এ_ কেমন_ ভালোবাসা #পর্ব_৩১,৩২

0
1064

# এ_ কেমন_ ভালোবাসা
#পর্ব_৩১,৩২
#মাসুরা_খাতুন
৩১

গোধূলির শেষ লগ্নে হলুদের সাজে স্টেজে বসে আছে ছোঁয়া, হাতে স্বাধীনের নামের মেহেদীর টং টকটক করছে।পাশেই হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে বসে আছে ওর সবথেকে প্রিয় বহু আকাংখিত পুরুষটি।এই হলুদের ছড়াছড়ির মাঝে ও চশমা টা নাকের ডগায় রেখেছে মানুষ টি।ফর্সা ধবধবে ছেলেটার গায়ে হলুদ রং যেন অনন্য মাত্রায় সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। অনেকেই মেহেদী পড়াতে চায়লেও কিছুতেই হাতে মেহেদী লাগাতে দেয়নি স্বাধীন। সুন্দর সাবলীল হাসির মাঝে ও যেন কড়া ব্যক্তিত্ব ঠিকরে পড়ছে।ছোঁয়া বারবার প্রেমে পড়ে এমন সুন্দর ছেলোটির।এতো সুন্দর সুদর্শন ছেলেটির সাথে ও নিজেকে কিছু টা বেমানান মনে করে।দুজনকে একসাথে বসানো হয়েছে হলুদ লাগাতে।চারদিকে যে যার মতো আনন্দ করছে।কেউ কেউ নাচ পরিবেশন করছে,আবার কেউবা জোকস বলে আসর মাতিয়ে রেখেছে। কিন্তু এতো কিছুর মাঝে ও কেয়া কে অনেক ক্ষন দেখতে পায়নি ছোঁয়া। লোকজনের ভিরে মাঝে মাঝে খোঁজার চেষ্টা করলেও উঠে যেতে পারে নি।যতোই সে এ বাড়িরই মেয়ে হোক,তারপর ও কিছু টা জড়তা অন্তত আজকের দিনে অবশ্যই কাজ করছে।স্বাধীনের আশেপাশে ও ওর সব কাজিন রা ভীর জমাচ্ছে। এরই মাঝে দেখতে পায় বাঁধন কে।তাড়াতাড়ি বাঁধন কে কাছে ডাকে ছোঁয়া।

“ভাইয়া,কেয়া কে অনেকক্ষন দেখতে পাচ্ছি না, কোথায় গেলো বলুন তো মেয়ে টা? প্লিজ ভাইয়া একটু দেখুন না? আমি তো এখান থেকে উঠতে পারছিনা।”

“কি বলছো,কোথায় ও? একটু আগেই তো আমার সাথে দেখা হলো,তবে হ্যাঁ,কিছুক্ষণ থেকে দেখতে পায়নি।”
বাঁধন কিছু টা চিন্তিত মুখে বলল।

“আমার খুব চিন্তা হচ্ছে ভাইয়া,এখানে ও প্রথম বার এসেছে, প্লিজ আপনি একটু খুঁজে দেখুন না,মেয়ে টা কোন সমস্যায় পড়লো কি না?”
শুকনো মুখে বলল ছোঁয়া। চোখ মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট।

“তুমি কিচ্ছু চিন্তা করিও না ছোঁয়া, তোমার বান্ধবী অতোটা দূর্বল না,একবার কিড*ন্যাপ করে দেখেছি।কি খামচি টায় না খেয়েছিলাম।”

বাঁধন কথা না শেষ করতেই হলুদ রঙের কাতান শাড়ি গায়ে জড়ানো একটা মেয়ে কে এদিকেই আসতে দেখলো,কিছু ক্ষনের জন্য বাঁধন কোথায় হারিয়ে গেলো।কোঁকড়া চুলের মেয়ে টি শাড়ির সাথে ও চশমা পড়েছে। এ এক অন্য রকম সৌন্দর্য। নেই কোন মেকি সাজগোজ, শুধু কানে একটা কৃষ্ণচূড়ার মালা দিয়েছে।হলুদ শাড়ির সাথে টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়া টাও যেন জৌলুশ ছড়াচ্ছে। খোলা কোঁকড়ানো চুলগুলো কোমড় পর্যন্ত অবলীলায় পড়ে আছে। বাঁধন যেন দেখেই যাচ্ছে এ অপরূপ সৌন্দর্য্যের রমনীকে। অনেকটা কাছাকাছি চলে আসলে বাঁধন শুধু ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে বলল

“মাশাআল্লাহ! ”

ছোঁয়া নির্বাক হয়ে তাকিয়ে আছে বাঁধনের দিকে, বাঁধনের কাঁধে হাত দিয়ে কিছুটা ঝাঁকিয়ে বলল,

