#সেই_তমসায়_১
প্রারম্ভিকা.
এহতেশাম সাহেব উই’লের কাজ শেষ করে বেশ স্বস্তি পেলেন। সন্তানরা তাকে খুব একটা সময় দেয় না। যেটুকু সমীহ অবশিষ্ট আছে তা বোধহয় খানিকটা এই বিশাল সম্প*ত্তির উত্তরা/ধিকার হবার খায়ে*শেই। তাদের বুদ্ধিশুদ্ধির উপরেও তার তেমন একটা ভর*সা নেই। তার এত কষ্টার্জিত জিনিস তিনি শুধু শুধুই ওদের হাতে তুলে দিতে ভরসা পাননি। আবার অন্যত্র দান করে দেবেন, ততটা উদারমনাও তিনি নন। তাই এই অদ্ভুতুরে দা”নপত্র তৈরি করা।
আসল উইল তিনি লুকিয়ে রেখেছেন কৌ*শলে। নিজের বুদ্ধির উপরে তার অগাধ আস্থা। এখন নতুন অর্থাৎ দ্বিতীয় উ’ইলে কেবল সেই প্রথম উ’ইলটা খোঁজার নির্দেশনা আছে, এবং তাতে নির্দেশিত কথার যেন বিন্দুমাত্র হেরফের না হয়, খুব স্পষ্টভাবে তাই লিখেছেন। খানিকটা মাথা খা*টিয়ে বের করে তারা নিজেদের উত্তরা*ধিকার নিশ্চিত করুক। তাতে যে অনেকটা সময় লাগবে, এটা তিনি নিশ্চিত। এই যে কিছুটা বিলম্বিত করলেন, এতে সন্তানদের বুদ্ধির পরিচয় নেবার পাশাপাশি কিঞ্চিৎ শা*স্তিও দেয়া হলো বলেই তার মনে হয়!
কাজ শেষে স্বা*ক্ষী দু’জনকে বিদায় করেছেন, এবার তার উকিল রমজান আলীকে বললেন,
“সময়মতো এই দ্বিতীয় উ’ইলটা ওদের হাতে পোঁছে দিও। মনে রেখো, তোমাকে কিন্তু আমি বিশ্বাস করি।”
“আপনি চিন্তা করবেন না। নুন খেয়েছি। নেম*ক*হা*রা*মি করব না।” এরপর খানিকটা ইতস্ততভাবে বলল, “আচ্ছা, স্যার, আসল উ”ইল আর সোনাদানা আরও যা আছে সব একসাথে রেখেছেন?”
এহতেশাম সাহেব মনে মনে উল্লসিত হলেন, আসলে তিনি কাউকে একবিন্দু বি*শ্বাস করেন না। সারাজীবনেও করেননি। তিনি উত্তরে বললেন,
“সেটা খুঁজে বের করতে হবে। আমি কিছু ক্লু’ দিয়ে রেখেছি। সেসব সময়মতো ওদের কাছে পোঁছে দেওয়া তোমার কাজ। তুমি তো জানো, তুমিও কিছু পাবে সেখান থেকে। ওদের সহযোগিতা করতে গিয়ে ওদের নুন খেতে গিয়ে আমার বি*শ্বাস ভা*ঙতেই পারো। মানুষের মন, বলা তো যায় না।”
রমজান আলীর চোখ খানিকটা যেন জ্ব*লে উঠতে দেখলেন, তবে সামলে নিয়েছে দ্রুততার সাথে, তাও তিনি বুঝতে পারলেন।
“এখন যাও তো। আমি ঘুমাব। খুব ঘুম পাচ্ছে।”
শেষবার পড়ে চোখ বুলিয়ে নিলেন নিজের স্বাক্ষরটায়। তার নাম আর আজকের তারিখটা তেইশ/সাত/ঊনিশশো বিরানব্বই।
উকিল চলে গেলে এহতেশাম সাহেব তার ব্যক্তিগত সহকারী সাজিদকে ডাকলেন। ছেলেটাকে কয়েকবছর থেকে দেখছেন, কাজের জন্য তার হাতেই শিখিয়ে পড়িয়ে তৈরি করেছেন বলা যায়। সে এলে একবার ওর দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন। সবার চোখেমুখে তাকে নিয়ে একটা সমীহ খেলা করে। এটা দেখতে তিনি ভীষণ আনন্দ পান।
ওর দিকে একটা খাম এগিয়ে দিয়ে বললেন, “সব তোমাকে বলা আছে। সময়মতো সবার হাতে এটার কপি দিয়ে দেবে। আর আমি এখন ঘুমাব। কেউ যেন বির*ক্ত না করে।”
তিনি নিজের ঘরের দরজাটা বন্ধ করে টেবিলটার কাছে এসে চেয়ার টেনে বসলেন। ইদানিং তার কেমন যেন অস্ব*স্তি হয়। পৃথিবীতে তার সময় বোধহয় ফু’রিয়ে আসছে। কিন্তু তিনি যেতে চান না। বেঁ*চে থাকা তার বড় প্রিয়। অথচ চলে যেতেই হয় সবাইকে। শুধু শুধুই এত দৌড়ঝাঁপ করে মানুষজন। সব তো সেই ফেলেই যেতে হচ্ছে, কিছু অকৃ*তজ্ঞ মানুষের জন্য! সবাই কি অকৃ*তজ্ঞ! হবে হয়তো!
