ভালোবাসি তোকে ❤পর্ব- ৬
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
.
সেদিন কিছুক্ষণের জন্যে বাকশক্তিই হারিয়ে ফেলেছিলাম আমি। সবাই যে চরমভাবে শকড সেটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ইশরাক ভাইয়ার মৃত্যুতে সবাই ভীষন আঘাত পেয়েছেন। ইশরাক ভাইয়া মানুষটাই এরকম ছিলেন। সবার সাথে মিশে গেছিলেন। সবার চোখের মনি ছিলেন উনি। আদিব ভাইয়ার চোখ দিয়ে নিরবে জল পরছে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে আদ্রিয়ান ভাইয়া একদম পাথরের মতো বসে ছিলেন। সেই নিরবতা যে ওনার চরম কষ্টের কারণ সেটা বুঝতে বাকি নেই আমাদের কারো। শুধু একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন ইশরাক ভাইয়ার লাশটার দিকে। আমি আওয়াজ করেই কেঁদেছিলাম সেদিন। ইশরাক ভাইয়ার বলা একটা কথা বারবার কানে বাজছিলো। “অনি, এইচ এস সি টা দিয়েই বিয়েটা করে ফেলো তো? তোমার বিয়েতে জমিয়ে মজা করবো সবাই মিলে।”
সেইসব কথা ভাবতে ভাবতে না চাইতেও চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরছে এখন। ইশরাক ভাইয়ার সেই দুষ্টুমি, মজা সব বেশিই মনে পড়ছে আজকে। আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে দেখি উনি চুপচাপ ঘুমিয়ে আছেন আমার কাধে মাথা রেখে। আমার আর ওনাকে ডাকতে ইচ্ছে করলো না। তাই ওনার মাথাটা আস্তে করে নিজের কোলে শুইয়ে দিলাম তারপর দেয়ালে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। নানারকম কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানিনা। সকাল বেলা রোদের হালকা আলো চোখে পরতেই আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি উনি এখনো ঘুমোচ্ছেন। আমি শুধু ওনার মুখের দিকেই তাকিয়ে আছি। এক অদ্ভূত মায়া আছে ওনার মুখে। হয়তো আমিও মায়ায় পরে যাচ্ছি। কিছু কিছু জিনিস আমাদের হাতে থাকেনা। অনেক সময় আমাদের অজান্তেই আবার কখনো না চাইতেও আমাদের সাথে অনেক কিছু ঘটে যায়, আমরা অনেককিছু করে ফেলি। অনেকে বলে, ‘যা করবে বুঝে শুনে জেনে তারপর করবে’ আবার একটা প্রবাদও আছে ‘ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না’। সত্যিই কী সবসময় এটা সম্ভব? মানুষের জীবণের সবকিছু কী ভেবেচিন্তে হয়? আবেগ, অনুভূতির মতো কিছু কারণে অনেকসময় ভাবতে ইচ্ছে করেনা। সবকিছু যদি সত্যিই আমাদের হাতে থাকতো তাহলে মানবজীবন এতোটা জটিল হতো না। হঠাৎ খেয়াল করলাম উনি নড়ে উঠছেন।রোদের জন্যে কপাল হালকা কুচকে আছে ওনার। উনি আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালেন। আর ওনার দৃষ্টি সরাসরি আমার ওপরেই পরলো। উনি এখনো ভ্রু কুচকে রেখেছেন। কিছুক্ষণ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থেকে হয়তো বুঝলেন যে আমার কোলে শুয়ে আছেন তাই ঝট করেই উঠে বসলেন। আমি বোকার মতো তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে? এভাবে লাফিয়ে ওঠার কী ছিলো? আস্তেও তো উঠতে পারতেন। উনি এদিক ওদিক তাকিয়ে তারপর আমার দিকে তাকিয়ে ইতস্তত করে বললেন,
— ” সরি। আসলে কাল রাতে কখন ঘুমিয়ে পরেছি বুঝতেই পারিনি। সারারাত এখানেই ছিলাম। আমাকে ডাকলেনা কেনো?”
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম ,
— ” ডাকতে ইচ্ছে করছিল না।”
উনি একটু অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালেন। অবাক কন্ঠেই বললেন,
— ” সারারাত এভাবে বসে থাকতে কষ্ট হয়নি তোমার?”
আমার কী হলো নিজেই জানিনা। ওনার দিকে একদৃষ্টিতেই তাকিয়ে বললাম,
— ” একটুও কষ্ট হয়নি। তবে এটুকু বলতে পারি যে ভালোলেগেছে, ভীষণ ভালোলেগেছে। এক অদ্ভুত শান্তি পেয়েছিলাম।”
উনি স্লো ভয়েজে বললেন,
— ” কেনো?”