“এই যে ভাইয়া,কোথায় হারিয়ে গেলেন? ”

“ওহ হো,না কিছু না।পেত্নী দের সাজলে কেমন লাগে তায় দেখছিলাম আরকি।”কেয়ার দিকে তাকিয়ে বলল বাঁধন।

কেয়া আসতেই ছোঁয়া কিছু টা অবাক হয়ে বলল,

“বাহ্ দোস্ত, তোকে তো দারুণ লাগছে,তায়তো ভাইয়া চোখ সরাতে পারছে না।আমার খুব হিংসে হচ্ছে রে,বিয়ে আমার,অথচ বেশি সুন্দর লাগছে তোকে।”

“একদম মাইর খাবি।স্বাধীন ভাই পাগল হয়ে যাচ্ছে তোকে দেখে,বেচারা কতো কষ্ট করে গিয়ে গিয়ে দেখে আসছে,আর বলছিস আমায় ভালো লাগছে? আমি তো পেত্নী, দেখলি না,একজন কি বলল?”
বাঁধনের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে বলল কেয়া।

“এই সময় আর ঝগড়া করিস না প্লিজ।দোস্ত আমার ফোন টা আমার ড্রয়ারে রেখে আয় প্লিজ। ”

“আচ্ছা দে।”
বলে কেয়া গেলো ছোঁয়ার ফোন টা ওর ড্রয়ারে রেখে আসতে।যেতে লাগলেই একজন একদম আঠার মতো লাগানোর মতো করে ওর পিছু পিছু যেতে যেতে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল,

“অনেক ধন্যবাদ, আমার এ ছোট্ট আবদার টা রাখার জন্য। একদম অসাধারণ সুন্দর লাগছে আপনাকে।একদম আমার মনের ভেতর কল্পনা তে আঁকা কেয়া ফুলের মতো।”

পেছনে না তাকিয়েই মুচকি হাসলো কেয়া,কারণ পেছনের মানুষ টি কে তা খুব ভালো করেই জানে ও।
ছোঁয়ার রুমের কাছে এসে একটু জোরে পা চালিয়ে রুমে ঢুকেই ধরাস করে দরজা আটকিয়ে দিলো কেয়া।যাতে পেছন থেকে বাঁধন ঢুকতে না পারে। দরজা লাগিয়েই এতেক্ষনের হাসিটা হেসে নিলো ও।ও কারো মায়ায় জড়াতে চায় না,ওর জীবনে কোন পিছুটান ও রাখতে চায় না।কিন্তু কেন জানি বাঁধন কে উপেক্ষা করতে ও পারছেনা।বারবার ছেলেটা উঁকি মারছে মনের আনাচে কানাচে।

অতীত
_________________

ছোঁয়া কে সাজানো হয়ে গেলে ছোঁয়ার প্রচন্ড পিড়াপিড়ি তে নিজেও সাজতে আসে ছোঁয়া। ওর নিজের কাপড়চোপড়, ব্যাগ সবকিছু ছোঁয়ার রুমে।ছোঁয়ার রুমে শুধু ওর আর ছোঁয়ার থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শাড়ি পড়তে ভালোলাগেনা কেয়ার,তায়তো একটা থ্রিপিস পড়বে বলে নিচ্ছিলো,এমন সময় চোখে পড়ে ওর নাম লেখা একটি প্যাকেট। নামের শুরুতে সম্বোধন দেখে বুঝতে বাকি রইলো না এটা কার পাঠানো।এখানে ও লেখা আছে উগান্ডা বাসি কেয়া পাখি।প্যাকেট টা খুলে কেয়া একটা ঝলমলে হলুদ রঙের কাতান শাড়ি দেখলো,কাতান,তাও আবার হলুদ রঙের, দেখে কিছু টা অবাক হলো কেয়া।হলুদ রঙের কাতান খুব একটা পাওয়া যায় না, নিতান্তই যাদের আলাদা পছন্দ তারাই হলুদ রঙের কাতান কিনে থাকে।কিন্তু হলুদের সাথে সোনালী সুতোর কাজ করা ভারি শাড়িটি ভিষণ সুন্দর। কিন্তু রসকষহীন কেয়ার কাছে এগুলো বেশি বেশিই মনে হলো।এতোটুকু পরিচয়ে এতো দামী শাড়ি দেওয়ার কোন মানে হয়,আরও দিলেই কেয়া পড়বে কেন? না হুট করে পরিচিত একটা ছেলে দেওয়া শাড়ী কেয়া কিছুতেই পড়বে না।ওর যা আছে ও তায় পড়বে।শাড়ির ভাঁজের সাথেই বেরিয়ে এলো একটা ছোট্ট চিরকুট।

