#বৃষ্টিময়_প্রেম
#পর্বঃ৫৪
#লেখনীতে-তাসফিয়া হাসান তুরফা
রুম থেকে বের হতেই রায়হান ভাইয়ের সামনে পড়লাম। উনি বোধহয় এদিকেই আসছিলেন কোন কাজে! ভদ্রতাসূচক হেসে সেখান থেকে কেটে পড়তেই উনি পথ আটকে দাড়ালেন আমার। আমি ভ্রু কুচকে তাকাতেই ইতস্তত ভাবে বললেন,
—কোথায় যাচ্ছিলে? এভাবে পথ আটকানোর জন্য সরি। আসলে একটা কাজেই এসেছিলাম তোমার কাছে।
—ভাইয়া, আমি একটু ব্যস্ত আছি। আমি কিছুক্ষণ পর এসে কথা বলি আপনার সাথে?
—বুঝতে পারছি, তুরফা। কিন্তু আমিও টেনশনে পড়েই বাধ্য হয়ে এসেছি এই সময়। একটু শুনো।
—কি হয়েছে তাড়াতাড়ি বলুন। কিসের টেনশন?
যদিও নিচে পূর্ণ দাঁড়িয়ে আছেন আমার জন্য সেখানে যাওয়ার তাড়া আছে কিন্তু একটা মানুষ কাজে এসেছেন শুনে আর ফেলতে পারলাম না। চিন্তিত মুখে দ্রুত স্বরে রায়হান ভাই বললেন,
—তুমি তো জানোই আমার আর প্রিয়ার কথা? বলছিলাম ওর অন্য কোন নাম্বার আছে তোমার কাছে? একটু আগেই ওর সাথে কথা বলছিলাম হঠাৎই প্রিয়া চিল্লিয়ে উঠে এরপর ফোন কেটে যায়। আমি বেশ কয়েকবার ফোন দিলাম, ধরছেনা। সংযোগও পাওয়া যাচ্ছেনা। ওর অন্য নাম্বার থাকলে আমায় দিবে প্লিজ? খুব টেনশন হচ্ছে!
—ভাইয়া, একটু অপেক্ষা করুন। আমি নিচে থেকে এসেই ওর অন্য নাম্বার দিচ্ছি আপনাকে।
—কিন্তু তুরফা…
—রায়হান ভাই, পূর্ণ বাড়ির সামনে অপেক্ষা করছেন আমার জন্য। আমাকে যেতে হবে এখন! এসেই নাম্বার দিচ্ছি আপনাকে।
পূর্ণ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন শুনে যেন অবাক হলেন রায়হান ভাই। চোখেমুখে বিস্ময় উনার। কিছু হয়তো বলতেও চাইলেন কিন্তু আমার হাতে সময় নেই, বেশি দেরি হলে যদি উনি আবার রাগ করেন? তাই এক ছুটে চলে এলাম বাড়ির বাহিরে! হাসিমুখে বাড়ির গেট খুলে বের হতেই আমার মুখের হাসি মিলিয়ে গেলো, পূর্ণর গাড়িকে ছুটে চলে যেতে দেখলাম। আমি দৌড়ে যাওয়ার আগেই গাড়ি চলে গেলো বাসার সীমানার বাহিরে। প্রচন্ড অবাক হলাম! পূর্ণ চলে গেলেন কেন এভাবে? অবচেতন মনে প্রশ্ন এলো সামান্য অপেক্ষা করিয়েছি বলেই কি উনি আবার রাগ করলেন নাকি? কিন্তু পরক্ষণেই নিজের বেখেয়ালি মনকে শাসন করলাম! পূর্ণকে আমি ভালো করেই চিনি! এত অল্পতে ধৈর্য হারিয়ে আমায় ছেড়ে যাওয়ার মতো মানুষ পূর্ণ নয়! যে মানুষ আমার জন্য এত বছর নিঃস্বার্থভাবে অপেক্ষা করেছেন তিনি এই সামান্য কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে পারবেন না এটা অসম্ভব! উনি যদি চলে যান তবে এর পেছনে নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে।
এসব ভাবতে ভাবতে পুনরায় বাড়ির ভেতর প্রবেশ করলাম। পূর্ণ বেশ দ্রুত ড্রাইভ করে চলে গেলেন। ব্যাপার কি? প্রায় সাথে সাথেই মাথায় এলো একটু আগে রায়হান ভাই বলছিলেন প্রিয়ার কথা! ও ফোনে চিল্লিয়ে উঠেছিলো। পূর্ণর যাওয়ার সাথে প্রিয়ার ঘটনাটার কোন সম্পর্ক নেই তো? প্রিয়ার কিছু হলোনা তো আবার?