এই অস্ব*স্তির আরেকটা কারণ আছে, মনে হয় যেন কেউ সারাদিন তার ঘা’ড়ের উপরে নিঃশ্বাস ফে’লছে! তিনি অভ্যাসবশত তার ডায়েরিতে কিছু লিখলেন। এরপর হ্যারিকেনের আলো একেবারে কমিয়ে নিভু নিভু করে শুয়ে পড়লেন। ইলেক্ট্রি*সিটির বেহা’ল দ’শা!
এক.
ময়ূখ এহসান (সত্য’সন্ধ), প্রাইভেট ডিটে*,কটিভ। নিজের স্বাধী*নতা ধরে রেখে সত্যের অনুস*ন্ধান করতে চায় বলে এই ‘সত্য’সন্ধ’ নামটা জুড়ে দিয়েছে নিজের সাথে। ভিজিটিং কার্ড কিংবা নেমপ্লেট সবজায়গায় এভাবেই ব্র্যাকেটব”ন্দী করে দেয় শব্দটা৷
ময়ূখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে বিসিএস দিয়ে এএস’পি হিসেবে পুলি’শে জয়েন করেছিল। দুই বছর সেই পেশায় থাকার পরে ওর নামে শৃ*ঙ্খলা ভ*ঙ্গের অভি”যোগ এনে শো-ক’জ নোটিশ পাঠানো হয়। অতিরিক্ত রা’গ ওর জন্য বরাবরই একটা বাঁ’ধা হয়ে এসেছে। কোনো অন্যা’য় কিংবা অন্যা’য্য কিছু দেখলে বা নিজের প্রাপ্য সম্মান কিংবা কৃতিত্ব না পেলেই কেন যেন মাথা গর’ম হয়ে যায়! সে রে”গেমেগে কোনো ব্যাখ্যা তো দেয়ইনি, উল্টো চাকরিটাই ছেড়েছে। অন্যের হু’কুম তামি'”ল করা, কারোর কাছে জবা”বদি”হিতা করার ধাত ওর একেবারেই নেই। তাই তারপর আর সেসবের চেষ্টাও করেনি। নিজের কাজের কৈ”ফিয়ত দেয়া ওর চ”রিত্রে অনুপস্থিত।
এরপর খুঁজেপেতে এই দ্বিতল বাড়ির ছাদ সংলগ্ন দুটো রুম ভাড়া নিয়েছে। একটা ব্যবহার করা হয় থাকার জন্য, আরেকটা অফিসঘর হিসেবে। ভাড়াটা কম, বাড়িটাও খোলামেলা জায়গায়। একদম রাস্তার সাথেই।
যদিও নিজের নামের সাথে প্রাইভেট ডিটে”কটিভ জুড়ে দিয়েও প্রথমদিকে তেমন কোনো কে’স পায়নি। দাম্পত্য কল’হের জেরে স”ন্দেহ, ফ”লো করতে হবে। নয়তো নতুন বিয়ে করবে, পাত্র-পাত্রীর ঠি”কুজি গো”ষ্ঠীর খ”বর বের করে তাদের দিতে হবে। বেশিরভাগ এমন কে”স-ই ছিল। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আর্থিক দিক ভেবে এসব কে”স নিয়েছেও। এদেশে এসব ডিটেক”টিভের ভাত নেই আসলে!
