#বড়_ছেলে
#সূচনা_পর্ব
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
১.
“আব্বা রাস্তায় এক্স*সি*ডেন্ট কইরা মা*রা গেছে ভাই।”
ছোট ভাই মিরাজের কথায় হাতে থাকা কাপটা মাটিতে পড়ে যায় সিরাজের। বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো সে। পাগলের মতো ধরা কন্ঠে বললো,
“এইসব তুই কি বলছিস মিরাজ?” আব্ আব্বা..”
১৫ বছর বয়সী মিরাজ কেঁ/দে কেঁ/দে বললো,
“তাড়াতাড়ি বাড়িত আইয়ো ভাই..”
২.
বাবার লা*শে*র সামনে বসে আনমনে বসে আছে সিরাজ। বাবার শোকে ছেলেটা যেনো কা*ন্না করতেই ভুলে গেছে আজ।
“এমন ছোট ছোট পোলাপাইন রাইখা চইলা গেছে। এখন সংসার কেডা সামলাইবো?”
পেছন থেকে এমন অনেক কথা শুনতে পাচ্ছে সিরাজ। কিন্তু জবাব দিলোনা। সে সবে মাত্র ইন্টারে পড়ে। দুই বোন ২ ভাই তারা। পাশে বসে দুই মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কাঁ’দ’ছেন সদ্য মাত্র স্বামী হা’রা’নো লতিফা বেগম।
৩.
“এমন কেউ নেই ভাত দেওয়ার? মানুষ মরলেতো নিজ বাড়িতে রান্না করা যায়না”
আশা কথাটি বলতেই আত্মীয় স্বজন বললো,
“আমরাতো দূর থেইকা আসছি। মনেই ছিলোনা কিছু। নয়তো রান্না-বান্না করে নিয়ে আসতাম।”
বাবা হারানো আশা অবাক হয়ে সবাইকে দেখছে৷ মনে মনে বললো,
“বুঝলাম ওরা দূর থেকে এসেছে৷ কিন্তু, বাড়ির আশে পাশের মানুষ!”
৪.
স্বামী ম’রা’র ৪০ দিন পের হতে না হতেই অভাব অনটনে পড়ে যায় লতিফা বেগম। আশা আর আরিফা বেগম বললো,
“এমনভাবে কি সংসার চলবে মা? বাবাতো আমাদের জন্য কিছু রেখে যায়নি। আমরা পড়াশোনা করবো কিভাবে? ঘরেতো চালও নেই।”
লতিফা বেগম উঠে দাঁড়ালেন৷ তারপর দীর্ঘ*শ্বা*স ফেলে বললেন,
“দেখি আমি কোনো কাজ করতে পারি কিনা৷ মানুষের বাসায় কাজ করে হলেওতো সংসার চালাতে হবে। আর দেখি আশা আর আরিফার জন্য ভালো বিয়ে এলে এইবার দিয়েই দিবো।”
“কি যা তা বলছো মা? আমি থাকতে তুমি কাজ করবে তাও মানুষের বাসায়? আর আমি থাকতে আমার বোনেরা পড়াশোনা করবেনা? বিয়ে দিয়ে দিবো এতো তাড়াতাড়ি ? অসম্ভব। রফিক চাচার সাথে কথা বলে এসেছি৷ ওনার গ্যারেজে কাজ দিয়েছে আমাকে৷ একটু পরই যাবো।”
লতিফা বেগম কেঁপে উঠলেন ছেলের কথায়। তারপর ছেলের দুগাল ধরে বললেন,
“কি কস বাপ? তুই মাত্র কলেজে উঠছোস। পড়াশোনাটা ছেড়ে দিবি? তোর বয়সই বা কতো?”
“মা বয়স না পরিস্থিতি দায়িত্ব নিতে শিখায়৷ আর আমি পড়াশোনা করে কি হবে? আমার ভাইবোনদের পড়াশোনা শিখিয়ে মানুষ করতে পারলেই আমার শান্তি। আমি হয়তো তোমাদের মুখে রোজ মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াতে পারবোনা, তবে ডাল ভাত মুখে তুলে দিতে পারবো।”
চলবে???