত থেকে ৪/৫ টা শার্ট নিয়ে গেল।
এগুলো নাকি ওর গার্লফ্রেন্ডের গিফট করা দামি শার্ট। পরাপর কয়েকটা গিফটের শার্ট হারিয়ে ফেলায় ওর ব্রেকাপ হয়ে গিয়েছিল।
“গিফট দেয়া সামান্য শার্ট ই আগলে রাখতে পার না আমাকে কি করে আগলে রাখবে ”
অযুহাতে ওর গার্লফ্রেন্ড চলে যায়।
চারপাশে গুনগুন চলছে ছোট বড় গালির আওয়াজ ও শোনা যাচ্ছে, কেউ কেউ নিজেদের হারিয়ে যাওয়া শার্ট খুঁজছে।আমি উচ্চশব্দে হালকা কাশি দিয়ে, কথা বলার প্রস্তুতি নিলাম।
সবাই নিজ নিজ কাজ থামিয়ে আমার দিকে তাকাল।
বললাম,
আপনাদের ছাদ থেকে ধোয়া শার্ট ও প্যান্ট গুলো ইচ্ছা করে ফেলে দেয়া বাড়ির পেছনের দিকটায়।
সেখান থেকে পুরাতন কাপড় ক্রয় বিক্রয়ের কাজ করা ব্যবসায়ীর একজন অল্প বয়সী কর্মচারী এসে এ শার্ট প্যান্ট গুলো নিয়ে যেত। তাদের দুজনেরই টাকা পয়সা ভাগ করে নেয়ার চুক্তি ছিল।
বিষয়টি আমি খেয়াল করেছি বেশ কিছুদিন ধরেই তবে বলার সুযোগ পাচ্ছিলাম না।
শরীফ জিজ্ঞেস করল, কে এই লোক,
ম্যাচমালিক সব শুনে রেগে আগুন হয়ে গেলেন। জিজ্ঞেস করলেন কে এই হারামজাদা,
আমি উত্তরে জানালাম, আপনাদের বর্তমান ম্যাচ ম্যানেজার।
সবাই আমার কথা শুনে ম্যানেজারের বসার জায়গার দিকে তাকালো। কিন্তু কোন ফাঁকে যে সে চম্পট দিয়েছে সেটা আমরা কেউ ই খেয়াল করিনি।
ম্যাচ মালিক তীব্র রাগে ফেটে পড়েছেন।তার বক্তব্য তার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করা হয়েছে। রাগের মাথায় বলে ফেললো,
“ও যে এভাবেও টাকা ইনকাম করে তা তো আমাকে বলেনি। বলবেই বা কেন আমাকে তো ভাগ দেয়া লাগবে তাহলে,
সবাই মিলে ম্যাচমালিকের দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষন। উনি নিজের ভুল বক্তব্য সরিয়ে নিয়ে বললেন, না মানে তাহলে তো শাস্তি পেতে হতো।
শরীফ অনেক ক্ষেপে আছে৷ সে লোক লাগিয়েছে ম্যানেজার কে ধরে আনার জন্য। ম্যাচ ম্যানেজারের দায়িত্বটাও তাকে দেয়া হয়েছে।
সে আমার উপর অনেক বেশি সন্তুষ্ট। আমার ও সিদ্দীকের জন্য তিন মাস ফ্রী থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ম্যানেজারের দায়িত্ব পেলে উপরি ইনকাম অনেক সেটা ভেবেই হয়ত আমাদের এমন একটা সুযোগ দিয়েছে। যাই হোক আমার কাজ শেষ হওয়ার পরে আমি বের হয়ে গেলাম। সিদ্দীককে বললাম পুলিশ তোমাকে খুঁজবেই, যেহেতু তুমি বাড়ির দারোয়ান ছিলে, তোমার জবানবন্দির জন্য আবার ও পুলিশ তোমার সাথে যোগাযোগ করতে চাইবে। তুমি লুকিয়ে থাকো৷ সে আমার কথা শুনে সত্যি ই মনে হয় অনেক ভয় পেয়েছে। তাই খাটের নিচে গিয়ে লুকিয়ে পড়ল।