গত দুইমাস আগে ওর ভাগ্যে শিঁকে ছেঁ”ড়ে। পত্রিকার প্রতিবেদন পড়ে অ*জ্ঞা’ন পা*র্টির একটা চ*ক্র ধরে ফেলায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল। এরপর সেই খবর পত্রিকায় এসেছিল ছোট্ট করে।
প্রতিবেদনে ওর নামটারও উল্লেখ ছিল একবার। ভেবেছিল এরপর হয়তো কিছু শক্তপোক্ত, মাথা খাটানোর মতো কোনো কে’স আসবে। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি এখন অব্দি। একটা বিতৃষ্ণা জমা হয়েছে মনে, দেশ থেকে সব সাস*পেন্স, ক্রা’*ইম উঠে গেল নাকি!
অফিসঘর বলতে একটা বিশাল কাঠের টেবিল, এপাশে ওর জন্য একটা চেয়ার পাতা। ক্লায়েন্টের বসার জন্য ওইপাশে দুটো চেয়ার। একটা কাঠের বড় বইয়ের তাক। তাতে নানারকম বই; যার বেশিরভাগ ল’ এন্ড ক্র*ই*মের সাথে সম্পর্কিত। পৃথিবীর বড় বড় ক্রা*ই*ম, খু*ন, সিরি”য়াল কি*লিং এসবের পেপার কা*টিং বা বিভিন্ন প্রতি*বেদন, বইও সংগ্রহে আছে৷ কাজ না থাকলে এসব পড়েই নিজের মস্তিষ্ককে ঝালিয়ে নেয়। ভাবে একসময় শার্লক হোমসে মতো ক্ষুরধা*র মেধা কিংবা এরকুল পোয়ারোর মতো তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ ক্ষমতা ওর আয়ত্তে আসবে! ব্যোমকেশ, ফেলুদাদের মতো অহরহ রহ”স্যের কূলকিনারা করে ফেলবে। ওর নাম ছড়িয়ে পড়বে দেশ থেকে দেশান্ত”রে! কিন্তু সেই স্বপ্ন যেন দিনদিন বিলীন প্রায়! তবে হাল না ছাড়ার মনোভাব ওকে এখন অব্দি টিকিয়ে রেখেছে। সে কখনো হা*রতে পছন্দ করে না!
আজও অফিসে বসে পত্রিকার পাতা উল্টাচ্ছিল, সেই সময় এই বাসার দারোয়ান সোবহান চাচা একটা চিঠি নিয়ে হাজির। ওর কাছে সচরাচর চিঠি আসে না বলে বেশ বিস্মিতই হয়েছিল প্রথমে।
হলুদ খামের নিরী*হদর্শন চিঠিটা খুলতেই একটা দশ হাজার টাকার চে”ক সাথে একটা চিরকুট পাওয়া গেল। চিরকুটে লেখা,
“চিঠি পাওয়া মাত্র সেদিনের রাতের ট্রেন ধরে ময়মনসিংহ স্টেশনে নামবেন। পশ্চিমের দিকে যেই নিচু রাস্তাটা আছে ওখানে অপেক্ষা করবেন। সেখানে আমার লোক থাকবে। সে আপনাকে চিনে নেবে। বাকি টাকা আলোচনা সাপেক্ষে দেওয়া হবে।”
চেক সিগনেচার করা আছে, ‘সাঈদ আহমেদ’ নামে। সিগনেচারে নিচে তিন দিন আগের তারিখ দেয়া, ১৩/১০/১৯৯২!
