মন_মহুয়ার_নেশা,১৪,১৫

0
439

#মন_মহুয়ার_নেশা,১৪,১৫
#তানজিলা_খাতুন_তানু

(পর্ব_১৪)

মহুয়ার মাথার ভেতরে প্রশ্নগুলো আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। সবগুলো উত্তর মিলতে গিয়েও আরো জটিল আকার ধারণ করছে। মহুয়ার মন- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা মনে হয় শেষ হয়ে যাবে এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে পেতে।

নিশান মহুয়াকে চিন্তামগ্ন রেখেই ঘুমিয়ে পড়েছে। মহুয়ার আর নিশানকে ডাকতে ইচ্ছা করলো না তাই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘরের বাইরে বের হয়ে গেলো। রান্নাঘরে সেই মেয়েটি রান্না করছে মহুয়া ধীরপায়ে এগিয়ে গিয়ে ওর সামনে দাঁড়ালো।

মহুয়াকে দাঁড়াতে দেখে বললো…
– কিছু লাগবে ম্যাডাম।
– না কিছুই লাগবে না একা একা বোর হচ্ছিলাম তাই ভাবলাম তোমার সাথে কিছু কথা বলি।
– জ্বি বলুন।
– তোমার নাম কী?
– ফুল।
– বাহ্ চমৎকার নাম তো। তা আমার নাম জানো?
– না।
– মহুয়া আর তোমার নাম ফুল। দুজনের নাম মিলিয়ে মহুয়া ফুল।

ফুল নামটা মেয়েটা মিষ্টি করে হাসলো। মহুয়া ফুলের হাসির দিকে তাকিয়ে থাকলো।

– ফুল তোমার বয়স কত হবে।
– ২১ বছর।
– পড়াশোনা করেছো।
– হ্যা দাদাভাই আমাকে গ্রাজুয়েট করিয়েছে।
– দাদাভাই মানে নিশান।
– হুম।
– বাড়িতে কি কেউ থাকে না এত ফাকা কেন কাউকেই তো দেখলাম না।
– বাড়িতে শুধু দাদাভাই থাকে।আর বাকিরা সবাই আহমেদ ভিলাতে থাকেই।
– ওহ, তোমার বাবা মা কোথায়?
– বাবার খবর জানি না তবে মা আমি ছোট থাকাতেই মা***রা যায় । মাও আহমেদ ভিলাতে কাজ করতো মা চলে যাবার পর আমিও ওইখানেই থাকতাম কয়েকবছর হয়েছে এইবাড়িতে থাকি।
– তুমি একাই থাকো এখানে?
– না আরো ৩ জন থাকতাম এইখানে,, আমি তো আসতেই চাইনি কিন্তু দাদাভাই জোর করে নিয়ে এসেছে দাদাভাইয়ের মতে ওই বাড়িতে থাকলে আমাকে কেউ পড়াশোনা করাবে না।
– ওহ বাকিরা সবাই কোথায়।
– ছুটিতে আছে। তুমি আসার আগেই ওদেরকে দাদাভাই ছুটি দিয়ে দিয়েছে, আসলে দাদাভাই চাইনা তুমি এখানে আছো বিষয়টা কেউ জানুক আর ওনারা থাকলে ওই বাড়িতে খবরটা ঠিক চলে যাবে।
– তাই নাকি ইন্টারেস্টিং তো।
– আর ইন্টারেস্টিং,, দাদাভাই তো রেগে যায় ওদের কান্ডে। এমনিতেই বড়ো ম্যাডামের খুব চিন্তা যদি তার ছেলে বিকিয়ে যায় আর উনি তো আমাকে আর দাদাভাইকে নিয়ে রীতিমত সন্দেহ করেন। কিন্তু উনি বোঝেন না দাদাভাই আমাকে সত্যি বোনের নজরে দেখেন।
– সবার মানসিকতা এক হয় না ফুল। আর সত্যি বলতে কি জানো আমাদের সমাজটা বড্ড খারাপ।বাদ দাও কি করবে আর।
– হুম।
– তা তোমার দাদাভাই একা একা এইখানে থাকেন কেন?
– ওই বাড়িতে তো সকলে মিলে একসাথে থাকে তাই দাদাভাইয়ের কাজ করতে বড্ড অসুবিধা হয় তাই এই বাড়িতেই থাকে বেশিরভাগ তবে ওইখানেও যেতে হয় নিয়ম মেনে।
– ওই বাড়িতে কে কে আছে?
– অনেক সবাই।

