ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল,১০,১১

0
350

#ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল,১০,১১
তন্বী ইসলাম
১০

শাপলা অন্যমনস্ক হয়ে তাকালো পদ্ম’র দিকে। ওর বলা কথা তার মাথার উপর দিয়ে যেনো গেছে। সে আবারও পদ্মকে প্রশ্ন করলো
“কি যেনো বললি পদ্ম?
এবার পদ্ম’র মন বলছে শাপলাকে কাঁচা খেয়ে ফেলুক। দাঁত কটমট করতে লাগলো সে, চোখেমুখে বেজায় তেজ। শাপলা ভ্রু বাকিয়ে প্রশ্ন করলো
“তুই এমন করতেছিস কেন?
“আমার ব্যারাম উঠছে তাই এমন করতাছি। দেখিস, এই জন্মে তুই আমার সাথে কথা কইবি না। কইলে লবন মরিচ মাইখা খাইয়া নিমু তোরে।
বোনের এমন রুপ শাপলাকে চিন্তায় ফেললো। মনে মনে ভাবতে লাগলো, পদ্ম অসুস্থ হয়ে যায় নাই তো? জ্বীন ভুতে ধরেনি তো আবার?
শাপলার কপালে চিন্তার রেখা স্পষ্ট। সে জলদি করে পদ্ম’কে চেপে ধরলো। চিন্তিত গলায় বললো
“তোর হঠাৎ কি হইছে পদ্ম? এমন কথা কেন বলতেছিস বোন আমার?
পদ্ম আবারও রেগেমেগে চেচিয়ে বললো
“তুমি যাবি আমার সামনে থেইকা? একে’তো যখন তখন মাঝখানে আইসা ঢুইকা পরিস আর এখন এমন ভাব করিস যেনো কিছুই বুঝিস না। যা এখান থেইকা যাহ।

শাপলা পদ্ম’র থেকে খানিক দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে তাকে বিস্মিত চোখে দেখতে লাগলো। পদ্ম আবারও ফুসে উঠে বললো
“দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া তামশা দেখোস? যাইতে বলছি না?
শাপলা এবার বুঝলো বোন তার রাগ করেছে। সে মৃদুহেসে বললো
“আম্মা ডাকতেছে খাওয়ার জন্য, খাবি না?
“আমার সামনে আরেকটা কথা কইলে এইবার তোরে খামু আমি।
শাপলা হাসলো। বললো
“আমার সাথে রাগ দেখাস? আম্মারে বলি তুই শ্রাবণ ভাইয়ের নাম্বারের খোঁজ করতেছোস?
পদ্ম যেনো এবার কিছুটা গুটিয়ে গেলো। আমতা-আমতা করে বললো
“আমারে ভয় দেখাস কেন আপা? আমি না তোর একমাত্র ছোট বোইন। পদ্ম’র চোখেমুখে অসহায়ত্বের ছাপ। শাপলা হেসে বললো
“আর ঢং করা লাগবে না। আয়, খেতে আয়।
খাবার খেতে বসেও খেতে পারছেনা পদ্ম। ভাত যেনো গলা দিয়ে তার নামছেই না। বার বার শ্রাবণ ভাইয়ের কথা মনে পরছে। অল্পবয়সী আবেগি মন বিধায় সকালের কথাটা মনে পরতেই বেশ আফসোস হচ্ছে তার। যে শ্রাবণকে সে এতটা পছন্দ করে, সেই শ্রাবণ ভাই আজ তাকে একটা সামান্য চুমু খেতে চেয়েছিলো, অথচ তার বোনের জন্য সবটা বিগড়ে গেলো! মনে হলেই শাপলার উপর বেজায় রাগ হচ্ছে পদ্ম’র। আলেয়া খেয়াল করলেন পদ্ম শুধুই ভাতে হাত দিয়ে ঘাটাঘাটি করছে, অথচ খাওয়ার নাম নেই। মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলেন শাপলার দিকে সে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। আলেয়া বেশ অবাক হয়ে বললেন
“খাস না কেন পদ্ম?
পদ্ম শাপলার ওদিক থেকে চোখ সরিয়ে মায়ের দিকে তাকালো। করুণ গলায় বললো
“খিদা নাই আম্মা।