এই, আর কিছু লেখা নেই কোথাও। প্রথমে পাত্তা দিল না, ভাবল কোনো পাগ*লের কাজ। গতমাসেই তো সে টিএনটি সংযোগ নিয়েছে, টেলিফোনও করতে পারত।
চিঠিতে অন্য কোনো হি*ডেন লেখা আছে কিনা খুঁজে দেখল, কিন্তু পেল না কিছুই। কী মনে করে ব্যাংকে গিয়ে টাকা তুলে নিয়ে এলো। ময়ূখ ভীষণ বিস্মিত হয়েছে আজ।
কেউ ফাজ*লামো করার জন্য কাউকে এতগুলো টাকা পাঠাবে না নিশ্চয়ই। চিঠির ভাষার
আদে*শের ভঙ্গিতে ওর মেজা*জ চ”ড়ে গিয়েছিল, এখন রহ*স্যের গ”ন্ধে তা কর্পূরের মতো মিলিয়ে গেল, বরং ভেতরে ভেতরে রোমাঞ্চ অনুভব করল। একটা নাম ছাড়া আদতে আর কিছুই জানে না ময়ূখ।
সে নিজের একটা ব্যাগ গুছিয়ে ফেলল, তাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আর কিছুদিন থাকার উপযোগী জিনিসপত্র ভরে নিয়ে বেরিয়ে আসছিল৷ সিঁড়ির কাছে বাড়িওয়ালা চাচার মেয়ে মিনুর দেখা পেল। মেয়েটা বেশ সুন্দরী কিন্তু কিছুটা যেন গায়ে পড়া ধরনের। ওকে বেশ বিরক্ত করে মাঝেমধ্যে। অকপটে নিষেধ করেও কাজ হয়নি তেমন! কিছু বলার জন্য মুখ খোলার আগেই ময়ূখ তড়িঘড়ি করে কোনোরকমে বলল,
“ট্রেনের তাড়া আছে। পরে কথা হবে। চাচাকে সালাম দিও।”
ইউনিভার্সিটিতে থাকাকালীন দুই দুইবার চেষ্টা করেছিল, একবারও সফল হতে পারেনি প্রেমে। তাতেই একটা বিতৃ”ষ্ণা জমেছে। আর কোনোদিন সেই মুখো হয়নি। ভাবল এত কম ভাড়ায় এমন একটা বাড়ি হয়তো পাওয়া যাবে না, কিন্তু চেষ্টা তো করতেই হবে। বাড়িওয়ালা চাচা, চাচি ওকে এত স্নেহ এজন্যই হয়তো করেন, আবার সহজাতও হতে পারে৷ কে জানে! কিন্তু ময়ূখ কোনো রি*স্ক নিতে চায় না৷
কী সম”স্যা, কতটা গভীর, কীসের মধ্যে জড়াচ্ছে সেসব না জেনেও শুধুমাত্র অদম্য কৌতূহল সঙ্গী করে সেদিন সন্ধ্যায় কমলাপুর স্টেশনে এসে ময়মনসিংহের ট্রেনে চাপল…
কৌতূহল মেটানোর দুর্নিবার আকর্ষণ ওর কাছে প্রাধান্য পেল, বাকিটা গিয়েই দেখা যাক নাহয়। কতটা র”হস্য ওর জন্য জমা আছে, সে কতটা উপভোগ করবে সেটা ভবিতব্যের হাতেই থাকুক!
দুই.
ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে ট্রেন থেকে নেমে এলো ময়ূখ। যাত্রীদের ব্যস্ত যাতায়াতে তখন মুখরিত স্টেশন চত্বর। এই রাতেও গন্তব্যে পোঁছানোর তাড়া সকলের মধ্যে, ময়ূখ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ওর কারোর কাছে ফেরার নেই, বলা যায় আজন্ম যা’যা”বরের জীবন। ওর ঘরে কেউ ওর জন্য অপেক্ষা করে নেই, অপেক্ষা করার কেউ নেই! হবেও না হয়তো কোনোদিন!
দ্রুতই নিজেকে সামলে নিল, এমন আবেগের বা”ড়াবাড়ি কি ওকে মানায়!
সে আশেপাশে তাকিয়ে দিক ঠিক করে নিয়ে পশ্চিমদিকে হাঁটতে শুরু করল। স্টেশনের নির্ধারিত উঁচু করা জায়গাটা পেরিয়ে এসে কাঁদা মাখা রাস্তায় নেমে এলো। এরমধ্যে একটা লোক ওর নজর কাড়ল। সে সরাসরি গিয়ে প্রশ্ন করল,
“আপনি সাঈদ আহমেদ?”
হকচ*কিয়ে উঠেই সামলে নিয়ে লোকটা পাল্টা প্রশ্ন ছুঁ’ড়ল, “আপনি ময়ূখ এহসান?”
