দেবী,১১,১২

0
421

#দেবী,১১,১২
লেখিকাঃ শবনম রাবাহ (স্রোতস্বিনী)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ
১১ঃ

সিরাজী মহিলাশালা~
রাতে ঘুমানোর জন্য ফাতিমার কাছে সুয়ে আছে কাকন। এখানে সে যতদিন আছে প্রতি রাতেই ফাতিমার হাত জড়িয়ে ধরে ঘুমায় সে। এটা তার ছোট বেলার অভ্যাস। মায়ের হাত ধরেও সে ঘুমিয়েছে। মা মরে যাওয়ার পর যখন মহিলাশালায় এলো তখন থেকে ফাতিমার হাত জড়িয়ে ঘুমায়। বিয়ের দিন যত ঘনিয়ে আসছে তার মস্তিষ্কে ততই চিন্তার চাপ বাড়ছে। সে তো ফাতিমা কে ছাড়া থাকতে পারবে না। একজন অপরিচিত পুরুষের হাত ধরে ঘুমাতে হবে এটা সে কখনোই পারবে না। আবার হাত না ধরলে ঘুম ও হবে না। আবার অন্য আপাদের থেকে স্বামীর কাছে আসার কথা শুনে আরো বেশি ভয় হয় তার। ঘুম হচ্ছে না বারবার নড়েচড়ে উঠছে কাকন। একবার ডান তো আরেকবার বাম।

ফাতিমা রোজ ই লক্ষ্য করে কাকনের এই অবস্থা। তাই ফাতিমা বললো, “কি রে কাকন ঘুমাস না কেন,ইদানীং দেখতাছি তুই কেমন জানি করস,,কিছু হইছে কি মা?”

কাকন ফাতিমার আরো নিকটে গেলো তারপর বললো, “না কিছু হয়নি শুধু ভালো লাগছে না আপা,, আমার আপনাদের ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না। আর মাত্র দুটো রাত আপনার সাথে থাকবো। বিয়ের পর যদি প্রতিদিন রাতে আপনার সাথে থাকতে দেয় আমার খুব ভালো হতো। আপনি কাছে না থাকলে ঘুম হবে না আমার।”

ফাতিমা মুচকি হেসে বললো,” বিয়া তো একদিন না একদিন হইতো তাই ছাইড়া ও যাওয়া লাগতো। বিয়া হইলো দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর ফরজ কাম। আল্লাহ বিয়া সবার জন্য ফরজ করছেন। আর বিয়ার পর স্বামীর কাছেই থাকা লাগে। স্বামীর সুহাগ হইলো জান্নাতের সুখ। দেখবি তুইও সে সুখে সুখী হবি। ”

কাকন করুণ চোখে চেয়ে বললো,”দরকার নেই সেই সুখে সুখী হওয়ার।আমি আপনার কাছেই থাকতে চাই। আর তাছাড়া আমি যদি সুখী না হই তখ…”

ফাতিমা কাকনের মুখে হাত দিয়ে থামিয়ে বললো, “চুপ, কিসব বলতাছা তুই,,এইসব কুকথা মুখ দিয়া কইতে নাই। স্বামী হইলো আল্লাহর পর সবচেয়ে কাছের। স্বামীরে অসন্তুষ্ট করা লাগে না। আর তুই অনেক সুখী হবি দেখিস এগুলার দুশ্চিন্তা মাথা থিকা ঝাইড়া ফালা। আয় তোর মাথায় হাত বুলায়া দেই ঘুমা।”

কাকন আর কিছু না বলে চুপ করে চোখ বুজে রইলো।
ফাতিমা কাকনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। কাকন চোখ বুজে থাকতে থাকতে ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো।
___________________