আমিও বিনা কোনো সংকোচেই স্পষ্টভাবে বললাম,
— ” আপনি কাছে ছিলেন তো।”
উনি একটু চমকে গেলেন। হয়তো আমার কাছে এতোটা স্পষ্ট উত্তর আশা করেননি উনি। তাই একটু অস্বস্তিতে পরে গেছেন। আমি ওনাকে আর অস্বস্তিতে রাখতে চাইলাম না তাই কথা কাটিয়ে বললাম,
— ” কফি পাঠিয়ে দেবো? নাকি নিচে গিয়ে খাবেন?”
— ” নিচেই চলো। ”
— ” আচ্ছা আসুন তাহলে।”
বলে আমি নিচে চলে এলাম উনিও আমার পেছন পেছনই আসছেন। সিড়ি দিয়ে নেমেই দেখি সজীব ভাইয়া,অর্ণব ভাইয়া, জাবিন এমনকি ইফাজ ভাইয়া আর আপিও দাঁড়িয়ে আছে আর মিটমিটিয়ে হাসছে। ওমা এরাও উঠে গেছে তারমানে বেশ ভালোই বেলা হয়েছে। এসব ভাবতে ভাবতে আদ্রিয়ান ভাইয়াও নেমে এলেন আর ওদের দেখে নিজেও থেমে গেলো। ওনাকে দেখে ওদের মুখের হাসি আরও প্রসারিত হলো। উনিও আস্তে আস্তে এসে আমার পাশে এসে দাঁড়ালেন। আমার মতো উনিও ওদের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছেন। ইফাজ ভাইয়া ক্যাবলাকান্ত একটা হাসি দিয়ে বলল,
— ” কীরে ভাই? কোথায় গেছিলি? তাও জোড়া?”
আমি ওনার দিকে তাকালাম। উনি একটু বিরক্ত হয়ে বললেন,
— ” এই সিড়ি দিয়ে চাঁদে যাওয়া যায় বলে তো আমার জানা নেই।”
ইফাজ ভাইয়া একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে চিজ করতে গিয়ে একটা ভীষণ বোকা প্রশ্ন করে ফেলেছেন। এবার আপি বলল,
— ” সত্যিই ইফাজ কী জিজ্ঞেস করছো তুমি? দুজনেই যখন ছাদের সিড়ি দিয়ে নেমেছে তখন নিশ্চয়ই ছাদ থেকেই এসছে?”
জাবিনও তাল মিলিয়ে বলল,
— ” হ্যাঁ দা ভাই তুই আসলেই বোকা কীসব প্রশ্ন করিস। আচ্ছা তুই বল সকাল সকাল ভাবী কে নিয়ে ছাদে কী করতে গেছিলি?
আমি হেসে বললাম,
— ” না না সকালে নয় আমরাতো রাতে..”
ওপার দিকে চোখ পরতেই উনি চোখ রাঙালেন আর আমি চুপ হয়ে গেলাম। তখন হুট করে বলে ফেললেও এখন বুঝতে পারছি কী করেছি। আমার কথা শুনে সবাই একসাথে সুর দিয়ে বলে উঠল,
— ” ওওও।”
আমি হালকা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললাম। ইফাজ ভাইয়া আবার বলল,
— ” তা ভাই সারারাত কী ছাদেই কেটেছিল নাকি।”
উনি একটু ইতস্তত করে বললেন,
— ” হ্ হ্যাঁ তো কী হয়েছে?”
অর্ণব ভাইয়া পিঞ্চ করে বলল,
— ” কী বলো কী জিজু? বাসর রাতে কথা বলে শেষ করতে পারোনি?”
