?#চোখের_তারায়_তুই?
#পর্ব_৩৩
#ইভা_রহমান
ভাইয়ের জন্য গরম-গরম রুটি আর একটা ডিম ভেজে প্লেটসহ রুমে আসতেই চুপ হ’য়ে দাঁড়িয়ে পড়লো হিয়া। কি হচ্ছে এটা,ভাইয়া কি করছে এভাবে? কান্না করছে? তাই তো মনে হচ্ছে! কিন্তু কিসের জন্য কাঁদছে ভাইয়া? আমি কি কিছু ভূল করেছি! আলতো পায়ে শিশিরের দিকে ধেয়ে এসে তার কাঁধে হাত রাখতেই একটু কেঁপে উঠে নড়েচড়ে বসলো শিশির। চোখের পানিগুলো স্ব যত্নে মুছে নিয়ে মুখে এক বিরাট হাসি ঝুলিয়ে হিয়াকে পাশে বসিয়ে দিলো। ভাইয়ের মুখের এই মেকি হাসি দেখেও হিয়া প্রশ্ন তুলে বললো,
-ভাইয়া তুই কান্না করছিস?
– আরে না,কাঁদবো আবার কেনো?
– আমার থেকে লুকোচ্ছিস,দেখি ওটা কি হাতে তোর,দেখা আমাকে,কি হলো দেখা?
– আরে বললাম তো কিছু না, কেনো ইদানীং এতো জীদ করিস তুই হুম?
– ওটা,ওটা রোদ আপুর ছবি তাই না! ওটাকে জড়িয়েই তুই এতোক্ষণ কান্না করছিলি তো?
– ধুরো না,এমনি বইয়ের ভাঁজে ছিলো পৃষ্ঠা ওল্টাতে গিয়ে দেখি,
– আর কতো ভাইয়া,কেনো বুঝতে চাইছিস না রোদ আপু আর কখনো তোর হবে না। তার বিয়ে হয়ে গেছে সে এখন সুখে সংসার করছে। এতটুকু তো বুঝিস তুই বল।
– আমার মন বলে রোদেলা ভালো নেই হিয়া!
রেগে উঠলো হিয়া,রাগান্বিত ভঙ্গিতে বললো,
– ফর গড সেক ভাইয়া। এসব ইমোশন,আবেগ এগুলোর সত্যি কোনো ভিওি নেই এই সমাজে । আমি চাই তুই ভালো থাক,নতুন করে অন্য কাউকে নিয়ে জীবনটা শুরু কর। এভাবে আর কতোদিন!
মৃদু হেঁসে দিয়ে শিশির বললো,
– যে সারাদিন গল্পের বই পড়ে বের হয়, তার জীবনে তো এসব আবেগ,ইমোশন সবচাইতে বেশি কাজ করা উচিৎ বুড়ি।
– ওগুলো ভীওিহীন আবেগ শুধু ক্ষনিকের মোহ ভাইয়া। ওসব গল্পের বইয়েরই মানায় বাস্তব জীবনে না।
– বাপরে বাপ। আমার পিচ্চি বুড়িটা দেখছি কয়েকদিনে অনেক বড় হয়ে গেছে! কি বড় মাপের কথা।
– প্লিজ ভাইয়া!
– আচ্ছা সরি। আমাকে একটা কথা বল আমার বিষয় টা না হয় আলাদা কিন্তু তুই আর উজান তো শরীয়ত মোতাবেক এখন স্বামী স্ত্রী নাআ,তোদের তো এখন একসাথে থাকতে হবে,একসাথে চলাফেরা করতে হবে,একে অপরের বন্ধু হয়ে চলতে হবে। এভাবে তো তুই নিজেও কষ্ট পাচ্ছিস পাচ্ছিস সাথে উজান টাকেও__উজানের কি দোষ এতে বুড়ি,বোঝা আমাকে,সে তো তোর জন্য সব ছাড়তে অবধি রাজি?