প্রিয় তেজস্রি কন্যা কেয়াফুল,

যেদিন তোমায় প্রথম দেখেছি সেদিনই তোমার চশমার ফাঁকে সাহসী চোখ দুটো দেখে প্রেমে পড়ে গেছি।তুমি বিশ্বাস করো,প্রথম দেখায় যে কারো প্রেমে এতোটা ডুবে যাওয়া যায় তা আমিও বিশ্বাস করতাম না।কিন্তু নিজে ডুবে বুঝেছি।ঐ চোখে চোখ পড়তেই বুঝেছি এ চোখ সবার থেকে আলাদা,যতো মেয়ে আমি আমার এই চোখে দেখেছি,সমস্ত মেয়ের থেকে ঐ চোখ দুটো আমার এই চোখে আলাদা লেগেছে। তোমার কথা বলা,তোমার হাসি সবকিছু বারবার পাগল করে আমায়।তোমার কোঁকড়ানো চুলগুলো আমার ভালোবাসার এক একটু সুতো,যা খুব পরম যত্নে তোমার কাছে আমায় টানে।
খুব ইচ্ছে জানো,তোমায় শাড়িতে দেখার।তোমার খোলা চুলে শাড়ি পড়ে যখন আমার সামনে আসবে,বিশ্বাস করো,আমি নিশ্বাস নিতেও ভুলে যাবো।এতোটুকু আবদার প্লিজ রেখো।

ইতি
তোমার দেওয়া নাম
উগান্ডাবাসী

কেয়া চিরকুট পড়েই সবকিছু আবার আগের মতো করে তুলে বাইরে আসে, বাঁধনের কাছে এসে বলে,

“এসব কি মিস্টার বাঁধন? আপনি বললেই আমি শাড়ি পড়ব,আপনি যা বলবেন আমি তায় করবো? আমায় পুতুল পেয়েছেন আপনি? নাকি লোভি? শুনুন, জীবনের সাথে লড়াই করার অভ্যেস আমার আছে।আমি হেরে যাওয়ার জন্য এ শহরে আসি নি।তায় আপনার জিনিস আপনিই নিন,ভবিষ্যতে মনমতো মেয়ে পেলে কাজে লাগবে।”

“ওয়েট ওয়েট মিস কেয়া।এক নিশ্বাসে আরো কতো বলবেন? একটু তো দম নিন।আপনি সাহসী আমি জানি,আপনি জিতবেন তাও আমি জানি, আর আপনার এ সাহসিকতার প্রেমে আমি পড়েছি,আপনার এ জেতার লড়াইয়ের প্রেমে আমি পড়েছি। আর কে বলল আপনাকে,আমি আমার মন মনো মেয়ে পাইনি? আমি পেয়েছি।যতোটা কল্পনায় ভাবতাম,তার থেকেও বেশি পেয়েছি, আর যাকে পেয়েছি সে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আর শাড়িটা পড়লেও আমি আপনার পেছনে ঘুরবো,না পড়লেও আমি পেছনে ঘুরবো।জানেন তো,এতো সহজে হেরে যাওয়ার ছেলে আমিও না,আর শাড়িটা পছন্দ না হলে ঐ যে বাইরে ফেলে দিন,গুডবাই। ”
কেয়া কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই চলে গেলো বাঁধন। একা কেয়া থ মেরে দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ।

“মিস্টার বাঁধন, দাঁড়ান বলছি,এই যে,,,”

কিন্তু বাধন থামে না।সে মিশে গেছে ভীরের মধ্যে। আবারও রুমে যায় কেয়া।রাগ করে নিজের জামা টা পড়ে নেয়।দরজা খুলে বাইরে আসছিলো,কিন্তু আবারও চোখ যায় শাড়িটার দিকে। কতো ভালোবেসে দেওয়া শাড়ী টি এমন অবহেলায় ফেলে যেতে বুকের বা পাশে কেমন ব্যথা চিনচিন করে কেয়ার।কেন করে তা জানে না। শুধু মনে পড়ে একটি কথায়”খুব ইচ্ছে জানো,তোমায় শাড়িতে দেখার।”
কেউ একজন যে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকবে ওর দিকে তা কেয়া জানে।তায়তো এক পা এক পা করে আবার ও আসে শাড়িটার কাছে,মনের সব দ্বিধা কাটিয়ে হাতে তুলে নেয় শাড়িটি। গায়ে চড়ায় একজনের পাগলামি মাখা আবদার মেটাতে রেখে যাওয়া শাড়িটি। প্যাকেটের ভেতর একগুচ্ছ কৃষ্ণচূড়ার মালা ও পায়,সত্যিই ছেলেটার পছন্দ আলাদা! নায়তো কি আর কেয়ার মতো অনাথ মেয়ে কে এতো ভালোবাসে! গাঢ় হলুদের সাথে টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়া আনে।মুচকি হাসে কেয়া।তারপর চুল খোলা রেখেই কানে গুঁজে কৃষ্ণচূড়ার মালা টি।