দ্রুত কদমে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতেই চিন্তারত মুখে রায়হান ভাইকে পায়চারি করতে দেখলাম। আমায় এত দ্রুত ফিরে আসতে দেখে যেন আরেকদফা অবাক হয়ে গেলেন উনি। এগিয়ে এসে বললেন,
—এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলে যে? পূর্ণ এত তাড়াতাড়ি আসতে দিলো তোমায়? আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে নাহ।
রায়হান ভাইয়ের কথায় খানিকটা লজ্জা ও অসস্তিতে পড়লেও আপাতত সেগুলোকে সাইডে রেখে চিন্তিত মুখে উনাকে বললাম,
—ভাইয়া, আমার মনে হয় বাসায় কিছু হয়েছে। আমি যেতেই দেখি পূর্ণও বেশ দ্রুত ড্রাইভ করে চলে গেলেন। উনি এতক্ষণ আমার জন্য নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন আবার আমায় কিছু না বলেই হঠাৎ এভাবে চলে যাবেন বিশ্বাস হচ্ছেনা। কিছু একটা ব্যাপার আছে!
—হুম আমারও তাই মনে হচ্ছে। তাহলে এক কাজ করো। রাইসাকে ফোন দেও। ওর থেকে শুনো কিছু হয়েছে কি না?
মাথা নাড়িয়ে দ্রুত গতিতে রাইসাকে ফোন দিলাম। একবার রিং হয়ে কেটে গেলেও একটু পর ও নিজে থেকেই কলব্যাক করলো। আমি লাউডস্পিকারে ফোন দিতেই রাইসা ক্লান্ত স্বরে বললো,
—হ্যাঁ তুরফা বল।
—বাসায় কি কিছু হয়েছে রে? প্রিয়ার সাথে কথা হলো, ও হঠাৎ করে চিল্লিয়ে উঠলো। এরপর থেকে আর ফোন ধরছেনা। টেনশন হচ্ছে আমার!
—আর বলিস না। বাসায় আসতেই হঠাৎ করেই মা-র শরীর খারাপ করে। প্রেসার বেড়ে গেছে খুব। বাবা ডাক্তার ডাকলেন এইমাত্র, চলে আসবে যেকোন সময়।
—কি বলিস? বড়াম্মুর হঠাৎ করে এত প্রেসার বাড়লো কিভাবে? আচ্ছা, যাই হোক ডাক্তার আসলে কি বলে আমাকে ফোন দিয়ে জানাস। টেনশন হচ্ছে।
—ঠিক আছে। এখন রাখছি ব্যস্ত আছি।
—হ্যাঁ যা। বড়াম্মুর খেয়াল রাখ!
ফোন কেটে রায়হান ভাইয়ার দিকে তাকাতেই তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। বেচারার মুখ দেখে বুঝা গেলো প্রিয়ার চিন্তায় ছিলেন এতক্ষন, ও ঠিক আছে শুনে কিছুটা স্বস্তি পেলেন। সেদিকে চেয়ে বললাম,
—আচ্ছা ভাইয়া, প্রিয়াকে নিয়ে আপনার প্ল্যান কি?