সিদ্দীককে মাতৃছায়া ম্যাচে রেখে আমি বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
পুরোটা দিন মনিকাকে ফলো করলাম। ঘুরে ঘুরে অনেক তথ্য ও জোগাড় করলাম।এরপর যা জানলাম তাতে আমার নিজের ভেতরে প্রচন্ড পরিমান পাপ বোধ কাজ করতে শুরু করলো।
আমার খুব দ্রুত সাবিহার সাথে যোগাযোগ করা উচিৎ। দুপুরের ধুলো পড়া রাস্তায় তপ্ত রোদে পা চালিয়ে আমার নিজের বাসার দিকে এগোচ্ছি।
এক হাতে একটা কাগজের ঠোংগা। ভেতরে কিছু কাঁচা পেয়াজ। আরেক হাতে একটা সিংগাড়া। পানির পিপাসা পেয়েছে খুব। ঠিক করেছি বাসায় গিয়ে সাবিহার হাত থেকে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি নিয়ে এ ভীষন তৃষ্ণা মেটাতে হবে। এমন সময়ে ফোনে কল আসলো।নতুন ম্যানেজার
শরীফ কল দিয়েছে।
ম্যাচের পুরানো ম্যানেজার কে শাহবাগের একটা চায়ের দোকান থেকে আটক করেছে তার লোকজন। ম্যাচে এনে সবাই মিলে উত্তম মাধ্যম দেয়ার পরে নাকি তার প্যান্ট ছিড়ে বের হয়ে আসে সপ্তাহ খানেক আগে ম্যাচের আরেক সদস্য জাহিদের আন্ডারওয়্যার।
এসব শুনে আমি শরীফকে বললাম তাকে বেশি বেইজ্জতি না করতে।
শরীফের সাথে কথা বলা শেষ হতে না হতেই একটা মাইক্রোবাস এসে থামে আমার ঠিক পেছনে। সেখান থেকে বের হয় মাস্ক পরিহিত কয়েকজন যুবক। ওদের নামার ভঙ্গী দেখেই আমি বুঝতে পারি সামথিং ইজ রঙ। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইলেক্ট্রিক টেজার দিয়ে দূর থেকে আমাকে শক দেয়া হয়। আমি সজ্ঞানে মাটিতে লুটিয়ে পরি। আমাকে মাইক্রোতে উঠানোর আগ পর্যন্ত আমার জ্ঞান ছিল।
পুনরায় যখন আমার জ্ঞান ফেরে,আমি আৎকে উঠি।
আমাকে একটা চেয়ারে বেঁধে রাখা হয়েছে।তার সামনেই অপর এক চেয়ারে মুখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় বসে আছে নীড়া।
নীড়া আমাকে দেখে প্রথমে চিনতে না পারলেও পরে ঠিক ই চিনতে পারে।
কান্না করতে করতে বলে, শহর, আমি আমার অপ্রকাশিত ইচ্ছেটা প্রকাশ করে ফেঁসে গেছি।
আমার জন্য তোমার ও ক্ষতি হয়ে গেল।
আমি প্রশ্ন করলাম মানে কি এসবের?
নীড়া কান্না করতে করতে বললো,
অনেক লম্বা কাহিনী। শুধু এতটুকু জেনে রাখো, আমি একটা সাইকোপ্যাথের ফাঁদে আটকা পড়েছি। যে মানুষের অপ্রকাশিত ইচ্ছে জানতে চায়। পরে সেটা পূরণ করে দিয়ে তাকে মেরে ফেলে। আমার কাছে জানতে চেয়েছিলো আমার আন্টোল্ড ডিজায়ার কি?