“হ্যাঁ। আদি এবং অকৃত্রিম।” হেসে উত্তর দিল ময়ূখ।
“আমি সাজিদ রহমান। সাঈদ স্যারের কাছ থেকে এসেছি। এবার চলুন, যাওয়া যাক।”
আর কোনো কথা হলো না। বেশকিছু দূর হেঁটে গাঙিনাপাড় ছাড়িয়ে এসে সাজিদ প্রশ্ন করল,
“আপনি এত দ্রুত আমাকে খুঁজে পেলেন কী করে?”
“তেমন কঠিন কিছু নয়। সবাই নিজদের নিয়ে ব্যস্ত, তো কেউ উদ্দেশ্যহীন দাঁড়িয়ে। একমাত্র আপনাকেই দেখলাম কারোর জন্য অপেক্ষা করছেন। বারবার উৎক*ণ্ঠায় সামনে তাকাচ্ছেন। সেই উৎক*ণ্ঠিত চেহারা দেখে এটুকু নিশ্চিত হলাম, এমন কারোর জন্য অপেক্ষা করছেন যাকে আপনি চেনেন না। মুখে বিতৃ*ষ্ণার ভাব দেখে মনে হলো, প্রতীক্ষিত ব্যক্তির আসার তেমন নিশ্চয়তা নেই। তাই ঢি”ল ছুঁ”ড়লাম, জায়গাম*,তো লেগে গেল।”
“বেশ। আমাদের মধুপুরের বাস ধরতে হবে। চলুন।”
“সরাসরি আমাকে সেখানে ডাকলেই পারতেন।”
“কিছু সমস্যা আছে বলে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
“আমি যদি না আসতাম?”
“আগামীকাল পর্যন্ত দেখতাম। না এলে অন্য ব্যবস্থা করা হতো।”
“অর্থাৎ আপনি এই তিনদিন এখানে অপেক্ষা করেছেন, তাই তো?”
“দুইদিন। চিঠি পোস্ট করার পরেরদিন থেকে। রেজিস্ট্রি চিঠি। এরমধ্যে পেয়ে যাবার কথা। আপনার ইচ্ছে হলে চলেও আসার কথা।”
একটা রিকশায় চেপে বসেছে। বাসস্ট্যান্ডে এসে বাস ছাড়তেই ময়ূখ প্রশ্ন করল,
“এবার বলুন কে*সটা কী? জেনেশুনে যাই।”
“এহতেশাম আহমেদ। এককালে বিশাল জমিদারি ছিল তাদের। বিশাল বড় ধন*কুবের বলা যায় তাকে। উনার ম্যানেজার আমি। তিনি তার সন্তান এবং যারা দীর্ঘদিন তার দেখাশোনা করেছেন, তাদের জন্য একটা উ*ইল করেছেন। কিন্তু সেটা সরাসরি দেননি। কিছু জটিল ক্লু* রেখে দিয়েছেন। আসল উ*ইল ছয়মাসের মধ্যে খুঁজে না পেলে সেগুলো সম্ভবত কোনো দাতব্য সংস্থায় চলে যাবে।”
“আমাকে সেই উ*ইল খুঁজে বের করতে হবে, এটাই তো?”
“হ্যাঁ। বিস্তারিত জানবেন সাঈদ স্যারের কাছ থেকে।”
“তিনি কি এহতেশাম আহমেদের ছেলে?”
মাথা ঝাঁকিয়ে উত্তর দিয়ে সাজিদ বলল, “আপনি কিন্তু ওই বাড়িতে যাচ্ছেন সাঈদ স্যারের বন্ধু হিসেবে। উনি চান না, বাড়িতে গোয়ে’ন্দার আগমন অন্যরা জানুক।”
বেশ গোপ*নীয়তা, ভাবল ময়ূখ। প্রশ্ন করল, “কিন্তু তিনি সরাসরি দেননি কেন?”
“তার ধারণা তার সন্তানরা অক*র্মণ্য। তাদের ঘটে বুদ্ধির জোর কতটা সেটার একটা পরীক্ষা করে দেখতে চান। আসলে তিনি এমন কিছু কাণ্ড করতেন, সন্তানদের সবসময় তু”চ্ছতাচ্ছি”ল্য করতেন বলে তারা স্যারকে এড়িয়েই চলতেন।”
ময়ূখ কিছু একটা ভাবছিল, এরপর প্রশ্ন করল, “ভদ্রলোক কবে মা*রা গেছেন?”
“মাস দেড়েক আগে। আমাদের ধারণা তিনি খু*ন হয়েছেন!”
…….
(ক্রমশ)