#বসন্তের_রঙ_লাল 12,13
#ফাতেমা_তুজ
#part_12
(২৩)
চোখের পলকে কেঁটে যায় সময়। এই যে দুটো বছর নিমিষেই কেঁটে গেল। কেমন করে যেন বয়স টা বেড়ে গেল। নিজের অজান্তেই সকল কার্য সম্পূর্ন হয়ে গেল।শ্বাস গুলো কেমন যেন ঠেকছে আজ। আঠারো বছরে পদার্পণ হবে কি না। আকাশ টা মেঘচ্ছান্ন। বাতাবরণে মিহি সুবাস এসে যায়। ঠান্ডা শীতল সেই সুবাস। অপেক্ষায় রয়েছে ফারাবি। যেন শীতের শেষ সময়ে এসে বিচিত্র কিছু দেখবে সে। অক্ষি পল্লব বার বার বিচরণ করছে চারপাশে। বিগত বছর খানেক ধরে এক পুরুষের সাথে সম্পর্কে আবদ্ধ সে। পরুষটির কন্ঠে যেন সৃষ্টিকর্তা সমস্ত মায়া ঢেলে দিয়েছে। তবে পুরুষ অবয়ব টি দেখার সৌভাগ্য মিলে নি। ছেলেটির কথা ছিলো এমন যে আঠারো তে পা না দিলে আমি তোমার সামনে আসবো না। কারন হিসেবে বলেছিলো তাহলে ভুল কিছু হয়ে যাবে। আর তখন বাঁধা প্রদান করা যাবে না। কেমন যেন শিহরণ জাগানো অনুভূতি স্পর্শ করে গিয়েছিলো ওকে। মনের অজান্তেই প্রচন্ড ভালোবেসে ফেলেছিলো অজানা পুরুষ টি কে। এই যে ছেলেটি এক টি বার ও নিজ থেকে ফোন করে না অথচ ফারাবি রোজ নিয়ম করে দু বার কল করে তাকে।
ঘড়ির কাঁটা ঢং ঢং করে জানান দিলো বারো টা বাজার পাঁচ মিনিট বাকি। নিজ উত্তেজনা ধরে রাখতে পারছে না সে। আঠারো তে পা দেওয়ার সাথে সাথে প্রেমিক পুরুষ টি র দেখা মিলবে। সে যেমনি হোক না কেন যায় আসে না ওর। বিচলিত হয়ে চার পাশে চোখ বুলাচ্ছে। ঠিক তখনি একটি গুমোট কন্ঠের আবির্ভাব ঘটে।
” এতো রাতে এখানে কি করিস ফারাবি? ”
কন্ঠ টা প্রথমে চিন্তে অসুবিধা হলো ওর। তবে পেছন ঘুরে মানুষ টি কে দেখে চোখ দু খানা বড় বড় হয়ে গেছে। কালো রঙের হুডি জড়িয়ে আছে ফারহান। বিগত দু বছরে বাসায় ফিরে নি সে। অথচ আজ কোথায় থেকে উদয় হলো এই ভয়ঙ্কর মানব। ভাবনার মাঝেই কিছু টা কাছে চলে এসেছে ফারহান। ফারাবির শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে আতঙ্কিত হয়ে। ভয়ে গলা দিয়ে টু শব্দ অব্দি বের হচ্ছে না।
” কথা বলছিস না কেন? রাতে একা একা গার্ডেনে কি করছিস তুই। ”
” আপনি কখন এলেন ফারহান ভাই? ”
” বিকেলে এসেছি। ”
” বিকেলে,কই আমি তো দেখি নি। ”
” রিফাত কে সাথে নিয়ে বের হয়েছিলাম। তাই হয়তো দেখিস নি।”
” ও আচ্ছা। ”
” বললি না তো এখানে কি করছিস তুই। ”
” না মানে এমনি এসেছিলাম হাওয়া খেতে। আমি যাচ্ছি এখন। ”
দ্রুত গতিতে প্রস্থান করলো ফারাবি। ফারহান সে দিকে তাকিয়ে থেকে হতাশ হলো। মেয়েটি সত্যিই তাকে ভালোবাসলো না আর। চোখের কোনে কিঞ্চিত পরিমান পানি জমেছে। এতো টা অসহায় কখনোই অনুভব হয় না তার যত টা হয় ফারাবির করা প্রত্যাখ্যানে।
জন্মদিনে সকলের শুভেচ্ছা পেয়ে আনন্দিত হলে ও প্রিয় মানুষ টির প্রতি রাগ হয়েছে খুব। একা ঘরে বসেই কাঁদছে মেয়েটি। কেন আসে নি সেই মানুষ টি?