– আমি উজান স্যারের দোষ কোথায় দিলাম। দোষ টা তো আমাদের! তারা বড়লোক আর আমরা গরীব।
– আমরা গরীব না হিয়া।
মলিন একটা হাসি দিয়ে শান্ত কন্ঠে হিয়া বললো,
– আমরা গরীব ভাইয়া,অনাথ, এতিম,আমাদের ভালোবাসা থাকতে নেই!____আমি শুধু একটু সময় চেয়েছি উজানের থেকে। পালিয়ে গিয়ে একটা ভূল করেছি দু’জনে,অস্বীকার করবো না সে কথা। কিন্তু এখন আমি চাই এখন উজান একটু আমাকে নিয়ে ভাবা বাদ দিয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবুক। আমি উজানের মায়ের পয়েন্ট ওফ ভিউ থেকে বিষয়টা দেখার চেষ্টা করেছি। উজানের মা’র কথা গুলোও তো ফেলনা না। আজ যদি আমাদের বাবা মা বেঁচে থাকতো তারাও হয়তো আমার ভালো চাইতে গিয়ে উজানকে বলতো আগে নিজের ক্যারিয়ার টা গুছিয়ে নিতে_______সবাই হয়তো এটাই ভাবছে নিজেরা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে এখন আবার এসব কি নাটক। কেনো আমি উজানের সাথে ইদানীং অনেক রুড বিহেভ করছি। কেনো ওকে ইগনোর করছি। কিন্তু দেখ আমি উজানের সাথে দূরত্ব ক্রিয়েট করেছি বলেই কিন্তু পরিস্থিতি টা এখন একটু হলেও স্বাভাবিক আছে। আমি তো জানি উজানের উপর কি পেশার যাচ্ছে ওর বাড়ি থেকে,পারলে তো ওরা উজানের খাবার টাও বন্ধ করে রাখে। আমি শুধু চাইছি উজান ইন্টার্নিতে জয়েন করুক,এখন এই টাকা পয়সা,এগুলো নিয়ে ভাবতে গিয়ে ফাইনাল টা খারাপ দিক তা আমি চাই না ভাই। একটু ধীরেসুস্থে পরীক্ষা টা হয়ে আসুক ওর।
– ঠিক আছে তোর কথারো যুক্তি আছে কিন্তু তাই জন্য তুই ওকে এরকম করে অপমান করবি।
– অপমান কোথায় করি ভাইয়া। ওর পাগলামো দেখলে মাঝেমধ্যে খুব রাগ লাগে আমার। সেদিন পারভেজ ভাইয়ার সাথে দেখে নিয়ে রাস্তায় কি এক রাগারাগি মারামারি শুরু করলো,আমি যে সেখানে কেনো গিয়েছি সেটাও শুনতে চাইলো না। এভাবে ভালো লাগে। তুই বল রাগ লাগবে না কেনো আমার তখন। আমার উপর কি তার এতটুকুও ভরসা নেই কোনো। ওমনি কেউ এসে আমার হাত ধরে টানাটানি করলো আর আমি উজানকে ভূলে গিয়ে তার হাত জড়িয়ে ধরলাম। এতো ইজি!__(একটা বড় শ্বাস টেনে দিয়ে অতঃপর হিয়া বললো)__আচ্ছা ছাড় ওসব। তুই নাকি কিসের ইন্টারভিউ দিতে বগুড়ার দিকে যাবি। আর কখন বের হবি এগারোটাতো তো পাড় হচ্ছে দেখলাম।
– হ্যা যাই,আচ্ছা শোন আমি তো হয়তো সারাদিন আজকে থাকবো না,চাচিরাও শুনলাম দুপুরে গাইবান্ধা যাবে,তুই বাড়িতে থাকতে পারবি তো একা।
– পারবো ভাইয়া আমি কিন্তু আর ছোট নেই এখন।
– সরিইইই,পেট যে ব্যাথা করতিছে বললি। এখন ঠিক আছে?
– হুম আছে। জরুরি কিছু হলে লতাকে ডেকে নিয়ে আসবো। এখন তুই উঠ তো রেডি হ। আর ভালো মতো ইন্টারভিউ টা দিবি। কেমন?
– হম। আর যদি অতিরিক্ত ব্যাথা হয় উজানকে ফোন দিস চলে আসবে। শুনলাম কালকে রাতে তো নাকি বাহিরে ছিলো আবার। ঘুমায়নি সারারাত।
হিয়া আর কিছু বললো না। কালকে রাতে উজান ফোন দিয়েছিলো কতোবার তারউপর টেক্সটের পর টেক্সট তো ছিলোই। কিন্তু মেয়ের পেটের ব্যাথা এতোই চাড়া দিয়েছিলো যে সে ফোনটা চোখ বুলিয়ে দেখবে কি তার আগেই ঘুমে বুদ। হিয়া ভাবলো শিশির বেড়িয়ে গেলে একটা ফোন করবে। কি আর করার এতো অপমান করার পরো তো পিছু ছাড়ে না পাগল একটা। এবার একটু রাগ কমিয়েই নাহয় দেখা যাগ।
!
!
ঘড়িতে তখন চারটে পাড় হয়ে আসরের আযান দিচ্ছে। ভাই বাড়িতে নেই সেই সুযোগে জমানো দু বালতি কাপড় ধুয়ে এইমাএ গোসল সেরে বেড়িয়ে আসলো হিয়া। কাপড় গুলো ধুয়ে যেনো পেটের ব্যাথা টা আরো নাড়া দিয়ে উঠলো তার,সাথে চোখে ঝাপসা লাগতে শুরু করলো কিছুটা। কোনো মতে ছাঁদের উপর কাপড় গুলো মেলে দিয়ে এসে দু লোকমা ভাত গিলতেই ফোন আসলো শিশিরের। চটজলদি মুখের খাবারটা শেষ করে নিয়ে ফোন রিসিভ করে কথা বলতে শুরু করলো হিয়া,
– হ্যা ভাইয়া কতদূর তুই। বাস কোথায় এখন?
