দেবী,০৭,০৮

0
471

#দেবী,০৭,০৮
লেখিকাঃ শবনম রাবাহ (স্রোতস্বিনী)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
৭ঃ

বৈশাখ মাসের কড়া তাপ। পুর্ব আকাশে সূর্য উদয় হয়েছে তবে আজকের তাপ যেন একটু বেশি। যাকে বলে বৈশাখের তান্ডব শুরু হওয়া। কিন্তু তার চেয়ে ভয়াবহ তান্ডব শুরু হয়েছে কাকনের বক্ষে। কাল রাত থেকে শুরু হয়েছে। রাতেও তার নিদ্রা হয়নি। এক নিদ্রাহীন সকালের সম্মুখীন হতে হলো কাকনের। অথচ গতকাল সকালেও তার সুন্দর একটা সকাল দেখা হয়েছিল।আর আজ এক কঠিন সকাল।

ঘরে জানালার পাশে বসে আছে কাকন। জানালা দিয়ে দুরের পথ দেখা যাচ্ছে। সে চেয়ে আছে ঠিকই কিন্তু তার মাথায় যেন জগৎ সংসারের চিন্তা। কি হবে তার ভবিষ্যৎ পরিনাম। এই দুনিয়ায় তার তো আপন বলতে কেউ নেই। যারা ছিল তারাও কাকন কে রেখে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছে। আর যারা আছে তারা কি আদোও আপন।কিন্তু ফাতিমার কাছে যে সে মায়ের মতো গন্ধ পায়। ফাতিমার হাত ধরে যখন ঘুমায় মনে হয় তার মা তার সাথে আছে। সে যে ফাতিমা কে ছাড়া থাকতে পারবে না। সত্যিই কি তাকে নতুন ঘরে যেতে হবে। আর সে তো এতিম। তার মতো এতিমের কি আদোও কেউ হবে। সিরাজী মঞ্জিলের মানুষের রূপ যে তার কাছে এখনো অচেনা। জানালার কাছে বসে কাকন এসব ভাবতে ভাবতে বেলা হয়ে গেছে নিজেও বুঝে নি।
চিন্তার জগৎ থেকে বের হলো কাকন যখন ফাতিমা ডাকলো,”কিরে কাকন, আর কতক্ষণ বইসা থাকবি। তর জন্য আমিও খাই নাই। রাতে ও খাইলি না। এখন অন্তত আয়।আমার খিদা লাগছে।”

কাকন বললো,” আমার খিদে নেই আপা। আপনি খেয়ে নেন।এখনো না খেয়ে আছেন কেন?”

ফাতিমা কাকনের কাছে এসে বললো,” তরে ছাড়া যে খাইতে ইচ্ছা করে না। তাই কইলে কি হইবো।আর এই যে কইতাছা খিদা নাই আমি কি বুঝিনা। পেট এর জ্বালা যে বড় জ্বালা রে মা। আয় খাইয়া নে।”

কাকন আনমনে বলে উঠলো,” মনের জ্বালা যে তার চেয়ে ও বেশি জ্বালায় আপা। এই জ্বালায় ছাই হলেও নিস্তার পাওয়া যায় না।”

কাকনের কন্ঠে হাহাকার শুনে অবাক হলো ফাতিমা তাই বললো,” মনের জ্বালা হইল কেন তর আবার, হুহ?”

কাকন কথা ঘুররানোর জন্য বললো, “আমার খুব মাথা ব্যাথা করছে। আমাকে একটু সরষের তেল মাথায় টিপে দিবেন আপা।”

ফাতিমা কাকনের আবদার শুনে তেল নিয়ে এসে দিতে শুরু করলো।তারপর বললো,” কাকন, তরে কিন্তু আইজ দেখতে আসবো সিরাজী মঞ্জিলের মানুষজন। তুই আজকা শাড়ি পড়বি। তরে নিজ হাতে সাজামু আমি। দেখবি আমার হুর এর বাচ্চারে হুরের রানি গো মতো লাগবো।”

কাকন নিশ্চুপ হয়ে বসে রইলো। এক পলক ফাতিমাকে দেখে দৃষ্টি নত করে রাখলো।

ফাতিমা কাকনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,” সকলরে সালাম দিবি, সকলের সাথে হাইসা কথা কইবি। দেখবি ওনারা খুশি হইবো। তারা অনেক ভালা মানুষ।তরে অনেক ভালো রাখবো রে মা।”

কাকন ফাতিমার পেট জড়িয়ে ধরলো। তারপর বললো,
” কিন্তু আপা,,,আমি আপনাকে ছেড়ে কোথাও
যেতে চাই না।”