কিয়ৎক্ষন বাদেই ফোন টা বেজে উঠলো। ঘড়ির কাঁটা বলে দেয় রাত এক টা বাজে। হুমড়ি খেয়ে কল রিসিভ করলো ফারাবি। কোনো প্রকার হায় হ্যালো না বলেই কন্ঠে এক রাশ অভিমান ঠেলে দিয়ে অভিযোগ শুরু করলো।
” কেন আসো নি তুমি? এমন তো কথা ছিলো না। তাহলে কেন মিথ্যে বললে আমাকে। এতো এতো প্রেমাউক্তি সব কি মিথ্যে তবে? বাহ এই তোমার ভালোবাসা। বিগত বছর খানেক ধরে পাগলের মতো ঘুরে চলেছি তোমার পেছনে। একবার জানতে চেয়েছি কেমন দেখতে তুমি? একবার বলেছি তোমার বাহ্যিক সৌন্দর্য কে আমি ভালোবাসি। এতো এতো প্রেম নিবদনের পরে ও কেন এতো অবহেলা। বলো কেন এমন করলে তুমি? ”
” এতো অভিমান করেছো জান পাখি? ”
মেয়েটির হৃদয় কেঁপে উঠলো। ওপাশে থাকা ব্যক্তি টির কন্ঠ বরাবর ই এক ঘোরে নিয়ে যায় ওকে। তবে আজ যেন অভিমান একটু বেশিই চেপেছে। তাই কোনো প্রকার প্রতিক্রিয়া করলো না সে।
” জান পাখি, এতো ভালোবাসা কি উচিত হয়েছে তোমার? যদি ফাঁকি দিয়ে চলে যাই। ”
” রামিন! তুমি এমন বলছো কেন? ”
” এক টা সত্যি বলবো তোমায়? ”
” আমার ভয় করছে রামিন। তোমাকে আমি খুব ভালোবাসি। ”
” ভুলে যাও মেয়ে। আমি তোমাকে ভালোবাসি না। ”
হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলো ফারাবি। ওপাশে থাকা ব্যক্তি টি প্রচন্ড বেগে হাসতে শুরু করেছে। ফারাবির ব্যথা গুলো যেন অনুভব হচ্ছে না। কয়েক সেকেন্ড পর ওপাশ থেকে তীক্ষ্ম একটি কন্ঠ কানে এলো
” মজা করছিলাম বোকা মেয়ে। এই মুহূর্তে গার্ডেনে দেখতে চাই জান। ”
এক মুহুর্ত দেরি না করে ছুটে গেল ফারাবি। ভয় ডর সব কিছু থমকে গেছে তাঁর। রামিন কে ছাড়া বাঁচতে পারবে না ও। বড্ড ভালোবাসে ছেলে টা কে। গার্ডেনে এসে একটি অবয়ব দৃশ্যমান হলো। হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ। আঁধার আর সোডিয়ামের মিশেল আলো তে রঙ ঠাওর হলো না। আরেক টু কাছে যেতেই বুঝতে পারলো সেগুলো কালো গোলাপ। ফারাবির পা কাঁপছে, এই বুঝি তাঁর সেই প্রিয় পুরুষ?
যেই না ডাকতে যাবে ঠিক তখনি পেছন থেকে একটি হাত ওকে আঁকড়ে নিলো। ঝটকা মেরে সরে যেতে চাইলে ও পারলো না সে। তবে কন্ঠ স্বর শুনে কেঁপে উঠলো মন। আনমনেই বলে উঠলো
” ফারহান ভাই। ”
” ভয় পেলি খুব? ”
” আপনি এখানে কি করছেন? আর ছাড়ুন আমায়।”
” ছেড়ে দিলে উড়ে যাবি জান? ”
বিস্ফোরিত নয়ন মেলে তাকায় ফারাবি। ফারহানের অধরে তাচ্ছিল্য মাখা হাসি। হো হো করে হেসে উঠলো সে। ফারাবি তৎক্ষনাৎ সামনে তাকালো। কালো গোলাপের গুচ্ছ পরে আছে মাটি তে। আর সেই মানুষ টি চলে যাচ্ছে গুটি গুটি পায়ে। কি হলো জানা নেই তবে ফারহান কে ধাক্কা মেরে প্রান পনে ছুট লাগালো ফারাবি। ফারহানের ভেতর টা দুমরে মুচরে যাচ্ছে। চোখ টা কেমন বিচলিত। মেয়ে টা ছুটে চলেছে নিছক ই এক ছায়ার পেছনে। যা কেবলি ভ্রম।
কাঁদতে কাঁদতে পিচ ধালা রাস্তায় বসে পরেছে ফারাবি। পা দুটো ছড়িয়ে বিলাপ শুরু করেছে। একটু আগেই সেই মানুষ টি চলে গেছে বাতাসের গতিতে। এক পলক দেখার ভাগ্য ও হলো না। ফারহান এসে যোগ দিলো ওর পাশে। মেয়েটি কাঁদছে সেটা যেন খুব করে উপভোগ করছে সে। টিসু পেপার এগিয়ে দিয়ে বলল
” কাঁদলে ভালো লাগে না জান। ”
