তবুও তুমি
১২ তম পর্ব
” কিরে নিপা এতক্ষন ধরে দরজা নক করতেছি তাও তোর ঘুম ভাঙ্গে না?” চোখ কুঁচকিয়ে প্রশ্ন করল বড় খালাম্মা। ভয়ে দেখি হাত পা ঝিমঝিম করতে শুরু করেছে ততক্ষনে। কি করব কি বলব কি না কর কিছুই মাথায় আসছিলা না। কোনমতে বললাম ” বড় খালাম্মা আপনি যান আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেছি”। বড় খালাম্মা চলে যেতেই আমি তাড়াতাড়ি করে দরজা লক করে আবার রাসেল ভাইয়ের কাছে চলে আসলাম। কতক্ষন আস্তে আস্তে ডাকাডাকি করে যখন দেখলাম ওঠে না তখন না পারতে দুই হাত দিয়ে ধাক্কা দিতে থাকলাম তার পিঠে। সারাজীবন উদাহরণ দিতে শুনেছি কুম্ভকর্ণ এর মত ঘুমায়। আজ পয়লা বার দেখলাম কুম্ভকর্ণ কাহাকে বলে। রাসেল ভাই উবুড় হয়ে ঘুমিয়েছে খেয়াল করে দেখলাম উনার বুকের নিচে আমার ওড়না। কতক্ষন সেই ওড়না ধরে টানাটানি করলাম। মনে চাচ্ছিল লাঠি এনে কতক্ষন এইটার পিঠের উপরে পিটাই। যখন ডাকতে ডাকতে টায়ার্ড হয়ে গেলাম না পেরে ফ্লোরেই বসে পড়লাম। মানুষটা নড়েও না চড়েও না ভুসভুস করে ঘুমাচ্ছে। বড় বড় করে নিশ্বাস নিলাম। যা হবার তাই হবে সমস্যা নাই। ওয়াশ রুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলাম রুম থেকে। ডাইনিং এ বিশাল আয়োজন হরেক রকম নাস্তা নতুন জামাই বাসায় এসেছে বলে কথা। কিন্তু একটা জিনিস খুব আশ্চর্য লাগতেছে সবাই যেন আমার দিকে কেমন কেমন করে তাকাচ্ছে। মানহা আপু নতুন ভাইয়াকে নিয়ে নাস্তা খেতে এসেছে। শুনলাম বড় আপু নাকি এখনও আসেই নাই। বাহ কি মজা সবার। আর আমি ভয়ের চোটে আধা মরা হয়ে আছি। কখন সবাই দেখে ফেলে যে আমার রুমে রাসেল ভাই ঘুমিয়ে আছে। ” কি রে নিপা তোর মুখটা অমন আমসির মত শুকিয়ে আছে কেন” খালা আমার প্লেটে নাস্তা দিতে দিতে বলল। ” কই কিছু না তো আমি ঠিক আছি খালা ” কোন রকমে কথা এড়িয়ে খাওয়া শুরু করলাম আমি। ” ইসস বরের চিন্তায় চিন্তায় আর বুবুজানের ঘুমই আসে না আপুর তাই না রে জিমি ” এই কথা বলেই খিটখিট করে হেসে উঠলো মিলি। মনে চাচ্ছিল সোজা যেয়ে ওই শাকচুন্নির গলা টিপে ধরি। দাঁতে দাঁত পিষে কোন রকমে নাস্তা যেন খাচ্ছিলাম না গিলছিলাম।
ছোট খালু পাশে এসে বসলেন খালুর দিকে তাকিয়ে দেখি আমার মুখ কতটুকু শুকিয়েছে জানি না। বেচারাকে দেখলে মনে হয় একমাসের আমাশার রুগী। ” খালু শরীর ঠিক আছে তো আপনার ” আমি প্রশ্ন করে বসলাম। ” আর মা শরীর বেঁচে আছি যে এটাই অনেক কিছু” এই বলেই নাস্তায় মন দিল খালু। খালামনি দিব্বি ঘুরতেছে হাসতেছে আর বেচারা খালুর হাসার৷ স্বাধীনতা পর্যন্ত নেই। খেয়ে রুমে রান্না ঘরে ঘুরে এসে দেখি আমার রুমের দরজা হালকা ফাঁকা করা যেন কলিজার ভেতরে কেউ জোরে একটা চিপা দিয়ে ধরেছে। কেউ ঢুকেছে নাকি আমার রুমে। হায় কপাল কেউ যদি উনারে দেখে আমার রুমে ঘুমানো তখন কি হবে। এক ছুটে রুমে যেয়ে হাজির হলাম। বিছানা এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে।আমার ওড়নাও আগের জায়গায় কিন্তু বিছানা খালি। গেল কই রাসেল ভাই বড় একটা সস্তির নিশ্বাস যেন ফেললাম আমি। যেখানে গেছে যাক গেছে তো। রুম গোছাতে গোছাতে মিলি জিমি এসে হাজির। আমাকে দেখেই কেমন কেমনে করে যেন ঢলাঢলি করে হাসাহাসি করতেছে। ” কি রে পেটে কি গুঁড়ো কৃমি হইছে যে এমন করতেছিস” মেজাজ খারাপ করে প্রশ্ন করলাম। আমার কথা শুনে যেন ওদের হাসি এমনিতেই বেড়ে গেল। কি যে খারাপ লাগছিল বলে বোঝাতে পারব না।কান ধরে দুটোকে রুম থেকে বের করে দিলাম। নিজে বাঁচি না নিজের যন্ত্রণায় আর ওই ফাজিল গুলো আছে ওদের মজায়। বড় খালাম্মা ঘোষনা দিলেন আজকের লঞ্চেই উনি ঝালকাঠি ব্যাক করবেন। সবাই এত অনুরোধ করার পরেও উনি সিদ্ধান্তে অটল। ছোট খালামনিও আজকে উনার বাসায় চলে যাবে। নতুন জামাই মেয়েকে নিয়ে। সাদ দুলাভাই কল দিয়ে জানালো সে তার বউকে নিয়ে অজানায় হারিয়েছে। বড় ভাবিও চলে যাবে তাদের বাসায়৷ পুরো বাসা খালি আর আমি? আমি হচ্ছি বলদে আজম যে এখনও জানেই না তার বরকে। নাস্তা খেয়ে সবাই মোটামুটি গাট্টিবোঁচকা গোল করে হাওয়া। সবাই যাওয়ার পরে শুরু হল আমার মিলির আর খালার কাজ। ভাবি নতুন সেও এসে হাত লাগাল। চারজন যখন ঘরদোর মোটামুটি একটা অবস্থায় আনতে আনতে বেলা শেষে। যখন গোসল করে বের হলাম তখন ঘড়িতে প্রায় চারটা ছুইছুই করতেছে। ভেজা চুল গুলো টাওয়ালে পেঁচিয়েই ডাইনিং এ চলে আসলাম পেটের ভেতরে যেন ইদুঁর বিড়াল সব একসাথে ফালাফালি করতেছে।টেবিলে বসেই দেখি মিলি আর ভাবি খাইতেছে। নতুন ভাবি ভারি মিশুক টাইপের মানুষ আবার অনেক রসিকও। আমাকে দেখেই বলে উঠলো ” কি ব্যাপার নিপা প্রথম রাত কাটল কেমন ” এই বলেই চোখ টিপ দিল। মনের কষ্টে প্লেটের শুধু ভাতই চাবাতে থাকলাম। খালা আসাতে আর কোন কথা হল না। “খালা এসেই তরকারি আমার প্লেটে উঠিয়ে দিয়ে বললেন ” কালকে তোর শশুরবাড়ি থেকে লোক আসবে দুপুরে রেডি থাকিস।আর যেয়ে এখন ঘুমিয়ে নে চেহারা দেখে তো মনে হচ্ছে সারারাত হা করে জেগে বসেছিলি”। খালাকে কিভাবে বলি সারারাত এক পাগলের পিঠের উপরে পড়ে পড়ে ঘুমাইছি। আসরের পরে যখন রুমে যেয়ে পিঠ লাগালাম বিছানার সাথে তখন মনে হল ইসস এর চেয়ে শান্তি আর মনে হয় নেই পৃথিবীতে। একটু ঘুমালে কেমন হয়। পাশে ফিরে কোল বালিশটা যখন কোলে দিয়ে চোখ বন্ধ করেছি তখনই যেন দেখলাম সেলুলয়েড ফিতার মত রাসেল ভাইয়ের সাথে আমার দৃশ্যপট। কাল রাতেও মানুষটা আমার সাথে ছিল। সারারাত ঘুমিয়েছে আমার সাথে। ঠিক তখনই একটা কথা মনে পড়ল। কালকে রাতে এত এত মানুষ ছিল বাসায় আমি রুম লক করে ঘুমালাম সারারাত কেউ আমার রুমে নক করল না কেন। ঘটনাটা কেমন জানি প্যাঁচপ্যাঁচ লাগল আমার কাছে।এমন হবার তো কোন যুক্তিই নেই। সে যাই হোক রাসেল ভাই গেল কই। উফফ এত এত চিন্তা আর মাথায় কাজ করছে না আমার। মনে হচ্ছে মাথার মধ্যে দুই চারটা যা স্কু ছিল সব খুলে পড়ে গেছে টপটপ করে।
