মন_মহুয়ার_নেশা-০৮,০৯

0
555

#মন_মহুয়ার_নেশা-০৮,০৯
#তানজিলা_খাতুন_তানু

(পর্ব_৮)

৩ দিন পর…

জিসান সহ বাকি তিনজনের শা***স্তির আদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে লিডারকে এখনো পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি তার জন্য তদন্ত চলছে। অদ্ভুত লাগলেও রিয়াকে তাদের বাড়ির স্টোররুম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে,বিষয়টা নিয়ে মহুয়ার মনে দ্বন্দ থাকলেও রিয়া ফিরে আসাতে খুশি হয়েছে।

সেইদিনের পর মাঝে মধ্যে নিশানের সাথে দেখা হয়েছিলো কিন্তু খুব একটা কথা হয়নি।

– তাহলে মহু কি সিদ্ধান্ত নিলি?
– ভাবছি এই গ্রামেই থেকে যাবো।
– মানছ কি বিয়ে করে এইখানেই সেটেল হবার প্ল্যান করছিস নাকি।

মহুয়া মৃদু হাসলো কিছুই বললো না। অর্ক কপাট রাগ নিয়ে বললো…
– তোর এই হাসির মানে আমি কখনোই বের করতে পারিনি। অদ্ভুত রহস্যময় হাসি। এই আমাকে সবটা ক্লিয়ার করে বলবি প্লিজ,,আমার মতোই গল্পের পাঠকরাও কৌতুহল হয়ে আছে সত্যি গুলো জানার জন্য। আর মনে মনে গালাগালি দিচ্ছে আমার মতো।

মহুয়া রাগ নিয়ে বললো…
– তুই লেখিকাকে গালাগালি দিচ্ছিস।
– নারে বইন আমাদের প্যাচের রানিকে কী আমরা গালাগালি দিতে পারি। আর এখন সে প্যাচের রানির পাশাপাশি রহস্যময়ী ওহ বুঝলি।
– হুম।
– এইবার বল বইন সবকিছু।
– জানতে চাস
– হুম
– তাহলে শোন,,

অর্ক অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সবকিছু শোনার জন্য মহুয়া কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো…
– পরে বলবো। এখন চেয়ারম্যান সাহেবের বাড়িতে চলে কিছু দরকার আছে।

অর্ক বাধ্য হয়েই মহুয়ার সাথে গেলো। মহুয়াকে দেখে চেয়ারম্যান সাহেব খুব খুশি হন।

– আরে ডাক্তার ম্যাডাম যে,, আপনি আমাদের বাড়িতে আসবেন কখনোই ভাবিনি।
– কাকাবাবু এইভাবে বলবেন না আমি তো আপনার মেয়ের বয়সী।
– হ্যা তাই তো হবেই।
– জ্বি। কাকাবাবু একটু রিয়াকে ডেকে দেবেন।
– আচ্ছা দিচ্ছি।
– এই রহিম একবার এইদিকে এসো তো।

চেয়ারম্যান সাহেবের ডাক শুনে একজন বয়স্ক লোক এগিয়ে আসলো। বয়স ৫০-৫৫ বছর হবে।

– রহিম উনি হলেন হাসপাতালের ডাক্তার ম্যাডাম মহুয়া। আর উনি গ্রামের ওসি অর্ক। আর এ হলো আমাদের বাড়ির অনেকদিনের পুরানো মানুষ রহিম।

অর্ক আর মহুয়ার বুঝতে অসুবিধা হলো না উনি এইবাড়ির কাজের লোক। কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেব সরাসরি কাজের লোক বা চাকর কথাটা বললেন না।

– রহিম একবার রিয়া মাকে ডেকে আনো না।
– আচ্ছা সাহেব।

রহিম চলে যেতেই চেয়ারম্যান সাহেব বললেন…
– আমাদেরকে রহিম খুব ভালোবাসে তাই কখনোই কারোর সামনে ওকে কাজের লোকের পরিচয় দিই না। আমাদের পরিবারের একজন সদস্য হিসাবেই মানি।

মহুয়া মুগ্ধ‌ হলেন ওনার কথাতে। প্রকৃত মানুষ তো এটাই যে সকল ধরনের মানুষকে এক চোখে দেখে,কাউকেই অবহেলা,অবজ্ঞা করে না।

