#এ_কেমন_ভালোবাসা
#পর্ব_৬,০৭
#মাসুরা_খাতুন
০৬
শীতের কনকনে আমেজ ছেড়ে প্রকৃতি কেবলই বসন্তের সাজে সেজেছে।গাছে গাছে নানা রঙের ফুল জানিয়ে দিচ্ছে বসন্ত এসে গেছে । ভরা ক্লাস রুমে বসে আছে ছোঁয়া। মনটা খুব একটা বিশেষ ভালো নেই। টিচারের জায়গায় মনোবিজ্ঞানের পদ্ধতিগুলো নিয়ে লেকচার দিচ্ছে তরুণ টিচার সাহারিয়ার আলম স্বাধীন। আজকে স্বাধীন পরীক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে বিস্তর আলোচনা করছে,কিন্তু ছোঁয়ার খুব একটা সেদিকে মনোযোগ নেই । তার মন খারাপ কারণ তার বড় আব্বু বড়মা কিছুদিনের জন্য শহরের বাইরে গেছেন।শহরের এই ধুলো-বালি, আর দূষণের মধ্যে অনেক টা যেন হাঁপিয়ে পড়েছিলেন আলম চৌধুরী, সাহানা বেগম। তায়তো উনাদের পারিবারিক ডক্টর সাজেশন দিয়েছেন কিছু দিনের জন্য শহরের বাইরে থেকে ঘুরে আসার । তায়তো উনারা কিছুদিনের জন্য সিলেটে গেছেন হাওয়া বদল করতে । সাহানা বেগম অনেক করে চেয়েছিলেন ছোঁয়া কে নিয়ে যেতে।কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় স্বাধীন । যদিও সে ছোঁয়ার ব্যাপারে খুব একটা কথা বলে না, তারপর ও এই বিষয়ে মুখ খুলেছিল ছেলোটা।ড্রয়িং রুমে যাওয়ার জন্য সব আলোচনা হতেই সাহানা বেগম ছোঁয়া কে নেওয়ার কথা বলতেই স্বাধীন বলে ওঠে
“কলেজে আর কয়দিন পরই ফ্রাস্ট ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা, আর এর ভেতরই বেড়াতে যাওয়ার এতো সখ? তাহলে পড়াশোনা বাদ দিয়ে ঘুরে বেড়ালেই হয় ”
অন্য দিকে তাকিয়ে স্বাধীনের বলা কথাটা যে ছোঁয়া কে ঘিরেই তা খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিল সবাই।
যদি ও ছোঁয়ার পরীক্ষা আসতে এখনো ঢের বাকী কিন্তু যেহেতু স্বাধীন এতোদিনে ছোঁয়ার বিষয়ে কথা বলেছে তায় আর সাহানা বেগম বাঁধা দেন নি। তিনি নিজেও যে খুব করে চান ছেলে মেয়ে গুলোর মধ্যে ভালোবাসা তৈরী হোক,দুজনে দুজনার কাছে আসুক।
ছোঁয়া ও বিষয়টা খেয়াল করে, সেদিন সেই আইসক্রিমের ঘটনার পর থেকে স্বাধীন যেন একটু অন্য রকম হচ্ছে । কখনো কখনো ছোঁয়ার সাথে কথা বলছে।খাবার টেবিলে আলম চৌধুরীর পাশের চেয়ারে বসতো যেই স্বাধীন, সে যেন ভুল করেই গিয়ে অনায়াসে ছোঁয়ার পাশের চেয়ারে গিয়ে বসলো।এগুলো কি স্বাধীনের মনের ভুলে করা কাজ, নাকি অন্য কিছু? কিছুই বোঝে না ছোঁয়া ।
আজ আলম চৌধুরী আর সাহানা বেগম সিলেটের উদ্দেশ্য বেড়িয়েছেন। খুব সকাল সকাল উনারা বেরিয়েছেন।খুব মন খারাপ ছোঁয়ার।বাড়িতে একদম মন টিকছে না,তায়তো কলেজে এসেছে, কিন্তু এখানে এসেও ভালো লাগছে না।স্বাধীন উনাদের এয়ারপোর্টে নামিয়ে দিয়ে একেবারে কলেজে এসেছে,আর বাসায় যায় নি।কোনদিন বড়মা কে ছেড়ে থাকে নি ছোঁয়া। এই কয়দিন যে বাড়িতে এই বিরস মানুষটার সাথে কি করে থাকবে তায় ভাবতে ভাবতে শেষ ছোঁয়া । কেয়া হোস্টেলে থাকে।ওকে যে কয়দিনের জন্য ডেকে নেবে,তাহলে তো কেয়া জেনে যাবে যে,ছোঁয়া কে প্রতিদিন শাস্তি দেওয়া রাগী টিচারটা আর কেউ নয় বরং ছোঁয়ার বড় আব্বুর ছেলে।আর তাহলে হয়তো স্বাধীন ভাইয়া ও রাগ করবে, যেহেতু সে নিজেই কলেজে যাওয়ার প্রথম দিন গোপনে ভালো করে শাসিয়ে দিয়েছিল ওকে।তায় স্বাধীন ভাই না চায়লে নিজের পরিচয় কাউকেও দেবে না ছোঁয়া।
“হ্যালো মিস ছোঁয়া, আমি তোমাকে প্রশ্ন করছি, ক্লাসে বসে মন আছে কোনদিকে?