আলেয়া চাপাস্বরে বললেন
“খিদা নাই কেন? কিছু তো খাস নাই!
পদ্ম আবারও অসহায় মুখে বললো
“অতকিছু জানিনা আম্মা, শুধু জানি খিদা নাই।
আলেয়া আর কোনো কথা বাড়ালো না। পদ্ম’ও কোনো কথা না বলে স্টিলের পানিভর্তি গ্লাসটা নিয়ে ভাতের মধ্যেই হাত ধুয়ে ফেললো। শাপলা অবাক হয়ে দেখলো বোনের কান্ডকারখানা।
আকাশে আজ পূর্ণ চাঁদ উঠেছে। জোছনার আলোয় সারা উঠোনটা ঝকঝকে দেখা যাচ্ছে। সচরাচর জোছনার আলোয় বাইরে এসে হাটাহাটি করতে বেশ লাগে পদ্ম’র কাছে। তবে আজ কিছুই তার ভালো লাগছে না। একটা চেয়ার টেনে ঘরের সামনেই বসে রইলো সে। খানিক বাদে কারো হাতের ছোয়ায় ঘার ঘুরিয়ে তাকালো পদ্ম। শাপলাকে দেখে খানিক বিরক্ত হলো সে। বিরক্তিকর কন্ঠে বললো
“ওহ তুই।

আবারও সামনে ফিরে তাকালো পদ্ম। একটা মোড়া টেনে এনে পদ্ম’র সামনে রেখে সেটাতে বসলো শাপলা। মিহিগলায় বললো
“আজ এমন করতেছিস কেন পদ্ম?
“জানিনা।
পদ্ম’র দৃষ্টি শুন্যে। কি দেখছে সে নিজেও জানে না। শাপলা ক্ষীণ গলায় আবারও বললো
“শ্রাবণ ভাইয়ের জন্য খারাপ লাগতেছে?
পদ্ম ভ্রু বাকিয়ে রাগীস্বরে বললো
“তো আর কোন ভাইয়ের জন্য খারাপ লাগবে? খারাপ লাগার মতো আর কোনো ভাই কি আমার আছে? ওই একমাত্র শ্রাবণ ভাই ই’তো আছে।
শাপলা হাসলো। বললো
“তুই আসলেই একটা পাগলী।
“তো আইছিস কেন পাগলীর ধারে? তোরে কে কইছে আসার লাইগা?
“মনে হইতেছে শ্রাবণ ভাই তোর মাথাটা পুরাটাই সাথে করে নিয়া গেছে, তাই এমন আবোল তাবোল বলতেছিস।
পদ্ম আঁড়চোখে তাকালো শাপলার দিকে। শাপলা চলে গেলো সেখান থেকে। পদ্ম গালে হাত দিয়ে চেপে ধরে ভাবনার জগতে বসলো। ইচ্ছে করছে জোরে জোরে চেচিয়ে কান্না করুক।

খানিক বাদে আবারও ফিরে এলো শাপলা। ওকে দেখতে পেয়ে পদ্ম চেচিয়ে বলে উঠলো
“আবার আমার চোক্ষের সামনে আইলি কেন?
“আমারে দেখলে এমন জ্বলস কেন তুই?
“তুই সকালে কি করছিলি ভুইলা গেছোস?
শাপলা এবার বিস্ময়ে বললো
“আমি আবার কি করলাম সকালে?
পদ্ম মুখ ঘুরিয়ে নিলো, মাথা থেকে উড়ে গেছিলো শ্রাবণ আর ওর সকালের ঘটা ঘটনাটা শাপলার অজানা। শাপলা হেসে তার হাতে থাকা মুঠোফোনটা পদ্ম’র কানে চেপে ধরলো। পদ্ম চেচিয়ে শাপলাকে আবারও কিছু বলতে যাবে তার আগেই ফোনের ওপাশ থেকে কলিজা ঠান্ডা করা সেই শীতল কন্ঠ থেকে বেরিয়ে এলো সেই চিরচেনা ডাক
“পদ্মফুল…
পদ্ম বিস্ময়ে কিছুটা সময় জমে রইলো। ওপাশ থেকে আবারও বললো
“আমার কথা শুনতে পাচ্ছিস পদ্মফুল?
পদ্ম অবাক হয়ে তাকালো শাপলার দিকে, শাপলার ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি। পদ্ম এবার ফোনের দিকে নজর দিলো। একগাল হেসে উচ্ছ্বাস ভরা কন্ঠে বললো
“শ্রাবণ ভাই!