সিরাজী মঞ্জিল~
অন্যদিকে ঘুম নেই আরো এক জোড়া চোখের।বাড়ান্দায় দাড়িয়ে সিগারেটের ধোয়া উড়াচ্ছে। আম্মার কথায় সে কিছুই মনে করে নি কেননা এগুলো শুনে সে অভ্যস্ত। তার আম্মার তো দোষ নেই। ভাগ্যদোষে আজ এগুলো শুনতে হলো। তবে সেগুলো তে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই কারণ সে তো তার হৃদয় হরণীর চিন্তায় মগ্ন। প্রথম যেদিন কাকন কে দেখেছিল সেদিনই রুহুলের হৃদয়ের গতি হাজার গুণ বেড়ে গিয়েছিল। জীবনে অনেক নারী কে দেখেছে সে। ঢাকায় পড়াকালীন সময়ে অনেক মেয়েদের প্রেম নিবেদন পেয়েছে সে কিন্তু কাউকে ভালো লাগে নি তার। তার দাদাজানের কাছে ও অনেক কন্যার পিতারা তার হাত চাইতে এসেছে কিন্তু সে প্রত্যাখ্যান করেছে। অথচ এই পঞ্চদশী তরুণীর প্রতি ২৫ বছরের রুহুল সিরাজী আকৃষ্ট হয়ে গেছে। কাকনের সেই সাদা ওড়নায় জড়ানো মুখ খানা যে সাদা শাপলার মতো আজো ফুটে আছে রুহুলের অন্তরে। কাকনের মিহি কন্ঠের সালাম রুহুল সিরাজীর বক্ষপিঞ্জর কাপিয়ে দিয়েছিল এ খবর কি রুহুলের হৃদয়হরণী জানে। উহু জানাতে হবে তাকে। রাতে রুহুলের ঘুম হয় না চোখ বন্ধ করলেই কাকনের চেহারা ভেসে উঠে। লাল শাড়ি তে ফুটন্ত রক্তজবা তার সামনে ধীর পায়ে এগিয়ে আসা,,সবার সাথে মুচকি হেসে মাথা নিচু করে কথা বলা সব কিছু রুহুলের মন- মস্তিষ্কে বিচরণ করে। তবে কি রুহুল সিরাজী সত্যিই প্রেমে পড়লো। সেদিন দাদির সামনে ভালোবাসার প্রকাশ করার পর ও মনে হয়েছিল কাকনের প্রতি তার মোহ কাজ করছে। কিন্তু এখন সে নিশ্চিত সে সত্যিই কাকনের প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে গেছে। এই জগতে সে তো কেবল একজন নারী কেই ভালো বেসেছে। তার আম্মা কে। তাহলে কি তার এই হৃদয়ে অন্য নারীর স্থান ও পেতে চলেছে? নানা চিন্তায় তার মস্তিষ্ক বিকল হবে ভেবে হাসতে শুরু করলো রুহুল। গম্ভীর স্বভাবের রুহুল সিরাজী আজকাল হাসে অকারণেই হাসে। তার বুকে যে অগ্নিকুণ্ড দাউদাউ করছে। কাকন ব্যতীত তার বক্ষের ভয়াবহ অগ্নিকুণ্ড কোনো কিছুই নিভাতে পারবে না। হাতের সিগারেট এর শেষ টান দিয়ে ফেলে দিলো। বুকের বা পাশে হাত রেখে আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললো,_
“নিজের বুকের চিতায় নিজেই দগ্ধ হচ্ছি।”
______________________

আযানের সুমধুর ধ্বনিতে ঘুম ভাঙলো কাকনের।
ঘুম থেকে উঠেই ফজরের নামাজ পড়লো কাকন। কোরআন শরীফ পড়লো কিছুক্ষণ। তারপর বাইরে আলোর ছোয়ার দেখা মিললে বাইরে বেরিয়ে এলো। আজ তার কেন যেন হঠাৎ মহিলাশালায় ঘুরতে ইচ্ছে করলো। হয়তো এভাবে আর কোনো সকাল মহিলা শালায় দেখা হবে না।তাই সে বাইরে বেড়োলো। হেটে পুরো টা মহিলাশালা দেখলো। সবাই যার যার কক্ষে। কাকন মহিলাশালার পিছনের দিকে হাটা শুরু করলো। কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই মহিলাশালা জুড়ে। সব কিছু হারিয়ে যাওয়ার পর এই মহিলাশালাই তার ঠাই হয়েছিল। খানিক বাদেই চোখে পড়লো এক অসম্পুর্ণ দালান। যার কাজ শুরু হয়েছিল গত ১ বছরের ও বেশি হবে কিন্তু অসম্পূর্ণ ই রয়ে গেলো। তার হবু শশুড় বিলাল সিরাজীর জন্য তা আর সম্ভব হয় নি। বিলাল সিরাজীর দুর্ঘটনার পর কেউ আর পা রাখে নি এই দালানে। কাকন ভাঙা সিড়ি পেড়িয়ে দোতলায় উঠলো। চারিদিকে চোখ বুলালো। সেখান থেকে কিছু দূরে এগোলে চোখে পরে এক বিশাল খাদ। যেখান থেকে পড়লে যে কেউ প্রাণ হারাবে। লোকমুখে শোনা যায় এক ভয়ংকর ভুত আছে সেখানে যার জন্য একবার পড়লে জান নিয়ে ফেরা অসম্ভব। ভুতে অবিশ্বাসী কাকন কথা টা ভেবে হেসে দিলো। পুরো টা জায়গা চেয়ে চেয়ে দেখলো। কাকন খাদের বিশালতা মাপতে চেষ্টা করলো।
হঠাৎ তার কানে এলো ফাতিমার ডাক। ফাতিমা হয়তো কাকনকে না পেয়ে খুজছে তাই কাকন ডাক অনুসরণ করে ফাতিমার কাছে যাওয়ার জন্য দালান থেকে নেমে এলো। তখনি মুখোমুখি হলো ফাতিমার।
কাকন ভয় পেলো কারণ সে জানে ফাতিমা এখানে আসা পছন্দ করে না।

ফাতিমা পা থেকে মাথা অব্দি পর্যবেক্ষণ করে বললো,
” কাকন তুই এইখানে। এই খাদের কাছের দালানে গেছিলি কেন তুই?”