ধমক দিয়ে ওঠে স্বাধীন। এর আগেও যে বেশ কয়বার ছোঁয়া কে ডাক দিয়েছে তা ছোঁয়া বুঝতেই পারে নি, সে তখন গভীর চিন্তায় মত্ত ছিল।
হকচকিয়ে ওঠে ছোঁয়া। থতমত খেয়ে যায়,ভালো করে স্বাধীনের কথা বুঝতেও পারে না। শুকনো মুখে তাকিয়ে থাকে ছোঁয়া।
“মিস ছোঁয়া, আমি তোমাকে প্রশ্ন করেছি,মনোবিজ্ঞানে পরীক্ষণ পদ্ধতির গুরুত্ব কতোটা?”
নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রেখে বলে স্বাধীন।
এতোক্ষণের স্বাধীনের আলোচনা গুলো ভালোভাবে না শোনায় ছোঁয়া কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায়, তায়তো নিজের মতো করে আর কিছু বইয়ের আঙ্গিকে পরীক্ষণ পদ্ধতির বর্ণনা দিতে থাকে ছোঁয়া, যা স্বাধীনের মনমতো হয়না।বিরক্ততে রাগে জ্ব লে ওঠে স্বাধীন। এতোক্ষণ ধরে কত সুন্দর করে ও এই বিষয় টা বোঝালো আর এই মেয়ে টা কিচ্ছু শোনেনি? শুনলে নিশ্চয়ই এমন উত্তর দিতোনা? ছোঁয়ার মেধা সম্পর্কে জানে স্বাধীন। মেয়েটার মেধা ভালো,একটা পড়া খুব বেশি বোঝাতে হয় না ছোট বেলা থেকেই। আর ও আজ এতো করে বোঝালো তাও ছোঁয়া বুঝলো না! তার মানে মেয়ে টা ক্লাসে থেকেছে শুধু মাত্র,মন দিয়ে কিছুই শোনেনি।রাগে লাল হয়ে আসে স্বাধীনের মুখশ্রী । ছোঁয়া ভয়ে একেবারে হারিয়ে যায়। চোখে প্রায় পানি চলে আসে মেয়েটার।স্বাধীনের এ দৃষ্টি সম্পর্কে ও খুব ভালো করেই জানে।সেদিন একটু আইসক্রিম খাওয়ায় ও যেমন করেছে আর আজ তো বাড়িতে কেউ নেই, নিশ্চিত আজ ছোঁয়ার কপালে দুঃখ আছে।
“বেরিয়ে যাও,ক্লাস করতে ইচ্ছা না করলে বের হয়ে যাও ক্লাস রুম থেকে। এভাবে দেখানোর জন্য বসে থাকতে কে বলেছে? পড়াশোনা ভালো না লাগলে বাসায় বলে দাও।বসে আছো ক্লাসে অথচ মন কোথায় ছিলো? আউট।”
রাগে চোখ গরম করে বলে স্বাধীন।
ভয়ে ভয়ে একদম কেঁদে ফেলার জো ছোঁয়ার। না হয় আজ একটু পড়াটা পারে নি, তায় বলে ভরা ক্লাসে এমন ভাবে চেঁচিয়ে উঠবে স্বাধীন? লজ্জায়, অপমানে ছোঁয়ার যখন একাকার অবস্থা, তখনই এক সুন্দরী মেয়ে এসে দাঁড়ায় ক্লাস রুমের দরজায় । মেয়ে টা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনই আধুনিক। আধুনিকতার ছোঁয়া পুরো শরীরে। পোশাক পরিচ্ছেদ, স্টাইল দেখেই বোঝা যাচ্ছে এ মেয়ে নিশ্চিত বাইরের কোন দেশে থাকে।
“হাই স্বাধীন, মে আই কাম ইন?”দরজা থেকেই বলে ওঠে মেয়ে টি।
স্বাধীন ছোঁয়ার দিক থেকে দৃষ্টি সরাতেই কানে আসে মেয়েটির গলা।মনে মনে আনন্দিত হয়, নাকি বিরক্ত তা ওর মুখ দেখে বোঝা যায় না।
“আরে নিহা! তুমি? হটাৎ কোথা থেকে? ”
“বেইবি,আমি তো আজই আসলাম কানাডা থেকে।সোজা তোমার কলেজে। তুমি খুশি হওনি?