হোস্টেলের বেডটার উপর আরামসে শুয়ে কানে ফোন ঠেকিয়ে পদ্মফুলের মিষ্টি কন্ঠটা শুনে মুচকি মুচকি হাসছে শ্রাবণ। সারাটা দিন এই কন্ঠটাকে প্রচন্ড রকমের মিস করেছে সে, কল করা হয়ে উঠেনি সময়ের অভাবে। এই কিছুক্ষণ আগে সে ফ্রি হয়েই সোজা শাপলার নাম্বারে কল করেছে। পদ্ম’কে অতি উচ্ছ্বসিত হতে দেখে শাপলার চোখেমুখে খানিক ভয়ের রেশ দেখা গেলো৷ পদ্ম’র মুখের সামনে মুখ এনে ফিসফিস গলায় বললো
“এইভাবে কথা বললে তুইও মরবি, আর আমারেও মারবি পদ্ম। আম্মা তো ঘরে বইসা থাইকাও সব শুনবো। একটু আস্তে করে কথা বল, নইলে উঠোনের এক সাইডে গিয়ে কথা বল বোন আমার। বোনের দিকে তাকিয়ে লাজুক হাসি হাসলো পদ্ম। এরপর ধীরপায়ে সেখান থেকে উঠে উঠোনের এক কর্ণারে চলে গেলো সে।
শ্রাবণ শোয়া থেকে উঠে বসেছে ততক্ষণে। পা দুটো ভাজ করে পায়ের উপর একটা বালিশ রেখে বসে সে বালিশে হাতের ভর দিলো শ্রাবণ। একহাত বালিশে রেখে আরেক হাত দিয়ে কানে ফোন গুজলো। ওপাশ থেকে পদ্ম’র আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছেনা। শ্রাবণ বিস্ময়ে প্রশ্ন করলো
“পদ্মফুল, তুমি কি নেই ওপাশে?
পদ্ম অত্যন্ত ধীর গলায় বললো
“আছি আছি।

পদ্ম’র আছি আছি কথাটা শুনে ফট করে হেসে উঠলো শ্রাবণ। বললো
“বাহ! আমার পদ্মফুল তো অনেক সুন্দর করে কথা বলতে পারে।
শ্রাবণের কথা শুনে লাজুক হাসি হাসলো পদ্ম।
“যাওয়ার পথে তোমার কোনো অসুবিধা হয় নাই তো শ্রাবণ ভাই?
“খুব হয়েছে।
শ্রাবণের কথা শুনে কিঞ্চিৎ ঘাবড়ে গেলো পদ্ম। আতংক নিয়ে বললো
“কি হইছে শ্রাবণ ভাই? কোনো বিপদে পরছিলা তুমি? কি বিপদে পরছিলা? এখন সব ঠিক আছে তো?
শ্রাবণ হাসলো। বললো
“পুরো রাস্তাটাতেই তোকে খুব মনে পরেছে, বার বার তোর চেহারাটা চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। আসার পর থেকেও আমার কাজে আমি মনোযোগ দিতে পারছি না, বার বার কিছু না কিছু ভুল করেই যাচ্ছি। এর চেয়ে বড় অসুবিধা আর কি হতে পারে!
পদ্ম’র মুখটা হঠাৎ মলিন হয়ে গেলো। খানিক সময় চুপ থেকে আমতা-আমতা করে বললো
“তাইলে তো আমি তোমারে অসুবিধায় ফালাইয়া দিছি শ্রাবণ ভাই। আরেকবার যখন তুমি বাড়ি আইবা, তোমার চোক্ষের সামনেও আমি আসমু না, তাইলেই আমার কারণে তোমার আর অতো অতো সমস্যা হইবো না।

শ্রাবণ বুঝতে পারলো পদ্ম’র কন্ঠে স্পষ্ট অভিমান। সে হেসে বললো
“আহারে, আমার পদ্মফুল অভিমান করেছে।
“অভিমান করতে যামু কেন, তুমিই তো কইলা আমার জন্য তোমার অসুবিধা হইছে, কাজে ভুল হইছে।
“পদ্মফুল।
পদ্ম অভিমানী গলায় বললো
“হু..
“তোকে না দেখলে কি আমি বাঁচবো?
পদ্ম’র কান্না পেলো এবার। একেতো প্রথমেই মনে একরাশ অভিমান জমিয়ে দিয়েছে, এখন আবার এইসব কথা বলছে। পদ্ম আর কোনো কথা বললো না। শ্রাবণ কিছুক্ষণ পদ্ম’র উত্তরের অপেক্ষা করে শেষে উত্তর না পেয়ে বললো
“পদ্মফুল..
“কি?
“আমাকে মিস করছিস?
“মোটেও না।
শ্রাবণ হাসলো। বললো
“না বললেও আমি জানি তুই আমাকে মিস করছিস।
পদ্ম উত্তর দিলো না, সে’তো ঠিকই শ্রাবণ ভাইকে মিস করছে। শ্রাবণ বললো
“এখন তো তোর সাথে আমার কথা হলোই, অন্যবার যখন মিস করবি, সোজা আমাদের ঘরে গিয়ে আমার রুমে চলে যাবি।
“কেন? ভ্রু বাকালো পদ্ম।
শ্রাবণ হেসে বললো
“আমার বিছানায় একটু হাত বুলিয়ে আসবি, বালিশে মাথা রাখবি কিছু সময়ের জন্য। ওখানে আমার গায়ের ঘ্রাণ মিশে আছে।
পদ্ম এবার সব অভিমান ভুলে গিয়ে লজ্জায় মুখ লুকালো।

