#Love_With_Dragon
#Episode_18(২য়_খন্ড)
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]
— মেঘলা এতো দেরি হলো কেন আসতে…(অনিমা)
— আমি তো আসতে চাইছিলাম না রিদিয়াকে রেখে স্যার জোর করে পাঠিয়ে দিল।সকালে আমি একটু ঘুমিয়ে পরেছিলাম এই ফাঁকে রিদিয়া ঘুম থেকে ওঠে বাহিরে চলে যায় হাঁটতে। রাস্তায় আন্টির (মিসেস মেহের) সাথে দেখা হয়।আন্টি রিদিয়াকে দেখে পাগলামি শুরু করে দেয়।রিদিয়াকে এতোদিন স্যার লুকিয়ে রেখেছিল সবার কাছে থেকে কিন্তু এখন সবাই জেনে গেল।রিদিয়াকে এখনো নেকড়ে রাজা হিউগো মারার জন্য ওঁৎ পেতে বসে আছে।আমার ভীষণ ভয় লাগছে ওর জন্য আবার না হারিয়ে ফেলি আমরা আমাদের কলিজার টুকরা বান্ধবীকে।একবার হারিয়ে বুঝেছি আর হারাতে চাই না।নিজের জীবন দিয়ে হলে ও আমরা সবাই রিদিয়াকে রক্ষা করব।(মেঘলা)
— তুই ঠিক বলেছিস স্যার আমাদের সবাইকে রিদিয়ার কাছাকাছি যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।কারন নেকড়ে রাজা খুব চালাক আমাদের ফলো করতে করতে রিদিয়ার ক্ষতি করতে চলে আসবে।(আকাশ)
— স্পর্শিয়ার রান্না শেষ হয়েছে… (নীল)
— হয়ে গেছে তোরা সবাই টেবিলে বসে পর খাবার নিয়ে আসছে। (আদর)
সবাই একসাথে খেতে বসল টেবিলে।
স্পর্শিয়া সবাইকে খাবার বেড়ে দিচ্ছে। মেঘলা মুখে খাবার দিতে যাবে তখনই রোহিত তাকে মনে মনে স্মরণ করে।
— আমাকে যেতে হবে স্যার ডেকেছে। (মেঘলা)
— মাএই তো খেতে বসলি এখনি চলে যাবি।(অনিমা)
— হয়ত রিদিয়ার জন্য। আমি যাচ্ছি ওখানে খেয়ে নিব।(মেঘলা)
মেঘলা সেখান থেকে চলে গেল।
— বুঝেছিস আকাশ তোর রানী কিন্তু দায়িত্ববান মেয়ে হয়ে গেছে।রিদিয়ার জন্য নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত।রিদিয়াকে যতটুকু ভালোবাসে আমাদেরও মনে হয় তার একভাগও ভালোবাসে না।(স্পর্শিয়া)
— হুম রিদিয়াকে পেয়ে এখন তো আমাকেও পাওা দিচ্ছে না।(আকাশ)
— তোর আর আদরের বিয়ে হয়ে গেছে আমাদের
কবে হবে…(নীল)
— বিয়ে না করেই ভালো আছিস ভাই। বিয়ে করে পরে পস্তাতে হবে।বিয়ে করে সুখের জীবনে আর সর্বনাশ ডেকে আনিস না (আদর)
আদর স্পর্শিয়াকে রাগানোর জন্য কথাটি বললো
স্পর্শিয়া কিছু না চুপ করে আছে কিন্তু মুখ লাল হয়ে গেছে।আজকে যে আদরের চৌদ্দটা বাজাবে এইটা সবাই ভালো করেই বুঝতে পারছে।