–“সবাই রেই সব কিছু ছাড়তে হয়। সবাই রেই কিন্তু দুনিয়া ছাইড়া যাওয়া লাগে। ঠিক তেমনি আমিও দুনিয়া ছাইড়া চইলা যামু একদিন। তখন তো তুই না আমিই ছাইড়া যামু। তখন তুই করবি ক? তর তো কেউ নাই। এই দুনিয়ায় তর একটা পরিবার হইবো। আমি দেইখা যাইতে চাই। ”

কাকন জোরালো গলায় বললো,” আমার কাউ কে চাই না। কোনো পরিবার লাগবে না। আর আমি আপনাকেও যেতে দিবো না আপা।”

–” তা হয় না কাকন। মেয়েদের স্বামীর ঘর ই সব রে মা,,সবার ই যাওয়া লাগে। আমারে দেখ আমারও বিয়া হইছিল। কিন্তু,, থাক বাদ দে সেইসব।”

কাকন অবাক হয়ে বললো,” আপনার বিয়ে হয়েছিল? কিন্তু আপনি যে বলেছিলেন আপনার কেউ নেই। কোনো কেউ ছিল না আপা?”

ফাতিমার গলা ধরে আসলো। তবুও বললো,”কেউ তো নাই এইডা সত্য। মা মরা ছিলাম,, বাজান আর সৎ মা মিলা বিয়া দিছিলো অল্প বয়সে। বিয়ার কয়েক বছর ভালোই গেলো।আমার পোলাপান হয়না দেইখা আমারে অবহেলা করা শুরু করলো। নতুন বউ কইরা নিয়া আইলো আজেদা রে । বউ পোয়াতি হইলো। খুশিই হইছিলাম যে আমিও পোলাপানের মুখ দেখমু কিন্তু খালাস(প্রসব) করার সময় মইরা গেলো। আমি ওইদিন খুব কানছিলাম আমার সতীনের জন্য।তয় যত না তা সতীনের জন্য তার চেয়ে বেশি আমার সোয়ামির জন্য। হে আজেদার জন্য খুব কানছিল। তার কান্দন দেইখা বুক ফাইটা যাইতেছিল আমার। তারপর একদিন হঠাৎ কইরা গায়েব হইয়া গেলো। কিন্তু সে কই যে গেলো আর আইলো না। সিরাজী আব্বা অনেক খোজ করছিল পায় নাই।পরে আমারে এই মহিলা পাঠশালায় কাম দিছিলো।তারপর এতিম মাইয়াগো দেখা শুনার কাম দিলো।এ হন এইডাই আমার পরিবার। ১যুগ হইলো আমি এখানেই আছি। তারা অনেক ভালো মানুষ ।” কাকন কে জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করলো ফাতিমা।
সব শুনেও কাকন নিশ্চুপ। আজ প্রথম সে ফাতিমা কে কাদতে দেখলো।

কাকন এর ফাতিমার জন্য ভিষণ খারাপ লাগলো। বললো,”কান্না থামান আপা। আমি কি আপনার কেউ না আপা। আপনি ছাড়া কিন্তু আমার কেউ নেই,
কেউ নেই।”

ফাতিমা চোখ মুছে বললো,” আচ্ছা আর কানমু না। আর শুন তর ও বাড়ি হইবো,ঘর হইবো, খুশি হওয়ার সময় এহন। তয় আমারে কিন্তু ভুলিস না। আমার কাছে মাঝে মধ্যে আসিস।”

–”আমি আপনাকে কখনোই ভুলবো না। আপনি যে আমার মা।”

ফাতিমা কাকনের চোখ এর দিকে তাকালো। তাকেও কেউ ভালোবেসে মা ডাকলো। মাতৃত্বের স্বাদ যে তার কখোনোই গ্রহণ করা হলো না।তার বুকে চাপা কষ্ট অনুভব হলো। কাকনের কপালে চুমু দিলো।তারপর বললো,” হইছে চল খাইয়া নে। তারপর তৈরি হবি। একটু পর সিরাজী মঞ্জিলের বেগমরা আসবো। ”
_______________

সিরাজী মঞ্জিল থেকে সবাই মহিলাশালায় আসলো।রুহুল, রুহুলের আম্মা, ছোট আম্মা, দাদি, সামিয়া, চাচিআম্মা এলো। সাথে মিস্টি, দই নিয়ে এসেছে। আর সাথে বড় বোয়াল মাছ। আর সাতটি শাড়ি। পাকা কথা বলার সময় এগুলো নিয়ে যাওয়ার নিয়ম সিরাজী বংশের।
ফাতিমা সবাইকে সালাম দিলো, “আসসালামু আলাইকুম আম্মাজানেরা,,আসেন বইসেন আপনারা।”

রুহুলের দাদিমা বলল,”ওয়ালাইকুম সালাম। তোমার অস্থির হওয়া লাগবো না। তুমি যাইয়া মাইয়া ডারে নিয়া আইসো। আমার মানিকের বউরে দেখার জন্য যে আমার আর তর সইতাছে না।”