” আর একবার এই নামে সম্বোধন করবেন না আপনি। ”
” কেন প্রেমে পরে যাবি। ”
” সরে যান তো ভালো লাগছে না আমার। ”
” কয় মাসের রিলেশন? ”
” আপনাকে বলবো কেন? ”
” হু তাও ঠিক। যাই হোক আমি কিন্তু শুনেছি, তোর সেই মানব তোকে তেমন একটা ভালোবাসে না। যাকে ছোট সহজ বাংলায় বলে আলগা পিরিত। ”
বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় ফারাবি। চোখ মুছে প্রতিবাদের কন্ঠে বলল
” আপনি আমাকে অপমান করছেন। ”
” একদম ই নয়। তোকে অপমান করে কি লাভ আমার বল তো? ”
” আপনি ওকে কিছু বলেছেন তাই না? সেই কারনে চলে গেছে ও। ”
চোখ ছোট করে তাকালো ফারহান। মেয়েটির মাথায় বুদ্ধি জ্ঞান লোভ পেয়েছে বোধহয়। বাতাসের গতি বেড়ে গেছে। আকাশ টা বার বার জেগে উঠছে। সে দিকে তাকিয়ে ফারহান বলল
” এখানে থাকা উচিত নয় এখন। চল আমার সাথে। ”
” যাবো না আমি। ”
” ছ্যাঁকা খেয়ে এই অবস্থা? ”
” ছাড়ুন আমায়। ”
মেয়েটির সাহস দেখে অবাক হলো ফারহান। তবে ভেতর টা এক দিক থেকে শান্ত স্থির। সে একাই কিছু দূর এগিয়ে গেল। ফারাবি ঠায় দাঁড়িয়ে। তখনি হাতে থাকা ফোন টা বেজে উঠলো। রামিন কল করেছে।
” আম স্যরি রামিন। বিশ্বাস করো ওনার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। সে তোমাকে নিশ্চয়ই উল্টো পাল্টা বলেছে। বিশ্বাস করো তাকে আমি ভালোবাসি না।”
” তো কাকে ভালোবাসিস জান? ”
ফারহানের কন্ঠ শুনে চমকে গেল মেয়েটি। এটা নিশ্চয় ভ্রম তাঁর। নিজেকে ধাতস্থ করতে আবার বলল
” আমি সত্যি বলছি ওনাকে ভালোবাসি না আমি। ফারাবি শুধু তোমার। ”
” তাহলে কাছে আসতে দিলি না ক্যান জান। ”
নিজের উপর চরম রাগ হলো এবার। মাথা চেপে ধরে বলল
” তোমার কন্ঠ ফারহান ভাইয়ার মতো লাগছে কেন।
আর তুই করে বলছোই বা কেন। ”
ওপাশ থেকে একটি দীর্ঘশ্বাস শোনা গেল। তবে সে শ্বাস এতো টাই তাজা যে নিজ ঘাড়ে অনুভব হলো সেটা। সর্বাঙ্গে অদ্ভুত শিহরন জেগে উঠেছে। কাঁপছে মেয়েটা। পেছন দিকে তাকাতেই ফোন হাতে ফারহান কে দেখলো। ঠোঁট কামড়ে হাসছে ফারহান। নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছে না ফারাবি। মেয়েটি মুরগির বাচ্চার মতো লাফায় শুধু। তেমনি ভাব হতেই হাত চেপে ধরলো ফারহান। কল কেঁটে দিয়ে বলল
” বোকা পাখি। ”
” ছাড়ুন আমাকে। আপনি, আপনি কি করে, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আপনি নিশ্চয়ই আমাকে বোকা বানাচ্ছেন।”
” একদম ঠিক সুইটহার্ট। তোকে বোকা বানিয়েছিলাম আরো দু বছর পূর্বে। যখন তোর স্ট্যাটাস বলে দিচ্ছিলো ফারহানের বিরুদ্ধে গিয়ে ডানা ঝাপটা দিচ্ছিস তুই। ”
মেয়েটির মাথায় হাত। সব কেমন অবিন্যস্ত। ক্রুর হাসতে শুরু করেছে ফারহান। এই নির্দয় হাসি কে বেশ ভয় পাচ্ছে ফারাবি। প্রচন্ড ভয়ে চোখ দুটো ঝাপসা হতে শুরু করেছে। মেয়েটির মুখের দিকে ঝুঁকে হালকা করে ফু দিতেই নিস্তেজ হয়ে গেল শরীর। এতোক্ষন পর স্বস্তির শ্বাস ফেললো ফারহান। আসলেই বড্ড বোকা মেয়েটি। ফারহানের বোকা পাখি।
(২৪)
” আমি কি স্বপ্নে আছি? ”
” না। ”
” তাহলে? ”
” আপনি অভিনবর বুকে আছেন অভিমানিনী। আপনার স্বপ্ন পুরুষের বুকে। ”
” সত্যি বলছেন আপনি? ”
