মন_নিয়ে_কাছাকাছি #পর্ব_৬

0
405

#মন_নিয়ে_কাছাকাছি
#পর্ব_৬
লেখনীতে পুষ্পিতা প্রিমা

শেষ রাতের কাছাকাছি প্রায়। তারপরে ও মানুষের গাক গাক শব্দের আওয়াজে মুখরিত বাড়ির আঙিনা। বাচ্চারা ছোটাছুটি করছে এমন টা নয়। দু’জন পূর্ণবয়স্ক নাবালক ছেলের এমন ছোটাছুটি মানুষ বিস্ময়ের চোখে দেখছে। দুজনের মধ্যে একজন এই বিয়ের বর। আর অন্যজন তার বন্ধু।
মিনা, রাহান, সানজু একজায়গায় এসে দাঁড়ালো। মিনা বলল, ভাইয়া দৌড়াচ্ছে কেন অধীর ভাইকে?
রাহান নাকের ডগা চুলকে বলল, নিশ্চয়ই কোনো আকা কুকাম করেছে।

তন্মধ্যে রোহিনী ও ছুটে এল। বড় ভাই রাহানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।

দেখেছ ভাইয়া এরা কি শুরু করেছে?

আমাদের নেতা সাহেব শুধু শুধু দৌড়াচ্ছে। তানজীব ওকে ধরে দুটো না দিলে শান্ত হবে বলে মনে হচ্ছে না।

মিনার কপালে ভাঁজ।
আঙ্কেল আর চাচ্চুরা রেগে যাবে এসব দেখলে।

সানজু দুলেদুলে বলল

আমার তো বেশ মজা লাগছে।

ঝনঝন ঝনঝন বিকট শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে গেল মুহূর্তে। কাজের ঝি’র হাত থেকে কাচের জগ পড়ে ভেঙে খানখান হয়ে গেল এক লহমায়।

ভেসে আসছে শুধু অধীরের অট্টহাসির আওয়াজ।

আর কখনো করব না। মাফ কর বন্ধু। তোরে আর কখনো চেতাবো না। মাফ কর। কাল আমার বিয়ে।

তানজীব ঠোঁট বাঁকিয়ে কুটিল হাসলো। গলা কাত করে আঙুল দিয়ে নাকের নিচে সমান তালে ঢলে বলল

না কান ধরে উঠবস কর। নইলে ছাড়া পাবি না। কর কর। নাউ টাইম টু স্টার্ট।

ততক্ষণে খানসা বেগম আর আনতারা বেগম এসে উপস্থিত।

তোরা দুজন কি শুরু করেছিস রে? আল্লাহ জগটা শেষ!

জমিলা মন্থর গলায় কেঁপে উঠে বলল

খালাম্মা ভাইজানেরা ধাক্কা মারছিল।

তাদের কথায় ভাটা পড়লো।

উঠবস কর।

তানজীব কিছুতেই অধীরকে ছাড়বে না এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। চোখদুটো অধীরের চেহারায় নিবদ্ধ। কর উঠবস কর। নইলে পিঠে পড়বে বজ্রেপাত। কর কর। রুহি,মিনি, সানজু এদিকে আয় তোরা। গোনা শুরু কর। ওয়ান, টু, ত্রি….

অধীর একটু আড়ালে গিয়ে দাঁড়ালো।

তোর হাতের থাবার নিচে পড়লে আমি বাঁচব না রে বন্ধু। শুধু দশবার উঠবস করব। তারপর আমাকে মাফ কর। আর জীবনে ও তোর সাথে মজা করব না।

হ্যা হ্যা কর কর। দশবার না পঞ্চাশবার।

কি হয়েছে বলবি তো তোরা। এই অধীর কি হয়েছে?

অধীরের হাসি পাচ্ছে আর্মি ম্যানের সাথে মজা করে।

আসলে ইয়ে মানে হয়েছে কি?