কিছুক্ষণ পর রিয়া আসলো। চোখ মুখ শুকনো,, মুখটা ফ্যাকাশে একজন মেয়ে।

– রিয়া তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।
– কি কথা?
– তোমাকে কে বা কারা আটকে রেখেছিলো তুমি জানো।
– না। ওরা আমার চোখ বেঁধে রাখতো, আর খাবার দেবার সময়ে শুধুমাত্র কেউ একজন এসে খাবার খাইয়ে দিয়ে যেতো।
– খাবার খাইয়ে দিয়ে যেত!
– হ্যা খাবার খাওয়ার পরেই আমি ঘুমিয়ে পড়তাম আর বাকি কিছু মনে নেয় আমার।
– কাকাবাবু আমি রিয়াকে কয়েকদিন আমার ট্রিটমেন্টের মাঝে রাখতে চাই।
– ঠিকাছে।(চেয়ারম্যান সাহেব)
– আর একটা আবদার বা অনুরোধ বলতে পারেন।
– কি বলো মা।
– আমি চাই এই গ্রামের প্রতিটা মেয়েই আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠুক। গ্রামে পুনরায় বিদ্যালয় চালু হোক,যেখানে মেয়েরা পড়াশোনা করবে বিনা পয়সায়, তার পাশাপাশি একটা কারিগরি শিক্ষার জন্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হোক যেখানে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজ শেখানো হবে। যাতে মেয়েরা পরর্বতী কালে কোন কিছু করতে পারে।‌
– এটা তো খুব ভালো উদ্যোগ। আমি আমার সবটা দিয়ে চেষ্টা করবো এটা করার।
– আপনাকে কিছুই করতে হবে না শুধুমাত্র আপনি পারমিশন দিন আর একটা জমির ব্যবস্থা করে দিন বাকিটা আমরা দেখে নেবো।
– আচ্ছা।

মহুয়া আর অর্ক কিছুক্ষণ থেকে মহুয়ার কোয়াটারে ফিরে আসলো।‌ফিরে এসেই মহুয়া ওর বাবাকে কল লাগায়।

– হ্যালো ড্যাড কেমন আছে?
– ভালো আছি মামনি তুমি।
– ভালোই। একটা গুড নিউজ আছে চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের পারমিশন দিয়ে দিয়েছে।
– ওয়াও। এটা তো খুব ভালো কথা।
– হুম সবটাই তোমার জন্য সম্ভব হয়েছে থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ।
– মামনি এটাই আমার কাজ। আর সবটাই তো তুমি করেছো আমি তো শুধু বলেছি।
– তুমি না বললে আমি কখনোই এইসব করতে পারতাম না। আর ড্যাড তোমাকে অনেক অনেক থ্যাংকস এই রকম একটা গ্রামে আমাকে পাঠানোর জন্য।
– তাই ।
– হুম।
– তা কি সিদ্ধান্ত নিলে গ্রামে থাকবে না শহরে সেটেল হবে।
– গ্রামেই থাকবো।
– প্রথমে যেতে চাইছিলে না আর এখন আসতে চাইছো না।
– তখন তো আসল কারনটা জানতে পারেনি এখন তো জানি আর সত্যি বলতে গ্রামটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে।
– তাই।
– হুম।

মহুয়া ফোনটা কাটতেই অর্ক জিজ্ঞাসা করলো।

– আঙ্কেল কি বললেন।
– বললো অর্ক কে নিয়ে এইখানেই সংসার পেতে ফেল।

কথাটা বলেই মহুয়া হেসে উঠলো,মহুয়ার কথা শুনে আর হাসি দেখে অর্ক বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে ফেললো।
– ফাজলামি বন্ধ কর,, যে তোর পেছনে আছে ওই ক্রিশ ওকে বিয়ে কর আমাকে নিয়ে একদম টানাটানি করবি না তোর মতো একজন মেয়ে আমার কপালে আসলে আমি সত্যি শেষ হয়ে যাবে।
– আহা গো।

বলেই আবারো হেসে উঠলো মহুয়া। অর্ক,মহুয়া, ক্রিশ, সোনিয়া আর পুস্প একে অপরের খুব ভালো বন্ধু। মেডিকেল পড়ার সময়ে ওরা আলাদা হলেও বন্ধুত্বটা একই রকম রয়ে গেছে। ক্রিল,পুস্প আর মহুয়া মেডিকেল স্টুডেন্ট, অর্ক পুলিশ আর সোনিয়া বিবাহিত। কয়েকবছর আগেই বিয়ে হয়েছে ওর।

