#Love_With_Dragon
#Episode__03
[গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তবের সাথে তুলনা করবেন না]
রিদিয়া জঙ্গলের কিছুটা ভিতরে চলে গেল। জঙ্গলের যেইদিকে আওয়াজ হচ্ছিল রিদিয়া সেইদিকে গেল।
— কে……কেউ আছেন।কিছুই তো নেই তাহলে কিসের আওয়াজ ছিল।যা ইচ্ছে থাকুক আমি চলে যাই।(রিদিয়া)
রিদিয়া চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই পিছন থেকে একটা বাচ্চা মেয়ের কান্নার আওয়াজ শুনতে পেল।ভয়ে রিদিয়ার সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠল।
রিদিয়ার বুক ধুকপুক করছে। ভয়ে ভয়ে রিদিয়া পিছনে তাকালো।
পিছনে তাকাতেই দেখে কেউ নেই।
— ক…….কাউকেই তো দেখছি না তাহলে আমি যে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম।(রিদিয়া)
রিদিয়া ভালো করে এদিক ওদিক তাকালো।বাম পাশে তাকাতেই ঝোপের দিকে নজর গেল রিদিয়ার।রিদিয়া ধীরে ধীরে ঝোপের কাছে আসলো।
ঝোপের ভেতর কিছু একটা নড়াচড়া করছে।
রিদিয়া ভয়ে ভয়ে বলে,,,,,,,,
— কে……… কে এখানে।(রিদিয়া)
ওর কন্ঠ শুনে একটা বাচ্চা মেয়ে ফুপিয়ে কেঁদে দিলো।
রিদিয়া ঝোপের মাঝে ডুকে গেল বাচ্চা মেয়েটির কান্নার আওয়াজ শুনে।
রিদিয়া বাচ্চা মেয়েটিকে কোলে তুলে নিলো।
— তুমি এখানে কি করছো বাবু। আর এখানে কিভাবে এসেছ তুমি।(রিদিয়া)
— মাম্মা নিয়ে এসেছে। বলেই মেয়েটি কান্না করতে থাকে।(মেয়েটি)
রিদিয়া মেয়েটির মাথা তার বুকের সাথে শক্ত করে ধরে।
— ভয় পেয়ো না আমি আছি তো।(রিদিয়া)
— ওই রাক্ষসটা আমার মাম্মাকে নিয়ে গেছে?।আমি ভয়ে এখানে এসে লুকাই।খুব খারাপ ওই রাক্ষসটা।(মেয়েটি)
— রাক্ষস…….কি বলছো এইসব তুমি বাবু।রাক্ষস বলতে কিছু নেই।(রিদিয়া)
— না না আমি নিজের চোখে দেখেছি আমার মাম্মাকে জোর করে নিয়ে গেছে।(মেয়েটি)
মেয়েটির কথা শুনে রিদিয়ার ভিতরে ভয় লাগতে শুরু করে।
— তোমার মাম্মাকে কোথায় নিয়ে গেছে…..(রিদিয়া)
মেয়েটি ডান পাশের রাস্তাটি দেখিয়ে দিলো।
— চলো তোমার মাম্মাকে খুজেঁ বের করবো।কিছু হয়নি তোমার মাম্মার সব ঠিক হয়ে যাবে। (রিদিয়া)
বলে রিদিয়া বাচ্চাটির চোখের জল মুছে দিলো।
— সত্যি কিছু হয়নি তো আমার মাম্মার।(মেয়েটি)
— কিছু হয়নি। চলো আমাদের যেতে হবে। (রিদিয়া)
রিদিয়া মেয়েটিকে নিয়ে জঙ্গলের ডান পাশের রাস্তায় হাঁটা শুরু করলো।
আনুমানিক দু’ঘন্টা হাঁটার পর তারা দুজন একটা গুহার সামনে আসলো।
— এইটা কেমন জায়গা। কি অদ্ভুত জায়গা ভীষণ ভয় লাগছে আমার।(রিদিয়া)
রিদিয়া মেয়েটার দিকে তাকালো ভীষণ মায়া হলো তার মেয়েটার জন্য।
— যা হবার হবে।মেয়েটার মাকে যদি পেয়ে য……(রিদিয়া)
নিজের মনে কথা বলছে তখনই ভয়ানক আওয়াজ শুনতে পেল রিদিয়া।
— এই আওয়াজটা তো আমি যখন রাস্তায় হাঁটছিলাম তখন শুনেছিলাম।(রিদিয়া)
রিদিয়া পাশে তাকাতেই দেখে ছোট মেয়েটি নেই।
— বাচ্চাটা কোথায় গেল আমার পাশেই তো ছিল।(রিদিয়া)
রিদিয়া পড়ে গেল বিপদে।