মহুয়া ফুলের সাথে ফ্রি হয়ে উঠেছে। মহুয়া খুব একটা মিশুকে স্বভাবের না হলেও সাধারন মেয়েগুলোর সাথে সহজেই ফ্রি হয়ে যায়।

অনেকক্ষন আড্ডা দেবার পর মহুয়াকে রান্নাঘর থেকে একপ্রকার জোর করেই ঠেলে বের করে দেয় ফুল। ফুল এবার রান্না করবে তাই।

মহুয়া কি করবে খুঁজে না পেয়ে টিভির সামনে গিয়ে বসলো। একটার পর একটা চ্যানেল বদলাচ্ছে একটা চ্যানেলে মহুয়ার দৃষ্টি আটকে গেলো চোখের কোনো পানি জমা হতে থাকলো আনমনেই চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়তে লাগলো। ফুল মহুয়া কোথায় গেলো দেখতে গিয়ে টিভির সামনে বসে মহুয়াকে কাঁদতে দেখে চমকে উঠলো।

– দিভাই তোমার কি হয়েছে বলো।

মহুয়া কিছু বলছে না,, ফুল একটু ঘাবড়ে যায়। উপায় না পেয়ে তাড়াতাড়ি করে নিশানকে ডাকতে গেলো।

– দাদাভাই তাড়াতাড়ি উঠো।
– বিরক্ত করিস না।
– দাদাভাই মহুয়া দিদি টিভির সামনে বসে কিছু দেখে কান্নাকাটি করছে প্রচুর পরিমাণে।

নিশান ধরফরিয়ে উঠে বসলো অপেক্ষা না করে তাড়াতাড়ি বসার ঘরে গিয়ে দেখলো যেটা ভয় করছিলো সেটাই হলো। টিভিটা বন্ধ করে দিয়ে মহুয়ার কাছে গেলো।

– এই মহু

মহুয়া কিছু না বলেই নিশানের বুকে লুটিয়ে পড়লো। নিশান মহুয়াকে বুকে আগলে নিয়ে নিজের ঘরের বিছানায় শুইয়ে দিলো।।

১ ঘন্টা পর…

মহুয়ার জ্ঞান ফিরে আসেনি তাই নিশান উপায় না পেয়ে ডাক্তারকে ডেকে পাঠিয়েছে।

– ডক্টর মহুয়ার কি হয়েছে।
– উনি কি কয়েকদিন যাবত থেকে ডিপ্রেশড ছিলেন।
– না কেন?
– ওনাকে দেখে তো সেটাই মনে হচ্ছে,, অনেকদিন থেকেই উনি কোনো কারনে নিয়মিত ভাবে ঘুমের ওষুধ নিচ্ছেন।
– বিষয়টা আমি ঠিক বলতে পারছি না তবে মহুয়া নিজেও একজন ডক্টর।
– হোয়াট।
– কী হলো ডক্টর।
– যেকোন মেডিসিন অতিরিক্ত পরিমানে কোনো কারন ছাড়াই নিলে মেডিসিনের অনেক সাইড এফেক্ট দেখা যায়। ঘুমের ওষুধ অতিরিক্ত পরিমানে নেবার কারনে ওনার স্নায়ুগুলো দূর্বল হয়ে পড়েছিলো ওনার ভাগ্য ভালো কোনো বড়ো কিছু হয়নি, আজকে ওনার উপরে প্রচন্ড পরিমানে মানসিক চাপ পড়েছিলো ওনার ব্রে__ন হ্যা__মারেজ হতে পারতো।

ডক্টর ওষুধ লিখে দিয়ে চলে যায়। নিশান মহুয়ার পাশে বসে নিজের হাতের মাঝে মহুয়ার হাতগুলো নিয়ে একটা কিস করলো তারপরে বললো…
– আমি চাইলে তোমার অতীতের দিনগুলো ঠিক করতে পারবো না। তোমাকে আর কিছুই ফিরিয়ে দিতে পারবো না কিন্তু তোমার ভবিষ্যতটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেবো ইনশাআল্লাহ। তোমার বিপদে সবসময় ঢাল হয়ে দাঁড়াবো আগলে রাখবো সবসময় কথা দিলাম।