চুপ। উঠবস কর।

পেছনে হাত রেখে সাহেবের মতো করে আদেশ দিল তানজীব। তার ও ভীষণ রকম হাসি পাচ্ছে। কিন্তু হাসলেই অধীরের উঠবস হবে না।

মিনারা সবাই ততক্ষণে এসে উপস্থিত। অধীর উঠবস শুরু করলো আড়ালে গিয়ে। বলতে লাগলো,

দেখ তো আর কেউ আসছে কিনা। আব্বারা আসলে বলিস।

বলতে না বলতে অধীর কান ধরে দু বার উঠবস করলো। তারপর বলল

বন্ধু মাফ কর।

না না পঞ্চাশবার।

অধীর পাঁচ পর্যন্ত করলো। মিনা, রোহিনী আর সানজু হেসে কুটিকুটি। রোহিনীর ছেলে এসে এসব দেখে গালে হাত দিয়ে খিক করে হাসলো। তালি দিতে দিতে বলল

চাচ্চু মারি মারি।

অধীর জিভে কামড় দিল। তানজীবকে বলল

মামু এবার ছাড়। আর না। আমার বাচ্চাটা দেখছে। কাল থেকে বলা শুরু করবে চাচ্চু কান ধরে উঠবস করছে।

তানজীব ছোট্ট রিজুর দিকে তাকালো। মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করতে করতে বলল

মামা তোমার চাচ্চু কান ধরে উঠবস করছে। নেতা মা-র ভয় পায়।

রিজু কি বুঝলো কে জানে। খিকখিক করে হেসে মাথা দুলাতে দুলাতে বলল

চাচ্চুকে মামা মারি মারি। মারি মারি।

তানজীব বুক ফুলিয়ে হাসলো। অধীর আর দু বার উঠবস করে দৌড়ে এসে হামলে পড়লো তানজীবের উপর। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে বলল

বন্ধু এরকম করলে তোর কপালে বউ জুটবো না।

সবার হাসির বেগমাত্রা আরও বেড়েছে। আনতারা বেগম একটু জিরিয়ে বললেন

এই বয়সে ও যদি এসব করে এরা?

তানজীব বলল

ছাড়। শাস্তি আর ও বাকি আছে। তোর নেতাগিরি আজ ঘুচিয়েই ছাড়ব বলেছি না। ছাড়।

অধীর জড়িয়ে ধরেই রাখলো। হেসে তানজীবের পিঠ চাপড়াতে চাপড়াতে বলল

তুই শালা জংলা মিলিটারি। বন্ধুর সাথে ও এত কঠোর হতে হয়? একটু উদার হ বন্ধু।

তানজীব গা ঝাঁড়া দিল। গুমম করে বসিয়ে দিল শক্ত মুঠি অধীরের পিঠে।

ওরেহ বাপরে বলে চিল্লিয়ে উঠলো অধীর।

আল্লাহ আমি শেষ। পিঠটা তো গেল।

তানজীবকে ছেড়ে দিল সে। তানজীব পাঞ্জাবির কলার ঠিক করলো। নিপাট হাতার ভাঁজ ঠিক করতে করতে বলল

ওর বউয়ের ফোন আমাকে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল। আরও বলল আমাকে নাকি খুঁজছে? এসব পাগলের কাজ না?

তাই তো তাই তো।

তানজীবের কথায় সুর মেলালো আনতারা বেগম।

এটা কেমন কথা অধীর?

অধীর ঝাঁঝালো গলায় বলল

আরেহ ধুরর, ওটা তোমাদের বৌমা ছিল না। ওটা তাহার বোন। বেয়াইনের সাথে পরিচয় করাতে চেয়েছিলাম আর কি। গুরুতর অপরাধ হয়ে যাবে কে জানতো? শালা হৃদয়হীন মিলিটারি।

নিচের ঠোঁট কামড়ে চোখ রাঙিয়ে গলার ভেতর করে হাসলো তানজীব। রিজুকে কোলে নিয়ে চলে গেল সেখান থেকে।

সানজু বলল

অধীর ভাই তুমি তানজীব ভাইকে আর পচাঁতে যেওনা।

অধীর পিঠ এদিকওদিক মোচড়াতে মোচড়াতে তানজীবের পেছন পেছন যেতে যেতে বলল

তওবা করলাম। তওবা তওবা। আর জীবনে ও মিলিটারির সাথে মজা করব না।

___________________

নোরাকে স্টেজ থেকে নামিয়ে এনে পাটাতনে বিছানো রঙিন পাটিতে বসানো হয়েছে। সামনেই মেহেদী পাতার বাটনা। কয়েকফোঁটা হলুদ।
নোরার পাশ ঘেঁষে বসেছে বৃদ্ধা জাহানারা। উনার পান খাওয়া ঠোঁটজোড়া কাঁপছে তরতর করে। আঙুলের মাথায় মেহেদী লাগিয়ে নাতনির কপালে লাগালেন। হলুদ ছুঁয়ে গালে লাগালেন একটুখানি। চোখের গলিত পানি ভাঁজ পড়া চামড়ার লোমকূপে লুকিয়ে পড়ছে। হলুদ শাড়িতে, সাজের বধূটির ফোঁপানির শব্দে সবাই এবার একটু সংযত করে বসলো।