– এদিকে রাস্তায় অনেক জ্যাম বুড়ি। ইন্টারভিউ দিয়ে আবার রংপুরে ফিরতে আমার রাত হয়ে যাবে।
– আচ্ছা তাও কতো রাত? তোর জন্য ভাত দেবো রাতের? খাবি তো নাকি?
– হ্যা খাবো,নামার ইচ্ছে নেই আর কোথাও। তুই বাড়িতে সাবধানে থাকিস। চাচিরা কি চলে গেছে?
– হ্যা ভাইয়া চলে গেছে। ঔ বাড়ি ফাঁকা পুরো এখন।
– আচ্ছা আমাদের বাড়ির দরজা জানালা গ্রীল সব ভালো করে লাগিয়ে দিয়ে রাখিস। আর কিচ্ছু দরকার হলে আমাকে বা উজানকে একটা ফোন দিস।
– ভাইয়া প্লিজ!
– আচ্ছা ঠিক আছে বলবো না ওর কথা। সাবধানে থাকিস কিন্তু।
– হুম। সাবধানে আয় তুই। রাখলাম আমি।
ফোন রাখলো হিয়া। এদিকে ফোন রেখে বিছানায় এসে বসতেই মাথাটা হালকা চক্কর দিয়ে উঠলো হিয়ার। ঝাপসা চোখে অনেক কষ্টে নিজের বিছানা ছেড়ে পানির গ্লাসটায় পানি ভরিয়ে একটু ঢক গিললো হিয়া। হঠাৎ শরীর টা এতো খারাপ লাগছে কেনো তার। পেটের দিকের ব্যাথাটাও মনে হচ্ছে নাড়া দিচ্ছে আবার। পিরিয়ড হবে কি। আচ্ছা লাস্ট কবে পিরিয়ড হয়েছিলো আমার। এই ঝড় গুলোকে সামলাতে গিয়ে তো ওদিকে মনই দিতে পারিনি ঠিক মতো।
নিজেকে হালকা সামলে নিয়ে বিছানায় এসে গা টা ছেড়ে দিলো হিয়া। শরীর টা এরকম কেনো লাগছে হঠাৎ। বিছানায় এদিক থেকে সেদিক ছটফট করছে হিয়া। কি হচ্ছে তার সাথে আচমকা আজ। পেট টা এতো ব্যাথা হচ্ছে কিসের জন্য। এরকম তো এর আগে ঘটেনি। পিরিয়ডের পেইন হলেও তো এরকম লাগতো না। তাহলে। কিচ্ছু বুঝতে পারছে না হিয়া। ভাইয়াকে কি একটা ফোন করবে সে। কিন্তু ভাইয়া তো বাসে। আসতে মিলতেও রাত হবে। এ-ই জার্নিতে তাকে কি টেনশন দেওয়া উচিৎ হবে তার। লতাকে কে কি একটা ফোন করবো। লতা কি আছে আদৌ বাড়িতে। আসতে পারবে কি ডাকলে। আর ভাবতে পারলো না হিয়া। হঠাৎই পেইন টা তীব্র থেকে তীব্র বেগে বাড়তে থাকলো তার। মনে হচ্ছে কিছু হচ্ছে হিয়ার সাথে। কিন্তু কি!