কাকন আমতা আমতা স্বরে বললো, “আসলে ফাতিমা আপা আমি বাইরে বেরিয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে কেন যেন ওখানে যেতে ইচ্ছে করলো তাই গিয়েছিলাম। ভয় নেই আমি খাদের কাছে যাই নি।” কাকন মিথ্যা বললো।

ফাতিমা মাথায় হাত রেখে বললো,” হায় আল্লাহ কি কয়। বিয়ার গন্ধ পাইয়া ওই ভুতে তরে নিয়া যায় নাই তো তরে আবার। তর কথা শুইনা আমার আত্মা শুকা গেছে মা আর জানি যাস না। চল দুয়া দরুদ পইড়া ফু দেওয়া লাগবো তরে। ওগো কু নজর তোর উপর পড়লে তোর রক্ত চুইষা খু’ন করবো।”

কাকন এর হাসি পেলো তবুও স্বাভাবিক ভাবে বললো,”কিছু হয় নি তো। শুধু কিসব যে বলেন না আপা। আর আমি ভেবে দেখলাম দালান টা ঠিক করা উচিৎ। এই দালানের কাজ হলে কাউকেই আর টিনের ভাঙা ঘরে থাকতে হবে না।”

ফাতিমা এবার বললো,” যা মন চায় ভাব তয় ওইখানে আর কিন্তু যাবি না। ওই জায়গা ভালো না। মানুষ খায় ওই ভুতনী। গত বছর কি কাম ডাই না হইলো। থাক ওগুলা আর মনে করবার চাই না।”

কাকন মাথা নেড়ে বললো,”ঠিক আছে আপা,, চলেন আমি আজকে আপনাকে রান্নার সব কাজে সাহায্য করবো। না করতে পারবেন না কিন্তু।”

ফাতিমা এবার সস্তি পেলো তাই বললো,” সে করবি তো চল আমার লগে। কাম করবি এইডা ভালোই হইলো। আইজ বাদে কাল শশুড় ঘরে যাবি। সেই খানে সব কাম নিজে হাতে করবি। নিজের সংসার নিজের মতো কইরা কাজ করলে দেখবি শাশুড়ী মেয়ের মতো কইরা রাখবো তোরে।”

ফাতিমার বলা শেষ কথা শুনে কাকনের নিজের মা-র কথা মনে পড়লো।সে তো নিজের মা ছাড়া আর কারো মেয়ে হতে চায়নি। বুকে ব্যাথা অনুভব হলো কাকনের।
_______________________

বিকেলে সিরাজী মঞ্জিলে বিশাল আকারে গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে। সকল আত্মীয় স্বজন হলুদ দেবে। মেয়েরা হলুদ আর লাল পাড় এর শাড়ি পড়েছে।সাথে তাজা লাল গোলাপ আর গাদা ফুলের মালা দিয়ে সবাই নানা রকমে সেজেছে। গাদা ফুল দিয়ে সিরাজী মঞ্জিলের বাম পাশের ফাকা মাঠ টায় গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে। শহর থেকে অনুষ্ঠান করার জন্য অনেক কিছু আনা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ই সব করা হয়েছে। একদম রাজকীয় ভাবে আয়োজন যাকে বলে। একেবারে রমরমা পরিবেশ। মেয়েরা কাকন কে হলুদ দিতে যাবে। তারপর সন্ধ্যার পর রুহুল কে হলুদ দিবে। তাই সব মেয়েরা দল বেধে চললো কাকন কে হলুদ দিতে।

অন্যদিকে দুলাল সিরাজীর আদেশে মহিলা পাঠশালা সাজানো হয়েছে। কাকনের কেউ নেই তাই এই সকল দায়িত্ব পালনের ও কেউ নেই। দুলাল সিরাজী ই আয়োজন করেছে বিয়ের সবকিছু।ফাতিমা শুধু নিজ দায়িত্বে এগুলোর খেয়াল করছে।
কাকন কে কাচা হলুদ আর আর কমলা রঙ মিশ্রিত একটি শাড়ি পড়ানো হয়েছে। ফুলবানু আর রিতা দুজনে কাকন কে সাজিয়ে দিয়েছে। কাকন কে হলুদ পরীর মত লাগছে। কপালে লাল টিপ, ডাগর ডাগর চোখে কালো কাজল। গলায়,কানে, হাতে ফুলের অলংকার। অপরুপা লাগছে তাকে। আজ যেকোনো পুরুষ তার এই ভয়ংকর রুপে গ্রাস হতে পারবে।