এমন সময় আলেয়ার ডাক এলো। তিনি ঘরের বাইরে বেরিয়ে বললেন
“পদ্ম, এই রাইতের বেলা ওইখানে দাঁড়াইয়া কি করস তুই?
পদ্ম ভয়ে তারাতাড়ি করে কান থেকে ফোন সরিয়ে নিলো। চাচীর গলার আওয়াজ শ্রাবণের কানেও গেলো। সেও আর দেরি না করে ওপাশ থেকে কল কেটে দিলো। অপরাধীর মতো মায়ের দিকে এগিয়ে এলো পদ্ম। মাকে কি জবাব দিবে সেটাই সে ভাবতে লাগলো। যদি মা বিন্দুমাত্রও জানতে পারে সে শ্রাবণ ভাইয়ের সাথে ফোনে কথা বলেছে তাহলে আর উপায় নেই। ছেলেদের সাথে মেলামেশা মা খুব কমই পছন্দ করেন, সেটা শ্রাবণ ভাই কিংবা যে কেউই হোক।

শাপলা ঘরে চলে গেছিলো তখনই। মায়ের সামনে বোনকে বেকায়দায় দেখে তারাতাড়ি বেরিয়ে এলো সে। পদ্ম’কে প্রচন্ড পরিমাণে ঘাবড়ে যেতে দেখলো সে। মায়ের দিকে চেয়ে দেখলো মা’ও সন্দিহান চোখে তাকিয়ে আছে পদ্ম’র পানে। শাপলা পদ্ম’র দিক থেকে মায়ের নজর সরানোর জন্য বলে উঠলো
“আম্মা, ঘরে খাটের নিচে কি যানি নড়াচড়া করতাছে, একটু দেখবা তুমি?
আলেয়া শাপলার দিকে তাকিয়ে বললো
“খাটের নিচে আবার কি আইবো?
“জানিনা, তুমি ঘরে আইসা একটু দেখো তো।।
“তোর মোবাইলে কই? মোবাইলের লাইটটা জ্বালাইয়া দেখ কি আছে।
শাপলা খানিক ঘাবড়ে গেলো। মোবাইল তো পদ্ম’র কাছে, তবে এটা ভালো কথা যে মা সেটা খেয়াল করেনি।
শাপলা আবারও বললো
“আমার একা দেখার সাহস নাই। তোমরা দুইজনেই আসো ঘরে। একসাথে দেখি কি আছে। আমার ভয় লাগতেছে খুব।

আলেয়া পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে আবারও চাপাস্বরে বললো
“তারাতাড়ি ঘরে আয় পদ্ম। রাইত বিরাইতে এদিকে ওইদিকে যেনো আর না দেখি তোরে..।

চলবে……

#ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল
তন্বী ইসলাম -১১

আলেয়া পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে আবারও চাপাস্বরে বললো
“তারাতাড়ি ঘরে আয় পদ্ম। রাইত বিরাইতে এদিকে ওইদিকে যেনো আর না দেখি তোরে..।
কথাটা বলে আলেয়া আর দাঁড়ালো না। শাপলা কে ঘরে ঢুকার ইশারা করে নিজেও ঘরে চলে গেলো। পদ্ম মুচকি হেসে তাকালো শাপলার দিকে। ইশারায় বোনকে ধন্যবাদ জানিয়ে দু’বোন মিলে ঢুকে গেলো ঘরের ভেতর।
ঘরে গিয়ে সর্বপ্রথম আলেয়া শাপলাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো
“কই রে শাপলা, তোর মোবাইলের লাইটটা জ্বালা দেখি খাটের নিচে কি আছে।
শাপলা পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে আবারও হাসলো। এরপর দৃষ্টি মায়ের দিকে রেখে বললো
“এখন মনে হয় চইলা গেছে আম্মা। শব্দ তো আর পাই না।
আলেয়া কিঞ্চিৎ রাগী চোখে তাকালেন মেয়ের দিকে। এরপর তিনি আর কিছু না বলে নিজের বিছানায় শুতে চলে গেলো। মা চলে যাবার পরপরই শাপলা পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে ঠোঁট চেপে হাসলো, পদ্মও হাসলো, তবে কোনো রুপ শব্দ ছাড়াই।