—ম-মানে?
হঠাৎ আমার এমন প্রশ্নে থতমত খেয়ে গেলেন রায়হান ভাই। যেন ভাবেন নি এমন সময় এই প্রশ্ন করবো। আমি হালকা হেসে বললাম,
—আপনি তো জানেনই প্রিয়া আপনাকে ভালোবাসে, অনুভূতিটা যে শুধুই ওর পক্ষ থেকে নয় আপনার পক্ষ থেকেও আছে তা একটু আগের ঘটনায় স্পষ্ট টের পেলাম আমি। কবে জানাবেন ওকে?
আমার কথায় ধরা পড়া চোরের মতো দৃষ্টিতে তাকালেন রায়হান ভাই। মলিন হেসে বললেন,
—আমি ওকে ভালোবাসতে চাই, তুরফা। কিন্তু আমার মন পুনরায় ভালোবাসতে ভয় পায়। আমার কেন যেন মনে হয় পূর্ণ আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিবেনা!
রায়হান ভাইয়ের কথায় চকিত দৃষ্টিতে তাকালাম। উনি মনে মনে ঠিকই ধারণা করেছেন। এ বিষয়ে পূর্ণর সাথে আমার কেমন বাগবিতণ্ডা হয়েছে সে তিনি ব্যাপারে জানলে তো তার ভয় আরও বেড়ে যাবে। কিন্তু রায়হান ভাইকে আশাহত হতে দেওয়া যাবেনা। তাই উনাকে সাহস দিতে শান্ত গলায় বললাম,
—প্রিয়াও একি ভয় পাচ্ছে। সত্যি বলতে আমিও তাই ভেবেছিলাম। কিন্তু যদি আপনি প্রিয়াকে প্রকৃত অর্থে ভালোবাসেন তবে সুযোগ থাকতে নিজের ভালোবাসাকে হারাতে দিয়েন নাহ। আমি আমার পূর্ণকে চিনি, আপনি যদি উনাকে একবার বিশ্বাস করাতে পারেন যে আপনি প্রিয়াকে সত্যিই ভালোবাসেন, ওকে খুশি রাখতে চান তাহলে পূর্ণ কোনোদিন মানা করবেন না। উনি নিজের বোনের খুশির বিপক্ষে নয়! উনি বাহিরে থেকে কঠিন হলেও তার মনটা ভীষণ ভালো।
আমার কথায় বিস্মিত হয়ে রায়হান ভাই বললেন,
—পূর্ণকে আমি খারাপ বলিনি, তুরফা। আমি জানি ওর মধ্যে কোন বিশেষত্ব আছে বলেই আমি যা চেয়েছিলাম তা সৃষ্টিকর্তা ওকে দিয়েছেন। যাই হোক, এ ব্যাপার নিয়ে আর কিছু না বলি। তবে তোমার কথা শুনে আমি ভাবছি রাইসাদের অনুষ্ঠানের পর পূর্ণর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলবো। আচ্ছা আসি তাহলে, রাত হয়ে গেছে শুয়ে পড়ো।
রায়হান ভাইয়ের কথায় মাথা নাড়িয়ে কেটে পড়লাম সেখান থেকে। রুমে আসতেই ছটফট করলাম বড়াম্মুর কি খবর জানার জন্য। কিন্তু এখন হয়তো ডাক্তার এসেছেন তাই সবাই ব্যস্ত আছেন ভেবে আর ফোন দিলাম নাহ। পূর্ণও তার মানে এ কারণেই এত তাড়াহুড়া করে ড্রাইভ করে বাসায় যাচ্ছিলেন বুঝে এলো। একিসাথে মনে প্রশ্ন এলো উনি সহি-সালামতে বাসায় পৌঁছে গেছেন তো? চিন্তায় অস্থির হলো মন। ফোন না দিয়ে ছোট্ট একটা মেসেজ দিলাম তাকে “বাসায় পৌঁছে গেছেন ঠিকমতো?”
