#মন_মহুয়ার_নেশা,৩০,৩১
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_৩০)
আমাদের জীবনটা নদীর স্রোতের মতো, যেইদিকে স্রোত বয়ে যায় সেইদিকেই চলে আমাদের জীবন।
প্রতীক নিজের ক”র্মফলের শা”স্তি নিজেই নিজেকে দিয়েছে। মিতালীর সাথে দেখা করার রাতেই প্রতীক সু’ইসা’ইড করার চেষ্টা করে,, টানা ২ দিন মৃ”ত্যুর সাথে ল”ড়াই করে পর”কা’লে পাড়ি দেয় প্রতীক।
শেষে মুহূর্তেও মিতালীর সাথে একবার দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও মিতালী প্রতীকের মুখোমুখি হয়নি না রাগের কারনে নয় ভালোবাসার মানুষটিকে মৃ”ত্যু শ”ষ্যায় দেখতে পারবে না বলে।
প্রতীককে হারিয়ে মিতালী পাথরের ন্যায় হয়ে গেছে হাসতে ভুলে গেছে। আহমেদ ভিলা টা অন্যরকম হয়ে গেছে,যেন পুরো ম”রা’র বাড়ি।
মহুয়ার ওহ শরীরটা ভালো যাচ্ছে না কয়েকদিন যাবত। নিশান ল্যাপটপে কাজ করছিলো মহুয়া ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলো…
– কি করছো।
– প্রতীকদার কে”সটা নিয়ে দেখছি।
– কি থেকে কি হয়ে গেলো বলো,দিদিভাইয়ের জীবনটা ছাড়খার হয়ে গেলো পুরো।
– তবুও তো আসল অ’প’রা’ধীকে ধরতে পারলাম না।
( তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে নিশান কথাটা বললো।)
– আমি তো তোমাকে আগেই বলেছিলাম বাদ দাও এইসব কিছু।
– বাদ দিয়ে দিয়েই আমাদের সমাজের আজকে এই ক’রু’ন পরিনতি। অ’ন্যায় অবিচা”র বেড়েই চলেছে একের পর এক।
– হুম সবকিছুই মানলাম কিন্তু দিদিভাইয়ের অবস্থা আমার আর সহ্য হয় না। দেখলেই চোখে পানি জমা হয়।
– কষ্ট পেয়ো না নিয়তির কাছে বরাবরই আমাদের হার মানতে হয়।।
– হুম।
মহুয়া দীর্ঘশ্বাস ফেললো নিশানের কথা শুনে। ভা’গ্যে’র ক’রু’ন প’রিহাস কাকে কখন কি ভাবে কোন পরিস্থিতিতে ফেলে দেয় কেউ জানে না।
নিশি মেডিকেল কলেজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। অর্কের সাথে খুব একটা ভালো কথা হয়নি। অর্ক দোটানা দোটানা করে নিশিকে কল লাগালো।
– হ্যালো।
– হ্যা বলুন।
– আমাকে একবারো কল করোনি কেন?
– কলেজ নিয়ে প্রচুর ব্যস্ত আছি।
– ভালো।
– হ্যা বলুন তারপরে।
– তোমাকে একটা কথা বলবো ভাবছিলাম।
– কি।
– শুনবে।
– হ্যা বলুন।
– কালকে একবার আমার সাথে দেখা করতে পারবে।
– কালকে।
– প্লিজ।
– আচ্ছা বিকালে কলেজ শেষ করে আপনার সাথে দেখা করবো ঠিকাছে।
– ওকে,থ্যাঙ্ক ইউ।
সেইদিনের মতো এইখানেই সবকিছু শে'”ষ হয়ে যায়।
পরেরদিন সকালে নিত্যদিনের মতো সকলেই ব্যস্ত হয়ে পড়লো। মহুয়া হাসপাতালে কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, নিশান নিজের অফিস নিয়ে।
মহুয়া হাসপাতালে রোগী দেখছিলো,, একজন এসে বললো…
– ম্যাম আপনার সাথে একজন দেখা করতে চাইছে।
– কে?
– সাদিফ নাম বললো।
– আচ্ছা পাঠিয়ে দিন।
সাদিফ অর্থাৎ ফুলকে প্রোপজাল দিয়েছিলো সেই ছেলেটা।
– আসসালামু আলাইকুম।
– ওয়া আলাইকুমুস সালাম তুমি এইখানে?
– আপনাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম কিন্তু পাইনি।
– হ্যা আমরা আমাদের বাড়িতে আছি এখন। তুমি কেন খুঁজছিলে।
– আসলে আমি ফুলকে বিয়ে করতে চাই।
– সেটা তো আগেও বলেছো। বাড়িতে জানিয়েছিলে?
– হ্যা।
– কি বললেন
– মা না বলেছে,,মা চাই না আমি একজন অনাথ মেয়েকে বিয়ে করি।
মহুয়া তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো। জানতো এইরকমই কিছু একটা হবে।
– আন্টির অমতে গিয়ে না করলে ভালো হবে আমার মনে হয়।
– কিন্তু আমি যে ফুলকে ভালোবাসি।
– সবটাই বুঝেছি,, একদিন আন্টিকে নিয়ে আমার কাছে আসো চেকাপ ওহ করিয়ে দেবো পাশাপাশি ওনার সাথে কথা বলে দেখবো।
– আচ্ছা।
সাদিফ চলে যায়।
বিকালে…
নিশি কলেজ শেষ করে অর্কের কথামতো জায়গাতে চলে যায়।
– বলুন।
– কেমন আছো।
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
-আন্টি কেমন আছেন?
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
– আসলে নিশি আমি তোমাকে অনেকদিন থেকে একটা কথা বলবো ভাবি,,
– হুম বলুন।
– ভালোবাসি।
অর্কের সহজ স্বীকারোক্তি শুনে নিশি মৃদু হাসলো। অর্কের এই সহজ সরল স্বীকারোক্তির কারনেই যে অর্ককে এতটা ভালোবাসে।
– আমি ভালোবাসি না।
অর্কের মুখটা কালো হয়ে গেলো নিশির কথা শুনে।
– ওকে সরি।
অর্ক চলে যেতে গেলেই নিশি অর্কের হাত ধরে টেনে প ভালোবাসলে জোর করার সাহস থাকতে হয় জানেন না।
– জোর করার জন্য অধিকার লাগে।
– আমার উপরে তো আপনার অধিকার আছে, আর এখন থেকে সেটা ভালো করে পালন করবেন ঠিকাছে।
– আচ্ছা।
অর্ক নিশিকে নিজের বুকের মাঝে আগলে নিলো। পূর্নতা পেলো আরো একটা সুন্দর ভালোবাসার সম্পর্ক।
পরেরদিন, সাদিফ ওর মাকে নিয়ে মহুয়ার কথামতো নিয়ে আসলো। মহুয়া ওনার চেকাপ করে বললো…
– আন্টি আপনার তো প্রেশার হাই। প্রাপ্তবয়স্ক একটা ছেলে থাকতে আপনি এখনো কেন এই সংসারের দায়িত্ব নেবেন বলুন।
– মানে তোমার কথা কিছু বুঝলাম না।
– ছেলের বিয়ে দেবেন না।
– দিতে তো চাই কিন্তু করতে চাইছে না। একটা ভালো মেয়ে দ্যাখো না।
– মেয়ে তো আপনার ছেলে দেখেই রেখেছে।
সাদিফের মায়ের মুখটা গম্ভীর হয়ে গেলো। বিরক্ত কন্ঠে বলে উঠলেন…
– ওই মেয়েকে আমি কখনোই আমার বাড়ির বউ করবো না। চাল চুলো নেয়।
– সাদিফ তুমি একটু বাইরে যাবে।
– আমি।
– হুম।
– ওকে।
সাদিফ বাইরে চলে যেতেই মহুয়া বললো…
– আন্টি আপনি আমার পরিচয় জানেন।
– না।
– আমিও একজন অ’না’থ।
সাদিফের মা অবাক হলো খুব। মহুয়া মৃদু হেসে বললো…
– অবাক হচ্ছেন তাই না। ভাগ্য কখন কাকে কোন জায়গায় দাড় করায় সেটা কেউ জানে না। আমিও অনাথ আর ফুল ওহ। তবুও কোথায় পার্থক্য জানেন,
আমি ধনী পরিবারের মেয়ে আর ফুল গরীব পরিবারের মেয়ে তাই আপনি ওকে মেনে নিতে চাইছেন না তাই না।
– তুমি এইসব কিছু জানলে কিভাবে?
