মায়াডোর (৮ম পর্ব)
.
কেমন হবে তা ভাবতে গিয়ে ইতির মানসপটে কল্পের যে অসহায়ত্বের ছবি ভেসে উঠেছে। তাতে আনন্দ না পেয়ে ইতির উল্টো কষ্টই হলো। বুকের ভেতর থেকে মায়া-মমতা যেন বুদবুদ করে জেগে উঠে প্রতিবাদ করলো। মানুষটার সঙ্গে সে এমন কাজ কখনও করবে না। কল্প ইতির দিকে তাকায়। চোখাচোখি হয়ে যায় দু’জনের। ইতি লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিল। সবাই যার যার রুমে চলে যায়। হঠাৎ ফেইক আইডির ব্যাপারটা মনে আসায় ইতিও খাওয়া শেষে নীলার কাছে গেল। মোবাইল হাতে নিয়ে ফেইসবুকে ঢুকে দেখে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এখনও গ্রহণ করেনি৷ অদ্ভুত তো। নীলা আলনার কাপড় ভাঁজ করছিল। সে কাছে গিয়ে বললো,
– ‘এই দেখো এখনও গ্রহণ করেনি। প্রচুর ভাব তো এই ব্যাটার।’
নীলা ফিক করে হেঁসে বললো,
– ‘তুমি এতো রাগ করছো কেন? এটা তো তোমার আইডি না। তোমাকে চিনেও যদি গ্রহণ না করতো তাহলে রাগের একটা ব্যাপার ছিল। তোমার চাচ্চুও এরকম। তার যত অকারণ রাগ অভিমান।’
– ‘সব কথায় চাচ্চুকেই টানতে হবে তোমার।’
নীলা ফিক করে হেঁসে বললো,
– ‘অবশ্য তোমার রাগের পক্ষে একটা গান আছে।’
– ‘কি?’
নীলা গুনগুন করে গাইল,
“তোমাকে চিনি না, নাম ও জানিনা
তবু কেন মনে হয়, কতো চেনা জানা….”
– ‘তো এটা আমার রাগের পক্ষে কিভাবে?’
নীলা গাল টেনে বললো,
– ‘তুমি অভিমান করে ভাবতেই পারো ‘কেন আমাকে চিনবে না, আমি যতই মুখোশ পরে তার কাছে যাই, যতই গলা বদলে ডাকি, সে যেন ভাবে কেমন চেনা চেনা লাগে।’ ভালোবাসার মানুষের কাছে এটা আশা করতেই পারো।’
ইতির মুখ লাল হয়ে গেল। যেন কোনো কিছু চু*রি করতে গিয়ে হাতে-নাতে ধরা পড়ে পড়ে গেছে। সে কৃত্রিম রাগ দেখিয়ে মোবাইল বিছানায় ফেলে বললো, ‘বাজে কথা বলবে না তো আন্টি। তুমি যে ফেইক আইডি থেকে মানুষের সঙ্গে মজা করো। তাদের সবাইকে কি ভালোবাসো? আমিও জাস্ট কৌতূহল থেকে করেছি।’ কথাটি বলে ‘হন-হন’ করে রুম থেকে বের হয়ে গেল।
কল্প পড়ার টেবিলে বসে আছে। লতিফ চেয়ারে। খানিক পর সে বললো,
– ‘ভাই সাহেব, আপনে জানেননি? বেশি পড়ালেখা করলে মাথার ব্রেইন আউট হইয়া যায়।
কল্প বইয়ে চোখ রেখেই জবাব দিল,
– ‘এখন জানলাম।’
– ‘আমাদের এদিকে এক বিরাট শিক্ষিত লোক পাগল হইয়া রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে। দিন-রাত খালি পড়ালেখা করতো। পড়ে মাথার হইছে ব্রেইন আউট। মাথায়ও আচানক কারবার হয় কি কন ভাই সাহেব?’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘ভাই সাহেব চলেন বাইরে থাইকা হাঁটাহাঁটি কইরা আসি। ব্রেইন ভালা থাকবো।’