নিহার ভাষা আর আচরণ খুব একটা যে মার্জিত নয় তা খুব ভালো করেই জানে স্বাধীন। তায়তো এই এতোগুলো স্টুডেন্টদের সামনে নিজেকে অপ্রস্তুত করার চায়তে নিহার সাথে বাইরে যাওয়ায় ভালো মনে করে।
ছোঁয়া ও দাঁড়িয়ে আছে সামনের সারিতে।বাকী মেয়েদের মতো সেও কান্ড দেখছে মেয়েটার।মেয়েটার কথা বার্তা থেকে শুরু করে চালচলনে যেন অহম ঠিকরে পড়ছে।
“হ্যালো স্টুডেন্ট, আজ ক্লাস এতোটুকুই।একজন গেস্ট আসছেন, সো প্লিজ। নেক্সট ক্লাসে এই পদ্ধতিটাই সম্পর্কে আরো আলোচনা করা হবে। ভালো থাকো সবাই। ”
কোনরকমে সবাই কে উদ্দেশ্য করে বলে স্বাধীন।
“হেই বেইবি,তুমি এভাবে বলছো কেন? আমি কি তোমার গেস্ট? হেই স্টুডেন্ট, আই এম নিহা,ফ্রম কানাডা।এন্ড হি ইজ মাই বেস্ট ফ্রেন্ড। ”
স্টুডেন্ট রাও ভিষণ বিরক্ত মেয়েটিকে দেখে।মেয়ে গুলো আরো বেশি বিরক্ত । ওদের প্রিয় সাহারিয়ার স্যারের যে এমন একটা উল্লুক মার্কা ফ্রেন্ড আছে তা ওদের হজম করতে কষ্ট হচ্ছে।
“যাস্ট স্টপ নিহা।দিস ইজ ক্লাসরুম। সো প্লিজ,ডোন্ট টক এ্যানি পারসোনাল ম্যাটার।লেটস গো”
বলেই নিহাকে নিয়ে কোনরকমে বেরিয়ে আসে স্বাধীন।
“কি ব্যাপার নিহা? তুমি হটাৎ কোথা থেকে এলে? আর আমাকে তো কিছু জানাও নি।”
“আরে ইয়ার,দেশের বাড়িতে আমার যে চাচা চাচিরা আছে না? উনাদের মেয়ে মানে আমার চাচাতো বোন রিক্তার বিয়ে।তায়তো পাপা আর আমি এসেছি, মামুনি একেবারে বিয়ের একদিন আগেই আসবে।আর গ্রামে কি যেন জমির বিষয়ে দরকার আছে,তায় পাপা আগে এসেছে। আমি ভাবলাম যে এই সুযোগে আমিও আমার স্বাধীন বেইবির সাথে সময় ও কাটাতে পারবো,তায়তো পাপার সাথেই চলে আসলাম । “কথাগুলো খুব আহ্লাদের সাথে বলল নিহা।
“আজ বিকেলেই বুঝি যাচ্ছ গ্রামে? কখন যাবে আমায় বলিও আমি দেখা করে আসবো নি।”
“আর ইউ ম্যাড স্বাধীন? এখনই গ্রামে যাচ্ছে কে? বিয়ের এখনো পনেরো দিন বাকী! এতো আগে গ্রামে গিয়ে আমি থাকতে পারবো না।গ্রামের যেই পরিবেশ! মশা,বিদ্যুৎ থাকেনা,এসি নেই,ঝোপঝাড়? আমি এতো আগে থেকে গিয়ে ওখানে থাকতে পারবোনা বাবা।পাপাকে পাঠিয়ে দিয়েছি,আর আমি এই কয়দিন এখানেই থাকছি।
খুব ন্যাকামো করে সুর টেনে টেনে বলল নিহা।
“ওও তাহলে চলো তোমার নামে হোটেলে একটা রুম বুকিং করে আসি।”
“আরে ধুর স্বাধীন, কিযে বলোনা? সেই কতোদিন পরে তোমার সাথে দেখা! আমি এই কয়দিন শুধু তোমার সাথে সময় কাটাতে চায় বেইবি।আমি এই কয়দিন তোমার কাছে, তোমার বাসায়ই থাকবো।”
“কী? কী বলছো তুমি নিহা? আমার বাসায় থাকবে? আসলে হয়েছে কি,বাবা মা দুজনেই সিলেটে গেছেন হাওয়া বদল করতে। পুরো বাসায় আমি একা।আর তায় বলছি কি একা আমার সাথে আমার বাসায় থাকাটা তোমার ঠিক হবেনা।লোকে বলবে কী? আর মা নিজেও এসে শুনলে মন খারাপ করবেন। ”