বাপের ঘরের রাণী হয়
পরের ঘরে দাসী
বাপের ঘরে মিলে মধু
পরের ঘরে ফাঁসি
দশের ভিতর যে হয় সুখী সে মহাভাগ্যবতী
আমার সোনা বইন হোক তাদের একজন সাথী

ফোঁপানির শব্দ এবার বাড়তে বাড়তে কান্নায় রূপ নিল। বধূটির মজবুত লাবণ্যময় তনু কেঁপে উঠলো কান্নার দমকে।

বৃদ্ধা জাহানারা নাতনির মাথাটা লুকিয়ে নিলেন বুকের ভেতর পরম আদরে।

রাহা সেই ছাদের দরজার কাছটাই স্থির দাঁড়িয়ে আছে অনেক্ষণ ধরে। ভেজা গাল বেয়ে স্বচ্ছ জলের কণা ছুঁয়েছে তার থুঁতনি। বারবার বাম হাতের পিঠ দিয়ে মুছে নিতে নিতে সে তাকিয়ে থাকলো বধূটির দিকে। তাকে একলা একা থাকতে হবে কালকের পর থেকে। আপা চলে যাবে। সে একা হয়ে যাবে। বুকের উপর কে যেন পাহাড় ছাপিয়ে দিয়েছে। আপা এত দূরে চলে যাচ্ছে কেন? কেন ছন্দপতন ঘটছে তাদের সাজিয়ে রাখা পৃথিবীটার?

আরেহ দেখি দেখি। পাখি মুখ তোল। আমি সরিরে। কত কাজ জানিস? তোর বর যে ঝামেলায় ফেলে দিল আমাদের। তাই আমার দেরী হয়ে গেল এখানে আসতে । ক্লাবে ছিলাম।

ভাইয়ের গলার আওয়াজ শুনে দাদীর বুক থেকে মুখ তুললো নোরাহ।
অন্তরা ও এসে বসলো আশরাফের পাশে। নাইরা ও তার কোলে।

আশরাফ কেকটা কেটে বোনের মুখে তুলে দিল। হাতের ঝকঝকে রাখিটা পড়িয়ে দিয়ে ডাকলো

বুয়াটা কই? এই রুহু এদিকে আয়। ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?

রাহা পা টিপে টিপে এল। দাঁড়িয়ে থাকলো তাদের পেছনে। বসলো না।

আশরাফ রাখি পড়িয়ে দিয়ে বোনের কপালের একপাশে স্নেহের পরশ চিহ্ন এঁকে দিয়ে বলল

সুখী হ বোনটা।

নোরার গলা বুঁজে আরেকদলা কান্না বেরিয়ে এল ফুরফুরিয়ে। আশরাফ হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরলো বুকের সাথে। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বুঝলো তার গলার ভেতর থেকে কোনো আওয়াজ বেরুচ্ছে না।

তুমি আব্বা আম্মাকে দেখে রেখো। মারামারিতে জড়াবে না কোনো দলের সাথে। আমি তোমাদের চিন্তায় মরে যাব।

আরেহ না না। করব না। তোকে চিন্তা করতে হবে না।

অন্তরা কেক খাইয়ে বলল

ননদিনী আমাদের বাড়িটা খালি করে যে চলে যাচ্ছিস। আমাদের এত শাসনে রাখবে কে?

নোরার গাল বেয়ে স্বচ্ছ জলকণারা বিরতিহীন গড়াতেই আছে। নাইরা নোরাকে কোলে টেনে নিল। নাইরা ঠোঁট টেনে টেনে ডাকলো

নুলা ফিপফি…….

ছোট্ট আদুরে গালটা চেপে চুমু খেল নোরাহ। বুকের সাথে একদম চেপে ধরে বলল

আমি মা’টাকে না দেখে কি করে থাকব?