” আপনার ভালোবাসার মতোই সত্যি ঝিল। ”
মেয়েটি আধো আধো বুলি তে যা তা বলে যাচ্ছে। অভিনবর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। এতো গার্ড পার করে ঝিল কে নিয়ে আসা অসাধ্য বিষয় ছিলো বটে। মেয়েটি কে নিয়ে খুব সাবধানে দেয়াল টপকালো সে। আধো ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে ঝিল। রুগ্ন মুখে অধর ছোয়ালো অভিনব। কোনো পরিবর্তন হলো না মেয়েটির অন্তরে। তবে সজাগ থাকলে নির্ঘাত কিছু একটা করে বসতো।
গাড়ি তে হেলান দিয়ে ছিলো ফারহান। অভিনব কে দেখে বুক ভরে শ্বাস নিলো। ঘন্টা খানেক ধরে অপেক্ষা করছিলো সে। অজানা ভয়ে বুক কাঁপছিলো কেমন। এই বুঝি ঝিল কে নিয়ে আসতে গিয়ে ধরা পরে গেছে বন্ধু অভিনব। প্রসন্ন হাসছে অভিনব।
” তোমার প্রতি আমার ভরসা, ভালোবাসা সব কিছু বেড়ে যাচ্ছে ফারহান। ”
” বিষয় টা উল্টো হওয়া উচিত অভিনব ভাই। আমি বরং কৃতার্থ তোমার মতো অবিজ্ঞ মানুষের সান্নিধ্য পেয়ে। ”
” চলো যাই, না হলে তোমার প্রেয়সী শোকে আহত হয়ে যাবে। ”
” হওয়া উচিত। বড্ড বেশি পাকনামি করেছে সে। ”
” আহা ছোট মানুষ। আসো তো এবার। ”
গাড়ির কাছে আসতেই ফারাবির বুলি শুরু ” নিশ্চয়ই আপনারা দুজন আমাদের প্রাচারের প্ল্যান করেছেন। দেখি এটা আবার কোন মেয়ে। ”
ঝিল কে দেখে ফারাবির রন্ধে রন্ধে আতঙ্ক ছড়িয়ে গেল। ফারহানের গাঁয়ে আ’ঘাত করে বলল
” আমি বুঝেছি এখন। সব টা আপনাদের প্ল্যান। এই আপু টা কে আপনি প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছেন। এখন আবার আমার মতো একে ও প্রাচার করে দিবেন। ”
” আর একটা কথা বললে মে’রে দাঁত ফেলে দিবো বেয়াদব। ”
” আমি আপনাদের নামে নালিশ করবো। সব বাজে ধান্দা করেছেন। আর অভিনব আপনি, একজন মুখোশধারী প্রাচার কারী। ট্রাভেলার্স এর নাম নিয়ে এসব অকাজ করে বেড়ান। ”
” বাহ তুমি তো বেশ বুদ্ধিমতী। তা কি করে বুঝলে ছোট বোন? ”
” আমাকে ছোট বোন বলবেন না। দেখুন আপনারা দুজন ই বাজে। ”
অভিনব মুখ টিপে হাসলো। ফারহান টেনে নামিয়ে নিলো মেয়েটি কে। নিজে ড্রাইভ করতে লাগলো আর অভিনব ঝিল কে পেছনে বসিয়ে দিলো। এদিকে ওর পাশে বসে ফারাবি ওদের দুজনের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে চলেছে। মেয়েটা যেন এখনো কিছুই বুঝতে পারে নি।
এলো চুলে হাত গলিয়ে দিলো অভিনব। কি নিষ্পাপ মেয়েটির মুখ। পরম আবেশে ঘুমিয়ে আছে অভিনবর বুকে। মুখে ফুটে আছে উজ্জল হাসি। স্নিগ্ধ মুখে হালকা করে হাত বুলিয়ে দিলো। বিরক্তি তে কুঁচকে নিলো মুখ। ফিক করে হেসে উঠলো অভিনব। ধীরে ধীরে মেয়েটির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল
” বসন্ত এসে গেছে অভিমানিনী । আপনি ফুঁটে উঠুন আমার মন বাগানে। টকটকে গাঢ় লাল রঙে আমি এলোমেলো হতে চাই একবার নয় হাজার বার। পুরো পৃথিবীর গাঁয়ে লেপ্টে দিতে চাই বসন্তের লাল রঙ। ”
চলবে
#বসন্তের_রঙ_লাল
#ফাতেমা_তুজ
#part_13
( ২৫)
ফ্যাচ ফ্যাচ করে কাঁদতে কাঁদতে ফারহানের বুকে লেপ্টে গেল ফারাবি। ছেলেটা এমন সব কান্ড করবে জানলে নিশ্চয়ই এই পঁচা ডোবা তে পা ফেলতো না সে। তবে এখন এই অনুভূতি কে কি করবে!