আদ্রিয়ান একটু গলা ঝেড়ে বললেন
— “অ্ আমি আসছি।”
বলে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলে গেলো। উনি চলে যেতেই সবাই শব্দ করে হেসে দিলো। আমি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে আঙ্গুলে ওড়না পেঁচিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ করেই ইফাজ ভাইয়া হাসি থামিয়ে দিলেন। বাকিরাও আস্তে আস্তে চুপ হয়ে গেল। ওদের চুপ থাকতে দেখে আমি ওদের দিকে তাকালাম। ইফাজ ভাইয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
— ” মাসখানেক আগের আদ্রিয়ান হলে হয়তো আমাদের দুষ্টুমি দেখে নিজেও আমাদের সাথে দুষ্টুমি করে আমাদের পঁচিয়ে দিতো। ওর সাথে কথায় আমরা কেউ কখনো পেরে উঠতাম না।”
জাবিনও বলল,
— ” হ্যাঁ ভাবী। সেই ভাইয়াকে খুব মিস করি। একটা আসর জমানোর ও একাই যথেষ্ট ছিলো। অথচ ওকে একটু হাসতে দেখার জন্যেও আমাদের এখন চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকতে হয়।”
আমি কিছু না বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। পুরোপুরি না দেখলেও কিছুটা তো দেখেছিলাম আগের আদ্রিয়ান ভাইয়াকে, সত্যিটা দুজনকে মেলাতে বড্ড কষ্ট হয়। এতোটা পরিবর্তন কীকরে? এর কারণ কী শুধুই ইশরাক ভাইয়ার মৃত্যু নাকি অন্যকিছু। অন্য কী কারণ থাকতে পারে?
__________________
দুপুর হয়ে গেছে। আম্মু অলরেডি লাঞ্চ এর জন্যে ডেকেও ফেলেছে। আদ্রিয়ান ভাইয়া সকালে সকালে বাজার করে এনে ঘুম দিয়েছেন এখনো ওঠেননি। আমারও কেনো জানিনা কখনোই ওনার ঘুম ভাঙাতে ইচ্ছে করেনা। তাই ওনাকে রেখেই লাঞ্চ টেবিলে গেলাম। ওখানে যেতেই আম্মু বলল,
— ” কী হলো একা এলে যে? আদ্রিয়ান কোথায়?”
— ” উনি তো ঘুমোচ্ছেন।”
— ” যাও ডেকে নিয়ে এসো। দুটোর বেশি বাজেতো। সেই সকালে কোনরকম একটু খেয়েছে ছেলেটা।”
আমি আর কথা না বাড়িয়ে ওনাকে ডাকতে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি উনি এখনো ঘুমিয়ে আছেন। আমি ওনার পাশে গিয়ে বসে আস্তে করে ডাকলাম,
— ” শুনছেন? এই যে শুনছেন?”
দুবার ডাকতেই উনি ঘুম থেকে উঠে গেলেন। মানুষের ঘুম এতো পাতলা কীকরে হয় সেটাই বুঝতে পারিনা আমি। আমাকে টিওশনের জন্যে ডাকতে ডাকতে আপি আর আম্মু ক্লান্ত হয়ে যেতো। আর এই লোকটাকে ডাকতে না ডাকতেই ঘুম থেকে উঠে যায়। উনি উঠে চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে বললেন,
— ” কী হয়েছে?”
— ” আপনাকে আম্মু খেতে ডাকছে।”
উনি উঠে দাঁড়িয়ে টাওয়েলটা হাতে নিয়ে বলল,
— ” তুমি যাও আমি আসছি।”
আমি মাথা নেড়ে চলে গেলাম। আমি টেবিলে গিয়ে বসার কিছুক্ষণের মধ্যেই উনিও চলে আসলেন। এরপর কেউ আর কোনো কথা না বাড়িয়ে খেতে শুরু করলাম আমরা। খাওয়ার সময় খেয়াল করলাম আব্বু আমাদের দুজনের দিকে বারবার তাকাচ্ছেন। হয়তো বুঝতে পেরেছেন আমাদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক হয়নি। আমার চোখে চোখ পরতেই আব্বু চোখ সরিয়ে নিলেন। ওনার চোখে একটা অপরাধবোধ দেখতে পাচ্ছি আমি। কিন্তু আমার প্রথমে অভিমান হলেও এখন ওনাদের নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। আমি জানি ওনারা যাই করেছেন আমাদের ভালোর জন্যেই করেছেন।
__________________
আজ বিকেলেই আমাদের বাড়ি থেকে চলে এসছি আমরা। এ বাড়ি থেকে সবাই গেছিলো আমাদের আনতে। গতকাল সন্ধ্যায় আব্বু আমাকে নিজের রুমে ডেকেছিল। খুব ভালোকরে বুঝিয়ে দিয়েছিল আদ্রিয়ান ভাইয়ার অবস্থা, আর আমাকে কী করতে হবে সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমি চলে আসার সময় একটা কথাই বলেছিলেন, ‘ জানি তোমার মনে হচ্ছে আমরা তোমার সাথে অন্যায় করেছি, এটা সত্যিও। কিন্তু এটাও সত্যিই যে কারো প্রাণ বাঁচানোর চেয়ে বড় কিছু হয়না। তুমি ডক্টর হতে চাও কারণ মানুষের প্রাণ বাঁচানোর সুযোগ থাকে তাতে। আর তোমার এই ত্যাগ একটা জলজ্যান্ত প্রাণচ্ছল ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে।’ মানে কী? বউ পেলেই উনি স্বাভাবিক হয়ে যাবেন? তাই যদি তাহলে আমিই কেন? দুনিয়াতে মেয়ের অভাব ছিলো? আদ্রিয়ান আবরার জুহায়েরকে তো যেকোনো মেয়ে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যেতো? আমায় কেনো বলির পাঠা বানালো সবাই?