সে যাই হোক আমার কি বিয়ে হইছে বরকে এখনও চিনি না এই কথা যদি কাউকে বলি সে নির্ঘাত আমাকে নিজ দ্বায়িত্বে পাবনা ভর্তি করে দিয়ে আসবে। আগড়ুবাগড়ুম ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেও জানি না।
ঘুমের মধ্যেই মনে হল কে জানি আমার মুখে পানির ছিটা দিচ্ছে। চোখ না খুলেই মানা করলাম পানি যেন না মারে। কিন্তু একটু পরপর ছিঁটা পড়ছেই। না পারতে চোখ খুলে দেখি ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে বসে আছি আমি। কিছুক্ষন পরে মনে হল আসরের শেষ দিয়ে ঘুমিয়েছি এখন রাত হয়ে গেছে। পিছনে ফিরে দেখে মাথার কাছের জানালা খোলা সেখান থেকেই পানির ছীঁটা আসতেছে। বাইরে দুরদান্ত বৃষ্টি হচ্ছে লাইট জ্বালিয়ে ঘড়িতে দেখলাম প্রায় আটটার কাছাকাছি বাজে। যে অবস্থায় ছিলাম সেভাবেই রুম থেকে বের হলাম। জিমি এসেছে মিলি ওরে নিয়ে ওর রুম শুয়ে শুয়ে ফোন দেখতেছে। ভাইয়া ভাবিও রুমে। খালা খালুর রুমের দরজা খোলা খালা কি জানি সেলাই করতেছে আর খালু মনোযোগ দিয়ে টিভি দেখতেছে।
মিলির রুমে যেতেই দুটোই অদ্ভুত একটা লুক দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। ওদের তাকানো দেখে মনে আমি যেন মঙ্গল গ্রহের এলিয়েন। ” কি রে এমন করে তাকিয়ে আছিস কেন? আমাকে কি নতুন দেখতেছিস নাকি? ” প্রশ্ন করলাম ওদের। ” আপু তোমার মাথায় কি হইছে ” জিমি প্রশ্ন করল আমাকে। ” মাথায় শিং গজাইছে ” মেজাজ খারাপ করে উওর দিলাম আমি। ” নিপাপু তোমার মাথা দেখে মনে হচ্ছি নির্ঘাত কোন সাইক্লোন মাথার চুলের উপর দিয়ে গেছে ” এই বলেই মিলি আমার দিকে তাকালো। আমি তাড়াতাড়ি ড্রেসিং টেবিলের সামনে যেয়ে দাঁড়ালাম। হায় কপাল ঘটনা একদম সত্যি। এগুলো চুলের চেয়ে শনের মত বেশি লাগতেছে। তাড়াতাড়ি করে চিরুনি দিয়ে চুল সমান করে ফেললাম। আবার ওদের পাশে এসে বসলাম। ” আচ্ছা তোরা যদি একটা কথার উওর দিস তাহলে তোদের জন্য অনেক সুন্দর গিফট আছে ” বললাম মিলি জিমিকে। দুইটাই খুব আগ্রহ করে সামনে এসে বসল। ” কি প্রশ্ন আপু তাড়াতাড়ি বলো ” আগ্রহে মিলির চোখ চকচক করছে। ” আচ্ছা আমার বিয়ে যার সাথে হয়েছে তাকে তোরা চিনিস ” সুন্দর করে প্রশ্ন করলাম। সামনের দুইটা তাদের ঘাড় কাত করে জানিয়ে দিল যে হ্যাঁ তারা চেনে। তার মানে আমার ওষুধে ধরেছে। মনে