খানিক বাদে দু’বোন আবারও গিয়ে পড়তে বসলো। কিছুদূর পড়ার ফাঁকে শাপলার ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো। যদিও শব্দ হলো না, ফোন ভাইব্রেশনে ছিলো তাই। শাপলা কিছু সেকেন্ড ফোনের নাম্বারটার দিকে তাকিয়ে রইলো, ঠোঁটের কোনে তার মৃদু হাসি। পদ্ম খেয়াল করলো সবটা। খানিক দুষ্টুমির ছলে শাপলা ধাক্কা দিয়ে বললো
“কি ব্যাপার আপা? হাসিস কেন?
শাপলা পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে মৃদু গলায় বললো
“তো কি হাসবো না?
“হাসবি না কেন! আমি কি না করছি নাকি হাসার জন্য? কিন্তু কার নাম্বার দেইখা হাসোস তুই?
বোনের কথায় খানিক বিব্রতবোধ করলো শাপলা। ফোনটা বালিশের নিচে গুজে চোখ পাকিয়ে বললো
“বড্ড দুষ্টু হইছিস তুই। আম্মার কাছে বলা লাগবে।
পদ্ম হাসলো। দু’বোন আবারও বইয়ে মুখ গুজলো।
সকালের খাওয়া দাওয়া সেড়ে পদ্ম আর শাপলা যে যার মতো স্কুল কলেজের পথে রওনা হলো। পদ্ম’র স্কুল পেরিয়ে তবেই শাপলাকে কলেজে যেতে হবে। দুবোন একই সাথে বেরিয়েছে তাই। আজ হেঁটে যাবে না সে, আগের দিন যা হয়েছিলো তা ভাবলেই ভয় লাগে। হেঁটে গেলে আরো আগে বেরোতে হত৷ পদ্ম তার স্কুলের সামনে আসামাত্রই বোনের দিকে তাকালো। উচ্ছ্বসিত গলায় বললো
“আমি স্কুলে ঢুকলাম আপা। তুই সাবধানে যাইস।
শাপলা মৃদু হেসে মাথা নাড়ালো। এরপর চলে গেলো নিজের পথে। কয়েক পা এগিয়েই অটো স্টেশন। সেখান থেকেই একটা অটোতে করে চলে যাবে সে।

শাপলা যে অটোটাতে গয়ে উঠলো সে অটোতেই তার ঠিক পাশের সিটেই উঠে বসলো একটা সুদর্শন ছেলে। ছেলেটা বসতেই শাপলা কিছুটা চেপে অন্যপাশে গেলো, শাপলাকে সরতে দেখে ঠোঁট চেপে হাসলো ছেলেটি। সেটাও খেয়াল করলো শাপলা। ছেলেটি সত্যিই অনেক সুন্দর, বডি স্ট্রাকচার দেখে বুঝা গেলো যথেষ্ট লম্বাও সে। হাসার সময় ঠোঁট দুটোতে একটা গোলাপি আভা দেখা গেলো যা সত্যিই দেখার মতো। তবে শাপলা সরে যাওয়ার কারণে ছেলেটির মুখে হাসি কেন ফুটলো সেটাই বুঝে এলো না। পুরো রাস্তা ছেলেটি শাপলাকে একভাবে দেখেই গেছে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরেছে শাপলা। তবে শাপলার কেন যেনো মনে হলো এ ছেলেটিকে সে আগেও দেখেছে। বেশ পরিচিত মনে হচ্ছে, তবে ঠিক কোথায় দেখেছে, কিংবা কেন পরিচিত লাগছে সেটাই তার মাথায় আসছে না।

কলেজের সামনে আসামাত্রই জলদি করে নেমে পরলো শাপলা। ভাড়াটা মিটিয়ে মাথা নিচের দিকে রেখে একরকম দৌঁড়ানোর মত করে ছুটলো কলেজের ভেতর। কিছুটা সময় পর শাপলা ফিরে তাকালো পেছনে, ছেলেটি নেই সেখানে। হয়তো অটোতে করে আরো দূরে কোথাও চলে গেছে। শাপলা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো এটা ভেবে যে অন্তত এ ছেলেটি তাকে ফলো করছে না, ফলো করতে সে এখানেই আশেপাশে কোথাও থাকতো।
স্কুলে কাটানো সমস্তটা দিন হৈ-হুল্লোড় করে কাটালো পদ্ম। যতক্ষণ ক্লাসে স্যার থাকে ততক্ষণ সে নিষ্পাপ বাচ্চা, স্যার চলে যাবার পরই শুধু হয়ে যায় দৌড়াদৌড়ি, হট্রগোল, দুষ্টুমি। যদিও পদ্ম একা নয়, ওর আরো কিছু বান্ধবী আছে ক্লাসে তারাও তার সাথে দুষ্টুমিতে যোগ দেয়। চারটের দিকে ছুটি হয় স্কুল। উচ্ছ্বসিত পদ্ম সকলের সাথে বেশ মজা করে বাড়ি ফিরে।