স্টেজে অনেক আত্মীয়রাই আসছে স্বাধীন কে আর ছোঁয়া কে হলুদ দিতে।এবার আসে জেমি আর ওর ছোট বোন রিমি।স্বাধীন খুব ভালো করেই জানে এরা ছোঁয়া কে পছন্দ করে না।তায়তো কাজিনদের থেকে মনোযোগ সরিয়ে ছোঁয়ার দিকে আসে।

“ছোঁয়া, তোর কি খুব বিরক্ত লাগছে রে? তাহলে বল,মাকে বলে তোকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছি।”

“না না স্বাধীন ভাইয়া, আমার একটু ও বিরক্ত লাগছেনা।তুমি চিন্তা করো না।”

“এই মেয়ে এখনো তুই আমায় ভাইয়া বলছিস,আজ আমাদের হলুদ বোন,আজ ও অন্তত ভাইয়া বলিস না।তুই এমন ভাইয়া ভাইয়া বললে বউ বউ ফিলিংস আনবো কেমনে আমি? ”
অসহায় মুখে বলে স্বাধীন।

“কে বলেছে ভাইয়া,তোমায় বউ বউ ফিলিংস আনতে? এমনেও কি কম খচ্চর তুমি! ভাইয়া বললেও এমন করো,না জানি ভাইয়া না বললে কি করবে।”

“এই মেয়ে, আমি খচ্চর? একদম এসব বলবি না,খচ্চরগিরি কাকে বলে এখানেই দেখিয়ে দেবো কিন্তু, তুই তো ভালো করেই জানিস আমার লজ্জা শরমের বালাই নাই।”

“নাউজুবিল্লাহ ভাইয়া,ভুল হয়ে গেছে, আর বলবো না।তোমায় কিচ্ছু দেখাতে হবে না। ”

ছোঁয়ার দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়ে চোখ টিপ মেরে হাসি স্বাধীন।

“কি ব্যাপার! বর বউ এমন লোকজনের সামনেই ফিসফিস করে কথা বললে হবে? এতোটুকু ধৈর্য কি নেই? কাল থেকে যতো ইচ্ছা কথা বলো।”
জেমি ছোঁয়া কে ইঙ্গিত করে বলে।

সাথে সাথেই স্বাধীন উত্তর দেয়,

“কে বলল তোকে আমরা আজ থেকে নতুন বর বউ,তায় ধৈর্য মানছে না? আমরা অনেক আগে থেকেই বর বউ সেটা মনে হয় তুই ও জানিস।আর হ্যাঁ, কথা বলেছি আমি,তায় তুই যা বলার আমাকে বল,ছোয়াকে বলছিস কেন?”

“বাবা স্বাধীন ভাই,তোমরা আগে থেকেই বর বউ এই কথা তুমি মানছো? কবে থেকে গো? আর এখনই বউয়ের পক্ষে এতো কথা বলা শুরু করছো? কয়দিন পর আমার ফুফুর কি এই বাসায় জায়গা হবে?”
চোখ বাকিয়ে বলে জেমি।

“তোর ফুফু কে নিয়ে চিন্তা তোর না করলেও চলবে।তাকে নিয়ে চিন্তা করার জন্য তার ছেলে আছে,আর ছেলের বউ আছে।ওহ্ সরি,ছেলের বউ বলছি কেন? মা তো ছোঁয়া কে নিজের মেয়েই মনে করে,সেটা নিশ্চয়ই তোর অজানা নয়? আর আমার বউকে আমি কবে থেকে মানবো,না মানবো না,কবে আদর করবো কবে করবো না,সেটা নিশ্চয়ই তোর কাছ থেকে শিখতে যাবো না? ”
ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে বলল স্বাধীন।

রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে হলুদ না লাগিয়েই চলে গেলো জেমি।
ছোঁয়া লজ্জা রাঙা মুখ নিয়ে বলল,

“ছি ছি ভাইয়া,কিসব বলছিলে তুৃমি? সত্যিই তুমি বেলাজ হয়ে গেছো।”

“আরে বোকা ওসব না বললে ওরা এতো সহজে যতো না বুঝলি।যে যেমন তার জন্য তেমন ঔষুধ। আর একটু দেরি করলে ওর কান দিয়ে ধোঁয়া বেরোনোর মতো কথা বলতাম, আর কক্ষনো সাহস করতো না তোকে কথা শোনাতে আসার।বলেই হাসে স্বাধীন। ”