মনে আন্ডারটেকার মত হুহু করে একটা হাসি দিলাম যে নাকের উপর মূলা ঝুলাইছি। এই বার বর ব্যাটার পরিচয় তো আমি জেনেই ছাড়বো। মিষ্টি করে একটা হাসি দিয়ে বললাম ” আচ্ছা সে কি করে, নাম কি থাকে কোথায় এসব পরিচয় একটু দে না বোন “। আমি তো মনে মনে হাসি দিয়েছিলাম ওই বজ্জাত দুইটা আর মনে মনে না জোরে জোরে হুহাহাহা হুহাহাহা করে হাসতে লাগল। দুইটারে ঠিক আলাদিনের প্রদীপের জিনের মত লাগছিল। মিলি এসে সুন্দর করে আমার গাল ধরে বলল ” তুমি গিফট হিসাবে বেশি হলে দশ টাকার একখান ডেইরি মিল্ক চকলেট ধরায়ে দিয়ে বলবা মিলি জিমি দুই জনে ভাগ করে খা”। ” কই আমি এমন করি ” আমি ভাঙ্গা স্বরে বললাম। ” নিপাপু মিথ্যা কথা একদম বলবা না ইতিহাস সাক্ষী” জিমি ও সায় দিল মিলির সাথে। ” নয়া দুলায় আমাদের ঘুস হিসাবে কি কি দিছে তা শুনলে তো তুমি স্ট্রোক করবা শুকনার উপরে। শুধু কন্ডিশন দিছে এই যে আমরা যেন তোমারে উনার পরিচয়টা না দেই ” বত্রিশ খানা দাঁত বের করে বলল মিলি। মনে চাচ্ছিল ঘুসি মেরে ওর সবগুলো দাঁতই ফেলে দেই। পরে ভাবলাম না থাক বোনই তো পরে দেখা গেল দাঁত নাই তাই বিয়েই হল না। তাই অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করলাম। রাগ দেখিয়ে উঠে হাঁটা দিলাম। শুনতেছি পিছন থেকে দুই হনুমান বলছে ” যাও যাও তুমি না থাকলে সমস্যা নেই কিন্তু দুলাভাই গেলে ভীষন লস”। কি যে লাগছিল আমার বলে বুঝাতে পারব না।
নয়টার দিকে সবাই মিলে খেতে বসলাম। দেখলাম অনেক কিছু রান্না করেছে খালা। কচুর লতি দিয়ে চিংড়ি মাছ, ডিমের কোর্মা, গরুর মাংস, আমার ফেভারিট শুটকি ভর্তা, লাল শাক ভাজি। আমি শুটকির বাটিটা টেনে নিয়ে খেতে বসলাম। ভাইয়া তখন খোঁচানো শুরু করল ” কি রে নিপা তুই একটা শুটকি খাইস ও শুটকি”। মিলি তখন উওর দিল ” ভাইয়া তুমি একটা গরু খাওও তুমি গরু ” আমাদের বাসায় একটা অলিখিত নিয়ম আছে যখন ভাইয়া আমাদের কোন বোনের পিছনে লাগে তখন আমরা সব বোনেরা এক হয়ে যাই।নিজেদের মধ্যে যতই ঝামেলা থাক না কেন। আবার খালা যদি আমাদের কিছু বলে তো আমরা সব ভাইবোন এক হয়ে যাই। তখন খালা চিল্লায় আর বলে ” নিজেরা কুত্তার মত কামড়াকামড়ি করিস আর আমি কিছু বলতে গেলেই জোট বেঁধে আমারে ধরিস। এজন্যই বলি রসুনের পেছন সব এক “। ঝগড়া মোটামুটি তুঙ্গে আমি মিলি জিমি এক দলে ভাইয়া অন্য দলে। এমন সময় খালা ভাতের চামচ উঁচু করে বলল ” আর একটা কথা বলবি কেউ সোজা এই চামচ ভাঙ্গবো তার উপরে। চুপ করে ভাত খা সবাই “। খালার উপরে কোন ভরসা নাই নতুন ভাবীর সামনে মেরেও বস্তে পারে তাই সবাই তাড়াতাড়ি খাওয়া শুরু করলাম। সবাই খুব ক্লান্ত ছিল। মিলি জিমিকে বললাম আমার রুমে ঘুমাতে সোজা বাংলায় না করে দিল ওদের