” রিলাক্স জান। এমন করলে আমি কিন্তু খুব রেগে যাবো। ”
” রেগে তো যাওয়ার কথা আমার। ”
” সেটা ঠিক। তবে একটা শিক্ষা দেওয়া উচিত ছিলো। সেই কারনেই ভয়েস চেঞ্জার দিয়ে ভয়েস চেঞ্জ করে জমিয়ে প্রেম করেছি। আচ্ছা বল তো ঐ ছদ্মবেশী রামিন এর থেকে ফারহানের ভয়েস কি খুব খারাপ? ”
” কিন্তু আমি এখন কি করবো। ”
আবারো গলা ছেড়ে কাঁদতে লাগলো ফারাবি। মেয়েটির গালে স্পর্শ করে বলল ফারহান
” আমাকে ভালোবাসবি স্টুপিট। আমি কি ছেলে হিসেবে খারাপ নাকি! এক টা জীবন কাঁটাতে পারবি না তোর ভাষ্য মতে এই বদ লোক টার সাথে। ”
” কিন্তু। ”
” কোনো কিন্তু নয় জান। দেখি তো এবার আমার প্রেয়সী কে। ”
ফারহানের মাঝে বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ্য করলো ফারাবি। লোক টা আদৌ কি সেই বদ মেজাজি ফারহান? কেন যেন আলাদা শান্তি পাচ্ছে ওর মন। এই মানুষ টির মাঝে খারাপ কোনো গুন লক্ষ্য হলো না। তবে এখন লজ্জা লাগছে ওর। দীর্ঘ এক বছর ধরে কি না এই লোক টা কে প্রেমের সংলাপ শুনিয়েছে। ইসস কি বিস্ময়কর পরিস্থিতি!
কান ধরে উঠ বস করছে অভিনব। ছেলেটার এমন কান্ডে মনে মনে না হেসে পারছে না ঝিল। তবে মুখের অভিব্যক্তি তে হাসির লেস মাত্র নেই। এবার ক্লান্ত হয়ে বসে পরলো অভিনব। গুনে গুনে পাঁচ শত নয় বার উঠ বস করেছে সে। তবে তাঁর অভিমানিনীর অভিমান গলে নি আইসক্রিম হয়ে। ঝিল তাড়া দিয়ে বলল
” এই টুকু ভালোবাসা নিয়ে আমাকে কিডম্যান করা হয়েছে? ”
” ইচ্ছাকৃতভাবে করি নি। ফারহানের বুদ্ধি ছিলো। না হলে এই পচা মেয়ের অভিমান ভাঙাতে বয়েই গেছে আমার। ”
” বেরিয়ে এসেছে আসল রূপ। থাকবো না আমি। এখনি চলে যাবো। ”
কিছুদূর চলে ও গেল সে। চোরাচোখ পেছনে তাকিয়ে দেখলো অভিনব আসছে কি না। আশ্চর্যজনক ভাবে ছেলেটার মাঝে কোনো পরিবর্তন নেই। সে আগের মতোই বসে আছে রাস্তায় মধ্য ভাগে। নাকের পাটা লাল করে এগিয়ে এলো ঝিল। ওর মস্তিষ্ক অন্তত বুঝে গেছে এই ছেলের সাথে পারা যাবে না আর। তাই বুদ্ধি খাঁটিয়ে নিলো। বিজ্ঞ দের মতো শ্রোতার মনোযোগ পেতে হালকা কাশলো।
” যা হবার তো হয়েছে। আমি চলে গেলে আবার আপনি বিরহে পাগল টাগল হয়ে যেতে পারেন। আর একটা জলজ্যান্ত, ফেমাস ব্যক্তি কে পাগল বানিয়ে তেমন কোনো সুবিধা তো নেই আমার। তাই ভাবছি ক্ষমা করেই দিবো। ”
” ইস এসেছেন ওনি ক্ষমার ঝুলি নিয়ে। ”
” দেখুন এবার কিন্তু সত্যিই রাগ হচ্ছে আমার। ”
” আচ্ছা স্যরি বাবা। এবার মাফ করো প্লিজ। ”
ভাব নিয়ে দাঁড়ালো ঝিল। মুখে বললো ক্ষমা করে দিয়েছি। অভিনবর ঠোঁটের কোনে ইষৎ হাসির রেখা সাথে মিশে আছে দুষ্টুমি। মেয়েটির মনোযোগ অন্যস্থানে বিধায় হালকা টান দিতেই একদম কোলে পরে গেল। ঝিলের অভিযোগের সুযোগ না দিয়েই মেয়েটির গাঁয়ে উষ্ণতা লেপ্টে দিলো। এমন ব্যতিক্রমী অভিনব কে দেখে বুদ্ধি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে ঝিল। আরেক টু ঝুকতেই চেঁচিয়ে উঠলো মেয়েটি।
” আপনার উপর বিশ্বাস করতে পারছি না আমি। নির্ঘাত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবেন। ”