ফাতিমা বললো, “জি আমি এখনি নিয়া আইতাছি।”

লাল রঙের এক তাঁতের শাড়ি পড়েছে কাকন। জোড়া ভ্রুযোগলের এর চোখে কাজল, কানের দুপাশের ছোট ছোট চুল মুখের উপর পড়ছে। কোমড় অব্দি চুল গুলো ছেড়ে দেওয়া। মাথায় কাপড় দিয়ে সব চুল ঢাকা।শুধু গোলাপি মুখ টুকুই দেখা যাচ্ছে। ফর্সা গোলাপি রঙা গায়ে লাল শাড়ি তে যেন কাকনকে অপসরীর মতো লাগছে।

ফাতিমা কাকনকে সাথে করে নিয়ে এলো। সাথে শরবত আর পান নিয়ে হাজির হলো কাকন। তার সুমধুর কন্ঠে বললো,”আসসালামু আলাইকুম”

দাদিমা মুগ্ধ হয়ে বললো, ” ওয়ালাইকুম সালাম,, এ তো দেহি আসমানের পরী গো ফাতিমা। হুহ আমার মানিকের বউ তো আগুনের দলা। নাম কি তোমার?”

–“জি আমার নাম কাকন।”

রুহুলের চাচি জাহানারা শরবত নিলো তারপর বললো,
“আম্মা এত সুন্দর মাইয়া আমাগো সিরাজপুরে আছিলো আর আমরা আইজ দেখলাম। মাইয়া আমার খুব পছন্দ হইছে। জান্নাতের হুরপরী এইডা। ”

সামিয়া উৎফুল্লে বললো,” আল্লাহ গো আমার ভাবিজান এত্ত সুন্দর। এই জন্যই দাদাভাই তো চোখই সরাইতে পারছে না।” বলেই কনুই দিয়ে গুতা দিলো রুহুল কে।

রুহুল কাকনকে দেখেই ভিন্ন জগতে চলে গেছিলো। সে নিজেও কল্পনা করেনি কাকনকে এত সুন্দর লাগবে লাল শাড়িতে। সদ্য ফোটা রক্তজবা ফুলের মতো লাগছে।দেখে আবারো তার হৃদগতি বেড়ে গেছে।

রুহুলের ছোট আম্মা মালেকা বললো,”সামিয়া সব জায়গায় তর দুষ্টামি করা লাগে। চুপ থাক এইখানে। কাকন তোমারে আমার ও পছন্দ হইছে।”

রুহুলের মা সুভা কাকন এর মুখ দেখে অবাক হয়ে গেলো। তার কাকনকে দেখে খুব শান্তি লাগছে। সে নিজেও কল্পনা করেনি তার খোকার বউ এর রুপ এমন হবে সুভা সুখের নিশ্বাস ফেলে বললো,” মাশাল্লাহ। আসো আমার কাছে এসে বসো। ”
কাকন ফাতিমার দিকে তাকালো। ফাতিমা সম্মতি দিলে কাকন যেয়ে বসলো।

রুহুলের মা কাকনের থুতনিতে হাত দিয়ে মুখটি চেয়ে চেয়ে দেখলো। তারপর হাতে সোনার আংটি পড়িয়ে দিলো। হাতে সোনার বালা আর নাকের ছোট নাকফুল টা খুলে তাদের সাথে আনা নাকফুল পড়িয়ে দিলো।

সুভা কাকনের হাত ধরে বললো,”শোনো কাকন, এগুলা কোনোদিনও খুলবে না। এগুলো বিবাহিত নারীর চিহ্ন।যতদিন স্বামী বেচে থাকবে তুমি পড়ে থাকবে। আর আজ থেকে আমিও তোমার মা। নিজেকে আর এতিম মনে করবে না কেমন।”

কাকন মাথা দিয়ে সম্মতি জানিয়ে বললো,” জি।”

সুভা আবারো বললো,” আজ থেকে তোমার নিজের পরিবার আমরা।”
বলেই কাকনকে বুকে টেনে নিলো। সুভার মনে হলো নিজের সন্তান কে বুকে নিলো সে। কাকন এর সুভার কথাতে চুপ রইলো। সুভা চিন্তিত ছিল রুহুলকে নিয়ে। অজান্তেই চোখ বেয়ে দুফোঁটা অশ্রুকণা ঝড়লো সুভার। হাত দিয়ে সকলের অগোচরে তা মুছে নিলো সুভা।

সামিয়া এবার কাকনের কাছে গেলো। বললো,
” ভাবিজান আমি হইলাম সামিয়া। আপনার সবচেয়ে আদরের ছোট ননদ। বাকি ২টার বিয়ে হইয়া গেছে। তবে আজ কালের মধ্যেই চইলা আসব।”

কাকন মুচকি হেসে বললো,”ওহ আচ্ছা।”