— এখন বাচ্চাটাকে কোথায় খুঁজি।কিসব রাক্ষসের কথা বলছিল। সত্যি সত্যি রাক্ষস থাকলে তো খুব মজা হবে।এমনিতেও এইসব আমার অনেক ভালো লাগে। তবে জীবনের ও তো মায়া আছে?।যাকগে যা হবার হবে রাক্ষস ব্যাটার সাথে দেখা হলে এক কাপ কফির অফার দিব।যেন আমার সাথে বসে কফি খায়।দিনটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আগে দেখা হোক তারপর না হয় এইসব ভাবা যাবে।এখন বাচ্চাটাকে খুঁজে বের করতে হবে।কেন যে এখানে আসলাম মনে হচ্ছে আমি নিজেই ফেঁসে গেলাম।(রিদিয়া)
রিদিয়া বাচ্চাটির জন্য সামনে এগোতে এগোতে গুহাটির ভিতর ডুকে গেল।
গুহাটির ভিতর ডুকতেই রিদিয়ার অস্বস্তি লাগতে শুরু করলো।
— এমন কেন লাগছে শরীর মনে হচ্ছে খারাপ কিছু হতে চলেছে আমার সাথে। না ভয় ফেলে চলবে না বাচ্চাটিকে আমি খুঁজে বের করবোই।(রিদিয়া)
রিদিয়া গুহাটির কিছুটা ভিতরে চলে আসল।
তখনই তার পিছন থেকে কেউ হেসে উঠলো।
হাসির শব্দ শুনে রিদিয়া ভয় পেয়ে গেল।
রিদিয়া ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকালো। পিছনে তাকাতেই যা দেখলো রিদিয়া আশ্চর্য হয়ে গেল।
— একি তুমি এখানে বাবু।আর আমি তোমায় খুঁজতে খুঁজতে এইখানে চলে এসেছি।(রিদিয়া)
বাচ্চা মেয়েটি কিছু না বলে ভয়ংকর শব্দে হাসা শুরু করলো।
— কি হয়েছে তোমার এইভাবে হাসি দিচ্ছো কেন। (রিদিয়া)
— বোকা মেয়ে এখনো বুঝতে পারছে না। তোর সময় শেষ হয়ে আসছে। (মেয়েটি)
— মানে আমার সময় শেষ মানে…..(রিদিয়া)
বাচ্চা মেয়েটার শরীর থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে লাগলো। হঠাৎ করে কালো ধোঁয়া থেকে একটা ভয়ানক নেকড়ে পরিনত হলো।
সবকিছু দেখে রিদিয়ার মাথা ঘুরতে লাগলো সাথে ভয় তো আছেই।পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে রিদিয়ার।
— ন…… নেকড়ে। (রিদিয়া)
— হ্যাঁ আমি একটা নেকড়ে। ওই বাচ্চা মেয়েটা আর কেউ ছিলনা আমি ছিলাম।তোকে রাস্তা দিয়ে যেতে দেখে আর নিজের লোভ সামলাতে পারলাম না।তাই বাচ্চা সেজে মা হারানোর নাটক করে তোকে এখানে নিয়ে এসেছি। আজকে তোকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবো আমি।হা হা হা।(নেকড়ে)
রিদিয়া কি করবে বুঝতে পারছে না।
— ইয়ে মানে বলছিলাম কি আমাকে খেয়ে ফেলার আপনার সাথে একটা সেল্ফি তুলে নেই নেকড়ে ভাই ?। (রিদিয়া)
নেকড়ে টা মানুষের রূপে আসলো।রিদিয়ার কথা শুনে বেকুব হয়ে গেল।
— ভারী অদ্ভুত মেয়ে তুমি। মরার আগে সেল্ফি তুলতে চাইছো।আমার লাইফে আমি এমন স্টুপিড মেয়ে কম দেখেছি। (নেকড়ে)
— আচ্ছা আপনার নাম কি….( রিদিয়া)
— আমার নাম লিও। আমি নেকড়ে রাজ্য থেকে এখানে এসেছি মানুষ শিকারে। (লিও)
— প্রথমে ভয় লাগলে ও এখন ভয় লাগছে না কেন। (রিদিয়া)
— কি ভাবছো। তোমরা মানুষেরা অনেক চালাক।না জানি কখন কি করে বসো। না এখনি তোমায় খাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।(লিও)
নেকড়ে লিও রিদিয়াকে জোর করে টেনে গুহার ভিতরে নিয়ে গেলো।
— প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন। আমার শরীরে রক্ত – মাংস তেমন নেই আমাকে খেলে আপনারই লস হবে?।প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন।(রিদিয়া)
— না না আমি তোকে ছাড়ছি না। (লিও)
বলেই লিও নেকড়ে রূপে চলে আসল।
লিও সামনে এগোচ্ছে আর রিদিয়া ভয়ে ভয়ে পিছনে যাচ্ছে।
লিও রিদিয়ার ওপর ঝাঁপিয়ে পরবে তার আগেই কেউ ঝড়ের বেগে এসে রিদিয়াকে জঙ্গলের বাহিরে নিয়ে আসল।