নতুন একটা দিন নতুন একটা অধ্যায়ের সূচনা। মহুয়ার জ্ঞান ফিরেছে কিছুক্ষন আগেই,পাশে হাতের উপরে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকা নিশানকে দেখে মহুয়ার ভ্রু কুঁচকে গেলো। কালকে রাতের কথা মনে পড়তেই আবারো অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো। মুখে পানি পড়াতে নিশানের ঘুম ভেঙে যায় সামনে তাকিয়ে মহুয়া কাঁদছে।

নিশান তড়িঘড়ি সোজা হয়ে বসে মহুয়াকে থামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।

– মহু সোনা আমার কান্না করো না।

মহুয়া নিশানকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। নিলানের বুকটা ফেটে যাচ্ছে মহুয়ার কান্নার শব্দে।

– কেন আমার সাথেই এমন হলো বলতে পারো আমি কি করেছি কেন হলো আমার সাথে।
– মহু শান্ত হও। তুমি ভেঙে পড়লে চলবে না তোমাকে শক্ত থাকতে হবে।
– আমি কিভাবে শক্ত থাকবো নিশান। আমার তো শক্ত থাকার জন্য লাঠিগুলোই আর নেয়।
– আমি তো আছি।

মহুয়া নিশানের দিকে তাকালো। নিশান মহুয়াকে আশ্বাস দিয়ে বলল…
– আমি তো আছি মহু। আমিই তোমার লাঠি হবো। তোমাকে যে কান্নাতে মানায় না , মহুয়া তো শক্ত প্রকৃতির মেয়ে চাইলেও যে মহুয়াকে দমানো যায় না তাহলে কেন আজকে ভেঙে পড়ছো।
– আমার দিকটা একবার বোঝো তুমি।
– বুঝি আমি। আচ্ছা আমাকে বলো তো তুমি কান্না করলেই কি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
– জানি না আমি আমার ভীষন কষ্ট হচ্ছে আমি ভাবতে পারছি না কিছুই। শয়তান গুলো আমাকে অনাথ করে দিলো…

বলেই আবারো ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো মহুয়া। নিশান মহুয়াকে নিজের বুকের সাথে আগলে রাখলো। পরম আবেশে মহুয়ার কান্নার পরিমান আরো তীব্রতর হয়ে উঠলো। নিশান যে তার মন মহুয়ার কান্না সহ্য করতে পারছে না সেটা কি মহুয়া বুঝতে পারছে না,,যদি বুঝতো তাহলে কি কান্না করতে পারতো?

#চলবে…

#মন_মহুয়ার_নেশা
#তানজিলা_খাতুন_তানু

(পর্ব_১৫)

মহুয়া নিশানের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো…
– তুমি সবটা আগে থেকে জানতে তাই তো।

নিশান মাথা নিচু করে নিলো। মহুয়া আবারো প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো নিশানের দিকে।

– নিশান মহুয়া শান্ত হয়ে নিশানের দিকেচুপ করে থেকো না এইভাবে চুপ করে থাকলে আমি কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর পাবো না। সবটা বলো আমাকে কে আমার এত বড়ো ক্ষতি করলো আমি জানতে চাই।

নিশান মহুয়ার দিকে কিছুক্ষন চুপচাপ তাকিয়ে দেখে বললো…
– কি জানতে চাও বলো।
– সবটা। আমাকে এখানে নিয়ে আসার দিন থেকে ঠিক কি কি হয়েছে সবটা জানতে চাই আমি।
– ওকে।

নিশান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে শুরু করলো…
– তুমি আমাকে সরাসরি রিজেক্ট করার পর আমার তোমার উপরে একটা রাগ হয়েছিলো তবে তোমার ভালোর কথা ভেবে সেইদিন চুপচাপ চলে এসেছিলাম। চেষ্টা করেও তোমাকে ভুলে থাকতে পারিনি যখন জানলাম তুমি অন্য কাউকে বিয়ে করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছো তখন রাগ হয় খুব তাই সেইদিন তোমাকে কিডন্যাপ করি। তুমি সেইদিন তুমি অনেকক্ষন সেন্সলেস হয়ে ছিলে। ক্লোরোফর্মের পরিমানটা বেশি হওয়ার কারনে। আমি কখনোই ভাবতে পারিনি এই কয়েক ঘন্টার ভেতরে এইভাবে সবটা এলোমেলো হয়ে যাবে।