তৎক্ষণাৎ রিপ্লাই পেলাম নাহ, বুঝলাম উনার ব্যস্ততা। বিছানায় বসে বসে তার অপেক্ষায় ফোন হাতে নিয়েই ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলাম একসময়।
_________________
ফোনের কর্কশ শব্দে ঘুমের ঘোর কেটে গেলো। ঘড়িতে দেখি রাত প্রায় দু’টো বাজে। ফোন হাতে নিতেই স্ক্রিনে পূর্ণর নাম দেখে তড়িঘড়ি করে রিসিভ করলাম। ঘুমজড়ানো কণ্ঠে চিন্তামিশ্রিত স্বরে প্রশ্নের ঝুলি মেলে বসলাম তার সামনে,
—হ্যালো, আপনি কখন বাসায় গেছেন? ঠিকমতো পৌঁছে গেছেন তো? বড়াম্মুর শরীর কেমন আছে এখন?
সাথে সাথেই উত্তর এলোনা। শুধু উনার নিশ্বাসের আওয়াজ পেলাম। কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করে হঠাৎই প্রগাঢ় সুরে আমায় ডেকে উঠলেন পূর্ণ,
—তুর পাখি?
এতদিন পর উনার মুখে এই ডাক শুনে পুলকিত হলো হৃদয়! খুশির রেশ ছেয়ে গেলো রন্ধ্রে রন্ধ্রে! তার মানে উনার অভিমান ভেঙে গেছে একেবারে! নয়তো এমন আদুরে ভাবে ডাকতেন না নিশ্চয়ই? খুশির রেশ কাটিয়ে ছোট্ট করে উত্তর দিলাম,
—হুম?
—ভিডিও কল দিই? তোমায় দেখতে মন চাচ্ছে খুব।
—আচ্ছা, দিন।
লাজুক হেসে ফোন কেটে দিলাম আমি। উনার আবদার নাকোচ করা আমার পক্ষে সম্ভবপর হবেনা কখনো! প্রায় সাথে সাথেই ভিডিও কল দিলেন পূর্ণ। রিসিভ করতেই চোখে পড়লো তার অনিন্দ্য মুখশ্রী। নিদ্রাহীন চোখ-মুখ ক্লান্তিতে ভরপুর। উদাম গায়ে বসে আছেন বেডে ল্যাপটপ নিয়ে। সেদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে বললাম,
—এখন বলুন, বড়াম্মুর শরীর কেমন? ডাক্তার কি বলেছে? সব ঠিক তো?
—আম্মু এখন ঠিক আছে। তখন হঠাৎ করে এমন হওয়ায় সবাই প্যানিক করছিলো। আমিও তাই প্রান্তের ফোন পেয়েই সাথে সাথেই ছুটে চলে আসি বাসায়। অবশ্য ডাক্তার বললো চিন্তার কারণ নেই, আম্মুর খেয়াল রাখতে। কিছু ওষুধ দিলো আর আম্মুকে প্রপার ডায়েট ফলো করতে বললো। বাসায় নাকি বিয়ের ব্যাপারে আলোচনা করতে করতেই উত্তেজনায় আম্মুর প্রেসার বেড়ে গেছে। তার মধ্যে আজ তো মাংসও খেয়েছেন না? এটাও একটা কারণ হতে পারে।
—ওহ। যাক আলহামদুলিল্লাহ বড়াম্মু ঠিক আছেন। আমি তো রাইসার সাথে কথা বলার পর টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম এটা নিয়ে! তার মধ্যে আপনি মেসেজের রিপ্লাই দিচ্ছিলেন না, আমার আরও চিন্তা হচ্ছিলো। ফোন হাতে নিয়েই কখন চোখ লেগে গেছে টের পাইনি!