ফাতিমা সকলের সম্মুখে শরবত এগিয়ে দিয়ে বললো, “আপনারা মুখে নেন আম্মা। কিচ্ছু খাইতাছেন না কেন।শরবত খান। কাকন শরবত বানাইছে।”

রুহুল শরবত খেলো। এবার তার হৃদয় ঠান্ডা হলো। তার কাকনের সাথে কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে। কিন্তু মা-চাচীদের সামনে বলতেও লজ্জা করছে।

সবাই কিছু না কিছু মুখে নিলেও সুভা নিলো না। তা দেখে ফাতিমা বললো, “আপনি তো কিছুই নিলেন না আম্মা”?
সুভা কাকনের দিকে চেয়ে বললো,” কাকনকে দেখেই আমাদের মন ভরে গেছে। আর কিছু লাগবে না”।

রুহুলের দাদিমা বললো, “হুম পান ডা ভালোই লাগলো। এতদিন সিরাজী সাব খালি সুনাম করতো। তয় আইজ নিজেও স্বাদ নিলাম। কাকনের হাতে জাদু আছে। কাকন তরে আমার দিলে ধরছে।”

কাকন চুপচাপ সকলের কথা শুনছে।

দাদিমা এবার বললো, “আইজ তাইলে আমরা উঠি। কাকন খুব শীঘ্রই তোরে আমার ঘরে নিয়ে যামু।”

এরপর কাকনের হাতে কিছু টাকা দিলো। কাকন নিতে চাইলো না ফাতিমা যখন নিতে বললো কাকন তখন টাকা গ্রহণ করলো।

সবশেষে দাদিমা কাকনের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
” ভালো থাকিস বুবু।”
বলেই উঠে দাড়ালো রুহুলের দাদি। লাঠি ভর করে হাটতে হাটতে বেরিয়ে গেলো।

সবাই চলে যাওয়ার জন্য পা চালালো। কাকন সবাই কে হাসি মুখে বিদায় জানালো।ঘর থেকে সকলেই বের হলো। রুহুলের সাথে চোখে চোখ পড়তেই কাকন চোখ নামিয়ে নিলো।একে একে সকলেই প্রস্থান নিলে সকলের অগোচরে রুহুল কাকন এর কাছে এসে দাড়ালো।কাকন চলে যাওয়ার জন্য ছুটলেই শাড়ির আচল টেনে কিছুটা কাছে নিয়ে এলো এবং তারপর কানে কানে বললো,_
❝রুহুল সিরাজীর হৃদয়হরণীর হৃদয় ও
রুহুল সিরাজী খুব সিঘ্রই হরণ করবে,,
প্রস্তুত থাকবেন হৃদয়হরণী ।❞

রুহুল কাকনের শাড়ির আঁচল ছেড়ে দিলো। আঁচল দিয়ে কাকনের মাথায় আরো বড় ঘোমটা টেনে দিয়ে মুচকি হেসে বিদায় নিলো। রুহুলের কথায় কাকন ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। লজ্জায় লজ্জাবতী পাতার মতো যেন নুইয়ে পড়লো। গাল দুটি লাল রঙ ধারণ করলো। এমন কথা সে আগে কখনো শোনে নি। এই কথা শোনার পর কাকনের বক্ষে আবার প্রলয় নৃত্য শুরু হলো তবে এই নৃত্য এক অন্যরকম অনুভুতির। এক ভয়ংকর অনুভুতি।

এতক্ষণ পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে ছিল ফুল,রিতা,নুপুর সহ কয়েকজন। ফাতিমা নিষেধ করেছিল তাই তারা কক্ষ থেকে বের হয়নি।
সবাই যাওয়ার পর তারা বের হয়ে কাকনের কাছে এলো। ফুল বললো, ” কিরে কাকন আমরা কিন্তু সব দেখছি।”

কাকন এবার আরো লজ্জা পেলো। ছিঃ তার এখন কি হবে?

নুপুর কাকনকে বললো,”রুহুল সিরাজী সাব তরে কি কইয়া গেলো রে,হুহ?”

রিতা বলল,” হ্যাঁ রে বল না আমরা ও শুনি।”

ফুল বললো,”কইছে রে কইছে রুহুল সিরাজী কাকনের প্রেমে পড়ছে।”

হাহাহা হাসির আওয়াজ করে উঠলো সকলে।
হাসির ধ্বনি কাকনকে আরো লজ্জা দিলো।
কাকন এখন কি করবে কোনো কিছু মাথায় আসলো না। তাই কোনো কিছু না ভেবেই শয়নকক্ষে দৌড়ে চলে গেলো।

চলবে….

