Love_With_Dragon #Episode_20(২য়_খন্ড)

0
679

#Love_With_Dragon
#Episode_20(২য়_খন্ড)
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]

অধরা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। রুমটার ভিতরে যাবে কি যাবে না দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে।

— আচ্ছা যদি কোনো বিপদ হয় ভিতরে গেলে।কিন্তু আমার মন চাইছে ভিতরে যেতে।মন যখন চাইছে তাহলে যাই যা হবার হবে। (অধরা)

অধরা রুমের দরজা ঠেলে ধীর পায়ে রুমটাতে প্রবেশ করলো। রুমটা সম্পূর্ণ অন্ধকার। অধরার বুক ধুকপুক করছে রুমটা অন্ধকার দেখে।রুমটাতে একটু আলোর ছিটেফোঁটোও নেই। অধরা অন্ধকারে দেওয়ালে হাত দিয়ে দিয়ে লাইটের সুইচ খুঁজে পেল।সুইচ অন করতেই পুরো রুমটা আলোকিত হয়ে গেল।অধরা সুইচ অন করে চোখ বন্ধ জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে লাগল। কিছুক্ষণ অন্ধকারে থাকার কারনে অধরার নিঃশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে আসছিল।চোখ খুলতেই অধরা ভীষণ আশ্চর্য হলো।

সম্পূর্ণ রুম জুড়ে ওর মতো দেখতে একটি মেয়ের ছবি দেওয়ালে টাঙানো । অধরা চোখ দুটো বড় বড় করে ছবিগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে।

— মিহি আপু বলেছিল আমার মতো দেখতে ওনার একটা বোন ছিল।কিন্তু এতো দেখতে সম্পূর্ণ আমার মতো….?।চোখ, ঠোঁট, মুখ আর চুল……. (অধরা)

অধরা নিজের চুলে হাত দিয়ে একবার ছবির মেয়েটির চুলের দিকে তাকাচ্ছে আবার নিজের চুলের দিকে তাকাচ্ছে।

— চুলগুলো একদম আমার মতো।কিন্তু এইটা কি করে সম্ভব একদম হুবহু আমার মতো দেখতে। এইজন্যই ওই মহিলা আমায় দেখে নিজের মেয়ে মনে করে পাগলামি করে।(অধরা)

(( রিদিয়ার মৃত্যুর পর রোহিত নিজের বাড়িতে সবাইকে নিয়ে আসে।কারন মিহি আর মিসেস মেহেরের যেকোনো সময় বিপদ হতে পারে আর রিদিয়ার মৃত্যুতে তারা মানসিক ভাবেও ভেঙ্গে পরে।রিদিয়ার রুমের সব জিনিসপত্র রোহিত নিজের বাড়িতে এনে এই রুমটিতে রাখে। ((যেই রুমটিতে এখন অধরা রয়েছে))
রিদিয়ার রুমের খাট থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ে আসে রোহিত।রিদিয়ার ব্যবহৃত একটি জিনিস ও ফেলে আসেনি রোহিত।রোহিত চাই তো না কেউ রিদিয়ার রুমে আসুক শুধু সে ছাড়া তাই রোহিত রুমটা তালাবদ্ধ করে রেখেছে। রোহিত রেগুলার রিদিয়ার রুমটিতে আসে কিন্তু আজকে রোহিতের শরীর একটু বেশি খারাপ লাগার কারনে রোহিত রিদিয়ার রুমে আসেনি।))

হঠাৎ অধরার চোখ গেল আলমারির দিকে।আলমারির ভিতর থেকে হলুদ রঙের আলো বের হচ্ছে। অধরা ভয় পেয়ে গেল আলমারি থেকে আলো বের হতে দেখে।অধরা রুম থেকে বের হতে গিয়ে আবার থেমে গেল।ভীতু চোখে আবার আলমারির দিকে তাকালো।

অধরা ভয় ফেলে ও তার মন সম্পূর্ণ আলমারির কাছে। অধরা মনে মনে ঠিক করলো সে দেখবে কি আছে আলমারিতে। অধরা কাঁপা কাঁপা শরীর নিয়ে আলমারির কাছে আসল।ভয়ে অধরার সম্পূর্ণ শরীর ঘামছে। অধরা ঢোক গিলে কাঁপা কাঁপা হাতে আলমারি খুললো।

আলমারি খুলতেই অধরার চোখ পরলো একটি কাঁচের বাক্সের দিকে।বাক্সটির ভিতরে একটি আংটি রয়েছে।

— ত……তাহলে এ…ই আংটি থেকেই আলো বের হচ্ছে। (অধরা)

অধরা হাতে কাঁচের বাক্সটি নিল। কাঁপা কাঁপা হাতে বাক্সটির মুখ খুললো। বাক্সটির মুখ খুলতেই আংটিটি নিজে নিজে বাক্সটি থেকে বের হয়ে গেল। আংটিটিকে নিজে নিজে বের হতে দেখে ভয়ে অধরার হাত থেকে কাঁচের বাক্সটি নিচে পরে ভেঙ্গে গেল।

— পুচকি…….?…..