” যথার্থ বলেছো ঝিল। আমি সত্যিই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবো এবার। ”
” এটা কিন্তু ঠিক না। ”
” আই নো দ্যাট। বাট নিয়ন্ত্রণ কে প্রশ্রয় না দিলে আমি যে পাগল হয়ে যাবো অভিমানিনী। ”
অদ্ভুত ভাবে তাকালো ঝিল। যেন ওর চোখে মুখে ফুটে উঠেছে বিকৃতি ভাব। তৎক্ষনাৎ মেয়েটার দিকে আরেকটু ঝুঁকে গেল সে। চোখ বন্ধ করে ফিস ফিস কন্ঠে বলল
” আমাকে বিয়ে করবে ঝিল? তোমার দেখা সেই স্বপ্নের মতো করেই তোমার স্বপ্ন পুরুষ কিডন্যাপ করেছে বিয়ে করার জন্য। ”
চোখ দুটো অসম্ভব বড় হয়ে গেছে ঝিলের। ওর স্বপ্ন সম্পর্কে অবগত অভিনব। বিষয় টা ভাবতেই গাঁয়ে কাঁটা দিলো। নিশ্চয়ই কোনো ভাবে খবর পেয়ে গিয়েছিলো।
লজ্জায় রক্তিম হয়ে গেল গাল। মেয়েটির লজ্জা পাওয়া টা উপভোগ করছে অভিনব।মেয়েটির মাঝে প্রকৃতির সকল গুন খুঁজে পায় সে। আকাশ যেমন হঠাৎ স্বচ্ছ ভাব আবার হঠাৎ গুমোট হয়ে যায় ঠিক তেমনি ভাবে ঝিলের রাগ অভিমান লজ্জা এসে যায়। প্রকৃতি যেমন করে সেজে উঠে একেক সময় একেক রকমে ঠিক তেমনি ভাবে ঝিলের মাঝে পরিলক্ষিত হয় হাজার খানেক রূপ হাজারো সাজে। এমন মানুষ কে ভালো না বেসে উপায় আছে। আর অভিনব তো সেই বসন্তেই নিজের মন হারিয়েছিল ঝিলের মাঝে।
সকল প্রকার রাগ অভিমানের পাল্লা মিটিয়ে ফারহান ফারাবি আর ঝিল অভিনব ছুটে চলেছে অজানার পথে। ঝিলের সাথে বেশ বন্ধুত্ব জমে গেছে ফারাবির। দুজনে যেন দুই বোনের মতো। একে অপরের সাথে মিশে গেছে খুব সহজেই। বিষয় টা তৃপ্তি দিচ্ছে ফারহান আর অভিনব কে। একটা সুন্দর বসন্ত কাঁটাবে তাঁরা এমনি পরিকল্পনা করে এসেছে। তবে নিজের উপর বিশেষ ভরসা পাচ্ছে না ফারহান। তাই মনে মনে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহন করলো। লুকিং গ্লাস দিয়ে ফারাবির দিকে তাকালো। মেয়েটির সাথে চোখচোখি হতেই চোখ টিপে দিলো সে। লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলো ফারাবি। ঝিল অবশ্য পুরো টাই খেয়াল করেছে। সেই কারনে মুখ চেপে হাসতে লাগলো। ভেতর টা ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। কে জানতো স্ব ঘোষিত বিচ্ছেদ এর দুই বছরের মাথায় পূর্ণতা মিলে যাবে।
(২৬)
এককালীন বেশি সময় ড্রাইভ করা রিক্স আর স্ট্রেস এর বিষয় হওয়াতে ঘন্টা খানেক পর পর অভিনব আর ফারহান পরিবর্তন করে ড্রাইভ করছে। অন্য দিকে ফারাবি আর ঝিল একে অপর কে আলিঙ্গন করে ঘুমিয়ে আছে। সকাল হয়ে গেছে প্রায়। অভিনব কিংবা ফারহান দুজনেই প্রচন্ড ক্লান্ত। তাছাড়া বাড়ি ফেরার জন্য তো পালিয়ে আসে নি ওরা। কোনো রিসোর্ট এ অবস্থান করতেই হবেই ওদের।
” লোকেশন বলছে মাধবপুর আছি আমরা। ”
” এখানে আসে পাশে কোনো ভালো রিসোর্ট আছে কি না খোঁজ করো তো। ”
মোবাইল দিয়ে রিসোর্ট এর খোঁজ লাগালো ফারহান। বেশ খুঁটিয়ে দেখে বলল
” আমার মনে হয় মাধবপুরের কোথাও থাকার থেকে শীমঙ্গল অবস্থান করলেই ভালো হবে। ”
” শীমঙ্গল কতো দূর আর? ”
” সেটা ও ষাট কিলোমিটারের মতো। ”
” ওকে ব্যাপার না। এখনো সকাল হয় নি। জ্যাম তো নেই দুজনে মিলে আর ঘন্টা দেড়েক ড্রাইভ করতে পারবো না? ”