নিশান চুপ করে গেলো কথাটা বলেই।

– বলো‌ নিশান।

– তোমাকে সেন্সলেস অবস্থাতে রেখেই আমাকে বেরিয়ে যেতে হয় আমার কাছে খবর আসে তোমাদের বাড়িতে আগুন লেগে গেছে। আমি খবর পাওয়া মাত্রই ওইখানে উপস্থিত হয় কিন্তু ততক্ষনে সব শেষ। দমকল দিয়ে আগুন নেভানোর পর ওইখানে ৩ টে লা**শ পাওয়া যায়। সকলের আন্দাজ ওই লা”””শ গুলো তোমার আর তোমার বাবা মায়ের।
– কিন্তু আমি তো এইখানে।
– হুম ,,হয়তো তোমাদের বাড়ির কোনো মেড ছিলো,,আমি আর বিষয়টা নিয়ে বেশি জল ঘোলা করতে চাইনি কারন এই বিষয়টা নিয়ে ঘাঁটতে গেলে তুমি সেফ আছ এই কথাটা বের হয়ে আসতো আর সেটা তোমার জন্য ঠিক হবে না।
– কিন্তু কে করলো এইসব।
– নারায়নপুর গ্রামের পাচারকারী লিডার।

মহুয়া চমকে উঠলো । তিনবছর আগের ঘটনার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে মহুয়ার।

– কিভাবে কী?
– আবারো সেই পাচারকারী দলের সন্ধান পাওয়া গেছে তারা আবারো নতুন করে বেআইনি কাজ করতে শুরু করেছে। স্যার অর্থাৎ তোমার বাবা লিডারের সম্পর্কে কিছু তথ্য পেয়েছিলো হয়তো আর কয়েকদিন পর সবটা জেনেও যেতেন তাই …

মহুয়ার মনে আবারো অনেক কিছু প্রশ্নের দানা বাঁধতে শুরু করলো।
– আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দাও তো নিশান।
– আমি জানি তোমার মনে প্রশ্ন জাগছে আমি কে?
– হুম।
– তোমার বাবার মতো আমিও একজন সিক্রেট অফিসার।

মহুয়া চমকে উঠলো। নিশান মহুয়ার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো…
– আমি একজন আন্ডারকভার সিআইডি অফিসার। নারায়নপুর গ্রামের ঘটনাটা জানার পর বিনা নোটিশেই ওই গ্রামে গিয়ে বিষয়টার তদন্ত শুরু করি। নিশির বাবা আমার এক ফ্রেন্ডের বাবার বন্ধু ছিলো সেই সূত্রেই আমি ওদের বাড়িতে থাকতে শুরু করি।

– তাহলে হুট করে গায়েব হয়ে গিয়েছিলে কেন?
– বিনা নোটিশে আমি গিয়েছিলাম ওই গ্রামে। তোমার বাবা আমাকে দেখলে ঠিক চিনতে পারতেন। আর আমার কাজের জন্য আমার আসল পরিচয় সকলের থেকে লুকিয়ে রাখাটা জরুরি ছিলো। সেইদিন সবকিছুর মাঝে একটা জিনিস সত্য ছিলো,
– কী?
– তোমার প্রতি আমার ভালবাসা। হ্যা মহুয়া আমি তোমাকে ভালোবাসতাম আর এখনো ভালোবাসি।
– কিন্তু আমি তো তোমাকে ভালোবাসি না।

নিশান চমকে উঠলো মহুয়ার কথা শুনে।
– এসব কি বলছো তুমি।
– যেটা বলছি সত্যি বলছি। আমি আজকেই এইখান থেকে চলে যাবো,,আমার বাবা মায়ের খু”নী”দের শাস্তি দেবো আমি নিজের হাতে।
– মহু পাগলামী করো না। তুমি চাইলেও এইসব একা কিছুই করতে পারবে না। তার থেকে ভালো তুমি আমার কাছে থাকো,আমরা একসাথে অন্যায়কারীকে শাস্তি দেবো।
– আমি কোনো অপরাধীর সাথে একসাথে এক বাড়িতে থাকবো না।
– অপরাধী মানে?
– আমার বাবা মায়ের মৃত্যুর জন্য তারা যতটা দায়ী ঠিক ততটাই দায়ি তুমি নিশান আহমেদ। তাই আমি কখনোই তোমাকে ক্ষমা করবো না।