– শবনম রাবাহ ✍️

#দেবী
লেখিকাঃ শবনম রাবাহ (স্রোতস্বিনী)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
৮ঃ

গ্রীষ্ম মানেই এক বায়ুশুন্য প্রকৃতি। গ্রীষ্মের উষ্ণতায় প্রকৃতি কঠোর রুপ ধারণ করেছে। মাঠঘাট শুকিয়ে কাঠ কাঠ। প্রকৃতির এই কঠোরতায় সিরাজপুর বাসী ক্লান্ত। কিন্তু এই ক্লান্ত পরিবেশেও কারো হৃদয়ে তৃপ্তির ছায়া। হ্যাঁ গতকাল থেকেই রুহুলের মনে এক সুখের পায়রা উড়ছে। সে না ধরতে পারছে আর না ছুতে পারছে। কাল সারা রাত কেবল কাকনের কথাই ভেবেছে সে। সত্যিই হয়তো আল্লাহ বৈধ সম্পর্ক কে এতটাই পবিত্রতা দান করেছেন যে বিবাহ ঠিক হওয়ার পর থেকেই রুহুলের আরো কাকনের প্রতি এক অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করছে। কাকনময়ীর মায়ায় জড়াচ্ছে। ডাগর ডাগর চোখ,,চিকন সরু নাক,,ফুলের পাপড়ির ন্যায় ঠোঁট রুহুল সিরাজীর হৃদয়ে ভালোবাসার জলস্রোত তৈরি করেছে। কাল কাকন কে রুহুলের কাছে এক ফুটন্ত রক্তজবা ফুল মনে হয়েছিল। তাই কাল থেকে তার প্রিয় ফুল হয়েছে রক্তজবা। তাই আজ সিরাজী মঞ্জিলের চাকর লতিফ কে দিয়ে রুহুল বেশ অনেক গুলি রক্তজবার চারা কিনে এনেছে। নিজ হাতে তা রোপণ করেছে সে।গাছ টির দিকে এক মনে চেয়ে রইলো। ভেবে নিলো ফুল ফুটলে সে প্রথম ফুল তার হৃদয়হরণীকে দেবে। হঠাৎ তার কাকন এর কোমল কৃষ্ণ কেশের কথা মনে হল। সে আনমনে বললো,
–“তোমার ভ্রমরকৃষ্ণ কেশে গুজে দেবো একজোড়া
রক্তজবা ,তুমি কি আমাকে সেই সুযোগ দিবা?”

নিজের অজান্তেই হেসে দিলো রুহুল। হাসলে তার বাম গালে চোখের নিচ বরাবর উঁচু অংশে গর্ত হয়। তার সে সুন্দর মিস্টি হাসি ঠোঁটে ঝুলছে ।
এমন সময় সিরাজী মঞ্জিলের চাকরানী রানু আসলো রুহুল কে ডাকতে। সুভা রুহুল কে ডেকে পাঠিয়েছে। রানু বরাবর ই ভিতু স্বভাবের।ভুত প্রেতে বেশি বিশ্বাসী। একা একা রুহুল কে এভাবে বাগানে গাছের নিচে হাসতে দেখে সে ভয় পেয়ে গেলো। কারণ রুহুল একা একা হাসবে কেন। তার মনে হলো রুহুল কে ভুতে ধরেছে। সে “দা…দাদাভাই” বলে একবার আস্তে করে ডাক দিলো। কিন্তু সাড়া তো পেলোই না উল্টো রুহুলের হাসি আরো প্রসস্থ হওয়া দেখে সে চিৎকার দিয়ে উঠলো,” আম্মাগো,,, আম্মাগো।” বলেই দৌড়ে মহলের ভিতর চলে গেলো।

অন্যদিকে রানুর চিৎকার শুনে রুহুলের হুশ ফিরলো। কিন্তু যখন দেখলো রানু দৌড়ে অন্দরমহলে যাচ্ছে তখন সে অবাক হলো। পরেই মনে পড়লো সে তো হাসছিল। পরক্ষণেই মনে হলো রানু তাকে একা হাসতে দেখে ফেলেছে। বিশ্রি ব্যাপার মনে হলো তার কাছে। সে বদনায় রাখা পানি দিয়ে হাত পা ধুয়ে অন্দরমহলের দিকে গেলো।
এদিকে রানুর কথায় সকলেই ছুটে এলো।
রুহুলের ছোটাম্মা(সৎমা) বলে উঠলো,” কি রে কি হইছে,, চ্যাচাইতাছা ক্যান?”

রানু দম ফেলে বললো,”বড় দাদাভাই রে ভুতে ধরছে,, আম্মা”

সুভা বিরক্ত হলো কথা শুনে।বললো,”কি যা তা বলছিস রানু। তোরে দিয়ে একটি কাজ ঠিকঠাক হয় না।”

দাদিমা সব শুনে অবাক হয়ে বললো,” কিহ,,,আমার মানিক রে ভুতে ধরছে?”