অনেক কষ্টে ওয়াশরুমে ঢুকেই কমোডের উপরেই বসে পড়লো হিয়া। এরকম ব্যাথা হচ্ছে কেনো তার এবার। ঝাপসা চোখ গুলো পিটপিট করে অনেক কষ্টে হাত বাড়িয়ে ট্যাপটা ছেড়ে পানি নিয়ে চোখে ঝাপ্টা দিলো হিয়া। না এ-ই ব্যাথা তো সহ্য করার মতো না। চোখেও তো কিরকম অসহ্য ব্যাথা দিচ্ছে। পায়ের কাছে এতো ভারী লাগছে কেনো____পায়জামা খুলে হাতে নিতেই কেঁপে উঠলো হিয়া। এতো রক্ত কিসের এগুলো। ভয়ে শিউরে উঠে ওখানেই কেঁদে ফেললো মেয়েটা। এমনিতে শরীরের ব্যাথা তার উপর এ-ই রক্ত। কি হচ্ছে এগুলো আসলে।
হিয়ার বুঝতে দেড়ি কিন্তু বাচ্চাটা মিচক্যারেজ হতে দেড়ি ছিলো না। ফ্লোরে ঝড়ে পড়া বাচ্চাটার অবয়বের দিকে তাকাতে পিছিয়ে গিয়ে দূরে সরে বসলো হিয়া। কি এটা! এটাতো একটা বাচ্চা। হিয়ার দম বেড়িয়ে আসলো, শ্বাস নিচ্ছে কি নিচ্ছে না হিসাব নেই তার এখন। কি দেখছে এটা হিয়া। এটা কি সত্যি…না না কোথাও ভূল হচ্ছে। অনেকক্ষন দাড়িয়ে থেকে কাঁপা শরীরে সামনে আসলো হিয়া। অবয়ব টাকে হাতে নিতেই পুরো শরীরে আরো তীব্র বেগে কাঁপুনি দিতে শুরু করলো তার। এগুলো কবে কি হলো? কিছুই যেনো মাথায় আসছে না তার। উজানের সাথে তো তার সম্পর্ক দেড়টা মাসের। এর মধ্যে কি করে সে। মনে পড়লো গত মাস সহ এ মাসেও পিরিয়ড হয়নি তার। সাথে শিশির সহ বাড়ির পেছনে দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে কবে কি হলো কিছু সিম্পটম তো দেখলো না সে। হ্যা এক দুবার বমি হয়েছিলো কিন্তু সেটা তো সারাদিন না খেয়ে ছিলো বলে তারমানে কি ওসব!
দেওয়ালে মাথা ঠেকিয়ে আধা ঘণ্টা ধরে সেই অবয়ব টাকে নিয়ে বসে রইলো হিয়া। কি হলো এটা? কেনো হলো? কবে হলো? কি করতে হয় বাচ্চা মিচক্যারেজ হলে এটাও তো তার জানা নেই। কোথায় যাবে এখন সে। কার কাছে চাবে একটু সাহায্য। চাচি,দাদি কেউ তো নেই বাড়িতে। কাকে ডাকবে!
– উজানের কাছে যাবো আমি,উজান কোথায় আপনি। আপনি আসবেন আমার সাথে। দেখে যাবেন কি হ’য়েছে এখানে। একটা ফোন করবো ওনাকে। হ্যা ওনাকে জানাবো এখন আমি সব। উনি আসলে আমার বাচ্চাটা ঠিক হ’য়ে যাবে আবার আগের মতোন। উনি তো ডক্টর উনি ঠিক পারবে তোকে সারিয়ে তুলতে দেখিস তুই। আমি আমি যাচ্ছি তো তোর বাবার কাছে। তুই থাক আমি এক্ষুনি তোর বাবাকে নিয়ে আসছি। হ্যা ওনাকে আসতে হবে আমার সাথে। আমি আমি জানি আমি যতোই রাগ করি,বকাবকি করি আমি ডাকলে উনি ঠিক আসবে আমার সাথে। তুই তুই থাক মা আমি এক্ষুনি আসছি তোর বাবাকে নিয়ে। এক্ষুনি আসছি আমি।
বলা মাএই বাচ্চার রক্তপিণ্ড টাকে একসাইডে সুন্দর মতো রেখে উঠে দড়ালো হিয়া। কোনোমতে কোমড় অবধি পানি ঢেলে বাহিরে বেড়িয়ে একটা পায়জামা পড়তে পড়তে লাগাতার ফোন চালিয়ে গেলো উজানের নাম্বারে। কিন্তু উজানের ফোন আর রিসিভ হলো না। এদিকে পেটের ব্যাথায় মুছড়ে যাচ্ছে হিয়া। কিন্তু এ-ই ব্যাথা সহ্য করে হলেও তাকে যে এক্ষুনি উজানের কাছে যেতে হবে। আর তাই করলো হিয়া। সবকিছু ছেড়েছুড়ে পা বাড়ালো উজানের বাড়ির পথে। রিক্সারো তো দেখা পাওয়া যাচ্ছে না এ-ই মুহুর্তে একটাও। হাটতেও তো পেটের দিকে চাপ লাগছে। কিন্তু না হেঁটেই বা উপায় কি হিয়ার। হিয়া ঘামছে পুরো শরীর ঘামে ভিজে গেছে তার। তীব্র ব্যাথাতেও যত দূত হাটা যায় ততোদূত হেঁটে চলছে হিয়া। মাঝপথে লতার বাড়িতেও একবার আওয়াজ দিলো সে কিন্তু লতার বোন জানালো সে বাড়িতে নেই। মনটা খারাপ করে আবারো উজানের পথে হাঁটতে শুরু করলো হিয়া। সাথে উজানের ফোনে তো তার টেক্সট আর কলস চলছেই লাগাতার কিন্তু রেসপন্স এখনো শূন্য।
শাহরিয়ার বাড়ির মুখে আসতেই একটা হাসি ফুটলো হিয়ার মুখে। এ-ই তো আর একটু পরেই সে দেখা পাবে তার উজান স্যারের সাথে। এরপর যতো যা-ই অভিমান চলুক,সব ভেঙে একটা নতুন সকাল সাজবে তাদের জন্য। তাদের বাচ্চাটা যে অপেক্ষা করছে তার বাবা মা ফেরার…দূত পায়ে মেইন দরজা পেড়িয়ে হিয়া ভেতরে ঢুকতে যাবে ওমনি হিয়ার সাথে দেখা মিললো সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে থাকা উজানের মা আর তার সাথে উপরে উঠতে থাকা প্রিয়ন্তীর উপর। হিয়াকে দেখে অনেকটা চমকে উঠলেন উজানের মা। পেছন ফিরে হিয়ার দিকে নেমে আসতেই হিয়া আকুতির সুরে জানালো,
– আন্টি উজান কোথায়৷ ও বাড়িতে আছে? আমার না ওকে খুব দরকার। ওকে একটু ডেকে দিন না। বলুন না যে হিয়া আসছে তার সাথে দেখা করতে।
– হিয়া মা,উজান তো বাড়িতে আছে কিন্তু কি দরকার তোমার আমাকে বলো?