বাড়ি এসে সে অবাক হয়ে যায়। সেলিম ভাই আসমা ভাবিকে নিয়ে ফিরে এসেছে। পদ্ম’র মুখে হাসির ঝিলিক। সে বইয়ের ব্যাগটা কোনোমতে ঘরে রেখে দৌড়ে চলে যায় চাচীদের ঘরে। চাচী সেলিমের সাথে বসে কথা বলছে। পাশেই বসে আছে আসমা। পদ্ম’কে দেখে হাসলো আসমা। সেলিম বললো
“কি রে পদ্ম, স্কুল ছুটি হইলো?
পদ্ম হেসে বললো
“হইলো তো। না হইলে ফিরে আইলাম কেমনে।
“ওহ তাও তো ঠিক। বোকা হাসলো সেলিম। আসমাকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে পদ্ম বললো
“তোমারে অনেক মনে পরতেছিলো ভাবী। শেষমেশ তুমি তাইলে ফিরে আইলা।
আসমা হেসে বললো
“আমার ননদী আমারে মিস করছিলো ভাবতেই খুশি লাগতেছে পদ্ম। ওহ আচ্ছা, সেইদিন পরে স্কুলের কাজ সাড়তে পারছিলা পদ্ম?
“কোনদিন? আর কোন কাজের কথা কও আসমা?

আলেয়ায় কথায় পদ্ম আর আসমা দুজনেই একসাথে ঘরের দরজার দিকে তাকালো। আলেয়া বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে আসমার দিকে। পদ্ম এবার ভয়ে ভয়ে ঢোক গিললো, এবার বুঝি একটা কেলেঙ্কারি হয়। মনে মনে আসমার উপর বেশ রাগও হলো তার। এই কথাটা কি এক্ষুনি বলতে হলো? আর বলাই লাগে কেন? পদ্ম চোখে মুখে আসমার প্রতি যেমন অভিমান, তেমনি মায়ের কথা মনে করে ভয়… দুটোই একসাথে কাজ করছে।
আসমাকে চুপ থাকতে দেখে আলেয়া আবারও বললো
“কি’গো বউ, কইলা না তো কোন কাজের কথা কইলা পদ্ম’রে!
আসমা হেসে বললো
“চাচী ঘরে আইসা বসেন। ওইখানে দাড়াইয়া আছেন যে।
আলেয়া ঘরে ঢুকতেই জুবেদা আলেয়াকে উদ্দেশ্য করে বললো
“এখানে বো শাপলার মা।
শাশুড়ির কথার পেছনে আসমাও বললো
“চাচী বসেন।।
জুবেদা উঠে গেলো অন্যদিকে। ততক্ষণে সেলিমও বাইরে বেরিয়েছে। আলেয়া আবারও আসমার দিকে তাকালো। বললো
“কইলনা তো বউ।
আসমা ক্ষীণ হেসে বললো
“পদ্ম’র তো সেদিন স্কুলে নাকি কি দরকার ছিলো, সে কাজের কথাই জিজ্ঞাসা করছিলাম চাচী। স্কুলের দরকারেই তো সে চইলা আসছিলো আমাদের বাড়ি থেকে।
আলেয়া কিঞ্চিৎ ভ্রু বাকিয়ে পদ্ম’র দিকে তাকালো। শান্তস্বরে বললে
“ওহ আইচ্ছা।

পরক্ষণেই বসা থেকে উঠে পরলো আলেয়া। পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে ক্ষীন গলায় বললো
“ঘরে আয় পদ্ম। স্কুল থেইকা ফিরলি মাত্র, খাইবি।
আলেয়া আর কোনো কথা না বলেই বেরিয়ে পরলো ঘর থেকে৷ পদ্ম’র এবার কান্না পাচ্ছে খুব। মায়ের মুখ দেখের বুঝা যাচ্ছে পদ্ম’র সাথে আজ কি হতে পারে। পদ্ম রাগী চোখে একবার আসমার দিকে তাকালো। এরপর কাঁদো কাঁদো মুখ করে ঘর থেকে বেরোতে যাবে তখনই কোথা থেকে সামনে এসে দাঁড়ালো আশিক। হঠাৎ আশিককে দেখে চমকে উঠলো পদ্ম। আশিক তার সমস্ত দাঁত কপাটি বের করে পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে হাসছে৷ পদ্ম’র এবার আরো বেশি কান্না পাচ্ছে৷ এ যে মরার উপর খারার ঘাঁ। আশিক পদ্ম’কে ঘর থেকে বেরোনোর পথ আটকে সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিছু সময় পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে সেই হ্যাবলা হ্যাবলা হাসিমুখটা দিয়েই বললো
“ভালো আছো পদ্ম?
পদ্ম কাঁদোকাঁদো মুখ করে মাথা নাড়ালো। ছোট করে বললো
“হু ভালো, অন্নেক ভালো।
আশিক পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে ভ্যাবলাকান্তের মতো দাঁড়িয়ে রইলো। পদ্ম বেরোতেও পারছে না। এবার মুখ ফুটে সে বলেই ফেললো
“আশিক, তুমি একটু সরে দাঁড়াও না ভাই, আমারে আম্মা ডাকতাছে তো।
আশিক যেনো তখন অন্য দুনিয়ায় বিচরণ করছিলো। আনমনেই সে পদ্ম’র কথার বিপরীতে বললো
“যাইবা তো, একটু দাঁড়ান না, ভালো করে দেখতে দাও।

