মধুচন্দ্রিমা পর্ব ১৯(বাকী অংশ)

0
823

মধুচন্দ্রিমা
পর্ব ১৯(বাকী অংশ)
তানিয়া রহমান

দু দুবার কলিং বেল বেজে উঠল
আম্বিয়া দরজা খুলে দিলে মনির বলল- ম্যামকে ডেকে দিন
– আপনে ফুন দেন, দোতলায় যাওয়া নিষেধ
– ওকে
আম্বিয়া চলে যাবার পর মনির কল না করে নিশ্বব্দে দোতলায় উঠে এল, ইরিনের রুম খুঁজে পেতে অসুবিধা হলো না মনিরের, টানা দুদিন ফলো করে দেখেছে ইরিন দক্ষিণের ঝুল বারান্দায় সময় কাটায়,ধারণা করে চলে এল ঝুল বারান্দার রুমের সামনে, পর্দার ফাঁক গলে দেখতে পেল মেহবুব ইরিনকে আদর করছে,ইরিনের ফর্সা সুঢৌল পায়ে কতরকম ভাবে চুমু খাচ্ছে , এই ধারণা বিহীন অপ্রত্যাশিত ঘটনা মনিরের মাথায় দাউদাউ করে আগুন জ্বালিয়ে দিল,পকেট থেকে রিভলবার বের করে লোড করে নিয়ে দরজায় নক করে বলল – স্রেফ দু মিনিট সময় দিচ্ছি নিজেদের ঠিকঠাক করে নে
ইরিন পা গুটিয়ে নিল অপ্রস্তুতভাবে আর মেহবুব বিচলিত না হয়ে ইরিনের দিকে তাকিয়ে বলল – কাছে এস, ভয় নেই
মনির রুমে ঢুকতেই ইরিন বলল- তুমি এখানে কি করছো
– কেমন আছ ইরি,
জবাবের অপেক্ষা না করে মেহবুবের গলার কাছের টিশার্ট টেনে ধরে মনির আবার বলল – যথেষ্ট ফুর্তি করেছিস এবার কাজের কথায় আয়
– ডোন্ট টাচ হিম(ইরিন)
মনির দাঁতে দাঁত চেপে বলল – খুব লাগছে, তবে তোমায় টাচ করি
– ভদ্র ভাবে কথা বল মনির (মেহবুব)
– ইরি সোনা নিচে চলে যাও, তোমার জন্য বই নিয়ে এসেছি ওগুলো পড়,আমি মেহবুবের সঙ্গে ভদ্রভাবে কিছু কথা বলি
– কোথাও যাব না, কি করবে ওকে তুমি
পকেট থেকে এক পাতা কাগজ বের করে মনির বলল- কিচ্ছু করব না, টপাটপ সিগনেচার কর, চলে যাই
– এটা কি (ইরিন)
– ডিভোর্স লেটার, তোমারাতো কেউ সিদ্ধান্ত নিতে পারলে না তাই তোমাদের হয়ে আমিই কাজটা সহজ করে দিলাম
– অসম্ভব, আমি কখনো সিগনেচার করব না (ইরিন)
– বেশতো,মেহবুব তুই করে ফেল
– মনির! দ্যাটস এনাফ,ডোন্ট ক্রস ইউর লিমিট
রিভলবার বের করে মেহবুবের মাথায় ঠেকিয়ে বলল- আমাকে লিমিট শেখাতে আসিস না,ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গে গিয়েছে,বহুত ড্রামা করেছিস এবার ইন্ট্রোডাকশনে আয়,নয়তো শুট করতে দুবার ভাববো না
– মনির! কুল,প্লীজ ডোন্ট ডু দিস(ইরিন)
মনির ইরিনের দিকে তাকিয়ে বলল – আমিতো তোমাকে দিয়েই সিগনেচার করাতে এসেছি তবে কোন কথা না বলে করে ফেল
ইরিন কান্নায় ভেঙে পরে বলল- আমি আর নিতে পারছি না মনির, আমাকে আর তুমি কষ্ট দিও না, বড্ড ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি, তুমি এই মুহূর্তে এখান থেকে চলে যাও
ইরিনকে কাঁদতে দেখে মনিরের ভিতরটা দুলে উঠলো,রিভলবার পকেটে গুঁজে নিল,ছাড়া পেয়ে মেহবুব ইরিনের কাছে গিয়ে দু’হাতে আগলে ধরলো, আশ্বাস দিয়ে বলল – ডোন্ট ক্রাই,আম অলয়েজ উইথ ইউ
ইরিনের দিকে গভীর দৃষ্টি নিয়ে তাকালো মনির, বলল- আমাদের উনত্রিশ বছরের জীবনে সাতাশ বছর তোমাকে ভীষণভাবে ভালবেসেছি,এখনো বাসি, সাতাশ বছরের ভালবাসার কাছে মাঝের দুটো বছরের ভুল অতি তুচ্ছ নয় কি ইরি! আমি কি একবার সুযোগ পেতে পারি না! প্লিজ ইরি! ফরগিভ মি এন্ড কাম ব্যাক মাই লাইফ, আমি জানি তুমি আমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য মেহবুবকে এত কাছে আসতে দিয়েছো,আম ওয়েটিং ফর ইউ,আমার ভালবাসার দরজা দিয়ে তুমি ছাড়া আর কেউ কোনদিন এন্ট্রি নিতে পারবে না,ইরি!আমি অপেক্ষায় থাকব তোমার ফেরার
মনির চলে যাবার পর ইরিন দু’হাতে মুখ ঢেকে সোফায় বসে কান্নায় ভেঙ্গে পরলো।
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here