“ছিহ্,বদমায়েশ ছেলে,,,,,”

চলবে,,,,,,,,,,

#এ_কেমন_ভালোবাসা
#পর্ব_৩২
#মাসুরা_খাতুন

এক ধাপ এক ধাপ করে এগোচ্ছে স্বাধীন ছোঁয়ার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মূহুর্ত গুলো।ছোঁয়ার এখনো পুরোপুরি বিশ্বাস হচ্ছে না ওর জীবনে সত্যিই এগুলো ঘটছে! জীবনের প্রতিটি সময় যেই মেয়েটার সবথেকে আপন মানুষের অবহেলায় কেটেছে, সে কি করে বিশ্বাস করে এমন দিন তার! প্রতিটি দিন যে ছোঁয়া স্বাধীন কে এক নজর দেখার জন্য ওর আশেপাশে ঘুরেছে,অকারণেই কতো অবহেলা, কষ্ট সহ্য করেছে, আর আজ সেই স্বাধীন ওকে চোখে হারাচ্ছে! যেই স্বাধীনের গায়ের গন্ধ নেওয়ার জন্য টিশার্ট বুকে জড়িয়ে বারবার গন্ধ শুঁকেছে, সেই স্বাধীন আর কিছু মূহুর্ত পর একেবারে ওর হতে চলেছে। বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনের জোড় টা মনে হয় এমনই হয়।এ এক অদৃশ্য বন্ধন যা মহান আল্লাহ তা আলা নারী পুরুষের মনে দিয়ে থাকেন।

হলুদের অনুষ্ঠান শেষে ছোঁয়া আর কেয়া রুমে এসেছে। সবাই যে যার মতো ঘুমের ব্যবস্থা করছে।বাঁধন ওর বাসায় যেতে চেয়েছিলো,কিন্তু স্বাধীন যেতে দেয় নি।কালকেই বিয়ে আর কতো কি আয়োজন করা বাকী! এসময় বাঁধন কে যেতে দিতে কিছুতেই রাজি নয় স্বাধীন।তায়তো অগত্যা সেও আছে। এই কদিনেই দুজনার খুব সুন্দর সম্পর্ক তৈরী হয়ে গেছে। দুজনে বসে বসে হিসাব করছিলো,আজ কেমন মেহমান হয়েছে, আগামীকাল কেমন হতে পারে এইসব আলোচনা। ছোঁয়া আর কেয়া কে স্বাধীন আগেই রুমে পাঠিয়ে দিয়েছে, কাল আবার অনুষ্ঠান, আজ বেশি রাত জাগলে শরীর খারাপ হতে পারে। আর ছোঁয়া যেহেতু বউ, তায় দিনে তো ও একটুও রেস্ট নেওয়ার সময় পাবে না , সারাক্ষণ কে কখন এসে ডিস্টার্ব করবে তার ঠিক নেই, তারচেয়ে ও এখনি ঘুমাক,এটা স্বাধীনের যুক্তি। তায়তো দুজনরে আগেই রুমে পাঠিয়ে দিয়ে ওরা হিসেব করছে।

শাড়ি ছেড়ে ছোঁয়া একটা নীল রঙের থ্রি পিস পড়ছিল,মাঝ খান থেকে আটকিয়ে দেয় কেয়া।ও কিছুতেই ছোঁয়া কে আজকের দিনে নীল পড়তে দিবে না। ওর কথা বিয়ের কনে কে লাল লাল পোশাক পড়তে হবে। শেষমেশ কথায় না পেরে ছোঁয়া একটা লাল সাদা রঙের থ্রি পিস পড়লো।সুতি জামাটা আরামদায়ক ও বটে! আর কেয়া ব্লাক প্লাজুর সাথে সাদা রঙের জামা।চুল গুলো আঁচড়ে নিয়ে মেকআপ তুলে ফেললো। এবার অনেক টা হালকা লাগছে ছোঁয়ার। কিন্তু সমস্যা বাঁধাল কেয়া।

“দোস্ত দেখতো কয়টা বেজেছে?”
ময়েশ্চারাইজার মাখতে মাখতে বলল কেয়া।

“প্রায় বারো।কয়েক মিনিট বাকী আছে রে।”
শাড়ী ভাজ করে রাখতে রাখতে খুব সাধারণ ভাবেই বলল ছোঁয়া।