– ফুল যে বাড়িতে থাকে সেই বাড়ির পুত্রবধূ আমি। আর আপনার ছেলের মালিকের বউ আমি।
সাদিফের মা অবাকের পর অবাক হচ্ছে।
– আমরা চাইলেই আরো ভালো পরিবারে আমাদের ফুলের বিয়ে দিতে পারবো কিন্তু আপনার ছেলেই আমার কাছে ফুলকে ভালোবাসার কথা বলেন,আমি জানতাম আপনারা মানবেন না তাই আপনাকে জানাতে বলেছিলাম আর সত্যি তাই হলো।
– তাহলে তোমরা ভালো জায়গাতেই বিয়ে দাও আমার ছেলের সাথে আমি কোনোরকম সম্পর্ক করবো না।।
– এটাই তাহলে আপনার শেষ সিদ্ধান্ত।
– হ্যা।
– আচ্ছা। তবে আপনাকে একটা বিষয় জানিয়ে রাখি , ফুল শিক্ষিত,সুন্দরী আহমেদ ভিলার পরিবারের সাথে যুক্ত তাই ওর বিয়ে খুব ভালো ছেলের সাথেই হবে। আপনার নেমন্তন্ন রইলো এখন থেকেই।
সাদিফের মা রেগে চলে যায় ওখান থেকে। সাদিফের মা সাদিফের উপরে রেগে যায়। মহুয়া তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো সবকিছু দেখে।
মহুয়া বাড়ি ফিরে নিশানের সাথে কথা বলতে শুরু করলো।।
– আমার দরকারি কিছু কথা ছিলো তোমার সাথে।
– হ্যা বলো।
– ফুলের জন্য ছেলে খোঁজো আমি ওর বিয়ে দেবো।
– ফুলের বিয়ে।।
– হ্যা।
– কিন্তু কেন।
মহুয়া নিশানকে সবকিছু বললো। নিশান সবটা শুনে অবাক হলো।
– এতকিছু হয়ে গেলো আর আমি কিছু জানলাম না।
– হুম। আমাদের সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা প্রতিনিয়ত নিজেদের রাগ জেদটাকেই গুরুত্ব দেয়। অনাথ হলেও একটা মেয়ে একটা মানুষ সেটা আমরা ভুলে যায় বারে বারে।
– মন খারাপ করো না।সবাই কি এক হয়।
– হুম।
– ফুল এখন পড়াশোনা করতে চাইছে পড়াশোনা করুক, ওহ যখন নিজে চাইবে তখন আমরা নিজে থেকে ওর বিয়ে দেবো।
মহুয়া আর নিশান সিদ্ধান্ত নিলো, ফুলের পড়াশোনা শেষ হলেই ওর বিয়ে দেবে। ফুল পড়াশোনা করুক প্রতিষ্ঠিত হোক তারপরে বিয়ে করবে নিজের যোগ্যতায় নিজের পরিচয়ে।
#চলবে…
সকলের গঠন মূলক মন্তব্য চাই।
ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
হ্যাপি রিডিং ?
#মন_মহুয়ার_নেশা
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_৩১)
দিদিভাই তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
– হ্যা বলো।
– আসলে…
নিশি আমতা আমতা করতে লাগলো,, মহুয়া ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো…
– আরে বলবে তো।
– আমি…
– বলো।
– আমি তোমার বন্ধুকে ভালোবাসি।
মহুয়া মৃদু হেসে নিশির দিকে তাকালো। নিশিকে আর অর্ককে দেখে আগেই বুঝেছিলো,ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে। তবুও মজা নেবার জন্য মহুয়া বললো…
– আমার বন্ধু মানে কে?
– জানো না বুঝি
-না কে ক্রিশ।
নিশি মুখটা কালো করে ফেললো।
– দূর তোমাকে কিছু শুনতে হবে না আমি ফোন রাখছি বাই।
নিশি ফোনটা কেটে দিলো,,মহুয়া হাসতে লাগলো হা হা করে।
নিশান মহুয়াকে হাসতে দেখে বললো…
– কি হলো হাসছো কেন?