রানু বললো,”আম্মা গো আমার খুব ডর করতাছে।”

মহীবুলের মা নিজের কপালে হাত রেখে বললো,” হায় আল্লাহ কি কয়। বিয়ার গন্ধ পাইয়া ভুত-পেত কই থিকা উদয় হইলো। ”

দাদিমা বললো,” না গো মহীর মা আমার মানিকের তো রাইশ ভার।সিংহ রাশি হেরে তো ভুতে ধরতে পারবো না সহজে। সত্য কইরা ক দেখি রানু।”

রানু বললো,” আমি সত্যি দেখছি আম্মা। খুদার কসম। দেহি যে বাগানে জবা গাছের দিক তাকায়া একা একাই হাসতাছে।একা একাই কথা কইতাছে। আপনেই কন ভুতে না ধরলে কি কেউ একা একা হাসে।”

রানুর কথা শুনে কেউ না বুঝলেও সুভা এবং সামিয়া ঠিক ই বুঝতে পারলো রুহুল কেন হাসছে।। সামিয়া উচ্চস্বরে হেসে দিল।
সামিয়া বললো,” হাহাহা,,,রানু তুই এই জন্য এই ভাবে চিল্লাইলি। আরে পাগলি দাদাভাই তো প্রেমে পড়ছে। তুই সিনেমা দেখস না,,নায়কেরা প্রেমে পড়লে একা একাই হাসে। নতুন ভাবিরে দেইখা দাদা ভাই সেইরম টাস্কি খাইয়া গেছে।”

রানুর এখন মনে হল হ্যাঁ তাই তো সে তো রাজ্জাক কবরীর সিনেমাতে দেখছিল। তাহলে কি সে অন্যায় কিছু বলে ফেললো নাকি।

রুহুল সকল কে একসাথে দেখে ভড়কে গেলো।সিড়ি দিয়ে উপরে যাবে এমন সময় তার দাদিমা ডাক দিলো।

–” মানিক এইখানে আয়।কথা আছে তর লগে আমার”
রুহুল সিড়ি থেকে নেমে দাদির সামনে দাড়ালো।তারপর বললো,” জি দাদিমা,, বলেন।”

দাদি রুহুলের কান ধরলো। বললো, “কিরে পেরেমে পড়ছা বলে। একা একা যে হাসোস মানুষ কয় ভুতে ধরছে। এইডা কি সত্য নাকি?”

রুহুল কানে হাত দিতে বললো,”দাদিমা কান ছাড়েন আর কি যা তা বলছেন। ”
রুহুল আড়চোখে মা চাচিদের দিকে তাকালো। সে যে বাজে ভাবে ফেসে গেছে বুঝতে বাকি নেই। রুহুলের অবস্থা বুঝে সুভা জা দেরকে নিয়ে রন্ধনশালায় চলে গেলো। রুহুল এবার যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো।

রুহুল কান থেকে হাত ছাড়িয়ে দাদিমাকে কোলে তুলে নিলো। তারপর ঘুড়াতে লাগলো আর বললো,” হ্যা গো দাদিমা আমি প্রেমে পড়েছি। আমি তাহার প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে গেছি।”

রুহুলের কান্ড দেখে সামিয়া আর রানু হেসে দিলো।
দাদিমা হাসতে হাসতে বলল,”আরে নামা আমারে।থাম রে পাগলা পইড়া যামু।”

রুহুল দাদিকে নামিয়া দিলো। দাদিমা জোরে জোরে নিশ্বাস নিয়ে বললো,” একদিনেই দিওয়ানা হইয়া গেলি হ্যাঁ। তা কাকন কি জাদু করছে শুনি?”

রুহুল দাদিমার কানের কাছে ফিশফিশ করে বললো, “সে তো জাদু করে নি, হৃদয় হরণ করেছে।”
বলেই সিড়ি বেয়ে উপরে চললো।

দাদিমা সামিয়া কে বললো, “শুনলি রে সামিয়া তোর ভাই এর হৃদয় নাকি কাকন হরণ করছে। হাহাহাহা”

সামিয়া, রানু আর দাদি হাসতে হাসতে অবস্থা বেহাল।

দূর থেকে রুহুলের কান্ড দেখছিল মহীবুল আর হেলাল।হেলাল হাসছে কিন্তু মহীবুলের তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলো মনে।
__________________________

সিরাজী পাঠশালা~
পরের দিন আসরের নামাজ পড়ে সকল মেয়েরা উঠোনে বসে আছে। মেয়েরা বৌচি, কুতকুত, জুতাচুরি খেলছে। কেউ কেউ আবার একে অপরের মাথার উকুন এনে দিচ্ছে। কাকন তাদের থেকে খানিক টা দুরেই আছে। গতকালের তুলনায় আজ তার মন ভালো। মেয়েদের খেলা দেখে তার ও খেলতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু নিজের প্রাণপ্রিয় সই(বান্ধবী) এর কথা মনে করে খেলে না। শৈশব যার সাথে পাড় করেছে কৈশোর পাড় না করার কষ্ট আজীবন তার বক্ষে থেকে যাবে। আচ্ছা মমতা কি কাকনকে ভুলে গেছে দুই বছরে। কথাটি ভাবতেই কাকনের বুক কেপে উঠলো।