কল্প খানিক ভেবে বললো,
– ‘বিকেলে অবশ্য হাঁটাহাঁটি করা ভালোই। চলেন যাই।’
ইতি ছাদে এসেছিল। মন খারাপ হলেই সে ছাদে আসে। খোলা আকাশ। স্নিগ্ধ বাতাস। একপাশে কিছু ফুলগাছও আছে। ছাদটা তার অসম্ভব প্রিয় জায়গা। চাঁদনী রাত মাঝে মাঝে নীলাকে নিয়ে সে রাতেও ছাদে আসে। নীলা তখন গুনগুন করে গান গায়। অপুর্ব লাগে সবকিছু। ইতির উঠানে চোখ গেল। লতিফ আর কল্প কোথাও যাচ্ছে। ইতি বুঁদ হয়ে তাকিয়ে রইল। ওরা গেইট খুলে রাস্তায় বের হয়েছে। লতিফ অনবরত কথা বলছে। কল্প মাঝে মাঝে মাথা নাড়ছে। কি মিষ্টি লাগছে ওকে। ইতি ভেবে পায় না তাকে এত চম্বুকের মতো টানছে কেন কল্প? নীলা হঠাৎ পিছু থেকে এসে জোরে ‘ভাউ’ বললো। কেঁপে উঠলো ইতি। পিছু ফিরে নীলাকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নিল সে।
– ‘ছাদে একা একা কি করো।’
ইতি জবাব দিল না। নীলা টেনে নিজের দিকে ফিরিয়ে বললো,
– ‘কি? কথা বলবে না আমার সাথে?’
ইতি তাও কথা বললো না। নীলা হঠাৎ কাতুকুতু দিতে শুরু করলো। খিলখিল করে হেঁসে ছাদে বসে গেল ইতি। নীলা তাকে টেনে তুলে বললো,
– ‘চলো দড়িলাফ খেলি।’
নীলা খানিকক্ষণ খেলে হাঁপাতে হাঁপাতে ইতির কাছে দিল। দু’জন দড়িলাফ খেলতে খেলতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। হুস্না বেগম এসে ইতিকে পড়তে যাওয়ার জন্য ডাকলেন। নিচে চলে গেল দু’জন। ইতি কল্পের রুমে উঁকি দিয়ে এসে বললো,
– ‘মা কল্প ভাইয়া তো বাইরে গেছে, এখনও আসেনি।’
– ‘আসেনি আসবে, তুই গিয়ে বস। গণিতে তো তুই দূর্বল। অংক বেশি করে করবি।’
নীলা রান্নাঘরে ঢুকতে ঢুকতে বললো,
– ‘সে কি পড়াবে বলেছে ভাবি? এসএসসির গণিত তো এতটাও সহজ না। যদি বাড়তি চাপ হয় তার উপর। নিজের পড়ালেখাও তো আছে।’
– ‘ওর দাদাভাই আজ দুপুরে কথা বলেছেন। সে নিজেই জানিয়েছে সমস্যা নেই, পড়াবে সে। আর উনি রেজাল্ট জিজ্ঞেস করেছিলেন, এসএসসি এইচএসসি দুটাতেই না-কি ছেলেটার জিপিএ ফাইভ ছিল।’
– ‘বাহ তাহলে তো ভালো।’
– ‘গাধিটা তো পড়ালেখায় নাই। দেখো দুইদিন ওর কাছেও পড়তে গিয়ে বাদ দিয়ে দেবে।’
বকাবকি শুরু হওয়ার আশংকা দেখে ইতি রান্নাঘর থেকে বের হয়ে গেল। তখনই লতিফের কথা শোনা গেল বারান্দায়। তারমানে কল্প ফিরেছে। ইতি চুলটা ভালোভাবে বেঁধে, মাথায় ওড়না দিয়ে বই হাতে নিয়ে গেল। দরজার সামনে গিয়ে পর্দা সরিয়ে সালাম দিয়ে বললো,
– ‘আসতে পারি স্যার?’