_বইন এবার তো সবকিছু খুলে বল। এতটাও রহস্য আমার ভালো লাগছে না। (অর্ক)
– বলছি। আমি গ্রামে আসার আগে ড্যাডের উপরে প্রচুর পরিমাণে বিরক্ত হয়েছিলাম আর এখানে এসেও সেই খারাপ লাগাটা তীব্রতর হয়ে যায় কিন্তু যখন একটা মেয়ের লা***শ পাওয়া যায় তখন আমার মনের মাঝে তৈরি হয় কৌতুহল আর তুই তো ভালো ভাবেই জানিস আমার কৌতুহল কিরকম।
– সে আর বলতে, কৌতুহলের জন্য কতবার বিপদে পড়েছিস আবার কখনো অন্য কাউকে বাঁচিয়েছিলিস।
– হুম। সেদিন ড্যাড কল করলে ড্যাডকে সবকিছু জানানোর পর ড্যাড জানালো…

অতীত…

সবকিছু শুনে মহুয়ার বাবা চুপ থাকার পর বললেন…
– মহুয়া মামনি আজকে তোমাকে আমার জীবনের কিছু সত্য কথা জানাবো যেগুলি তোমার ছাড়া আর কেউই জানো না।

মহুয়া অবাক হলো খুব। কি কথা যেগুলো ওর ড্যাড সবার থেকে লুকিয়ে রেখেছেন। বাকি কথাগুলো শুনে মহুয়া চমকে উঠলো।

#চলবে…

#মন_মহুয়ার_নেশা
#তানজিলা_খাতুন_তানু

(পর্ব_৯)

– মহু মামনি তুমি জানো আমি একজন ব্যবসায়ী,, শহরের নামকরা একজন মানুষ কিন্তু এর বাইরেও আমার একটা পরিচয় আছে।
– কি পরিচয় ড্যাড!
– আমি একজন সিক্রেট অফিসার।
– হোয়াট
– অবাক হচ্ছো তো তাই না।
– হুম কিন্ত কিভাবে কি ড্যাড।

মহুয়ার বাবা মৃদু হেসে বলতে শুরু করলেন…

– কলেজে পড়ুয়া ছেলেদের কাছে কিন্তু ভালো-খারাপ দুটোই অফার আসে। আমার কাছেও এসেছিলো নানান অফার। তোমার দাদু ছিলেন একজন ব্যবসায়ী তবে আমার ভালো লাগতো না এইসব কিছু আমি চাইতাম সাধারন মানুষের জন্য কিছু করার,, অসহায় মানুষদের সঠিক বিচার দেবার, আইনজীবী, পুলিশ বা অন্যকিছু হওয়াতে তোমার দাদু আমাকে পারমিশন দেয়নি তার ইচ্ছা ছিলো তার ছেলে তার বিজনেসের হাল ধরবে অনেকদূরে নিয়ে যাবে তাই আমার ইচ্ছাটা চাপা পড়ে যায়। পড়াশোনায় মন দিই কিন্তু ইচ্ছাটা সর্বদা জাগ্রত থাকে। বাবার একজন বন্ধু ছিলেন, আরিফ আঙ্কেল উনি ছিলেন একজন সিক্রেট এজেন্ট ছিলেন। মূলত উনার জন্যই আমি এই কাজের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেছিলাম। একদিন ওনাকে আমার মনের কথাগুলো জানায় তখন উনি আমাকে সাজেস্ট করেন যে,, ” আমি ওনাদের দলের একজন সিক্রেট অফিসার হিসাবে জয়েন করি, পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যায় বাবাকে না জানিয়ে।” যেহেতু আমার ইচ্ছা ছিলো তাই না করিনি। এইভাবেই আসতে আসতে জড়িয়ে পড়লাম এই কাজের সাথে। আর এখন বর্তমানে আমি ওই সিক্রেট এজেন্টের হেড অফিসার। আঙ্কেল যাবার আগে আমার হাতে সবকিছুর দায়িত্ব দিয়ে যান।