– আন্টি কথাটা আগে উজানকে জানানো জরুরি। আপনি ওকে গিয়ে একটু বলবেন যে হিয়া তার সাথে দেখা করতে চায়। আমি উজানের বেশি সময় নেবো না আন্টি। শুধু একটু যদি ওকে।
– হিয়া মা কিছু মনে করো না। বাড়িতে তো আজ উজানের বাবা আছে। তোমার কি দরকার,টাকা বা কিছু আমাকে বলো?
– সবসময় টাকারই দরকার হলে আমি আপনার ছেলের কাছে আসি এ-ই ধারণা টা আনলেন কি করে আপনি আন্টি!
– না মা,আমি সেভাবে বলিনি তুমি আমার কথার ভূল মানে বের করো না মা….আসলে আজকে বাড়িতে অনেক বড় একটা ইন্সিডেন্ট ঘটে গেছে। এ-ই মুহুর্তে উজানকে ডেকে এনে তোমার সাথে দেখা করাটা সম্ভব না হিয়া।
– আমার শরীর টা ভালো না আন্টি। উজান যদি একটু আমাকে দেখতো!
– শরীর খারাপ তোমার। আমি তোমাকে অন্য ডক্টরের কাছে নিয়ে যাই।
– অন্য ডক্টর আমাকে সারাতে পারলে আমি আপনার ছেলের কাছে আসতাম না আন্টি।
– উজান এখন ঘুমাচ্ছে হিয়া,তুমি পড়ে আসো।
– আমার কথা শুনলেও কি সে আসবে না আন্টি,একটু বলে দেখুন না?
– সে তোমার কথা শোনার মতোও পরিস্থিতিতে নেই আর মা।
– উজানের পরিস্থিতি কি আমার চাইতেও খারাপ আন্টি।
– আমি আসছি হিয়া। তুমি বাড়ি যা-ও সন্ধ্যা নামবে আর কিছুপর। উজান ঘুম থেকে উঠলে আমি তাকে বলবো তোমার কথা…এখন আসো তুমি।
বাসবি,প্রিয়ন্তিকে নিয়ে উপরে উঠে আসতেই তপ্ত শ্বাস ছাড়লো হিয়া। সত্যি কি এতোই দূরত্ব তৈরি হয়েছে,যে উজানের সাথে পাঁচ টা মিনিট দেখা করারো ক্ষমতাও নেই হিয়ার। উজানো তো ফোন তুলছে না। এতোই ঘুমে বিভোর আছে যে হিয়ার ফোন আসছে সেটাও সে বুঝছে না আজ। হাল ছাড়লো না হিয়া। আবারো উজানের নাম্বারে ডায়াল করে পেছন ফিরতেই চমকে উঠলো হিয়া। সিয়াম কি করছে তার পেছনে এভাবে!