(রিদিয়ার মৃত্যুর দু’বছর পর আদর আর স্পর্শিয়ার বিয়ে হয়। স্পর্শিয়া সম্পূর্ন একা তাই আদর চাইছিলো না স্পর্শিয়া একা থাকুক যেকোনো সময় বিপদ হতে পারে।অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে স্পর্শিয়াকে বিয়েতে রাজি করায়।স্পর্শিয়ার বাবা-মা কেউ নেই। বজ্রপাতে মারা যায় স্পর্শিয়ার বাবা-মা।বন্ধুর বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে আসছিল রাস্তায় গাড়ি খারাপ হয়ে যায় তাদের।আর প্রচুর বৃষ্টি সাথে বজ্রপাত হওয়া শুরু করে।তারা দ্রুত রাস্তা পার হওয়ার জন্য দৌঁড়ে আসছিল তখনই দুর্ভাগ্যবশত তাদের ওপর বজ্রপাত পরে তারা সাথে সাথে মৃত্যুবরন করে।)
সবাই খাবার টেবিলে বসে খাচ্ছে আর খোশগল্প করছে।
______________________
রোহিত রিদিয়ার মাথায় হাত দিয়ে মনে মনে স্পেল পড়লো। সকালের ঘটনাটি রিদিয়ার মাথা থেকে সরিয়ে ফেললো।না হলে রিদিয়া এইসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে আরো অসুস্থ হয়ে যাবে।
— স্যার ডেকেছেন।রিদিয়ার কোনো সমস্যা হয়নি তো…(মেঘলা)
— রিদিয়া ঠিক আছে। ইরা পিচ্চিটা আমায় ছাড়া খায়না। ওর কাছে যেতে হবে এখন না হলে সারাদিন না খেয়েই থাকবে।তুমি রিদিয়ার খেয়াল রাখ।আর রিদিয়া ঘুম থেকে ওঠলে ওকে খাবার খাইয়ে দিও।(রাহুল)
— ঠিক আছে স্যার আমি রিদিয়াকে দেখে রাখব আপনি যেতে পারেন।(মেঘলা)
রোহিত রিদিয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে সেখান থেকে চলে গেল।
_____________________
— আম্মু দেখো আমার সুপারহিরো চলে এসেছে তাড়াতাড়ি খাবার দেও।(ইরা)
— আমার ইরা পিচ্চিটা কি করে…(রোহিত)
— তোমার জন্য বসে আছি পেটে ক্ষুধা নিয়ে। তুমি কখন আসবে আমরা একসাথে খাব। (ইরা)
ইরারা কথা শুনে রোহিত কানে ধরে ওঠবস করতে লাগলো আর বললো,,,
— সরি পিচ্চি আর এমন হবে না। এখন থেকে ঠিক সময়ে তোমার সুপারহিরো তোমার কাছে চলে আসবে।(রোহিত)
— ঠিক আছে ঠিক আছে মাপ করে দিলাম।এরপর যেন এমন ভুল আর না হয়।(ইরা)
ইরার কথা শুনে রাহুল আর রোহিত হেসে দিলো।
— এইতো সবার খাবার এসে গেছে চল সবাই খাবার শুরু করে দেও। আমি মাকে খাইয়ে দিয়ে আসছি তোমার খাওয়া শুরু করে দেও।(ইরা)
_____________________
রিদিয়া চোখ খুলতেই দেখে মেঘলা তার পাশে বসে আছে। রিদিয়া ধীরে ধীরে শোয়া থেকে ওঠে বসলো।
— আপু তুমি এখনো বসে আছো এখানে।তুমি চলে যাও আমি একা থাকতে পারবো।(অধরা)
— না অধরা আমি যাব না তোমার কাছে থাকব।তুমি যদি আমায় নিজের বোন ভেবে থাক তাহলে আমাকে এখান থেকে যেতে বলবে না।আমি তোমার পাশে থাকতে চাই।(মেঘলা কিছুটা অভিমান করে বললো)
— ঠিক আছে কোনো সমস্যা নাই তুমি থাকতে পারো আমার সাথে?।(অধরা)
মেঘলা খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে অধরাকে খাইয়ে দিতে লাগল।অধরা চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে আর মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে।মেঘলাকে তার অনেক কাছের কেউ মনে হচ্ছে। অধরার মনে হচ্ছে মেঘলাকে যেন কতকাল ধরে চেনে।