কাটিয়ে ওঠার জন্য বলে স্বাধীন।কিন্তু ওর কথায় যে নিহা মনে মনে খুশি হবে তা বুঝতেই পারে নি স্বাধীন।
“কি স্বাধীন, তুমি বড্ড সেকেলে রয়ে গেছো।কে কি বলল তাতে আমাদের কী? আজব! এই যুগে এসে, একজন স্মার্ট, মডার্ন টিচার হয়ে ও তুমি এসব মানো? আর আন্টি কিচ্ছু বলবেনা।উনারা যদি চলেই আসেন তো আমি বুঝিয়ে বলবো নি।এখন চলো তো,আমি খুব ট্রায়ার্ড।”
“নিহা,তবুও।”
“ধুর, আমি কিচ্ছু শুনতে চায়না।চলো তো।”
অগত্যা ইচ্ছে না থাকা সত্বেও যেতে হয় স্বাধীন কে।বাড়িতে ছোঁয়া থাকবে। আর নিহা যেমন উ গ্র মেজাজি, কি হয় নিজেই বোঝে না স্বাধীন।
ছোঁয়া সেই সকালে রান্না করে রেখে কলেজে গেছে।নিহা সব খাবার খেতে পারে না।সারাদিন কলেজ করে গিয়ে আবার নিহার জন্য রান্না করতে বসতে হবে মেয়ে টাকে।এই মনে করে স্বাধীন নিহাকে রেস্টুরেন্ট থেকে খাইয়ে বাসায় নিয়ে যায়।আর এতোক্ষণে ছোঁয়া ও বাসায় গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে স্বাধীনের।ও গেলে ওকে খাইয়ে তবেই খাবে নিজে, কারন আজ এমনিতেই ছোঁয়া দোষ করেছে, তার ওপর আবার বাড়ি এসে স্বাধীনের যদি কিছু প্রয়োজন পড়ে আর তা না পায় তাহলে ছোঁয়ার কপালে আজ দুঃখ আছে । আলম চৌধুরী আর সাহানা বেগম পৌঁছে গেছেন।পৌঁছেই কল করেছিল ছোঁয়া কে।এমন সময় কলিং বেল বেজে ওঠায় দৌড়ে যায় ছোঁয়া।
দরজা খুলে দিতেই প্রথমেই চোখ যায় কলেজে দেখা সেই মেয়ে টির দিকে।
“কি ব্যাপার স্বাধীন! তুমি না বললে তুমি একায় আছো বাসায়,তাহলে এই মেয়ে টি কে?”,,,,,,,,,,,
চলবে,,,,,,,,,
#এ_কেমন_ভালোবাসা
#পর্ব_৭
#মাসুরা_খাতুন
“কি ব্যাপার স্বাধীন, তুমি না বলেছিলে তুমি বাসায় একা আছো? তাহলে কে ও?”বাইরে দাঁড়িয়েই নিহা প্রশ্ন করে স্বাধীন কে।
“নিহা আগে ভেতরে চলো,তারপর আমি সবটা তোমায় বলছি।”
নিহার ল্যাগেজটা নিয়ে ভেতরে আসে স্বাধীন।
ছোঁয়া কিছুই বোঝে না।কলেজে দেখা সেই মেয়ে বান্ধবী টাকে স্বাধীন বাড়িতে আনলো কেন সেটা ছোঁয়ার বোধগম্য নয়।তায়তো চুপচাপ ওদের কথাগুলো শুনতে লাগলো।
“এই মেয়ে, কি নাম তোমার?”
“জ্বি, আমার নাম ছোঁয়া। “নীচু স্বরে বলল ছোঁয়া।
“ছোঁয়া! এটা একটা নাম? আমি এতো কঠিন নামটা বলতে পারবোনা। আমি যাস্ট ছোঁ বলে ডাকবো।”একটু তাচ্ছিল্য করেই বললো নিহা।
“আপনার যা ভালো মনে হয় বলবেন আপু।”শুকনো উত্তর ছোঁয়ার।
এতোক্ষণ দাঁড়িয়ে ওদের কথাবার্তা দেখছিল স্বাধীন। এইবার মুখ খুললো,
“নিহা, ও আমার কাজিন ছোঁয়া। আমাদের সাথেই থাকে।আর ছোঁয়া এবার অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী, আমাদের কলেজেরই।আর ওর নাম টা হচ্ছে ছোঁয়া। ছোঁ নয়।”
সুন্দর করে বুঝিয়ে দেয় স্বাধীন।
“তোমার কাজিন? তো এখানে থাকে কেন? ওর বাসা নেই?