মহিলা শালার মাটির বাড়ান্দায় শীতল পাটি বিছিয়ে বসিয়ে রেখেছে কাকন কে। তার খুব লজ্জা লাগছে এভাবে বসে থাকতে। তার পাঠশালার সকলের করা নানা ইয়ার্কিতে তার আরো বেশি লজ্জা লাগছে। তাকে সবার আগে হলুদ দিলো ফাতিমা। তারপর পায়েস খাইয়ে দিলো। তারপর কাকনের মাথায় হাত দিয়ে দুয়া করলো। কাকন একটি বারের জন্য ও ফাতিমার দিকে তাকায় নি। তার ভিতরে বড্ড কষ্ট হচ্ছে। ফাতিমাও চোখ মুছে উঠে গেলো। তার যে অনেক দায়িত্ব সাথে কান্না পাচ্ছে তার।
একে একে কাকনকে আরো অনেকেই হলুদ দেওয়া শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর সিরাজী মঞ্জিলের মহিলারা এলো।
কাকনের সাজ সজ্জায় সকল এর চোখ আটকে গেল।
সবার আগে কাকনের কাছে গেলো সামিয়া। যেয়েই কাকন কে জড়িয়ে ধরলো তারপর বললো,” ভাবিজান কেমন আছো গো?”

কাকন মুচকি হেসে বললো, ” জি আলহামদুলিল্লাহ ভালো,, আপনারা সবাই কেমন আছেন?”

সামিয়া বললো,” আমি সব সময় ই ভালো থাকি ভাবিজান!” বলেই কাকন এর নাকে হলুদ দিলো। সামিয়া কাকন কে সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।
কাকন মুচকি হেসে সালাম দিলো সবাইকে।
আলেয়া, রোকেয়া,পারুল রাও বড় ভাই এর বউ কে দেখে মুগ্ধ হলো। তারাও কাকনের রুপের প্রশংসা করলো। তবে আসমা কাকন কে দেখে বেশি অবাক হলো। সে ভেবেছিল কাকন হয়তো সুন্দরী হবে । কিন্তু এমন রুপবতী হবে সে ভাবে নি। কাকন দেখে তার মনে একটু স্বস্তি হলো। তবে একটা জিনিস মনে মনে ভাবলো তার বড় ভাবির সাথে কাকন কে ছেলের বউ হিসেবে ভালো মানাবে।
আলেয়া বললো,” বাহ দাদাভাই এর বউ তো পরী রে রোকেয়া। এই জন্যই বুঝি দাদাভাই বিয়েতে রাজি হইছে।”

রোকেয় তাল মেলানো সুরে বললো, “হুম আমিও তাই ভাবতেছি। দাদাভাই এর মতো মানুষ কি আর এমনি এমনি রাজি হইছে নাকি।”

সামিয়া ওদের দু-বোনের উদ্দেশ্যের বললো,” আরে দাদাভাই কি কইছে জানো আপা সে নাকি ভাবিজানের প্রেমে মাতোয়ারা হইয়া গেছে।”

হাহাহাহা করে সবাই হেসে উঠলো। কাকন লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো। তার যেন এবার রুহুলের উপর চরম রাগ লাগলো। এমন অসহ্য,বেহায়া লোকের সাথে তার বিয়েটা না হলেই ভালো হতো। অন্তত এসব লজ্জার সম্মুখীন হতে হতো না।

ধীরে ধীরে সবাই কাকন কে হলুদ দিতে শুরু করলো।
আসমা বয়সে বড় বিধায় সে আগে দিলো। তারপর আলেয়া,রোকেয়া,পারুল, সামিয়া সহ সাথে আসা বাকি মেয়েরাও হলুদ দিলো। হলুদ শেষে সবাই প্রস্থান নিলো সিরাজী মঞ্জিলের উদ্দেশ্যে।
কারণ এবার যে রুহুল সিরাজীকে হলুদ দেওয়ার পালা।

চলবে……..
#দেবী
#শবনম_রাবাহ

#দেবী
লেখিকাঃ শবনম রাবাহ (স্রোতস্বিনী)
কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ।
১২ঃ