নাইরা কি বুঝলো কে জানে? নোরার সাথে সাথে ও ভেঁক ভেঁক করে কেঁদে দিল।

রাজিয়া বেগম, আর মাহফুজা বেগম এসে বসলেন তখন। মাকে আর বড়মাকে দেখে কান্নার গতি আর ও বাড়লো বৈকি কমলো না। মায়ের বুকে ঝাপটে পড়ে হৃদয় বিগলিত কথাটা বলল মেয়ে

আমি ওখানে তোমাদের ছেড়ে কি করে থাকব আম্মা?

রাজিয়া বেগম অশ্রু বিসর্জন দিতে দিতে ও চাপা হাসলেন।

আরেহ ওখানে ও মা বাবা আছে তো। ওদের মাঝেই খুঁজে নিস আমাদের। এমা এভাবে কাঁদতে হয় না।

বলা শেষ করে উঠতে না উঠতেই তিনি ও কেঁদে উঠলেন।

আশরাফ আমজাদ কবিরকে টেনে ধরে নিয়ে এসেছেন। তিনি এসে বললেন

এত কান্নাকাটির কি আছে? আশরাফের মা ওদিকে গিয়ে দেখো কি হলো? এত কাঁদতে হবে না। মেয়ে ভালো ঘরেই যাচ্ছে।

আশরাফ বলল

ওখানে যাও। ওকে কেক তুলে দাও মুখে। দোয়া করে দাও। যাও। সব বলতে হয় তোমাকে।

হ্যা যাচ্ছি যাচ্ছি।

তিনি এসে মেয়ের পাশে বসলেন। কেক তুলে খাইয়ে দিয়ে মেয়ের হাতে খেলেন। নোরাহ সালাম করতেই উনি নিজের হাতটা মাথায় চেপে রেখে চুপ করে থাকলেন। মেয়ে মাথা নিচু করে ভাঙা ভাঙা গলায় বলল

আব্বা কারো সাথে খারাপ করলে, তোমার সন্তানদের সাথে ও খারাপ হবে। আমার কথাটা মাথায় রেখো প্লিজ। আমি আর থাকছিনা তোমার কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করার জন্য।

চেয়ারম্যান সাহেব চুপ করে থাকলেন। তারপর উঠে চলে গেলেন দ্রুতপায়ে । উনি যেতে না যেতেই নোরাহ কেঁদে উঠে ভাইকে অভিযোগ দিল

দেখেছ আব্বা হ্যা না কিছুই বলেনি।

আরেহ আজকে সেসব কথা থাক। কান্না বন্ধ কর। মাথা ব্যাথা হবে। আমি তো আছি। এবার চুপ যাহ পাখি।

নোরাহ নাক টেনে ডাকলো

রাহা!

রাহা সামনে এল।

বল।

নোরাহ চুপ করে রইলো। আশরাফ বলল

তোকে কি সাধে আমি বুয়া ডাকি? তোকে সব কাজ বলে বলে করাতে হয় কেন? এদিকে আয়।

রাহা পাশে এসে বসলো। গাল মুছতে মুছতে বলল

আমি অনেকবার কেক খাইয়েছি আপাকে।

নোরাহ হাসার চেষ্টা করে বলল

আরেকটু খা।

বলেই সে কেকের টুকরো বাড়িয়ে দিল রাহার দিকে। রাহা ছলছল নয়নে তাকিয়ে কেকের টুকরো গালে পুড়ে হাতের পিঠ দিয়ে আবার গাল মুছলো। নোরার বুকটা আবার ও ভার হয়ে এল।

বাড়িয়ে দেওয়া কেকটা গালে নিতেই বাঁধভাঙা জলের বহর গড়গড়িয়ে পড়লো কপোল বেয়ে। ঝাপটে ধরলো ছোট বোনটিকে। কেঁদে উঠলো হু হু করে।
উপস্থিত সকলের চোখের কোণা ভিজলো দুবোনের হৃদয় বিগলিত মর্মস্পর্শী কান্নায়।

তুই ততটা সুখী হ আপা। যতটা সুখী হলে আর সুখের খোঁজ করতে হয় না।

আদরিনী তোর সব চাওয়া পূরণ হোক। খুব ভালো থাক। তোর জীবনটা রঙিন হোক, ফিরে আসুক সব রঙ, পোড়ামাটির ঘোড়ার সেই মনিব।