নাকি কি সব সিক্রেট কথা আছে। কি আর করার রুমে এসে দেখি বৃষ্টি আবারও শুরু হয়েছে। কি এক মুশকিল রাত হলেই বৃষ্টি হয়। রাত সাড়ে দশটার দিকে ফোনের আলো জ্বলতে দেখে ফোন উঠিয়ে দেখি এগারোটা মিসকল। এত কল কে দিল। কল তাড়াতাড়ি ব্যাক করতেই সাথে সাথে রিসিভ করল ফোন। জিজ্ঞেস করলাম কে বলছেন। ” তুই তাড়াতাড়ি দরজা খোল আধা ঘন্টা যাবত দরজার সামনে দাঁড়ানো।” কণ্ঠ শুনেই বুঝলাম এটা আর কেউ না রাসেল ভাই। মাথায় আর কাজ করছিল না যে কি করব এত রাতে উনি আবার এসেছে কেন। যদি খালা খালু বা ভাইয়া উঠে যায়। দিশা না পেয়ে অন্ধকারেই ছুটে দরজার কাছে গেলাম। দেখি সত্যিই উনি দাঁড়ানো হাতে অফিস ব্যাগ কালো শার্ট ভিজে লেপ্টে গেছে শরীরে। আমি হতবাক হয়ে ভাবছি অফিস থেকে এখানে এসেছে কেন। আজকেও কি থাকার প্লান করে এসেছে নাকি? ” কি রে তুই এমন জমে দাঁড়িয়ে আছিস কেন ব্যাগটা ধরবি তো নাকি ” এই বলে ব্যাগটা আমার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে জুতা খুলে আমার রুমে দিকে চলে গেল। আমিও তাড়াতাড়ি করে মেইনডোর লক করে সোজা উনার পিছে পিছে যেয়ে হাজির। আজকে আর আমার দরজা আটকানো লাগল না নিজেই উপরের ছিটকানি টেনে লাগিয়ে দিল। আমার টাওয়াল টা টেনে নিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকলো। উফফ এত যন্ত্রণা যেন আর সহ্য হয় না আমার। আমি কি তার বউ নাকি যে এমন করা শুরু করেছে। গোসল করে কোমরে টাওয়াল জড়িয়ে যখন বের হল আমার মুখ থেকে কি করে যেন ” ওয়াও ” শব্দট বের হয়ে গেল। মাথা মুছতে মুছতে ঘুরে আমার দিকে তাকিয়ে রাসেল ভাই বলল ” ক্ষিদা পেয়েছে অনেক ভাত দে টেবিলে “। ইয়া খোদা বলে কি ডাইনিং রুমে বসে খাবে এ লোক নির্ঘাত পাগল হয়ে গেছে। আমি বললাম আপনি এখানে বসেন আমি রুমে ভাত এনে দিচ্ছি। রান্না ঘরে যেয়ে প্লেটে ভাত এনে দিতেই খাওয়া শুরু করল সে। বুঝলাম যে অনেক ক্ষিদা পেয়েছিল। আমাকে জিজ্ঞেস করল খেয়েছি কিনা মাথা কাত করে উওর দিলাম হুম।খাওয়া শেষ করে যখন প্লেট সিংকে রেখে রুমে আসলাম। তখন দেখি সে ব্যাগ থেকে কি যেন বের করতেছে। গুঁটি গুঁটি পায়ে এগিয়ে যেয়ে দেখি খুব সুন্দর একটা গোলাপি কালারের শাড়ি যার পাড় কালো। আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল” এটা পরে আয়। ম্যাচিং ব্লাউজ আছে? “। ” এত রাতে শাড়ি পরার কি দরকার” প্রশ্ন করলাম আমি। ” শুধু শাড়িই পরবি না সাথে ম্যাচিং অর্নামেন্টও পরবি” এই বলে হাতে শাড়িটা ধরিয়ে দিল।ওয়াশরুমে ব্লাউজ পেটিকোট পরে যখন শাড়ি পরতেছি তখন ভাবতেছি কই একটু শান্তিতে ঘুমাবো তা না এখন আমার শাড়ি পরে র্যাম্পে হাঁটতে হবে। শাড়ি পরে বের হয়ে দেখি…..
চলবে
মারিয়া আফরিন নুপুর