কেয়া তাড়াতাড়ি ছোঁয়া কে জড়িয়ে ধরে,
“ও আল্লাহ, কাল এই সময় তোরা কি কি করবি রে দোস্ত? আমার তো ভাবতেই কেমন লাগছে,আহা সাহারিয়ার স্যার তার প্রিয় ছোঁয়া রাণীকে এতো সাধনার পর পেয়ে একেবারে পাগল হয়ে যাবে। ”

লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেলো ছোঁয়ার।পুরো মুখে গোলাপি আভা ছড়িয়ে পড়ল।কেয়া যে এমন কথা বলবে ভাবতেই পারে নি ছোঁয়া। কোন রকমে নিজেকে ধাতস্থ করে বলল,

“ছিহ্ কেয়া! তুই কতোটা নির্লজ্জ হয়েছিস ভাবা যায়।কি বলছিস এসব! শয়তান মেয়ে, একটু ও লজ্জা করছে না?”

“আরে আরে,আমার ছোঁয়া রাণী যে লজ্জায় একেবারে লাল নীল হয়ে যাচ্ছে, আমার এতো লজ্জা নাই।দেখিস আমার যখন বিয়ে হবে,বাসর ঘরে সোফায় তোকে বসিয়ে রাখবো।কিন্তু তুই তো শালি সার্থপর,কাল ঠিকই একায় বাসর ঘরে চলে যাবি,নিবি না আমায়। ”
গাল ফুলিয়ে বলল কেয়া।

“হু হু আমি ভাবছি তোর বাসর ঘরে থাকতে,তোর উনি আমার ভাইয়া হোন,তুই শয়তান মেয়ের মতো টিচারের বাসর দেখতে চাইতেই পারিস,তায় বলে আমি আমার ভাইয়ার বাসর দেখবো কেন?”

“তোর ভাইয়া? তোর আরও কোন ভাইয়া আছে নাকি রে? প্লিজ দোস্ত থাকলে আমায় দে,একটা জামাইয়ের অভাব বোধ করছি,তোদের জামাই বউয়ের পেরেম দেখে।”
ছোঁয়ার চুলে টান দিয়ে বলল কেয়া।

“আহ্,লাগছে তো।কোন ভাইয়া তা তুমি বোঝো না বুঝি? ভাই টা আমার পাগল হয়ে যাচ্ছে। ”

“আমার কাছে একটা সুন্দর উপায় আছে জানিস,তোর ভাইয়ার জন্য। ”

“কি কি উপায়,তাড়াতাড়ি বল।ভাইয়া টাকে আমার বাঁচা দোস্ত। ”

“শোন তাহলে,বলছি যে আমার কাছে পাবনা মেন্টাল হসপিটালের ঠিকানা নাম্বার দুটোয় আছে,তুই ওদের সাথে যোগাযোগ করে দেখতে পারিস,আমি পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেবো নে।খুব দয়ালু মেয়ে তো আমি আবার।”
দু হাত বুকে বেধে একটু গম্ভীর হওয়ার মতো করে বলল কেয়া।

“হা** মী মেয়ে, তোকে আজ দেখাচ্ছি মজা,বলেই ছোঁয়া গেলো কেয়া কে ধরতে,কেয়া ও সুযোগ বুঝে দিলো এক ছুট।”

বাইরে স্বাধীনের কাজিনরা সবাই আড্ডা দিচ্ছিল।স্বাধীনের মেজ মামার ছেলে নিহান,অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ে।কিন্তু নিহান যে একটু একটু ছোঁয়া কে পছন্দ করে মনে মনে তা বহুবার টের পেয়েছে স্বাধীন। কিন্তু ছোঁয়ার বিয়ে স্বাধীনের সাথে হয়েছে শুনে হয়তো নিহান কখনো সেভাবে বলেনি ছোঁয়া কে।স্বাধীনের বড় মামার মেয়েরা যেখানে ছোঁয়া সবসময় অপমান করতে চায়, সেখানে নিহানত খুব গুরুত্ব দেয় ছোঁয়া কে।সবার থেকে আলাদা দাম দেয়।কিন্তু ছোঁয়া ও কখনো সেভাবে বুঝে নি কিছুই।আর বুঝবেই বা কি করে? সেতো দিবা রাত্রি মত্ত থেকেছে ওর স্বাধীন ভাইয়ের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য।

সবার আড্ডার মাঝে কেয়া কে এদিকেই আসতে দেখে জেমি।তায়তো কায়দা করে সাথে সাথেই বলে ওঠে,

“এই সবাই শোন শোন।আজ যেহেতু স্বাধীন ভাই আর ছোঁয়ার হলুদ, তো স্বাধীন ভাইয়া কে তো পাচ্ছি না,কিন্তু আমাদের ভাবি,মানে ছোঁয়া আর ওর বান্ধবী তো আছে আমাদের মাঝে। আজ এই সুন্দর সময়ে আমাদের সামনে একটা নাচ পরিবেশন করবে ছোঁয়া, আর ওর বান্ধবী। ”