সিয়ামের চাহনি ছিলো ভয়ানক নেশাক্ত। মনে হচ্ছে কোনো এক হায়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে হিয়া। যে যখনতখন হিয়াকে আছাড় কেটে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে। কাঁপা ঠোঁটে সিয়ামকে পাশ কাটিয়ে হিয়া পাড় হতেই হিয়ার হাত ধরে হিয়াকে থামিয়ে দিলো সিয়াম। একটা বাঁকা হাসি দিয়ে হিয়াকে এমন করে চিপে ধরলো যে হিয়ার পুরো শরীর অসার হতে শুরু করলো নিমিষে।
– সিয়াম ভাইয়া কি করছেন এসব। দেখুন আমাকে ছাড়ুন নয়তো আমি চিৎকার করে লোক জড়ো করবো এখানে।
সিয়াম হিয়ার গাল চিপে ধরে বললো,
– তোকে ব্যা__ বলার জন্য ঔ উজান আমার আব্বুর গায়ে আজ হাত তুলছে না। খুব হিরোগিরি দেখাইছে আজ। এখন তোকে নষ্ট করে আমি দেখ কি করে তোর উজানের মেরুদণ্ড ভাঙ্গি। খুব নাকি ভালো বাসে না সে তোকে।
– আমি আপনার কাছে হাত জোড় করছি ভাইয়া। আমার কোনো ক্ষতি করবেন না। আমি কিন্তু চিৎকার করবো।
– কর চিৎকার যতো পারিস কর।
সিয়ামের গায়ের জোড়ের কাছে পারলো না হিয়া। হিয়াকে টেনে নিয়ে সোজা দারোয়ানের ছোট্ট রুমের ছোট্ট বিছানা টায় ফেললো সিয়াম। হিয়ার গায়ের ওড়না খুলে দিয়েই হিয়ার মুখ চিপে ধরলো। একদিকে মিচক্যারেজের তীব্র ব্যাথা অন্য দিকে সিয়ামের এই শারিরীক নির্যাতন। মানষিক ভাবে ভেঙে পড়লো হিয়া। কিন্তু হাল ছাড়লো না। ঘরের মধ্যে যা পারছে তাই দিয়ে সে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আর তাই করতে গিয়ে সামনের এক টেবিলে পড়ে থাকা চাকুটা হাতে নিয়েই হিয়া সিয়ামের বুকের কাছে সজোরে এক গভীর আঘাত করতেই পিছিয়ে পড়লো সিয়াম। সাদা রঙের শার্টটায় মুহুর্তে রক্ত বেড়িয়ে লাল লাল হয়ে উঠলো। সেই সুযোগে চাকুটা হাতে নিয়েই দৌড়ে সেই রুম থেকে পালিয়ে আসলো হিয়া। মুখের ওড়না টা খুলে গায়ে পেঁচিয়ে নিয়ে সোজা এসে দাড়ালো মেইন রাস্তায়। হাপিত্যেশে করে কাঁপছে হিয়া। সিয়াম তার পেছনে আসছে না তো। এদিক ওদিক তাকিয়ে পাশের এক ডাস্টবিনে চাকু টা ফেলে দিলো হিয়া। চোখ মুখ মুছে,এলোমেলো চুল গুলো ঠিক করে নিয়ে দূত পায়েই এসে পৌছালো তার নিজ বাড়ির চৌকাঠে।
!
!
ওয়াশরুমে পা রাখতেই বাচ্চাটার রক্তপিণ্ড টা বুকে আগলে নিয়ে ধপ করে বসে পড়লো হিয়া। কি হ’য়ে গেলো এইসব একটু আগে তার সাথে। সবটা কি কোনো দুঃস্বপ্ন হতে পারতো না। পারতো না হতে কোনো কাল্পনিক গল্প……কান্নার বাঁধ ভাঙ্গলো হিয়ার। হাউমাউ করে কেঁদে ভরিয়ে তুললো চারপাশের পরিবেশ। মুখ দিয়ে এখনো একটাই আওয়াজ বের হচ্ছে তার উজান উজান উজান। কিন্তু উজান তো নেই!
– আমি হেরে গেলাম মা। আমি তোর বাবাকে সাথে করে নিয়ে আসতে পারলাম না। তোকে দেখাতে পারলাম না তোর বাবা-র মুখটা। সব হারিয়ে গেলো। কেনো তুই না জানিয়ে আমার পেটে আসলি। কেনো বুঝতে দিলি না তোর আগমনের কথা….এলি যখন কেনো গেলি আবার। আমাকে পছন্দ হয়নি তোর। আমি কি খুব খারাপ মা হতাম। তোর আমার উপর রাগ ছিলো। কেনো এমন শাস্তি দিলি আমাকে মা..তোকে নিয়ে কি করবো আমি এখন!
কান্নায় ভেঙে গিয়ে নিজের নষ্ট হয়ে যা-ওয়া বাচ্চা টাকে বুকে আগলে সব বলতে শুরু করলো হিয়া। কার কাছে গিয়ে একটা আশ্রয় খুঁজবে এখন সে। কাকেই বা আর গিয়ে বোঝাবে মনের এই ব্যাথার তীব্রতা। বাচ্চা টাকে নিয়ে প্রায় দু’ঘন্টা ওভাবে বসে ছিলো হিয়া৷ আজ শরীরে যতোপ্রকার কান্না আছে সব ঝরে গিয়ে কোনো এক অভিমানের দ্বীপে ভাসিয়ে নিয়ে গেলো হিয়াকে। সে যে নিচে এক নরপশুর হাতে মরতে চলেছিলো উপর থেকে কি সেটাও অনুভব করতে পারলো না উজান! আত্মার সম্পর্ক কি এটাকে বলে। তাহলে আসলো না কেনো উজান?