সবকিছু শুনে মহুয়ার মুখটা হা হয়ে যায়।

– ড্যাড কি বলছো এসব আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না।
– তাই বুঝি।
– হুম। কিন্তু আমাকে এই গ্রামে পাঠানোর কারনটা কি?
– আমাদের কাছে কয়েকদিন আগে খবর আসে নারায়নপুর গ্রামে গত কয়েকমাস থেকে নারী পা**চা**র চলছে, পাশাপাশি ধ**র্ষ**ন_ খু***ন হচ্ছে। আমাদের একজন বিশ্বাসী লোক লাগতো কাজের জন্য কিন্তু গ্রামে হুট করে নতুন কেউ আসলে কিরকম একটা সবার সন্দেহ হতে পারে তাই তোমাকেই পাঠালাম। তুমি একজন ডাক্তার আর ওখানে তুমি থাকলে কেউ সন্দেহ করবে না
– বুঝলাম।
– হুম। তোমাকে কিন্তু খুব সাবধানে চলাচল করতে হবে চোখ কান খোলা রাখতে হবে বুঝেছো।
– হ্যা।

বর্তমান…

সবকিছু শুনে অর্ক একটা ঢোক গিললো। মহুয়া ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো…
– কি হলো‌ ঢোক গিলছিস কেন?
– স্যার তোর বাবা,,এতদিন না জানি নিজের অজান্তেই আঙ্কেলকে কত গা**লাগা**লি করেছি কে জানে।

মহুয়া রনচন্ডী রূপ ধরে বললো..
– তুই আমার ড্যাডকে কি বললি বল।
– আরে ক্ষেপে যাচ্ছিস কেন। আমি কি জানতাম নাকি ওটা আঙ্কেল। আঙ্কেল তো‌ সবসময় আড়ালে থেকে মুখে মাস্ক দিয়ে রাখতো তার জন্য কখনোই চিনতে পারিনি।
– তাহলে গা*লাগা*লি দিতিস কেন
– দেবো না তো কি করবো। একটুও আরাম করতে দেয়না সারাক্ষণ খাটিয়ে মারে।
– আমি ড্যাডকে বলে তোকে আরো জব্দ করার ব্যবস্থা করে দেবো দেখিস।
– না বইন এটা করিস না আমি তোর সব কথা শুনবো এবার মাফ কর আমাকে।
– হুম।
– বাকিটা শেষ কর
– হুম। পরেরদিন নিশান নিশিকে নিয়ে আসলে আমার ওই মিষ্টি মেয়েটাকে খুব ভালো‌লাগে। একটা আলাদা রকমের মায়া জন্মে যায় পরেরদিন আমার হসপিটালে জয়েনিং তবে ড্যাডের কথা শুনে চিন্তিত হয়ে পরি ড্যাড জানায় এই সপ্তাহের ভেতরেই ওদের পা*চা*র কারীরা মেয়ে পা*চা*র করবে তাই এই গ্রামের আরো কয়েকটা মেয়ে বিপদের মাঝে আছে। ওরা আরো কয়েকজন মেয়েকে কি*ডন্যা*প করবে।
পরেরদিন হসপিটালে আমাকে পৌঁছে দিয়ে নিশি ওখান থেকে চলে যায় আমার একটু অদ্ভুত লাগলো বিষয়টা নিজের মনের ভেতরেই খুঁত খুঁত করতে থাকে নিজের কৌতুহল দমাতে না পেরে হসপিটালে না গিয়ে নিশির পেছনে যায় আর সেখানে গিয়ে।

মহুয়া চুপ করে গেলো। অর্কের মনের কৌতুহল আরো তীব্রতর হচ্ছে মনে হচ্ছে কোনো বাচ্চাকে গল্প শুনাচ্ছে আর বাচ্চাটা শোনার জন্য কৌতুহল হয়ে উঠেছে।

– আরে চুপ করলি কেন বল না।
– নিশি জিসানের সাথে দেখা করলো। দুজনের কথা শুনতে না পেলেও বুঝলাম ওরা একে অপরের পরিচিত মুখ। নিশি হঠাৎ করেই আগে আগে হাঁটতে লাগলো আর পেছনে জিসান,হুট করেই জিসান নিশির মুখে একটা রুমাল চেপে ধরলো আর নিশি জ্ঞান হারালো। সবকিছুই দেখে আমি অবাক হয়ে উঠেছি কিন্তু আমার যে কিছুই করার নেয়। একবার আটকাতে গিয়েও আটকালাম না। জানি এতে কোন লাভ হবে না বেকার চেষ্টা উল্টে আমিই ফেঁসে যাবো।
তাই ওদের ফলো করতে লাগলাম।
– তারপর।
– জিসান নিশিকে তুলে নিয়ে চেয়ারম্যান সাহেবের বাংলো বাড়িতে আসেন। গ্রামের শেষ প্রান্তের এই বাড়িটাতে কেউ থাকে না। আর ওইদিকে মানুষের আনাগোনাও খুব কম। ওদের গন্তব্য স্থল জানার পরেই আমি অপেক্ষা না করে ড্যাডকে সবটা জানায়। তারপর..