“ওর বাবা মা মানে আমার চাচা চাচি দুজনেই কার এক্সি* ডেন্টে মা *রা গেছেন। আর ও আমাদের কাছেই থাকে।মা বাবা দুজনেই ওকে নিজেদের কাছে রেখেছেন। আর ছোঁয়া শোন,এ নিহা।আমার কলেজ লাইফের বন্ধু। ও কিছুদিন আমাদের এখানেই থাকবে।ওর কিছু প্রয়োজন হলে একটু দেখিস।আর তুই খেয়ে নে,আমরা খেয়ে এসেছি। ”
“আর ছোঁয়া, নিহা কে গেস্ট রুম টা দেখিয়ে দে।ও অনেক যার্নি করে এসেছে, খুব ক্লান্ত হয়তো।নিহা তুমি যাও ফ্রেশ হও।ওকে পরে কথা হবে।”এই বলেই উঠতে চায়লেই নিহা বাঁধা দেয়,”কি স্বাধীন? আমি একটু ও ক্লান্ত নই।আর আমি তো ভেবেছি এখন তোমার সাথে গল্প করে সময় কাটাবো।আর কি গেস্ট রুম, গেস্ট রুম করছো? আমি কোন গেস্ট রুমে থাকছি না।আমি একদম তোমার পাশের রুমে থাকবো।”
“আসলে নিহা হয়েছে কি,আমার পাশের রুমে তো ছোঁয়া থাকে,আর বাকী রুমগুলোতে অনেক দিন কেউ থাকে না,খুব একটা পরিষ্কার ও মনে হয় করা নেই, তায়না রে ছোঁয়া? “কাটিয়ে ওঠার জন্য বলে স্বাধীন। ও নিহা কে খুব ভালো করেই চেনে,কোন বিশ্বাস নেই মেয়েটাকে।মাঝরাত্তিরে যে সোজা স্বাধীনের ঘরে চলে যাবেনা তার ভুল নেই।
“কি বলছো ভাইয়া? আমি তো প্রতিদিনই সব রুম,,”বাকী টা আর স্বাধীনের ধমকে বলতে পারলো না ছোঁয়া।
“চুপ কর।তুই কতোটা পরিষ্কার করিস তা আমি জানি।এইতো গতকালই ওসব রুমে গিয়ে দেখে আসলাম। প্রচুর ধুলো জমে আছে, আর মাকড়সার জাল। ইয়াক! ওখানে কি নিহা থাকতে পারবে?যা ওকে ভালো করে গোছানো গেস্ট রুমে নিয়ে যা।”
প্রচন্ড ঘৃণায় মুখটা বি*কৃতি করে বলল স্বাধীন।
ছোঁয়া হতভম্ব! কেমন সব আজগুবি কথা বলছে স্বাধীন ভাইয়া! ওতো প্রতিদিনই ওপরের সব রুম পরিষ্কার করে রাখে।ওর বাবা মার রুম টা দেখলে কে বলবে যে এই রুমে আজ বহুদিন থেকে কেউ থাকে না? তারপর ও স্বাধীন ভাইয়া কেন এসব বললো তা বোঝে না ছোঁয়া।
“কোন চিন্তা নেই বেবি,এই ছোঁ য়া, তুমি তোমার জিনিস পত্র নিয়ে নিচের রুমে সিফ্ট করে যাও।আর আমি তোমার রুমে থাকছি । ”
“আরে ধুর নিহা,তুমি কিযে বলো না? তুমি ছোঁয়ার রুমে থাকবে কেন? ওর তো হাবিজাবি কতো জিনিসে ঘর বোঝাই করে রেখেছে! ওগুলো এখনই বের করবে কি করে?আর কেমন একটা ভ্যাবসা গন্ধ ঘরের মধ্যে, আমি নিজেই তো কখনো ঢুকি না।পুরোনো বই খাতা, আরো কতো কিছু! তারচেয়ে বরং গেস্ট রুমই ভালো।আমি আছিতো বাড়িতে, তোমার কোন ও সমস্যা হবেনা। ”
অবাকের পর অবাক হয় ছোঁয়া। কি বলে স্বাধীন ভাইয়া? ওর ঘরে ভ্যাপসা গন্ধ? পুরনো বইয়ে ঠাসা? গন্ধে ঢুকতে পারেনা? আজব তো! যেই ছোঁয়া কোন জিনিসে এতোটুকু এলোমেলো পছন্দ করে না,সবকিছু টিপটাপ করে সাজাতে না পারলে ঘুম আসে না তাকে বলছে স্বাধীন ভাইয়া এসব!মাথাটা কি খারাপ হয়ে গেলো নাকি? বড়মা পর্যন্ত রেগে যায় ছোঁয়ার এতো খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য।
“আচ্ছা ঠিক আছে স্বাধীন, আমি গেস্ট রুমেই যাচ্ছি। আর হ্যাঁ বিকেলে আমরা কিন্তু বের হবো।”