হঠাৎ কারো ডাক শুনে টিনের গেইটের দিকে তাকালো কাকন। সামিয়া কে দেখে উঠে দাড়ালো । কালো বোরকা পড়ে এসেছে। চিনতে কিছুক্ষণ সময় লাগলেও চেনার পর উঠে সামিয়ার সামনে গেলো।
সামিয়া বললো, “কি গো ভাবীজান,,, চিনছো আমারে”

কাকন বললো, ” জি। আসো ভিতরে আসো।”

সামিয়ার সাথে রানু আর একজন মহিলা এসেছে।
সামিয়া কে নিয়ে কাকন ঘরে নিয়ে গেলো।ফাতিমা কে ডাকলো।সামিয়া কে দেখে ফাতিমা কাছে এসে কাঠের টুল এগিয়ে দিলো। সামিয়া বসলো তারপর বললো, “আমি এসেছি নতুন ভাবির মাপ নিতে। দাদিমার হুকুম সব কাম একদম ঠিক ঠাক মত করতে হইবো।দাদিমা পাঠায়ছে ভাবির মাপ নিতে। আর এই যে ইনি হইলো আমাগো সিরাজী মঞ্জিলের মাইয়া গো পোশাক বানানোর দর্জি।”

ফাতিমা বললো, ” ওহ ঠিক আছে। কাকন তুই মাপ দিয়া দে।”

দর্জি কাকনের সব মাপ নিয়ে কাগজে লিখে রাখলো। বিয়ের জন্য পেটিকোট, ব্লাউজ বানানোর দায়িত্ব তার।
মাপ নেওয়া শেষ হলে সামিয়া ফাতিমার থেকে বিদায় নিলো। তারপর ঘর থেকে বের হলো কাকন কে সাথে করে নিয়ে।তারপর বললো, ” জানো ভাবিজান দাদাভাই তো তোমার প্রেমে পাগল হইয়া গেছে। একা একাই হাসে।তুমি নাকি হৃদয় হরণ করছো। হিহিহি”

সামিয়ার কথা শুনে কাকনের খুব লজ্জা করছে। সামিয়া কিভাবে জানলো। লোকটা নিশ্চয় বলেছে। লোকটা যে ঠোঁটকাটা বেশ বুঝতে পারলো কাকন।
কাকন কাচুমাচু হয়ে বললো, “আমি কিছু জানি না।”

সামিয়া কাকনের অবস্থা দেখে হেসে ফেললো।
সামিয়া বললো, ” থাক লজ্জা পাইতে হইবো না। আমি আজ আসি।”

কাকন বিদায় জানালো,” আল্লাহ হাফেজ।”

সামিয়া কাকনের কানের কাছে যেয়ে বললো,”আর শুনো গো ভাবি এত লজ্জা পাইয়া এখনি শেষ কইরো না। বাসর রাতের জন্য কিছু রাইখা দেও।”

কাকন লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো।তার কান গরম হয়ে গেলো।

সামিয়া”আল্লাহ হাফেজ “বলেই চলে গেলো।

কাকন সামিয়ার যাওয়ার পানে চেয়ে রইলো।একমাত্র সামিয়া কেই তার সরল মনের মনো হলো। সিরাজী বংশের এই প্রথম কাউকে ভালো মনে হলো। যাওয়ার পানে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘরে গেলো কাকন।
______________________________

দুলাল সিরাজীর অন্যতম প্রিয় ব্যক্তি হলো রুহুল।দুলাল সিরাজী এক ঠিলে দুই পাখি মারলো। প্রথমত রুহুলের লন্ডন আর যেতে পারবে না স্ত্রী কে রেখে। কাকনের মতো রূপবতী যে রুহুল কে কাবু করেছে সে তা বেশ বুঝেছে। আবার সিরাজপুরবাসীর সামনে সেদিন মান সম্মান ও বেচে গেলো।এবার শীতের শুরুতে রুহুলের উপর সকল দায়িত্ব দিয়ে অবসর নিতে পারবে। দুলাল সিরাজীর আনন্দের শেষ নেই। কাকন কে তার এমনিতেও পছন্দ ছিল। তার আনন্দের শেষ নেই। সে নিশ্চিত এবার সব ভালো হবে।