অতীত…

– ড্যাড নিশি বলে একটা মেয়েকে একটা লোক কিডন্যাপ করে গ্রামের শেষে একটা বাংলো বাড়িতে রেখেছে।
– হোয়াট।
– হ্যা ড্যাড।
– তুমি কোথায়।
– আমি ওইখানেই আছি কাছাকাছি।
– তুমি আর ওখানে থেকো না ওটা তোমার জন্য নিরাপদ হবে না তুমি ওখান থেকে হসপিটালে চলে যাও বাকিটা আমি দেখছি।

আমি কথা মতোই হসপিটালে চলে যায়।‌ বিকালে হসপিটাল শেষ করার পর ড্যাডকে খবর জানতে কল করলে ড্যাড জানালো…
– তোমাকে একটা বড়ো গেম খেলতে‌ হবে।
– কি গেম ড্যাড।

ড্যাড সব প্ল্যান আমাকে বুঝিয়ে বললো। আমি সবটাই শুনলাম চমকে উঠলাম। ড্যাড কতটা মাথায় বুদ্ধি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় সেটা আন্দাজ করলেই আমি চমকে উঠেছি বার বার।

বর্তমান..

– স্যারের মাথাতে অনেক বুদ্ধি আমি জানি পরেরগুলো বল।

-ড্যাডের কথা মতোই সবকিছু হতে থাকে। পরেরদিন সকালে নিশির লা***শ‌ পাওয়া,, সেই মুহূর্তে তোর সেখানে আসা সবটাই আমাদের প্ল্যান। তারপরে তোর কাছ থেকে পো*স্ট*ম*র্টে*মের দায়িত্ব নেওয়া সবটাই প্ল্যান।
– কিন্তু তোর কি*ডন্যা*প হওয়ার বিষয়টা কিভাবে আন্দাজ করলি।
– ওদের মেয়ের দরকার ছিলো। আর গ্রামে মেয়ের সংখ্যা কমে গিয়েছিলো,,আমিই ছিলাম এখনাএর মধ্যে শিক্ষিত ওদের চাল ধরে ফেলতে পারি সবটাই আন্দাজ করতে পেরে আমাকে সরিয়ে ফেলার প্ল্যান করে ওরা। জিসানকে দিয়ে আমার সাথে বন্ধুত্ব তারপরে কিডন্যাপ আর বাকিটা তো সবার জানা।
– মহু আমার কি মনে হয় জানিস তুই ডাক্তার না হয়ে একজন সিক্রেট অফিসার হতে পারতিস আর তোরই বা কি দোষ দিই বল তোর ড্যাড যা চতুর তার মেয়ে হয়ে তুই তো হবিই।

মহুয়া কিছু না বলে মুচকি হাসলো। দরজায় টোকা পড়ার শব্দ শুনে ভাবনার জগত থেকে বের হয়ে আসলো মহুয়া। ঘটনাগুলো আজ থেকে ৩ বছর আগের ঘটনা। হ্যা ৩ টে বছর কেটে গেছে অনেককিছুই বদলে গেছে। মহুয়া আগের তুলনায় আরো একটু সুন্দরী হয়ে উঠেছে, চুলগুলো আগের থেকে অনেকটাই বড়ো হয়ে উঠেছে, গ্রাম্য পরিবেশের হাওয়াতে মহুয়ার সৌন্দর্য আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। মহুয়া নারায়নপুর গ্রামেই থেকে গেছে ডাক্তার হয়ে। গ্রামের অনেক উন্নতি ঘটেছে,মেয়েরা স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে,গ্রামে আর কোন অনৈতিক কাজ হয়নি। চেয়ারম্যান সাহেব নিজের পদত্যাগ করেছেন। গ্রামে এখন আর কোনো চেয়ারম্যান সাহেব নেয়, পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে একজন পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছে,তিনিই সামলে উঠছেন এই গ্রামের সব দায়িত্ব। গ্রামের মানুষের আর কোনো কিছুতেই অভাব নেয়।

আবারো দরজায় টোকা পড়লো।‌মহুয়া ধীর পায়ে এগিয়ে এসে দরজা খুলে সামনে তাকিয়ে চমকে উঠলো।

– তুমি।

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here