অনেক অনুরোধ করার পরে আমি বলেছিলাম-
শহর নামের একজনের সাথে বন্ডেজ সে*ক্স করা।
অতঃপর তিন দিন চেষ্টার পরে ওরা তোমাকে আমার সামনে নিয়ে আসলো। এখন যদি আমার ইচ্ছেটা পূরণ হয় তবে আমি মারা যাব। আর তুমি আমার ইচ্ছেটা পূরণ করতে না চাইলে তোমাকে মেরে ফেলা হবে।
.
.
.

#পর্ব_১১
_________________।
অনেক অনুরোধ করার পরে আমি বলেছিলাম-
শহর নামের একজনের সাথে বন্ডেজ সে*ক্স করা।
অতঃপর তিন দিন চেষ্টার পরে ওরা তোমাকে আমার সামনে নিয়ে আসলো। এখন যদি আমার ইচ্ছেটা পূরণ হয় তবে আমি মারা যাব। আর তুমি আমার ইচ্ছেটা পূরণ করতে না চাইলে তোমাকে মেরে ফেলা হবে।
নীড়ার সাথে কথাবার্তা বেশিদূর এগোতে না এগোতেই রুমে প্রবেশ করে কালো কাপড় পরিহিত একজন লোক। দেখে বোঝা যাচ্ছে না সে পুরুষ নাকি মহিলা।দুটো টুকরো কাগজ আমার এবং নীড়ার হাতে দেয়া হয়। আমাদের গলায় লাগানো হয় ইলেক্ট্রিক শক দিতে সক্ষম হারনেস।
এর পরে আমার ও নীড়ার হাতের বাঁধন মুক্ত করে দিয়ে প্রস্থান করে অদ্ভুত লোকটি। দুজনেই কাগজের টুকরো গুলোর ভাজ খুলি। ওখানে লেখা ছিলো এই রুমের পাশেই অপর একটি রুম আমার এবং নীড়ার বন্ডেজ করার জন্য উপযুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে।
ওখানে নিয়ে নীড়ার শেষ এবং অপ্রকাশিত ইচ্ছেটা পূরণ করতে হবে৷আমি যদি কোন ভাবে দ্বীমত পোষন করি, তবে আমাকে ইলেক্ট্রিক হারনেস দ্বারা শক দিয়ে খুন করা হবে।
নীড়া বা আমার ভেতরকার কারো একজনের মৃত্যু নিশ্চিত। অবশ্য আমি তো আগেই অফিসিয়াল ভাবে মৃত একজন মানুষ।
চট করে কথাটা মনে পড়তেই মাথায় একটা বিষয় গোলমেলে লাগলো।
সবার মত নীড়াও তো জানতো যে আমি মারা গিয়েছি। তাহলে ও আমাকে প্রথম দেখাতে কেন আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলো না!
” শহর তুমি বেঁচে আছো?” গাড়ি এক্সিডেন্ট এ মারা যাওনি?”
বিষয়টি খুব সাধারণ ভাবে ভাবতে ভাবতে জটিল হয়ে ওঠে। নীড়া চেয়ার ছেড়ে উঠে আমার পাশে এসে দাঁড়ায়। ওর উপর কোথা থেকে যেন একটা সামান্য বিরক্তিমাখা রাগ আমার মস্তিষ্কে জমাট বাঁধে। হুট করে দাঁড়িয়ে আমি নীড়ার চুল মুঠি করে ধরে টান দিয়ে নিয়ে হাঁটতে থাকি পাশের রুমের উদ্দেশ্যে। নীড়া যেন এটাই চাইছিলো।
সে ব্যাথায় আহ করে চিৎকার দিয়ে উঠে।কিন্তু মুখে একটা প্রশান্তির হাসি লেগে আছে।
পাশের রুমে ঢুকতেই দেখতে পেলাম সেই বন্ডেজ ক্লাবের মতই একটা সুসজ্জিত রুম।কালো রঙ এর দুটো মোটা চেইন দেয়াল বেয়ে নেমে এসেছে। আরো আছে লাঠি, চামড়ার বেল্ট,ছোট আকৃতির ক্রিকেট ব্যাট, কালো গ্লাভস, মোটা দড়ি, হ্যান্ডকাফ,এবং সব শেষে ছেলেদের আর্টিফিশিয়াল রাবারের পুরুষাঙ্গ।