সিরাজী মঞ্জিলের ফাকা মাঠে হলুদের জন্য রুহুল কে বসানো হয়েছে। সবাই রুহুল কে হলুদ দেওয়া শুরু করলো। বাড়ির বড় সদস্য হিসেবে দুলাল সিরাজী সবার আগে দিলো তারপর একে একে বাকিরাও দিলো। রোকেয়ার আর আলেয়ার স্বামী রুহুল এর দুপাশে বসেছে। শ্যালক এবং শালিকাদের সাথে ইয়ার্কি করছে। সাথে জোট বেধেছে বকুল। তবে বকুলের মন অন্য জায়গায়।
শাড়ি পরিহিত সামিয়া কে আজ কিশোরী নয় বরং পরিপূর্ণ নারী মনে হচ্ছে বকুলের। একজন পুরুষের মনে যখন কোনো নারীর প্রতি ভালো লাগা জন্মে আর সেই নারী যখন সুসজ্জিত হয়ে পুরুষের সামনে থাকে তখন পুরুষের নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা বড় দায়।

বকুল দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করে রুহুলের কাধে হাত রাখলো। বকুল বললো,” বন্ধু রুহুল তুইও বিয়ে করছিস,, বাকিরাও বিয়েসাদি করে ফেলেছে শুধু আমি কি শরৎচন্দ্রের দেবদাস হয়ে থাকবো নাকি রে”?

রুহুল বকুলের দিকে চেয়ে বললো,”কেনো তোর আবার কি হলো। তোর শখ হলে তুই ও বিয়ে কর তোকে দেবদাস হয়ে থাকতে বলেছে কে শুনি?”

বকুল মুখ গোমড়া করে বললো,”তোর এই কথার জন্যই আরো বেশি মনে হচ্ছে যে আমাকে আজীবন দেবদাস হয়েই থাকতে হবে।”

রুহুল এবার আশ্চর্য হলো। গামছা দিয়ে গায়ের হলুদ মুছতে মুছতে বললো,” কেন কি বললাম আমি”?

— “কিছুই না। হ্যাঁ গো দুলাভাইয়েরা আমার, আমি এবার সত্যিই দেবদাস হবো। ”

আলেয়ার স্বামী বকুলের কাধে হাত রেখে বললো, “আরে বকুল মিয়া এখানে এত মেয়ে থাকতে তুমি দেবদাস হবে কেন”?

রোকেয়ার স্বামীও তাতে তাল মেলালো “হ্যাঁ ঠিক ই তো আমার শা’লিরা সহ আরো কত মেয়ে আছে। ওরা থাকতেও তুমি দেবদাস হতে চাও কোন দুঃখে?”

বকুল এবার অন্যদিকে ঘুরে নিম্নস্বরে বললো,” হুম,, কাউকে লাগবে না তবে আপনার একটা শা’লিকে আমার বউ করার সখ জাগছে।”

রুহুল বকুলের কথায় ক্ষেপে উঠলো। বললো, “খবরদার,, আমার বোনদের প্রতি কু নজর দিলে খুন করে ফেলবো তরে সা*লা *********।”

বকুল বন্ধুর হাত ধরলো বিনয়ের সুরে বললো,”চ্যাতস কেন, আর শা’লা তো তুই আমার হবি আর আমি তো তোর বোনের দিকে নজর দিছি বোনদের দিকে না। সিরাজী বংশের জামাই হওয়ার জন্য কি আমি
অযোগ্য নাকি?”

রুহুল ভ্রকুচকে তাকালো বকুলের দিকে। তারপর বলল,
” তুই কি বলতে চাইছিস পরিষ্কার করে বল?”

বকুল হাত টা আরো শক্ত করে ধরলো তারপর বললো,”তুই আমার বন্ধু কম ভাই বেশি। তাই তোকে সত্যি কথাই বলছি। আমি সামিয়া কে ভালোবেসে ফেলেছি। ওকে বিয়ে করতে চাই । যেহেতু তোর বাবা এখন স্বাভাবিক নয় তাই তোকেই আগে জানালাম। সুখে রাখবো সারাজীবন ওকে কথা দিচ্ছি। ওর হাত টা আজীবনের জন্য আমি চাই তোর কাছে।”

বন্ধুর মুখে বোনের জন্য এমন প্রস্তাব শুনে নিরব হয়ে গেলো রুহুল। বকুল যে সত্যিই সিরজী বংশের জামাই হওয়ার যোগ্যতা রাখে।রুহুল মুখে কিছু না বলে বকুলের হাতে হাত রাখলো কেবল। তারপর বললো,
“আমার বোনের সম্মতি সবার আগে মাথায় রাখিস।”

বকুল খুশিতে হেসে দিলো। রুহুলের চাপা কথার ভাজে সে তার উত্তর পেয়ে গেলো।খুশিতে রুহুলকে জড়িয়ে ধরে বললো, “সে তুই চিন্তা করিস না,আমি সব মানিয়ে নিবো।”

রোকেয়ার স্বামী বললো,”তুমি যে রাস্তায় পা দিছো বৎশ কাটা দিয়ে পুরা। আমাকে যে জিনিস খাইয়েছিলো ওই সামিয়া পা’জি দুইদিন ভুগছিলাম।”