আশিকের কথায় যেনো পদ্ম’ চোখ কপালে উঠার অবস্থা। সে আবারও আশিককে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আলেয়ার কন্ঠস্বর তার কানে এলো।
“তোরে কখন ডাকছি পদ্ম?
পদ্ম দেখলো মা প্রচন্ডরকম রাগী চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। পদ্ম ভয়ে ভয়ে ঢোক গিললো। আশিককে একমতন হাত দিয়ে ঠেলে বেরয়ে এলো ঘর থেকে। এরপর মায়ের আগেই দৌড়ে চলে এলো ঘরে।
ঘরে ঢুকতেই মায়ের অগ্নিমূর্তির রুপ চোখে ধরা দিলো পদ্ম’র কাছে। মা বেশ কড়া চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। পদ্ম ঢোক গিলে বললো
“কি হইছে আম্মা? এমনে তাকাইয়া আছো কেন আমার দিকে?
আলেয়া মেয়ের কথার কোনো জবাব না দিয়ে বিছানার মাথায় গিয়ে বসলেন। চোখেমুখে তার রাগ বুঝা গেলেও কন্ঠে সেটা প্রকাশ না করে অত্যন্ত স্বাভাবিক গলায় বললেন
“সেদিন তুই বাড়ি ফিরলি সন্ধ্যায়। কইলি আমাগোরে ছাইড়া ভালো লাগতাছে না তাই চইলা আইলি। আইজ আসমা অন্য কথা কয় কেন?
মায়ের কথায় কি জবাব দেবে পদ্ম? আজ আপাও এখনো কলেজ থেকে ফিরে নি যে তাকে মায়ের হাত থেকে বাচিয়ে নেবে।

পদ্ম ঢোক গিলে বললো
“কোন কথা আম্মা?
আলেয়া চাপা স্বরে বললো
“তোর কি সত্যিই স্কুলে কোনো দরকার আছিলো? নাকি অন্য কোনো কারণে ফিইরা আইছিলি?
পদ্ম’র কান্না পাচ্ছে এবার। মায়ের মুখে মুখে জবাব দিয়ে কথা ঘুরানোর মত সাহস আর বুদ্ধি তার নেই। আলেয়া এবার কিছুটা চিল্লানোর মতো করে বললেন
“কথা কস না কেন? কি জিগাইতেছি আমি তোরে? তোর যদি ঐদিন স্কুলে দরকারই হইয়া থাকে তয় আমারে কস নাই কেন? আর স্কুলে দরকার না থাকলে ওগো কাছে মিছা কথা কইয়া বাড়ি ফিরলি কেন?
“ও মিথ্যা কথা কয় নাই আম্মা, ওর সত্যিই স্কুলে দরকার ছিলো।
শাপলার কন্ঠস্বর পেয়ে অদ্ভুত ভাবে শাপলার দিকে তাকালো পদ্ম। আলেয়া খানিক বিস্ময়ে বললেন
“ওহ ওর দরকার আছিলো? তা ওই বাড়িতে গিয়া স্কুলের দরকারের খবরটা ও পাইলো কইত্তে?
পদ্ম এক দুই না ভেবে বললো
“শ্রাবণ ভাইয়ের কাছ থেইকা পাইছি আম্মা।
“শ্রাবণের কাছ থেইকা? ভ্রু বাকিয়ে বললেন আলেয়া।
পদ্ম ভয়ে ভয়ে বললো
“হু!
“তা শ্রাবণ জানলো কেমনে তোর স্কুলে দরকার আছিলো?
“আমার বান্ধবী ফোন কইরা জানাইছে। আবারও ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলো পদ্ম।

আলেয়া এবার মেয়ের পা থেকে মাথা পর্যন্ত পরখ করলেন। তিনি সর্বোচ্চ ধারণা করছেন মেয়ে তার মিথ্যা কথা বলছে। কপালে ভাজ টেনে তিনি বললেন
“তা তোর শ্রাবণ ভাইয়ের নাম্বার তোর বান্ধবী পাইলো কই?
এবার বিপাকে পরলো পদ্ম? কি উত্তর দিবে সে? এবার তো আর কোনো উপায় নেই। অসহায় মুখ করে শাপলার দিকে তাকালো সে। শাপলা এক দুই না ভেবে হঠাৎ বলে উঠলো
“শ্রাবণ ভাইয়ের কাছে আমি ফোন দিছি আম্মা। ওর বান্ধবী আমার মোবাইলে কল করছিলো, পরে আমিই শ্রাবণ ভাইরে ফোন দিয়া সবটা জানাইছি।।
আলেয়া এবার ভ্রু বাকিয়ে শাপলাকে উদ্দেশ্য করে বললো
“ওর স্কুলে দরকার সেইটা আমারে কস নাই কেন? আর বাড়িতে ফিইরা মিছা কইলো কেন তোর বোইন যে আমাগোর লাইগা ফিইরা আইছে।