আমাকে এগুল নিয়ে কাজ করতে হবে ভাবতেই গা গুলিয়ে উঠছে। কিন্তু কিছু করার নেই।
নীড়ার চোখের দিকে তাকালাম। ওর চোখের ভাষা পড়তে আমার অসুবিধা হলোনা৷
নীড়াকে যত দেখছি তত রাগ বাড়ছে।
রাগ কমানোর সুযোগ টাও আছে। চুলের মুঠি ধরে ওকে আমার সামনে দাঁড় করালাম।
এরপর গায়ের সর্ব শক্তি দিয়ে গালে সজোরে একটা থাপ্পড় মারলাম। নীড়ার ঘাড় কাত হয়ে গেল।ও ছিটে গিয়ে পড়লো আমার থেকেও দু হাত দূরে। গালের চামড়া ফেটে গিয়ে দরদর করে রক্ত পড়ছে। নীড়ার তাজা রক্ত দেখে আমার মাঝে অদ্ভুত এক নেশা জেগে উঠলো।
ওকে তুলে নিলাম। রক্তে লাল হয়ে থাকা নীড়ার মুখমন্ডলের ভেতর থেকে সাদা দাঁত বের করে একটা হাসি দিয়ে নীড়া বলে,
” আই ওয়ান্ট মোর”
নীড়ার পরিহিত জামার গলা ধরে দু হাতে দু দিকে সজোরে টান দিতেই ফরফর করে ওর দামি জামাটা ছিড়ে গেল।জিন্সের প্যান্ট টাকেও আর নিয়ম মাফিক বোতাম এবং চেইন খোলার মাধ্যমে অপসারণ করা হয়নি। আমার নিজের ভেতর থেকে হঠাৎ যেন একটা পশু বের হয়ে এসেছে।
নীড়ার চোখে এতক্ষন প্রশান্তি খেলা করলেও এখন শুধুই ভয় দেখতে পাচ্ছি।
নীড়া আমাকে জিজ্ঞেস করলো-
Are you a monster??
বাঁকা ঠোঁটে একগাল হেসে উত্তর দিলাম- No, It’s my Devil Form.
নীড়াকে আর কোন কথা বলার সুযোগ দিলাম না৷ টেবিলের ওপরে থাকা একটা কাপড়ের টুকরো ওর মুখে ঢুকিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিলাম। এবার ওর মুখ থেকে আর কোন কথা বের করার সুযোগ নেই।
নীড়া শুধুমাত্র অন্তর্বাস পরিহিত অবস্থায় আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ওর গায়ের সাদা চামড়া গুলো দেখে আমার মাথায় এক ধরণের নেশা জেগে যায়৷ যে করেই হোক এ সুন্দর সাদা চামড়াগুলোর রাজপথে লাল রক্তের আন্দোলন নামাতে হবে।
হাতে একটা চামড়ার বেল্ট নেই৷ এটাকে ঠিক বেল্ট বলা যায়না। ছোট একটা কাঠের হাতলে লাগানো অনেকগুলো চামড়ার কালো ফিতা। নীড়ার পিঠে সর্বোচ্চ জোড় দিয়ে একটা আঘাত করতেই নীড়া বিষ্ফোরিত চোখে মাটিতে লুটিয়ে পরে। মাত্র একটা আঘাতেই এমন অবস্থা হবে বুঝিনি। মারার জন্য আবার এগোতেই নীড়া তার দু হাত দিয়ে ইশারা দিলো আমাকে থামতে। কে শোনে কার কথা! ওকে টেনে তুলি আমি। দুহাত পেছনে নিয়ে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে দেই। মোটা দুটো শেকল যা সিলিং থেকে নিচের দিকে ঝুলানো,
সে দুটোর সাথে নীড়ার হাত পা বেঁধে কপিকল এর সাহায্যে একটু উপরে তুলে নেই। আমার ঠিক কোমড় বরাবর। নীড়া মাটি থেকে উঁচুতে দুটো শিকলের বাধনে দোলনার মত চ্যাং দোলা হয়ে দুলছে।