আলেয়ার স্বামী জোরে দম ফেলে বললো,” সে আর বলতে সাবধান বকুল, সামিয়া কিন্তু কোনো যমরানির চেয়ে কম না।”

বকুল বাকা হেসে বললো, “বেশ আমিও দেখতে চাই সে কেমন যমরানি।” বলেই চোখ মেরে উঠে দাড়ালো বকুল আর হাতে নিলো বাটা হলুদ। সে এখন তার রানির কাছে যাবে।
___________________

সব মহিলারা একে অপরের গায়ে হলুদ দিচ্ছিলো।
হঠাৎ কেউ এসে সামিয়ার গালে হলুদ দিলো। সামিয়া ঘুরে দেখলো বকুল। বকুল কে দেখেই তার মেজাজ গরম হয়ে গেলো।

সামিয়া রাগান্বিত হয়ে বললো, “এই ব্যাডা এই লাজ সরম নাই। এই ভাবে কেউ মাইয়া মানুষরে হলুদ দেয়। আর একবার আমার পিছে দেখলে দাদাভাই রে কইয়া দিমু।”

বকুল না পরোয়া ভাব নিয়ে বললো,” যাও এখনি যাও। বলো গিয়ে বকুল তোমাকে হলুদ দিয়েছে।”

সামিয়া দাত কিড়মিড় করে বললো,” আপনি আসলেই অসভ্য,,বেহায়া পুরুষ।”

বকুল সামিয়ার দিকে ঝুকে বললো, “তোমার জন্যই অসভ্যতামি করতে হয়। কিন্তু বেহায়াপনা কিন্তু এখনো করি নাই।”

সামিয়া আবারো মুখ ভেচকিয়ে বললো,” করতে আর কি বাকি রাখছেন কালকেও তো” ,,, বলতে গিয়ে থেমে গেলো সামিয়ার নিজের কাছেই লজ্জা লাগলো।

বকুল মুচকি হেসে বললো, “থামলে কেন বলো কালকে ও আমি”।

সামিয়া লাজুক কন্ঠে বললো, “কিছু না বাপু আপনার নিজের কাজে যান। হুদাই আমারে জালান কেন?”

বকুল দুইহাত ভাজ করে বললো, “বেশ জালাবো না আর তবে এক শর্তে “।

সামিয়া সেকেন্ড দেরি না করে বললো,” কি শর্ত?”

–” আমার জন্য খাবার এনে দাও না প্রচন্ড ক্ষিদে পেয়েছে। ”

সামিয়া মুখ ভেচকিয়ে বললো, “ঠ্যাকা পড়ে নাই ,, আমি কারো চাকরানি না।”

–” চাকরানি হবে কেন স্বামীর হুকুম পালন করা সুন্নত। যাও নিয়ে আসো এখন। ”

সামিয়া অবাক হওয়া মুখ নিয়ে বললো, “স্বামী কে হ্যা কি যা তা কইতাছেন,,,মুখে যা আসে তাই কইবেন আপনে আর একবার ফা’লতু কথা কইলে খুন্তি পুড়া ছ্যাক দিমু।”

বকুল শয়তানি হাসি হেসে বললো, “কিহ,,,খুন্তি পোড়া ছ্যাক। এত বড় অপমান। খাইতে চাইছি দেখে এত বড় অপমান। এখনি দুলাল সিরাজী সাহেব কে বলবো ভাত খেতে চেয়েছি বলে সামিয়া আমায় অপমান করেছে।”

সামিয়া এবার ভয় পেলো।অতিথি কে খাওয়ার জন্য অপমান করা হয়েছে বলে জানলে তার রক্ষে নেই। তাই বললো,” না না কইয়েন না। আপনি দাড়ান আমি এইখানে নিয়ে আসতাছি।”

বকুল বললো, “না এইখানে না আমি আমার কক্ষে অপেক্ষা করছি। তুমি নিজে হাতে বেড়ে নিয়ে এসো কেমন।”

সামিয়া প্রায় ঝড়ের গতিতে দৌড়ে রন্ধনশালায় গেলো তারপর বকুলের জন্য ভাত বাড়লো। তরকারি দিবে ওমন সময় ওর মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি এলো।সামিয়া দুষ্টু হেসে তরকারি তে রসুন বাটা আর গুড়া মরিচ দিলো। তারপর চামচ দিয়ে নেড়ে হাসতে হাসতে বকুলের উদ্দেশ্যে নিয়ে গেলো। বকুলের কক্ষের সামনে গিয়ে হাসি লুকিয়ে দড়জায় কড়া নাড়লো।

বকুল অনুমতি দিলো,” ভিতরে আসেন সামিয়া সিরাজী।”