” অবশ্যই পারবো। তবে নাস্তা টা না হয় শীমঙ্গল গিয়েই করি? ”
” হ্যাঁ সেটাই ভালো হবে। গসিপ করে মাত্র ঘুমিয়েছে ওরা। আচ্ছা ফারহান একটা ভালো দেখে রিসোর্ট দেখো তো। ”
ফোন নিয়ে আবার ব্যস্ত হলো ফারহান। শীমঙ্গলের বিখ্যাত একটি রিসোর্ট গ্রান্ড সুলতান টি রিসোর্ট। পাঁচ তারকা মানের হোটেল সেটা। সিলেট বিভাগের প্রথম পাঁচ তারকা মানের বিলাসবহুল রিসোর্ট নামে পরিচিত এটি। বিনোদনের জন্য রয়েছে নানা ব্যবস্থা।সবুজ প্রকৃতি ও চা বাগানে ঘেরা শীমঙ্গলের ১৩.২ একর জায়গা নিয়ে গঠিত এই রিসোর্ট। অভিনব কে ক্লান্ত দেখালো খুব। তাই সিট বদল করে ফারহান ড্রাইভিং সিটে বসলো। দুজনেই কাল বিকেল থেকে প্রচন্ড খাটুনির মাঝ দিয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে দুই মানবী। গ্রান্ড সুলতান রিসোর্ট এর কাছে এসে গাড়ি থামালো ফারহান। অভিনবর শরীর টা এখন ফুরফুরে। ফারাবি মাত্র ই চোখ মেলে তাকিয়েছে। হাই তুলে বলল
” সকাল হয়ে গেছে? ”
” না এখন মাঝ রাত্রি। ”
” আপনাকে সহজ সরল লাগলে ও আসলেই প্রচন্ড দুষ্টু। সব প্রকৃতি প্রেমি রাই কি এমন হয়? ”
অট্রহাসি তে ফেটে পরলো অভিনব। হাসির শব্দে চোখ পিট পিট করে তাকালো ঝিল। ফারাবি গাড়ি থেকে নেমে ফারহানের কাছাকাছি দাঁড়ালো। কেমন যেন লাগছে ওর। ভাবতেই ভেতর ঘর টা তে বিচিত্র অনুভূতি ধরা দেয়। ফারহান চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে আছে। ফারাবির উপস্থিতি টের পেয়েছে ঠিক ই তবে ও চায় ফারাবি নিজ থেকে এগিয়ে আসুক। অনেক টা মনোবল জুগিয়েই ফারাবি বলল
” এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? ”
” ভালো লাগছে। ”
” আচ্ছা এটা কোন জায়গা? কি সুন্দর চার পাশ টা। ”
” শীমঙ্গল। ”
” আমরা সিলেট এসেছি? ”
” হু। ”
বিস্ময়ে হা হয়ে গেছে ফারাবির মুখ। অভিনব আর ঝিল গাড়ি তে বসে আছে। ফারহান মেয়েটি কে আড়াল করে নিয়ে এলো। বেশ আড়ষ্টতা কাজ করছে ওর। তাই মাথা নিচু করে রইলো।
” আমার সিদ্ধান্ত কে সম্মান জানাবি তো জান? ”
” এমন করে বলছেন কেন। বলুন না কোন কথা টা বলবেন। ”
” আগে বল ভালোবাসিস কি না। ”
” বাসি তো। ”
” সিরিয়াস হয়ে বল। দেখ আমি মানি যে সবসময় উল্টো করি আমি। তবে এটা ও বিশ্বাস করি মন থেকে অনুভূতি না হলে ভালোবাসা হয় না। ”
” আমি ভালোবাসি আপনাকে। ”
মনের শান্তি পেল না ফারহান। কেন যেন মন বলছে ভালো নেই ভালোবাসা। এমন করা উচিত হয় নি তাঁর। তবে ভালোবাসা কে নিজের থেকে দূরে রাখা গেলে ও অন্যের সাথে দেখা অধিক যন্ত্রণার।
কুয়াশায় ডুবে আছে প্রকৃতি। কিছু দূর পর পর বাগানের দেখা মিলে। সূর্য টা এখনো জায়গা পায় নি পৃথিবীর বুকে। খুব যত্ন নিয়ে নিজের মাঝে লুকিয়ে রেখেছে কুয়াশা। ইষৎ ঠান্ডা লাগছে মেয়েটির। পেছন থেকে জাপটে ধরলো অভিনব। উষ্ণতায় কিছু টা কেঁপে উঠেছে ঝিল। তবে খুব দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে বলল
” দু বছর আগে কেন ফেলে গিয়েছিলে আমায়? ”
” তখন তুমি ছোট ছিলে ঝিল। ”
” এটা অজুহাত নয় কি!”