সালাম আর স্যার ডাকায় যে রসিকতা মেশানো ছিল কল্প বুঝতে পারে। সে মুচকি হেঁসে বললো,
– ‘আসো।’
ইতি ভেতরে এসে লতিফকে বললো,
– ‘আপনি এখন যান আমরা পড়বো।’
লতিফ উঠে যাচ্ছিল কল্প বসতে ইশারা করে ইতিকে বললো,
– ‘উনি আমার কাছে এসেছেন। অসুবিধা হলে আমিই বলবো যাওয়ার কথা। তুমি ওই চেয়ারে বসো।’
ইতি মাথা নেড়ে বললো,
– ‘আচ্ছা স্যার আপনি যা বলবেন তাই হবে।’
লতিফ নিজেই উঠে বললো,
– ‘আমি যাই ভাইজান। পরে আসমু।’
কল্প মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়ে ইতির সামনের চেয়ার টেনে বসলো।
– ‘স্যার প্রথমদিন পড়া হবে না-কি গল্প।’
– ‘পড়া ছাড়া তোমার সঙ্গে গল্প করার মতো আমার কিছু নাই। তোমার থাকলে করো।’
– ‘না মানে পরিচয় পর্ব তো এখনও বাকি।’
কল্প বুঝতে পারছে প্রচুর ভোগাবে মেয়েটা। সে মুচকি হেঁসে বললো,
– ‘আচ্ছা কিছু জানার থাকলে জিজ্ঞেস করো।’
– ‘আপনার নাম?’
– ‘জানো না?’
– ‘না তো।’
– ‘কল্প ইসলাম।’
– ‘আপনাকে কি বলে ডাকবো?’
কল্পের মনে হলো স্যার ডাকাতে পারলে ইতির দুষ্টামি হয়তো একটু কমে আসবে। ওকে পড়ানোর ব্যাপারে সে সিরিয়াস। এর পেছনে একটা কারণ আছে। তার নিজের পড়ার জন্য মামা-চাচাদের তেমন একটা আগ্রহ নেই। দেশের বাইরে পাঠানোর একটা আলোচনা চলছে৷ তাই শুধু সাস্টে পরীক্ষা দেবে সে। চান্স না হলে ন্যাশনালে ভর্তি হয়ে যাবে। তখন মেসে উঠতে হবে। কিন্তু যদি এ বাড়ির বাচ্চাদের পড়ায়। সবাই যদি ভালো মতো পড়ালেখা করে। তার ধারণা মেসে যেতে হবে না। এ বাড়িতে থেকেও সে অনার্স সম্পন্ন করতে পারবে। তাদের বাচ্চাদের পড়ালেখাও হলো, তারও ফ্রী থাকা-খাওয়া চলে যাবে। কিন্তু ইতি মেয়েটাকে সামলানোই কঠিন মনে হচ্ছে৷ অধিক চঞ্চল। কোনোভাবে পোষ মানিয়ে পড়ালেখায় মনযোগী করে তুলতে হবে। সে আমতা-আমতা করে বললো,
– ‘তোমার যা ইচ্ছা ডাকবে ইতি। সমস্যা নেই। কিন্তু পড়ালেখা ভালোভাবে করো। এসএসসির রেজাল্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ জানো তো।’
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে। আমি ভাবছি এ বাড়িতে আপনার সমবয়সী কেউ তো নাই আমি ছাড়া। কল্প বলেই ডাকলে ভালো হবে না?’
– ‘আশ্চর্য কি বলো এগুলো? তুমি মিনিমাম দুই বছরের ছোট আমার।’
– ‘তো এটা কি বেশি? একটা ছেলে প্রেম বা বিয়ে করার সময় কিন্তু তিন-চার বছরের ছোট মেয়েকেও করে। তবুও বন্ধুর মতো থাকে না তারা?’