সামিয় প্রবেশ করে বকুলের সম্মুখে ভাত নিয়ে গেলো তারপর মুচকি হেসে বললো, “নেন আপনার ভাত । আপনি চাইলেই আমি খাইয়ে দিতে পারি। ”

বকুল যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পেলো। কোনো কিছু না বলেই হা করলো। যেন একটা পুরো মানুষের মাথা খেয়ে ফেলতে পারবে।

সামিয়া বকুলের কান্ড দেখে হাসলো। তারপর বেশি করে ঝোল দিয়ে ভাত মাখিয়ে এক বড় লোকমা ভাত বকুলের মুখে দিলো। তারপর হাত দিয়ে বকুলের মুখ চেপে রাখলো। বেচারা বকুল কিছুক্ষণ চিবিয়ে চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।ভাত না গিলতে পারছে তার বের করতে পারছে।শেষে গিলেই ফেললো। সামিয়া হাসতে হাসতে বকুল এর বিছানায় বসে পড়লো।

বকুল ঝাল আর রসুনের ঝাজে অবস্থা নাজেহাল। সে জগে রাখা পানি ঢকঢক করে পান করতে শুরু করলো। পানি খাওয়া শেষে সে সামিয়ার ঝঙ্কার তোলা হাসি দেখে পাগল হয়ে গেলো। ঝালে অবস্থা নাজেহাল অথচ সে ভুলে গেলো। এত সুন্দর হাসি তার আগে দেখা হয় নি। হটাৎ দুজনের চোখাচোখি হওয়াতে সামিয়ার টনক নড়লো। বকুলের কক্ষ থেকে পালাতে হবে তাই সে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে বের হবে এমন সময় বকুল সামিয়ার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে এলো। তারপর বকুল বললো, “তুমি আমাকে বিষ খাইয়ে দিলে বিনা বাক্যে আমি গ্রহণ করবো। তবে ঝাল দেওয়ার জন্য শাস্তি পেতে হবে তোমাকে তবে আজ না,,–
❝আজকের শাস্তিটা তোলা থাক সেই দিনের কাছে, যেদিন আমার জায়গা হবে তোমার হৃদয়ের মাঝে।❞

বলেই সামিয়ার হাত ছেড়ে দিলো বকুল। সামিয়া বকুলের কথায় স্তব্ধ হয়ে গেলো। তার কিশোরী মনে কেমন যেন এক অনুভুতি হলো। সামিয়া দৌড়ে বকুলের কক্ষ ত্যাগ করলো।

বকুল হাসতে হাসতে মাথা চুলকে সামিয়ার যাওয়ার পানে চেয়ে রইলো।
__________________

“বিয়ে” দুই বর্ণের এই শব্দ খুব ই ছোট। কিন্তু এর বিশালতা অনেক। হঠাৎ করেই এই বিশালতায় মানুষ কে হারিয়ে যেতে হয় । তবে কেউ কেউ হারাতে চায় না। কেউ কেউ চায় না এই সংসার নামক বেড়াজালে জড়াতে। কাকন ও তাদের ব্যতিক্রম নয়। কিশোরী বয়সে যেখানে মেয়েরা বিয়ের স্বপ্ন দেখে সেখানে সে নিতান্তই নিজের জগতে ডুবে ছিল। ওর খুব ইচ্ছে ছিল লেখাপড়া করে সেবিকা হবে। ও তো কেবল চেয়েছিল যারা ওর মতো পিতা-মাতাহীন তাদের কে নিয়ে নিজের সংসার গড়তে। সেদিনের জঙ্গলের কথা মনে পড়ে কাকনের তীব্র ক্রোধ জন্মালো ওই লোক গুলোর প্রতি যাদের জন্য ওর সব সাজানো স্বপ্ন ভেস্তে গেলো। মনের ভিতর অস্থিরতা বিরাজ করছে কি থেকে কি হয়ে গেলো। ও তো কখনোই সিরাজী বাড়ির বউ হতে চাই নি। না ওর জীবনে সংসার করার কোনো লক্ষ্য ছিল। কাকন যে কোনো পরিবার চায় না। পরিবার যখন ছেড়ে চলে যায় এর চেয়ে বড় বেদনা দুনিয়ায় হয় না। কাছের মানুষকে ফিরে না পাওয়ার বেদনা দুনিয়ার সকল কস্ট কে হার মানায়। কাকন যদি সিরাজী মঞ্জিলের মানুষ দের আপন করে নেয় আর তারা যদি ছেড়ে চলে যায় কাকনের যে বড্ড কষ্ট হবে। বিছানা থেকে উঠে বসলো কাকন। গ্রীষ্মের চেয়ে চিন্তার দাপটে ঘেমে একাকার হয়ে গেছে কাকন। এক মনে ভাবছে সে কিছুতেই বিয়ে করবে না পালিয়ে যাবে এই সিরাজপুর থেকে। আবার ভাবছে তার তো কেউ নেই যাবে কোথায়। বিয়ে টা না করেও উপায় নেই। ফাতিমার কাছে বার বার না করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। কি করবে এখন কাকন। মনে মনে ভাবতে লাগলো কাকন। হঠাৎ ফুল, নুপুর, রিতাসহ অন্যদের ডাকে চিন্তার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে এলো। সেই যে সন্ধ্যায় হলুদের সব কিছু শেষে ইচ্ছে করে ঘরে এসেছিল কাকন আর বের হয়নি। ওরা সকলেই এসে কাকন কে ঘিরে ধরলো। সকলের হাসিমুখ দেখে কাকন ও মিথ্যে হাসি দিলো।
পাশে রাখা কাঠালের বড় পাতায় মেহেদী বেটে কাকনের কাছে দিয়েছিল ফুল। কাকন কে দিয়ে দিতে চাইলে বলেছিল সে নিজেই দিবে। অথচ ওমনি ফেলে রেখেছে।