রাতে আপির সাথে গল্প করে রুমে এসে দেখি উনি বেডের এক সাইডে হেলান দিয়ে বসে ল্যাপটপে কাজ। উফফ সারাদিন ল্যাপটপে এতো কী কাজ? বাড়িতে যে ওনার ছোট, কিউট, সুইট একটা বউ আছে মাঝে মাঝে নজরটা সেদিকে দিলেও তো হয় নাকি? আমি ফ্রেশ হয়ে এসে বেডের ওপর সাইডে গিয়ে শুতেই উনি বলে উঠলেন,
— ” বিয়ে ঠিয়ের সব ঝামেলা তো শেষ? এবার এতো ঘোরাঘুরি লাফালাফি না করে এডমিশন প্রিপারেশনে মনোযোগ দাও। এসব বিয়ের ঝামেলায় অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে। মেডিকেলে কম্পিটিশন অনেক। সো নিজেকে প্রিপার্ড করো। কোচিং এ অনলাইনে ভর্তি করে দিয়েছি আমি। কাল সকালে বই চলে আসবে।”
আমি লাফিয়ে উঠে বসলাম। বলে কী? কালকেই? না আমিযে কোচিং করবো, মেডিকেল পরবো সেটা আগেই জানতাম। আর এ বাড়ির মানুষ মোটেও ব্যাকডেটেড নয়। না পড়তে চাইলে জোর করেই পড়াতো। কিন্তু অবাক হচ্ছি উনি নিজে এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন? মানে আমাকে নিয়েতো ওনার কোনো ইন্টারেস্ট থাকার কথাই না। তাহলে? ভাবলাম বিয়ের চক্করে কটা দিন রেস্ট করব। দূর। আমি ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
— “ভর্তিও করে ফেলেছেন? এডমিট কার্ড কোথায় পেলেন? আর কালকেই বই চলে আসবে?”
উনি ভ্রু কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
— ” অবভিয়াসলি। আর তোমার সব পেপারস আসার সময় আঙ্কেলের কাছ থেকে তোমার বিয়ে হয়েছে সেই আনন্দে তো এডমিশন এক্সাম পিছিয়ে দেবেনা তাইনা? কোনো গাফিলতি চলবে না কিন্তু। আমি নিজে পড়াবো তোমাকে।”
আমি আরেকদফা অবাক হয়ে বললাম,
— ” আপনি তো ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্টুডেন্ট মেডিক্যাল এডমিশনের পড়া কীকরে পড়াবেন?”
উনি চোক ছোট ছোট করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
— ” ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এডমিশনের জন্যে আমাকে এইচ এস সি কম্প্লিট করতে হয়েছে।”
— ” আপনার এখনো এসব মনে আছে?”
উনি আবার কাজ করতে করতে বললেন,
— ” না থাকার কী আছে? ফিজিক্স, ক্যামেস্ট্রি, ইংলিশ, জিকে তো ইজিলি পড়িয়ে দিতে পারবো। বায়োলজিটা তেমন বুঝিনা বাট পড়া দেওয়া নেওয়ার কাজটা করতে পারবো।”
আমি হতাশ হয়ে শুয়ে পরলাম। আমার দুঃখের দিন যে শুরু হতে চলেছে বেশ বুঝতে পারছি। এই খবিশ আমায় পড়াবে? জীবনটা তেজপাতা হয়ে গেলো গো। কিছুক্ষণ পর উনিও লাইট অফ করে মাঝে কোলবালিশ দিয়ে ওপর সাইডে শুয়ে পরলেন। আমি কিছুক্ষণ বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে থেকে বললাম,
— ” আচ্ছা কোলবালিশটা না দিলে হয়না?”
উনি হালকা চেঁচিয়ে বললেন,
— ” হোয়াট?”
আমি সাথে সাথেই হকচকিয়ে বলে উঠলাম,
— ” ন্ না না, কিছুই না। আপনি ঘুমোন, ঘুমোন।”
উনি আর কিছু বললেন না। বাপড়ে কার সামনে কী বলছিলাম। নিজের বুকে হালকা থুথু দিয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে শুয়ে রইলাম।
#চলবে…