– ‘প্রেম-বিয়ে এগুলো আসলো কেন এখানে।’
– ‘একটা উদাহরণ মাত্র, আর কিছু না। আমি চাচ্ছিলাম আমরা বন্ধুও হতে পারি। আমি কল্প বলে ডাকলাম। আপনি ইতি ডাকবেন।’
– ‘এসব অদ্ভুত কথাবার্তা আমার সঙ্গে বলবে না৷ পড়তে এসেছো, বন্ধুর মতো মনে করলে তো পড়বে না। তুমি স্যার না ডাকলেও অন্তত ভাই ডাকতে হবে।’
ইতি গণিত বইটা মুখের কাছে নিয়ে হাসি আড়াল করে বললো,
– ‘শুধু ভাই না-কি ভাইজান ডাকতে হবে?’
– ‘তুমি কি রসিকতা শুরু করেছো?’
– ‘রসিকতা না তো। আমরা নানাকে নানাজী ডাকি না? সেরকম শুধু ভাই ডাকলে খারাপ দেখায় তাই শ্রদ্ধা থেকে বলেছি।’
– ‘না এত শ্রদ্ধা লাগবে না৷ তুমি বরং ভাই ডাকলেই চলবে।’
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে কল্প ভাইয়া।’
কল্প ভ্রু কুঁচকে তাকালো। ‘কল্প ভাইয়া’ ডাকটাও যেন কেমন শোনাচ্ছে। তবুও সেদিকে নজর না দিয়ে বললো,
– ‘আচ্ছা এখন বই বের করো।’
– ‘আরও প্রশ্ন রয়ে গেছে তো।’
– ‘আচ্ছা বলো আরকি।’
– ‘আপনার বাড়ি কোথায়? আপনার নানাবাড়ি শরৎ পুর তা জানি শুধু।’
– ‘আমি শরৎ পুরেই বড়ো হয়েছি।’
– ‘মা-বাবার সঙ্গে থাকেন না কেন?’
– ‘আমার এক বছর বয়সের আগেই বাবা মারা গিয়েছিলেন প্রবাসে।’
– ‘ভেরি স্যাড, এরকম আমার এক বান্ধবীও আছে। তারপর কি হলো? আন্টি আপনাকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে এসেছিলেন?’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘আন্টি ভালো আছেন তো?’
– ‘জানি না। কারণ তার সঙ্গে আমি থাকি না। তবে ভালো থাকার অবশ্য কথা।’
– ‘মানে কি? মায়ের সঙ্গে থাকেন না কেন?’
– ‘এত অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন কেন করছো? বই বের করো।’
– ‘আজই তো শুধু প্রশ্ন করবো। আজ পরিচয় পর্ব চলছে তো।’
কল্প ম্লানমুখে হাসলো। তার মায়ের যখন অন্য জায়গায় বিয়ে হয়। তখন তার বয়স মাত্র চার বছর। তাকে গোপন রেখেই মা অন্য জায়গায় বিয়ে বসেছিলেন। এটা কাউকে বলতে ভীষণ লজ্জা লাগে তার। তবুও প্রায়ই এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। দীর্ঘশ্বাস গোপন রেখে বললো,
– ‘এগুলো পরিচয় পর্বের অংশ না। বই বের করো।’
ইতি খাতায় আঁকিবুঁকি করতে করতে বললো,
– ‘আপনি বিবাহিত নাকি অবিবাহিত?’
কল্প হেঁসে ফেললো৷ হাসতে হাসতে বললো,
– ‘আমাকে বিবাহিত মনে হয়?’
ইতি জবাব না দিয়ে ওর হাসির দিকে তাকিয়ে রইল খানিকক্ষণ। কি মিষ্টি হাসি। তারপর আদেশের মতো বললো,
– ‘পরে বলবো শুধু হ্যাঁ না উত্তর দিয়ে যান।’
– ‘না অবিবাহিত।’
– ‘প্রেমিকা আছে?’
– ‘এটা জানার কি দরকার?’