__________________________
রিদিয়া হা করে ছেলেটির দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলেটির মুখে কালো মাক্স দিয়ে রেখেছে।
— আপনি জঙ্গলের ভিতরে কি করছিলেন। আপনি জানেন না এই জঙ্গলটা খুব ভয়ানক।এই জঙ্গলে ভয়ানক নেকড়ে থাকে।মানুষদের একা ফেলেই ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়।নিজের জীবনের মায়া থাকলে আর এই ভয়ানক জঙ্গলে যাবেন না।এইভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?।
— আচ্ছা আপনি কি ম্যাজিক জানেন এত দ্রুত কিভাবে আমাকে গুহা থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসলেন।(রিদিয়া)
— আমি ম্যাজিক নিয়েই জন্মেছি। আপনার নামটা কি জানতে পারি।
— হ্যাঁ হ্যাঁ কেন নয়।আমি রিদিয়া।আপনি……
— আমার নামটা বলা যাবেনা সময় হলে আমি নিজেই বলবো।
— কেন বললে কি হয় আমি কাউকে বলবো না এমনিতেই আমার এইসব ম্যাজিক অনেক ভালো লাগে।(রিদিয়া)
— চলুন আপনাকে আপনার বাড়ি পর্যন্ত দিয়ে আসি।হাঁটতে হাঁটতে কথা বলি….
— ঠিক আছে চলুন।(রিদিয়া)
— আপনার নেকড়েটাকে ভয় লাগেনি..
— প্রথম ভয় লাগলে ও পরে ভয় চলে গেছে।কিন্তু যখন আমায় খেতে আসছিল ভেবেছিলাম এই হয়তো আমার শেষ দিন?।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার জন্য আমি আরো কিছুদিন বেশি বাঁচতে পারবো।(রিদিয়া)
— আমায় নয় সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানান মেডাম।আর হ্যাঁ আমার ব্যাপারে কেউ যেন কেনোকিছু না জানতে পারে।কেউ জানতে পারলে আমার সমস্যা হবে।আমরা কি ভালো বন্ধু হতে পারি।
বন্ধুত্বের কথা শুনে রিদিয়া মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।
— আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাচ্ছি ভালো থাকবেন। আর ওই জঙ্গলের কাছে আর যাবেন না।আর একটা কথা যখন মনে হবে আপনার বিপদ আপনি,,,
“” পরী পরী পরী চলে আসো তাড়াতাড়ি “”
এই বাক্যটি তিনবার বলবেন আমি সাথে সাথে আপনার সামনে হাজির হবে।
— এইটা কি….(রিদিয়া)
— এতকিছু আপনার জানতে হবে না।সময় হোক তারপর সব বলবো আপনাকে আমি গেলাম।সাবধানে থাকবেন আপনি সামনে আপনার অনেক বিপদ।
বলেই ছেলেটা চলে গেল।
ছেলেটার কথায় রিদিয়া চিন্তায় পরে গেল।
— আমার বিপদ কেন আমি কি কারোর কোনোদিন ক্ষতি করেছি।যাকগে পরেরটা পরে দেখা যাবে।আমি তো ভীষণ এক্সাইটেড প্রথমে ড্রাগনের প্রতিচ্ছবি, দ্বিতীয় নেকড়ে বাবাজীর সাথে দেখা।দূর নেকড়ে বাবাজীর সাথে একটা সেল্ফি তোলা হলো না?।সেল্ফিটা তুললে কাউকে যদি এইসব বলতাম তাহলে হয়তো বিশ্বাস করতো আমার কথা।তৃতীয় ম্যাজিক ম্যান এর সাথে দেখা। (রিদিয়া)
— রিদিয়া দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছিস কেন। প্রায় দশমিনিট ধরে দেখছি নিজে নিজে কথা বলছিস। (মিসেস মেহের)
রিদিয়া অবাক হলো মায়ের কথায়।
— আমি নিজে নিজে কথা বলছি মানি তাহলে কি মা ওই ছেলেটাকে দেখেনি।(রিদিয়া)
— কি ভাবছিস ভিতরে আয়।(মিসেস মেহের)
রিদিয়া কিছু না বলে মায়ের পাশে এসে বসলো।
মিসেস মেহেরের মেয়ের হাতের দিকে নজর পরতেই আঁতকে উঠলেন।
— রি……রিদিয়া তোর হাতের আ…আংটিটা কোথায়……..(মিসেস মেহের)
চলবে…………
#লেখনীতে__ফিহা