– তোমার বোন প্রেমে পড়েছে গো।
– মানে? কে বোন।
– নিশি গো।
নিশান মহুয়ার কাছে জানতে চাইলো,,মহুয়া মুচকি হেসে সবটা বললো। নিশান তো সবকিছু শুনে হতবাক।
– আমার চোখের সামনে এতকিছু হয়ে যাচ্ছে আর আমি কিছুই জানতে পারছি না।
– চোখ বন্ধ করে থাকলে আর কি হবে।
– আমি চোখ বন্ধ করে থাকি।
– হুম।
– তাই না ,, দাঁড়াও….
নিশান মহুয়াকে ধরার জন্য মহুয়ার পেছন পেছন দৌড়াতে লাগলো। একসময় নিশান মহুয়ার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।
– এবার কি হবে মিসেস।
– কিছুই না।
মহুয়া নিশানকে জড়িয়ে ধরলো,আর নিশান ওহ।
১ সপ্তাহ পর….
নিশানের দাদুভাই সকলকে ডেকে পাঠালেন ওনার নিজের ঘরে।
– তোমাদের সকলের কাছে আমার কিছু কথা ছিলো।
– কি কথা বাবা।( নিশানের ছোট কাকা)
– আমার শখের আমার ভালোবাসার আহমেদ পরিবারটা কিরকম একটা ছন্নছাড়া হয়ে গেছে, আমি আর কয়েকদিনই বা এই পৃথিবীতে আছি আমি যাবার আগে সবার মাঝে সবকিছু গুছিয়ে দিতে চাই আমি চাই না আমি চলে যাবার পর তোদের মাঝে কোনো রকমের ঝামেলা হোক।
– মানে?(মেজ কাকা)
– তোদের নিজের মাঝে সবকিছু ভাগ করে দিতে চাই।
আহমেদ ভিলার সকলের মাথাতে আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। এই আহমেদ ভিলা টা সকলের কাছে জীবন,এই বাড়িটা যে কখনো ভাগ হবে এটা কখনোই কেউ ভাবেনি। বাবার কথাতে আহত হলো খুব সকলেই।
– দাদু তোমার হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন আমরা তো ঠিকই আছি।( নিশান)
দাদুভাই তাচ্ছিল্যের হাসি দিলেন।
– দাদুভাই আমি আমার জীবনে অনেক কিছুই দেখেছি আমি জানি আমি আছি বলেই এই আহমেদ ভিলা জোড়া আছে কিন্তু আমি যেদিন থাকবো না এই পরিবারের মাঝে ফাটল ধরবেই, তাই আগে থেকেই সকলকে আলাদা হয়ে যাওয়া ভালো,আমি তবুও তো তোদের সকলকে ভালোভাবে খুশি দেখে যেতে পারবো,আর না হলে আমি যে মরেও শান্তি পাবো না।
পরিবারের মাথা যদি নাই থাকে তাহলে একটা পরিবার কিভাবে থাকবে। পরিবারের সদস্য বাড়ার সাথে সাথেই পরিবারের মানুষদের মাঝে দূরত্বের সৃষ্টি হয় ,, আর শেষে পরিবারটাই ভেঙ্গে যায়।
– কিন্তু বাবা। ( মেজ কাকা)
– কোনো কিন্তু নয় আমি তোমাদের নামে আগেই উইল করে রেখেছি আশা রাখি তোমরা আমার সিদ্ধান্ত কে সম্মান করবে।
– হুম।
নিশানের দাদুভাই সকলের হাতে যে যার উইল তুলে দিলেন।
– আলাদা হয়ে গেলেও তোমরা সকলে একে অপরের বিপদে আপদে পাশে থেকো।
– হুম।
সকলেই চোখ মুছে ঘর ত্যাগ করলো। সবথেকে বেশি আঘাত পেয়েছে নিশানের মা, শাশুড়ি মা মা’রা যাবার পর নিশানের মা এই পরিবারের সকলকে নিয়ে আগলে রেখে ছিলো,, সংসারটাকে নিজের প্রা’ন দিয়ে আগলে রেখেছে। আর সেই সংসারটাকে ভেঙ্গে যেতে দেখে ভেতরটা ফেটে যাচ্ছে কিন্তু কিছু বলার অধিকার নেয় সবটাই সহ্য করে যেতে হচ্ছে।