“ওককে ডিয়ার।লেটস গো এন্ড টেক রেস্ট। “এতোক্ষণে হাফ ছাড়ে স্বাধীন।
সোজা চলে যায় নিজের রুমে। দরজাটা ভালো করে লক করে গা এলিয়ে দেয় বিছানায়। কিছুক্ষণ আরাম করে লম্বা শাওয়ার নেওয়ার জন্য ঢুকে পড়ে ওয়াশরুমে।
এদিকে ছোঁয়া এসব কতার কিছুই আগামাথা না বুঝে নিজের কাজে মন দেয়।খাবার দাবার সব তুলে রেখে নিজেও একটু খেয়ে নেয়।স্বাধীন ভাই ওকে সহ্য করতে পারে না ঠিক আছে,কিন্তু স্বাধীনের যে এমন একটা গায়ে পড়া বান্ধবী আছে তা দেখে কিছু টা হতাশ হয় ছোঁয়া। কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলার মতো অধিকার ওর নেয়। কিন্তু মনের ভেতর যে একটা সুক্ষ একটা অনুভূতি হচ্ছে না এমনটি নয়।স্বাধীন মানুক আর না মানুক নিজেদের অজান্তেই যে একটা বিনিসুতার টান রয়েই গেছে তা কি করে অস্বীকার করবে ছোঁয়া। কেই বা সহ্য করতে পারে, প্রিয় মানুষটার পাশে অন্য কাউকে? কিন্তু অনেক অসহায় ছোঁয়া। মুখ ফুটে কিছু বলার সাহস ওর নেই। বড়মা থাকলে কিছুতেই এই মেয়েকে ভেতরে ঢুকতে দিতো না।
একজন মানুষের মেয়ে বন্ধু, ছেলে বন্ধু থাকতেই পারে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই মেয়ে কে সাধারণ মেয়ে বন্ধু বলে কারই বা মনে হবে? এই মেয়ের আচরণই বলে দিচ্ছে সে স্বাধীন কে কতোটা বন্ধু ভাবে,নাকি অন্যকিছু?
দুপুরের খাবার খেয়ে ছোঁয়া নিজেও নিজের রুমে যায় একটু আরাম করার জন্য। দোতলায় উঠলে ছোঁয়ার রুমটায় আগে পড়ে।তারপর স্বাধীনের রুম। তায় স্বাধীন যাওয়া আসা প্রত্যেকবারই ছোঁয়ার রুমের পাশ মাড়ায়।ছোঁয়া ঐ দিকে না গেলে স্বাধীনের রুমের কিছু দেখতে পারেনা।নিজের বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই রাজ্যের ঘুম এসে ভিড় করে ছোঁয়ার চোখে।গতকাল অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিলো,আলম চৌধুরীর ঔষধ পত্র, কখন কেমন পোশাক পড়বে,সাহানা বেগম কি পড়বেন,তার ঔষধ, সহ যাবতীয় সবকিছু ছোঁয়া নিজের হাতে গুছিয়েছে। কোথাও যেন কোন খামতি না থাকে তায়তো বারবার করে পরখ করে নিয়েছে সবকিছু। ওর খুটিনাটি বাছাই করা দেখে শেষমেশ সাহানা বেগম রেগে নিজের রুমে চলে গেছেন ঘুমাতে। মেয়েটার এতো খুঁতখুঁত করা স্বভাব! কেন? কিছুতে ভুল একটু থাকলে কি সমস্যা? একেবারে তো চলে যাচ্ছিনা।মাত্র কয়দিনেরই ব্যাপার।ছোঁয়া সবকিছু ঠিক করে যখন এসে শোয় ততক্ষনে ওর চোখের ও ঘুম কেটে গিয়েছিল,তায়তো ঘুমাতে ঘুমাতে অনেক রাত হয়ে যায় ।
নীচ থেকে নিহার জোরে চিৎকার করে ডাকায় হকচকিয়ে ঘুম ভেঙে যায় ছোঁয়ার। তাড়াতাড়ি করে পাশে রাখা ওড়নাটা গায়ে চাপিয়েই নীচে চলে যায় ছোঁয়া। ততক্ষণে নিহা ও খুব রেগে গেছে।
“কি হলো আপু,আপনার কিছু লাগবে? আমায় ডাকছিলেন কেন?”
“কিছু লাগবে মানে? কতো ডাকতে হয় তোমায়? আমি সেই কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি আর তোমার কোন সাড়া নেই?”