রিতা মেহেদি দেখেই বললো,” কি রে কাকন তুই এখনও মেন্দি দেস নাই কেন। ফাতিমা আপারে কি ডাকমু সে কিন্তু এমনি তেই কাম কইরা ক্ষেইপা আছে।আপারে যাইয়া কই যে যার বিয়া সে এখনো মেন্দি দেয় নাই। ”

কাকন অপরাধীর ন্যায় বললো, “না তুমি দয়া করে বলো না ওনাকে রিতাপা। আমার এগুলা দিতে ইচ্ছে করছে না। ভালো লাগছে না আমার বিশ্বাস করো। ”

নুপুর বলে উঠলো, ” তা কইলে তো চলবো না। আয় দেখি হাত দে আমরা দিয়া দিতাছি। ”

নুপুর আর রিতা জোর করে কাকন কে খাটে বসিয়ে দিলো। তারপর কাকন এর দুই হাতে বেটে রাখা মেহেদি দিয়ে দিতে লাগলো।

নুপুর হাতের আঙুলে মেহেদী লাগিয়ে দিতে দিতে বললো,”জানিস কাকন, আমার দাদি কইতো যেসব মেয়ের হাতে মেন্দি সুন্দর কালার হয় তাদের জামাই বেশি ভালোবাসে।”

রিতা বললো, ” হ আমিও শুনছি। জামাই নাকি মেলা সুহাগ করে।”

ফুল এবার হাসি মুখে বললো, ” হুম কাকনের যে রুপ ওর জামাই তো ওরে এমনিতেও অনেক ভালোবাসবো আর সুহাগ করবো। হাহাহাহা”

রিতা বললো,” হিহিহি,, হ্যা রে কাকন শোন না,, তোর বাসর রাতে যা যা হইবো আমাদের কইবি কিন্তু।”

ফুল বললো, ” হ্যাঁ আমরা কিন্তু সব শুনমু। তুই কিন্তু না করতে পারবি না। হিহিহি।”

কাকন ওদের কথায় লজ্জা পেলো। ওরা আবার
এগুলা বলা শুরু করেছে। এই জন্যই গত চারদিন হলো ওদের থেকে দূরে থাকে কাকন।
এর ই মধ্যে নুপুর কাকনের কানের কাছে যা বললো তা শুনে কাকনের চোখ বেড়িয়ে যাওয়ার অবস্থা। ঢোক গিললো কাকন না সে কিছুতেই বিয়ে করবে না।
________________________

সিরাজী মঞ্জিল~
আজ রাত টা প্রাণপ্রিয় বন্ধুর সাথে কাটানোর সিদ্ধান্ত নিলো বকুল। হয়তো আর কোনো রাতে একসাথে থাকা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে এক সঙ্গেই থেকেছে।কত সুখকর মুহুর্ত স্মৃতি দুজনের। রুহুলের কক্ষে যেয়ে দেখলো রুহুল কক্ষে নেই। বেরিয়ে যাবে ভাবলো। কিন্তু না যেয়ে বাড়ান্দায় উকি দিলো। দেখলো তার প্রাণ প্রিয় বন্ধু বাড়ান্দায় দাড়িয়ে সিগারেট টানছে। বকুল হাসলো কারণ যেখানে পুরুষেরা কষ্টের সময় সিগারেট টানে সেখানে তার প্রাণ প্রিয় বন্ধু রুহুল সিরাজী যখন মন ভালো থাকে তখন সিগারেট টানে। বড় অদ্ভুত তাই না হ্যাঁ এই রুহুল সিরাজী এমন ই অদ্ভুত মানব।

চলবে……
#দেবী
#শবনম_রাবাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here