অধরা এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে।

— কে…….কে কথা বলছে… (অধরা)

— আরে পুচকি আমি তোর মিট্টু রে মিট্টু……

আংটিটি নিজে নিজে অধরার হাতের আঙ্গুলের মধ্যে ডুকে গেল। অধরা ভয়ে চিৎকার করা শুরু করলো।অধরার চিৎকারে বাড়ির সবাই রুম থেকে বের হয়ে আসল।রোহিত নিচে নামতেই দেখলো রিদিয়ার রুমটা খোলা।রোহিত দৌঁড়ে রুমে প্রবেশ করলো। রুমে প্রবেশ করতেই দেখে অধরা কান্না করছে আর হাতের আঙ্গুল থেকে আংটি খোলার চেষ্টা করছে।

রোহিত অধরার কাছে গেল। অধরার হাত থেকে আংটিটি খুলে ফেললো। অধরা রোহিতকে দেখেই জড়িয়ে ধরলো।

রোহিত অধরাকে কোলে তুলে অধরার রুমে নিয়ে আসল।অধরাকে খাটে বসিয়ে দিল। অধরা এখনো রোহিতকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। অধরা রোহিতের বুকে মাথা রেখে এখনো কাঁপছে।
মিহি রোহিতের পিছনে পিছনে অধরার রুমে আসল।রোহিত মিহিকে বলেছে সে সামলে নিবে। মিহি চলে গেল রুম থেকে।

— মেয়েটা বেশি ভয় পেয়ে আছে। (রোহিত)

অধরার মনে হচ্ছে রোহিতের বুকেই সে শান্তি পাচ্ছে। রোহিতের বুক থেকে মাথা সরিয়ে নিতে ইচ্ছে করছে না অধরার।

রোহিত অধরাকে শুইয়ে দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।আর অধরাকে বললো চোখ বন্ধ করে রাখতে তাহলে ঘুম চলে আসবে আর ভয় ও কমে যাবে।অধরা তাই করলো কিন্তু অধরার মনে বিভিন্ন প্রশ্নরা ঘুরপাক খাচ্ছে। সেই প্রশ্নগুলোর উওর অধরা কার কাছে পাবে।

রোহিত রিদিয়াকে ঘুমিয়ে যেতে দেখে রুম থেকে চলে গেল।

— অধরা ওই রুমে কিভাবে পৌঁছাল রুমটাতে তো তালাবদ্ধ ছিল।কেউ কি ওকে সাহায্য করছে নাকি ম্যাজিকেল আংটি এই কাজটা করেছে….. (রোহিত)

__________________________

তিনটা পঁচিশ মিনিটে কোনো কিছুর ধস্তাধস্তির শব্দে অধরার ঘুৃম ভেঙে গেল। অধরা শোয়া থেকে ওঠে বসলো। ধস্তাধস্তির শব্দের সাথে ভয়ানক আওয়াজও শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। আওয়াজটা শুনেই অধরার বুঝতে বাকি রইলো না যে এইটা একটা নেকড়ের আওয়াজ।

— নেকড়েগুলো কি এখানেও চলে এসেছে আমাকে মারার জন্য কিন্তু নেকড়েগুলো কি করে জানবে আমি এখানে আর আমার পিছনে কেন লেগেছে নেকড়েগুলো…..?… (অধরা)

অধরা ভালো করে কান দিয়ে শুনার চেষ্টা করছে আওয়াজ কোন দিক থেকে আসছে।অধরা খাট থেকে নেমে ধীর পায়ে জানালার কাছে গেল।জানালা খুলতেই সামনে জঙ্গল দেখতে পেল অধরা।

জঙ্গলের বাম দিকে নেকড়ে, ড্রাগন আর ভাম্পায়ার মারামারি করছে।অধরা ভয় পেয়ে গেল এইসব দেখে।

হোয়াইট কালারের ড্রাগনটি নেকড়ে আর ভাম্পায়ারের সাথে অনেকক্ষণ মারামারি কারার পর একপর্যায়ে ড্রাগনটি অনেক বড় হয়ে গেল।ড্রাগনটি প্রথমে নেকড়েটিকে গিলে ফেললো তারপর ভাম্পায়ারটিকে দুই খন্ড করে ফেললো।এইসব দেখে অধরার পুরো শরীর ঘামছে সাথে শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। নেকড়ে আর ভাম্পায়ারকে গিলে ড্রাগনটি মানুষের রূপে আসল। মানুষটিকে দেখে অধরার মাথায় বাজ পড়লো। অধরা নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।

— স্যা……স্যার একজন ড্রা….ড্রাগন…. ?….।এই বাড়ির কেউ মানুষ তো নাকি সবাই…… না না আমাকে এই বাড়ি থেকে পালাতে হবে তাহলে আমার ও নেকড়ে আর ভাম্পায়ারের মতো অবস্থা হবে।অধরা ব্যাগ গুছানো শুরু করলো।ব্যাগ নিয়ে লুকিয়ে বাড়ির মেইন দরজা খুলতে যাবে তার আগেই পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো,,,,,,

— “লুকিয়ে কোথায় যাচ্ছ”………??

চলবে……
#লেখনীতে__ফিহা
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]
______________________

[বানানে ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন]

[গল্প সম্পর্কে গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি পাঠক-পাঠিকাদের কাছ থেকে]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here