আমি চাই না। এসব হওয়ার নয়।

তুই চাস,এবং এটাই হবে। মিলিয়ে নিস।

_____________________

রায়হান ভিলা থেকে ফিরে সবাই ঘুমের দেশে ডুব দিয়েছে। ফজরে আজান পড়ার খুব বেশি দেরী নেই। এদিকে বাতাস বইতে শুরু করেছে। মড়মড় করে কোথাও গাছের কচি ডাল ভাঙার শব্দ হলো। নেটওয়ার্ক স্লো। একদম কাজে দিচ্ছে না। নেটওয়ার্ক পেতে ছাদে এসেছিল তানজীব। গায়ের পাতলা শার্টটি পতপত শব্দ করে দোল খাচ্ছে। গালের খোঁচা দাঁড়িতে আঙুল দিয়ে চুলকালো সে। কষকষ শব্দ হলো। রেলিঙে বাম হাতের মুঠি দু তিনবার আঘাত করে কানে ফোনটা দিল।
বজ্রগম্ভীর স্বরে পরিবেশটা আরও থমথমে হয়ে এল।

কি ব্যাপার রোস্তম? তুমি কি ঘুমাচ্ছ নাকে তেল দিয়ে? রাত বারোটার পর থেকে ফোন দিয়ে চলেছি।

সরি স্যার। আসলে গতকাল একটা ফ্যামিলি প্রবলেম…..

ডিএসপি রোস্তম শিকদারের গলায় ভয়ের ফুসকুড়ি।

আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু হিয়া’র এক্সকিউজ রোস্তম। আই জাস্ট ওয়ান্ট টু নৌ দ্য ডিল।

ইয়েস স্যার। কাজ হয়েছে। বাট কোনো রিপ্লে আসেনি।

হোয়াট??

সামান্য হলেও কেঁপে উঠলো রোস্তম শিকদার।

এ নিয়ে সাত বার রোস্তম।

রোস্তম শিকদারের গলা শুকিয়ে এল। শেষ রাতে ফোন দিয়ে যদি একজন মিলিটারি এভাবে ধমকাধমকি করলে মরার আর বাকি থাকে কই?

আসলে স্যার কনস্টেবল আলীউল্লাহ বলেছিলেন ম্যাডাম চিঠিগুলো ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন গত ছয় ছয়বার। ধমক ও দিয়েছে যাতে আর কোনো চিঠি না দেন । কিন্তু এইবার নাকি চিঠি নিয়েছেন কিন্তু ছিঁড়েননি।

ভয়ংকর মিথ্যা বলে একটু কাঁপলো না রোস্তম শিকদার। গত ছয়টি চিঠি যে তিনি ছিঁড়ে কুটিকুটি করেছেন সে কথা আলীউল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা।

কিছুক্ষণ পিনপতন নীরবতা। চোয়াল ফুলে মাথার রগ দপদপ করছে তানজীবের। যন্ত্রণা হচ্ছে।

তোমার কি মনে হয়? উইল শী আনসার দ্য লেটার?

সরি স্যার। মেয়ে মানুষের গতিমতি বুঝা দায়।

বুক ফুলিয়ে শ্বাস নিল তানজীব। ইতোমধ্যে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ঘরে যাওয়া দরকার।

ওকে দেখা যাক। তুমি কন্সটেবলের কনটাক্ট ইনফোটা পাঠিয়ে দাও কুইকলি। আমার ওনার সাথে কথা আছে।

সর্বনাশ। আলাীওল্লাহ যদি ভয়ে সবটা বলে ফেলে?

ফোনের ওপাশে দাঁতে দাঁত কিড়মিড় করে উঠলো রোস্তম শিকদার। তারপর ও নিজেকে সংযত করলেন তিনি। বললেন

ওকে স্যার পাঠিয়ে দিচ্ছি।

গুড।

খট করে ফোনটা কেটে ঘরে গিয়ে ফোনটা বিছানার এককোণে ছুঁড়লো তানজীব। জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে গলা ভিজিয়ে বসে পড়লো ইজি চেয়ারটাতে। কপালের ডান পাশে চিকচিক করে শূলাতে থাকা রগে বলিষ্ঠ আঙুল বুলিয়ে ঠোঁটে পুড়লো সিগারেট। উড়তি ধোঁয়াগুলো দ্রুতবেগে গমন হলো জানালা দিয়ে ঢুকে পড়া উত্তাল বাতাসের তাড়নায়। ক্রোধোন্মত্ততায় মুখ হড়কে বের হলো

দ্যাটস নট গুড মিস কবির।

চলবে………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here