” হয়তো। ”
” দেখো হেয়ালি না করে সত্যি টা বলবে প্লিজ। আমি সত্যিই সব টা জানতে চাই অভিনব। ”
” বললে রাগ করবে না তো। ”
” উহু রাগ করবো কেন। ”
মেয়েটির কানের কাছে মুখ নিয়ে ভয়ঙ্কর কিছু বলল অভিনব। ছেলেটা কে ঠেলে চলে যেতে চাইলো ঝিল। তবে বলিষ্ঠ দেহের সাথে ওর রোগা পাতলা শরীর টা পেরে উঠছে না।
” তুমি একদম যা তা মানুষ। মুখ দিয়ে ভালো কথা বের ই হয় না। ”
” আমি এমনি মিসেস। ”
” আমি এখনো আপনার মিসেস হই নি বুজেছেন মিস্টার। ”
ছেলে টার গাঁয়ে ভর দিয়ে চোখ বন্ধ করলো ঝিল। অভিনব নিজ বাহু দ্বারা আরেক টু কাছে নিয়ে এসে বলল
” আজ বাদে কাল আপনি আমার হয়ে যাবেন মিস, মিসেস। ”
” কিন্তু সেটা কি করে সম্ভব। ”
” আমরা বিয়ে করবো তাহলেই সম্ভব। ”
” পরিবার কে না জানিয়েই? ”
” বিষয় টা নিয়ে আমি ভেবেছি ঝিল। তবে তুমি হয়তো ভাবছো তোমার স্বপ্ন কে বাস্তবে রূপান্তর করার জন্য অথবা নিজের উপর বিশ্বাস হারিয়ে আমি এমন টা করতে যাচ্ছি। কিন্তু ঘটনা এটা নয়। ”
এতোক্ষণ আলগা শ্রোতা হলে ও এবার মনোযোগী হলো ঝিল। ছেলেটির বাহু থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সটান হয়ে দাঁড়ালো। অভিনবর দৃষ্টি তে চরম অসহায় ভাব। ছেলেটির বুক চিরে বেরিয়ে আসে হাজারো দীর্ঘশ্বাস।
” তুমি হয়তো অবগত নও তোমার ফ্যামিলির সাথে আমার মামাদের দ্বন্দ্ব রয়েছে। আর আমি তুমি কিছু তেই এক হতে পারবো না। ”
” দ্বন্দ্ব কিসের দ্বন্দ্ব? ”
” পূর্ব শত্রুতা। সাথে রাজনৈতিক বিষয় ও রয়েছে এতে। ”
ঝিলের চোখে মুখে চিন্তার রেখা দেখা দিলো। পরিবেশ সহিষ্ণু করতে অভিনব বলল
” চিন্তা কেন করছো ঝিল? আমি তুমি একে অপরকে ভালোবাসি। তাছাড়া বিয়ে টা করে নিলে আমরা কলঙ্কিত হবো না। আজকাল জানো তো নিজের প্রতি স্থির থাকতে পারি না। আমি চাই না একটা সূক্ষ্ম দাগ অব্দি লাগুক তোমার উপর। আর আমি সিউর যে তুমি আমি পারবো দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব মেটাটে। ”
” ইনশাআল্লাহ। আমাদের পারতেই হবে। ”
ছেলেটার কথায় দম আছে বলতেই হয়। অভিনবর কাছাকাছি অবস্থান করলো ঝিল। তবে মুহুর্তেই বিকৃতি করে নিলো মুখ। ইশারায় প্রশ্ন করতেই ঝিল বলল
” তুমি এতো লম্বা যে! ”
শব্দ করে হাসলো অভিনব। মেয়েটির কাহিল অবস্থা ভালোই লাগছে ওর। তবে প্রিয় মানুষের সাথে রসিকতা করা যায় অপদস্থ নয়। ঝিল কে নাগাল দিতে হাঁটু গেড়ে বসলো অভিনব। তৎক্ষনাৎ হাসি ফুটলো ঝিলের ঠোঁটের কোনে। আশে পাশে পরখ করে নিয়ে শুষ্ক চুম্বন এঁকে দিলো অভিনবর কপালে।
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন।
চলবে