“সরি আপু।আসলে গত রাতে ভালো করে ঘুম হয়নিতো,তায় চোখটা একটু লেগে গিয়েছিল।আপনি বলুন, আপনার কি লাগবে? আমি এনে দিচ্ছি। ”
বিনয়ী স্বরে বলল ছোঁয়া।
“এতোক্ষণে এসে বলছ কি লাগবে? এখানে এসো, দেখে যাও কি লাগবে।”
বলেই নিহা ছোঁয়া কে নিয়ে ওর জুতোর কাছে যায়।
“এই দেখ,আমার কত্তো দামী জুতোটা।আমি যে বাইরে থেকে এসে জুতোটা খুলে রাখলাম,কি হাল করে রেখেছো জুতোটার বলতো? এটা আমি এখন পড়বো কি করে? ”
চেঁচিয়ে বলল নিহা।
“আপু জুতোটা তো ঠিকই আছে।আপনি চায়লেই পড়তে পারেন। ”
“কি? ঠিকই আছে? তাহলে কি আমি স্বাদে চিল্লাচ্ছি? বাইরে থেকে আসার পর জুতোটা পরিষ্কার করে রাখতে হতোনা?কতো ময়লা লেগে আছে জুতোতে,এটা আমি এখন পড়বো?এইসব ময়লা কে পরিষ্কার করবে? এটা এভাবে রেখেই আরাম করে ঘুমাচ্ছ। ”
ভয়ে ছোঁয়া মাথা নিচু করে থাকলো,এমনিই স্বাধীন ভাইয়া ওকে পছন্দ করে না, তার ওপর ও আজ কলেজে দোষ করেছে,সে রাগটাতো আছেই,এখন যদি শোনে ও নিহার কথা শোনেনি তাহলে যদি আরও রেগে যায়? রেগে নিহার সামনেই ছোঁয়ার গায়ে হাত তোলে? তায়তো ভয়ে ছোঁয়া নিহার সাথে কোন উচ্চবাচ্য না করে ভুল স্বীকার করে বলে,
“সরি আপু,আমারই ভুল হয়েছে। এটা আগেই পরিষ্কার করে রাখা উচিত ছিলো।আপনি বসুন,আমি এক্ষুনি করে দিচ্ছি।”
বলেই ছোঁয়া নিহার জুতো জোড়া হাতে তুলে নেয়।রাগে নিহা ওখান থেকে চলে যায়।
নীচের চেচামেচি শুনে স্বাধীনের ও ঘুম কিছুটা আলগা হয়ে এসেছিল, কিন্তু উঠতে ইচ্ছে করছিল না বলে শুয়েই ছিলো।কিন্তু যখন মনে পড়ল যে নিহা কে বাড়িতে এনেছে, আর ছোঁয়া ছাড়া বাড়িতে কেউ নেই, তখনই লাফিয়ে উঠল স্বাধীন। কারণ অন্যন্য দিন তো বাড়িতে কোন চেচামেচি হয়না।সে তাড়াতাড়ি করে নীচে যায়। কিন্তু গিয়ে দেখে নিহা রাগী মুখ করে সোফায় বসে আছে,আর একটু দূরে কিচেনের দরজার সামনে ছোঁয়া বসে জুতো পরিষ্কার করছে।জুতো দুটি যে নিহার, তা বুঝতে পারে স্বাধীন। রাগে লাল হয়ে পড়ে ছেলেটির চোখ।ছোঁয়ার ওপর একরাশ বিরক্তি এসে ভিড় করে ওর অন্তর জুড়ে।মেয়েটিকে দুটো ঠাটিয়ে চড় মারতে হাত দুটো নিশপিশ করে।
নিচে গিয়ে নিহা যেখানে বসেছে তার বিপরীত সোফায় বসে স্বাধীন। রাগে নিজেকে খুব অস্থির লাগে ওর।
“এই ছোঁয়া, আমায় চা দে।তাড়াতাড়ি আমার মাথা ধরেছে।কড়া লিকারে দিবি।চা খারাপ হলে তোর কপালে দুঃখ আছে।”রেগেমেগে খানিকটা শাসিয়ে ও দেয় ছোঁয়া কে।
ছোঁয়া তাড়াতাড়ি করে ওঠে স্বাধীনের জন্য চা করতে যায়।
নিহা নিজের জায়গা থেকে ওঠে এসে স্বাধীনের পাশে বসে।স্বাধীনের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলে,
“বেইবি,তোমার মাথা ব্যথা করছে? দাঁড়াও আমি একটা ম্যাসাজ করে দিই,মাথা ব্যথা এমনিই উধাও হয়ে যাবে।”
“প্লিজ নিহা।ডোন্ট টাচ মি।আমার বিরক্ত লাগছে। দূরে সরে বসো।”বিরক্তি নিয়ে বলে স্বাধীন।
স্বাধীনের লাল হয়ে যাওয়া চোখ দুটো দেখে আর কিছু বলার সাহস পায় না নিহা।স্বাধীনের থেকে খানিকটা দূরে সরে বসে চুপ করে থাকে।
এরই মাঝে চা নিয়ে আসে ছোঁয়া। স্বাধীন একটুখানি মুখে দিয়েই কাপ টা ফ্লোরে ছুড়ে মারে।