হঠাৎ ভয়ানক কিছুর শব্দের অধরার ধ্যান ভাঙে।
— কিসের আওয়াজ আসছে মেঘলা আপু। (অধরা ভিতু কন্ঠে বললো)
— তুই এখানেই বসে থাক আমি দেখে আসছি।(মেঘলা)
অধরা মেঘলার হাত ধরে বলে,,,
— না যেও না বাহিরে মনে হচ্ছে নেকড়ের আওয়াজ।আমাকে আর বাবাকে যখন আক্রমণ করেছিল তখন এমন ভয়ানক আওয়াজ করেছিল।প্লিজ যেও না তোমায় মেরে ফেলবে।(অধরা)
— কিছু হবে না আমার অধরা। তুই বস.. (মেঘলা)
মেঘলা দরজা হালকা ফাঁক করে দেখে সাত-আটটা নেকড়ে অধরার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। নেকড়ে গুলোকে দেখে মনে হচ্ছে অনেক রেগে আছে।চোখ দুটো লাল হয়ে আছে।মেঘলা ভয় পেয়ে গেল।মেঘলা দরজা বন্ধ করে দিয়ে অধরার পাশে এসে বসলো।
— ক….কিছু না অধরা তুই বসে থাক চুপচাপ।(মেঘলা)
অধরার সামনে মেঘলা কিছু করতেও পারছে না।অধরা ভয় পেয়ে যাবে মেঘলার ভাম্পায়ার রূপ দেখে।
দরজায় ধাক্কাধাক্কির আওয়াজ শুরু হলো।মেঘলা কি করবে বুঝতে পারছে না। অধরা ভয় পেয়ে মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে।
সবগুলো নেকড়ে মিলে দরজা ভেঙে ফেললো।অধরা নেকড়ে গুলোকে দেখেই মেঘলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করা শুরু করলো।
— কিছু হবে না অধরা আমি আছি তো?।(মেঘলা)
নেকড়ে গুলো ধীরে ধীরে তাদের সামনে আসতে লাগল।মেঘলা আর উপায় না পেয়ে অধরাকে নিজের কাছ সরিয়ে দিয়ে ভাম্পায়ার রূপ ধারণ করলো। অধরা মেঘলার ভাম্পায়ার রূপ দেখে ভয়ে কাঁপা-কাঁপি শুরু করলো।
দুটো নেকড়ে অধরার কাছে আসতেই মেঘলা নেকড়ে দুটিকে আঘাত করে।নেকড়ে দুটি ক্ষেপে গিয়ে মেঘলাকে প্রচন্ড জোরে আঘাত করে।মেঘলা দূরে ছিটকে পরে।প্রচন্ডভাবে আহত হয়েছে মেঘলা।মেঘলার রোহিতের কথা মনে পরতেই রোহিতকে স্মরন করলো।
সবগুলো নেকড়ে অধাকে ঘিরে ধরে। অধরা ভয়ে কাঁপছে আর নিরব কান্না করছে।একটা নেকড়ে অধরাকে আঁচড় কাটে অধরা চিৎকার করে ওঠে।
আর তিনটি নেকড়ে অধরার ওপর ঝাঁপিয়ে পরার আগেই রোহিত এসে নেকড়েগুলোকে ধরে আছাড় মারতে থাকে।এসব দৃশ্য দেখে অধরা জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।রোহিত নেকড়েগুলোকে মেরে ফেললো। মেঘলার ক্ষতস্খান ঠিক করে দিল।মেঘলা সুস্থ হয়ে গেল।
— মেঘলা তুমি এখন যাও আমি অধরাকে দেখছি।
চলবে……
#লেখনীতে__ফিহা
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]
______________________
[বানানে ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন]
★
[গল্প সম্পর্কে গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি পাঠক-পাঠিকাদের কাছ থেকে]