#রাজকুমারী_নীনা(ভৌতিক_গল্প)
#পর্ব_০৭
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
হঠাৎ করেই মৃওিকার চোখ গেল জলপ্রপাতের ডান দিকটায়।
মৃওিকাঃ রাহুল ডান দিকটায় দেখো কিছু একটা চকচক করছে।
রাহুল ডান দিকটায় তাকিয়ে,,,,,, সত্যি তো চলো গিয়ে দেখা যাক।
রাহুলঃ মৃওি ধীরে ধীরে পাথরে পা দিবে অনেক পিচ্ছিল পাথরগুলো পরে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত।
মৃওিকাঃ হুম।
দুজন ধীরে ধীরে পিচ্ছিল পাথরগুলো অতিক্রম করে অবশেষে জলপ্রপাতটির ডান দিকটায় অাসতে সক্ষম হলো।
রাহুল অবাক হয়ে,,,,,, আরে এইটা তো দেখছি একটা তলোয়ার।
মৃওিকাঃ দেখো কেমন চকচক করছে। সোনালি রশ্মি বের হচ্ছে তলোয়ারটি থেকে।
রাহুল তলোয়ারটি স্পর্শ করার সাথে সাথে ঝটকা খেলো।
রাহুলঃ আ,,,,,হ্। যেন কারেন্ট আছে তলোয়ারটিতে।
মৃওিকাঃ তলোয়ার ধরার কি দরকার ছিলো।হাতটা কেমন লাল হয়ে গেছে। তলোয়ারটি ধরার কোনো প্রয়োজন নেই। চলো।ওদের জ্ঞান ফিরাতে হবে। না জানি কখন ওই আত্মা দুটো চলে আসে।
রাহুলঃ মৃওিকা তুমি তলোয়ারটি স্পর্শ করতে পারবে আমার বিশ্বাস। তখন বোতলটাও তুমি স্পর্শ করতে পেরেছো।তলোয়ারটিও তুমি স্পর্শ করতে পারবে। হয়তো কোনো কাজে আসতে পারে তলোয়ারটি।
রাহুল অনেক বুঝানোর পর মৃওিকা তলোয়ারটি স্পর্শ করতে যাবে তার আগেই নিজ থেকে তলোয়ারটি মৃওিকার হাতের ওপর চলে আসল।
দুজন কিছুটা অবাক হলো। তারপর নিজেদের সামলে জল নিয়ে রুমটিতে প্রবেশ করলো।
রুমে প্রবেশ করতেই দেয়ালের ফাটা অংশ নিজে নিজে মিলিয়ে গেলো।
দুজন ভয় পেয়ে গেল দেয়ালের ফাটা অংশ নিজে নিজে মিলিয়ে যেতে দেখে।
…………………………????………………………
সবার চোখ জলের ছিটা দিতেই সবাই পিটপিট করে চোখ খুললো। সবাই ভয় পেয়ে গুটিশুটি মেরে বসে আছে। আর পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে।
মৃওিকা এনা আর রিদীমার কাঁদে হাত দিতেই দুজনে ভয়ে বলতে শুরু করে,,,,, প্লি….প্লিজ আ….আমাদের মেরো না। আমাদের যেতে দেও তোমাদের আর ডিস্টার্ব করতে আসবো না প্র,,,প্রমিজ।
মৃওিকা দুজনকে ভয় পেতে দেখে ভীষণ হাসি পেলো।কিন্তু হাসি দমিয়ে রাখলো।
মৃওিকা পিছন থেকে,,,,, ভয় পাস না তোরা আমি মৃওিকা।
দুজনে পিছনে ফিরে মৃওিকাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো।
মৃওিকা দুজনের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে,,,,,, সব ঠিক হয়ে যাবে। কোনো রাস্তা তো আছেই এখান থেকে বের হওয়ার।
হঠাৎ করে পুরো প্রাসাদটি কেঁপে উঠল।
সবাই ভীষণ ভয় পেয়ে গেল।
তৌশিকঃ রা,,,রাহুল মনে হচ্ছে কেউ আসছে।
জয়ঃ ভাই কেনো যে মৃওিকার কথা শুনলাম না। ওর কথা না শুনাতে আজকে আমাদের এই অবস্থা।
মৃওিকা তৌশিক আর জয়ের কাছে এসে,,,,,, যা হবার হয়ে গেছে এখন এখান থেকে কিভাবে বের হবো সেইটা ভাব।
তখনই খারাপ আত্মাটি রুমে প্রবেশ করতে করতে,,,,, হা হা হা। তাই নাকি বাচ্চারা বের হবার চিন্তা ভাবনা করছিস। ভুলে যা সেই কথা।বাঁচলেই তো বের হবি।
মৃওিকা সাহস করে বলে ফেললো,,,,, দেখুন আমাদের ছেড়ে দিন।আমাদের ভুল হয়ে গেছে।
খারাপ আত্মাটিঃ হা হা হা।তোদের ওখান থেকে এমনি এমনি আনা হয় নাই।তাজা তাজা রক্ত লাগবে আমার মায়ের দেহ গোসল করাতে।তারপরেই তো আমার মায়ের আত্মা জাগ্রত হবে। হা হা হা।
রুম কাপিঁয়ে হাসা শুরু করলো।
কি ভয়ানক হাসি সবার রূহ্ কেঁপে উঠল।
তারপর আত্মাটি চোখ বন্ধ করে কিছু একটা পরলো সাথে সাথে একটা একটা বড় দা চলে আসল । সবাই এত বড় দা কোনোদিন কোথাও দেখে নাই।
খারাপ আত্মাঃ তোদের আট জনের মস্তক লাগবে আমার। বলেই সবার সামনে আসতে থাকে।
আর সবাই ভয় পেয়ে পিছনে যেতে থাকে।দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকতেই সবাই ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো।
আত্মাটি যখনই দা দিয়ে আঘাত করতে যাবে ঠিক তখনই সবাই একসাথে উধাও হয়ে গেল। সবাইকে এইভাবে উধাও হতে দেখে আত্মাটি রেগে,,,,, নীনা তোকে আগে শেষ করবো।তারপর ওদের। তুই আমার কাজের বাঁধা হয়ে দাড়াঁচ্ছিস।
………………………????……………………..
