রাজকুমারী_নীনা(ভৌতিক_গল্প) #পর্ব_০৩

0
735

#রাজকুমারী_নীনা(ভৌতিক_গল্প)
#পর্ব_০৩
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ

বৃদ্ধ লোকটি বললো,,মৃওিকা মা তোমাদের আসতে কোনো সমস্যা হয় নাই তো রাস্তায়।
মৃওিকা তার দাদুভাইকে রাস্তায় যা হয়েছে সব খুলে বললো।

দাদুভাইঃ তোমাদের ভাগ্য সত্যিই খুব ভালো। দক্ষিণের এই ভয়ানক রাস্তা দিয়ে যারা গিয়েছে তারা কোনোদিন ফিরে আসেনি।কিন্তু আমার ভীষণ অদ্ভুত লাগছে কাহিনীটা।তোমাদের বাঁধা দিয়েছে কিন্তু কোনো ক্ষতি করেনি।
যাক এইসব কথা এখন থাক।তোমারা সবাই খুব ক্লান্ত সাথে ভয় পেয়ে আছো।
ভয় পেয়ো না। এখন তোমারা নিরাপদে থাকবে।
চলো তোমাদের রুম দেখিয়ে দেই।ফ্রেশ হয়ে আসো তারপর খাবার খাবে।
তাদেরকে বড় দুইটা রুমে নিয়ে গেলো রুম দুইটা পাশাপাশি। মৃওিকা,এনা,রিদীমা তিনজনে থাকবে এক রুমে।আর রাহুল, তৌশিক,জয় ওরা তিনজন থাকবে এক রুমে।

সবাই ফ্রেশ হয়ে খেতে আসলো। ওই ভয়ানক ঘটনাটা কেউ ভুলতে পারছে না। তাই খাওয়া শেষ করে নিজেদের স্বাভাবিক করার জন্য কিছুক্ষণ আড্ডা দিলো সবাই। তারপর সবাই ঘুমুতে গেলো।

রিদীমা আর এনা শুতেই তাদের চোখে ঘুম লেগে এসেছে।

কিন্তু মৃওিকার কোনো ঘুম আসছে না। রাস্তার মধ্যে ঘটে যাওয়া ভয়ানক ঘটনাটা এখন ও ওর মাথায় ঘুরছে।কেন জানি মনে হচ্ছে ওই মহিলাটা কিছু বলতে চেয়েছে। আমাদের কোনো ক্ষতি করলো না। ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগছে।

দাদাভাই তো বললো ওই রাস্তা দিয়ে যারা যায় তারা আর ফিরে আসে না। এইসব ভাবতে ভাবতে মৃওিকা কখন যে ঘুমিয়ে পরছে সে নিজে ও জানে না।

সকালে সবাই ঘুম থেকে ওঠে পরেছে মৃওিকা ছাড়া। রাহুল মৃওিকাদের রুমে এসে দেখলো মৃওিকা মরার মতো ঘুমাচ্ছে। রাহুল জানালার পর্দা সরিয়ে দিতেই বাহিরের আলো মৃওিকার চোখে পরলো। মৃওিকা নড়েচড়ে ওঠলো।

রাহুল মৃওিকার পাশে বসলো,,,মৃওিকার কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে আস্তে বলছে,,মৃওি….মৃওি….এই মৃওিপাখি ওঠো।
মৃওিকা ধরপড়িয়ে ওঠে বসলো।
কে…….কে
পাশে তাকিয়ে দেখে রাহুল মিটমিটিয়ে হাসছে মৃওিকাকে ভয় পেতে দেখে।
মৃওিকার মেজাজ তুঙ্গে,,,,,,,,
সবসময় দুষ্টামি না করলে হয় না তোমার।
রাহুলঃ সরি সরি মেরি জান। সবাই নিচে অপেক্ষা করছে টেবিলে নাস্তা নিয়ে। আমি এসেছি তোমাকে নিয়ে যেতে।উল্টো বকা দিচ্ছো,,মুখ ফুলিয়ে বললো।
রাহুলকে এইভাবে মুখ ফুলাতে দেখে মৃওিকা ফিক করে হেসে দিলো।

রাহুল মৃওিকার হাসি দেখে বুকের বাম পাশে হাত রেখে নিচে হেলতেই পরে যাবে মৃওিকা তাড়াতাড়ি হাত ধরে নেয়।
বেচারা মাথা ফাটানো থেকে বেঁচে গেলো।
মৃওিকা রাগ নিয়ে বললো…..সব সময় দুষ্টামি না করলে হয় না এখনইতো মাথা ফাটাতে বলে মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে ঘুরে বসলো।
রাহুলঃ সরি সরি মৃওিপাখিটা আমার আর এমন করমু না।
যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।