বিশ্রাম কক্ষে বসেছে দুলাল, জামাল, রুহুল, হেলাল, মহীবুল। খাতা কলম নিয়ে সকল আত্মীয়, অতিথি দের তালিকা করেছে। সিরাজী মঞ্জিলের বড় ছেলের বিয়ে বলে কথা। বহুবছর পর আবারো উৎসব। তাই রাজকীয় ভাবে বিয়ের সব আয়োজন করা হবে।

দুলাল সিরাজী বললেন, ” সকল অতিথির নাম তো লেখা হইলো। কাল সকালেই যেখানে যারা আছে সকলরেই আমন্ত্রণ করা শুরু করবা। আমাগো রুহুলের বিয়ে বইলা কথা।”

রুহুল মুচকি হাসলো। সত্যিই তার বিয়ে। যত তাড়াতাড়ি হবে ততই তার হৃদয়ে প্রশান্তির দেখা মিলবে।

জামাল বললো,” আব্বাজান আপনে কোনো চিন্তা কইরেন না। সব কাম ঠিক ঠাক মতো হইবো। কাল ই সকলের বাড়ি দাওয়াত দেওয়া হইয়া যাইবো।পরশু থিকা বাড়িতে মেহমান আইসা ভড়বো।”

দুলাল বললেন, “হ্যাঁ তোমারাই তো দেখবা। বিলাল তো আর সুস্থ না। তা না হইলে আমার বড় পোলায় নিজের বড় পোলার সকল কাম নিজ হাতে করতো।”

মহীবুল বললো, ” সব ই কপাল দাদাজান। তবে যা ই কন কাম ডা আমার মতে ঠিক হইলো না একেই তো এতিম মাইয়া সিরাজী মঞ্জিলের বউ হইবো। তার উপর যেইখানে চাচাজান এর এত বড় ক্ষতি হইলো ওইখান কার মাইয়া কি আর ঘরে নিয়া আইবেন। ”

জামাল ব্যাঙ্গ করে বললো, “আব্বাজান যা ভালো বোঝে তাই হইবো। তুই এগুলা নিয়া ভাবিস না। তোর বড় ভাই এর বিয়া। আনন্দ কর,, ফুর্তি কর।হুদাই এগুলা কস কেন। মাইয়া এতিম তো কি হইছে। ”

আগুনে ঘি ঢালার জন্যই মুলত এটা মহী আর জামালের পরিকল্পনা। কিন্তু এতে ব্যাঘাত ঘটালো রুহুল। রুহুল বললো,” কি বলতে চাও তোমরা কাকন ওই মহিলাশালার মেয়ে বলে অমঙ্গলকর। আব্বার সাথে যা হয়েছে তার জন্য আমি নিজেও কষ্ট পাই। শুধুমাত্র মহিলাশালার জন্যই অঘটন ঘটেছিল বলেই কি এমন করছো নাকি। কাকনের বাবা-মা নেই বলে কাকন কে এভাবে ছোট কেন করছো। আর মহী তুই যে কাকন কে ছোট করে কথা বলছিস কেউ না জানলেও আমি কিন্তু ঠিক ই জানি তুই.। না থাক সেসব বিষয়ে আমি মুখ খুলতে চাই না।” বলেই বের হয়ে গেলো রুহুল।

মহীবুল এবার একটু নড়ে বসলো। জামাল ও চুপ। রুহুল মেপে মেপে কথা বলে। খুব কম কথা বলবে তবে কম কথা যেন শখানিকের সমান।

দুলাল রুহুলের যাওয়া তে ক্ষেপে উঠলো,” আহ কি শুরু করলা তোমরা। আর জামাল তোমার পোলা মহী রে মুখ বন্ধ রাখবার কইয়া দিও। আমি এই বিয়াতে কোনো অশান্তি চাই না কইয়া দিলাম।”

জামাল দোষ ঢাকার জন্য বললো,”আব্বাজান এইডা ও তো ঠিক ওইখানকার জন্যই তো ভাইজান এর….”

দুলাল সিরাজী জামালকে থামিয়ে দিয়ে বললো,”ব্যাস আর একটা কথাও না। যাও যারে যে কামে দেওয়া হইছে ওইকাম কেমনে করবা ওইডা ভাবো।”
বলেই দুলাল সিরাজী নিজ কক্ষে চলে গেলো।

মহীবুল এবার বাবার কাছে যেয়ে বললো,” আর কতদিন গোলামি করুম আব্বা। আপনে এই বুইড়া রে কিছু কন না কেন। ”

জামাল বলল,”আহ, খালি ফটর ফটর করস। ঝোপ বুইঝা কোপ দিতে হয় বুঝলি রে মহী। ”

মহী অশ্রাব্য গালি দিয়ে বললো,” বা* আপনার ঝোপ ও রুহুল নিবো কোপ ও নিবো কইয়া গেলাম। চল হেলাল মা’ল খামু।”

চলবে…..
#দেবী
#শবনম_রাবাহ

শবনম রাবাহ ✍️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here