হাতে ক্রিকেটের ছোট ব্যাট নিয়ে ওর পেছনের মাংসল অংশে বেশ কয়েকবার আঘাত করি৷ নীড়ার শরীর মুচড়ে ওঠে ব্যাথায়।
ঠাস ঠাস শব্দে পুরো রুম নড়ে ওঠে। যেন কোন মিস্ত্রী হাতুড়ি পিটাচ্ছে।
ওর গায়ের চামড়া ফেটে, ফাঁটার ফাঁক থেকে রক্ত চুইয়ে ফ্লোরে পড়ছে।
নীড়ার চোখ দেখে মনে হচ্ছে ও এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাইছে। কিন্তু ওকে তো এত সহজে আমি ছেড়ে দিতে পারিনা। এ তো সবে শুরু।
নীড়ার গায়েরপ্রতিটা অংশ আমার নিজের মুখের শক্ত কামড়ে ক্ষত বিক্ষত করে দিতে শুরু করলাম। বুক কিংবা নাভী, রক্তপাত হচ্ছিল দেহের প্রতিটি অংশ থেকে।
এ তো গেলো পেইনের চাপ্টার এবার প্লেজারে আসা যাক।
আমার গায়ের পরিহিত বস্ত্র কখন পরিত্যাগ হয়েছে সেটা আমারও খেয়ালের বাইরে। নীড়ার রক্ত মাখা মুখের ভেতরে আমার পুরুষত্ব গর্জন করে। রক্ত এবং প্রিমেচিউর স্পার্ম এর আধিক্যে নীড়া বার কয়েক বমি করে দেয়। ওর পেটের উপরে আমার নখ খামচি কেটে গভীর ক্ষত তৈরি করতে থাকে। কপিকলের সাহায্যে নীড়ার দু পা দুদিকে ছড়িয়ে দেয়া হয়।আমি এতটাই হিংস্র হয়ে উঠেছিলাম যে নীড়ার উপর হামলে পড়ে বিস্ট এর মত শারিরীক সম্পর্ক চালানোর বেশ কিছুক্ষন পরে টের পেলাম নীড়ার দেহ নিস্তেজ অবস্থায় আছে।
সাথে সাথে মনে একটা ভয়ানক সন্দেহ দোল খেলে গেল। রক্তমাখা হাতে নীড়ার পালস চেক করলাম। পেলাম না৷ নীড়ার রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত বুকে মাথা রেখেও কোন হার্টবিটের আওয়াজ শুনলাম না৷
নিজের বস্ত্রহীন ও নীড়ার রক্তে মাখামাখি হয়ে থাকা শরীর নিয়ে ছুটে গেলাম অপর রুমে। ঐ রুমের দরজা ওপাশ থেকে বন্ধ ছিলো।
পাগলের মত দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে ,চিৎকার করে চলেছি।
এক পর্যায়ে দরজা খুলে।
কালো কাপড় পরিহিত অদ্ভুত কিছু লোক এসে ঝুলন্ত নীড়ার দেহের কাছে যায়৷ কিছুক্ষন পরে, চারজন চার প্রান্তে ধরে একটা খাটের উপর নীড়াকে শুইয়ে রেখে ওকে সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
মুখ হাত দিয়ে ঢেকে আমি ফ্লোরে বসে পড়ি।
আমার দ্বারা এটা কি হয়ে গেলো!
নীড়াকে আমি খুন করতে চাইনি৷ তবে নীড়ার কাছ থেকে আমার অনেক তথ্য জানার ছিলো।
হঠাৎ গলায় মারাত্মক শক অনুভব করি। আস্তে আস্তে আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসে।
জ্ঞান হারানোর পথে আমার বার বার মনে পড়ছিলো,আমার আর কখনোই
নীড়ার ফর্সা গালদুটোতে ব্লেডের কোনা টেনে ছবি আঁকা হলোনা।

– চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here