সবাই চোখ বন্ধ করেই বুঝতে পারছে কিছুই হচ্ছে না। তাই সবাই ধীরে ধীরে চোখ খুললো।
চোখ খুলতেই অবাক হয়ে একজন আরেকজনের দিকে তাকাচ্ছে।
তখনই সাদা ধোঁয়া তাদের সামনে ঘুরতে লাগলো।আর ধোঁয়াটি একটি মেয়েতে পরিনত হলো।
প্রথমে সবাই কিছুটা ভয় পেলেও এখন সবাই হা করে তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে। মেয়েটি এতই সুন্দরী যে কেউই হা করেই তাকিয়ে থাকবে।
সবাইকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মেয়েটি হাসতে শুরু করলো। মেয়েটির হাসিতে সবাই আরো মুগ্ধ হলো।যেন বাঁশির সুর শুনলো তারা।
মেয়েটি হাত তালি দিতেই সবার ধ্যান ভাঙলো।
মেয়েটিঃ সবাই কি এইভাবেই তাকিয়ে থাকবে।
জয় গালে হাত দিয়ে,,,, আ,,,হা যেন গান গাইছে।
জয়ের এমন কথা শুনে রিদীমা জয়ের গালে মারলো এক থাপ্পড়।
জয় বেচারা গালে হাত বুলাতে বুলাতে,,,,, স,,সরি জানঠুস।
মৃওিকা অস্পষ্ট স্বরে বলে উঠলো,,,,, নী,,,,,না।°রাজকুমারী নীনা°।।
সবাই অবাক হয়ে মৃওিকার দিকে তাকালো। মৃওিকা কি করে জানলো এই মেয়েটি রাজকুমারী।
মেয়েটি অবাক হয়ে,,,,,, বাহ্। তুমি দেখছি আমার নাম ও জানো।
মৃওিকাঃ আমি আমি ছবিতে দেখেছিলাম।ছবির পিছন দিকটায় লিখা ছিলো
~রাজকুমারী নীনা~।।
মেয়েটিঃ ঠিক বলেছো।আমিই
~রাজকুমারী নীনা ~।।
কিন্তু আমি মানুষ নই।আমি এখন আত্মা রূপে আছি।তোমরা আবার আত্মার কথা শুনে ভয় পেয়ো না।আমি তোমাদের কারোর ক্ষতি করবো না।তোমাদের সাহায্য করবো এখান থেকে বের হতে।
রাজকুমারী নীনার কথা শেষ হতেই মৃওিকার রাহুলের দিকে চোখ পরতেই ভীষণ রেগে গেলো।রেগে গিয়ে রাহুলের পিঠে দিলো এক কিল।রাহুল বেচারা পিঠ বাঁকিয়ে ফেললো।
রাহুলঃ এইভাবে কেউ মারে মৃওি।আমার পিঠ আ,,,হ্।
মৃওিকা রেগে,,,,,এই হচ্ছে ছেলেদের ভালোবাসা সুন্দরী মেয়ে দেখলেই ভালোবাসা তখন পাখির বাসার মতো ভেঙে যায়।
মৃওিকার কথায় রাহুলের হুঁস আসে।
অপরাধীর মতোন তাকিয়ে,,, সরি মৃওিপাখি আর এমন হবেনা।ভুল হয়ে গেছে। এই কান ধরছি আর কোনো মেয়ের দিকে ফিরে ও তাকাবো না।
মৃওিকা মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো।
এইদিকে এনা তৌশিককে চিমটি দিয়ে অবস্থা খারাপ করে ফেলছে।
এনা মনে মনে,,,, শালা মেয়ে দেখলে হুঁস থাকে না।নে এবার ভালো করে চিমটি খা।
তৌশিক চলচল চোখ নিয়ে এনার দিকে তাকিয়ে আছে। আর এনা ভেংচি কেটে দিল।
নীনাঃ হয়ে গেছে তোমাদের মারামারি। এইবার আসা যাক আসল কথায়।কেন তোমাদের আমার বোনের কাছ থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসলাম।
সবাই অবাক হয়ে একসাথে বলে উঠলো,,, বোন মানে ওই খারাপ আত্মাটি তোমার –বো,,,,,,ন–।।
চলবে………
[?ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?]
…………………………..???………………………
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ]
#ফিহা আহমেদ?