—সরি, বউ। ডাক্তারকে বিদায় দিয়ে আম্মুর ওষুধ আনতে গিয়েছিলাম। বাসার কাছের ফার্মেসি বন্ধ থাকায় অন্য জায়গায় যেতে হয়েছিলো। এসব করে রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে মাত্র ফোন নিলাম আর তোমার মেসেজ চোখে পড়লো। তাই কিছু না ভেবেই ফোন দিলাম। ভুলেই গিয়েছিলাম এটা মাঝরাত, তুমি ঘুমোবে এটাই স্বাভাবিক। নিজের চোখে ঘুম নেই এখন বসে বসে তোমার ঘুমও ভেঙে দিলাম!
উদাস কণ্ঠে বললেন উনি। উনার কথা শুনে আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। পাগল লোকটা নিজে ক্লান্ত সেদিকে হুশ নেই, আমার ঘুম ভেঙে দিয়েছেন এটা নিয়ে দুঃখ করছেন! নরম সুরে বললাম,
—আপনার কি মাথা খারাপ বলুন তো? এভাবে বলছেন কেন? আমার চেয়ে বেশি আপনার ঘুমের প্রয়োজন এখন। আমি বুঝি আপনি ব্যস্ত ছিলেন। তাই কিছু মনে করিনি আমি। এখন কল রেখে ঘুমিয়ে পড়ুন। আর কালকে সম্ভব হলে অফিস যেয়েন নাহ! আপনার রেস্ট প্রয়োজন। আপনি কিন্তু অনেক কেয়ারলেস হয়ে যাচ্ছেন নিজের ব্যাপারে।
আমার কথায় মুগ্ধ দৃষ্টিতে স্ক্রিনের দিকে চেয়ে রইলেন পূর্ণ, ঠোঁটের কোণে দেখা দিলো সূক্ষ্ম হাসির রেখা। ভিডিওর মাঝেই নিজের ল্যাপটপ স্ক্রিনে ছুয়ে আমার গালে হাত দেওয়ার চেস্টা করলেন যেন! সেদিকে চেয়ে হেসে উঠলাম আমি।
—কি করছেন? ঘুমান এখন। আপনাকে অনেক টায়ার্ড দেখাচ্ছে!
—তোমাকে ছাড়া ঘুম ধরেনা, তুরফা। আই মিস ইউ। চলে আসো আমার কাছে?
ক্লান্ত মুখে ঘুমের আবেশে বললেন উনি। এদিকে পূর্ণর কথায় রক্তিম আভা ছেয়ে গেলো গালে। একদিকে উনার চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে অন্যদিকে আমাকে এসব বলছেন। বিষয়টিতে বেশ হাসি পেলো আমার। হাসি লুকিয়ে মেকি রাগ দেখিয়ে বললাম,
—ঘুমিয়ে পড়ুন তো? আমি তো আপনার সামনেই আছি। লাইনেই থাকবো, আপনি ঘুমান!
পূর্ণ ক্লান্ত চোখে ইষৎ হেসে ল্যাপটপ বিছানায় রেখে কাথা টেনে আমার দিক তাকালেন, খানিকক্ষণ বাদে চোখ বন্ধ করলেন এবং কিছুক্ষণের মাঝে ঘুমিয়েও গেলেন বোধহয়? অন্তত উনার স্থির হওয়া শ্বাস-প্রশ্বাস তো তা-ই বলছে! তার শান্ত ঘুমন্ত মুখশ্রীর দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। যে মুখে আর নেই রাগের আভাস, আছে শুধু স্নিগ্ধতা! চোখে ঘোর লেগে যায় যেন!
অতঃপর কল কেটে ফোন পাশে রেখে আমিও শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে শুয়ে পড়লাম। কিছু নিদ্রাহীন রাতের পর অবশেষে শান্তির ঘুম হবে! প্রিয়তমের অভিমান যে ধুয়েমুছে একাকার হয়েছে, এর চেয়ে সুখের ব্যাপার আর কিছু আছে?
#চলবে