সাথে সাথে সবাই তাল মিলিয়ে বলে ওঠে,
“হ্যাঁ হ্যাঁ,,,,আমরা আজ ছোঁয়া ভাবির নাচ দেখবো,অবশ্যই দেখাতে হবে। ”

ছোয়া আর কেয়া দুজনেই ওদের সামনে দাঁড়ানো,ভুল কে যে ওরা ভুল জায়গায় এসে পড়েছে তা খুব বুঝতে পারে। এখন এখান থেকে যে খুব সহজে যেতেও পারনে না তাও জানে ছোঁয়া।

নিহানের ছোট বোন নিফাত ছোঁয়া কে বলল,
“ও ছোঁয়াপু,দেখাও না একটা নাচ।তোমার রাগী বরটার জন্য পুরো বিয়ে বাড়ি মনমরা হয়ে আছে, একটু ও নাচ গান করতে পারছিনা, প্লিজ এখন একটু নাচো না গো। ”

“নিফাত,আমি তো নাচ পারি না বনু।আর এগুলো শেখাও হয়নি কখনো,তারচেয়ে বরং তোমরা মজা করো,আমরা যাই।”
বলে ছোঁয়া কেয়া কে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়,
এমন সময় রিমি বলে ওঠে,

“কি ব্যাপার ভাবির বান্ধবী, আপনিও কি নাচের ন ও অজান্তা? আহা রে,,,”

ফুঁসে ওঠে কেয়া,
“দেখুন, আমরা নাচ শিখিনি ঠিক আছে, কিন্তু এতোটাও কম পারিনা,যে কারো সামনে পরিবেশন করা যাবে না।ছোঁয়া যখন চায়ছে না আর আমার ও ভালো লাগছে না,তায় আমরা বরং চলেই যাই।আপনারা আপনাদের মতো আড্ডা দিন।”

“বাব্বা,ছোঁয়া কে দেখি কথা বলাই যায় না,সব সময় একটা করে উকিল সেট করে রেখেছে। ”
চোখ উল্টিয়ে বলল জেমি।

“ওরা যখন চায়ছেনা তাহলে কেন শুধু শুধু জোর করছিস ওদের? ওরা তো চলেই যাচ্ছে, এসব বলার মানে কি?”
নিহান বলে উঠলো ওদের মাঝ থেকে।

“কি ব্যাপার নিহান? তুই আবার কবে থেকে ছোঁয়ার জন্য ওকালতিতে নাম লেখালি? বাহ্ ভালোই তো সাপোর্ট করছিস।”
জেমি তিরস্কার করে বলল নিহান কে।

কেয়া রাগে ফুঁসে বলল,
“ঠিক আছে আমরা নাচবো।ছোঁয়া চল শুরু করবো।”

“কি বলছিস কি তুই? আমি এখন এসব পারবো না।”

“তুই দেখছিস না,ওরা কিভাবে আমাদের অপমান করছে।এদের জবাব দিতেই হবে। ”

“বলুক না ওরা ওদের মতো,চল আমরা চলে যায়।”

“উহু,আমি যাবো না।তুই গেলে যা,আমি এদের জবাব দেবোই।”
জেদ ধরে বসে কেয়া।
অগত্যা ছোঁয়া ও শুরু করে ওর সাথে নাচ, কলেজে একটা অনুষ্ঠানে পরিবেশন করবে বলে ওরা আগে থেকেই শিখে তাল মিলিয়ে রেখেছিল নাচ টাতে।দুজনের নাচই খুব ভালো ছিলো,কিন্তু স্বাধীনের ভয়ে ছোঁয়া আর এগোতে পারে নি।
এখানে ও ওরা খুব সুন্দর ভাবে পরিবেশন করলো নাচ।কিন্তু একটু খানি নাচতেই স্বাধীন পানি খেতে ড্রয়িং রুমে আসলো।এসে নিহান সহো আরো কাজিনদের সামনে ছোঁয়া কে নাচতে দেখে রাগে মাথায় র*ক্ত চড়ে যায় ওর।যে ছোঁয়া কে ও তাড়াতাড়ি অনুষ্ঠান শেষ করিয়ে বিশ্রাম নিতে রুমে রেখে আসলো,সে এখানে ধেইধেই করে নাচছে দেখে রাগে লাল হয়ে গেলো স্বাধীন। বরাবরের মতো রাগ টা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো।

“কি ব্যাপার,এখানে কি হচ্ছে এসব? রাত কয়টা বাজে?”