!
!
নিজের বাচ্চার রক্তপিন্ডটা হাতে নিয়ে বাড়ির পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো হিয়া। ঠিক তার রুমের জানালার দিকে এগিয়ে এসে বসে পড়লো সেই নোংরা জমা মাটির উপর। বাচ্চাটকে কোলে আগলেই মাটি পরিষ্কার করলো হিয়া।,সাথে যতো প্রকার আগাছা সহ ছোট ছোট ঘাস আছে সব পরিষ্কার করলো সুনিপুণ হাতে। শেষবারের মতো নিজের বাচ্চা টাকে বুলে দিয়ে মাটিতে একটা ছোট্ট কবর খুদলো হিয়া। সেখানে দাফন করলো তার সদ্য পৃথিবীতে আসা নিষ্পাপ বাচ্চাটাকে!
!
!
হাতে লেগে আছে রক্তের দাগ। সাথে এখনো তলপেট বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে আরো রক্ত। সাথে পুরো শরীরে মেখে আছে মাটির আবরন। অনেক সহ্য হয়েছে প্রকৃতির নির্মম এ-ই অত্যাচারের। আর তো পারছে না শরীর নিতে। সব শক্তি ফুরিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো হিয়া। কানে ভাসতে শুরু করলো দূর থেকে ভেসে আসা একটা বাচ্চার কান্নার তীব্র আওয়াজ। কেনো কাঁদছে বাচ্চা টা এভাবে। কেউ তাকে থামাচ্ছে না কেনো! এটা কি তার আর উজানের বাচ্চাটার কান্নার আওয়াজ!
– আজ এ-ই বাচ্চাটার সাথে আমি আমাদের সব স্মৃতি গুলোকে দাফন করে দিলাম উজান। আজকে থেকে আমাদের দু’জনের পথ আলাদা । আপনি এতোই কাজে বিভোর যে আমার ফোনটা রিসিভ করবার মতো সময় হলো না আপনার! একবার তো না। হাজার বার আপনাকে ফোনে পাবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু আপনি! আজ যদি সিয়াম ভাইয়া আমার সাথে। কতো ডেকেছি আপনাকে কেনো শুনলেন না আপনি….আজ থেকে উজানের জোয়ারে আর নিজেকে ভাসাবো না উজান স্যার। হিয়ার মাঝের হিয়া থেকে মুছে গিয়েছেন আপনি। দাফন হয়েছে আমাদের বাচ্চা সাথে দাফন হয়েছে হিয়ানের এ-ই ভালোবাসা।?
*
*
*
*
– আহ উজান স্যার আর কতো ঘুমোবেন,উঠুন না। আপনার ডিউটিতে দেড়ি হচ্ছে না আজ। লাগছে তো আমার ছাড়ুন নাআআআ। আমি রাগ হচ্ছি কিন্তু।
চোখ খুলে আবারো হিয়াকে সুন্দর মতো জড়িয়ে ধরলো উজান। হিয়ার ঠোঁটজোড়া হাত দিয়ে চিপে ধরে বললো,
– প্রত্যেকদিনই তো ডিউটিতে টাইম মতো যাই হিয়া,আজ একটু না হয়।
– আহ কি করছেন আমার ঠোঁট নিয়ে, পিষে ফেলবেন নাকি। অসহ্য। এ-ই আপনি উঠবেন না আমি পানি ঢেলে দেবো আপনার গায়ে। উঠুন বলছি, আরে।
উজান হিয়াকে ধরতে যেতেই এক লাফে বিছানা থেকে পালিয়ে আসে হিয়া। না এনার সাথে ঘুমিয়ে থাকা মানেই আমার কাজের সময় নষ্ট। মাথায় খোপা করতে করতে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো হিয়া৷ আর ওয়াশরুমে পৌঁছাতেই উজানের কানে ভাসলো হিয়ার এক বিভৎস চিৎকার। গা থেকে কম্বলটাকে এক টানে ফেলে দিয়ে দৌড়ে আসলো উজান। একি অবস্থা হিয়ার। হিয়ার শরীর দিয়ে কিসের এতো রক্ত বের হচ্ছে। হিয়া কি ওয়াশরুমে স্লিপ কেটে পড়ে গেছে।
হিয়া হিয়া চিৎকার করতে করতেই ঘুম টা ভেঙে আসলো উজানের। উঠে বসে তখনো একটাই নাম বলে যাচ্ছিলো উজান৷ “হিয়া” একটা তপ্ত শ্বাস ফেললো উজান। এতোক্ষণ কি স্বপ্ন দেখছিলো সে!
– আমি হিয়াকে নিয়ে এতো খারাপ একটা স্বপ্ন কেনো দেখলাম। রক্ত কিসের হিয়ার। হিয়া কান্না করছে কেনো?