“ছি! কি বানিয়েছিস এইটা? এটা মানুষে খায়? ভালো করে চা ও বানাতে পারিস না? এই শিখেছিস এতোদিন ধরে।মুখে দেওয়া যায় না।”রেগে বলে স্বাধীন।
ছোঁয়া ভয়ে প্রায় চুপসে যায়। মুখ দিয়ে রা কথাটি বেরোয়না।নিহা ও সুযোগ টা নিয়ে নেয়,
“কি ছোঁয়া? দেখছো স্বাধীনের মাথা ব্যথা,একটা চা ই তো চেয়েছিল, তাও ভালোভাবে দিতে পারলে না।”
“স্টপ নিহা।কথা বলনা প্লিজ। আমার বিরক্ত লাগছে।”
নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ছোঁয়া। ও তো প্রতিদিনের মতোই চা করেছিল,তাহলে স্বাধীন ভাইয়া ওমন করে রেগে গেলো কেন? অপমানে একেবারে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে মেয়েটি।
রাতের খাবারের জন্য টেবিলে বসে আছে স্বাধীন আর নিহা।ছোঁয়া খাবার গুলো প্যাকেট থেকে বের করছে।রাতের খাবার রান্না করতে নিষেধ করে স্বাধীন। অনলাইন থেকে ওর্ডার করে খাবার।নিহা সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানে ও।তায়তো মেয়েটা আবার নিহার হাজারটা ফরমায়েশ খাটুক তা হয়তো স্বাধীনের অপছন্দ। রাগ, জেদ সবটায় আছে ওর ছোয়ার ওপর।কিন্তু সেটা দেখানোর অধিকার একমাত্র ওর।ছোঁয়া কে কষ্ট দেওয়ার ও অধিকার শুধু ওর।অন্য কেউ ছোঁয়া কে ছুতে অব্দি পারবেনা।সে ক্ষমতা কারোর নেই।আর স্বাধীন তা বরদাস্ত ও করবেনা।
খাবারের প্যাকেট খুলে যখন ভেতরে ওর পছন্দের বিরিয়ানি টা দেখলো তখন বিস্ময়ে হতবাক ছোঁয়া। ছোট বেলায় এই বিরিয়ানিটা নিয়ে কতো মারামারি হয়েছে ওর আর স্বাধীনের মধ্যে,আজও বিরিয়ানির প্যাকেট খুললে সেই দৃশ্য গুলো মনে পড়ে ছোঁয়ার । স্বাধীনের ও বিরিয়ানি খুব পছন্দের। বিরিয়ানি নিয়ে ওদের কাড়াকাড়ি হতো,স্বাধীন বড় হয়েও ছোট ছোঁয়ার সাথে কাড়াকাড়ি করায় কতো বকা খেয়েছে বড়মার কাছে।
আনমনেই বিরিয়ানির প্যাকেট টা হাতে নিয়ে সেসব ভাবে ছোঁয়া, সেকি জানে? শুধু সে নয়,আরো একটা পুরুষ নিজের ছোটবেলার বিরিয়ানি কাড়াকাড়ির স্মৃতিয় সিক্ত হয় বাড়িতে বিরিয়ানি আসলেই।সেও যে এমন করেই সেই দিনগুলোর কথা ভাবে।
নিহা কে ওর জন্য আনা স্যুপ আর সালাদ টা দিয়ে স্বাধীন কেও বিরিয়ানি বেড়ে দেয় ছোঁয়া। দুজনকেই খাবার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে পাশে।
“কি হলো খাবার নিচ্ছিস না কেন? ওও পড়তে না বসার ধান্দা? যা তাড়াতাড়ি খেয়ে গিয়ে পড়তে বস।এভাবে সং সেজে দাঁড়াতে হবে না,চেয়ারে বস।আমি এতোগুলো বিরিয়ানি খেতে পারবো না।”
“কিন্তু বিরিয়ানি তো তোমার পছন্দের ভাইয়া।তুমি খাও,আমি পড়ে খাব ”
“বিরিয়ানি নিয়ে এতো ধৈর্য কবে থেকে এলো তোর? বস, আট ন্যকামি করতে হবে না।এখানে অনেক আছে।”
চোখ তুলে তাকায় ছোঁয়া। তারমানে সেই স্মৃতি গুলো স্বাধীন ভাইয়ার ও মনে আছে?
আর কোন কথা না বলে খাওয়া শেষ করে যে যার ঘরে চলে যায়। মাঝখানে নিহা একটু ন্যাকামি শুরু করেছিল,কিন্তু স্বাধীনের অযুহাতের কাছে টিকতে পারেনি।
নিজের ঘরে বই নিয়ে পড়ছিলো ছোঁয়া। রাত প্রায় বারোটা।কিছুটা চোখ লেগে আসছিল ওর।এমন সময় কেউ ওর দরজায় নক করে,কে তা জানতে চায়লে বাইরে থেকে স্বাধীন সাড়া দেয় দরজা খুলতে,,,,,
চলবে,,,,,,,