কিছুক্ষণ পর………
মৃওিকা ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো রাহুল খাটে বসে মোবাইল স্ক্রোল করছে।
মৃওিকাঃ চল আমি রেডি।
রাহুল মুচকি হেসে মৃওিকাকে নিয়ে নিচে চলে গেল।
সবাই একসাথে নাস্তা শেষ করলো।

খাওয়া শেষ করে মৃওিকা সবাইকে বাংলোটা ঘুরে দেখাচ্ছে।

এনিঃ ও..য়া..ও। মৃওি কি সুন্দর তোদের বাংলোটা। অবশ্য কিছুটা ভয় ও লেগেছে। রাতের বেলা ভুতুড়ে বাংলো মনে হয়েছে। কিন্তু দিনে সেইরকম বুঝা যাচ্ছে না।
মৃওিকা মুচকি হেসে বললো..
কেন তোরা না ভুতে ভয় পাস না। তো হঠাৎ কি হলো। কালকে রাতে,,,,,,,,,,
মৃওিকা আরও কিছু বলতে যাবে তার আগে রিদীমা বলে উঠলো,,,,,
স্টপ,,,,,,,স্টপ মৃওিকা।কাল রাতের কথা বলবি না।

জয় রিদীমার কাছে গিয়ে,, ভয় পেও না। কালকের কথা বাদ।চল তুমি বিশ্রাম নিবে।

তৌশিকঃ আমি ও একটু ঘুমিয়ে আসি। বলে যেতে নিলেই…

এনা তৌশিকের কান ধরে দাঁড় করিয়ে বলে……চান্দু তোমাকে তো যেতে দিচ্ছি না।আমার হাত,পা ব্যথা করছে টিপে দিবে চলো।না হলে কিন্তু…………

তৌশিকঃ সরি সরি আমার এনা সুইটহার্ট। আমি ঘুমাবো না প্রমিজ।চলো।।

মৃওিকা আর রাহুল ওদের কান্ড দেখে হাসছে।

রাহুল মৃওিকার কোমড় জড়িয়ে বললো,,,চলো আমরা ও রোমান্স করি। মৃওিকা হেসে রাহুলের বুকে মুখ লুকালো।

বিকালে পাঁচটায় সবাই রেডি রাজপ্রাসাদের উদ্দেশ্যে যাওয়ার………….

এত কিছু হওয়ার পরও ওদের শখ মিটলোনা আবার বায়না ধরলো রাজপ্রাসাদ দেখবে।নিজেরা ও মরবে আমাকে ও সাথে নিয়ে মরবে।
দাদুকে বলিনি রাজপ্রাসাদটা ঘুরতে যাব বললে কখনও যেতে দিবে না।বলেছি,, বাংলোর আশেপাশেই থাকবো একটু ঘুরাঘুরি করবো সবাই( মৃওিকা মনে মনে বলছে)

জয় বললো,,,সবাই তৈরি হয়েছিস।
মৃওিকা হেসে বললো,, হ্যাঁ সবাই মরার জন্য তৈরি হয়েছি।
এনাঃ হু তোদের সবার মাথা।
রিদীমাঃ চল তাহলে।
তৌশিক আর রাহুল,,, চল যাওয়া যাক।

দেড় ঘন্টা হেঁটে হেঁটে অবশেষে প্রাসাদের সামনে আসলো তারা ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গেছে।

মৃওিকাঃ দেখো সবাই সন্ধ্যা হয়ে গেছে। সকালে আসলে কি খুব বেশি খারাপ হতো।

এনাঃ আমার না খুব ভয় লাগছে।কি অদ্ভুত লাগছে প্রাসাদটা। বাহির থেকেই এত ভয়ানক লাগছে।মনে হয় ভুল করে জঙ্গলে চলে এসেছি। আচ্ছা না গেলে হয় না। চল ফিরে যাই।

জয়ঃ এই তোদের সব কটার মাথা খারাপ হয়েছে নাকি।এত কষ্ট করে হেঁটে এসেছি চলে যাওয়ার জন্য। দেখেই যাব। যা হবার হবে।
রাহুলঃ সেটাই। চল ভিতরে যাওয়া যাক।

সবাই একসাথে প্রাসাদের গেইটে হাত দিতেই সাথে সাথে গেইটটি খুলে গেলো।সবাই ভীষণ অবাক হয়ে একজন আর একজনের দিকে তাকাচ্ছে। এটা কি করে সম্ভব,, ধাক্কা ও দিলাম না শুধু হাতের স্পর্শ পেতেই গেইট খুলে গেলো।সবার বুক ভয়ে ধুকপুক করছে। সবাই গেইট পেরিয়ে ভিতরে ঢুকতেই আরেক ধপা অবাক হলো। কারন…………….

চলবে……………
[?ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?]

#ফিহা আহমেদ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here