মহুয়া কথাগুলো বলেই ওয়াশরুমে চলে যায়। শাওয়ার চালিয়ে কান্নাতে ভেঙ্গে পড়লো।

– কেন নিশান আমাকে এইখানে এনেছিলে তুমি। তুমি এইখানে না আনলে তো আমি আমার ড্যাড মমের কাছেই থাকতে পারতাম। আমি তো অনাথ হতাম না তাহলে,, তোমার জন্য আমি অনাথ হয়ে গেছি তোমাকে কখনোই আমি ক্ষমা করবো না।

অন্যদিকে…

নিশান আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো…
– তোমাকে যে আসল সত্য কথাটা কখনোই বলতে পারবো না। বিপদ বুঝেই যে আমি তোমাকে সরিয়ে ফেলেছি সেটা জানলে তুমি কখনোই আমার মুখ দেখবে না। আমি তোমাকে যে কোনোভাবেই হারাতে পারবো না,,ওদের পরর্বতী টার্গেট তুমি,তোমাকে তো আমার আগলে রাখতেই হবে।

মহুয়া চলে যাবে বলে জোর করলেও নিশান যেতে দেয়নি।

– কেন আমাকে আটকে রাখছো,আমাকে প্লিজ যেতে দাও।
– মহু বাইরে যাওয়াটা তোমার জন্য সেভ হবে না।
– মে””রে ফেলবে তো আমাকে? তাহলে ফেলুক আমি ম**রতেই চাই।

কথাটা বলতে দেরি কিন্তু মহুয়ার গালে থাপ্পর পড়তে দেরি হলো না। নিশান রাগে ফুঁসতে শুরু করেছে রীতিমত,মহুয়া নিজের গালে একটা হাত দিয়ে ঢোক গিললো।

– ভালো কথাতে তোকে বলছি তোর বড্ড রস হচ্ছে। আমাকে এতটাও ভালো ভাবিস না তুই যে যা বলবি সব শুনবো। এটা আমার রাজত্ব আমি যেটা বলবো সেটাই হবে আর তুই এইখানেই থাকবি আমার কাছে। আর ম*রা*র কথা বললে আমি নিজেই তোকে মে””রে ফেলবো।

নিশান সোফাতে লাত্তি মেরে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। মহুয়া নিশানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বললো…
– সব শোধ তুলবো দেখে নিস।

আমাদের মানুষদের মধ্যে সবথেকে খারাপ দিক হলো,ভুল বোঝা। মহুয়াও নিশানকে ভুলে বুঝেছে কি হবে এর পরিনাম।

পরেরদিন….

নিশান এখনো ফিরে আসেনি মহুয়া নিশানের অপেক্ষা করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতে পারেনি। নিশান বাড়ি ফিরে দেখলো সোফায় বসে মহুয়া ঘুমাচ্ছে। মহুয়ার সামনে বসে নিশান বললো…
– কেন বোঝো না মহু তুমি আমার জন্য ঠিক কতটা দামী। আমি তোমাকে যে এখনো পুরোপুরি সত্য কথাটা বলতে পারবো না আমি যে নিজেই এখনো শিওর নয় এইসবের পেছনে কে আছে।যেদিন জানবো সেইদিন নিজের হাতে তাকে শাস্তি দেবো সে যেই হোক না কেন কথা দিলাম তোমাকে।

মহুয়ার কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে মহুয়া নিজের কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। নিশান ওয়াশরুমে ঢুকে যেতেই মহুয়া উঠে বসলো। নিশানের উপস্থিতি টের পেয়েই মহুয়ার ঘুম ভেঙে গিয়েছিলো কিন্তু তবুও ঘুমের ভান করে ছিলো নিশান কি করে তা দেখার জন্য,, নিশানের কথাগুলো শুনে মহুয়ার মনে আবারো প্রশ্নের দানা বাঁধতে শুরু করলো…
– এখনো পুরোপুরি সত্য মানে কি? এখনো কি সত্যি কথা আমার জানতে বাকি আছে,,আর নিশান কাকেই বা সন্দেহ করছে এই সবকিছুর পেছনে?

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here