স্বাধীন কে এখানে আর এ অবস্থায় দেখে ভয়ে ছোঁয়া চুপসে গেলো।এখানের সবার চেয়ে স্বাধীনের রাগ সম্পর্কে সে বেশি অবগত। আর রাগ টাও যে ওর ওপরই বেশি ঝাড়া হবে সেটাও ও জানে।তায় তো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো।

“আরে স্বাধীন ভাই,তুমি তো ছোঁয়া কে সময়ই দিচ্ছো না,তায়তো বেচারি বান্ধবী কে নিয়ে কাপল ডান্স দেখাচ্ছে আমাদের। ”
জেমি বলে ওঠে সবার সামনে।

“মানে এসবের মানে কি? দেখ জেমি,ছোঁয়া যে এসব নাচ গানে আগ্রহ দেখায় না সেটা আমি জানি,তায় কেন এসময় নাচছে সেটায় বল?”স্বাধীন চোখ রাঙিয়ে বলে জেমি কে।

“ওমা স্বাধীন ভাই,তারমানে তোমার কি মনে হয় আমরা মিথ্যে বলছি? বাব্বা দুইদিনের বিয়েতে এসে এসবও শুনতে হলো।”
রিমি ফোঁড়ন কাটে।

এবার কেয়া মুখ খোলে,
“কেম মিথ্যে বলছেন আপনারা শুধু শুধু? আপনারাই তো বাধ্য করলেন আমাদের নাচাতে।আমরা তো চলেই যাচ্ছিলাম,কিন্তু, ”

“এই মেয়ে তুৃমি থামো।আমাদের কথা বলতে দাও।”
ধমক দিয়ে উঠলো জেমি।

“কেন? ও থামবে কেন জেমি? ও তো ঠিকই বলেছে,তোরাই তো ওদের টিচ করলি,আর নাচতে বাধ্য করলি,এখন মিথ্যে বলছিস কেন?”
নিহান বলল জেমিকে উদ্দেশ্য করে।

স্বাধীন যা বোঝার বুঝে গেছে। এবার ওর রাগ টা আরো বেড়ে গেলো।কারণ বাড়ি টা কার? ছোঁয়ার।অধিকার কার? ছোঁয়ার।গেস্ট কে? ওরা।
তাহলে ছোঁয়া কেন ওদের হাতের পুতুল হয়ে চলবে? এই মেয়ে কি কোনদিনও ভালো হবে না? একে শিক্ষা দিতেই হবে।

“শোন জেমি,ছোঁয়া কি করে না করে তা আমি ভালো করেই জানি,তায় নেক্সট টাইম আর এসব ফালতু কাজে ছোঁয়া কে জড়ানোর চেষ্টা ও করবি না।আর সবাই যে যার রুমে চলে যা।”

বলতেই সবাই সবার রুমে ভুরভুর করে চলে যায়। ছোঁয়া আর কেয়া ও যেতে নিলে স্বাধীন বলে ওঠে,

“এই তুই কোথায় যাস? আর কেয়া দাঁড়াও। এদিকে এসো,তোমাদের জন্য যত্ন আত্তির ব্যবস্থা আছে।”

একঘন্টা ধরে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে ছোঁয়া আর কেয়া।রাত প্রায় পৌনে দুটোর কাছাকাছি। চুপচাপ বাঁধন আর স্বাধীন সোফায় বসে হিসেবে নিকেশ করছে,আর ওরা দাঁড়িয়ে। ওদের অপরাধ ওরা ওদের কথায় নাচলো কেন? ওদের কড়া জবাব দিতে পারলো না কেন? ওদের শাস্তি ছিলো নাচ করা।স্বাধীন আর বাঁধন বসে বসে দেখবে আর ওরা নাচবে,কিন্তু দুজনেই ওদের সামনে নাচতে অস্বীকার করলে এভাবে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বাঁধনের ভিষণ হাসিও পাচ্ছে, ওর বাঘীনি কন্যা কেও এভাবে বিড়ালের মতো দাঁড়ান দেখে।

বাঁধন একটু স্বাধীনের কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলে,

“স্বাধীন ভাই,আমার না হয় বাসরের অনেক দেরি আছে,কিন্তু তোমার তো কালই ভাই।আর আজকে কি এমনে শাস্তি দেওয়া ঠিক হচ্ছে? বলছি কাল কিন্তু লাটাই ওর হাতে থাকবে ভাই,একটু ভেবে দেখো।এতো সাধনার বাসর নষ্ট করো না।”

বাঁধনের কথায় স্বাধীন তার একমাত্র দখলদার সেই ডেবিট হাসিটা হাসলো শুধু, ঠোঁটের কোন সোভা পেলো ছোঁয়া কপ খু* ন করা সেই হাসি,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here