পরেরদিন সকালটা হলো অন্যরকম ভাবে, নিশানের দাদুভাই স্টো’ক করেছেন। অনেক চেষ্টা করেও ওনাকে বাঁ”চানো যায়নি। আহমেদ ভিলা ভাঙার আঘাতটা সহ্য করতে পারেনি অথবা, উনি হয়তো বুঝে ছিলেন ওনার হাতে বেশি সময় নেয় তাই হয়তো যে যার জিনিস বুঝিয়ে দিয়ে শে’ষ নিঃশ্বাস ত্যা”গ করেছেন।
নিশানের দাদুভাইয়ের মৃ”ত্যুর পরে সবটাই আরো এলোমেলো হয়ে গেলো। আহমেদ ভিলাটা পুরোপুরি ভাবেই ভেঙ্গে গেলো। নিশানের ছোটকাকা নিজের বিজনেসের কাজে প্রায় সময়েই দেশের বাইরে থাকতেন তবে বেশ কয়েকবছর দেশেই আছেন, আর দেশে থেকেই বিজনেস টাকে সামলাচ্ছিলো। যদিও বা ইচ্ছা ছিলো স্ত্রী – সন্তান নিয়ে দেশের বাইরে থাকার কিন্তু যৌথ পরিবার হবার কারনে সেটা হয়নি। নিশানের ছোট কাকার ছেলে উচ্চ শিক্ষার কারনে দেশের বাইরে আছে। নিজের বাবার মৃ”ত্যুর পর উনি সুযোগ পেয়ে গেলেন,,মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে দেশের বাইরে পাড়ি দিলেন। ওইখানেই সেটেল হবার পরিকল্পনা নিয়ে।
নিশানের বাবা ওহ ওই বাড়িতে থাকতে রাজি না এমনিতেই উনি মনের মতো করে একটা বাড়ি তৈরি করেছিলেন কিন্তু বাবার কারনে এই বাড়ি আসতে পারেনি উনি গত হবার পর খুব সহজেই উনি সহ গোটা পরিবার ওই বাড়িতে সেটেল হয়ে গেলেন।
গোটা আহমেদ ভিলাতে একমাত্র থাকলো নিশানের মেজ কাকা।
নিশানের মা মন মরা করে বসে আছে,মহুয়া ওনার পাশে বসে বললো…
– কি হলো মা কি ভাবছো।
– আমার শখের আহমেদ ভিলা ভেঙে খান খান হয়ে গেলো। আমি কিছুই করতে পারলাম না।
– মা এটা তো হবারই ছিলো, সংসার তো একদিন না একদিন ভেঙেই যায় আমাদের সমাজে কটা যৌথ পরিবার আছে আর। আমরা নিজেদের স্বার্থরক্ষা করে বেড়াই। নিজেদের ছাড়া আর কারোর জন্যই কিছুই করতে রাজি না।
নিশানের মা নিজের চোখের পানি মুছলেন। সবকিছুই কিরকম একটা এলোমেলো হয়েগেছে, জীবনে যে কার নজর পড়েছে কে জানে।
– জানো মহুয়া কিরকম একটা হয়ে গেলো জীবনটা। প্রথমে মেয়েটা তার সংসার হারালো আর তারপরে বাবা মা’রা গেলো আর তারপরে এই পরিবারটা ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেলো।
– মা আমি চাই দিদিভাই নতুন করে সবকিছু শুরু করুক।
– মানে?
– আমি জানি দিদিভাই বিয়ে করতে রাজি হবেনা, তাই আমি চাই না এটা নিয়ে কথা বলতে তাই আমি ভাবছি অন্য ভাবে দিদিভাইকে মুভ অন করাতে।
– কিভাবে?
– আমি চাই দিদিভাই আমাদের পারিবারিক বিজনেসে জয়েন করুক আমি শুনেছি দিদিভাই কমার্সের স্টুডেন্ট তাই বিজনেসের কাজটা ভালোই বুঝে তাই না।
– হুম, কিন্তু ওহ কি রাজি হবে।
– রাজি করানোর দায়িত্ব আমার।
– তুমিই ভরসা।
মহুয়া নিশানের মাকে কথা রাখার জন্য মিতালীর সাথে কথা বলে মিতালীকে মানিয়ে নিয়ে বিজনেসে জয়েন করার জন্য রাজি করায়।
পরেরদিন…
#চলবে…
ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
হ্যাপি রিডিং ?