শাপলা এবার এগিয়ে এসে মাকে জরিয়ে ধরে বললো
“ও আম্মা, এতো জেরা কেন করতাছো কও তো। পদ্ম ডরাইতাছে তো। স্কুলের দরকারের কথাটা কইতে ভুইলা গেছিলাম। আর পদ্ম’র তো সত্যিই আমাগো ছাড়া খারাপ লাগতাছিলো, আমারে কইছে তো। সেদিন স্কুলে দরকার না থাকলেও ও আইয়া পরতো।
“স্কুলে দরকার আছিলো, তা স্কুলে গেলো কখন? ও তো সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছে।
“স্কুলের কাজ সাইড়া একবারে বাড়িতে ফিরছে আম্মা।
আলেয়া আরেকবার পদ্ম’র দিকে তাকালো। পদ্ম এক কোনায় গুটিশুটি মেরে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি সেখান থেকে উঠে গেলেন। যেতে যেতে বললেন
“আমি বুঝিনা রে, পদ্ম’রে শাসন করার সময় তুই যে কেমনে সামনে আসোস, আর কেমনে সব কথার উত্তর দেস আমি কিচ্ছু বুঝিনা।

মা চলে যেতেই বোনের দিকে তাকিয়ে হাসলো শাপলা৷ পদ্ম গিয়ে ফট করে জড়িয়ে ধরলো বোনকে। বেজায় উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বললো
“তোরে কেমনে ধন্যবাদ জানামু রে আপা, আইজ তুই ঠিক টাইমে না আইলে আম্মার হাতে আমি বোধহয় খুনই হইতাম।
“তোরে খুন হওয়ার হাত থেইকা বাচানোর জন্যই বোধহয় আল্লাহ আমারে এই টাইমে ঘরে পাঠাইছে৷। পদ্ম হাসলো। পরক্ষনে কিঞ্চিৎ চিন্তিত হলো সে, বোনের দিকে তাকিয়ে ভ্রু বাকিয়ে বললো
“তা তুই এইসব কইলি কেমনে আপা? আমি তো আগে তোরে এই ব্যাপারে কিছু কই নাই!
শাপলা হেসে বললো
“উপস্থিত বুদ্ধি। আম্মার সব কথায় আমি ঘরের সামনে দাঁড়াইয়া শুনছি। বুইঝা নিছি কি কি হইছে সেদিন।
পদ্ম বিস্ময়ে বললো
“সেদিন কি কি হইছে সব বুঝছোস?
শাপলা মাথা নাড়িয়ে বললো
“হুম
“শ্রাবণ ভাই আমারে নিয়া নদীর ধারে হাঁটতে গেছিলো সেটাও বুঝছোস?
শাপলার হাসি পেলো এবার। বোনটা তার কি বোকা। পদ্ম’র কথার বিপরীতে সে চাপা হাসি হেসে বললো
“হু।
পদ্ম আবারও চমকালো। উত্তেজিত গলায় বললো
“শ্রাবণ ভাই আমারে এক হাতে জড়াইয়া ধরছিলো সেইটাও বুঝছোস?

শাপলা এবার বিষম খেলো। চোখ বড় বড় করে বোনের দিকে তাকিয়ে বিস্ময়ের সাথে বললো
“শ্রাবণ ভাই তোরে জরাইয়াও ধরছে?
পদ্ম’র এবার মাথায় আসলো আপার এইসব জানার কথা না। সে জিহবায় কামড় বসিয়ে মাথা নাড়িয়ে বললো
“না না না। মোটেও না। আমি তো তোরে জিগাইতেছি তুই এইসব উল্টাপাল্টা ভাবছোস কিনা আমাগোরে নিয়া।
শাপলা হাসলো এবার বোনের কথায়। পদ্ম লজ্জা পেলো খুব, এক দৌঁড়ে বোনের সামনে থেকে বেরিয়ে সোজা ঝিলের পাড়ে চলে গেলো সে। লজ্জায় মুখ লাল হয়ে যাচ্ছে, বুক ধরফর করছে। সেদিনকার শ্রাবণ ভাইয়ের জড়িয়ে ধরার কথাটা মনে পরতেই বেশ লজ্জা অনুভব করছে সে, ইচ্ছে করছে মাটির নিচে ঢুকে পরুক।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here