স্বপ্নের কথা গুলো ভাবতে গিয়েই ঘামতে শুরু করলো উজান। বুকটা হঠাৎ এতো ফাঁকা ফাঁকা লাগছে কেনো তার! গা থেকে কম্বল টা সরিয়ে এসির পাওয়ার বাড়িয়ে দিলো উজান। এতো হাপিত্যেশ লাগছে কেনো হুট করে তার। নিজেকে একটু স্থির করে ঘড়ির দিকে তাকাতে গিয়েই খেয়াল করলো রাত তখন আটটা। মাথা ঘুরে আসলো উজানের। বাড়িতে তো ঢুকেছিলো এগারোটার পরপর। তারমানে কি এতোক্ষণ সে ঘুমিয়ে। এগুলো নিশ্চয়ই কালকের ঔসব মদনেশা করার জন্যেই হয়েছে তার। তপ্ত এক শ্বাস ছুঁড়ে নিজের ফোনটা খুঁজতে যাবে ওমনি বাসবি রুমে এসে উজানের দিকে বাড়িয়ে দেয় তার ফোন। একটু চমকে গেলেও নিজের মা’র হাতে ফোন দেখে বেশি আর কিছু বলে না উজান।
– ফোন তোমার কাছে! কিছু দরকার ছিলো ফোনে?
– না আসলে রোদেলা ফোন দিতে বলেছিলো বিকেলে,আমার ফোনে রিচার্জ ছিলো না তাই তোর ফোন দিয়ে।
– আমার নাম্বার দেখেও রিসিভ করেছে রোদ?
– হ্যা নতুন নাম্বার ওর,তাই জন্য হয়তো বুঝতে পারেনি যে তোর ফোন থেকে। আচ্ছা শোন না হিয়া না বাড়িতে এসেছিলো বিকেলের দিকে। বললো তোকে দরকার। তুই ঘুমিয়েছিলি আর তোর বাবাও এসে পড়েছিলো তাই আমি বললাম পড়ে কথা বলে নিতে তোর সাথে। এমনিতে আজ যা করলি তুই সকালে এরপর হিয়াকে দেখলে না তোর বাবা চাচারা মিলে মেয়েটাকে..সেই ভয়ে আমি।
– হোয়াট! হিয়া এখানে? আমার কাছে___তুমি আমাকে ডাকোনি কেনো মা? হিয়া আমার সাথে কোনো কনটাক্ট রাখছে না আজকে নিজে থেকে আসছে মানে তার কিছু তো হলেও জরুরি দরকার ছিলো আমাকে। আর তুমি বাবা-র ভয়ে। ধ্যাত। দেখি সাড়ো।
উজান উঠে গায়ের শার্টটা ঠিক করে নিতে হঠাৎই প্রিয়ন্তী হকচকিয়ে রুমে এসে বাসবির খোঁজ করতে করতে বলে উঠে,
– বড়আম্মু তুমি এখানে! ওদিকে সিয়ামের অবস্থা কি হয়েছে জানো তুমি?
– আমি তো মনিরা খালার বাড়ির দিকে গিয়েছিলাম একটু কেনো কি হয়েছে আবার এরমধ্যে? আর তুই এরকম হাপিত্যেশ কেনো করছিস?
– কারছি তার কারন আছে। কারণ সিয়ামকে কে জানি ওর বুকে খুব খারাপ ভাবে চাকু দিয়ে আঘাত করছে। সাথে নাকের কাছেও জখম হয়েছে ডাক্তারতো বলছে যে তার নাক টাই নাকি কেটে বাদ দিতে হবে!
প্রিয়ন্তীর কথাগুলো বাসবি আর উজান বিষ্ময়ে তাকিয়ে থেকে শুনলেও উজান তেমন একটা গুরুত্ব দিলো না। এদিকে অস্থির প্রিয়ন্তীর হাতের দিকে চোখ পড়তেই একটু বাকা চোখে তাকালো উজান।কেনো মনে হলো প্রিয়ন্তীর হাতের ফোন টা হিয়ার ফোনের মতো। ব্যাকপ্যাডেটা কেনো হিয়ার ফোনের ঔ হ্যালো কীটের ব্যাকপ্যাডের মতো লাগলো! পাওা দিলো না উজান,এদিকে উজানকে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ফোনটা একটু আড়াল করে বেড়িয়ে আসলো প্রিয়ন্তী। উজান শার্ট পড়ে নিয়ে বের হতেই বাসবি বলে উঠলো,
– কোথায় যাচ্ছিস,সিয়ামকে দেখতে যাবি না? ওর এই অবস্থা।
– আমার এখন হিয়ার কাছে যাওয়া জরুরি মা। আর আমি হিয়ার কাছেই যাবো। আসছি।
চলবে..