– ‘শুধু হ্যাঁ অথবা না।’
– ‘না নেই। দেখো তোমার কত আজাইরা প্রশ্নের জবাব দিয়েছি। দয়া করে এবার পড়ো।’
ইতি থুতনিতে হাত দিয়ে তাকিয়ে থেকে বললো,
– ‘কসম আমি পড়বো এবং ভালো রেজাল্ট করবো। এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে হবে না আর। কিন্তু আমার সঙ্গে এভাবে প্রতিদিন গল্প করতে হবে। গল্প করতে আমার ভালো লাগে।’
কল্প আবারও হাসলো।
– ‘তুমি এভাবে কথা বলছো কেন ইতি? যাইহোক পড়ালেখা ঠিক রাখলে আমারও গল্প করতে ভালোই লাগে। শুধু পড়ালেখা ঠিক রেখো। আমি পড়ানোর পরও যদি রেজাল্ট খারাপ হয় লজ্জা পাব না বলো?’
ইতি মাথা নেড়ে সম্মতি দিল। সে ভেবে পাচ্ছে না কল্প এতো কোমল আচরণ করছে কেন। চোখ ফিরিয়ে নিয়ে খাতা বের করে বললো,
– ‘আচ্ছা আমার হাতের লেখার স্পিড খুব কম। আপনি কি টাইম ধরবেন? আমি এক পৃষ্ঠা দেখি কতক্ষণে লিখতে পারি? জানেন তো ফুল মার্কস লিখতে গিয়ে পরীক্ষার সময় চলে যায়।’
– ‘আচ্ছা লিখ, আমি টাইম দেখছি।’
ইতি পুরো পৃষ্ঠায় বারবার একই কথাই লিখে যাচ্ছে, ‘আপনার হাসি এত মিষ্টি কেন, আপনাকে এতো ভালো লাগছে কেন।’
কল্প অবাক হয়ে বললো, ‘এগুলো কি লিখছো? কার হাসি সুন্দর? কাকে এত ভালো লাগে?’
ইতি মুখ টিপে হেঁসে বানিয়ে বললো,
– ‘ইশ স্যরি, আজ হয়েছে কি জানেন? আমার ক্লাসমেট একটা ছেলে চিঠি দিয়েছে। সেখানে শুধু এই দুই লাইন লেখা। মাথা থেকেই যাচ্ছে না। তাই লিখতে গিয়ে কিছু খুঁজে না পেয়ে আনমনে এগুলোই লিখে ফেলেছি।’
– ‘তুমি তো অদ্ভুত একটা মেয়ে। অবলীলায় এসব বলছো আমাকে। ক্লাসে চিঠি দিতেই পারে তাই বলে আমাকে বলার কিছু নেই।’
– ‘আপনি আবার আমাকে খারাপ ভাববেন না। ওই চিঠি আমি ছিঁড়ে ফেলে দিছি। এরকম অনেক ছেলেকেই আমি পাত্তা দেই না।’
– ‘কিন্তু তুমি খুশিই হয়েছো মনে হচ্ছে।’
– ‘তা তো একটু হয়েছি। শত হলেও প্রশংসা করছে।’
– ‘যার-তার প্রশংসায় খুশি হওয়াও ভালো না। যেহেতু তুমি আসলেই সুন্দর, হাসিও মিষ্টি। তাই এই সত্য যার-তার মুখ থেকে শুনে পুলকিত হওয়ার কিছু নাই। আর প্রতিটি সুন্দরী মেয়ের পেছনেই এরকম প্রপোজের লাইন লেগে থাকে। তোমার একার না। এত খুশি হওয়াটাই নিজেকে অপমান করা। টাইমে গন্ডগোল লেগে গেছে। আবার নতুন পৃষ্ঠায় লিখতে শুরু করো।’
কল্পের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে ইতির চোখ-মুখ ঝলমল করে উঠলো। খুশিতে আত্মহারা হয়ে নতুন পৃষ্ঠায় লিখতে শুরু করলো, ‘ধন্যবাদ ভাইয়া।’
__চলবে….
লেখা: জবরুল ইসলাম